Pages

Powered by Blogger.
1ST SEMESTER SUGGESTION 2 ND YEAR SUGGESTION 2ND SEMESTER 3RD SEMESTER BENGALI NOTES CU suggestion. EDUCATION NOTES ENGLISH COMPULSORY GBU Suggestion. HISTORY EUROPE & WORLD HISTORY NOTES POL SC NOTES SOCIOLOGY NOTES WBCS 2020

NANDAN DUTTA

A new approach for exam notes .

রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞা দাও। রাষ্ট্রবিজ্ঞান কি বিজ্ঞান পদবাচ্য ? পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি দাও। 

Define political science. Is political science a science? Argue for and against. ( In Bengali ) 




রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞা :- 


অধ্যাপক গেটেল বলেছেন , রাষ্ট্রবিজ্ঞান হল রাষ্ট্র কী ছিল - তার ঐতিহাসিক অনুসন্ধান , বর্তমান রাষ্ট্র সম্পর্কে বিশ্লেষণাত্মক আলোচনা এবং ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র কেমন হওয়া উচিত - সে সম্পর্কে রাষ্ট্রনৈতিক ও নীতিশাস্ত্রসম্মত আলোচনা। 

গার্ণারের মতে , রাষ্ট্রকে নিয়েই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনার শুরু ও শেষ। 

বার্জেসের মতে , রাষ্ট্রবিজ্ঞান হল স্বাধীনতা ও সর্বভৌমিকতার বিজ্ঞান। 

পল জাঁনে - র মতে , রাষ্ট্রবিজ্ঞান হল সমাজবিজ্ঞানের সেই অংশ যা রাষ্ট্রের মৌলিক ভিত্তি এবং সরকারের নীতিসমূহ নিয়ে আলোচনা করে। 

আচরণবাদী রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ডেভিড ইস্টন বলেছেন , রাষ্ট্রবিজ্ঞান হল মূল্যের কর্তৃত্বমূলক বরাদ্দের আলোচনা। 

মার্কসবাদী রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞা নির্দেশ করতে গিয়ে বলেছেন , রাষ্ট্রের সর্বত্র বিরোধের অস্তিত্ব বর্তমান। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে শাসক ও শাসিতের মধ্যে বিরোধ বর্তমান। রাষ্ট্রবিজ্ঞান রাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশে ও বিভিন্ন সময়ে সংঘঠিত এই বিরোধের উৎপত্তি , গতিপ্রকৃতি ও ফলাফল বিশ্লেষণ করে। 

আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে , রাষ্ট্রবিজ্ঞান কেবলমাত্র রাষ্ট্রকে নিয়েই আলোচনা করেনা , সেইসঙ্গে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান , রাজনৈতিক দল , রাজনৈতিক আচার আচরণ , জনমত , চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী - ইত্যাদি সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। 

সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে , রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কোনো সর্বজনগ্রাহ্য ও নির্দিষ্ট সংজ্ঞা প্রদান করা সম্ভব নয়। তাই বলা যেতে পারে যে , রাষ্ট্রবিজ্ঞান হল সমাজবিজ্ঞানের সেই শাখা যা রাষ্ট্রের উৎপত্তি , রাষ্ট্রের বিভিন্ন উপাদান , গতিপ্রকৃতি , বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান , জনমত , আন্তর্জাতিক সম্পর্ক , সরকার ও তার বিভিন্ন রূপ - ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

রাষ্ট্রবিজ্ঞান কি বিজ্ঞান পদবাচ্য ! পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি :- 


রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান পদবাচ্য বলার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতৈক্য লক্ষ্য করা যায়। একদিকে গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে '' শ্ৰেষ্ঠ বিজ্ঞান '' বলে অভিহিত করেছেন। তাঁকে অনুসরণ করে লর্ড ব্রাইস , পোলক , হব্স , মন্টেস্কু , আচরণবাদী রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ - প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলার পক্ষপাতী। 
কিন্তু , অগাস্ট কোঁত , মেটল্যান্ড , বার্ক - প্রমুখেরা রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলার বিরোধিতা করেছেন। 

রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলার পক্ষে যুক্তি :- 


১. সুসংবদ্ধ ও বিশেষীকৃত জ্ঞান অর্জন সম্ভব :- বিজ্ঞান হল কোনো বিষয় সম্পর্কে সুসংবদ্ধ ও বিশেষীকৃত জ্ঞান অর্জন ও সুশৃঙ্খল পঠন - পাঠন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনা ক্ষেত্রেও রাষ্ট্র সম্পর্কে সুসংবদ্ধ , সুনির্দিষ্ট ও বিশেষীকৃত তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জন সম্ভব। তাই পোলক বলেছেন , যাঁরা রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলতে রাজি নন , তাঁরা বিজ্ঞান বোঝেন না। 

২. বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির প্রয়োগ সম্ভব :- বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার মত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনাতেও পর্যবেক্ষণ , পরীক্ষণ , তথ্য সংগ্রহ , উপাদান বিশ্লেষণ ইত্যাদি বিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতির মাধ্যমে মানুষের রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রনৈতিক জীবন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা যায়।

৩. গবেষণা সম্ভব :- বিজ্ঞান যেমন বিক্ষণাগারে তার বিষয়গুলি সম্পর্কে গবেষণা করে , রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সেই বিক্ষণাগার হল সমগ্র পৃথিবী। সমগ্র পৃথিবীর রাজনৈতিক জগৎ এবং তার আদর্শ ব্যবস্থা ও কার্যকলাপ নিয়ে গবেষণা চলে। এই নিরন্তর গবেষণার ভিত্তিতে বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার মত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়গুলি নিয়েও সাধারণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়। 

৪. আচরণবাদীদের প্রয়াস :- বিগত কয়েক দশক ধরে আচরণবাদী রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ ভৌতবিজ্ঞানের পদ্ধতিগুলিকে অনুসরণ করে রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে সম্পূর্ণভাবে বিজ্ঞানসম্মত করার প্রয়াসের সাথে যুক্ত। তাঁরা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় বিভিন্ন গাণিতিক কৌশল , রেখাচিত্র , তথ্য সংগ্রহ , তালিকা প্রণয়ন , সংখ্যায়ণ - ইত্যাদি পদ্ধতির প্রয়োগ করে রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞানের পর্যায়ভুক্ত করেছেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৫. তত্ত্ব  ও তথ্য - উভয়ের ওপর গুরুত্ব :- রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় তত্ত্ব ও তথ্য উভয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। তত্ত্ব ও তথ্য উভয়ের উপর নির্ভর করে সাধারণ সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হয়। এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন মার্কস ও এঙ্গেলস সমাজবিকাশের বিবর্তনকে তত্ত্ব ও তথ্য উভয়ের উপর নির্ভর করে বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা প্রদান করেছিলেন। 

৬. মূল্যমান নিরপেক্ষ আলোচনা :- আচরণবাদী রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় বিভিন্ন গাণিতিক পদ্ধতি , পরিসংখ্যান - ইত্যাদির প্রয়োগের মাধ্যমে রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে মূল্যমান নিরপেক্ষ করে তুলেছেন। তাই আচরণবাদীরা মনে করেন , রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় যেহেতু গাণিতিক পদ্ধতির প্রয়োগ করা সম্ভব হয়েছে , সেহেতু রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। 

৭. রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব :- বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়গুলির মত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনাতেও রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব। বিশেষ করে জনমত সমীক্ষার মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে ও রাজনৈতিক নীতির বিবর্তন সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব। 

৮. সর্বজনীন ও সাধারণ সূত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব :- রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয় ও বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে সাধারণ ও সর্বজনীন সূত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব। এই সূত্রগুলির উপর ভিত্তি করে রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন সমস্যাগুলির সমাধান সম্ভব। এছাড়াও , রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক বিবর্তন , বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনা ও রাজনৈতিক উত্থান - পতন - ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে বিজ্ঞানের বিষয়গুলির মতই রাষ্ট্রবিজ্ঞানেও সাধারণ সূত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। 

রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলার বিপক্ষে যুক্তি :- 


১. বিষয়বস্তুর ব্যাপকতা ও অনিশ্চয়তা :- রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু অন্যান্য প্রাকৃতিক বিজ্ঞানগুলির তুলনায় অনেক ব্যাপক এবং অনিশ্চয়তা তার অন্যতম বৈশিষ্ট। এই ব্যাপক ও অনিশ্চিত বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিজ্ঞানের বিষয়গুলির মত যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ , পরীক্ষণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব নয়। 

২. রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু পরিবর্তনশীল :- রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মূল আলোচনা ক্ষেত্র হল সমাজ। কিন্তু সমাজ সর্বদা পরিবর্তনশীল ; বিজ্ঞানের বিষয়গুলির মত স্থির ও অপরিবর্তনশীল নয়। তাই বিজ্ঞানের অন্যান্য বিষয়গুলির মত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়কে বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি ও পদ্ধতির সাহায্যে আলোচনা করা সম্ভব নয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. জ্যামিতিক পদ্ধতি অবলম্বন সম্ভব নয় :- রাষ্ট্রবিজ্ঞান মানবজীবনের নানাদিক এবং রাষ্ট্রের বহুবিধ সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে। মানুষের আচরণ , ক্রিয়াকলাপ - ইত্যাদি অত্যন্ত জটিল। তাই জ্যামিতিক সূত্র প্রয়োগ করে রাষ্ট্রের সকল সমস্যা ব্যাখ্যা করা বা অনুধাবন করা সম্ভব নয়। 

