Pages

Powered by Blogger.
1ST SEMESTER SUGGESTION 2 ND YEAR SUGGESTION 2ND SEMESTER 3RD SEMESTER BENGALI NOTES CU suggestion. EDUCATION NOTES ENGLISH COMPULSORY GBU Suggestion. HISTORY EUROPE & WORLD HISTORY NOTES POL SC NOTES SOCIOLOGY NOTES WBCS 2020

NANDAN DUTTA

A new approach for exam notes .

পরিবার ব্যবস্থায় পরিবর্তনের কারণ। 

পরিবারের গঠনগত ও কার্যগত পরিবর্তনের কারণ। 

Causes for the changes in family system . 




পরিবার ব্যবস্থায় পরিবর্তনের কারণ বা পরিবারের গঠনগত ও কার্যগত পরিবর্তনের জন্য যে কারণগুলিকে দায়ী করা হয় সেগুলি হল - 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

১. আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা :- 
আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম বিষয় হল বিধিবদ্ধ শিক্ষাসূচি ও উপার্জনের লক্ষ্যে শিক্ষাগ্রহণ। এই দুটি বিষয় ব্যক্তিবর্গের মনোভাব , বিশ্বাস , মূল্যবোধ , আদর্শ - প্রভৃতির যথেষ্ট পরিবর্তন ঘটিয়েছে। ফল স্বরূপ আত্মকেন্দ্রিকতা , ব্যক্তিস্বাতন্ত্রতাবোধ , পারিবারিক সম্পর্কে শিথিলতা , স্বনির্ভর হওয়ার মানসিকতা , স্বাধীন চিন্তাভাবনা অনুযায়ী জীবনযাপন , মহিলাদের আত্মসচেতনতা - প্রভৃতি বিষয়ের প্রকাশ ঘটেছে। এই বিষয়গুলি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পারিবারিক কাঠামো ও কার্যাবলির পরিবর্তন ঘটিয়েছে। 

২. শিল্পায়ন :- 
আধুনিক যন্ত্রনির্ভর , কলকারখানাভিত্তিক শিল্প ব্যবস্থা মানুষের চিন্তা ভাবনা ও কাজকর্মকে যথেষ্ট প্রভাবিত করেছে। শিল্পের প্রসার ব্যক্তিকে রুজি রোজগারের নতুন ঠিকানা ও সুযোগ প্রদান করেছে। ব্যক্তি বাধ্য হয়েই শিল্প অঞ্চলগুলিতে তার নতুন বাসস্থান গড়ে তুলেছে। তার ফলে শিথিল হয়েছে পারিবারিক বন্ধন। 
শিল্পায়ন পরিবারের অল্পবয়স্ক সদস্যদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতার সুযোগ প্রদান করেছে। এই অর্থনৈতিক স্বাধীনতা তাদেরকে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের কর্তৃত্বের হাত থেকে মুক্ত হওয়ায় প্ররোচিত করেছে। আর্থিক বিষয়ে পারিবারিক সদস্যদের মধ্যে নির্ভরশীলতা কমেছে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. নগরায়ণ :- 
নগরকেন্দ্রিক সভ্যতার বিকাশ যৌথ পরিবারগুলিকে একক পরিবারে রূপান্তরকরণে অনেকখানি দায়ী। ব্যক্তি স্বভাবতই সুখ - স্বাচ্ছন্দ ও স্বাধীনতার পিয়াসী - যা সে অনেকখানি নগরজীবনে পেয়ে থাকে। একদিকে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা , অন্যদিকে ভোগবাদী ইচ্ছা - এই দুয়ে মিলে পরিবারের সদস্যদের নগরমুখী করে তুলেছে। সৃষ্টি হয়েছে নগরকেন্দ্রিক একক পরিবারের। রস , গোরে ও মিল্টন শিঙ্গার - এই তিন সমাজবিজ্ঞানীর এক সমীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে , নগর জীবন যৌথ পরিবার ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিয়ে একক পরিবার ব্যবস্থাকে প্রসারিত করেছে। 

৪. বিবাহ ব্যবস্থার পরিবর্তন :- 
ইতিপূর্বে বিবাহব্যবস্থা ছিল আয়োজিত। এই বিবাহ সংগঠনে পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে রোমান্টিক বিবাহে তাদের সেই ভূমিকা আজ অনুপস্থিত , এক্ষেত্রে পাত্র - পাত্রীদের ভূমিকা আজ অধিক গুরুত্বপূর্ণ। বিবাহ ব্যবস্থায় এই পরিবর্তন সামগ্রিকভাবে পরিবারের গঠনগত ও কার্যগত ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত করেছে। 

৫. বিভিন্ন আইন :- 
পরিবারের পরিবর্তনে ভারতের বিভিন্ন সাংবিধানিক আইনগুলিকে দায়ী করা হয়। আইনগুলি হল - 
(ক ) Child Marriage Restraint Act 1929 ও Hindu Marriage Act 1955 - এই দুটি আইন দ্বারা কমবয়সে সন্তানের বিবাহকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে সন্তানগণ তাদের শিক্ষাগ্রহণের জন্য দীর্ঘ সময় পেয়ে থাকে। তার ফলে তাদের ব্যক্তিগত মতামত তৈরী হয় - যা তার উপর পারিবারিক কর্তৃত্বকে প্রভাবিত করে। 
(খ ) Special Marriage Act 1954 - এই আইনে নির্দিষ্ট বয়সে ধর্ম -জাতি - নির্বিশেষে , পিতা মাতার মতামত ছাড়াই পাত্র - পাত্রী নির্বাচন , বিবাহের স্বাধীনতা ও অধিকার দেওয়া হয়েছে। এটি বিবাহের ওপর পারিবারিক কর্তৃত্বকে খর্ব করে। 
(গ ) Widow Remarriage Act 1856 - বিধবাদের পুনর্বিবাহের আইনগত স্বীকৃতির ভিত্তিস্বরূপ এই আইনটি বিধবাদের ওপর পরিবারের কর্তৃত্বকে হ্রাস করেছে। 
(ঘ ) Hindu Marriage Act 1955 ও Hindu Succession Act 1956 - এই দুটি আইনে যথাক্রমে বিবাহ বিচ্ছেদের অনুমতি ও পিতার সম্পত্তিতে কন্যার সমান অংশীদারিত্বের কথা বলা হয়েছে। প্রথমটি পারিবারিক ক্ষেত্রে নারীদের ক্ষমতায়ন ও দ্বিতীয়টি নারীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা লাভে সহযোগিতা করে। 

উপরোক্ত আইনগুলি ভারতের পরিবারগুলিতে সদস্যদের পারস্পরিক সম্পর্ক , পরিবারের কাঠামো ও পরিবারের স্থিতিশীলতার পরিবর্তনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে থাকে। 

৬. পাশ্চাত্যের প্রভাব :- 
ভারতীয় সমাজের সাথে পাশ্চাত্যের সমাজ - সংস্কৃতি ও ব্যক্তিবর্গের মানসিকতার ব্যাপক পার্থক্য বর্তমান। ভারতীয় হিন্দু পরিবারগুলি পাশ্চাত্যের নানাবিধ ধ্যান - ধারণা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পরিবর্তিত হয়েছে। এই বিষয়গুলির মধ্যে উশৃঙ্খল আধুনিকতা , ভোগবাদ , যুক্তিবাদ , ব্যক্তিস্বাতন্ত্রতা , সাম্য , স্বাধীন জীবনযাত্রা , নারী স্বাধীনতা , Live together প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। 

৭. নারী আন্দোলন ও নারীমুক্তি :- 
পরিবারের নারীর ভূমিকার যথেষ্ট পরিবর্তন , পরিবারের ভূমিকার পরিবর্তন সাধন করেছে। নারীর ভূমিকার পরিবর্তনের পিছনে নারীশিক্ষার প্রসার , নারীমুক্তি , পুরুষের মতো সর্বক্ষেত্রে সমান অধিকার , নারী স্বাধীনতা , নারী - ক্ষমতায়ন ( Women Empowerment ) প্রভৃতিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন আন্দোলন , চিন্তা - ভাবনা ও তার ফলে সৃষ্ট আইনগুলিকে দায়ী করা হয়। 

পরিশেষে বলা যায় , উপরোক্ত কারণগুলির জন্য বর্তমানে পরিবারের গঠনগত ও কার্যগত পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।     

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো                

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারগুলি আলোচনা করো। 




ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার : ২৫ - ২৮ নং ধারা :- 


মূল সংবিধানের প্রস্তাবনায় '' ধর্মনিরপেক্ষ '' শব্দটি যুক্ত ছিল না। এরপর ১৯৭৬ সালে সংবিধানের ৪২ তম সংশোধনীর মাধ্যমে '' ধর্মনিরপেক্ষ '' শব্দটি প্রস্তাবনা অংশে যুক্ত করা হয়। অনন্তসায়ম আয়েঙ্গার ও সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের মতে , ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হল এমন একটি রাষ্ট্র , যা ব্যক্তি ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির ধর্মীয় স্বাধীনতা স্বীকার করে না , যা ধর্মীয় মতামত নির্বিশেষে সব ব্যক্তিকে নাগরিক হিসেবে গণ্য করে এবং যা সাংবিধানিকভাবে বিশেষ কোনো ধর্মের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করে না কিংবা বিশেষ কোনো ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা বা বিরোধিতা করে না। এককথায় ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হল , এমন এক রাষ্ট্র যা ধর্মীয় বিষয়ে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকে। ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনা অনুসারে , রাষ্ট্রের কোনো নিজস্ব ধর্ম নেই। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার ও তার নিয়ন্ত্রণ : ২৫ নং ধারা :- 
ভারতীয় সংবিধানের ২৫ ( ১ ) নং ধারায় প্রত্যেক ব্যক্তির বিবেকের স্বাধীনতা , ধর্মস্বীকার , ধর্মপালন ও ধর্ম প্রচারের স্বাধীনতা রয়েছে। তবে জনস্বার্থ ও রাষ্ট্রীয় স্বার্থ রক্ষার্থে রাষ্ট্র ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ বা যুক্তিযুক্ত বাধানিষেধ আরোপ করতে পারে। যেমন - 
(i) জনশৃঙ্খলা , সমাজ স্বীকৃত নীতিবোধ , জনস্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার সংরক্ষণে রাষ্ট্র প্রয়োজনে ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করতে পারে। 
(ii) ধর্মের নামে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা , জনস্বার্থ বিঘ্নিত হলে বা , অমানবিক কার্যাবলি সংগঠিত হলে , নীতি বহির্ভুত আচার - অনুষ্ঠান প্রবর্তিত হলে - রাষ্ট্র ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করতে পারে। 
(iii) ধর্মাচরণের সাথে সম্পর্কিত অর্থনৈতিক , রাজনৈতিক , সামাজিক কার্যাবলিগুলিকে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। 
(iv) সামাজিক কল্যাণসাধন ও সমাজ সংস্কারের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্র প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নের মাধ্যমে ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর রাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করতে পারে। 
(v) হিন্দু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকল মানুষের কাছে উন্মুক্ত রাখার জন্য রাষ্ট্র আইন প্রণয়ন করতে পারে। এখানে উল্লেখযোগ্য যে , হিন্দু শব্দটিকে ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। শিখ , জৈন , বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরাও এক্ষেত্রে হিন্দু। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলির অধিকার ও তার নিয়ন্ত্রণ : ২৬ নং ধারা :- 
সংবিধানের ২৬ নং ধারাতে ধর্মীয় সম্প্রদায় ও গোষ্ঠীগুলিকে বিশেষ কিছু অধিকার প্রদান করা হয়েছে। যেমন - 
(i) ধর্ম ও  দানের উদ্দেশ্যে সংস্থা স্থাপন ও রক্ষনাবেক্ষনের অধিকার।   
(ii)  নিজ নিজ ধর্ম বিষয়ক কার্যকলাপ নিজেরাই পরিচালনার অধিকার। 
(iii) ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন ও ভোগদখলের অধিকার। 
(iv) আইন অনুসারে সম্পত্তি পরিচালনার অধিকার। 
তবে , জনশৃঙ্খলা , নৈতিকতা ও জনস্বাস্থ্য রক্ষা করার জন্য উক্ত অধিকারগুলির ওপর রাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করতে পারে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

