­
ভারতে প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখনন ও পুরাবস্তুর সংরক্ষণে ভারতের প্রত্নতাত্মিক জরিপ বিভাগের ভূমিকা আলোচনা করো। Archeological Survey of India - NANDAN DUTTA

ভারতে প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখনন ও পুরাবস্তুর সংরক্ষণে ভারতের প্রত্নতাত্মিক জরিপ বিভাগের ভূমিকা আলোচনা করো। Archeological Survey of India

by - August 21, 2021

ভারতে প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখনন ও পুরাবস্তুর সংরক্ষণে ভারতের প্রত্নতাত্মিক জরিপ বিভাগের ভূমিকা আলোচনা করো।




সূচনা : - 
ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বা পুরাতত্ত্ব জরিপ বিভাগ ভারতীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীনস্থ একটি সরকারী সংস্থা যার কাজ হল পুরাতত্ত্ব বিষয়ক গবেষণা এবং ঐতিহ্যশালী কীর্তিস্তম্ভের সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ। ১৮৬১ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। আলেকজান্ডার কানিংহাম এই সংস্থার প্রথম মহাপরিচালক ছিলেন।



১. জরিপ বিভাগ স্থাপনের ইতিহাস :- 
আলেকজান্ডার কানিংহাম ভারতে ১৮৬১ সালে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া ( ASI ) প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রথম মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসের সর্বপ্রথম নিয়মতান্ত্রিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান এশিয়াইটিক সোসাইটি দ্বারা পরিচালিত হয়। 

২. কানিংহাম - এর ভূমিকা :- 
এরপর কানিংহাম একটি বিশদ জরিপ পরিচালনা করেন যা প্রায় অর্ধ শতকেরও বেশি সময় ধরে পরিচালিত হয়। ইতালীয় সামরিক বাহিনীর সদস্য জিনব্যাপটিস্ট ভেনচুরা ও অন্যান্য অপেশাদার প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মূলত কানিংহাম এ জরিপটি পরিচালনা করেন।তিনি ভারতের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত স্তূপগুলো খনন করেছিলেন এবং এ খনন কার্য পরিচালনার জন্য তিনি নিজেই অর্থ যোগান দিয়েছিলেন। ইতিমধ্যে তিনি কাজ পরিচালনার জন্য এবং সার্বিক তত্ত্বাবধায়নের জন্য জরিপ কমিটি গঠনের গুরুত্ব অনুধাবন করেন । অর্থের অভাবে ১৮৬৫ থেকে ১৮৭১ সাল পর্যন্ত জরিপের কাজ স্থগিত রাখা হয়। ১৮৭১ সালে কানিংহামকে প্রথম মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ প্রদান এবং জরিপটি অন্য বিভাগে স্থান্তরের মাধ্যমে কাজটি পুনরায় শুরু হয়।১৮৯৬ সালের একটি স্মরণীয় আবিষ্কার হচ্ছে লুম্বিনি স্তম্ভের শিলালিপি, অশোকের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিলালিপি যা একটি স্তম্ভে লিখিত ছিলো। এটি আবিষ্কার করেন অলিউস আন্তন ফুহার।


৩. লর্ড কার্জনের ভূমিকা :- 
১৯০২ সালে সংস্থাটির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন লর্ড কার্জন। দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই তিনি পূর্বে চলমান প্রথা ভঙ্গ করে কেমব্রিজের শাস্ত্র বিষয়ক অধ্যাপক ২৬ বছর বয়সী জন মার্শালকে জরিপের প্রধান করে জরিপ কাজ পুনরায় শুরু করেন। মার্শাল প্রায় ২৫ বছর জরিপের কাজ পরিচালনা করেন।তার কার্যকালে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ছিলো ১৯২১ সালে হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোতে সিন্ধু সভ্যতার আবিষ্কার। ১৯২৮ সালে হ্যারল্ড হারগ্রিভস মার্শালের পদে স্থলাভিসিক্ত হন। এরপর পর্যায়ক্রমে দয়া রাম শাহ্নি, জে. এফ. ব্লাকিস্টোন, কে. এন. দিকশিত মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