৪. নির্ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া সম্ভব নয় :- প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের বিষয়গুলির মত পরীক্ষণ ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নির্ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পক্ষে সম্ভব নয়। মানুষের রাজনৈতিক জীবনের সাথে জড়িত থাকে অনুভূতি ও আবেগ। কোনো বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা দ্বারা এগুলি পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। 

৫. আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতভেদ :- বিজ্ঞানের বিষয়গুলিতে বৈজ্ঞানিকদের মধ্যে মতভেদের সম্ভাবনা খুব কম। কিন্তু রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে - রাষ্ট্রের উদ্ভব , রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য ও প্রকৃতি , গণতন্ত্র - ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। 

৬. শুধুমাত্র মানুষের রাজনৈতিক জীবনের আলোচনা :- ভৌতবিজ্ঞান বস্তুজগতের প্রায় সকল বস্তুকে নিয়েই আলোচনা করে। কিন্তু রাষ্ট্রবিজ্ঞান শুধুমাত্র মানুষের রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রনৈতিক জীবন নিয়ে আলোচনা করে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে নীতি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় :- প্রকৃতির প্রতিটি উপাদান ও বিষয় সুনির্দিষ্ট প্রাকৃতিক নীতি ও নিয়ম দ্বারা পরিচালিত হয়। কিন্তু মানুষের রাজনৈতিক জীবন এইরকম কোনো নীতিকে অনুসরণ করে চলেনা। 

৮. গবেষণাগারে পরীক্ষা সম্ভব নয় :- প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের বিষয়গুলিকে পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে নির্ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া সম্ভব। কিন্তু মানুষ , সমাজ ও মানুষের রাজনৈতিক জীবনকে কোনোভাবেই পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। 

৯. মূল্যবোধ বর্জন করা সম্ভব নয় :- প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের বিষয়গুলি বস্তুনিষ্ঠ বিজ্ঞান। সেখানে মূল্যবোধের কোনো স্থান নেই। কিন্তু রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনা ক্ষেত্রে মানুষের রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে গবেষণা ও আলোচনার সময় মূল্যবোধকে বর্জন করা সম্ভব নয়। 

১০. সিদ্ধান্ত ও ফলাফল সংখ্যায় প্রকাশ সম্ভব নয় :- প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের বিষয়গুলির ফলাফল ও সিদ্ধান্ত সংখ্যায় প্রকাশ করা সম্ভব। কিন্তু রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনা ক্ষেত্রে সংখ্যার প্রয়োগ করা গেলেও তার প্রয়োগ সীমিত ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ফলাফলকে কখনোই সংখ্যায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। 

১১. সর্বজনীনতার অভাব :- রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয় , বিভিন্ন সূত্র ও সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। রাষ্ট্র - ব্যবস্থার পার্থক্য , রাজনৈতিক আদর্শের পার্থক্য , সামাজিক কাঠামো ও ঐতিহ্যের পার্থক্য - ইত্যাদির কারণে একটি রাজনৈতিক গবেষণার ফল সকল সমাজ বা রাষ্ট্রে প্রয়োগ করা সম্ভব নয়। 

১২. ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনার প্রভাব :- প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের বিষয়গুলিতে সত্য প্রতিষ্ঠিত হয় পরীক্ষা ও যুক্তির ভিত্তিতে। কিন্তু রাষ্ট্রবিজ্ঞানের তত্ত্বগুলির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণের ব্যক্তিগত আদর্শ ও চিন্তাভাবনার দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তনের শিক্ষাগত তাৎপর্য :- 

Importance of Operant Conditioning . ( In Bengali ) 



সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তনের শিক্ষাগত তাৎপর্য :- 

সক্রিয় অনুবর্তন তত্ত্বের প্রবক্তা মনোবিজ্ঞানী স্কিনার। এই ধরণের অনুবর্তন মূলত অপারেন্ট জাতীয় ; অর্থাৎ যার নির্দিষ্ট উদ্দীপক নেই। এই ধরণের অনুবর্তনের মূল উদ্দেশ্য হল - প্রাণীকে পরস্পর সম্পর্কিত একাধিক আচরণের মাধ্যমে উপযুক্ত আচরণের দিকে নিয়ে যাওয়া এবং আচরণ সংশোধন করা। সক্রিয় অনুবর্তন প্রাণীর ইচ্ছাধীন এবং এক্ষেত্রে প্রাণীর সক্রিয়তা অপরিহার্য। সক্রিয় অনুবর্তনে প্রেষণা ও পুরস্কারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তনের শিক্ষাগত তাৎপর্যগুলি হল - 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

১. প্রেষণার সৃষ্টি :- সক্রিয় অনুবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মধ্যে বাঞ্ছিত আচরণ সৃষ্টি করে তাকে উদ্দেশ্যমূলক পথে প্রেরিত করা সম্ভব। সক্রিয় অনুবর্তন শিক্ষার্থীর মধ্যে নির্দিষ্ট আচরণের দিকে ধাবিত হওয়ার প্রেষণা সৃষ্টি করে। 

২. শিক্ষার্থীর মধ্যে সক্রিয়তা গঠনে :- সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তন মূলত ফললাভের নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। তাই সক্রিয় অনুবর্তন শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রেষণা সৃষ্টি করে তাদের মধ্যে সক্রিয়তা গঠনে সক্রিয় অনুবর্তন বিশেষভাবে কার্যকরি। 

৩. উদ্দেশ্যমুখী আচরণ সৃষ্টিতে :- সক্রিয় অনুবর্তন প্রক্রিয়া শিক্ষার্থীর মধ্যে উদ্দেশ্যমুখী আচরণ তৈরী করে। শিক্ষার্থী প্রেষণার দ্বারা পরিচালিত হয়ে উদ্দেশ্যমুখী আচরণের দিকে ধাবিত হয়। এই উদ্দেশ্যমুখী আচরণের প্রধান কারণ ফললাভের প্রতি আকর্ষণ। 

৪. আচরণ নির্দিষ্টকরণের ক্ষেত্রে :- সক্রিয় অনুবর্তনের নীতি অনুসারে , শিক্ষার্থী নির্দিষ্ট ফললাভের জন্য অনেকগুলি আচরণের মধ্যে থেকে একটি বা এক ধরণের আচরণকে নির্দিষ্ট করে এগিয়ে যায়। এইভাবে সক্রিয় অনুবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর আচরণ নির্দিষ্টকরণ করা যায়। 

৫. অবাঞ্ছিত আচরণ দূর করতে :- সক্রিয় অনুবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মধ্যে আচরণ নির্দিষ্টকরণ করে তার অবাঞ্ছিত আচরণগুলিকে দূর করা যায়। এই অবাঞ্ছিত আচরণগুলিকে পৃথকীকরণ না করলে শিক্ষার্থীর পক্ষে নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ সম্ভব নয়। ফলে সক্রিয় অনুবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর অবাঞ্ছিত আচরণগুলিকে দূর করে তাকে লক্ষ্য অর্জন করতে সহায়তা করা হয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৬. শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্বের বিকাশে :- শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যমুখী আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে। সক্রিয় অনুবর্তন শিক্ষার্থীর মধ্যে উদ্দেশ্যমুখী আচরণের প্রেষণা যুগিয়ে শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে। সক্রিয় অনুবর্তনের নীতি অনুসারে শিক্ষার্থী শিখনে অংশগ্রহণ করে এবং তার মধ্যে বহুমুখী ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে। 

৭. শিখনে সহায়ক :- শিখনের একটি অন্যতম শর্ত হল সক্রিয়তামূলক আচরণ। শিক্ষার্থী সক্রিয়তামূলক আচরণের মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন ধরণের শিখনে অংশগ্রহণ করে। শিক্ষার্থী এই সকল সক্রিয়তামূলক আচরণের ক্ষেত্রে ফললাভের দ্বারা প্রভাবিত হয়। এইভাবে সক্রিয় অনুবর্তন প্রক্রিয়া শিখনে সহায়তা করে। 

৮. পরিকল্পিত শিখন বা প্রোগ্রাম শিখনে সহায়ক :- প্রোগ্রাম শিখন পদ্ধতির আবিষ্কর্তা হলেন স্কিনার। এই পদ্ধতি অনুসারে পাঠ্য বিষয়গুলিকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত করে শিক্ষার্থীর সামনে উপস্থিত করা হয়। এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশগুলিকে ফ্রেম বলে। প্রতিটি ফ্রেমের শেষে নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন থাকে। শিক্ষার্থী ঐসকল প্রশ্নগুলির উত্তর নিজেই প্রদান করে পরবর্তী ফ্রেমে যায়। এইভাবে সক্রিয় অনুবর্তন পদ্ধতিকে আধার করে শিশু প্রোগ্রাম শিখনের মাধ্যমে নিজেই শিখতে পারে।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো             

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

প্রাচীন অনুবর্তনের সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট আলোচনা করো। 

প্যাভলভীয় অনুবর্তনের সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট। 

Definition and features of Classical Conditioning . ( In Bengali )  




