Pages

Powered by Blogger.
1ST SEMESTER SUGGESTION 2 ND YEAR SUGGESTION 2ND SEMESTER 3RD SEMESTER BENGALI NOTES CU suggestion. EDUCATION NOTES ENGLISH COMPULSORY GBU Suggestion. HISTORY EUROPE & WORLD HISTORY NOTES POL SC NOTES SOCIOLOGY NOTES WBCS 2020

NANDAN DUTTA

A new approach for exam notes .

আকবরের ধর্মনীতি সম্পর্কে আলোচনা কর। আকবরের ধর্মনীতি ও দীন - ই - ইলাহী - র রাজনৈতিক গুরুত্ব আলোচনা কর।  

Discuss Akbar's theology. Discuss the political significance of Akbar's religious policy and Deen-e-Ilahi. ( In Bengali ) 



আকবরের ধর্মনীতি :- 

ভারতের মুসলিম শাসকদের মধ্যে আকবরই ছিলেন সর্বপ্রথম যিনি হিন্দুদের প্রতি উদার নীতি গ্রহণ করে তাদের সাহায্য ও সমর্থন লাভ করে মোগল সাম্রাজ্যের ভিত্তি সুদৃঢ় করেছিলেন। ধর্মনীতির ক্ষেত্রেও এই উদারতা লক্ষ্য করা যায়। আকবরের ধর্মনীতির মধ্যে সকল ধর্মের সমন্বয় , সহিষ্ণুতা ও সকল ধর্মের কল্যাণকর দিকগুলির সংযোজন লক্ষ্য করা যায়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

আকবর কর্তৃক উদার ধর্মনীতি গ্রহণের কারণ :-

আকবর ধর্মীয় ক্ষেত্রে উদারনীতি গ্রহণ করেন। এর কারণগুলি ছিল - 
(i) তৈমুর লঙের বংশধর তথা আকবরের পূর্বপুরুষরা সুফী মতবাদের দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে কোনো প্রকার ধর্মীয় গোঁড়ামি ছিল না। এই আদর্শে আকবর অনুপ্রাণিত হন। 
(ii) রাজপুত মহিষীগণের উদার ধর্মীয় মনোভাব আকবরকে প্রভাবিত করেছিল। 
(iii) আকবরের গৃহশিক্ষক আব্দুল লতিফ ছিলেন একজন উদার মানবতাবাদী। তার শিক্ষা আকবরকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। 
(iv) শেখ মোবারক , আবুল ফজল প্রমুখের সংস্পর্শে এসে তিনি ইসলামের গোঁড়ামি সম্পর্কে বিরক্ত হয়ে ওঠেন। 
(v) আকবরের শৈশব কেটেছিল পারস্য ও কাবুলে। এইসময় তিনি বিভিন্ন ধর্মের মানুষের সংস্পর্শে আসার সুযোগ পান। 
(vi) বৈরাম খাঁ -র তত্ত্বাবধানে আকবর বাল্যকাল থেকেই বিভিন্ন সুফী সাধকদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ লাভ করেন। তাঁদের উদার ধর্মীয় মানসিকতা আকবরকে প্রভাবিত করে। 
(vii) এছাড়াও , আকবর উপলব্ধি করেছিলেন যে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে গোঁড়া ইসলামিক নীতি প্রবর্তন করলে তা মোগল সাম্রাজ্যের পক্ষে অনুকূল হবে না। তাই রাজনৈতিক দূরদৃষ্টির পরিচয় দিয়ে আকবর ধর্মীয় ক্ষেত্রে উদারনীতি গ্রহণ করেছিলেন বলে আধুনিক ঐতিহাসিকেরা মনে করে থাকেন। 

আকবরের ধর্মনীতির তিনটি পর্যায় :- 


আকবরের ধর্মীয় জীবনকে এবং তাঁর ধর্মনীতিকে তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত করা যায় - যথা :- 

প্রথম পর্যায় : ১৫৭৫ পর্যন্ত তিনি নিষ্ঠাবান সুন্নি মুসলমান ছিলেন। এইসময় তিনি ইসলামের যাবতীয় রীতিনীতি মেনে চলতেন। 

দ্বিতীয় পর্যায় : ১৫৭৫ এর পর থেকে তাঁর ধর্মনীতির দ্বিতীয় পর্যায় ধরা হয়। এই পর্যায়ে তিনি ধর্মীয় ক্ষেত্রে সকল ক্ষমতা নিজ করায়ত্ত করতে সচেষ্ট হন এবং একটি দলিল প্রকাশ করে তিনি রাষ্ট্র ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে সম্রাটের সর্বোচ্চ ক্ষমতা স্থাপন করেন। এই দলিলকে স্মিথ Infallibility Decree বলে অভিহিত করেছেন। এই নির্দেশনামার মূল বিষয় ছিল ধর্মীয় সকল ক্ষেত্রে সম্রাটের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। এছাড়া ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি ইবাদতখানা প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথমদিকে শুধমাত্র মুসলিম পন্ডিতেরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করতেন। কিন্তু তাঁদের ধর্মীয় গোঁড়ামি লক্ষ্য করে আকবর ইবাদতখানা বন্ধ করে দেন। এরপর ১৫৭৮ খ্রিস্টাব্দে পুনরায় ইবাদতখানা আহ্বান করা হয় এবং এইবার মুসলিম সহ সকল ধর্মের পন্ডিতদের আলোচনার জন্য আহ্বান জানানো হয়।     

তৃতীয় পর্যায় : দীন - ই - ইলাহী প্রবর্তন :- আকবরের ধর্মনীতির তৃতীয় পর্যায় হল দীন - ই - প্রবর্তন। ১৫৮১ খ্রিস্টাব্দে তিনি দীন - ই - ইলাহী প্রবর্তন করেন। সকল ধর্মের উদার ও মানবতাবাদী বৈশিষ্টগুলিকে তিনি তাঁর নতুন একেশ্বরবাদী ধর্মতত্ত্বে স্থান দেন। বদাউনী এই মতবাদকে '' তৌহিদ - ই - ইলাহী '' বা স্বর্গীয় একেশ্বরবাদ বলে অভিহিত করেছেন। সকল ধর্মমতের সারবস্তু নিয়ে গঠিত হয় এই নতুন ধর্মমত। যেমন - হিন্দুদের উপাসনা , জন্মান্তরবাদ ; বৌদ্ধ ও জৈনদের অহিংসা ; ইসলামের পবিত্রতা ইত্যাদি। এই নতুন ধর্মমতে ধর্মগুরু বা পুরোহিতের কোনো স্থান ছিল না। কোনো বিশেষ ধর্মীয় রীতিনীতিরও কোনো স্থান ছিল না। 

স্মিথের মতামত :- স্মিথ আকবরের দীন ই ইলাহীর সমালোচনা করে বলেছেন - দীন - ই - ইলাহি ছিল ইসলাম বিরোধী একটি ধর্মমত এবং তা ছিল আকবরের নির্বুদ্ধিতার চরম নিদর্শন। কিন্তু স্মিথের এই মন্তব্য সমর্থনযোগ্য নয় ; কেননা , দীন - ই - ইলাহি কোনো নতুন ধর্মমত ছিল না এবং আকবর কাউকে এই ধর্মমত গ্রহণ করতে বাধ্য করেননি। দীন - ই - ইলাহী ছিল প্রকৃতপক্ষে আকবরের একটি নীতি যার মাধ্যমে আকবর নানা জাতি , ধর্ম , ভাষা , সংস্কৃতি অধ্যুষিত ভারতবর্ষকে এক সূত্রে গ্রথিত করতে চেয়েছিলেন। 

বদাউনির মতামত :- বদাউনির মতে আকবর দীন ই ইলাহি প্রবর্তন করার পর নানাবিধ ইসলাম বিরোধী নীতি প্রবর্তন করেন। তিনি গোমাংস ভক্ষণ নিষিদ্ধ করেন ; রমজানের উপবাস ও মক্কা ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেন। কিন্তু বদাউনির এই বক্তব্য পক্ষপাত দুষ্ট। কেননা , (ক ) তিনি জনশ্রুতি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। (খ ) বদাউনী ছিলেন আকবরের প্রবল সমালোচক। (গ ) আবুল ফজল অতিরিক্ত রাজানুগ্রহ লাভ করায় তিনি আকবরের উপর রুষ্ট ছিলেন। বস্তুতঃপক্ষে গোঁড়া মুসলিম ও মৌলবীরা নিজেদের প্রভাব কমে যাওয়ার ভয়ে এইসকল অভিযোগগুলি করেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

আকবরের ধর্মনীতি তথা দীন - ই - ইলাহী - র রাজনৈতিক গুরুত্ব :- 

প্রথমতঃ দীন - ই - ইলাহী প্রবর্তনের ফলে ভারতীয় জনসাধারণ আকবরকে সম্পূর্ণ ভারতীয় ও প্রজাহিতৈষী বলে গ্রহণ করছিল। 
দ্বিতীয়তঃ বহু জাতি , বহু ভাষা , বহু ধর্ম অধ্যুষিত ভারতে জাতীয় ঐক্যের উন্মেষের পথ প্রশস্ত করেছিল দীন - ই - ইলাহী। 
তৃতীয়তঃ ধর্মান্ধ ও গোঁড়া উলেমাদের প্রভাব প্রতিপত্তি বিনষ্ট হয়েছিল। 
চতুর্থতঃ ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় সকল ক্ষেত্রে আকবরের সর্বময় নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। 
পঞ্চমতঃ অধ্যাপক আতাহার আলি মনে করেন , বিভিন্ন ধর্মের মানুষদের নিয়ে আকবর প্রশাসন ও মোগল সাম্রাজ্যের ভিত্তি মজবুত করেছিলেন। 
ষষ্ঠতঃ সুল - হি - কুল প্রবর্তনের মাধ্যমে তিনি সর্বভারতীয় নেতায় পরিণত হন। 
সপ্তমতঃ হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ অনেকটা দূর হয়। 
অষ্টমতঃ আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রে এক নতুন চিন্তা - ভাবনার সূচনা হয়। 
নবমতঃ দীন - ই - ইলাহীর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দিকটি হল - এই নীতি প্রবর্তনের ফলে তিনি হিন্দুদের অকুন্ঠ সমর্থন লাভ করেন।     

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো        

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

Discuss the causes of the February Revolution in France in 1848. 

ফেব্রুয়ারী বিপ্লবের কারণগুলি আলোচনা কর। 

ফেব্রুয়ারী বিপ্লবের কারণ :- 


দশম চার্লসের প্রতিক্রিয়াশীল নীতির বিরুদ্ধে ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে পুনঃ প্রতিষ্ঠিত বুরবোঁ রাজবংশের পতন ঘটে। জুলাই বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে অর্লিয়েন্স বংশীয় লুই ফিলিপ ফ্রান্সের সিংহাসনে অভিষিক্ত হন। লুই ফিলিপ ১৮৩০ থেকে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ সময়কাল পর্যন্ত ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। তাঁর এই শাসনকালকে বলা হত '' জুলাই রাজতন্ত্র ''। এরপর ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফেব্রুয়ারী বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে লুই ফিলিপের শাসন ক্ষমতার অবসান ঘটে। ফেব্রুয়ারী বিপ্লবের কারণগুলি ছিল - 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

১. মুদ্রাস্ফীতি ও খাদ্য সংকট :- ইউরোপের রাজনীতির মূলকেন্দ্র হলেও ফ্রান্স ছিল একটি কৃষিনির্ভর দেশ। ১৮৪০-৪২ এর পর থেকেই ফ্রান্সের রাজতন্ত্রের অপদার্থতার কারণে তীব্র মুদ্রাস্ফীতি ঘটতে থাকে। অন্যদিকে এই সময় থেকে কৃষিতেও মন্দা দেখা যায়। পোকার উপদ্রব , খরা , অনাবৃষ্টি ইত্যাদির ফলে আলু , গম ও কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদন তীব্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ফলে ফ্রান্সে খাদ্য দ্রব্যের তীব্র মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। ফসলের দাম বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিল্পজাত পণ্যগুলির ওপরেও তার প্রভাব পড়ে। লুই ফিলিপ এই সংকট মোচনে ব্যর্থ হন। 