ধর্মীয় উদ্দেশ্যে কর আদায় সংক্রান্ত বিধিনিষেধ : ২৭ নং ধারা :- 
সংবিধানের ২৭ নং ধারায় বলা হয়েছে কোনো বিশেষ ধর্ম বা ধর্ম - সম্প্রদায়ের প্রসার বা রক্ষনাবেক্ষনের জন্য কোনো ব্যক্তিকে কর প্রদান করতে বাধ্য করা যাবে না। কিন্তু ধর্মের প্রচার ও প্রসার , ধর্ম পরিচালনা , ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষনাবেক্ষন ইত্যাদির জন্য কর ধার্য করার পরিবর্তে অনুদান বা চাঁদা আদায়ের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। 

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষা নিষিদ্ধকরণ : ২৮ নং ধারা :- 
ভারতীয় সংবিধানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে ধর্মীয় শিক্ষাদানের ওপর কিছু কিছু বাধানিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ২৮ নং ধারায় বলা হয়েছে , 
(i) সম্পূর্ণভাবে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করা যাবে না। 
(ii) যেসকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকার কর্তৃক স্বীকৃত কিংবা সরকারি অর্থে আংশিকভাবে পরিচালিত , সেগুলিতেও শিক্ষার্থীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে অথবা অপ্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের বিনা অনুমতিতে ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা যাবে না 
(iii) কোনো দাতা বা অছির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মশিক্ষা দেওয়া যাবে , যদি দাতার উইলে কোনো বিশেষ ধর্ম বিষয়ে শিক্ষাদানের কথা উল্লেখ থাকে। 

পরিশেষে বলা যেতে পারে যে , নাগরিক ও বিদেশি নির্বিশেষে সকল ব্যক্তিকেই ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে ভারতে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ফলে , ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র চরম সংকটের মুখে পড়েছে। অযোধ্যার রাম জন্মভূমি ও বাবরি মসজিদকে কেন্দ্র করে হিন্দু - মুসলিম সাম্প্রদায়িক ও সংগঠনগুলি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা - হাঙ্গামায় মেতে ওঠে। ২০০২ সালে গুজরাটে ভয়াবহ দাঙ্গা , সবরমতি আশ্রমে শান্তি সমাবেশের ওপর হাঙ্গামা , ২০০৯ সালে ওড়িশার কন্ধমালে ৪৩ জন খ্রিস্টানের প্রাণনাশ - প্রভৃতি হিন্দু সাম্প্রদায়িকতাবাদীদের ফ্যাসিবাদী কার্জকলাপের নিদর্শন - ইত্যাদি ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রকে কালিমালিপ্ত করেছে।     

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো   

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

ভারতে গ্রামোন্নয়নের জন্য গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচীগুলি আলোচনা করো। 




ভারতে গ্রামোন্নয়নের জন্য গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি :- 


স্বাধীনতার পরবর্তীকালে বিভিন্ন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও সরকারি বিভিন্ন সিদ্ধান্তে ভারতের গ্রামোন্নয়নের জন্য বহুবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কর্মসূচীগুলি নিম্নরূপ :- 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

(i) Integrated Rural Development Programme বা , IRDP :- 
গ্রামীণ উন্নয়নের ক্ষেত্রে সুসংহত গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি বা IRDP একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। এই কর্মসূচির দ্বারা দারিদ্রসীমার নীচে অবস্থানকারী পরিবারগুলিকে স্বনিযুক্তি প্রকল্পের আয়ত্বে আনা হয়। বিভিন্ন কুটির শিল্প , তাঁত শিল্প , কৃষি , বাণিজ্য ও পশুপালন - এইসকল ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়তা প্রদান করা হয়। ১৯৭৬ সালে ২০ টি নির্বাচিত জেলাকে কেন্দ্র করে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও পরবর্তী কালে তা সারা ভারতে চালু হয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

(ii) National Rural Employment Programme বা , NREP :- 
গ্রামীণ নিযুক্তির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হারে সুযোগ তৈরির উদ্দেশ্যে জাতীয় গ্রামীণ নিযুক্তিকরণ কর্মসূচি বা NREP গড়ে তোলা হয়েছে। এই প্রকল্পকে কাজের বিনিময়ে খাদ্য ( Food for Work ) কর্মসূচি হিসেবেও উল্লেখ করা হয়ে থাকে। আজ পর্যন্ত এই কর্মসূচির অধীনে কয়েক লক্ষ কর্মদিবস সৃষ্টি হয়েছে। এর অধীনে যে সকল কর্মসূচি গৃহীত হয়েছে তা হল - বন্যা প্রতিরোধ , রাস্তা মেরামত , নতুন রাস্তা নির্মাণ , খাল খনন , বিদ্যালয় নির্মাণ , স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ প্রভৃতি। ১৯৭৬ - ৭৭ অর্থবর্ষের শেষের দিকে এই কর্মসূচি গৃহীত হয়। এরপর ১৯৮০ সালে NREP নতুনভাবে সংগঠিত হয় এবং আরও বৃহত্তর আকারে কর্মসূচির বিস্তার ঘটে। ফলে সাধারণ মানুষ আরো বেশি করে উপকৃত হয়। বনসৃজন , ব্লকস্তরে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ , পঞ্চায়েত স্তরে নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ - এসবের দ্বারা কর্মসূচিটি যথাযথ রূপ প্রাপ্ত করেছে। এই কর্মসূচিটি বর্তমানে জওহর রোজগার যোজনার ( JRY ) সাথে যুক্ত। 

(iii) জওহর রোজগার যোজনা বা JRY :- 
১৯৮৯ সালে সর্বপ্রথম জওহর রোজগার যোজনা ঘোষিত হয়। এই প্রকল্পের দ্বারা দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী পরিবারের কর্মক্ষম যে কোনো সদস্য সারা বছরে ১০০ দিন কাজের সুযোগ পেয়ে থাকেন। এই প্রকল্পে ৩০% কর্মসংস্থান মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। 

(iv) গ্রামীণ যুবদের স্বনিযুক্তি কর্মসূচিভিত্তিক প্রশিক্ষণ - প্রকল্প বা , TRYSEM :- 
১৯৭৯ সালের ১৫ ই আগস্ট TRYSEM ( Training for Rural Youth for Self Employment ) কর্মসূচিটি শুরু হয়েছিল। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল গ্রামীণ যুবসমাজের মধ্যে প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ প্রদান করে গ্রামীণ কৃষি , শিল্প , পরিষেবা এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে নিয়োগের সুযোগ সুবিধা ও সম্ভাবনা বৃদ্ধি করা। এর বৈশিষ্ট ও বিভিন্ন দিকগুলি ছিল -  ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়স্ক দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী যুবকেরা প্রশিক্ষণের জন্য এই প্রকল্পের অধীনে নিয়োজিত হয়। নবম শ্রেণি উত্তীর্ণ যুবকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এই প্রকল্পে মহিলাদের জন্য এক - তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষিত থাকে। প্রশিক্ষণ চলাকালীন ৭৫ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত মাসিক ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। এই প্রকল্পে আওতাভুক্ত যুবকদের IRDP - র বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাও দেওয়া হয়ে থাকে।  তপশিলি জাতি , উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির যুবকদের ক্ষেত্রে ন্যুনতম ৫০ % আসন সংরক্ষিত করা হয়। ৯০ এর দশকে প্রায় দুই লক্ষ যুবক - যুবতী এই কর্মসূচিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে প্রায় ৪৫% স্বনিযুক্তি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন এবং প্রায় ৩০% অন্যান্য ক্ষেত্রে নিযুক্ত হয়েছেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

(v) Community Develpoment Proramme ( CDP ) :- 
এটি শুরু হয় ১৯৫২ সালে। এর উদ্দেশ্য ছিল গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়েই সামগ্রিক গ্রামীণ উন্নয়ন। 

(vi) গ্রামীণ এলাকায় নারী - শিশু উন্নয়ন কর্মসূচি ( DWCRA ) :- 
১৯৮২ সালে এই প্রকল্পটি শুরু হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল গ্রামের দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী মহিলাদের কর্মসংস্থান ও স্বনির্ভরতার জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করা। 

(vii) গ্রামীণ ভূমিহীনদের নিয়োগ নিশ্চয়তা প্রকল্প ( RLEGP ) :- 
এটি ১৯৮৩ সালে চালু হয়। গ্রামের প্রতিটি ভূমিহীন পরিবারের অন্তত একজনকে বছরের অন্তত ১০০ দিনের কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা প্রদান করা। 

(viii) জাতীয় গ্রাম উন্নয়ন তহবিল ( NFRD ) :- 
১৮৮৪ সালে এই প্রকল্পটি চালু হয়। এটি একটি তহবিল এবং এতে দান করলে ১০০% কর ছাড়ের ব্যবস্থা রাখা হয়। 

(ix) কৃষি ও গ্রামীণ ঋণমুক্তি প্রকল্প ( ARDRS ) :- 
এটি ১৯৯০ সালে চালু হয়। কৃষিজীবী দরিদ্র পরিবারগুলিকে ১০০০০ টাকা পর্যন্ত ঋণ ছাড়ের সুবিধা প্রদান করা হয়। 

(x) জেলা গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা ( DRDA ) :- 
১৯৯৩ সালে ভারতের প্রতিটি জেলায় এই সংস্থা স্থাপিত হয়। গ্রামীণ দরিদ্র ব্যক্তিদের স্বনির্ভরতার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সাহায্য করাই ছিল এর উদ্দেশ্য। 

(xi) মহিলা সমৃদ্ধি যোজনা ( MSY ) :- 
এই প্রকল্পটি ১৯৯৩ সালে চালু হয়। ডাকঘরে মহিলাদের টাকা জমানোর ক্ষেত্রে অনুপ্রাণিত করাই ছিল এর উদ্দেশ্য। 

(xii) ভারত নির্মাণ প্রকল্প :- 
২০০৫ সালে এই প্রকল্প চালু হয়। গ্রাম জীবনের প্রধান ৬ টি উপাদান - সেচ , পানীয় জল , রাস্তা , আবাসন , টেলিফোন , বিদ্যুৎ - ইত্যাদি সুনিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এই প্রকল্প আজও কাজ করে চলেছে। 

এছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন প্রকল্পগুলি হল - 
(xiii) স্বর্ণজয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার যোজনা বা SGSY 
(xiv) প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা বা PMGSY 
(xv) প্রধানমন্ত্রী গ্রামোদয় যোজনা বা PMGY 
(xvi) ইন্দিরা আবাস যোজনা বা IAY 
(xvii) প্রধানমন্ত্রী আদর্শ গ্রাম যোজনা বা PMAGY 
(xviii) সম্পূর্ণ গ্রামীণ স্বরোজগার যোজনা বা SRGY 
(xix) অন্নপূর্ণা অন্ন যোজনা 
(xx) প্রধানমন্ত্রী কর্মসংস্থান প্রকল্প বা PMEGP  

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো   

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

ভারতে নগরোন্নয়নের পরিকল্পনাগুলি কতখানি সফল হয়েছে তা আলোচনা কর। 




ভারতে নগরায়ন অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলির থেকে শ্লথ গতিতে হয়েছে। ২০০১-সালের জনসংখ্যা-গণনায় দেখা যাচ্ছে মাত্র ভারতে নগরায়নের হার ২৮-শতাংশ। কিন্তু বর্তমানে দেখা দিয়েছে এই গতির আরও ত্বরান্বিত হওয়ার সম্ভাবনা। অর্থনৈতিক সংস্কার উন্মুক্ত করে দিয়েছে লগ্নী ও উন্নয়নের দরজা।  

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

ভারত এর আগে নগরায়ন-বিষয়ে খুব একটা নজর দেয়নি। তবে , ভারতে ২০২৫-সাল নাগাদ যুক্ত হতে যাচ্ছে ১৩-টি নগর যার প্রতিটিতে থাকবে ১০-মিলিয়নের বেশি জনমানুষ। নগরায়নের গতি ও মাত্রা এতটাই যে সাধারণ প্রথা মত টাকা ঢাললেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে না। আরও রাস্তা বানালে মানুষের ঘন সন্নিবেশ থেকে হয়তো সাময়িকভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে, কিন্তু বর্ধিত পরিবেশ দূষণ থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যাবে না। আরও বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করলেই চরিত্রগত অদক্ষতার জন্য বণ্টন-ক্ষয়, ক্ষরণ, ও ক্রমবর্ধমান অপহরণ ইত্যাদি কমবে না। 

ভারতে আছে সব থেকে বেশি গ্রামীণ জনমানুষ- ৮৫৭ মিলিয়ন, তার পরেই চীনে- ৬৩৫ মিলিয়ন।
অবশ্য, বর্তমান ভারত সরকার ১০০-টি SMART-শহরের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন যা' রূপায়িত হবে আগামী কয়েক বছরে।

এখন নগরায়িত ভারতের চেহারা হল 'ছড়ানো'- নানা রূপের বড় ও ছোট নগরের সমারোহ। হয়তো ভারত এই ছড়ানো মডেলের পথেই চলবে যেহেতু এটি তার 'ফেডারেল'- সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। 

নগরের জনসংখ্যা এবং তার সঙ্গে আয় যত বৃদ্ধি পাবে, প্রতিটি মুখ্য পরিষেবার জন্য যেমন, জল, পরিবহন, নিরাময়-ব্যবস্থা, স্বল্প-আয়ের মানুষের জন্য বাসস্থান ইত্যাদির চাহিদা তত বাড়বে- এক হিসাবে পাঁচ- থেকে সাত- গুণ। বর্তমান ছন্দে চললে ভারত পিছিয়ে পড়বে পরিরক্ষিত ও উন্নত শহর নির্মাণের আদর্শ থেকে।
এক রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে নাগরিক 'ইনা্‌ফ্রাস্ট্রাকা্‌চারে' ভারতের বর্তমান ব্যয় ১৭- মার্কিন ডলার জন-প্রতি, যখন আদর্শ মান হচ্ছে ১০০- মার্কিন ডলার। এক হিসাব মত আগামী ২০-বছরে লগ্নীর প্রয়োজন হবে আনুমানিক ১-মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

২০৩০-সালে ভারতের নগরগুলিতে জনসংখ্যা বেড়ে হবে ১৪০০-মিলিয়নের কাছাকাছি। প্রদেশগুলির মধ্যে দেখা যাচ্ছে তামিলনাড়ু নগরায়িত হয়েছে সব থেকে বেশি।

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

নগরবাসীদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ থাকে বস্তিতে। কিন্তু সাধারণ ধারণার বিপরীতে বড় বড় শহরে সাধারণ জনসংখ্যা-বৃদ্ধির তুলনায় বস্তিবাসীদের সংখ্যা-বৃদ্ধি হয়েছে অনেক ধীর গতিতে। কারণগুলি হল :

(ক ) 'রিয়েল এস্টেটে'-মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে হয়েছে বর্ধিত বাসোচ্ছেদ। 

(খ ) উৎপাদনে কর্মসংস্থানের অভাব। 

(গ ) জনপরিবহন- ও গৃহ-ব্যবস্থার অপ্রতুলতা। 

(ঘ ) গ্রামত্যাগ করে শহরে যাওয়ার আকর্ষণ সাধারণত: সীমাবদ্ধ কুশলী ও শিক্ষিত মানুষের মধ্যে।

পাশাপাশি চীনের চিত্রটি তুলনায় আনা যেতে পারে কারণ, চীনে নগরায়ন হচ্ছে অনেক দ্রুতগতিতে :
মহানগরগুলিতে ( মোট জনসংখ্যা ১০-মিলিয়নের বেশি ) চীনেদের থেকে ভারতীয়দের বসবাস অনেক বেশি- প্রায় দ্বিগুণ। কারণ, 

(ক ) গ্রামীণ এলাকা ও ছোট শহরগুলি অনেক বেশি শিল্পোন্নত ;

(খ )  গ্রামত্যাগ করে শহরে আসার উপর নিষেধাজ্ঞা। 

উদাহরণস্বরূপ, চীনের Zhejiang প্রদেশের কথা ধরা যাক- যার একটি শহর Datang-এ তৈরি হয় পৃথিবীর প্রয়োজনের এক-তৃতীয়াংশ মোজা ; Shengzhou-তে নেকটাই তৈরি হয় (যদিও স্থানীয় অধিবাসীরা নেকটাই পরেন না) পৃথিবীর প্রয়োজনের তিন-চতুর্থাংশ ; এবং আরেকটি শহর Yiwu হল বোতাম উৎপাদক- বিশ্বের সবথেকে বড়।

ভারতের ছোট ছোট জায়গা ( একটি হল তামিলনাড়ুর কয়ম্বটর জেলার তিরপুর, যেখানে তৈরি হয় জামাকাপড়); তবে এরকম চিত্র বেশি নেই।

নাগরিক পরিষেবা:

ভারতীয় সংবিধানের ৭৪-সংশোধনীতে নাগরিক শাসন ব্যবস্থার কিছু কিছু বিষয় আলোচিত হয়েছে এবং JNNURM-প্রোগ্রামে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে; তবে কোনও কোনও প্রদেশ দ্বারা অনেক সময়েই তা' পালনে দ্বিধা দেখা যায়।

বেশিরভাগ সময়েই ( ব্যতিক্রম হল মুম্বাই-এর BEST ও হালে নাগপুরের জল-পরিষেবা কোম্পানী ) মিউনিসিপ্যালিটি-/করপোরেশন-গুলি তাদের নিজেদের ডিপার্টমেণ্টের মধ্য দিয়ে কাজ করায়; অথচ তারা আর্থিকভাবে দেউলে, ট্যাক্স বা ঋণ করার ক্ষমতা এদের দেওয়া হয়নি এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে এরা প্রাদেশিক সরকারের উপর নির্ভরশীল। নিজেদের আয় এতই সামান্য যে বাজার থেকে ঋণ নিতে পারেনা।

(ক ) মহানগরগুলিতে মিউনিসিপ্যাল-পরিষেবার জন্য যে অর্থ চার্জ করা হয় তা' সাধারণত: খরচের এক-চতুর্থাংশের কম ;

(খ ) রাজনৈতিক চাপে পরিষেবা-চার্জ রাখা হয় অত্যন্ত কম এবং তা'ও ঠিক মত আদায় হয়না ;

(গ ) ভারতের GDP-র দুই-তৃতীয়াংশ এবং মোট করের ৮০-শতাংশ উৎপন্ন হয় নগরগুলিতে অথচ, নগরের স্থানীয় সংস্থাগুলির রাজস্ব GDP-র ১-শতাংশের কম ;

(ঘ ) বেশীরভাগ নগর ও মহানগরে সম্পত্তির মূল্য নির্ধারণ হয় সেকেলে ও উৎকোচ-বশীভূত প্রথার দ্বারা, ফলে নগরগুলি বঞ্চিত হয় 'রিয়েল এস্টেট'-এর দরবৃদ্ধির সুবিধা থেকে।


ভারতে বহু জাতীয় ও প্রাদেশিক-স্তরের প্রতিষ্ঠানের আছে অব্যবহৃত জমি। রাজনৈতিক ক্ষমতার বাইরে অথচ ব্যবস্থাপক সভার কাছে দায়বদ্ধ স্বাধীন পেশাদার সংস্থাগুলির দ্বারা বন্ধকী-জমির ও সুদের ভর্তুকি ব্যবহার করে সাধারণের জন্য গৃহের ব্যবস্থা সহজে ও তাড়াতাড়ি করা যেতে পারে।

SMART শহর এবং ICT-enabled পরিষেবা যথা, e-স্বাস্থ্য, e-শিক্ষা, e-যোগাযোগ ইত্যাদির সংযুক্তিতে সঙ্গতির তৎপর ব্যবহার পরিবেশ দূষণ কমাতে সাহায্য করবে।

ভারতের মোট জনসংখ্যা (২০১৪-সাল) হল ১.২৭-বিলিয়ন ; ৩০-সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সালে দেশের মোট টেলিফোনের (landline) সংখ্যা হল ৯৫৭.৬ মিলিয়ন এবং মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা হল ৯৭১ মিলিয়ন। দেখা যাচ্ছে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে মোবাইলের প্রসার সহজেই এনে দেবে নাগরিকদের হাতে তথ্য, যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT)-র ব্যবহার। পরিষেবা সহজ হবে মোবাইল-ফোন ব্যবহারের মধ্য দিয়ে যা' ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে ব্যবহার করে। তা'ছাড়া ২০০০-সাল থেকেই দেশের প্রতিটি বিদ্যালয়ে কম্পুটারের ব্যবহার শেখার ব্যবস্থা করেছে ভারত সরকার ; তখনকার বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা এখন ভোটের অধিকার পাওয়া জনমানুষ। পাশাপাশি কম্পুটার নেটওয়ার্কে 'broadband'-এর প্রসার বাড়ছে। অতএব, ICT-ব্যবহারে কম্পুটার ব্যবহারও চলবে।
তা'ছাড়া, ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে, যেখানে তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগ আছে, সেখানে বিগত অন্তত: কুড়ি বছর ধরে গবেষণা হচ্ছে জনমানুষের সেবায় মোবাইল-ব্যবহার বিষয়ে। রাজ্য সরকার- এবং মিউনিসিপ্যালিটি-গুলি এইসব গবেষণার সুফল অল্প খরচে ব্যবহার করতে পারে।    