প্রাচীন অনুবর্তনের সংজ্ঞা / ধারণা :- 


প্রাচীন অনুবর্তনের প্রবক্তা হলেন রুশ শারীরতত্ববিদ আইভান প্যাভলভ। প্রাচীন অনুবর্তন প্রক্রিয়াটি জৈবিক বা শারীরবৃত্তীয় বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। এই ধরণের অনুবর্তনে দুই ধরণের উদ্দীপক কাজ করে - স্বাভাবিক উদ্দীপক ও কৃত্রিম উদ্দীপক। এই ধরণের অনুবর্তন প্রক্রিয়ায় স্বাভাবিক উদ্দীপকটিকে কৃত্রিম উদ্দীপকের সাথে যুক্ত করা হয়। অনুবর্তনের পর দেখা যায় , স্বাভাবিক উদ্দীপক যে ধরণের প্রতিক্রিয়া ঘটায় কৃত্রিম উদ্দীপকও ঠিক একই ধরণের প্রতিক্রিয়া ঘটাতে সক্ষম। একেই , প্যাভলভীয় অনুবর্তন বা প্রাচীন অনুবর্তন বা সাপেক্ষীকরণ বলা হয়। এই ধরণের অনুবর্তন রেসপনডেন্ট জাতীয় অর্থাৎ যার নির্দিষ্ট উদ্দীপক আছে। প্রাচীন অনুবর্তনের সাংগঠনিক রূপটি হল - S1 > R1 > S2 > R2 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

প্রাচীন অনুবর্তনের বৈশিষ্ট :- 


১. স্বাভাবিক অনুবর্তনের উপস্থাপনের পূর্বে কৃত্রিম উদ্দীপকের উপস্থাপন :- প্রাচীন অনুবর্তন প্রক্রিয়ায় কৃত্রিম উদ্দীপকটিকে স্বাভাবিক উদ্দীপকের পূর্বে উপস্থাপন করা হয়। যেমন , প্যাভলভ তাঁর পরীক্ষায় স্বাভাবিক উদ্দীপক বা খাদ্যের পূর্বে কৃত্রিম উদ্দীপক বা ঘন্টাধ্বনি উপস্থাপন করেছিলেন। 

২. উদ্দীপক - প্রধান প্রক্রিয়া :- প্রাচীন অনুবর্তন একটি উদ্দীপক প্রধান প্রক্রিয়া। এই ধরণের অনুবর্তনে উদ্দীপকের উপস্থিতির উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই প্রাচীন অনুবর্তন হল S - type অনুবর্তন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. শক্তিশালী স্বাভাবিক উদ্দীপক :- প্রাচীন অনুবর্তন প্রক্রিয়ায় স্বাভাবিক উদ্দীপকটি কৃত্রিম উদ্দীপকের চেয়ে বা অনুবর্তিত উদ্দীপকের চেয়ে অধিক শক্তিশালী হয়। যেমন প্যাভলভের পরীক্ষায় স্বাভাবিক উদ্দীপক বা খাদ্যের সাথে কৃত্রিম উদ্দীপক বা ঘন্টাধ্বনির অনুবর্তন ঘটানোর ফলেই কৃত্রিম উদ্দীপকটি স্বাভাবিক উদ্দীপকের মত প্রতিক্রিয়া সংঘঠিত করতে পেরেছে। 

৪. উদ্দীপকের পর্যায়ক্রমিক উপস্থাপন :- প্রাচীন অনুবর্তনের ক্ষেত্রে উদ্দীপক দুটিকে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। কৃত্রিম উদ্দীপকের রেশ থাকতে থাকতেই স্বাভাবিক উদ্দীপকটিকে উপস্থাপন করতে হয় - তা না হলে অনুবর্তন প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে। 

৫. উদ্দীপকের বারবার উপস্থিতি :- প্রাচীন অনুবর্তন প্রক্রিয়ায় উদ্দীপক দুটিকে বারবার উপস্থাপন করতে হয়। শুধুমাত্র একবার উপস্থাপন করলে অনুবর্তন প্রক্রিয়া কার্যকর হয়না। কৃত্রিম উদ্দীপকের সাথে আচরণের অনুবর্তন না ঘটা পর্যন্ত উদ্দীপক দুটিকে বারবার উপস্থাপন করতে হয়। 

৬. অপানুবর্তন :- অনুবর্তন প্রক্রিয়া যথাযথভাবে সংগঠিত হওয়ার পর যদি স্বাভাবিক উদ্দীপকটিকে দীর্ঘ সময় ধরে অনুপস্থিত রাখা হয় , তাহলে অনুবর্তন প্রক্রিয়া বিলুপ্ত হবে। এই ঘটনা অপানুবর্তন নামে পরিচিত। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. অপানুবর্তনের পর পুনরায় অনুৱৰ্তনের প্রত্যাবর্তন :- অপানুবর্তনের ফল হল অনুবর্তিত প্রক্রিয়ার অবলুপ্তি। কিন্তু তার পরও যদি কৃত্রিম ও স্বাভাবিক উদ্দীপকগুলিকে পর্যায়ক্রমে উপস্থাপন করা যায় , তাহলে অনুবর্তীত আচরণের পুনরাবির্ভাব ঘটে। যেমন , প্যাভলভের পরীক্ষায় , অপানুবর্তনের পর যদি কৃত্রিম উদ্দীপক ঘন্টাধ্বনি ও স্বাভাবিক উদ্দীপক খাদ্যকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করা হয় , তাহলে পুনরায় S - R বন্ধন ঘটবে। 

৮. গৌণ উদ্দীপক নির্দিষ্টকরণ :- প্রাচীন অনুবর্তন প্রক্রিয়ায় গৌণ উদ্দীপকটিকে নির্দিষ্ট করা প্রয়োজন। একাধিক বা অনির্দিষ্ট গৌণ উদ্দীপকের উপস্থিতিতে প্রাণী নির্দিষ্ট উদ্দীপকের সাথে প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারবে না বা , অনেকগুলি গৌণ উদ্দীপকের মধ্যে থেকে যেকোনো একটির সাথে অনুবর্তন সম্পর্ক স্থাপন করবে। 

৯. সামান্যীকরণ ও পৃথকীকরণ :- প্রাচীন অনুবর্তন প্রক্রিয়ায় প্রাণীর মধ্যে বিভিন্ন আচরণের সামান্যীকরণ ও পৃথকীকরণ করা যায়। অপ্রাসঙ্গিক বৈশিষ্টগুলিকে বাদ দিয়ে প্রাসঙ্গিক ও সাধারণ বৈশিষ্টগুলিকে পৃথক করাকে পৃথকীকরণ বলে এবং এই প্রাসঙ্গিক বৈশিষ্টগুলির ওপর ভিত্তি করে সাধারণ তত্ত্ব গঠন করাকে সামান্যীকরণ বলে। 

১০. বয়স ও প্রাণীভেদে পৃথক :- প্রাচীন অনুবর্তন প্রক্রিয়া ইতর প্রাণী ও শিশুদের ওপর অধিক ফলদায়ী হয়ে থাকে। যেহেতু এটি একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া তাই প্রাচীন অনুবর্তন প্রক্রিয়া ইতর প্রাণী ও শিশুদের শিখনের ক্ষেত্রে অধিক উপযুক্ত।  

১১. প্রতিবর্ত প্রকৃতি :- প্রাচীন অনুবর্তন প্রক্রিয়ায় স্বাভাবিক উদ্দীপক যে অনুবর্তন ঘটায় তা প্রতিবর্ত প্রকৃতির। অর্থাৎ , এই ধরণের অনুবর্তন প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয়। প্রাণী স্বাভাবিক উদ্দীপক দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে তার স্বাভাবিক চাহিদার বশবর্তী হয় ও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। 

১২. S - R বন্ধন :- প্রাচীন অনুবর্তন প্রক্রিয়ার মূল উদ্দেশ্য হল উদ্দীপক ( S ) ও প্রতিক্রিয়ার ( R ) মধ্যে সংযোগ ঘটানো। এই অনুবর্তন প্রক্রিয়ায় উদ্দীপকের দ্বারা প্রাণীর নিকট নির্দিষ্ট আচরণ সংগঠিত করা হয় এবং এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো
  
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তন সংক্রান্ত স্কিনারের পরীক্ষা। 

Skinner's experiment on Operant Conditioning. ( In Bengali ) 




সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তন সংক্রান্ত স্কিনারের পরীক্ষা :- 


প্রখ্যাত মার্কিন মনোবিদ বি এফ স্কিনার 1935 সালে Science of Human Behaviour নামক গ্রন্থে তাঁর গবেষণালব্ধ বিষয় ও নীতিগুলিকে উপস্থাপন করেন। এই গ্রন্থে তিনি দেখান যে , প্রাণীর আচরণ দুই প্রকারের - রেসপনডেন্ট - অর্থাৎ যেসকল আচরণের নির্দিষ্ট উদ্দীপক আছে ; এবং অপারেন্ট - অর্থাৎ যে সকল আচরণের নির্দিষ্ট উদ্দীপক নেই , যেকোনো ধরণের উদ্দীপকের সঙ্গে আচরণ সংযুক্ত করা যেতে পারে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


স্কিনার বক্স :- 
সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তনের বিষয়টির উপর আলোকপাত করতে 1932 খ্রিস্টাব্দে তিনি একটি পরীক্ষা করেন যা '' স্কিনার বক্স '' পরীক্ষা নামে বিখ্যাত। এই পরীক্ষাটি করার ক্ষেত্রে তিনি যান্ত্রিক পদ্ধতিগত ব্যবস্থা অবলম্বন করেন। তিনি একটি বক্স তৈরী করেন যাতে একটি বোতাম বা লিভার থাকে। বক্সটিকে এমনভাবে প্রস্তুত করা হয় যাতে সেই বোতাম বা লিভারে চাপ দিলেই একটি ট্রে - তে খাদ্যদ্রব্য এসে পড়ে। এছাড়াও সেই বক্সের মধ্যে রেকর্ড করার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা থাকে। 