২. রাজনৈতিক দলগুলির বিরোধিতা :- সিংহাসনলাভের পর লুই ফিলিপের সামনে প্রধান তিনটি  রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা তৈরী হয়। একদিকে উদারপন্থীরা লুই ফিলিপের কাছ থেকে আশা করেছিল যে তিনি ফ্রান্সে উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক শাসন চালু করবেন এবং অন্যদিকে বুরবোঁ রাজবংশের সমর্থকেরা লুই ফিলিপের সিংহাসনলাভকে অবৈধ বলে মনে করতেন। আবার , বোনাপার্টিস্ট দল নেপোলিয়নের গৌরবময় শাসনের সাথে তুলনা করে লুই ফিলিপের দুর্বল নীতির তীব্র সমালোচনা করেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. রাজতন্ত্রের বুর্জোয়া নির্ভরতা :- প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক দলগুলির বিরোধিতার সম্মুখীন হয়ে লুই ফিলিপ বুর্জোয়াদের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। এই নির্ভরশীলতা এতটাই ছিল যে , ঐতিহাসিক তকভিল বলেছেন ধনী বুর্জোয়া শ্রেণি লুই ফিলিপকে একটি শিল্পোদ্যোগ হিসেবে মনে করতেন। লুই ফিলিপ শুল্ক সংরক্ষণ নীতির দ্বারা বুর্জোয়াদের মুনাফা লাভের সুযোগ করে দেন। এই সমস্ত কারণে লুই ফিলিপের রাজত্বকালকে '' বুর্জোয়া রাজতন্ত্র '' বলা হয়। 

৪. শিল্প শ্রমিকদের প্রতি বৈষম্য :- লুই ফিলিপের বুর্জোয়া তোষণের ফলে ফ্রান্সে বুর্জোয়াদের হাত ধরে কল - কারখানার বিকাশ ঘটলেও শ্রমিকদের অবস্থা ছিল অত্যন্ত করুণ। শ্রমিকরা শহরের বস্তিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করতো। তাদের বেতন ছিল অত্যন্ত কম। লুই ফিলিপ উৎপাদন ব্যবস্থার মূল চালিকাশক্তি শ্রমিকদের স্বার্থে কোনো নীতি প্রবর্তন করেননি। ফ্রান্সের বুর্জোয়া মালিকরা সীমাহীন শোষণের মাধ্যমে যে সংকট সৃষ্টি করে রাজতন্ত্রের উপরেও তার প্রভাব পড়ে। 

৫. দুর্বল পররাষ্ট্রনীতি :- লুই ফিলিপের বিচ্ছিন্নতার নীতি ফরাসীবাসীরা সমর্থন করেননি। তিনি নেপোলিয়নের মত কোনো গৌরবোজ্জ্বল বৈদেশিক নীতি গ্রহণ না করে নিষ্ক্রিয়তার নীতি গ্রহণ করেন। ইতালি ও পোল্যান্ডের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার সুযোগ থাকতেও তিনি নিষ্ক্রিয় ছিলেন। নিকট প্রাচ্যের সমস্যাতেও লুই ফিলিপের বৈদেশিক নীতির ব্যর্থতা প্রমাণিত হয়। 

৬. নিম্ন বুর্জোয়া বা পাতি বুর্জোয়াদের ভোটাধিকার দাবী :- নিম্ন বুর্জোয়া বা পাতি বুর্জোয়াগণ ছিলেন শিক্ষিত ও মধ্যবিত্ত। তাঁরা শিক্ষা , আইন , সরকারি চাকুরী - ইত্যাদি পেশায় নিযুক্ত থাকতেন। কিন্তু ফ্রান্সে পাতি বুর্জোয়াদের ভোটাধিকার ছিল ১৫০ জন পুরুষ নাগরিকের মধ্যে মাত্র ১ জনের। তাঁরা লা - মার্টিন , থিয়ার্স প্রমুখের নেতৃত্বে ভোটাধিকারের জন্য তীব্র আন্দোলন শুরু করেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. লুই ফিলিপের মধ্যপন্থার নীতি :- লুই ফিলিপ নাগরিকদের সমর্থনে ফ্রান্সের সিংহাসন গ্রহণ করেন। তাই তাঁর সিংহাসন নাগরিকদের সমর্থনের উপর নির্ভরশীল ছিল। তাই লুই ফিলিপ প্রথমদিকে ফরাসি বিপ্লব প্রসূত আদর্শগুলির প্রতি সমর্থন জানালেও প্রকৃত ক্ষেত্রে তিনি মধ্যপন্থার নীতি অবলম্বন করেন। ফলে , ফ্রান্সের সকল রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনে তিনি ব্যর্থ হন। 

৮. সেপ্টেম্বর আইন :- এরপর লুই ফিলিপ সেপ্টেম্বর আইন নামক এক প্রতিক্রিয়াশীল আইন জারি করেন। এই আইনের মূল বিষয়গুলি ছিল - 
(i) সরকারবিরোধী সর্বপ্রকার সমালোচনা নিষিদ্ধ করা হয়। 
(ii) বিচারের ক্ষেত্রে জুরি প্রথা বাতিল করা হয়। 
(iii) সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ করা হয়। 
(iv) বৈদেশিক ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয়তার নীতি গৃহীত হয়। 

৯. প্রত্যক্ষ কারণ : ২২ শে ফেব্রুয়ারী গুলিবর্ষণের ঘটনা :- সেপ্টেম্বর আইনের প্রতিবাদে ও লুই ফিলিপের সামগ্রিক নীতির পরিপ্রেক্ষিতে উদারপন্থীরা প্যারিসে এক সভার আয়োজন করে। কিন্তু সরকার ওই সভা নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করে। এর প্রতিবাদে জনগণ প্রধানমন্ত্রী গিজো- র বিরুদ্ধে বিক্ষোভে সামিল হন। এই সময় গিজোর দেহরক্ষীরা জনগণের উপর গুলিবর্ষণ করলে ২০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন। 

জনগণের উপর এই আক্রমণের প্রতিবাদে প্যারিসের সর্বত্র তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়। পুরো ফ্রান্সে চরম উত্তেজনা তৈরী হয়। এরপর প্যারিসের নাগরিকরা সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে ও রাজার পদত্যাগ দাবী করে। ফ্রান্সের সর্বত্র তীব্র দাঙ্গা - হাঙ্গামা তৈরী হয়। শ্লোগান তৈরী হয় - Long live reform . এরপর ২৪ শে ফেব্রুয়ারী লুই ফিলিপ নিজ পৌত্রের অনুকূলে সিংহাসন ত্যাগ করে ইংল্যান্ডে আশ্রয় গ্রহণ করেন। কিন্তু জনগণ ২৬ শে ফেব্রুয়ারী লা - মার্টিনের নেতৃত্বে রাজতন্ত্র্রের অবসান করে সাধারণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন।     

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো                                    


Share
Tweet
Pin
Share
No comments

Causes of July Revolution in France in 1830 

ফ্রান্সে ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দের জুলাই বিপ্লবের কারণগুলি লেখ। 


জুলাই বিপ্লবের কারণ :- 


১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ভিয়েনা কংগ্রেসে ন্যায্য অধিকার নীতি গৃহীত হয় এবং এই নীতি অনুসারে ফ্রান্স বুরবোঁ রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় এবং অষ্টাদশ লুই ফ্রান্সের সিংহাসনে বসেন। কিন্তু ফরাসি বিপ্লবের নতুন ভাবধারা ও জাতীয় সংবিধানের আদর্শ অনুসারে শাসন পরিচালনা করা তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিলনা।  রাজতন্ত্রের সমর্থকেরা রাজার স্বার্থের তুলনায় রাজতন্ত্র , চার্চ ও অভিজাতদের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে অধিক তৎপর ছিল এবং অন্যদিকে উদারপন্থীরা বিপ্লবের ভাবধারা ও আদর্শকে অক্ষুন্ন রাখতে তৎপর ছিলেন। এই দুই আদর্শগত দ্বন্দ্বের মধ্যে অষ্টাদশ লুই সমন্বয়ের নীতি গ্রহণ করলেও পরবর্তী রাজা দশম চার্লস প্রতিক্রিয়াশীল নীতি গ্রহণ করলে তা নতুন একটি বিপ্লবের সূচনা করে। ফ্রান্সে ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দের জুলাই বিপ্লবের বিভিন্ন কারণগুলি ছিল - 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

১. ডেভিড থমসনের তত্ত্ব :- অষ্টাদশ লুই উদারনৈতিক ভাবধারার সঙ্গে রাজতন্ত্রের সমন্বয় ঘটানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দে অষ্টাদশ লুইয়ের মৃত্যু হলে পরবর্তী সম্রাট দশম চার্লস এই সমন্বয়বাদী নীতি পরিত্যাগ করে কিছু প্রতিক্রিয়াশীল নীতি গ্রহণ করেন। তিনি পুরাতনতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন। দশম চার্লসের এই প্রতিক্রিয়াশীল নীতিগুলি ফ্রান্সের নতুন ভাবধারার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। দশম চার্লস যদি অষ্টাদশ লুইয়ের নীতি অনুসরণ করে চলতেন তাহলে ফ্রান্স জুলাই বিপ্লব অনিবার্য হত না। 

২. বিপরীত মত : বিপ্লবের অনিবার্যতা তত্ত্ব :- কিন্তু উদারপন্থীরা ডেভিড থমসনের উক্ত অভিমত সমর্থন করেন না। তাঁদের মতে জুলাই বিপ্লব অনিবার্য ছিল। কেননা , পুরাতনতন্ত্র ও বিপ্লব প্রসূত নতুন ভাবধারার মধ্যে কোনোভাবেই সমন্বয়সাধন সম্ভব ছিল না। দুটি ছিল সম্পূর্ণ বিপরীমুখী আদর্শ। অষ্টাদশ লুই সমন্বয়ের নীতি গ্রহণ করলেও তিনি কার্যকর কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারেন নি। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. নাগরিকদের ভোটাধিকার সংক্রান্ত বিষয় :- জাতীয় সংবিধানে নাগরিকদের ভোটাধিকারের বিষয়েও বৈষম্য ছিল। কেবলমাত্র ধনী অভিজাত ও বুর্জোয়াদের ভোটাধিকার প্রদান করা হয়। তিরিশ লক্ষ নাগরিকের মধ্যে মাত্র ৯০ হাজার নাগরিকের ভাটাধিকার স্বীকৃত হয়। শুধুমাত্র সম্পদের ভিত্তিতে এই অধিকার দেওয়া হয়। ফলে যে সকল শিক্ষিত , সমাজ ও রাজনীতি সচেতন ব্যক্তিরা উচ্চ সম্পদ সম্পন্ন ছিলেন না , তারা ভোটাধিকার হতে বঞ্চিত হন। 

৪. সনদের ১৪ নং ধারার অপব্যবহার :- জাতীয় সংবিধানের ১৪ নং ধারায় ফরাসি সম্রাটকে বিশেষ অধিকার দেওয়া হয়। কিন্তু অধিকার প্রয়োগের বিষয়টি স্পষ্ট ছিল না। ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অষ্টাদশ লুই ও দশম চার্লসকে ওই বিশেষ ক্ষমতার অপব্যবহার করতে দেখা যায়। 

৫. অষ্টাদশ লুইয়ের ভূমিকা :- অষ্টাদশ লুই জাতীয় সংবিধানের সঙ্গে বিপ্লব প্রসূত ভাবধারার সমন্বয়ের প্রয়াস করেন। তিনি একদিকে রাজতন্ত্রের ঐতিহ্যকে বজায় রাখেন আবার অন্যদিকে নেপোলিয়নের যুগের ভূমি ব্যবস্থা , বিভিন্ন সংস্কার ও প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থাকে মোটামুটি বহাল রাখেন। ১৮২১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত অষ্টাদশ লুইয়ের মন্ত্রিসভা বামপন্থী ও উদার - পন্থীদের এড়িয়ে মধ্যবর্তী পন্থা গ্রহণ করলেও শেষ পর্যন্ত তাঁরা ব্যর্থ হন এবং চরম প্রতিক্রিয়াশীলরা ক্ষমতালাভ করেছিল। 