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো                                            
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

Indira Gandhi Awas Yojona ( IAY ) 

ইন্দিরা গান্ধী আবাস যোজনা বা , IAY 




ইন্দিরা গান্ধী আবাস যোজনা বা , সংক্ষেপে IAY বা , প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা : - 


এই প্রকল্পটি মূলতঃ গ্রামীণ এলাকার জন্য গৃহীত হয়েছে। এই প্রকল্পের মুখ্য উদ্দেশ্য হল - গ্রামীণ এলাকার দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী , পিছিয়ে পড়া শ্রেণি , ভূমিহীন কৃষি শ্রমিক - প্রমুখের জন্য পাকা এবং বসবাসযোগ্য আবাসন নির্মাণ। এই প্রকল্পটি মূলতঃ ২০২২ সালের মধ্যে সবার জন্য আবাসন প্রদানের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে গৃহীত হয়েছে। এই প্রকল্পের বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য দিকগুলি হল - 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

(i) ইন্দিরা আবাস যোজনা কাঁচা বাড়িতে বসবাসকারীদের জন্য পাকা ঘর নির্মাণের পাশাপাশি প্রকল্প আবাসন বা গৃহ নির্মাণের উপর ভর্তুকিযুক্ত ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করে। 

(ii) ইন্দিরা আবাস যোজনার সুবিধা পেতে পারেন দিল্লি ও চন্ডিগড় বাদে সারা ভারতের গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারী ব্যক্তিগন। 

(iii) ইন্দিরা আবাস যোজনা ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী চালু করেন। পরে ১৯৯৬ সাল থেকে এটি স্বাধীন প্রকল্পরূপে কাজ করতে শুরু করে এবং ২০১৬ সালে এটি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নামে পরিচিত হয়। 

(iv) যে সকল SC / ST সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষেরা দারিদ্রসীমার ( BPL ) নীচে বসবাসকারী তাদের ক্ষেত্রে ৬০% অর্থ আবাসন নির্মাণের জন্য প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে। বাকী ৪০% অর্থ ব্যয় করা হয় সেই সকল BPL শ্রেণিভুক্ত মানুষদের জন্য যারা SC / ST সম্প্রদায়ভুক্ত নন। 

(v) এছাড়াও মানসিক প্রতিবন্ধীদের জন্য ৪% ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য ১৫% অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা রয়েছে। 

(vi) BPL শ্রেণীভুক্ত মানুষদের ক্ষেত্রে এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে হলে তাকে গ্রামসভা কর্তৃক অনুমোদিত হতে হয়। 

(vii) ইন্দিরা গান্ধী আবাস যোজনা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ প্রকল্প এবং এতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের অর্থ প্রদানের অনুপাত ৭৫ : ২৫    ।  

(viii) বর্তমানে ইন্দিরা গান্ধী আবাস যোজনা প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নামে পরিচিত।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


Share
Tweet
Pin
Share
No comments

MGNREGS বা , NREGS 

Mahatma Gandhi National Rural Employment Guarantee Scheme 

মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা প্রকল্প বা MGNREGS 






মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা প্রকল্প বা MGNREGS চালু হয় ২০০৬ সালে। এই প্রকল্পের বহুল প্রচলিত নাম হল ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

MGNREGS লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য , পরিকল্পনা , বাস্তবায়ন , পরিকাঠামো , বৈশিষ্ট ও অন্যান্য দিক :- 

১. যে সকল গ্রামীণ পরিবারের প্রাপ্তবয়স্ক সদস্যরা অদক্ষ কায়িক শ্রমের দ্বারা রোজগার করতে ইচ্ছুক , সেই সকল প্রত্যেক ইচ্ছুক পরিবারকে প্রকল্পের শর্ত অনুযায়ী বছরে ১০০ দিনের কাজ দেওয়া ছিল এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। 

২. গ্রামীণ এলাকায় স্থায়ী সম্পদ তৈরির মাধ্যমে দরিদ্র জনসাধারণের জীবিকা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগের ভিত্তিগুলিকে আরও শক্তিশালী করে তোলা ছিল প্রকল্পের অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য। 

৩. গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারী ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী কোনো ব্যক্তির জব কার্ড থাকলে তার কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত করা ছিল প্রকল্পের অপর একটি উদ্দেশ্য। 

৪. পরিবারের যেকোনো নথিভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক সদস্য সাদা কাগজে বা নির্দিষ্ট ফর্মে গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে কাজের জন্য আবেদন করতে পারেন। যে কাজের জন্য তিনি আবেদন করবেন , সেই কাজটি যেন টানা ১৪ দিনের হয়। 

৫. কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে মহিলাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে যাতে , সুবিধাভোগীদের অন্ততঃ এক - তৃতীয়াংশ মহিলা হন , যারা তাদের নাম নথিভুক্ত করেছেন এবং কাজের জন্য আবেদন করেছেন। 

৬. যদি গ্রামের কোনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তি কাজের জন্য আবেদন করেন তাহলে তার পক্ষে যথাসম্ভব উপযুক্ত কাজে তাকে বহাল করতে হবে। 

৭. আবেদনকারীদের বাসস্থানের পাঁচ কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে তাকে কাজ দিতে হবে। এই এলাকার মধ্যে কাজ দেওয়া সম্ভব না হলে অন্ততঃ ব্লকের মধ্যে তাকে কাজ দিতে হবে। 

৮. কাজ হবে ন্যুনতম ১৪ দিনের জন্য এবং সপ্তাহে ৬ দিনের বেশি নয়। 

৯. আগে এলে আগে পাবো - এর ভিত্তিতে কাজের বন্টন করা হবে। 

১০. গ্রাম পঞ্চায়েত প্রোগ্রাম আধিকারিককে কাজের বরাদ্দ সম্পর্কে অবহিত করবে। 

১১. আবেদনকারীদের জব কার্ডে নিয়মিত তথ্য নথিভুক্ত করতে হবে। 

১২. গ্রাম পঞ্চায়েত সহ প্রতিটি রূপায়নকারী সংস্থা প্রোগ্রাম আধিকারিককে মাসিক রিপোর্ট প্রদান করবেন। 

১৩. গ্রাম পঞ্চায়েত বাড়ি অনুযায়ী কাজের তথ্য সংগ্রহ করবে এবং রেজিস্ট্রেশন কাম এমপ্লয়মেন্ট রেজিস্টারে তা নথিভুক্ত করবে। 

১৪. যদি কোনো আবেদনকারী আবেদন করার ১৫ দিনের মধ্যে কাজ না পান - তাহলে তিনি বেকার ভাতা পাওয়ার উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবেন।    

 এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


Share
Tweet
Pin
Share
No comments

ভারতে প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখনন ও পুরাবস্তুর সংরক্ষণে ভারতের প্রত্নতাত্মিক জরিপ বিভাগের ভূমিকা আলোচনা করো।




সূচনা : - 
ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বা পুরাতত্ত্ব জরিপ বিভাগ ভারতীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীনস্থ একটি সরকারী সংস্থা যার কাজ হল পুরাতত্ত্ব বিষয়ক গবেষণা এবং ঐতিহ্যশালী কীর্তিস্তম্ভের সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ। ১৮৬১ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। আলেকজান্ডার কানিংহাম এই সংস্থার প্রথম মহাপরিচালক ছিলেন।

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


১. জরিপ বিভাগ স্থাপনের ইতিহাস :- 
আলেকজান্ডার কানিংহাম ভারতে ১৮৬১ সালে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া ( ASI ) প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রথম মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসের সর্বপ্রথম নিয়মতান্ত্রিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান এশিয়াইটিক সোসাইটি দ্বারা পরিচালিত হয়। 

২. কানিংহাম - এর ভূমিকা :- 
এরপর কানিংহাম একটি বিশদ জরিপ পরিচালনা করেন যা প্রায় অর্ধ শতকেরও বেশি সময় ধরে পরিচালিত হয়। ইতালীয় সামরিক বাহিনীর সদস্য জিনব্যাপটিস্ট ভেনচুরা ও অন্যান্য অপেশাদার প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মূলত কানিংহাম এ জরিপটি পরিচালনা করেন।তিনি ভারতের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত স্তূপগুলো খনন করেছিলেন এবং এ খনন কার্য পরিচালনার জন্য তিনি নিজেই অর্থ যোগান দিয়েছিলেন। ইতিমধ্যে তিনি কাজ পরিচালনার জন্য এবং সার্বিক তত্ত্বাবধায়নের জন্য জরিপ কমিটি গঠনের গুরুত্ব অনুধাবন করেন । অর্থের অভাবে ১৮৬৫ থেকে ১৮৭১ সাল পর্যন্ত জরিপের কাজ স্থগিত রাখা হয়। ১৮৭১ সালে কানিংহামকে প্রথম মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ প্রদান এবং জরিপটি অন্য বিভাগে স্থান্তরের মাধ্যমে কাজটি পুনরায় শুরু হয়।১৮৯৬ সালের একটি স্মরণীয় আবিষ্কার হচ্ছে লুম্বিনি স্তম্ভের শিলালিপি, অশোকের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিলালিপি যা একটি স্তম্ভে লিখিত ছিলো। এটি আবিষ্কার করেন অলিউস আন্তন ফুহার।

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. লর্ড কার্জনের ভূমিকা :- 
১৯০২ সালে সংস্থাটির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন লর্ড কার্জন। দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই তিনি পূর্বে চলমান প্রথা ভঙ্গ করে কেমব্রিজের শাস্ত্র বিষয়ক অধ্যাপক ২৬ বছর বয়সী জন মার্শালকে জরিপের প্রধান করে জরিপ কাজ পুনরায় শুরু করেন। মার্শাল প্রায় ২৫ বছর জরিপের কাজ পরিচালনা করেন।তার কার্যকালে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ছিলো ১৯২১ সালে হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোতে সিন্ধু সভ্যতার আবিষ্কার। ১৯২৮ সালে হ্যারল্ড হারগ্রিভস মার্শালের পদে স্থলাভিসিক্ত হন। এরপর পর্যায়ক্রমে দয়া রাম শাহ্নি, জে. এফ. ব্লাকিস্টোন, কে. এন. দিকশিত মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

৪. মর্টিমার হুইলারের ভূমিকা :-  
১৯৪৪ সালে ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক ও সামরিক বাহিনীর সদস্য মর্টিমার হুইলার মহাপরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত তিনি কর্তব্যরত ছিলেন। এই সময় তিনি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান যেমন  ব্রহ্মগিরি, চন্দ্রাবল্লি, লৌহ যুগের নিদর্শন ও প্রস্তর যুগের নিদর্শনগুলো খনন করেন।