পরীক্ষার প্রথম ধাপ :- 
প্রথমেই বক্সের মধ্যে একটি ক্ষুধার্ত ইঁদুরকে প্রবেশ করানো হয়। ইঁদুরটিকে বাক্সে রাখা অবস্থায় তার সামনে বোতাম বা লিভার চেপে খাদ্য আনা হয়। এইভাবে ট্রে -তে খাদ্য আনার উদ্দেশ্য ছিল ট্রে -তে করে খাদ্য সরবরাহের বিষয়টির সাথে ইঁদুরটির পরিচয় ঘটানো। ঠিক এইভাবে আরো একবার একই প্রক্রিয়া সংঘঠিত করা হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল সক্রিয়তার সাথে খাদ্য প্রাপ্তির বিষয়টির সম্পর্কে ইঁদুরটির পরিচিতি ঘটানো। 

পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপ :- 
পুনরায় ইঁদুরটিকে বক্সে প্রবেশ করানো হয়। প্রবেশ করানোর সাথে সাথে খাদ্য প্রাপ্তির আশায় ইঁদুরটি ট্রে - র দিকে ছুটে যায়। কিন্তু খাদ্য না পাওয়ায় নানারকম সঞ্চালনামূলক আচরণ করতে থাকে। তারপর এই সঞ্চালনামূলক আচরণের ফলে বোতাম বা লিভারে চাপ পড়ে এবং ইঁদুরটির খাদ্য প্রাপ্তি ঘটে। 

পরীক্ষার তৃতীয় ধাপ :- 
এইভাবে ইঁদুরটির সাথে সমগ্র প্রক্রিয়াটির পরিচয় ঘটিয়ে দেওয়ার পর , ইঁদুরটিকে যখন বক্সে প্রবেশ করানো হচ্ছে তখন ইঁদুরটি অন্যান্য সঞ্চালনামূলক আচরণগুলিকে বাদ দিয়ে সরাসরি বোতামে চাপ দিয়ে খাদ্য উপস্থিত করতে সক্ষম হচ্ছে। 

সিদ্ধান্ত ও সাংগঠনিক রূপ :- 
এই সমগ্র প্রক্রিয়াটি যান্ত্রিকভাবে ফললাভ বা খাদ্যপ্রাপ্তির সঙ্গে সংযুক্ত। তাই একে যান্ত্রিক প্রক্রিয়াও বলা হয়। এই প্রক্রিয়ায় শক্তিদায়ী উদ্দীপক অর্থাৎ খাদ্য ইঁদুরটিকে প্রতিক্রিয়া করতে বাধ্য করে। শক্তিদায়ী উদ্দীপকের অনুপস্থিতিতে ইঁদুরটির সক্রিয়তামূলক আচরণ বাধাপ্রাপ্ত হবে এবং ধীরে ধীরে তা হ্রাস পাবে। এই ধরণের অনুবর্তনে যথাযথ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলেই শক্তিদায়ী উদ্দীপক উপস্থিত করা হয়। সক্রিয় অনুবর্তনের সাংগঠনিক রূপটি হল - S1 > R1 > S2 . 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


Share
Tweet
Pin
Share
No comments

সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তন কাকে বলে ? সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তনের বৈশিষ্টগুলি আলোচনা কর। 

সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তনের সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট :- 

Definition and features of Operant Conditioning .( In Bengali ) 




সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তন :- 


বি এফ স্কিনার 1935 সালে Science of Human Behaviour নামক এক গ্রন্থে তিনি তাঁর গবেষণার বিভিন্ন বিষয় ও নীতিগুলিকে প্রকাশ করেন। স্কিনারের মতে প্রাণীর আচরণ দুই প্রকার - রেসপনডেন্ট ও অপারেন্ট। যেসকল আচরণের নির্দিষ্ট উদ্দীপক আছে - তাদের রেসপনডেন্ট আচরণ বলে। আবার যে সকল আচরণের নির্দিষ্ট উদ্দীপক নেই , যেকোনো উদ্দীপকের সঙ্গে তার সম্পর্ক স্থাপন করা যেতে পারে - সেই সকল আচরণকে বলে অপারেন্ট বা সক্রিয় আচরণ। 
অপারেন্ট কথাটির অর্থ হল ফলোৎপাদনের জন্য প্রক্রিয়া। এই জাতীয় অনুবর্তন প্রক্রিয়ায় ফললাভের জন্য প্রাণীর সক্রিয়তা অপরিহার্য। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তনের বৈশিষ্ট :- 


১. পূর্ব - প্রস্তুতি :-
অপারেন্ট অনুবর্তন প্রক্রিয়ায় ফলোৎপাদনের জন্য প্রাণীর পূর্ব প্রস্তুতি একান্তভাবে প্রয়োজন। পূর্ব প্রস্তুতির মাধ্যমে প্রাণীর আচরণগুলিকে সুবিন্যস্ত করা হয়। এইভাবে আচরণ সুবিন্যস্ত না করলে ফলোৎপাদনকারী অনুবর্তন সম্ভব নয়। স্কিনার তাঁর পরীক্ষায় ইঁদুরটিকে '' স্কিনার বক্স '' এর মধ্যে প্রবেশ করিয়ে ইঁদুরটির মধ্যে যথাযোগ্য আচরণ সৃষ্টির প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিলেন। শিশুদের মধ্যেও এইভাবে অপারেন্ট অনুবর্তন ঘটাতে হলে পূর্ব প্রস্তুতির মাধ্যমে প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে। 

২. শক্তিদায়ী উদ্দীপকের উপস্থিতি :- 
শক্তিদায়ী উদ্দীপক হল সেই ধরণের উদ্দীপক যা প্রাণীর সক্রিয় আচরণের পর প্রাণীর চাহিদা পূর্ণ করে। তাই সক্রিয় অনুবর্তন সংগঠন করতে শক্তিদায়ী উদ্দীপক একান্ত প্রয়োজন। এই শক্তিদায়ী উদ্দীপক দুই  প্রকার - ধনাত্মক ও ঋণাত্মক। ধনাত্মক উদ্দীপক হল ব্যক্তির চাহিদা তৃপ্তকারী উদ্দীপক যা ব্যক্তিকে কোনো কাজে সক্রিয় হতে উৎসাহিত করে। অন্যদিকে ঋণাত্মক উদ্দীপক বিশেষ কোনো আচরণের পরিবর্তে গ্রহণযোগ্য আচরণ সম্পন্ন করতে প্রাণীকে উৎসাহিত করে। 

৩. শক্তিদায়ী উদ্দীপকের স্থায়িত্বের উপর অনুবর্তনের নির্ভরতা :- 
সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তন প্রক্রিয়ায় শক্তিদায়ী উদ্দীপকের স্থায়িত্বের উপর অনুবর্তন নির্ভর করে। শক্তিদায়ী উদ্দীপকের উপস্থিতির অভাবে প্রাণী তার উদ্দেশ্যমুখী আচরণ সম্পাদন বন্ধ করে দেয়। তাই শক্তিদায়ী উদ্দীপককে যত বেশি সময় ধরে উপস্থিত করা হবে , শিখনও তত বেশি স্থায়ী হবে। 

৪. অনুবর্তনের অবলুপ্তি ও পুনরাবির্ভাব :- 
শক্তিদায়ী উদ্দীপকের উপস্থিতির অভাবে যেমন অনুবর্তনের অবলুপ্তি ঘটে ; ঠিক তেমনভাবেই শক্তিদায়ী উদ্দীপকটিকে পুনরায় উপস্থিত করলে অনুবর্তন প্রক্রিয়ার পুনরাবির্ভাব ঘটে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৫. প্রাণীর সক্রিয়তা অপরিহার্য :- 
অপারেন্ট অনুবর্তন প্রক্রিয়ায় প্রাণীর সক্রিয়তা অপরিহার্য। এই ধরণের অনুবর্তনে প্রাণী শক্তিদায়ী উদ্দীপকের পরিপ্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণের জন্য সক্রিয় আচরণ শুরু করে এবং ফলোৎপাদন ঘটলে প্রাণী তৃপ্ত হয়। 

৬. সিডিউল :- 
সক্রিয় উদ্দীপক ও প্রাণীর সক্রিয়তা নির্ভর করে শক্তিদায়ী উদ্দীপকের স্থায়িত্বের উপর। অনুবর্তিত আচরণ ধরে রাখতে হলে নির্দিষ্ট সময়ে শক্তিদায়ী উদ্দীপককে উপস্থিত করতে হবে। শক্তিদায়ী উদ্দীপক নির্দিষ্ট নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত করার প্রক্রিয়াকে সিডিউল বলে। 

৭. পুনঃসংযোজনের অপ্রয়োজনীয়তা :- সক্রিয় অনুবর্তনের ক্ষেত্রে অনেক সময় উদ্দীপকের পুনঃসংযোজন ছাড়াই স্বাভাবিক আচরণ সম্পাদিত হচ্ছে। যেমন স্কিনারের পরীক্ষায় দেখা গেছে , ইঁদুরটিকে বেশ কয়েকবার খাদ্যের ট্রে - তে খাবার না দিয়ে দেখা যায় ইঁদুরটি আর লিভারে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করছে না। এরপর ইঁদুরটিকে স্কিনার বক্স থেকে ইঁদুরটিকে বের করে নেওয়া হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে ইঁদুরটিকে পুনরায় বক্সে প্রবেশ করালে দেখা যায় ইঁদুরটি আবার লিভারে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করছে। 

৮. প্রাণীর সক্রিয়তার পর উদ্দীপকের উপস্থিতি :- 
সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তনে প্রাণীর সক্রিয়তার পর শক্তিদায়ী উদ্দীপকটিকে উপস্থিত করা হয়। এই শক্তিদায়ী উদ্দীপক উপস্থিত করা হয় মূলতঃ পুনঃসম্পাদনের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলার জন্য। স্কিনারের পরীক্ষায় ইঁদুরের ট্রে - তে খাবার আসে ইঁদুরটি সক্রিয় হয়ে লিভারে চাপ দেওয়ার পর।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো
          