৬. দশম চার্লসের প্রতিক্রিয়াশীল নীতি :- অষ্টাদশ লুইয়ের পর দশম চার্লস ফ্রান্সের সিংহাসন গ্রহণ করেন। তিনি বিভিন্ন প্রতিক্রিয়াশীল নীতির মাধ্যমে জুলাই বিপ্লবকে অনিবার্য করে তোলেন। তিনি আইন পরিষদকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে মন্ত্রীদের নিয়োগ ও পদচ্যুত করতে শুরু করেন। তিনি প্রাক ফরাসি বিপ্লবের অবস্থায় ফ্রান্সকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চান। অভিজাত ও যাজকদের গৌরব ও ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। এছাড়াও তিনি পলিগ্যনাক নামে এক চরম প্রতিক্রিয়াশীল মন্ত্রী নিযুক্ত করেন।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. জুলাই অর্ডিন্যান্স :- প্রতিক্রিয়াশীলতার চরম পর্যায়ে দশম চার্লস জুলাই অর্ডিন্যান্স জারি করেন। এতে মূলতঃ চারটি প্রতিক্রিয়াশীল নির্দেশের সমাবেশ ঘটে। 
(i) ফ্রান্সের প্রতিনিধিসভা ভেঙে দেওয়া হয়। নবগঠিত প্রতিনিধিসভায় রাজা কর্তৃক মনোনীত সদস্যের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়।             
(ii) জনসাধারণের ভোটাধিকার আরো সীমাবদ্ধ করা হয়। মাত্র পঁচিশ হাজার মানুষ ভাটাধিকার লাভ করেন। 
(iii) সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সম্পূর্ণভাবে হরণ করা হয়। 
(iv) ১৮১৪ সালের জাতীয় সংবিধানকে অবৈধ বলে ঘোষণা করা হয়। 

৮. জনগণের প্রতিক্রিয়া ও বিপ্লবের সূচনা :- এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে উদারপন্থী নেতা এডলফ থিয়ার্স এর নেতৃত্বে প্যারিসের জনগণ বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করে। সাধারণ মানুষ , ছাত্র ও শ্রমিকেরা সারা প্যারিস জুড়ে ব্যারিকেড গড়ে তোলে। প্যারিস নগরী বিপ্লবের কেন্দ্রে পরিণত হয়। প্রজাতন্ত্রী দলের নেতা ক্যাভিগনাকের নেতৃত্বে প্যারিসের ছাত্ররা সর্বত্র অবরোধ সৃষ্টি করে। এরপর জনগণের ক্ষোভকে প্রশমিত করার জন্য সেনা সমাবেশ ঘটলে জনগণ বিদ্রোহ শুরু করে। বোনাপার্টিস্টরাও প্রজাতন্ত্রীদের সাথে যোগ দেয়। পূর্বতন জাতীয় রক্ষিবাহিনীও বিপ্লবে যোগদান করে। 

৯. দশম - চার্লসের পদত্যাগ :- প্রকৃতপক্ষে ফ্রান্সের জনগণের ক্ষমতা সম্পর্কে পলিগ্যনাকের কোনো ধারণাই ছিল না। ২৮ শে জুলাই প্যারিসের কর্তৃত্ব সম্পূর্ণভাবে জনগণের হাতে চলে যায়। ৩০ শে জুলাই বিদ্রোহীরা অর্লিয়েন্স বংশীয় লুই ফিলিপকে ফ্রান্সের রাজা বলে ঘোষণা করেন। এই সময় দশম চার্লস পলিগ্যনাককে অপসারণ করতে ও অর্ডিন্যান্স প্রত্যাহার করতে সম্মত হলেও ফ্রান্সের জনগণ দশম চার্লসের পদত্যাগের দাবীতে অটল ছিল। ফলে দশম চার্লস সিংহাসন ত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং ইংল্যান্ডে আশ্রয় গ্রহণ করেন। 

পরিশেষে বলা যায় , ফরাসি বিপ্লব প্রসূত উদারনৈতিক ভাবধারাগুলিকে প্রশমিত করার চেষ্টাই জুলাই বিপ্লব অনিবার্য করে তোলে। তবে জুলাই বিপ্লবের ফলে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হলেও জনগণের অধিকার ও ফরাসি বিপ্লব প্রসূত আদর্শগুলি প্রতিষ্ঠিত হয়।    

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো 

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

রচনাধর্মী এবং নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষার মধ্যে পার্থক্য লেখ। 

রচনাধর্মী ও নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষার ( বস্তুগত অভীক্ষা ) মধ্যে পার্থক্য :- 


১. পদ্ধতিগত ক্ষেত্রে :- রচনাধর্মী অভীক্ষায় খুব সহজেই পাঠ্যবিষয় থেকে কয়েকটি রচনাত্মক প্রশ্ন নির্বাচন করে শিক্ষক খুব সহজেই শিক্ষার্থীর অর্জিত জ্ঞানের পরিমাপ করতে পারেন। কিন্তু নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষার জন্য অপেক্ষাকৃত অনেক প্রশ্নের প্রয়োজন হয়। এটি পরিশ্রম সাপেক্ষ ও সময়সাপেক্ষ। 

২. স্বাধীন চিন্তাশক্তি ও মতামত প্রদানের ক্ষেত্রে :- রচনাধর্মী অভীক্ষার মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে তাদের চিন্তাশক্তি , মতামত  ও যুক্তি বুদ্ধির প্রয়োগ করতে পারে। কিন্তু নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষায় অতিসংক্ষিপ্ত বা বিকল্প চয়ন ব্যবস্থার ফলে শিক্ষার্থীর কাছে স্বাধীনভাবে কোনো মতামত প্রকাশের সুযোগ থাকে না। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


৩. ভাষা দক্ষতার বিকাশের ক্ষেত্রে :- রচনাধর্মী অভীক্ষায় শিক্ষার্থীর ভাষাজ্ঞান ও তা প্রয়োগের দক্ষতার বিকাশ ঘটে ও তা পরিমাপ করা যায়। কিন্তু নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর সামনে এজাতীয় কোনো সুযোগ থাকে না। 

৪. ব্যয় সংক্রান্ত প্রশ্ন :- রচনাধর্মী অভীক্ষায় প্রশ্নসংখ্যা খুব কম থাকে বলে এ জাতীয় প্রশ্নপত্র তৈরী করতে ব্যয় খুব কম হয়। কিন্তু নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষায় বহুপ্রশ্ন সংযোজিত করতে হয় বলে এজাতীয় অভীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরী করতে ব্যয় খুব বেশি হয়। 

৫. অভীক্ষার প্রকৃতি :- রচনাধর্মী অভীক্ষা হল এক ধরণের গতানুগতিক অভীক্ষা ব্যবস্থা। কিন্তু নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষা আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত গবেষণার ফল হিসেবে প্রায়োগিক একটি ব্যবস্থা। 

৬. শিক্ষকের ব্যক্তিগত প্রভাব :- রচনাধর্মী অভীক্ষায় শিক্ষার্থীর লেখা উত্তরপত্রের মান নির্ণয়ের জন্য কোনো আদর্শায়িত পদ্ধতি থাকে না। ফলে এ জাতীয় অভীক্ষায় উত্তরের মান নির্ণয়ের ক্ষেত্রে শিক্ষকের প্রভাব দেখা যেতে পারে। কিন্তু নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষায় যেহেতু উত্তরের আদর্শমান পূর্ব হতেই নির্ধারিত থাকে তাই এজাতীয় অভীক্ষায় শিক্ষকের কোনোরূপ ব্যক্তিগত প্রভাব থাকার কোনো সম্ভাবনা নেই। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


৭. নির্ভরযোগ্যতা :- রচনাধর্মী অভীক্ষায় উত্তর যাঁচাইয়ের ক্ষেত্রে শিক্ষকের ব্যক্তিগত ইচ্ছা - অনিচ্ছা প্রতিফলিত হয়। ফলে রচনাধর্মী অভীক্ষার নির্ভরযোগ্যতা তুলনামূলকভাবে কম। কিন্তু নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষায় উত্তর যাঁচাইয়ের ক্ষেত্রে যেহেতু শিক্ষকের ব্যক্তিগত ইচ্ছা - অনিচ্ছার কোনো ভূমিকা থাকে না , তাই নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষার নির্ভরযোগ্যতা অনেক বেশি। 

৮. পাঠ্যবিষয়ের জ্ঞান পরিমাপের ক্ষেত্রে :- রচনাধর্মী অভীক্ষায় প্রশ্নের সংখ্যা কম থাকায় পাঠ্য বিষয়ের সমগ্র অংশ থেকে প্রশ্ন নির্বাচন করা সম্ভব হয়না। ফলে পাঠ্য বিষয়ের প্রতি শিক্ষার্থীর সামগ্রিক জ্ঞানের পরিমাপ করা সম্ভব হয়না। কিন্তু নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষায় সমগ্র পাঠ্য বিষয় থেকে প্রশ্ন করা হয় বলে নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষার মাধ্যমে পাঠ্য বিষয়ের প্রতি শিক্ষার্থীর সামগ্রিক জ্ঞানের পরিমাপ সম্ভব। 

৯. মুখস্থ - নির্ভরতার ক্ষেত্রে :- রচনাধর্মী অভীক্ষায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুখস্থ নির্ভরতা প্রাধান্য পায়। মাত্র কয়েকটি সাজেশনভিত্তিক প্রশ্ন মুখস্থ করলেই অভীক্ষায় অংশগ্রহন করা যায়। কিন্তু নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষায় সমগ্র পাঠ্য বিষয় থেকে প্রশ্ন তৈরির ফলে মুখস্থ বিদ্যার প্রবণতা এক্ষেত্রে গৌণ ভূমিকা পালন করে। 

১০. বিশ্লেষণ দক্ষতা ও বস্তুগত জ্ঞান :- রচনাধর্মী অভীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা বা বিষয়বস্তু উপস্থাপন করার ক্ষমতার পরিমাপ করা হয়। কিন্তু নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর বিষয় সংক্রান্ত বস্তুগত জ্ঞান সঠিকভাবে পরিমাপ করা হয়। 

১১. শিক্ষার্থীর প্রতিক্রিয়া :- রচনাধর্মী অভীক্ষায় শিক্ষার্থীর প্রতিক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়না। উত্তর প্রদানের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী স্বাধীনতা লাভ করে থাকে। কিন্তু নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষায় শিক্ষার্থীর প্রতিক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। 

১২. উত্তরপ্রদানে প্রাসঙ্গিকতার ক্ষেত্রে :- রচনাধর্মী অভীক্ষায় উত্তর প্রদানে স্বাধীনতা থাকার ফলে অনেকসময় শিক্ষার্থীরা বহু অপ্রাসঙ্গিক বিষয়গুলিকেও উত্তরে সংযোজিত করে। কিন্তু নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষায় অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ের সংযোজন সম্ভব নয়।     

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

 
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

Characteristics / features of the Manor system in medieval Europe: -

মধ্যযুগে ইউরোপে ম্যানর ব্যবস্থার বৈশিষ্টগুলি আলোচনা কর। 

মধ্যযুগে ইউরোপে ম্যানর ব্যবস্থার বৈশিষ্ট :- 


মধ্যযুগে নবম থেকে দ্বাদশ শতক পর্যন্ত ইউরোপে সামন্ততন্ত্র পূর্ণমাত্রায় বিকশিত হয়। সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার সাংগঠনিক ভিত্তি ছিল ম্যানর ব্যবস্থা। সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সচল রাখতে ম্যানর প্রথা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ম্যানর ব্যবস্থাকে সিনোরীয় ব্যবস্থাও ( Seigneurial system ) বলা হত। প্রতিটি সামন্ততান্ত্রিক গ্রামে ম্যানর ব্যবস্থা উৎপাদন , রাজনৈতিক , প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক নিরবচ্ছিন্নতা বজায় রাখত। ম্যানর ব্যবস্থার বৈশিষ্টগুলি হল - 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


১. ম্যানর হাউসের অবস্থিতি :- ম্যানর হাউস ছিল প্রতিটি গ্রামের মূল প্রশাসনিক কেন্দ্র। এখানে ম্যানর প্রভু তাঁর পরিবার সমেত বসবাস করতেন। শত্রুর হাত থেকে নিষ্কৃতিলাভের উদ্দেশ্যে ম্যানর হাউসগুলি উঁচু পরিখা দ্বারা বেষ্টিত থাকতো এবং প্রতিটি ম্যানর হাউসে নিরাপত্তাবাহিনী মোতায়েন থাকত। ম্যানর হাউস থেকে ম্যানর প্রভু তাঁর গ্রাম শাসন করতেন এবং কৃষক ও প্রজাদের উপর আধিপত্য বজায় রাখতেন। 