৫. জরিপ ও সংগ্রহ :- 
আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন বস্তুগত সামগ্রী ও হস্তনির্মিত শিল্পকর্ম যেমন, পান্ডুলিপি, অভিলেখন (শিলালিপি, মুদ্রালিপি, তাম্রলিপি ইত্যাদি) স্মৃতিসৌধ ইত্যাদির জরিপ, সংগ্রহ এবং এগুলোর প্রামাণিক দলিল তৈরি, ব্যবহার ও প্রদর্শনের বিষয়টি স্যার উইলিয়ম জোনস কর্তৃক ১৭৮৪ সালে এশিয়াটিক সোসাইটি, কলকাতা প্রতিষ্ঠার পর পূর্ণ উদ্যোগে শুরু হয়। 

৬. জরিপ ও স্মৃতিসৌধ সংস্কার :- 
এ সময় ওয়েলেসলির মার্কুইস কর্তৃক ফ্রান্সিস বুকাননকে মহীশুর জরিপ করার কাজে নিযুক্তি করা হয়। তিনি ১৮০৭ সালে বর্তমান বিহার ও উত্তর প্রদেশের স্মৃতিসৌধ এবং প্রাচীন নিদর্শন জরিপের কাজ শুরু করেন। এ সময় স্মৃতিসৌধ সংস্কারের কথা ভাবা না হলেও তাজমহল, ফতেপুর সিক্রি এবং সিকান্দারাবাদের মতো কিছু স্মৃতিসৌধ সংস্কার করা হয়। 
কানিংহাম  ১৮৬১ সাল থেকে ১৮৬৫ সালের মধ্যে পূর্বে গয়া থেকে উত্তর পশ্চিমে সিন্ধু পর্যন্ত, এবং উত্তরে কালসি থেকে দক্ষিণে নর্মদা পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা জরিপ করেন। এ ব্যাপারে তিনি চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করেন।

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. দিল্লি , আগ্রা , কেন্দ্রীয় প্রদেশে জরিপ ও বৌদ্ধ স্মৃতিসৌধগুলির মানচিত্র রেকর্ড :- 
 ১৮৭১ সালে কানিংহাম দিল্লী এবং আগ্রায় পুনরায় জরিপ কাজ শুরু করেন; ১৮৭২ সালে তিনি রাজপুতনা, বুন্দেলখন্দ, মথুরা, বোধগয়া এবং গৌড় জরিপ করেন; ১৮৭৩ সালে তিনি পাঞ্জাব এবং ১৮৭৩ ও ১৮৭৭ সালের মধ্যে তিনি কেন্দ্রীয় প্রদেশ, বুন্দেলখন্দ এবং মালওয়া জরিপ করেন। সুশৃঙ্খল ও সুপরিকল্পিতভাবে জরিপ কাজ শুরু করার জন্য আলেকজান্ডার কানিংহাম বৌদ্ধ-স্থাপনা ও স্মৃতিসৌধগুলোকে মানচিত্রের উপর ছক আকারে রেকর্ড করেন।

৮. ইন্সক্রিপশনাম ইন্ডিকারাম জার্নাল প্রকাশ :- 
১৮৭২ সালে জেমস বার্জেস কর্তৃক ইন্ডিয়ান এন্টিকয়ারি জার্নাল প্রকাশের ফলে বুলার ও ফ্লিট, ইগেলিং ও রাইস, ভন্ডারকার ও ইন্দ্রজির মতো পন্ডিতদের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ অভিলেখন এবং এগুলোর সংকেতলিপির অর্থোদ্ধার করে প্রকাশ করা সহজ হয়। উৎকীর্ণ লিপি সামগ্রীর একটি সুসংবদ্ধ ও সুন্দর সংখ্যা প্রকাশ করার জন্য কানিংহাম করপাস ইন্সক্রিপশনাম ইন্ডিকারাম নামে একটি জার্নালও প্রকাশ করেন। 

৯. স্মৃতিসৌধের উপর প্রতিবেদন :- 
স্মৃতিসৌধ সংরক্ষণের সঙ্গে সম্পর্কিত সকল বিষয়ে প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় সরকারকে সাহায্য করার জন্য ১৮৮১ সালে রিপনের শাসনামলে মেজর এইচ. এইচ. কোলেকে প্রাচীন স্মৃতিসৌধসমূহের কিউরেটর নিযুক্ত করা হয়। তিনি বোম্বে, মাদ্রাজ, রাজপুতনা, হায়দ্রাবাদ, পাঞ্জাব ও উত্তর-পশ্চিম প্রদেশের স্মৃতিসৌধের উপর বহু প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রদান করেন। ১৮৮৩ সালে কোলের চাকরির মেয়াদ শেষ হলে স্মৃতিসৌধ সংরক্ষণের কাজটি পুনরায় স্থানীয় সরকারকে প্রদান করা হয়।

১০. রাজনৈতিক সুপারিশ :- 
১৮৮৫ সালে কানিংহাম চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি মহা-পরিচালকের পদ বিলুপ্তি এবং উত্তর ভারতকে পুনঃসংগঠিত করে পাঞ্জাব, সিন্ধু এবং রাজপুতনা; উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ (উত্তর প্রদেশ) এবং কেন্দ্রীয় প্রদেশ; এবং বিহার, উড়িষ্যা, আসাম ও ছোট নাগপুরসহ বাংলা নামে তিনটি স্বাধীন অঞ্চল করার জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ করেন। এই তিনটি অঞ্চলের প্রতিটি দুইজন নকশাকার ও দুইজন সহকারীসহ একজন জরিপকারক দ্বারা পরিচালিত হবে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

১১. পালি ও দ্রাবিড় ভাষার সংকেত লিপির অর্থোদ্ধার :- 
১৮৭১ সাল থেকে ১৮৮৫ সালের মধ্যে বার্জেস পশ্চিম ভারতে এবং ১৮৮২ সাল থেকে আলেকজান্ডার রি’কে সহকারী করে দক্ষিণ ভারতে ব্যাপক জরিপ কাজ পরিচালনা করেন। ১৮৮৬ সালে ড. ই. হুলটজেককে (Hultzsch) সংস্কৃত, পালি ও দ্রাবিড় ভাষার সংকেতলিপির অর্থোদ্ধার ও ব্যাখ্যার জন্য উৎকীর্ণ লিপিবিদ হিসেবে পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনটি নতুন অঞ্চলের পেশকৃত প্রতিবেদন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও দক্ষিণ ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপকার হিসেবে বার্জেসকে অতিরিক্ত দায়িত্বও প্রদান করা হয়।

১২. বার্জেস - এর ভূমিকা :- 
১৮৮৬ সালের মার্চে বার্জেস মহাপরিচালকের পদে নিয়োগ লাভ করেন। তাঁর সুপারিশের ভিত্তিতে তিনটি পৃথক অঞ্চলকে একীভূত করে একক পরিচালনার অধীনে আনা হয়, তবে এই একীভূত এলাকার কার্য থেকে অনুসন্ধান, সংরক্ষণ ও উৎকীর্ণ লিপি নামে তিনটি স্বতন্ত্রভাগে বিভক্ত করা হয়। বার্জেস পরিচালিত প্রধান প্রধান অনুসন্ধানের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ গুলো হচ্ছে ১৮৮৬ সাল থেকে ১৮৮৭ সালের মধ্যে ফুরার ও স্মিথ কর্তৃক পরিচালিত জরিপসমূহ। এই জরিপসমূহের মধ্যে রয়েছে   জৌনপুরের শারকি স্থাপত্য এবং জাফরাবাদ, শাহেথ, মাহেথ ও অযোধ্যার স্মৃতিসৌধসমূহ। এগুলো ছাড়াও স্মিথ বদাউন ললিতপুর, অর্কা, বুন্দেলখন্দে জরিপ কাজ পরিচালনা করেন। হেনরি কুসেঁ উত্তর গুজরাট এবং বিজাপুরে জরিপ কাজ পরিচালনা করেন, অন্যদিকে রি’ মহাবালিপুরম, কৃষ্ণা, নিলোর ও গোদাবরীতে জরিপ কাজ পরিচালনা করেন। 


১৩. প্রত্নবস্তুর উপর বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশের সুপারিশ :- 
লর্ড কার্জনের আগমন আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার পুনরুজ্জীবনে সহায়ক হয়। তিনি সমন্বিত প্রচেষ্টার অভাব এবং অঞ্চলসমূহের সামগ্রিক বিশৃঙ্খলা পর্যবেক্ষণ করে মহা-পরিচালকের পদ পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন। এই পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি হবেন প্রত্নতাত্ত্বিক জ্ঞানসম্পন্ন এবং প্রকৌশলীর দক্ষতাসহ একজন প্রশিক্ষিত অনুসন্ধানকারী। ‘‘তিনি দেশের সামগ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিক কাজ পরিদর্শন করবেন-তা সেটি খনন কাজেরই হোক, বা সংরক্ষণেরই হোক, বা সংস্কারই হোক বা উৎকীর্ণ লিপিরই হোক, অথবা সেটি স্মৃতিসৌধ ও প্রাচীন নিদর্শনসমূহের নিবন্ধন বা বর্ণনাই হোক না কেন। তিনি স্থানীয় জরিপ ও প্রতিবেদনের সমন্বয় ও হাল-নাগাদ করবেন। এছাড়াও তিনি তার কাজের একটি বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করবেন।’’

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

১৪. স্থপতি নিয়োগ :- 
স্মৃতিসৌধ সংরক্ষণ সংক্রান্ত সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে এ্যানসিয়েন্ট মনুমেন্টস প্রিজারভেশন এ্যাক্ট-১৯০৪-এর প্রবর্তন। উপরন্ত ১৮৯৯ সালে সৃষ্টি ৫টি অঞ্চলের কিছু পরিবর্তন সহ ১৯০২ সালে উত্তর ভারতে মুসলিম অট্টণালিকাসমূহের পরিদর্শনের জন্য একজন স্থপতি নিয়োগ করা হয়। 

১৫. সিন্ধু সভ্যতা ও জন মার্শাল :- 
১৯২১-২২ সালে সিন্ধুসভ্যতা আবিষ্কৃত হলে একজন ডেপুটি ডাইরেক্টর জেনারেল এবং তিনজন সহকারী সুপারিন্টিডেন্ট সহকারে একটি স্বতন্ত্র অনুসন্ধান শাখা সৃষ্টি করা হয়। এ শাখায় অনুসন্ধান ও খনন কাজের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রাদেশিক সরকারগুলোকে শুধু স্মৃতিসৌধ সংরক্ষণ ঘোষণা করার বিধিবদ্ধ ক্ষমতা দেওয়া হয়। ১৯২৮ সালে স্যার জন মার্শাল ডাইরেক্টর জেনারেলের পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং ১৯৩১ সালের ১৯ মার্চ অবসর গ্রহণ করেন।


১৬. অহিচ্ছত্র এলাকায় উৎখনন :- 
১৯৩৭ সালে রায় বাহাদুর কে. এন. দীক্ষিত দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং পুনরায় সিন্ধুতে খনন কাজ শুরু হয়। তিনি কিছু কিছু এলাকায় বৃহৎ পরিসরে খনন কাজ করারও সুপারিশ করেন; এগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বেরেলি জেলার অহিচছাত্রা (Ahichchhatra) ও একজন দক্ষ প্রত্নতত্ত্ববিদের তত্ত্বাবধানে উত্তর প্রদেশ। এরপর ১৯৪০ থেকে ১৯৪৪ সালের মধ্যে কে. এন. দীক্ষিতের নির্দেশনায় অহিচছাত্রায় খনন কাজ করা হয়।