    
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের পার্থক্য। 

সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের তুলনামূলক আলোচনা। 

Difference between flexible and rigid constitution. ( In Bengali ) 



সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের পার্থক্য :- 


১. প্রকৃতিগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- সুপরিবর্তনীয় সংবিধান লিখিত বা অলিখিত উভয়ই হতে পারে। যেমন ব্রিটেন ও নিউজিল্যান্ড - উভয় রাষ্ট্রের সংবিধানই সুপরিবর্তনীয় হলেও ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত এবং নিউজিল্যান্ডের সংবিধান লিখিত। কিন্তু দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান সর্বদা লিখিত হয় - এই দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের একটি অপরিহার্য বৈশিষ্ট। 

২. সংবিধান সংশোধনের পদ্ধতিগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- সুপরিবর্তনীয় সংবিধান সংশোধন খুব সহজেই করা যায়। আইনসভাতে সাধারণ আইন প্রণয়নের পদ্ধতিতে বা সাধারণ সংখ্যা গরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধন করা যায়। কিন্তু দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে বিশেষ ও জটিল পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. উৎসগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- সুপরিবর্তনীয় সংবিধানে সাধারণ আইন ও সংবিধানগত আইনের উৎস এক। সাধারণত প্রচলিত প্রথা , রীতিনীতি , জনগণের দাবী , সরকারের ইচ্ছা - ইত্যাদির ভিত্তিতে সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের আইনগুলি প্রণীত হয়। 
কিন্তু দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের সাধারণ আইন ও সাংবিধানিক আইনের উৎসগত ভিত্তি পৃথক। সাংবিধানিক আইনের উৎস হল গণপরিষদ এবং সাধারণ আইনের উৎস হল আইনসভা। 

৪. মর্যাদাগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- সুপরিবর্তনীয় সংবিধান নমনীয় ও আইনগুলি সহজেই পরিবর্তন করা যায়। ফলে , সাধারণ আইন বা সাংবিধানিক আইন - কোনোটিই বিশেষ কোনো মর্যাদার অধিকারী হয়না। কিন্তু দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান সহজেই পরিবর্তন করা যায়না ; ফলে সরকার বা আইনসভা নিজের ইচ্ছামত সংবিধান পরিবর্তন করতে পারেনা। তাই দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান অনেক বেশি মর্যাদাযুক্ত। 

৫. আইনসভার প্রাধান্যের প্রশ্নে পার্থক্য :- সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের ক্ষেত্রে আইনসভা সার্বভৌম ক্ষমতা ভোগ করে থাকে। কিন্তু , দুষ্পরিবর্তনীয় সাংবিধানিক ব্যবস্থায় আইনসভা সংবিধানের অধীন। এখানে সংবিধান সকল ক্ষমতার উর্দ্ধে। 

৬. সংবিধানের প্রাধান্যের প্রশ্নে পার্থক্য :- সুপরিবর্তনীয় সাংবিধানিক ব্যবস্থায় সরকার ও আইনসভা নিজেদের প্রয়োজনমত , ইচ্ছামত ও নিজেদের স্বার্থে যেকোনো সময়ে সংবিধান সংশোধন করে। এক্ষেত্রে সংবিধান সরকার ও আইনসভার হাতের পুতুলে পরিণত হয়। কিন্তু দুষ্পরিবর্তনীয় সাংবিধানিক ব্যবস্থায় সরকার ও আইনসভাকে সংবিধান কর্তৃক নির্দিষ্ট ক্ষমতা ও এক্তিয়ারের মধ্যে থেকে সংবিধান সংশোধন করতে হয়। এই ব্যবস্থায় সংবিধান হল দেশের সর্বোচ্চ আইন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. বিচার বিভাগের প্রাধান্যের ক্ষেত্রে পার্থক্য :- সুপরিবর্তনীয় সাংবিধানিক ব্যবস্থায় আইনসভা সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হয়। সংবিধানের ব্যখ্যা বা বৈধতা বিচারের ক্ষমতা বিচার বিভাগের থাকেনা। কিন্তু দুষ্পরিবর্তনীয় সাংবিধানিক ব্যবস্থায় বিচার বিভাগের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত থাকে। সংবিধানকে ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা ও যেকোনো আইনকে অবৈধ ঘোষণা করার অধিকার বিচার বিভাগের থাকে। 

৮. গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পার্থক্য :- সুপরিবর্তনীয় সংবিধান নাগরিকদের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করার ক্ষেত্রে উপযুক্ত নয়। কেননা এই ধরণের সাংবিধানিক ব্যবস্থায় সরকার নিজেদের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে নাগরিকদের অধিকার সংকুচিত করে। 
কিন্তু দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান যেহেতু জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংশোধিত হয় এবং সরকার ইচ্ছা করলেই সংবিধান পরিবর্তন করতে পারেনা , তাই দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার পক্ষে উপযুক্ত। 

৯. সংবেদনশীলতার ক্ষেত্রে পার্থক্য :- সুপরিবর্তনীয় সংবিধান জনগণের আশা - আকাঙ্খা ও বিভিন্ন দাবী - ইত্যাদিকে খুব সহজেই সাংবিধানিক মর্যাদা প্রদান করতে পারে। তাই সুপরিবর্তনীয় সংবিধান সংবেদনশীল। 
কিন্তু দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান হঠাৎ করে তৈরী হওয়া জনগণের উচ্ছাস বা আশা আকাঙ্খার প্রতি সংবেদনশীল নয়। নির্দিষ্ট সাংবিধানিক পদ্ধতিতে , জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করা হয়। এইভাবে জনগণের আশা - আকাঙ্খা অপূর্ণ থেকে গেলে তা বিক্ষোভের সম্ভাবনা তৈরী করে। 

১০. যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় উপযোগিতার প্রশ্নে পার্থক্য :- সাধারণভাবে পরিবর্তনশীল চরিত্রের জন্য সুপরিবর্তনীয় সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার পক্ষে উপযুক্ত নয়। 
কিন্তু দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান স্থিতিশীল এবং তা সরকারি বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে ক্ষমতা বন্টন করে। তাই দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার পক্ষে উপযুক্ত।        

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো   


Share
Tweet
Pin
Share
No comments

দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি আলোচনা কর। 

দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক। 

দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের দোষ - গুন। 

Advantages and disadvantages of Rigid Constitution. ( In Bengali )


 


দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের ধারণা :- 


লর্ড ব্রাইস সংবিধান সংশোধনের ভিত্তির ওপর সংবিধানকে দুইভাগে ভাগ করেন - সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান। যে সকল সংবিধানকে সাধারণ পদ্ধতিতে পরিবর্তন বা আইন প্রণয়ন করা যায়না - সেইসকল সংবিধানকে দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান বলা হয়। এই ধরণের সংবিধানে আইন প্রবর্তন বা সংশোধনের ক্ষেত্রে বিশেষ ও জটিল পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। 
যেসকল রাষ্ট্রে দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান প্রচলিত আছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সুইজারল্যান্ড। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের সুবিধা :- 


১. স্থায়িত্ব :- দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান সাধারণভাবে স্থায়ী প্রকৃতির। কোনো সাধারণ পদ্ধতি অবলম্বন করে দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান পরিবর্তন করা যায়না। ফলে , হঠাৎ করে তৈরী হওয়া জনগণের উচ্ছাস ও আবেগ ; বা সরকারের নিজেদের স্বার্থ পূরণের উদ্দেশ্যে সহজে সংবিধান সংশোধন করা যায়না। তাই দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান স্থায়ী প্রকৃতির। 

২. যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার ক্ষেত্রে উপযুক্ত :- যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয় না হলে তা প্রশাসনিক পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশেষ জটিলতা সৃষ্টি করে। দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান কেন্দ্র সরকার , রাজ্য সরকার ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ক্ষমতা ও কার্যাবলীর বন্টন করে। ফলে কোনো বিভাগের ক্ষেত্রেই দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয়না। 

৩. কেন্দ্রীয় সরকারের স্বৈরাচারী প্রবণতা রোধ :- দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান কেন্দ্রীয় সরকারের স্বৈরাচারী প্রবণতা রোধ করতে সাহায্য করে। সংবিধানের দুষ্পরিবর্তনীয় প্রকৃতির ফলে সরকার নিজেদের স্বার্থে খেয়াল খুশিমত সংবিধান পরিবর্তন করতে পারেনা। ফলে সরকারের পক্ষে নাগরিকদের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ বা রাজ্য সরকারগুলির ক্ষমতা সংকোচন করা সম্ভব হয়না। 

৪. সাংবিধানিক আইনের প্রাধান্য :- দুষ্পরিবর্তনীয় সাংবিধানিক ব্যবস্থায় প্রচলিত ও সাধারণ আইনের পরিবর্তে সাংবিধানিক আইনকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। ফলে রাষ্ট্রপরিচালনা জটিলতামুক্ত হয় এবং সরকারের প্রতিটি বিভাগ ও প্রতিষ্ঠান সংবিধান অনুসারে নিজেদের ক্ষমতা ভোগ করে ও কর্তব্য পালন করে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৫. নাগরিক অধিকারের সুরক্ষা :- দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানে নাগরিকদের অধিকার লিখিতভাবে সংযোজিত থাকে। ফলে সরকার নিজেদের স্বার্থ পূরণের উদ্দেশ্যে সংবিধান পরিবর্তন করে কোনোভাবেই নাগরিকদের অধিকার সংকুচিত করতে পারেনা। 