২. রাষ্ট্রের ক্ষুদ্র সংস্করণ :- সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় গ্রামগুলি মোটামুটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল এবং তারা পরস্পর বিচ্ছিন্ন ছিল। ম্যানর ব্যবস্থার অধীনে প্রতিটি গ্রাম নিজেদের প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী উৎপাদনে সক্ষম ছিল , ফলে ম্যানর গ্রামগুলিকে রাষ্ট্রের ক্ষুদ্র সংস্করণ বলা যেতে পারে। আর ম্যানর হাউস ছিল সম্পূর্ণ ব্যবস্থার পরিচালক। 

৩. ম্যানর গ্রামগুলির শাসন ব্যবস্থার প্রকৃতি :- প্রতিটি ম্যানর গ্রামে ম্যানর প্রভুর অধীনে স্থানীয় শাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। সমস্ত গ্রামের প্রশাসন পরিচালনা করতে ম্যানর প্রভু বহুসংখ্যক কর্মচারী নিযুক্ত করতেন। প্রশাসন পরিচালনা , সৈন্য বাহিনী নিয়ন্ত্রণ , রাজস্ব সংগ্রহ , উন্নয়নমূলক প্রকল্প , জলসেচের ব্যবস্থা , বিচারকার্য , চিকিৎসা , যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন - ইত্যাদি সমস্ত কাজ ম্যানর প্রভুর নির্দেশে পরিচালিত হত। 

৪. বিভিন্ন কর্মচারী :- প্রশাসনিক নিরবচ্ছিন্নতা বজায় রাখতে ম্যানর প্রভু বহু সংখ্যক কর্মচারী নিযুক্ত করতেন। তাদের মধ্যে কিছু উচ্চপদস্থ কর্মচারী নিযুক্ত হতেন। যেমন - (i) স্টেয়ার্ড নামক কর্মচারীদের মূল দায়িত্ব ছিল সামন্ত প্রভুর সম্পত্তি পরিচালনা করা ও ব্যবসা - বাণিজ্য তদারকি করা। (ii) বেইলিফ নামক কর্মচারীরা উৎপাদন ব্যবস্থার ভারসাম্য বজায় রাখতেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে প্রভুকে সুপারিশ করতেন। (iii) এছাড়াও উৎপাদন ব্যবস্থার উন্নয়নের দায়িত্বে থাকতেন রিভি নামক কর্মচারীরা। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


৫. জমির প্রকৃতি :- ম্যানরগুলিতে কয়েকটি ভাগে জমিকে বিভক্ত করা হত , যেমন - সামন্ত প্রভুর খাসজমি , চাষবাসের জন্য জমি , প্রজাদের বসবাসের জমি এবং সাধারণের জন্য জমি। সামন্তপ্রভুর খাসজমিতে কৃষক ও ভূমিদাসরা বেগার শ্রম প্রদানে বাধ্য থাকতেন। এগুলো ছাড়াও যেসকল অতিরিক্ত জমি থাকতো সেগুলিতেও উৎপাদন প্রক্রিয়া চলতো। 

৬. অর্থনৈতিক ব্যবস্থা : - ম্যানর ব্যবস্থা ছিল মূলতঃ সামন্ততন্ত্রের অর্থনৈতিক কাঠামো। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বৈচিত্র ছিল না বললেই চলে এবং কৃষিই ছিল অর্থনীতির একমাত্র ভিত্তি। মূলতঃ দুই ধরণের কৃষক ছিল - স্বাধীন কৃষক ও ভূমিদাস। প্রভুর জমিতে উভয়কেই বেগার শ্রম প্রদান করতে হত। অর্থনীতি ছিল পশ্চাদমুখী এবং বিপুল করের বোঝার কারণে কৃষকদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছিল। 

৭. ম্যানরের সামাজিক প্রকৃতি :- ম্যানর হাউসগুলিতে ম্যানর প্রভুরা বসবাস করতেন। ম্যানর হাউসগুলি ছিল বিলাস - বৈভব ও আভিজাত্যের প্রতীক। পক্ষান্তরে সমাজের কৃষক ও ভূমিদাসদের অবস্থা ছিল অত্যন্ত হীন। তারা ভগ্নপ্রায় কুটিরে বসবাস করতেন এবং জীবনধারণের প্রয়োজনীয় সামগ্রী তারা জোগাড় করতে পারতেন না। শোষণের মাত্রা অত্যধিক থাকায় সাধারণ কৃষক ও ভূমিদাসদের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় ছিল। 

৮. ম্যানর প্রভু - সর্বময় কর্তা :- ম্যানর ব্যবস্থায় ম্যানর প্রভু ছিলেন সম্পূর্ণ ব্যবস্থার একমাত্র সর্বময় কর্তা। তাঁর নির্দেশই সমস্ত ব্যবস্থা পরিচালিত হত। তারা একদিকে যেমন শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করতেন তেমন অন্যদিকে মাত্রারিক্ত শোষণ করে প্রজাদের জীবন দুর্বিসহ করে তুলতেন। তাদের কাছে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী প্রস্তুত থাকতো। ফলে সহজে অত্যাচারিত মানুষ কোনো অভিযোগ জানাতে পারতেন না। 

৯. স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রামসমাজ : - ম্যানর ব্যবস্থায় গ্রামগুলি ছিল স্বয়ংসম্পূর্ণ। ম্যানরে বসবাসকারী ব্যক্তিদের চাহিদা ছিল সীমিত। ফলে জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তারা নিজেরাই উৎপাদন করতে পারতেন। ফলে প্রতিটি গ্রাম অপর গ্রামগুলি থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে বাণিজ্যের বিকাশের ফলে মানুষের চাহিদা বেড়ে যায় এবং এই স্বয়ংসম্পূর্ণতা বিনষ্ট হয়। 

১০. নিরাপত্তা বাহিনী :- প্রতিটি ম্যানর প্রভু এক সুদক্ষ সামরিক বাহিনী গড়ে তুলতেন। এর মূলতঃ তিনটি উদ্দেশ্য ছিল - (ক ) বৈদেশিক আক্রমণের হাত থেকে ম্যানর গ্রামকে রক্ষা করা , (খ ) অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমন করা ও বলপূর্বক রাজস্ব আদায়ের প্রক্রিয়া বজায় রাখা এবং (গ ) যুদ্ধের সময় রাজাকে সৈন্য সরবরাহ করা। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

     
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

Jaigirdari crises in Mughal Period. 

মোগল আমলে জায়গীরদারি সংকট সম্পর্কে আলোচনা কর। 

অথবা , জায়গীরদারি সংকট মোগল সাম্রাজ্যের পতনে কতটা দায়ী ছিল - যুক্তিসহ আলোচনা কর। 


জায়গীরদারি সংকট : - 


জায়গীরদারি প্রথার সংক্ষিপ্ত পরিচয় :- জায়গীরদার ও মনসবদার কথা দুটি প্রায় সমার্থক। প্রতিটি জায়গীরদার মনসব গ্রহণের অধিকারী ছিলেন। মোগল আমলে প্রতিটি জমির রাজস্ব পূর্ব হতেই নির্ধারিত থাকতো। যে এলাকা থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় হয় সেই জমি সমমর্যাদাযুক্ত মনসবদারের মধ্যে বন্টন করা হত। জায়গীরের আয়ই ছিল মনসবদারের বেতন। এছাড়া নগদেও বেতন দেওয়ার রীতি প্রচলিত ছিল। এই প্রথা ধীরে ধীরে মোগল প্রশাসনের নিকট সমস্যা হয়ে পড়ে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

জায়গীরের শ্রেণীভাগ :- মোগল আমলে জায়গীরকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা হত - 
(i) তনখা জায়গীর ও 
(ii) ওয়াতেন জায়গীর। 
বেতনের বিনিময়ে যে জায়গির প্রদান করা হত - তাকে বলা হত তনখা জায়গীর। আর ওয়াতেন জায়গীর ছিল জমির ওপর স্বত্ব ভোগের অধিকার। এই জায়গীর পেতেন মূলতঃ হিন্দুরা এবং তা ছিল বংশানুক্রমিক। ওয়াতেন জায়গীরগুলির রাজস্বের পরিমাণ আকবরের সময়কালেই নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। 

রাজস্ব ঘাটতি :- আকবরের পরবর্তীকাল থেকেই জায়গীরদারি সমস্যার সূত্রপাত ঘটে। কেন্দ্রীয় প্রশাসনের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বহু প্রাদেশিক শাসকেরা রাজস্ব প্রদান বন্ধ করে দেন। ঔরঙ্গজেবের সময়ে এই অবস্থা ভয়ানক হয়ে পড়ে। রাজকোষ একেবারে শুন্য হয়ে যায়। সেনাবাহিনীর পরিচালনার জন্যও প্রয়োজনীয় অর্থ অবশিষ্ট ছিল না। এছাড়া বিদ্রোহী জমিদার ও প্রজারাও খাজনা প্রদান বন্ধ করে দিলে অবস্থা চরমে ওঠে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

খালিশা জমির পরিমান হ্রাস :- আকবরের পরবর্তীকালে অর্থ সংকট তীব্র হলে মনসবদারদের মধ্যে জমি বন্টনের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রের খাস জমি বা খালিশা জমিকেও জায়গিরে পরিণত করা শুরু হয়। ফলে খালিশা জমি থেকে রাষ্ট্রের আয় কমতে থাকে। এর ফলে আবার সম্রাট রাজস্বের ব্যাপারে সম্পূর্ণভাবে জায়গিরদারদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। 

জায়গীরদারি ব্যবস্থার মধ্যে অন্তঃবিরোধ :- জায়গীরদারি ব্যবস্থার মধ্যে একটি অন্তঃবিরোধ ও বৈপরীত্য ছিল। জায়গীরদারদের অধিকার বংশানুক্রমিক ছিলনা। আবার জায়গীররা রাজস্বের অধিকারী হলেও জমির মালিক ছিলেন না। জায়গীরদাররা রাজস্ব আদায় করলেও তা স্থির করত কানুনগো নামক রাজকর্মচারী। আবার জায়গীরদারদের অধিকার কতদিন বলবৎ থাকবে তাও নিশ্চিত ছিলনা। বিচার বা শান্তি শৃঙ্খলার দায়িত্ব জায়গীরদারদের হাতে থাকলেও সম্রাট কর্তৃক নিযুক্ত বাহিনীও ছিল। এই ভাবে জায়গীরদারদের ক্ষমতার মধ্যে এক বৈপরীত্য লক্ষ্য করা যায়। 

ভূমি কেন্দ্রিক রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার :- উপরোক্ত কারণগুলির জন্য জায়গীরদারদের মধ্যে কৃষকের আয় আত্মসাৎ করার প্রয়াস দেখা যায়। অনেকে নগদে রাজস্ব পরিশোধ করত বলে তারা অনেক কম দামে ফসল বিক্রি করতে বাধ্য হয়। সমগ্র রাজস্ব ব্যবস্থার দায়িত্বে ছিল - তালুকদার , মুকাদ্দাম - প্রমুখ কর্মচারীরা ; ফলে রাজস্বের সিংহভাগ তারাই আত্মসাৎ করত। মধ্যস্বত্বভোগীরা এইভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করতে থাকলে তা জায়গীরদারি ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

কৃষকদের ওপর শোষণ ও অত্যাচার :- যেহেতু জায়গীরদারি ব্যবস্থা বংশানুক্রমিক ছিলনা এবং জায়গীরদারি অধিকারের কোনো নিশ্চয়তা ছিলনা ; তাই জায়গীরদাররা কৃষকদের শোষণ ও অত্যাচারের মাধ্যমে অধিক মুনাফা অর্জনের পথকেই বেছে নিয়েছিল। অনেক সময় জায়গীরদাররা নিজে রাজস্ব আদায় না করে ইজারাদারদের দায়িত্ব প্রদান করত। ইজারাদাররা দায়িত্ব পাওয়ার পর ভারতের গ্রামগুলি যেন মরুভূমিতে পরিণত হয়। 

জায়গীরদারদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা :- জমির জায়গীরদারি দখলকে কেন্দ্র করে মোগল দরবারে ঘৃণ্য রাজনৈতিক দলাদলি শুরু হয়। উন্নতমানের জায়গির প্রাপ্তির জন্য সকলেই দরবারে নিজ নিজ প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। উৎকোচ প্রদানের মাধ্যমে জায়গীরদারি কেনা - বেচার রীতিও প্রচলিত হয়।  জায়গিরদারদের এই অবৈধ কার্যকলাপ সম্পর্কে সম্রাট অবগত থাকলেও , রাজস্ব প্রাপ্তির লোভে তিনি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতেন না। 

জমা ও হাসিলের মধ্যে পার্থক্য : প্রশাসন ও জায়গীরদারদের মধ্যে সংঘাতের অনিবার্যতা :- জাহাঙ্গীর ও শাহজাহানের আমলে জায়গীরদারদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু , দেখানো রাজস্ব বা জমা ও আদায়কৃত রাজস্ব বা হাসিলের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য দেখা যেতে থাকে। ঔরঙ্গজেবের আমলে জায়গীরদারদের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেলে সমস্যা আরো ঘনীভূত হয়। জায়গীরদারের সংখ্যা বাড়লেও বণ্টনযোগ্য জমির পরিমান বাড়েনি। ফলে প্রশাসনের সঙ্গে জায়গীরদারদের সংঘাত অনিবার্য হয়ে পড়ে। 

মোগল সাম্রাজ্যের পতনে জায়গীরদারি সংকটের ভূমিকা :- 

জায়গীরদারি ব্যবস্থার সংকট মোগল প্রশাসনিক ভিতকে দুর্বল করে দিয়েছিল ও ভারতের কৃষি ব্যবস্থার উপর চরম আঘাত হেনেছিল। জায়গীরদাররা ইজারাদার নিযুক্ত করলে তারা রাজস্বের জন্য কৃষকদের অমানবিক অত্যাচার শুরু করলে তা কৃষি ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়। একদিকে প্রশাসনিক দুর্বলতা ও অন্যদিকে কৃষি সংকট মোগল সাম্রাজ্যের শেষ মৃত্যুঘন্টা বাজিয়ে দেয়।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

  
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

Discuss the causes of the Civil War in England.