১৭. মর্টিমার হুইলার ও উৎখননের নতুন ইতিহাস :- 
মর্টিমার হুইলার পন্ডিচেরির আরিকামেদু, কর্ণাটকের ব্রহ্মগিরি এবং তক্ষশীলা (বর্তমানে পাকিস্তানে অবস্থিত), এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে খনন কাজ পরিচালনা করেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় ইতিহাসের প্রাগৈতিহাসিক সময় সুস্পষ্টভাবে নিরূপণ ও নিশ্চিতকরণ করা, যা দীর্ঘদিন প্রত্নতত্ত্ববিদগণ এড়িয়ে গেছেন। খনন কৌশল, সংরক্ষণ এবং অন্যান্য বিষয়ে ভারতীয় ছাত্রদের প্রশিক্ষণের জন্যও এই খনন কাজ কাজে লাগানো হয়। হুইলার খনন স্তরবিন্যাস কৌশলের প্রবর্তন করেন। এছাড়া তিনি প্রতিবেদন তৈরি পদ্ধতি এবং প্রকাশনা পদ্ধতিরও উন্নতি সাধন করেন। তিনি এ্যানসিয়েন্ট ইন্ডিয়া (Ancient India ) নামে একটি নতুন ধারাবাহিক জার্নালও প্রকাশ করেন। এই জার্নালে গবেষণামূলক প্রবন্ধ ও মাঠ-জরিপের প্রতিবেদন ছাড়াও বহু স্থানের খনন কাজের বিস্তৃত প্রতিবেদন প্রকাশিত হত।

১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র সৃষ্টি হওয়ার পর উভয় দেশই তাদের প্রত্নতাত্ত্বিক কাজের জন্য নিজস্ব প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে। সেই সময় থেকে উভয় দেশই অনেক গুরুত্বপূর্ণ খনন কাজ পরিচালনা করে আসছে।  

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

TRYSEM সম্পর্কে আলোচনা করো। 

অথবা , গ্রামীণ যুবদের স্বনিযুক্তি কর্মসূচিভিত্তিক প্রশিক্ষণ - প্রকল্প সম্পর্কে আলোচনা কর।

 

গ্রামীণ যুবদের স্বনিযুক্তি কর্মসূচিভিত্তিক প্রশিক্ষণ - প্রকল্প বা , TRYSEM :- 


১৯৭৯ সালের ১৫ ই আগস্ট TRYSEM ( Training for Rural Youth for Self Employment ) কর্মসূচিটি শুরু হয়েছিল। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল গ্রামীণ যুবসমাজের মধ্যে প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ প্রদান করে গ্রামীণ কৃষি , শিল্প , পরিষেবা এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে নিয়োগের সুযোগ সুবিধা ও সম্ভাবনা বৃদ্ধি করা। এর বৈশিষ্ট ও বিভিন্ন দিকগুলি ছিল - 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

(i) ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়স্ক দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী যুবকেরা প্রশিক্ষণের জন্য এই প্রকল্পের অধীনে নিয়োজিত হয়। 

(ii) নবম শ্রেণি উত্তীর্ণ যুবকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। 

(iii) এই প্রকল্পে মহিলাদের জন্য এক - তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষিত থাকে। 

(iv) প্রশিক্ষণ চলাকালীন ৭৫ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত মাসিক ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। 

(v) এই প্রকল্পে আওতাভুক্ত যুবকদের IRDP - র বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাও দেওয়া হয়ে থাকে। 

(vi) তপশিলি জাতি , উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির যুবকদের ক্ষেত্রে ন্যুনতম ৫০ % আসন সংরক্ষিত করা হয়। 

(vii) ৯০ এর দশকে প্রায় দুই লক্ষ যুবক - যুবতী এই কর্মসূচিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে প্রায় ৪৫% স্বনিযুক্তি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন এবং প্রায় ৩০% অন্যান্য ক্ষেত্রে নিযুক্ত হয়েছেন। 

তবে প্রয়োজনের তুলনায় এর সুযোগ - সুবিধা যথেষ্ট নয়। তাছাড়া প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের গ্রামীণ পরিবেশ ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে তেমন সুযোগও ঘটছে না। এরপর ১৯৯৯ সালে স্বর্ণজয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার যোজনা ( SGSY ) শুরু হলে TRYSEM প্রকল্পটি সহ IRDP , DWCRA , MWS - ইত্যাদি গ্রাম উন্নয়নমূলক প্রকল্প ও কর্মসূচীগুলি স্বর্ণজয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার যোজনা ( SGSY ) - র অন্তর্গত হয়।    

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


Share
Tweet
Pin
Share
No comments

'' নবান্ন '' নাটকের নামকরণের সার্থকতা আলোচনা করো। 

অথবা , নবান্ন নাটকটির নামকরণ কতদূর যথার্থ - তা আলোচনা করো। 




সাহিত্যের ক্ষেত্রে নামকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ নামের মধ্যে দিয়েই লেখক তাঁর রচনার বা সাহিত্যের মূলভাব প্রকাশ করে থাকেন। লেখার বিষয় নামকরণে ফুটে ওঠে। শিল্পী মাত্রেই নামকরণের ব্যাপারে সচেতন থাকেন। নবান্ন নাটকের নাট্যকার বিজন ভট্টাচার্য নাট্য সচেতন শিল্পী। তাঁর নবান্ন নাটকটি হল বাস্তবধর্মী নাটক। নাট্যকারের আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি , বৃহত্তর শ্রেণীর আশা - আকাঙ্খা নাটকের নাটকের নামকরণে প্রতিফলিত হয়েছে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো
 
নবান্ন নাটকটি যে দেশকালের প্রেক্ষিতে রচিত হয়েছে সেটি একদিকে ছিল দুর্যোগ ও দুর্ভিক্ষের এবং অন্যদিকে ক্রান্তিকালের। নবান্ন নাটক আমাদের মনে স্মৃতির সমুদ্র মন্থন করে তুলে আনে নবান্ন উৎসবের ছবি।  বন্যা , মহাযুদ্ধ , মহামারী - ইত্যাদি আমিনপুরের গ্রাম্য জীবনের সুস্নিগ্ধ দিন যাপন পদ্ধতির বুকে আঘাত হেনে সবকিছু লন্ডভন্ড করে দিয়েছিল। মানুষ হয়ে উঠেছিল জন্তুপ্রায়। অন্নহীন , বস্ত্রহীন , মান-সম্ভ্রমহীন ভিখিরীতে রূপান্তরিত হয়ে মানুষ ভুলতে বসেছিল আপন অস্তিত্ব। সেই রকম এক ভয়ঙ্কর দুর্যোগপূর্ণ দিনের চিত্র ফুটে উঠেছে নবান্ন নাটকে যেখানে মানুষের অস্তিত্বই সংকটে সেখানে নবান্ন উৎসব পালনের কথা ভাবাই যায়না। 

কিন্তু এত ঝড়-ঝাপটা ও দুর্ভিক্ষ সেই মানুষগুলোর মন থেকে মুছে ফেলতে পারেনি নবান্ন উৎসবের স্মৃতিকে। তাই যখন আবার ঘরছাড়া মানুষগুলো ফিরে এসেছে গ্রামে , নতুন ধান তুলেছে ঘরে , তখন নবান্ন উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছে তারা। বিগত দিনগুলোর বিভীষিকা মন থেকে মুছে ফেলে আয়োজন করেছে নবান্ন উৎসবের। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

নাটকের তৃতীয় দৃশ্যে প্রাকৃতিক সংকটের ঘনীভূত রূপ দেখা যায়। তৃতীয় দৃশ্যের শেষের দিকে আকস্মিকভাবে প্রচন্ড ঝড় ওঠে , সাইক্লোনে প্রধানের দোচালা বিনোদিনীর মাথার ওপর ভেঙে পড়ে।  বিনোদিনী সেই আঘাতে অচৈতন্য হয়ে পরে। আবার সেই ঝড়ের প্রকোপে তৈরি হওয়া বন্যা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। বন্যায় সবকিছু ভেসে যায়। 

চতুর্থ দৃশ্যে দুর্যোগ ও বন্যার পরিপ্রেক্ষিতে ভয়াবহ অভাব ও অর্থসংকট জন্ম নেয়। মানুষের খাদ্যের সংস্থান সংকুচিত হয়ে পড়ে। নাটক অনুসারে বলা যায় ,  '' নিত্যি ঐ এক ডুমুর - কলা সেদ্ধ আর কচুর নাতির ঝোল। '' 

পঞ্চম দৃশ্যে অনাহার , খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষের জন্য কিছু মানুষের অমানবিক স্বার্থপরতা কীভাবে দায়ী -  তা বর্ণনা করা হয়েছে। অতিরিক্ত মুনাফার লোভে মজুতদারী ও কালোবাজারি যুদ্ধকালীন ব্যবস্থায় কীভাবে মানুষের অসহায় অবস্থার উপর চরম আঘাত হেনেছে - তার উল্লেখ পাওয়া যায় কালীধন ধাড়া ও হারু দত্ত নামক দুটি চরিত্রের মধ্যে দিয়ে। এরা বিবেকহীন , হৃদয়হীন ও অমানবিক বাণিজ্যকতার জাল সর্বত্র ছড়িয়ে রাখে - সে পরিচয় পাওয়া যায়। এদেরই চক্রান্তে ও রাষ্ট্রশক্তির পৃষ্ঠপোষকতায় '' মনুষ্যসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ '' লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়। 

ষষ্ঠ দৃশ্য দেখা যায় সমাদ্দার পরিবার গ্রাম ছেড়ে শহরের পার্কে আশ্রয় নিয়েছে দুমুঠো খাবারের আশায়।  এরই মধ্যে বিচিত্র ধরনের সুযোগ সন্ধানীরা নানা রূপে ও বেশে জীর্ণশীর্ণ , বস্ত্রহীন - এই নিরন্ন কঙ্কালসার মানুষগুলোকে নিয়ে নির্লজ্জভাবে নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ চরিতার্থ করতে উদ্যোগী হয়। এদের কেউ ফটোগ্রাফার , কেউ বা টাউট। প্রথমোক্তরা প্রধানের ভাষায় '' কঙ্কালের ছবির ব্যবসাদার। '' 

তৃতীয় ও চতুর্থ দৃশ্যে প্রধান , কুঞ্জ , রাধিকা রাজপথে খাবারের সন্ধানে ঘুরে বেড়ায়। প্রধান বাড়ি বাড়ি ভিক্ষে করেও ক্ষুধার অন্ন জোগাড় করতে পারেনা। কুঞ্জ ডাস্টবিনের খাবার নিয়ে কুকুরে - মানুষে লড়াই করছে। এ দৃশ্য বড়ই মর্মান্তিক। ওদিকে বড়লোকের বাড়িতে পান ভোজনের সমারোহ ; কিন্তু সামান্য উচ্ছিষ্টটুকুও দুর্গত মানুষদের দান করতে এদের হাত সরেনা। চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিতে দেখা যায় ক্ষুধার্ত মানুষের মৃত্যু মিছিল। 