৬. সুস্পষ্টতা :- দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানে নাগরিক , সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানগুলির দায়িত্ব , কর্তব্য ও ক্ষমতা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে। ফলে প্রতিটি বিভাগ নির্দিষ্টভাবে নিজেদের ক্ষমতা ভোগ করে ও দায়িত্ব পালন করে। অন্যদিকে নাগরিকদের অধিকারগুলি সুস্পষ্টরূপে উল্লেখ থাকার ফলে নাগরিকেরা নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকতে পারে। 

৭. সংবিধানের প্রাধান্য ও মর্যাদা :- দুষ্পরিবর্তনীয় সাংবিধানিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সংবিধানের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত থাকে। সরকার ইচ্ছা করলেই সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিবর্তন ঘটাতে পারেনা। ফলে দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান মর্যাদার দিক দিয়ে সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের তুলনায় এগিয়ে থাকে। 

৮. সাংবিধানিক স্বাতন্ত্র্য :- প্রতিটি সংবিধানের নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট থাকে। প্রতিটি সংবিধান নির্দিষ্ট আদর্শের ভিত্তিতে রচিত হয়। দুষ্পরিবর্তনীয় সাংবিধানিক ব্যবস্থায় , সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয় হওয়ার কারণে সংবিধান তার নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়। 

দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের অসুবিধা :- 


১. পরিবর্তনশীলতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় :- প্রতিটি সমাজ , অর্থনীতি , রাজনীতি - ইত্যাদি সদা পরিবর্তনশীল। কিন্তু সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয় হলে তা পরিবর্তনশীলতার সঙ্গে সামঞ্জস্যবিধান করে চলতে পারেনা। ফলে রাষ্ট্রীয় পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। 

২. বিরোধ ও বিক্ষোভের সম্ভাবনা তৈরির আশঙ্কা :- পরিবর্তনশীলতার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান পরিবর্তন করা সম্ভব হয়না। ফলে সাংবিধানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে জনগণের আশা - আকাঙ্খা পূরণ না হলে তা বিরোধ ও বিক্ষোভের সম্ভাবনা তৈরী করে এবং অরাজকতা ও নৈরাজ্যের পথ প্রশস্ত করে।  

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. বিচার বিভাগের প্রাধান্য :- দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের রক্ষাকর্তা ও ব্যখাকর্তা হল বিচারবিভাগ। ফলে দুষ্পরিবর্তনীয় সাংবিধানিক ব্যবস্থায় সংবিধান কার্যত বিচার বিভাগের নিজস্ব সম্পত্তিতে পরিণত হয়। বিচার বিভাগ সংবিধানকে ব্যাখ্যা করতে পারে ও যেকোনো আইনকে অবৈধ বলে ঘোষণা করতে পারে। এইভাবে দুষ্পরিবর্তনীয় সাংবিধানিক ব্যবস্থায় বিচার বিভাগের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। 

৪. সংকটকালীন সময়ে কার্যকর নয় :- যেকোনো সংকটকালীন বা জরুরি অবস্থায় দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ , আইন প্রণয়ন বা সংশোধনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের দুষ্পরিবর্তনীয় প্রকৃতির জন্য দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব হয়না। তাই জরুরি অবস্থার সময় দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান কার্যকর নয়। 

৫. রক্ষনশীলতা :- দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান রক্ষনশীলতার প্রতীক। এই ধরণের সংবিধান পরিবর্তন করা বা নতুন আইন প্রবর্তন করা অত্যন্ত জটিল ও সময়সাপেক্ষ বিষয়। তাই দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান অনেক সময় জাতি ও আধুনিকতার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। 

৬. প্রথা - রীতিনীতি - ইত্যাদির ভিত্তিহীনতা :- দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানে সাংবিধানিক আইনগুলিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। যে সকল প্রথা - রীতিনীতি , আদর্শ - ইত্যাদি জাতীয় জীবনের অঙ্গ হয়ে থাকে - তারা এই ধরণের সাংবিধানিক ব্যবস্থায় কোনো গুরুত্ব পায়না। আবার সকল বিষয়ে পূর্ব হতেই আইন লিপিবদ্ধ থাকেনা। এরূপ পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।     

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো             

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি আলোচনা কর। 

সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক। 

সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের দোষ - গুণ। 

Advantages and disadvantages of flexible constitution. ( In Bengali ) 




সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের ধারণা :- 


পরিবর্তনশীলতার ভিত্তিতে লর্ড ব্রাইস সংবিধানকে সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় - এই দুই ভাগে বিভক্ত করেছেন। সুপরিবর্তনীয় সংবিধান সাধারণ আইন প্রণয়নের মাধ্যমে রচিত হয়। আইনসভায় উপস্থিত সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থনে খুব সহজেই কোনো বিল আইনে পরিণত হয় বা কোনো আইন সংশোধন করা হয়। কাজেই , আইন প্রণয়ন বা সংশোধনের জন্য কোনো বিশেষ বা জটিল পদ্ধতি অনুসৃত হয়না। 
ব্রিটেন , নিউজিল্যান্ড - ইত্যাদি রাষ্ট্রে সুপরিবর্তনীয় সংবিধান প্রচলিত আছে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের সুবিধা :- 


১. নমনীয়তা :- সুপরিবর্তনীয় সাধারণত নমনীয় প্রকৃতির হয়। এই ধরণের সংবিধান পরিবর্তনশীল সামাজিক , অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সহজেই পরিবর্তন করা যায় বা নতুন আইন প্রবর্তন করা যায়। নমনীয় প্রকৃতির কারণে দ্রুত পরিবর্তনশীল আর্থ - সামাজিক কাঠামোয় সুপরিবর্তনীয় সংবিধান গ্রহণযোগ্য। 

২. গতিশীলতা ও যুগোপোযোগিতা :- সমাজ ব্যবস্থার সাথে সাথে মানুষের চিন্তাধারা , আশা - আকাঙ্খা - ইত্যাদিও পরিবর্তনশীল। যেহেতু সুপরিবর্তনীয় সংবিধান সহজেই পরিবর্তনশীল , তাই এই ধরণের সংবিধান মানুষের আশা আকাঙ্খার সাথে সামঞ্জস্য বজায় রেখে প্রয়োজনীয় আইন প্রবর্তন বা পরিবর্তন করতে পারে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে সঙ্গতি রক্ষা :- জাতীয় জীবনের সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ব্যবস্থাও সদা পরিবর্তনশীল। এই পরিবর্তনশীল আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির সাথে সঙ্গতি রেখে সুপরিবর্তনীয় সংবিধান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে সঙ্গতিবিধান করে। 

৪. জরুরি অবস্থার পক্ষে উপযুক্ত :- যেকোনো জরুরি অবস্থায় দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আইন প্রণয়ন বা সংশোধনের প্রয়োজন হয়। যেহেতু সুপরিবর্তনীয় সংবিধান সহজেই পরিবর্তন করা যায় , সেহেতু জরুরি অবস্থার পক্ষে সুপরিবর্তনীয় সংবিধান অত্যন্ত উপযুক্ত। 

৫. বিক্ষোভের সম্ভাবনা হ্রাস :- সুপরিবর্তনীয় সংবিধান যেহেতু মানুষের পরিবর্তনশীল আশা - আকাঙ্খার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে খুব সহজেই পরিবর্তন করা যায় , তাই এই ধরণের সাংবিধানিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার উপর বিক্ষোভের সম্ভাবনা হ্রাস পায়। 

৬. সরকারি কাজকর্মের গতিশীলতার পক্ষে সহায়ক :- সরকারি কাজকর্ম পরিচালনা করতে অনেক সময় গতিশীল সিদ্ধান্ত ও আইনের প্রয়োজন হয়। আধুনিক জনকল্যাণকামী রাষ্ট্রগুলিতে তাই সরকারি কাজকর্মের পরিধি ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছে। জনকল্যাণকারী বিভিন্ন আইন প্রণয়ন ও ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে সংবিধান সুপরিবর্তনীয় হওয়াই বাঞ্চনীয়। 

সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের অসুবিধা :- 


১. সাংবিধানিক স্বকীয়তার অনুপস্থিতি :- প্রতিটি সংবিধানের নিজস্ব কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট থাকে এবং তা বিভিন্ন আদর্শ অনুসরণ করে রচিত হয়। কিন্তু পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির সঙ্গে সংবিধান ঘন ঘন পরিবর্তিত হলে সংবিধান তার মৌলিক আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয় ও নিজস্ব বৈশিষ্টগুলির বিলুপ্তি ঘটে। 

২. স্থায়িত্বের অভাব :- সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের আইনগুলি স্থায়ী নয়। পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির ভিত্তিতে বা সরকারের স্বার্থে সংবিধান পরিবর্তিত হয়। ফলে সুপরিবর্তনীয় সাংবিধানিক ব্যবস্থায় আইন সংক্রান্ত ব্যবস্থার স্থায়িত্বের অভাব ঘটে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. নাগরিক ও গণতান্ত্রিক অধিকারের রক্ষাকবচ নয় :- সুপরিবর্তনীয় সংবিধান নাগরিক অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকারগুলির রক্ষাকবচ নয়। কেননা এই ধরণের সংবিধান সরকার কর্তৃক খুব সহজেই পরিবর্তিত হয়। অনেক সময়ই দেখা যায় সরকার নিজ স্বার্থ সুরক্ষিত করতে নাগরিক অধিকারগুলি সংকুচিত করে। 