ইংল্যান্ডের গৃহযুদ্ধের কারণগুলি আলোচনা কর। 

ইংল্যান্ডের গৃহযুদ্ধের কারণ :- 


১৬৪২ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে ইংল্যান্ডের রাজতন্ত্র ও পার্লামেন্টের মধ্যে দুটি স্তরে গৃহযুদ্ধ সংগঠিত হয়। প্রথম স্তরে ইংল্যান্ডের রাজা ও সাংসদদের মধ্যে এবং দ্বিতীয় স্তরে ব্যাপক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর রাজা ও সংসদের যৌথ বাহিনীর সাথে সেনাবাহিনীর। ঐতিহাসিক ট্রেভেলিয়ান মন্তব্য করেছেন , ইংল্যান্ডের গৃহযুদ্ধে তেমন কোনো নৃশংসতা লক্ষ্য করা যায় না। প্রথম গৃহযুদ্ধের সময় রাজার পক্ষে ছিলেন ক্যাভালিয়র দল ও সংসদদের পক্ষে পক্ষে ছিল রাউন্ডহেড দল। এর পর দ্বিতীয় গৃহযুদ্ধের সময় ইংল্যান্ডের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়। অধ্যাপক হিল ইংল্যান্ডের গৃহযুদ্ধকে মহান ফরাসি বিপ্লবের সাথে তুলনা করেছেন। তাঁর ভাষায় , '' The English Revolution of 1640 - 1660 was a great social movement like the French Revolution .  ইংল্যান্ডের গৃহযুদ্ধের জন্য বিবিধ কারণ দায়ী ছিল। কারণগুলি হল - 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

১. অর্থনৈতিক পরিবর্তন :- তৎকালীন ইংল্যান্ডের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়। এই সময়কালে ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নতির ফলে নতুন করে মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটে এবং অভিজাতদের অর্থনৈতিক অবস্থার প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়। অন্যদিকে , সাধারণ শ্রমিক , মজুর , কৃষকদের অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত হীন হয়ে পড়ে। চরম দারিদ্রতার জন্য দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সামগ্রীগুলি সংগ্রহ করতে তারা ব্যর্থ ছিল। 

২. ধর্মীয় কারণ :- অধ্যাপক হিল মন্তব্য করেছেন যে , সপ্তদশ শতকে ইংল্যান্ডে মঠ ব্যবস্থার উচ্ছেদ ঘটে। ইতিপূর্বে ক্যাথলিক চার্চগুলি সমস্ত রকমের ধর্মীয় ও সামাজিক অধিকার ভোগ করত। কিন্তু মঠ ব্যবস্থার উচ্ছেদের পর থেকে চার্চের বিরুদ্ধে আন্দোলনের একটি ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করা যায়। মানুষ চার্চগুলির আধিপত্য থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছিল। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. গ্রামীণ জীবনযাত্রার পরিবর্তন :- সপ্তদশ শতকে ইংল্যান্ডের গ্রামীণ জীবনযাত্রায় বেশ কিছু মৌলিক পরিবর্তন সাধিত হয়। ইতিপূর্বে ষোড়শ শতকে জমির দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। এই সময় কাউন্টগুলিতে এক নতুন ধরণের কৃষক বা ভূস্বামী শ্রেণির উদ্ভব ঘটে। এরা ইংল্যান্ডের কাউন্টগুলিতে সামন্তশ্রেণীর ভূমিকাতে অবতীর্ণ হন। এই নতুন শ্রেণি জমির ওপর একাধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে এবং সর্বোচ্চ মুনাফালাভের জন্য সচেষ্ট থাকে। এইভাবে বিভিন্ন শ্রেণীর মুনাফা লাভের প্রচেষ্টা এক সমস্যামূলক পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটে। 

৪. শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে পরিবর্তন :- তৎকালীন সময়ে ইংল্যান্ড ছিল পশম বা উল , কয়লা , লোহা , টিন , সাবান - ইত্যাদি শিল্পোৎপাদনের এক বৃহৎ কেন্দ্র। শিল্প বিপ্লবের হাত ধরে শিল্প উৎপাদন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেলে রাষ্ট্র মুনাফা লাভের আশায় সকল বাণিজ্যিক সংস্থা ও বণিক সংগঠনগুলির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টা করে। ইতিমধ্যেই বাণিজ্যে ব্যাপক মুনাফা লাভের ফলে অভিজাত ও মধ্যবিত্ত সম্প্রদায় ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী হয়ে ওঠে। ফলে রাষ্ট্রশক্তি ও বাণিজ্যিক সংগঠনগুলির মধ্যে সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে ওঠে। 

৫. পিউরিটানদের বিরোধ :- তৎকালীন সময়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পিউরিটান সদস্যসংখ্যা অনেক বেশি ছিল। এই সময় রাজতন্ত্র ও আর্চবিশপ চার্চের সংস্কার সাধনের জন্য যেসকল নীতি গ্রহণ করেছিলেন তা পিউরিটানদের স্বার্থের অনুকূলে ছিলনা। এই পরিস্থিতিতে ১৬৩০ খ্রিস্টাব্দে রাজা প্রথম জেমস ও প্রথম চার্লস পিউরিটানদের মতবাদ বিকাশের বিরোধী ছিলেন। কিন্তু যেহেতু পার্লামেন্টে পিউরিটানরা সংখ্যায় অধিক ছিল তাই পার্লামেন্টকে পিউরিটানরা নিজেদের স্বপক্ষে আনতে পেরেছিল। এমতাবস্থায় পিউরিটানরা নিজেদের ধর্মীয় স্বাধীনতা বজায় রাখতে সংগ্র্রামের পথে অবতীর্ণ হয়। 

৬. রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ :- সপ্তদশ শতকের ইংল্যান্ডের রাজারা রাজার দৈবস্বত্ত্বে বিশ্বাসী ছিলেন। এই সময় যেহেতু মধ্যবিত্ত ও অভিজাত ও বণিক সম্প্রদায় প্রভূত ক্ষমতার অধিকারী হয় তাই তারা রাজতন্ত্রের দুর্বলতা ও সামরিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে পার্লামেন্টে নিজেদের বিশেষ স্বার্থগুলিকে চরিতার্থ করতে উদ্যোগী হয়। মধ্যবিত্ত , অভিজাত ও বণিক সম্প্রদায় প্রভাবিত পার্লামেন্টের সঙ্গে রাজতন্ত্রের বিরোধ অনিবার্য হয়ে ওঠে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি :- টিউডর রাজাদের রাজত্বকালের শেষের দিকে ইংল্যান্ড সহ সারা ইউরোপে অর্থনৈতিক সংকট চরমে ওঠে। জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় এবং সাধারণ ও দরিদ্র মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বিলুপ্ত হয়। কিন্তু অন্যদিকে মধ্যবিত্ত ও অভিজাত সম্প্রদায়ের সম্পদ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতেই থাকে। এই পরিস্থিতির সমাধানকল্পে রাজতন্ত্র কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি উপরন্তু তারা বলপূর্বক কর আদায়ের কাজেই অধিক ব্যাস্ত ছিলেন। ফলে পার্লামেন্টের সাথে রাজশক্তির বিরোধের পথ খুলে যায়। 

৮. কর আরোপ সংক্রান্ত বিরোধ :- টিউডরদের পর Stuart রাজারা ক্ষমতায় এলে তারা পার্লামেন্টের সম্মতি ছাড়া আমদানির ওপর শুল্ক আরোপের চেষ্টা করে। রাজতন্ত্রের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পার্লামেন্ট সরাসরি সংঘর্ষে অবতীর্ণ হয়। পার্লামেন্ট ১৬২৮ খ্রিস্টাব্দে '' Petition of Right '' জারি করেন। এই ঘোষণাপত্রে বলা হয় পার্লামেন্টের সম্মতি ছাড়া কোনো কর আরোপ করা যাবে না। এর ফলে পার্লামেন্ট ও রাজতন্ত্রের মধ্যে সংঘাত তীব্র হয় এবং ১৬২৯ খ্রিস্টাব্দে রাজা প্রথম চার্লস পার্লামেন্ট ভেঙে দেন। 

৯. পুনরায় পার্লামেন্ট আহ্বান :- পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পর রাজা প্রথম চার্লসকে প্রবলভাবে অভ্যন্তরীণ বিরোধের সম্মুখীন হতে হয়। অর্থনৈতিক ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে পড়ে। ফলে তিনি ১৬৪০ খ্রিস্টাব্দে পুনরায় পার্লামেন্ট আহ্বান করতে বাধ্য হন। পুনরায় পার্লামেন্ট আহ্বান বিরোধী শক্তিগুলির নিকট জয়সূচক ঘটনা ছিল। 

১০. পার্লামেন্ট প্রণীত আইনবিধি ( ১৬৪০ - ১৬৪২ ) :- পুনরায় পার্লামেন্ট আহুত হলে পার্লামেন্ট একগুচ্ছ রাজতন্ত্র বিরোধী আইন প্রণয়ন করে। যেমন - (i) সামরিক বাহিনীকে রাজতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করা হয়। (ii) রাজতন্ত্র কর্তৃক প্রণীত সকল প্রকার অর্থনৈতিক বিধি ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। (iii) পার্লামেন্ট চার্চের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। (iv) রাজতন্ত্রের প্রতীক ষ্টার চেম্বার ও হাই কমিশনগুলিকে বাতিল করা হয়। (v) রাজার ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিল আনার প্রস্তাব করা হয়। 

১১. Nineteen Propositions নামক চরমপত্র :- উক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজা হ্যাম্পডেন পাঁচ বিরোধী নেতাকে গ্রেফতার করেন। এর প্রতিবাদ হিসাবে পার্লামেন্ট রাজাকে ১৬৪২ এর জুনমাসে '' Nineteen Propositions '' নামক এক চরমপত্র প্রেরণ করে। রাজা পার্লামেন্টের এই সকল দাবী মেনে নিতে অস্বীকার করলে পরিস্থিতি চরমে ওঠে। রাজা পার্লামেন্টে সৈন্য সমাবেশের জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন। ফলে এর চরম পরিণতি হিসেবে ১৬৪২ এর আগস্ট মাসে ইংল্যান্ডে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়।  

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো                                             

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

Rajput Policy of Akbar and its impact. 