অন্যদিকে দুর্দশাগ্রস্ত মানুষদের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে হারু একদিকে বিপন্ন মানুষের জমি-বাড়ি সস্তায় কিনে নেয় এবং অপরদিকে গ্রামের দুস্থ মা - বাপ কে ভুল বুঝিয়ে মেয়েদের শহরে চালান দেয়।  কালীধনের সেবাশ্রমে 'সেবা' -  নামের আড়ালে নারীদেহ নিয়ে দেহব্যবসা কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। এমনকি পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করলেও তাদের যে ছাড়া পেতে অসুবিধে হবে না - এ ব্যাপারে তারা নিশ্চিত। 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন মেদিনীপুর ও চব্বিশ পরগনার একাংশ সাইক্লোন , জলোচ্ছ্বাস ও বন্যায় বিপর্যস্ত হয়। খাদ্য সংকট দেশবাসীর জীবনে নিয়ে এসেছিল মন্বন্তর। বাংলায় প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ এ সময় অনাহারে মৃত্যু বরণ করে। জোতদার , মজুতদাররা এর সুযোগ নিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচারে শোষণ করে। নবান্ন নাটকে সমাজের সেই দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের ছবি তুলে ধরা হয়েছে। 

পরিশেষে বলা যায় , নবান্ন নাটকটি হল সংগ্রামের নাটক। আবার এই নাটকের শেষের দিকে নতুন দিনের সূচনার আভাস পাওয়া যায়। সংগ্রামের শেষে জীবনের জয়গান ফুটে উঠেছে এই নাটকে। সব হারানোর শেষে সব প্রাপ্তির যে চেতনা , তার মধ্যে দিয়ে পাওয়া যায় নতুন জীবনের উৎসব। সেই নতুন জীবন আহ্বান জানায় নতুন ভোরের রক্তিম সূর্যকে। মানুষকে অনুপ্রাণিত , উদ্দীপিত করার বার্তা দেওয়া হয়েছে এই নাটকে। নাটকের শেষ দিকে নবান্ন উৎসব পালন , শুধুই উৎসব হয়ে থাকেনি , তা মানুষের মিলনক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। নতুন করে বাঁচার আদর্শকে তুলে ধরা হয়েছে। তাই নবান্ন নাটকের নামকরণ ব্যাঞ্জনাধর্মী এবং যথার্থ।    

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

বৃন্দাবনকে পন্ডিতমশাই উপন্যাসের নায়ক চরিত্র বলা যায় কি'না আলোচনা কর। 

অথবা , '' পন্ডিতমশাই উপন্যাসের নায়ক বৃন্দাবন '' - এই মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো। 

অথবা , বৃন্দাবন কীভাবে পন্ডিতমশাই উপন্যাসে প্রধান চরিত্র হয়ে উঠেছে - তা আলোচনা করো। 

অথবা , পন্ডিতমশাই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র কে ? যুক্তিসহ আলোচনা করো। 




পন্ডিতমশাই উপন্যাসে প্রধান চরিত্র হল বৃন্দাবন। সাধারণত যে চরিত্র সমস্ত ঘটনা ধারাকে পরিচালিত করে , অথবা যাকে কেন্দ্র করে সমস্ত ঘটনা আবর্তিত হয় , সেই পুরুষ চরিত্রকে নায়ক বলা যায়। এই অর্থে বৃন্দাবনকে পন্ডিতমশাই উপন্যাসের নায়ক বলা যেতে পারে। যেহেতু নায়িকা কুসুমের কার্যকলাপের মধ্যে দিয়ে বৃন্দাবনের জীবনধারা পরিচালিত হয়েছে এবং উপন্যাসের ঘটনা আবর্তিত হয়েছে , সেই কারণে বৃন্দাবনকে এই উপন্যাসের নায়ক চরিত্র হিসেবে মেনে নেওয়া যেতে পারে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

পন্ডিতমশাই উপন্যাসে কুসুম আকর্ষণীয় ও কেন্দ্রীয় চরিত্র হলেও কুসুম চরিত্রের বিকাশে ও প্রকাশে  বৃন্দাবনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। অর্থাৎ পন্ডিতমশাই উপন্যাসের কেন্দ্রবিন্দুতে তার জায়গা অনেকখানি।  গ্রামের মানুষ তাকে পন্ডিতমশাই নামে ডাকে। প্রথম জীবনে নয় , পরবর্তীকালে নানানভাবে জ্ঞানচর্চা করে বৃন্দাবন একজন নিষ্ঠাবান পন্ডিতে পরিণত হয়। কুসুম সেই বাল্যে যেদিন বৃন্দাবনের জীবন থেকে সামাজিক অনুশাসনে চলে আসতে বাধ্য হয় , তখন বৃন্দাবনের কোনো জ্ঞানচর্চার কথা তার জানা ছিল না। তাই পরবর্তীকালে সেই সংবাদে কুসুম যেমন বিস্মিত হয় , তেমনি আবার বৃন্দাবনের প্রতি শ্রদ্ধাও  জাগে। 

বৃন্দাবন অত্যন্ত সৎ চরিত্র , স্বল্পবাক এবং স্বভাবধর্মে বিনয়ী ও সংযত মানুষ। তার মধ্যে দেখা যায় যৌবনের উচ্ছল উদ্দামতার থেকে বয়স্ক স্থিতধী সংযমের প্রাধান্য। তাই দীর্ঘদিন যে পূর্ণবয়স্কা  কুসুমকে কলসি কাঁখে সিক্তবসনে দেখে মুগ্ধ হয়েছিল বৃন্দাবন , যুবতী তার কাছে প্রাথমিকভাবে অপরিচিত হলেও সেই যুবতীর পরিচয় আবিষ্কারে বৃন্দাবন দ্রুত উপলব্ধি করেছে যে , সে হচ্ছে তারই  বিবাহিতা স্ত্রী কুসুম। এই পরিচয় আবিষ্কারের সূত্রেই সম্ভবত স্ত্রী কুসুমের উপর তার অধিকারবোধ জন্মায়। বাংলার বৈষ্ণব সমাজের কন্ঠিবদলের প্রথা দৃঢ়চেতা বৃন্দাবনকে প্রভাবিত করেনি। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

গ্রামের একটি সম্পন্ন পরিবারের সন্তান বৃন্দাবন। গ্রামের মাটিতে বাস করলেও বৃন্দাবন শুধুই পারিবারিক অর্থ , গ্রাম্য জীবন ও তার সংস্কার নিয়ে না থেকে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা কোথায় - তা ভালভাবে উপলব্ধি করেছিল। কৃষিভিত্তিক গ্রাম্যজীবনে বিদ্যার তেমন প্রয়োজন কেউই অনুভব করেনি ; কেননা বিদ্যার্জনের কোনো উপায়ও সেখানে ছিল বলে মনে হয় না। সব গ্রামে ঠিকমতো কোনো পাঠশালা ছিল না।  এই অবস্থায় বৃন্দাবন আপনার ভেতরকার প্রেরণায় বিদ্যার প্রাথমিক পাঠ সমাপ্ত করে। কিছুটা ইংরেজি শিক্ষা লাভ করে আধুনিকতার পাঠ গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে তার আধুনিক মনোভাব তাকে বলিষ্ঠ মানুষ হিসাবেই প্রতিষ্ঠিত করে। 

নিজের বিদ্যাশিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে বৃন্দাবন নিরক্ষর গ্রামের অশিক্ষিত কৃষক সন্তানদের শেখানোর চেষ্টা করে। গ্রামে পাঠশালা খোলার কথা ভাবে। কিন্তু পিতা গৌড় দাসের দিক থেকে কোনো সহায়তা সে পায়নি। বিষয়-আশয় , চাষবাস ইত্যাদির প্রতিও তার দুর্বলতা ছিল। আবার নিজেকে যুগোপযোগী করার প্রয়াসও ছিল। এই আধুনিক মানুষকে তাই হঠাৎ দেখে কুসুম বিশ্বাস করে উঠতে পারেনি ; বরং রীতিমত অবাক হয়। আবার বৃন্দাবন সাত বছর বয়সের কুসুমকে দীর্ঘদিন পর পূর্ণ যুবতী হিসেবে দেখে মুগ্ধ হয়।  দুজনের কাছে দুজনেই যেন নব পরিচয় প্রাপ্ত হয় আজ। 

বৃন্দাবন একজন সৎ চরিত্রের মানুষ। সে নির্লোভ। মানুষকে শ্রদ্ধা করতে জানে। তাই তার স্ত্রীকে সে মর্যাদা দেয়। স্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা ও প্রেম ছিল অক্ষুন্ন। রুচিশীল , শিক্ষিত এই মানুষটি শেষ পর্যন্ত কুসুমের হৃদয় কুসুমকে প্রস্ফুটিত করে তোলে। তাই উপন্যাসের নায়কের মর্যাদার অধিকারী বৃন্দাবন। 

পন্ডিতমশাই বা বৃন্দাবন বাঙালি পরিবারের একজন সংসারী মানুষ। পৈতৃক জমিজমা , স্ত্রী কুসুম , পুত্র চরণ - ইত্যাদি নিয়েই সে শুধু থাকেনি ; অর্থাৎ আর পাঁচটা বাঙালির মত শুধুমাত্র নিজেকে নিয়ে সে ব্যস্ত থাকতে পারেনা। বৃন্দাবন নিজের পরিধি ছাপিয়ে অপরের কথা ভেবে আপনার মানবধর্মকে সার্থক করার কথা বলেছে। গ্রাম সংগঠনের জন্য দরকার ছিল সৎ ও উদ্যোগী মানুষের। বৃন্দাবন তেমনিই এক সৎ ও  উদ্যোগী মানুষ , যা অনেকটা আদর্শরূপে স্থাপন করতে চেয়েছেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। 

বৃন্দাবনকে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একজন ধীর-স্থির , দায়িত্ববান মানুষ হিসেবে চিত্রিত করেছেন। মা ও একমাত্র সন্তান চরণকে হারানোর পরও সে জীবন যুদ্ধে হতাশ হয়নি। সন্নাসীর মতো সবকিছু ত্যাগ করে পথে নেমেছে। যদিও তার পথে নামাতে সঙ্গী হিসাবে শেষ পর্যন্ত পেয়ে যায় স্ত্রী কুসুমকে। বৃন্দাবন শেষ পর্যন্ত উপলব্ধি করেছে সংসার জীবনে নারী বা স্ত্রীকে অস্বীকার করে সাধনা সফল হয়না। পন্ডিতমশাইরুপী বৃন্দাবন হয়ে উঠেছে একটি প্রতীকী চরিত্র। বৃন্দাবন বা পন্ডিতমশাইয়ের মধ্যে দিয়ে শরৎচন্দ্রের জীবনদর্শন প্রকাশিত। তাই , বৃন্দাবনই উপন্যাসের নায়ক এবং সে অবশ্যই একটি আকর্ষণীয় ও যথার্থ চরিত্র। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

     
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

বেকারত্বের সংজ্ঞা দাও। বেকারত্ব গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলে দারিদ্র বৃদ্ধি করে - সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ করো। 




বেকারত্বের ধারণা ও সংজ্ঞা : - 


সাধারণভাবে , বেকার বলতে এমন একজন ব্যক্তিকে বোঝায় , যার উপার্জন করার যোগ্যতা ও ইচ্ছা থাকা স্বত্তেও উপার্জনক্ষম কাজ লাভে বঞ্চিত। 

সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায় , অন্যান্য পারিপার্শ্বিক স্বাভাবিক অবস্থায় কর্মসম্পাদনের যোগ্যতাযুক্ত , কর্মসম্পাদনে সক্ষম বয়সী যখন যখন উপার্জনযোগ্য কাজ থেকে অনৈচ্ছিকভাবে বিচ্ছিন্ন থাকে - তখন তাকে বলা হবে বেকার। 

ডি ম্যালী - র মতে , বেকারত্ব বলতে এমন একটি পরিস্থিতিকে বোঝায় , যেখানে ব্যক্তি তার সদিচ্ছা ও কর্মপ্রবণতা থাকা স্বত্তেও মজুরির বিনিময়ে কর্মপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়। 

উপরোক্ত সংজ্ঞা ও আলোচনা থেকে বেকারত্বের কয়েকটি উপাদান বা শর্ত পরিলক্ষিত হয় - 
কোনো ব্যক্তিকে তখনই বেকার বলা যাবে , যখন  - 
১. ব্যক্তি যেন কর্মক্ষম হন। 
২. ব্যক্তির কর্মপ্রাপ্তির ইচ্ছা থাকবে। 
৩. ব্যক্তি তার পরিশ্রম দ্বারা কাজ খুঁজে নেওয়ার প্রবণতা দেখাবে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

ভারতের গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলে দারিদ্রতা বৃদ্ধির সাথে বেকারত্বের সম্পর্ক :- 


ভারতের গ্রামাঞ্চলে ৪.৪ % মানুষ ও শহরাঞ্চলের ৫.৭% মানুষ বেকারত্বের শিকার। তবে বেকারত্বের সাথে গ্রামাঞ্চলের ও শহরাঞ্চলের চরিত্রগত পার্থক্য রয়েছে। 

জনসংখ্যা , দারিদ্রতা , নিরক্ষরতা ও বেকারত্বের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বর্তমান। সম্পর্কটি একটি রেখাচিত্রের সাহায্যে দেখানো হল। 




গ্রামাঞ্চলের ক্ষেত্রে দারিদ্রতার সাথে বেকারত্বের সম্পর্ক :- 
১. ভারতে প্রতিনিয়ত কৃষি ক্ষেত্রে জোতের পরিমান হ্রাস পাচ্ছে। ফলে কৃষি থেকে মানুষের আয় কমছে। জনসংখ্যার উত্তরোত্তর বৃদ্ধির সাথে সাথে এই সমস্যা আরও জটিল আকার ধারণ করছে। আজও ভারতের প্রায় ৬৫ % মানুষ কৃষির ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। ফলে কৃষি ক্ষেত্রে বেকারত্ব বৃদ্ধির সাথে সাথে গ্রামীণ ক্ষেত্রে দারিদ্রতার পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

২. বর্তমানে ভারতের বেশিরভাগ কৃষিজমিগুলিতে আধুনিক যন্ত্রপাতির দ্বারা ফসল উৎপাদন করা হচ্ছে। ফলে ভুমিহীন কৃষকদের কর্মপ্রাপ্তির ক্ষেত্র সংকুচিত হয়ে এসেছে। বর্তমানে মাথাপিছু কৃষি জোতের পরিমান তিন একরেরও কম। 

৩. বর্তমান সময়ে কৃষি পণ্য অলাভজনক ব্যবসায়ে পরিণত হয়েছে। প্রত্যেক বছর বহু কৃষক ফসলের দাম না পেয়ে আত্মহত্যা করে থাকেন। কৃষি ক্ষেত্রে এই বেকারত্ব ভারতের সার্বিক দারিদ্রের রেখাচিত্রকে উর্ধমুখী করে চলেছে। 

৪. গ্রামীণ ক্ষেত্রে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পগুলির যথাযথ রূপায়ণের অভাবে বেকারত্বের পরিমান বেড়েই চলেছে। ১০০ দিনের কাজের নিশ্চয়তা থাকলেও বহু ক্ষেত্রে তা কার্যকর করতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা যাচ্ছে। ফলে বেকারত্ব ও দারিদ্রতা একই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে। 

৫. ভারতে গ্রামীণ ক্ষেত্রে নিরক্ষরতার হার বেশি। কাজেই নিরক্ষরতার কারণে নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষ বেকারত্বের শিকার হচ্ছেন যা প্রত্যক্ষভাবে দারিদ্রতা বৃদ্ধি করছে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

শহরাঞ্চলের ক্ষেত্রে দারিদ্রতার সাথে বেকারত্বের সম্পর্ক :- 
১. শহরাঞ্চলে শিক্ষিতের হার বেশি থাকলেও , কার্যকরী বৃত্তিমুখী পাঠক্রমের অভাব থাকার দরুন জনসংখ্যার একটি বিশেষ অংশ উৎপাদনশীলতার সাথে নিজেদের যুক্ত করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। ফলে শহরাঞ্চলে শিক্ষিত বেকারদের সংখ্যা তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

২. শহরাঞ্চলে যোগ্যতা প্রাপ্তির একমুখীনতা বেকারত্ব সমস্যার বৃদ্ধি করছে যা শহরাঞ্চলে দারিদ্রতা বৃদ্ধির একটি অন্যতম কারণ। কোথাও প্রয়োজনের তুলনায় অধিক সংখ্যক ডাক্তার , ইঞ্জিনিয়ার থাকার ফলে তা বেকারত্ব সমস্যার সৃষ্টি করছে। 

৩. শহরাঞ্চলের শিক্ষিত ব্যক্তিবর্গ বাবু কাজে অধিক পরিমানে নিযুক্ত হওয়ার প্রবণতা পোষণ করেন। চাকুরী গ্রহণ বা সেই ধরণের কাজেই শহরাঞ্চলের মানুষ অধিক উৎসাহবোধ করেন। ফলে কর্মপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরী হচ্ছে , যা শহরাঞ্চলের দারিদ্রতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। 

৪. শহরাঞ্চলে শিল্পের এবং বাজারের ওঠাপড়া , শ্রমিক অসন্তোষ , ধর্মঘট , লক - আউট , রাজনৈতিক উদ্যোগহীনতা ইত্যাদি বিষয়গুলি শহরাঞ্চলের মানুষের কর্মপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। এর ফলে শহরাঞ্চলে বেকারত্বের সৃষ্টি হয় যা শহরাঞ্চলের দরিদ্রতাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। 

৫. আর্থিক মন্দা , মুদ্রাস্ফীতি , কর্মী - ছাঁটাই - ইত্যাদি বিষয়গুলি সরাসরি শহরাঞ্চলের বেকারত্বের হারকে প্রভাবিত করে। ফলে দারিদ্রতা অভাবনীয়ভাবে বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও সরকারি নীতি , বিশ্বায়ন , অর্থনৈতিক উদারীকরণ - ইত্যাদি বিষয়গুলিও শহরাঞ্চলের বেকারত্ব ও দারিদ্রতার পরিমাণকে বৃদ্ধি করে। 

পরিশেষে বলা যায় , ভারতের গ্রামাঞ্চল ও শহরাঞ্চলের বেকারত্ব ও দারিদ্রতার মধ্যে চরিত্রগত পার্থক্য থাকলেও তার সরাসরি ফল হিসেবে উভয় ক্ষেত্রেই বেকারত্বের পরিমান বৃদ্ধি পায়। বেকারত্বের উত্তরোত্তর পরিমান বৃদ্ধি দারিদ্রতাকে বৃদ্ধি পেতে উৎসাহিত করছে। ভারতের গ্রামাঞ্চল ও শহরাঞ্চল উভয় ক্ষেত্রেই বেকারত্ব ও দারিদ্রতার মধ্যে অঙ্গাঙ্গি সম্পর্ক বর্তমান।    

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

Share
Tweet
Pin
Share
No comments
Newer Posts
Older Posts

Followers

Pages

  • Home
  • Privacy Policy
  • Disclaimer
  • CONTACT ME
  • About Me

Contact Form

Name

Email *

Message *

About me

Hallow viewers , myself Nandan Dutta [Subhankar Dutta], reside at Maheshpur,Malda.
I made this website for the students of B.A. courses under Gour Banga University. Here you can get suggestions of different subjects like HISTORY , SOCIOLOGY , POLITICAL SCIENCE & EDUCATION.
In future I will add MCQ sections of those subjects.


Categories

  • 1ST SEMESTER SUGGESTION (1)
  • 2 ND YEAR SUGGESTION (1)
  • 2ND SEMESTER (1)
  • 3RD SEMESTER (8)
  • BENGALI NOTES (21)
  • CU suggestion. (1)
  • EDUCATION NOTES (141)
  • ENGLISH COMPULSORY (16)
  • GBU Suggestion. (7)
  • HISTORY EUROPE & WORLD (46)
  • HISTORY NOTES (68)
  • POL SC NOTES (64)
  • SOCIOLOGY NOTES (72)
  • WBCS 2020 (1)

recent posts

Blog Archive

  • May 2025 (3)
  • April 2025 (20)
  • March 2025 (12)
  • February 2025 (8)
  • November 2024 (5)
  • October 2024 (2)
  • September 2024 (2)
  • June 2024 (2)
  • March 2024 (6)
  • February 2024 (4)
  • October 2023 (5)
  • May 2023 (5)
  • April 2023 (1)
  • December 2022 (1)
  • November 2022 (13)
  • September 2022 (2)
  • August 2022 (7)
  • July 2022 (29)
  • June 2022 (10)
  • May 2022 (25)
  • April 2022 (24)
  • March 2022 (16)
  • February 2022 (19)
  • January 2022 (21)
  • December 2021 (46)
  • November 2021 (5)
  • October 2021 (6)
  • September 2021 (5)
  • August 2021 (41)
  • July 2021 (43)
  • June 2021 (31)
  • May 2021 (7)
  • April 2021 (1)
  • July 2020 (1)
  • June 2020 (3)
  • April 2020 (1)
  • November 2019 (1)
  • July 2019 (1)
  • June 2019 (1)
  • May 2019 (1)
  • April 2019 (2)
  • January 2019 (1)

Pages

  • Home
  • 2nd SEM ভাষাতত্ত্ব :
  • বাংলা উপভাষা
  • দ্বিতীয় পুলকেশীর কৃতিত্ব
  • ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত সাম্যের অধিকারগুলি আলোচনা করো।
  • হর্ষবর্ধনের কৃতিত্ব আলোচনা করো। তাকে কি উত্তর পথনাথ বলা যায় ?
  • ভারতীয় সংবিধানের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য :-
  • উদারনীতিবাদ : সংক্ষিপ্ত ধারণা :-
  • চোল শাসনব্যবস্থা :-
  • গুপ্তযুগ সুবর্ণযুগ সম্পর্কিত আলোচনা।
  • ৬. উদাহরণসহ মধ্যযুগের বাংলাভাষার কয়েকটি বৈশিষ্ট আল...
  • 1. Marxism
  • আধুনিক বাংলা ভাষা ও তার বৈশিষ্ট।
  • Discuss the career and achievements of Samudragupta .
  • ভাষাতত্ত্ব

Created with by ThemeXpose | Distributed by Blogger Templates