৪. মর্যাদার অভাব :- সুপরিবর্তনীয় সংবিধান যেহেতু সরকার কর্তৃক খুব সহজেই পরিবর্তিত হয় এবং আইনগুলি স্থায়ী হয়না ; তাই সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের আইনগুলি দুষ্পরিবর্তনীয় আইনের মত মর্যাদার অধিকারী হয়না ও জনগণ আইনগুলির প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা রাখতে পারেন না।  

৫. সরকারি কর্তৃপক্ষের স্বৈরাচারী হওয়ার আশঙ্কা :- সুপরিবর্তনীয় সাংবিধানিক ব্যবস্থায় সরকারের হাতে সংবিধান সংশোধন ও আইন প্রণয়নের সকল ক্ষমতা থাকে। ফলে সরকার নিজেদের ইচ্ছামত ও নিজ স্বার্থে সংবিধান সংশোধন ও আইন প্রণয়ন করতে পারে। ফলে সুপরিবর্তনীয় সাংবিধানিক ব্যবস্থায় সরকারের স্বৈরাচারী হওয়ার আশঙ্কা থাকে। 

৬. যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অনুপযুক্ত :- যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা পরিচালনা করতে সংবিধান স্থায়ী হওয়া প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সংবিধান সুপরিবর্তনীয় হলে কেন্দ্রীয় সরকার অঙ্গরাজ্যের সকারগুলির ক্ষমতা সংকুচিত করতে পারে ; রাজনৈতিক কাঠামোর পরিবর্তন ঘটিয়ে সকল ক্ষমতা নিজ হাতে কেন্দ্রীভূত করতে পারে। ইত্যাদি কারণে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার পক্ষে সুপরিবর্তনীয় সংবিধান উপযুক্ত নয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

      
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের পার্থক্য। 

লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের তুলনামূলক আলোচনা। 

Difference between written and unwritten constitution. ( In Bengali ) 




১. লিখিত সংবিধান প্রশাসনিক বা বিচারগত ক্ষেত্রে দলিল আকারে পেশ করা যায়। কিন্তু অলিখিত সংবিধান কোনোভাবেই দলিল আকারে পেশ করা যায়না। ফলে রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ডে লিখিত সংবিধান অলিখিত সংবিধানের তুলনায় অধিক ক্ষমতা , মর্যাদা ও গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে। 

২. উৎসগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- লিখিত সংবিধান গৃহীত হয় সাধারণতঃ গণপরিষদ , কনভেনশন বা আইনসভা কর্তৃক। কিন্তু অলিখিত সংবিধান হল দীর্ঘদিনের প্রচলিত প্রচলিত প্রথা , রীতিনীতি , ধর্মীয় বিশ্বাস , রাষ্ট্রীয় আদর্শ ও মূল্যবোধ , আচার - আচরণ , আদালতের বিভিন্ন রায় , ঐতিহ্য , নজির ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. রচনাকাল সংক্রান্ত পার্থক্য :- লিখিত সংবিধানের রচনাকাল সর্বদা নির্দিষ্ট থাকে বা তার রচনাকাল নির্দিষ্টরূপে উল্লেখ করা থাকে। প্রতি আইন নির্দিষ্ট তারিখ সহ উল্লেখ করা থাকে। কিন্তু অলিখিত সংবিধানের ক্ষেত্রে আইনগুলি দীর্ঘদিনের বিবর্তনের ফলে গড়ে ওঠে। তাই এগুলির রচনাকাল নির্দিষ্ট নয়। 

৪. সংবিধান সংশোধন পদ্ধতির ক্ষেত্রে পার্থক্য :- লিখিত সংবিধানের সংশোধন পদ্ধতি সাধারণত জটিল। আইনসভাতে নির্দিষ্ট সদস্যদের উপস্থিতিতে জটিল প্রক্রিয়ার সাহায্যে লিখিত সংবিধান সংশোধন করা যায়। কিন্তু অলিখিত সংবিধান খুব সহজেই সরকার কর্তৃক সংশোধিত হয়। তাই লিখিত সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয় এবং অলিখিত সংবিধান সুপরিবর্তনীয়। 

৫. প্রাধান্যের প্রশ্নে পার্থক্য :- লিখিত সংবিধানের আইন হল দেশের সর্বোচ্চ আইন। এই ধরণের আইন মেনে চলতে দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বাধ্য থাকে। কিন্তু অলিখিত আইনের ক্ষেত্রে আইনগুলি লংঘিত হলে তা আদালত কর্তৃক বলবৎযোগ্য নয়। লিখিত আইন ও অলিখিত আইনের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হলে লিখিত আইনগুলির প্রাধান্যই আদালত কর্তৃক স্বীকৃত হয়। 

৬. রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা বন্টনের প্রশ্নে পার্থক্য :- লিখিত সংবিধানে রাষ্ট্রের প্রতিটি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা ও কার্যাবলী বন্টন করে দেওয়া থাকে। কিন্তু অলিখিত সংবিধান হল প্রথা ও রীতিনীতি নির্ভর। তাই অলিখিত সংবিধানে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্ব ও ক্ষমতা সুনির্দিষ্টভাবে বন্টিত থাকে না। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. নাগরিক স্বাধীনতা ও অধিকার রক্ষার প্রশ্নে পার্থক্য :- লিখিত সংবিধান সরকার সহজে পরিবর্তন করতে পারেন না। ফলে লিখিত সংবিধান নাগরিকদের স্বাধীনতা ও অধিকার রক্ষার প্রশ্নে অধিক কার্যকরী। কিন্তু সংবিধান অলিখিত হলে সরকার খুব সহজেই নাগরিক অধিকার সংকুচিত করে নিজেদের স্বার্থ সুনিশ্চিত করে। 

৮. মর্যাদার প্রশ্নে পার্থক্য :- যেহেতু লিখিত সংবিধানের আইনগুলি সরকার কর্তৃক সহজে পরিবর্তিত হয়না এবং আইনগুলি স্থায়ী তাই লিখিত সংবিধানের আইন অলিখিত সংবিধানের তুলনায় অনেক বেশি মর্যাদাশীল। কিন্তু অলিখিত সংবিধানের আইনগুলি অস্থায়ী প্রকৃতির এবং তা সহজেই সরকার কর্তৃক পরিবর্তিত হয় - তাই অলিখিত সংবিধানের আইনগুলি লিখিত সংবিধানের আইনের মত মর্যাদার অধিকারী হতে পারেনা। 

৯. যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় কার্যকারিতার প্রশ্নে পার্থক্য :- যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় রাষ্ট্রীয় সকল বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা ও পার্থক্য সুনির্দিষ্টভাবে বন্টিত হওয়া প্রয়োজন। তা না হলে সরকারের বিভিন্ন বিভাগগুলির মধ্যে বিরোধের সম্ভাবনা দেখা দেবে। তাই যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় লিখিত সংবিধান কার্যকরী ;  কিন্তু অলিখিত সংবিধান কোনোভাবেই কাম্য নয়। 

১০. বিচার বিভাগের প্রাধান্যের প্রশ্নে পার্থক্য :- লিখিত সাংবিধানিক ব্যবস্থায় সংবিধানকে ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা থাকে বিচার বিভাগের। বিচার বিভাগকে সংবিধানের রক্ষাকর্তা বলা হয়। কিন্তু অলিখিত সংবিধানে সরকার ও আইনসভার হাতে আইন প্রণয়ন ও পরিবর্তনের সকল ক্ষমতা নিহিত থাকে। ফলে অলিখিত সাংবিধানিক ব্যবস্থায় বিচার বিভাগের প্রাধান্য থাকেনা। 

১১. গতিশীলতার প্রশ্নে পার্থক্য :- লিখিত সংবিধান সাধারণত দুষ্পরিবর্তনীয়। তাই লিখিত সংবিধান আপাতদৃষ্টিতে গতিশীল নয়। কিন্তু অলিখিত সংবিধানের ক্ষেত্রে পরিবর্তনশীল সমাজ , অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থা ; জনগণের আশা - আকাঙ্খা - ইত্যাদির পরিপ্রেক্ষিতে সহজেই পরিবর্তন করা হয়। তাই অলিখিত সংবিধান গতিশীল। 

১২. প্রথা , ঐতিহ্য , রীতিনীতি - ইত্যাদির প্রাধান্যের প্রশ্নে পার্থক্য :- লিখিত সংবিধানে প্রথা , রীতিনীতি ইত্যাদির তুলনায় গণপরিষদ বা আইনসভা কর্তৃক গৃহীত আইনগুলিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু অলিখিত সাংবিধানিক ব্যবস্থায় প্রথা , রীতিনীতি - ইত্যাদিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়।       

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো          

       
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

অলিখিত সংবিধানের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি আলোচনা কর। 

অলিখিত সংবিধানের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলি উল্লেখ কর। 

অলিখিত সংবিধানের দোষ - গুন আলোচনা কর। 

Merits and demerits of the unwritten constitution. ( In Bengali ) 




অলিখিত সংবিধানের ধারণা :- 


অলিখিত সংবিধান লিখিত সংবিধানের মত নির্দিষ্ট পরিকল্পনা , জাতীয় আদর্শ , রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ - ইত্যাদির ভিত্তিতে রচিত হয়না। এমনকি , অলিখিত সংবিধান কোনো নির্দিষ্ট রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ , গণপরিষদ বা আইনসভা কর্তৃক রচিত হয়না। সুতরাং অলিখিত সংবিধান হল - দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা সামাজিক ও আইনগত রীতিনীতি , প্রথা - পদ্ধতি , ঐতিহ্য , বিভিন্ন সামাজিক আচার আচরণ - ইত্যাদির মাধ্যমে অলিখিত সংবিধানের ভিত্তি রচিত হয়। 
গ্রেট ব্রিটেনে অলিখিত সংবিধানের ব্যাপক প্রকলন আছে। লিখিত সংবিধানের সাংবিধানিক ব্যবস্থাদির তুলনায় ব্রিটেনে প্রথা ও রীতিনীতির উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