আকবরের রাজপুত নীতি আলোচনা কর। 

অথবা , আকবরের রাজপুত নীতি ও তার ফলাফল সম্পর্কে আলোচনা কর।    

আকবরের রাজপুত নীতি :- 


১৫২৭ এ খানুয়ার যুদ্ধ থেকে শুরু করে ১৫৬৫ খ্রিস্টাব্দে তালিকোটার যুদ্ধে পরাজিত হলেও সামরিক জাতি হিসেবে রাজপুতদের শক্তি ও ক্ষমতা কোনো অংশেই ধ্বংস হয়ে যায়নি। উত্তর ভারতে শাসক হিসেবে তাদের প্রতিপত্তি তখনও অক্ষুন্ন ছিল। মুসলিম শাসকদের মধ্যে আকবর সর্বপ্রথম সামরিক শক্তি হিসেবে রাজপুতদের গুরুত্ব উপলব্ধি করেন ও মোগল প্রশাসনে তাঁদের নিযুক্ত করে উত্তর ভারত ও রাজপুতানা অঞ্চলকে মোগল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করতে প্রয়াসী হন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

আকবর কর্তৃক রাজপুত নীতি গ্রহণের কারণ :-    

রাজপুতদের সম্পর্কে বিশেষ নীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু কারণ ছিল। 
প্রথমতঃ - সামরিক দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ রাজপুত জাতির মোগল বিরোধিতা মোগল সাম্রাজ্যের পক্ষে মঙ্গলজনক হত না। 
দ্বিতীয়তঃ - মোগল দরবারে পুরোনো অভিজাতদের ক্ষমতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছিল এবং তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্রাটের পক্ষে প্রয়োজন ছিল। 
তৃতীয়তঃ - মোগল সেনাপতি ও সৈন্যবর্গের অনেকেই ছিল স্বার্থান্মেষী ও লোভী। সুযোগ পেলেই তারা সম্রাটের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে সামিল হত। এই অবস্থায় রাজপুতদের মত সামরিক দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ জাতির সহযোগিতা আকবরের প্রয়োজন ছিল। 
চতুর্থতঃ - মোগল সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণ ও তার স্থিতিশীলতা রক্ষার্থে রাজপুতদের সাহায্যগ্রহন একান্ত অপরিহার্য ছিল। 

রাজপুতনীতির দুটি প্রধান প্রায়োগিক দিক :- 
আকবরের রাজপুতনীতির প্রায়োগিক ক্ষেত্রে দুটি ধারা লক্ষ্য করা যায় - 
(A) মিত্রতার নীতি - (a) বৈবাহিক সম্পর্কের নীতি ও (b) রাজপুতদের উচ্চপদে নিয়োগ। 
(B) সংঘর্ষের নীতি। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

(A) (a) বৈবাহিক সম্পর্কের নীতি :- মোগল সাম্রাজ্যের ভিত্তি সুদৃঢ় করতে আকবর রাজপুত পরিবারের বেশ কয়েকজন মহিলার সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। 
(i) অম্বররাজ বিহারীমলের কন্যার সাথে বিবাহ করেন। 
(ii) ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি জয়পুরের ভগবান দাসের কন্যার সাথে নিজ পুত্র সেলিমের বিবাহ দেন। 
(iii) ১৫৭০ খ্রিস্টাব্দে তিনি বিকানীর রাজকন্যাকে বিবাহ করেন। 
আকবরের এই বিবাহ নীতির ফলে মোগল সাম্রাজ্য সুদৃঢ় ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়। যে সকল পরিবারের সাথে আকবর বৈবাহিক মিত্রতা বন্ধনে আবদ্ধ হতেন সেই সকল রাজপুত বংশের সঙ্গে মোগলদের সকল প্রকার দ্বন্দ্বের অবসান ঘটে। আকবরের বৈবাহিক নীতি প্রসঙ্গে ডক্টর বেণীপ্রসাদ বলেছেন - '' It symbolised the dawn of a new era in Indian politics .   

(b) রাজপুতদের উচ্চপদে নিয়োগের নীতি :- বৈবাহিক মিত্রতা নীতি ছাড়াও রাজপুতদের উচ্চপদে নিয়োগের নীতি আকবরের কূটনৈতিক দূরদৃষ্টির পরিচয় দেয়। তিনি বহু রাজপুত নৃপতি ও অভিজাতদের মোগল প্রশাসনে বিভিন্ন উচ্চপদে নিয়োগ করেন। যেমন বিহারীমল ও তাঁর পুত্র ভগবান দাস এবং ভগবান দাসের পালিত পুত্র মানসিংহ - সকলকেই আকবর নিজ প্রশাসনে উচ্চপদের মনসবদারী প্রদান করেন। এছাড়াও রাজস্বসচিব পদে তিনি রাজা টোডরমলকে নিয়োগ করেন। অপর এক রাজপুত বীরবলকে নিজের সর্বক্ষণের সঙ্গী হিসেবে নিযুক্ত করেন।     

(B) সংঘর্ষের নীতি :- কিন্তু যেসকল নৃপতিরা আকবরের বশ্যতা স্বীকার করতে রাজি হন নি তাঁদের বিরুদ্ধে আকবর সংঘর্ষের নীতি অনুসরণ করেন। 
(i) গুজরাট বিজয়ের পথে চিতোর ছিল প্রধান অন্তরায়। দিল্লি ও আমেদাবাদের মধ্যে যোগযোগ ব্যবস্থার নিরাপত্তার জন্য চিতোর দখল প্রয়োজন ছিল। তাই আকবর ১৫৬৭ খ্রিস্টাব্দে চিতোর আক্রমণ করেন। ১৫৬৮ তে চিতোর মোগল বাহিনী কর্তৃক অধিকৃত হয়। 
(ii) ১৫৬৯ খ্রিস্টাব্দে আকবর রণথম্ভোর দখল করেন। 
(iii) এরপর কালিঞ্জরের বিরুদ্ধে মোগল অভিযান প্রেরিত হয়। 
(iv) ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে হলদিঘাটের যুদ্ধে রাণা প্রতাপকে পরাজিত করে আকবর মেবার অধিকার করেন। 

( C ) অন্যান্য ক্ষেত্রে রাজপুত তথা হিন্দুদের বিশেষ সুযোগ সুবিধা প্রদান :- 
বৈবাহিক মিত্রতার নীতি , রাজপুতদের উচ্চপদে নিয়োগের নীতি ও সংঘর্ষের নীতি ছাড়াও আকবর আরো বিভিন্নভাবে রাজপুত তথা হিন্দুদের বিশেষ সুযোগ সুবিধা প্রদান করে তাদেরকে মোগল রাজবংশের অনুগত মিত্রে পরিণত করেন। 
(i) ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দে আকবর হিন্দুদের ওপর চাপানো জিজিয়া কর প্রত্যাহার করেন। 
(ii) তার আগে ১৫৬৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি হিন্দুদের উপর থেকে তীর্থকর তুলে নেন। 
(iii) মোগল প্রশাসনের সকল উচ্চপদগুলি তিনি হিন্দুদের জন্য উন্মুক্ত করেন। 
(iv) হিন্দুদের জন্য ব্রাহ্মণ বিচারক নিযুক্ত করেন। 
(v) হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে সাংস্কৃতিক সমন্বয় প্রতিষ্ঠা করার জন্য তিনি অনুবাদ বিভাগ স্থাপন করে হিন্দুদের গ্রন্থগুলি ফারসি ভাষায় অনুবাদের ব্যবস্থা করেন। 
(vi) কোনো রাজপূত মোগল হারেমে কন্যা পাঠাতে বাধ্য থাকবেন না। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

আকবরের রাজপুত নীতির ফলাফল :- 


১. মোগল - রাজপুত দ্বন্দ্বের অবসান ঘটে রাজনৈতিক সুস্থিরতা স্থাপিত হয়। 
২. রাজপুতদের সহায়তায় আকবর সমস্ত বিদেশি অভিজাত ও রাজন্যবর্গকে নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছিলেন। 
৩. রাজপুতদের সাথে মিত্রতা স্থাপনের ফলে মোগল সামরিক বাহিনী শক্তিশালী হয়। 
৪. ভারতে হিন্দু - মুসলিম ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়। 
৫. হিন্দু - মুসলিম সমন্বয়ে এক নতুন সাংস্কৃতিক উৎকর্ষতার যুগের সূচনা হয়। 
৬. শুধুমাত্র সাম্রাজ্যের বিস্তার নয় , রাজপুতদের সাহায্যে আকবর মোগল প্রশাসনকেও সার্থকভাবে পরিচালিত করতে পেরেছিলেন। 
৭. আকবরের বদান্যতায় বহু রাজপুত রাজন্যবর্গ মোগল প্রশাসনের উচ্চপদ লাভ করে। 
৮. আকবরের রাজপুত নীতির সফলতা এ থেকেই প্রমাণিত হয় যে পরবর্তীকালে ঔরঙ্গজেব রাজপুত মিত্রতার নীতি পরিত্যাগ করলে মোগল সাম্রাজ্যের পতন ঘনিয়ে আসে। 
৯. রাজপুত নীতির সফলতার ফলে আকবর ধর্মীয় ক্ষেত্রে এক নতুন উদারনৈতিক নীতি গ্রহণ করতে সমর্থ হন। 
১০. পরবর্তী রাজন্যবর্গের জন্য আকবর রাজতন্ত্রের এক মহান আদর্শ প্রতিষ্ঠা করেন এবং আকবর হিন্দুস্থানের সম্রাটরূপে গৃহীত হন।         

পরিশেষে বলা যায় , আকবরের রাজপুত নীতি তাঁর কূটনৈতিক দক্ষতা ও রাজনৈতিক দূরদৃষ্টির পরিচয় দেয়। তাঁর এই রাজনৈতিক দক্ষতার ফলেই তিনি মোগল সাম্রাজ্যকে সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠা করেন। রাজপুতদের মত এক সংগ্রামশীল জাতিকে মোগল বংশের অনুগত মিত্রে পরিণত করে। এর ফলে আকবর রাজপুতদের সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিক , সামাজিক , সাংস্কৃতিক , অর্থনৈতিক সকল ক্ষেত্রেই এক সুদৃঢ় প্রশাসন গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো                
      
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

Reasons for the emergence of feudalism in medieval Europe: -

মধ্যযুগে ইউরোপে সামন্ততন্ত্রের উদ্ভবের কারণগুলি আলোচনা করো। 

মধ্যযুগে ইউরোপে সামন্ততন্ত্রের উদ্ভবের কারণ :- 


মধ্যযুগের ইউরোপে সামন্ততন্ত্রের উদ্ভব কোনো তাৎক্ষণিক বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না। মূলত খ্রিস্টীয় নবম থেকে খ্রিস্টীয় দ্বাদশ শতক পর্যন্ত ছিল সামন্ততন্ত্রের সবচেয়ে সমৃদ্ধির সময়কাল। এজন্য এই সময়কালকে সামন্ততন্ত্রের ধ্রুপদী যুগ বলা হয়। সামন্ততন্ত্রের উদ্ভব প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক মার্ক ব্লখ উল্লেখ করেছেন - Feudalism was born in the midst of an infinitely troubled epoch , and in some measure it was the child of those troubles themselves . সামন্ততন্ত্রের উদ্ভবের বিভিন্ন কারণগুলি হল - 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

১. রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও অরাজকতা :- ক্যারোলিঞ্জিয় শাসনের অবসানের পর মধ্যযুগের ইউরোপে ব্যাপক রাজনৈতিক অস্থিরতা লক্ষ্য করা যায়। প্রশাসন , উৎপাদন , বন্টন সমস্ত ক্ষেত্রেই এক অভূতপূর্ব অরাজকতার দরুন রাষ্ট্রযন্ত্র দিশাহীনভাবে পরিচালিত হচ্ছিল। এই সকল রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দূর করে একটি নতুন ধরণের প্রশাসনিক পরিকাঠামো গড়ে ওঠার প্রয়োজন ছিল। 

২. বৈদেশিক আক্রমণ :- নবম শতকের প্রথম দিকে ভাইকিং , স্যারাসেন , ম্যাগিয়া ইত্যাদি বর্বর জাতিগুলির আক্রমণে ইউরোপের সাধারণ জনজীবন ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে জমির মালিকানা ও সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস পাল্টাতে থাকে। অত্যাবশ্যক রাষ্ট্রীয় কর্তব্য সম্পাদিত হতে থাকে বেসরকারিভাবে। মানুষের জীবন , সম্পত্তি ও নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। 

৩. বেনিফিশ প্রথা :- নবম শতকের গোড়ার দিকে ইউরোপের সর্বত্র নিজেদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষার তাগিদে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি বা নেতৃত্বের নিকট আত্মসমর্পণ করতে শুরু করে। এক্ষেত্রে আশ্রয়দাতা পরিণত হলেন প্রভু বা লর্ড পরিচয়ে। তারা আশ্রয়প্রার্থীদের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা প্রদান করতেন এবং তার পরিবর্তে আশ্রয়প্রার্থীদের নিকট আনুগত্য গ্রহণ করতেন। এই প্রথা বেনিফিশ নামে পরিচিত ছিল। এটি ছিল সামন্ততন্ত্রের সূচনার প্রারম্ভিক স্তর। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৪. কমিটেটাস প্রথা :- কমিটেটাস প্রথা মূলত প্রচলিত ছিল প্রাচীন জার্মানিতে। এই প্রথা অনুসারে , স্বাধীন যোদ্ধারা কোনো শক্তিশালী ও প্রভাবশালী রাজন্যবর্গ বা সামরিক নেতার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করত। এর পরিবর্তে সেই রাজন্যবর্গ বা সামরিক নেতা আনুগত্য প্রদর্শনকারী স্বাধীন যোদ্ধাদের নিরাপত্তা ও আশ্রয় প্রদান করতেন। এরপর নবম শতকে বিশৃঙ্খলার যুগে সারা ইউরোপে এই প্রথা অনুসৃত হতে থাকে। 

৫. আনুগত্য প্রদর্শনকারী ও পৃষ্ঠপোষক শ্রেণীর পারস্পরিক নির্ভরশীলতা :- নবম শতকে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অরাজকতার সুযোগে ইউরোপীয় সমাজে অনুগত ও পৃষ্ঠপোষক শ্রেণির ধারণাটি ব্যপকভাবে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। আনুগত্য প্রদর্শনকারী শ্রেণি আশ্রয় ও নিরাপত্তার বিনিময়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করতো। এই সামাজিক ধারণা ছিল সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার কাঠামোগত ভিত্তি। 

৬. অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ভাঙন :- নবম শতক থেকে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে পশ্চিম ইউরোপ সহ প্রায় পুরো ইউরোপ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে পরে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ শিথিল হয়ে পরে। ফলে এই সময় থেকে স্থানীয় স্তরে গ্রাম ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদেরকে কেন্দ্র করে ইউরোপের অর্থনীতি পরিচালিত হতে থাকে। সামন্ততন্ত্রে মূলতঃ এই অর্থনৈতিক কাঠামোকেই অনুসরণ করা হয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. আঞ্চলিক শক্তির উত্থান :- রোমান সাম্রাজ্যের পতনের সঙ্গে সঙ্গে সমগ্র ইউরোপ জুড়ে কেন্দ্রীয় শক্তি দুর্বল হতে শুরু করে। কেন্দ্রীয় শক্তির এই দুর্বলতার সুযোগে স্বাভাবিকভাবেই আঞ্চলিক শক্তিগুলির দ্রুত উত্থান ঘটতে থাকে। এই আঞ্চলিক শক্তিগুলি নিজ নিজ এলাকায় স্বাধীন কৃষিনির্ভর অর্থনীতির সূচনা করে।  

৮. বাণিজ্য ক্ষেত্রে অবনতি :- নবম শতকের সময়কাল থেকে বিদেশি জাতির আক্রমণ , কেন্দ্রীয় শক্তির দুর্বলতা - ইত্যাদি কারণে ইউরোপীয় বাণিজ্য ক্ষেত্রে চরম অবনতি ঘটতে থাকে। ফলে জমির ওপর নির্ভরশীলতা ছাড়া অন্য কোনো পথ ছিল না। মানুষ অনিশ্চিত ব্যবসা বাণিজ্য ছেড়ে দিয়ে স্থানীয় প্রভুর অধীনে কৃষিভিত্তিক আর্থিক কাঠামো গড়ে তোলে। 

৯. মুসলিম আক্রমণ :- নবম শতকে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় শক্তিগুলির দুর্বলতার সুযোগে বারংবার বিদেশি আক্রমণ ঘটতে থাকে। কিন্তু মুসলিম আক্রমণ ইউরোপীয়দের কাছে ছিল আতঙ্কের বিষয়। তাই মানুষ স্থানীয় স্তরে শক্তিশালী প্রভুর নিকট স্মরণাগত হতে থাকে। এইভাবে আঞ্চলিক স্তরে পারস্পরিক নির্ভরশীলতার ভিত্তিতে একটি নতুন গ্রামীণ , কৃষিপ্রধান অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সূচনা ঘটে - যা সামন্ততন্ত্র নামে পরিচিত।    

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো    
  
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

 Administrative system of Shivaji. 

শিবাজীর শাসন-ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করো। 

শিবাজীর শাসন-ব্যবস্থার সমালোচনাসহ মূল্যায়ন করো।   

শিবাজীর শাসনব্যবস্থা :- 


মারাঠা জাতিকে একসূত্রে আবদ্ধ করা এবং মোগলদের বিরুদ্ধে সফলতার একটি অন্যতম কারণ ছিল শিবাজীর একটি সুগঠিত শাসন - ব্যবস্থা। শিবাজী যদিও স্বৈরতান্ত্রিক রাজতন্ত্র প্রবর্তন করেছিলেন , তথাপি তাঁর রাজদর্শের মূল ভিত্তি ছিল প্রজাকল্যান। যদিও ভিনসেন্ট স্মিথ মারাঠা রাজ্যকে '' দস্যুরাষ্ট্র '' বলে অভিহিত করেছেন , কিন্তু রোলিনসন শিবাজীকে একজন দক্ষ যোদ্ধা ,একজন সুদক্ষ প্রশাসক বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি শিবাজীকে নেপোলিয়নের সাথে তুলনা করেছেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

১. অষ্টপ্রধান :- শিবাজী তাঁর শাসনকার্যে সহায়ক হিসাবে আটজন মন্ত্রীকে নিযুক্ত করেছিল। এঁদের অষ্টপ্রধান বলা হত। 
(i) পেশোয়া বা প্রধানমন্ত্রী 
(ii) অমাত্য বা আয় - ব্যয়ের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী। 
(iii) সামন্ত বা পররাষ্ট্র বা যুদ্ধ সংক্রান্ত মন্ত্রী। 
(iv) সেনাপতি বা সামরিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত। 
(v) ওয়াকে নভিস - অভিলেখ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত। 
(vi) সচিব - সরকারি পত্র বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী। 
(vii) ন্যায়াধীশ বা প্রধান বিচারপতি। 
(viii) পন্ডিতরাও - ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী। 

২. প্রাদেশিক শাসন :- শিবাজী তাঁর সাম্রাজ্যকে তিনটি প্রদেশে বিভক্ত করেন। এই প্রদেশগুলিকে বলা হত '' প্রান্ত ''। প্রান্তের শাসনকর্তা ছিলেন '' মামলাতদার ''। প্রতিটি প্রান্ত কয়েকটি পরগণায় বিভক্ত ছিল। এগুলিকে বলা হত '' তরফ ''। পরগণার শাসনকর্তা ছিলেন কারনুন। প্রতিটি পরগণা অনেকগুলি গ্রামে বিভক্ত ছিল। গ্রামের শাসনকার্য পরিচালনা করতেন গ্রাম পঞ্চায়েৎ। এছাড়া দেশপান্ডে নামক এক শ্রেণির কর্মচারী থাকতেন যাঁরা গ্রামের শাসনকার্য পরিদর্শন করতেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. বিচার - ব্যবস্থা :- মারাঠা রাজ্যের বিচার ব্যবস্থা ছিল অনুন্নত ও তা যুগোপযোগী ছিল না। মারাঠারাজ্যে স্থায়ী বিচারালয় ছিল অনুপস্থিত। কোনো সুনির্দিষ্ট আইন - বিধিও বিচারকার্যে অনুসৃত হত বলে - প্রমান পাওয়া যায়নি। গ্রামাঞ্চলে বিচারকার্য সম্পাদন করতেন গ্রামপ্রধান বা প্যাটেল। ন্যায়াধীশ নামক বিচারকেরা আপিলের বিচারকার্যের তদারক করতেন। '' হাজির মজলিস '' ছিল সর্বোচ্চ আপিল আদালত। 

৪. রাজস্ব - ব্যবস্থা :- শিবাজীর রাজস্ব নীতির ওপর মালিক অম্বরের রাজস্ব নীতির প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়। শিবাজী কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি রাজস্ব আদায়ের নীতি গ্রহণ করেন। তিনি রাজ্যের সমস্ত জমি জরিপ করে উৎপন্ন ফসলের এক - তৃতীয়াংশ রাজস্ব ধার্য করেন। শস্যের পরিবর্তে নগদেও রাজস্ব প্রদানের রীতি প্রচলিত ছিল। এছাড়াও রাষ্ট্রের তরফে কৃষকদের ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা ছিল। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে শিবাজী উৎপীড়নের নীতি গ্রহণ করেননি। 

৫. চৌথ ও সরদেশমুখী :- মারাঠা রাজ্য ছাড়াও শিবাজী বিজাপুর ও মোগল অধিকৃত অঞ্চলগুলি থেকে চৌথ ও সরদেশমুখী নামক রাজস্ব আদায় করতেন। চৌথ ছিল ফসলের এক - চতুর্থাংশ এবং সরদেশমুখী ছিল উৎপন্ন ফসলের এক দশমাংশ। এগুলি ছিল মূলতঃ আত্মরক্ষা ও নিরাপত্তামূলক কর। এগুলি প্রধানদের মাধ্যমে উক্ত রাজ্যগুলি মারাঠাদের নিকট আক্রমণের হতে নিরাপত্তালাভ করতেন। অধ্যাপক যদুনাথ সরকার একে '' নিষ্কৃতি কর '' বলে উল্লেখ করেছেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৬. সামরিক পরিকাঠামো :- সামরিক সংগঠনের ক্ষেত্রে শিবাজীর প্রতিভা ছিল অতুলনীয়। শিবাজীর পূর্ববর্তী সময়ে মারাঠাদের সামরিক সংগঠন স্থায়ী ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত ছিল না। সৈন্যরা অধিকাংশই ছিল কৃষিজীবী। কিন্তু শিবাজী এই ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটান। তিনি সেনাবাহিনীকে স্থায়ী ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং সৈন্যদের বেতন দেওয়ার রীতি প্রচলন করেন। তাঁর সেনাবাহিনী প্রায় চল্লিশ হাজার অশ্বারোহী ও এক লক্ষ পদাতিক সৈন্য দ্বারা গঠিত ছিল। 

৭. বর্গী ও শিলাদার :- শিবাজীর আমলে মারাঠা অশ্বারোহী বাহিনী বর্গী ও শিলাদার এই দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। বর্গীরা সরাসরি রাষ্ট্রের কাছ থেকে অস্ত্র ও বেতন পেত। কিন্তু শিলাদাররা শুধুমাত্র যুদ্ধের সময় বেতন পেত এবং অস্ত্র তাদের নিজেদেরকেই সংগ্রহ করতে হত। পঁচিশজন অশ্বারোহী একজন হাবিলদারের অধীনে এবং পাঁচজন হাবিলদার একজন জুমলাদারের অধীনে থাকতো। 

৮. সেনাবাহিনীর উৎকর্ষতা :- অশ্বারোহী ছাড়াও শিবাজীর সেনাবাহিনীতে হস্তী , উট ও রণতরীও ছিল। সেনাবাহিনীতে প্রায় ১২০০ রণহস্তী ছিল। এছাড়াও শিবাজী একটি গোলন্দাজ বাহিনীও তৈরী করেছিলেন। তাঁর সেনাবাহিনীতে কামান ও বন্দুকের ব্যবহার প্রচলিত ছিল। হিন্দু , আফগান , আরবি , মুসলিম - সকলেই শিবাজীর সেনাবাহিনীর অন্তর্গত ছিল। 

৯. দুর্গ : সামরিক ব্যবস্থার প্রধান অঙ্গ :- শিবাজীর সামরিক ব্যবস্থায় দুর্গগুলি ছিল মারাঠা শক্তি ও সামরিক উৎকর্ষতার প্রতীক। এগুলি ছিল সামরিক সংগঠনের প্রধান কেন্দ্র। দুর্গের শাসনভার ন্যাস্ত ছিল হাবিলদার , সর্বনিশ এবং স্বর্ণবৎ নামক তিন পদাধিকারীর হাতে। এগুলিতে যুদ্ধের জন্য সর্বদা প্রচুর পরিমানে অস্ত্র ও রসদ মজুদ থাকত। দুর্গগুলির শক্তির ভিত্তিতেই মারাঠা বাহিনী পরাক্রমী হয়ে উঠেছিল। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