অলিখিত সংবিধানের সুবিধা :- 


১. নমনীয়তা :- অলিখিত সংবিধানের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল অলিখিত সংবিধান নমনীয়। যেকোনো ধরণের পরিবর্তনশীল রাজনৈতিক , সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অলিখিত সংবিধানের পরিবর্তন ঘটানো যায়। ফলে জনগণের আশা আকাঙ্খা পূরণ হয় এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়। 

২. সুপরিবর্তনীয় :- অলিখিত সংবিধান সুপরিবর্তনীয়। তাই যেকোনো জরুরি অবস্থায় সংবিধানের দ্রুত পরিবর্তন ঘটানো যায় বা প্রয়োজনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নতুন আইনের উদ্ভব ঘটানো যায়। ফলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা অলিখিত সংবিধানকে রাষ্ট্রীয় শক্তির ভিত্তি বলে মনে করেন। 

৩. বিরোধের সম্ভাবনা হ্রাস :- সংবিধান লিখিত ও দুষ্পরিবর্তনীয় হলে তা জনগণের আশা আকাঙ্খার সাথে সামঞ্জস্য বিধান করে সবসময় চলতে পারেনা। কিন্তু অলিখিত সংবিধান নমনীয় ও সুপরিবর্তনীয় হওয়ায় তা জনগণের আশা আখাঙ্খার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে। ফলে নাগরিক ও রাষ্ট্রের মধ্যে বিরোধের সম্ভাবনা হ্রাস পায়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৪. গতিশীলতা :- যেকোনো সংবিধানের কার্যকারিতা নির্ভর করে তার গতিশীলতার উপর। অলিখিত সংবিধান যেহেতু নমনীয় ও সুপরিবর্তনীয় , তাই অলিখিত সংবিধান নিজের গতিশীল চরিত্র বজায় রাখতে পারে। 

৫. জরুরি অবস্থার পক্ষে উপযুক্ত :- রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থার উদ্ভব ঘটলে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও আইন প্রণয়নের প্রয়োজন হয়। অলিখিত সংবিধান নিজের নমনীয় বৈশিষ্টের ফলে জরুরি অবস্থার সময় অধিক উপযুক্ত বলে মনে করা হয়। 

৬. প্রচলিত প্রথা , রীতিনীতি - ইত্যাদির উপর গুরুত্ব আরোপ :- অলিখিত সংবিধানে প্রচলিত সামাজিক , রাজনৈতিক প্রথা , রীতিনীতি , আচার - আচরণ , বিশ্বাস ও আদর্শ , জাতীয় মূল্যবোধ ইত্যাদিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়। ফলে অলিখিত সংবিধান রাষ্ট্রীয় জীবন ও ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্য বিধান করতে পারে। 

৭. জটিলতামুক্ত :- অলিখিত সংবিধান সর্বপ্রকারের জটিলতামুক্ত হয়ে বাস্তবতার ভিত্তিতে প্রচলিত রীতিনীতি , প্রথা - ইত্যাদির ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনায় সহায়তা করে। ফলে রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্র পরিচালনার ক্ষেত্রে জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়না। 

অলিখিত সংবিধানের অসুবিধা :- 


১. স্থায়িত্বের অভাব :- রাষ্ট্র পরিচালক বা শাসকদল নিজের নিজের প্রয়োজন ও সুবিধামতো নিয়ম নীতি পরিবর্তন করে থাকেন। ফলে অলিখিত সংবিধানের আইন ও নির্দেশগুলি স্থায়ী হয়না। জনগণের আশা আকাঙ্খা ও সরকারের ইচ্ছা - অনিচ্ছার সাথে সাথে অলিখিত সংবিধান ঘন - ঘন পরিবর্তিত হতে থাকে। 

২. শাসকের স্বৈরাচারী হয়ে ওঠার আশঙ্কা :- অলিখিত সংবিধান সরকারের হাতেই পরিবর্তিত হয়। সরকার নিজেদের ইচ্ছামতো সংবিধান পরিবর্তন করতে পারে। ফলে অলিখিত সাংবিধানিক ব্যবস্থায় সরকারের স্বৈরাচারী হয়ে ওঠার আশঙ্কা থাকে। 

৩. সুস্পষ্টতা ও সুনির্দিষ্টতার অভাব :- অলিখিত সংবিধানের আইনগুলি লিখিত আকারে থাকে না। তা কোনো গণপরিষদ বা আইনসভা কর্তৃক প্রবর্তিত হয়না। এই ধরণের সংবিধানের বিভিন্ন ব্যবস্থার আলোচনা , ব্যাখ্যা - ইত্যাদি অনুপস্থিত। ফলে অলিখিত সংবিধান অস্পষ্ট ও অনির্দিষ্ট। 

৪. নাগরিক অধিকার অবহেলিত :- অলিখিত সংবিধান অলিখিত থাকে বলে জনগণ নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকেন না। ফলে , সরকার খুব সহজেই জনগণের অধিকার খর্ব করে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করতে পারে। ফলে নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষার ক্ষেত্রে অলিখিত সংবিধান কোনোভাবেই কার্যকরী নয়। 

৫. যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অনুপযুক্ত :- যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ঘটে। রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিভক্ত হয়। যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সংবিধান লিখিত না হলে রাষ্ট্র পরিচালনার প্রতিটি ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হবে। তাই যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় অলিখিত সংবিধান কোনোভাবেই কাম্য নয়। 

৬. কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাধান্য :- অলিখিত সংবিধান সংশোধন ও আইন প্রণয়নের অধিকার লাভ করে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে কেন্দ্রীয় সরকার নিজের হাতে সকল ক্ষমতা তুলে নিয়ে অঙ্গরাজ্যের সরকারগুলিকে নিজেদের আজ্ঞাবহ দাসে পরিণত করে। সেক্ষেত্রে অঙ্গরাজ্যের সরকারগুলির কোনো ক্ষমতা থাকেনা।    

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

 
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
Newer Posts
Older Posts

Followers

Pages

  • Home
  • Privacy Policy
  • Disclaimer
  • CONTACT ME
  • About Me

Contact Form

Name

Email *

Message *

About me

Hallow viewers , myself Nandan Dutta [Subhankar Dutta], reside at Maheshpur,Malda.
I made this website for the students of B.A. courses under Gour Banga University. Here you can get suggestions of different subjects like HISTORY , SOCIOLOGY , POLITICAL SCIENCE & EDUCATION.
In future I will add MCQ sections of those subjects.


Categories

  • 1ST SEMESTER SUGGESTION (1)
  • 2 ND YEAR SUGGESTION (1)
  • 2ND SEMESTER (1)
  • 3RD SEMESTER (8)
  • BENGALI NOTES (21)
  • CU suggestion. (1)
  • EDUCATION NOTES (141)
  • ENGLISH COMPULSORY (16)
  • GBU Suggestion. (7)
  • HISTORY EUROPE & WORLD (46)
  • HISTORY NOTES (68)
  • POL SC NOTES (68)
  • SOCIOLOGY NOTES (72)
  • WBCS 2020 (1)

recent posts

Blog Archive

  • August 2025 (4)
  • May 2025 (3)
  • April 2025 (20)
  • March 2025 (12)
  • February 2025 (8)
  • November 2024 (5)
  • October 2024 (2)
  • September 2024 (2)
  • June 2024 (2)
  • March 2024 (6)
  • February 2024 (4)
  • October 2023 (5)
  • May 2023 (5)
  • April 2023 (1)
  • December 2022 (1)
  • November 2022 (13)
  • September 2022 (2)
  • August 2022 (7)
  • July 2022 (29)
  • June 2022 (10)
  • May 2022 (25)
  • April 2022 (24)
  • March 2022 (16)
  • February 2022 (19)
  • January 2022 (21)
  • December 2021 (46)
  • November 2021 (5)
  • October 2021 (6)
  • September 2021 (5)
  • August 2021 (41)
  • July 2021 (43)
  • June 2021 (31)
  • May 2021 (7)
  • April 2021 (1)
  • July 2020 (1)
  • June 2020 (3)
  • April 2020 (1)
  • November 2019 (1)
  • July 2019 (1)
  • June 2019 (1)
  • May 2019 (1)
  • April 2019 (2)
  • January 2019 (1)

Pages

  • Home
  • 2nd SEM ভাষাতত্ত্ব :
  • বাংলা উপভাষা
  • দ্বিতীয় পুলকেশীর কৃতিত্ব
  • ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত সাম্যের অধিকারগুলি আলোচনা করো।
  • হর্ষবর্ধনের কৃতিত্ব আলোচনা করো। তাকে কি উত্তর পথনাথ বলা যায় ?
  • ভারতীয় সংবিধানের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য :-
  • উদারনীতিবাদ : সংক্ষিপ্ত ধারণা :-
  • চোল শাসনব্যবস্থা :-
  • গুপ্তযুগ সুবর্ণযুগ সম্পর্কিত আলোচনা।
  • ৬. উদাহরণসহ মধ্যযুগের বাংলাভাষার কয়েকটি বৈশিষ্ট আল...
  • 1. Marxism
  • আধুনিক বাংলা ভাষা ও তার বৈশিষ্ট।
  • Discuss the career and achievements of Samudragupta .
  • ভাষাতত্ত্ব

Created with by ThemeXpose | Distributed by Blogger Templates