শিবাজীর শাসন - ব্যবস্থার সমালোচনা :- 

শিবাজীর শাসন ও সামরিক ব্যবস্থা উভয়ই ত্রুটিমুক্ত ছিলনা। 
প্রথমতঃ - অতি অল্প সময়ের মধ্যে শিবাজীকে বহু যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত হতে হয়। ফলে প্রয়োজনীয় শাসনতান্ত্রিক সংস্কারের সময় তিনি পাননি।   

দ্বিতীয়তঃ - শিবাজী জায়গীর প্রথার সম্পূর্ণ বিলোপ সাধন করতে পারেননি। ফলে তাঁর মৃত্যুর পর জায়গীর প্রথা পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। 

তৃতীয়তঃ - শিবাজী চৌথ ও সরদেশমুখী নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনার শিকার। ঐতিহাসিকদের মতে এই দুই কর ছিল একধরণের ডাকাতি এবং তা বলপূর্বক আদায় করা হত। 

চতুর্থতঃ - শিবাজীর মন্ত্রীসভাতে ব্রাহ্মণদের অতিরিক্ত প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত ছিল। তাঁর অষ্টপ্রধানের প্রায় সকলেই ছিলেন ব্রাহ্মণ। ফলে অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষেরা শিবাজীর বিরোধীভাবাপন্ন হয়েছিল। 

পঞ্চমতঃ - বিজিত রাজ্যে জমি বন্টনকে কেন্দ্র করেও মারাঠাদের মধ্যে বিবাদের সূত্রপাত ঘটে - যা শিবাজী দূর করতে পারেননি।  

ষষ্টতঃ - শিবাজী সাক্ষরতার প্রসারে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। ফলে মারাঠাদের নিরক্ষরতা মারাঠাদের অগ্রগতির পথ রুদ্ধ করেছিল। 

সপ্তমতঃ - শিবাজীর শাসন ব্যবস্থায় নারীদের তেমন গুরুত্ব ছিলনা। তৎকালীন সময়ে মারাঠা রাজ্যে নারী শিক্ষাও অবহেলিত ছিল। 

তবে এসব স্বত্তেও বলা যায় , শিবাজী তৎকালীন সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে যে শাসন ব্যবস্থার পরিচয় দিয়েছিলেন এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মোগল প্রতিরোধের নীতি গ্রহণ করেছিলেন তা বহুল প্রশংসার দাবী রাখে। শিবাজীর পরাক্রম এই ঘটনাতেই প্রমাণিত হয় যে তাঁর রাজত্বকালে ঔরঙ্গজেব সমস্ত বল প্রয়োগ করেও মারাঠাদের পদানত করতে পারেন নি। শুধুমাত্র এই ঘটনার জন্যই শিবাজী ভারতীয়দের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবেন। শিবাজীর নেতৃত্বে মারাঠা রাজ্যের উত্থান পরবর্তীকালে ভারতীয় জাতীয়তাবাদের উন্মেষে সহায়ক হয়েছিল।       

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো 

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

Reasons for Shivaji's success: -

শিবাজীর সাফল্যের কারণগুলি আলোচনা করো। 

শিবাজীর সাফল্যের কারণ :- 


ঐতিহাসিক গর্ডন শিবাজী সম্পর্কে বলেছেন - The most charismatic and dynamic leader in Maratha history . মারাঠারা তাঁকে '' মহামানব '' বলে মনে করত। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্ব , দেশপ্রেম , কূটনৈতিক কৌশল মারাঠা জাতিকে অপ্রতিরোধ্য করে তোলে। শিবাজীর জীবনকালে ঔরঙ্গজেব সমগ্র শক্তি প্রয়োগ করেও মারাঠা জাতিকে পদানত করতে পারেননি। এমনকি , মারাঠা জাতিকে শিবাজী যে দৃঢ় ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন , তাঁর মৃত্যুর পরও মারাঠা জাতি মোগল প্রতিরোধে অনেকটাই সফল হয়েছিল। শিবাজীর সাফল্যের কারণগুলি হল - 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

১. শিবাজীর নিজস্ব ব্যক্তিত্ব ও যোগ্যতা :- শিবাজী নিজে ছিলেন একজন পরাক্রমী ও সুদক্ষ যোদ্ধা। তাঁর দূরদৃষ্টি ও কূটনৈতিক চেতনা ছিল প্রবল। প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও শিবাজী সাফল্যের পরিচয় দিয়েছিলেন। শিবাজীর ব্যক্তিগত যোগ্যতা ও নেতৃত্ব মারাঠাদের সফলতা এনে দেয়। 

২. পরধর্মসহিষ্ণুতা :-  হিন্দু ধর্মের প্রবল অনুরাগী হয়েও শিবাজী ছিলেন পরধর্মসহিষ্ণু। মোগল অঞ্চলগুলিতে আক্রমণকালে তিনি কখনোই অযথা হিংসার আশ্রয় গ্রহণ করেননি বা মসজিদের ওপর আক্রমণ করেননি।  এমনকি বাবা ইয়াকত দরগাতেও তিনি অর্থসাহায্য করেছিলেন। 

৩. শিবাজীর মানবতাবাদী চরিত্র :- শিবাজীর মানবতাবাদী চরিত্রের প্রশংসা তাঁর ঘোর শত্রুরাও করে থাকেন। শিবাজী কখনোই অপ্রয়োজনে হত্যা করেননি বা মুসলিম নারী , শিশুদের ওপর অত্যাচার করেননি। 

৪. ভৌগোলিক বিষয় :- মহারাষ্ট্রের ভৌগোলিক প্রকৃতি শিবাজীর সাফল্যের সহায়ক হয়েছিল। পশ্চিমঘাট , সাতপুরা , বিন্ধ্য , আরাবল্লী - ইত্যাদি পর্বত দ্বারা মারাঠা সাম্রাজ্য বেষ্টিত থাকায় মোগল সহ অন্যান্য শত্রুরা সহজে মারাঠা রাজ্য আক্রমণ করতে সক্ষম হত না। 

৫. যুদ্ধনীতি : - শিবাজী মোগল প্রতিরোধে গেরিলা যুদ্ধনীতি অনুসরণ করেছিলেন। মারাঠারাজ্যের নির্দিষ্ট ভৌগোলিক পরিমন্ডলে মারাঠারা যতটা সহজে গেরিলা যুদ্ধ কৌশলে দক্ষ হয়ে উঠেছিল সেই দক্ষতা মোগলদের পক্ষে কখনোই অর্জন করা সম্ভব ছিল না। 

৬. জাতীয়তাবোধ :- শিবাজীর মধ্যে জাতীয়তাবোধ ও দেশপ্রেম ছিল প্রবল। তাঁর সৈন্যবাহিনীকে তিনি দেশপ্রেমের ভিত্তিতে গড়ে তুলেছিলেন। পক্ষান্তরে মোগল বাহিনীর মধ্যে দেশপ্রেম বিষয়টি অনুপস্থিত ছিল। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. সুদক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থা :- জাতীয়তাবোধের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি একটি প্রজাকল্যাণমূলক শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন। তাঁর ন্যায়পরায়ণ ও উদারনৈতিক শাসনে তিনি প্রজাবর্গের সহযোগিতা ও সমর্থনলাভে সমর্থ হয়েছিলেন। 

৮. বিজাপুর ও গোলকোন্ডার সাহায্য ও সমর্থনলাভ :- ঔরঙ্গজেব বিজাপুর ও গোলকোন্ডা আক্রমণ করলে তা শিবাজীর পক্ষে সহায়ক হয়ে ওঠে। ওই দুই রাজ্যের কর্মচ্যুত সৈনিকরা মারাঠা সেনাদলে যোগদান করলে শিবাজীর শক্তিবৃদ্ধি ঘটে। 

৯. হিন্দু সমর্থনলাভ :- ঔরঙ্গজেবের উগ্র হিন্দু বিরোধিতা হিন্দুদের চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছিল। এই অবস্থায় হিন্দুরা শিবাজীকে হিন্দু ধর্মের রক্ষাকর্তা বলে মনে করেন এবং তাঁকে সর্বতোভাবে সমর্থন করতে থাকেন। 

১০. মোগল সাম্রাজ্যের বিশালতা :- ঔরঙ্গজেবের আমলে মোগল সাম্রাজ্য বিশালাকার ধারণ করে। ফলে সম্রাটের পক্ষে সমগ্র শক্তি শিবাজীর বিরুদ্ধে নিয়োজিত করা সম্ভব ছিলনা। এছাড়াও ঔরঙ্গজেব সাম্রাজ্যের অন্যত্র বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন। 

১১. মারাঠা ঐক্য স্থাপন :- শিবাজীর পূর্বে মারাঠারা ছিল শতধাবিভক্ত একটি জাতি। শিবাজী মারাঠাদের ঐক্যবদ্ধ করে জাতীয় রাষ্ট্রের সূচনা করেন। ফলে তিনি মারাঠা জাতির কিংবদন্তি নেতায় পরিণত হন। 

১২. সুদক্ষ গুপ্তচর বাহিনী :- মোগল আক্রমণ প্রতিরোধে শিবাজী একটি সুদক্ষ গুপ্তচর বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন। এই গুপ্তচর বাহিনী শিবাজীর রাজনৈতিক সাফল্য বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছিল। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো                     

Share
Tweet
Pin
Share
No comments
Newer Posts
Older Posts

Followers

Pages

  • Home
  • Privacy Policy
  • Disclaimer
  • CONTACT ME
  • About Me

Contact Form

Name

Email *

Message *

About me

Hallow viewers , myself Nandan Dutta [Subhankar Dutta], reside at Maheshpur,Malda.
I made this website for the students of B.A. courses under Gour Banga University. Here you can get suggestions of different subjects like HISTORY , SOCIOLOGY , POLITICAL SCIENCE & EDUCATION.
In future I will add MCQ sections of those subjects.


Categories

  • 1ST SEMESTER SUGGESTION (1)
  • 2 ND YEAR SUGGESTION (1)
  • 2ND SEMESTER (1)
  • 3RD SEMESTER (8)
  • BENGALI NOTES (21)
  • CU suggestion. (1)
  • EDUCATION NOTES (141)
  • ENGLISH COMPULSORY (16)
  • GBU Suggestion. (7)
  • HISTORY EUROPE & WORLD (46)
  • HISTORY NOTES (68)
  • POL SC NOTES (64)
  • SOCIOLOGY NOTES (72)
  • WBCS 2020 (1)

recent posts

Blog Archive

  • May 2025 (3)
  • April 2025 (20)
  • March 2025 (12)
  • February 2025 (8)
  • November 2024 (5)
  • October 2024 (2)
  • September 2024 (2)
  • June 2024 (2)
  • March 2024 (6)
  • February 2024 (4)
  • October 2023 (5)
  • May 2023 (5)
  • April 2023 (1)
  • December 2022 (1)
  • November 2022 (13)
  • September 2022 (2)
  • August 2022 (7)
  • July 2022 (29)
  • June 2022 (10)
  • May 2022 (25)
  • April 2022 (24)
  • March 2022 (16)
  • February 2022 (19)
  • January 2022 (21)
  • December 2021 (46)
  • November 2021 (5)
  • October 2021 (6)
  • September 2021 (5)
  • August 2021 (41)
  • July 2021 (43)
  • June 2021 (31)
  • May 2021 (7)
  • April 2021 (1)
  • July 2020 (1)
  • June 2020 (3)
  • April 2020 (1)
  • November 2019 (1)
  • July 2019 (1)
  • June 2019 (1)
  • May 2019 (1)
  • April 2019 (2)
  • January 2019 (1)

Pages

  • Home
  • 2nd SEM ভাষাতত্ত্ব :
  • বাংলা উপভাষা
  • দ্বিতীয় পুলকেশীর কৃতিত্ব
  • ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত সাম্যের অধিকারগুলি আলোচনা করো।
  • হর্ষবর্ধনের কৃতিত্ব আলোচনা করো। তাকে কি উত্তর পথনাথ বলা যায় ?
  • ভারতীয় সংবিধানের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য :-
  • উদারনীতিবাদ : সংক্ষিপ্ত ধারণা :-
  • চোল শাসনব্যবস্থা :-
  • গুপ্তযুগ সুবর্ণযুগ সম্পর্কিত আলোচনা।
  • ৬. উদাহরণসহ মধ্যযুগের বাংলাভাষার কয়েকটি বৈশিষ্ট আল...
  • 1. Marxism
  • আধুনিক বাংলা ভাষা ও তার বৈশিষ্ট।
  • Discuss the career and achievements of Samudragupta .
  • ভাষাতত্ত্ব

Created with by ThemeXpose | Distributed by Blogger Templates