৪. মর্টিমার হুইলারের ভূমিকা :-  
১৯৪৪ সালে ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক ও সামরিক বাহিনীর সদস্য মর্টিমার হুইলার মহাপরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত তিনি কর্তব্যরত ছিলেন। এই সময় তিনি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান যেমন  ব্রহ্মগিরি, চন্দ্রাবল্লি, লৌহ যুগের নিদর্শন ও প্রস্তর যুগের নিদর্শনগুলো খনন করেন।

৫. জরিপ ও সংগ্রহ :- 
আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন বস্তুগত সামগ্রী ও হস্তনির্মিত শিল্পকর্ম যেমন, পান্ডুলিপি, অভিলেখন (শিলালিপি, মুদ্রালিপি, তাম্রলিপি ইত্যাদি) স্মৃতিসৌধ ইত্যাদির জরিপ, সংগ্রহ এবং এগুলোর প্রামাণিক দলিল তৈরি, ব্যবহার ও প্রদর্শনের বিষয়টি স্যার উইলিয়ম জোনস কর্তৃক ১৭৮৪ সালে এশিয়াটিক সোসাইটি, কলকাতা প্রতিষ্ঠার পর পূর্ণ উদ্যোগে শুরু হয়। 

৬. জরিপ ও স্মৃতিসৌধ সংস্কার :- 
এ সময় ওয়েলেসলির মার্কুইস কর্তৃক ফ্রান্সিস বুকাননকে মহীশুর জরিপ করার কাজে নিযুক্তি করা হয়। তিনি ১৮০৭ সালে বর্তমান বিহার ও উত্তর প্রদেশের স্মৃতিসৌধ এবং প্রাচীন নিদর্শন জরিপের কাজ শুরু করেন। এ সময় স্মৃতিসৌধ সংস্কারের কথা ভাবা না হলেও তাজমহল, ফতেপুর সিক্রি এবং সিকান্দারাবাদের মতো কিছু স্মৃতিসৌধ সংস্কার করা হয়। 
কানিংহাম  ১৮৬১ সাল থেকে ১৮৬৫ সালের মধ্যে পূর্বে গয়া থেকে উত্তর পশ্চিমে সিন্ধু পর্যন্ত, এবং উত্তরে কালসি থেকে দক্ষিণে নর্মদা পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা জরিপ করেন। এ ব্যাপারে তিনি চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করেন।


৭. দিল্লি , আগ্রা , কেন্দ্রীয় প্রদেশে জরিপ ও বৌদ্ধ স্মৃতিসৌধগুলির মানচিত্র রেকর্ড :- 
 ১৮৭১ সালে কানিংহাম দিল্লী এবং আগ্রায় পুনরায় জরিপ কাজ শুরু করেন; ১৮৭২ সালে তিনি রাজপুতনা, বুন্দেলখন্দ, মথুরা, বোধগয়া এবং গৌড় জরিপ করেন; ১৮৭৩ সালে তিনি পাঞ্জাব এবং ১৮৭৩ ও ১৮৭৭ সালের মধ্যে তিনি কেন্দ্রীয় প্রদেশ, বুন্দেলখন্দ এবং মালওয়া জরিপ করেন। সুশৃঙ্খল ও সুপরিকল্পিতভাবে জরিপ কাজ শুরু করার জন্য আলেকজান্ডার কানিংহাম বৌদ্ধ-স্থাপনা ও স্মৃতিসৌধগুলোকে মানচিত্রের উপর ছক আকারে রেকর্ড করেন।

৮. ইন্সক্রিপশনাম ইন্ডিকারাম জার্নাল প্রকাশ :- 
১৮৭২ সালে জেমস বার্জেস কর্তৃক ইন্ডিয়ান এন্টিকয়ারি জার্নাল প্রকাশের ফলে বুলার ও ফ্লিট, ইগেলিং ও রাইস, ভন্ডারকার ও ইন্দ্রজির মতো পন্ডিতদের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ অভিলেখন এবং এগুলোর সংকেতলিপির অর্থোদ্ধার করে প্রকাশ করা সহজ হয়। উৎকীর্ণ লিপি সামগ্রীর একটি সুসংবদ্ধ ও সুন্দর সংখ্যা প্রকাশ করার জন্য কানিংহাম করপাস ইন্সক্রিপশনাম ইন্ডিকারাম নামে একটি জার্নালও প্রকাশ করেন। 

৯. স্মৃতিসৌধের উপর প্রতিবেদন :- 
স্মৃতিসৌধ সংরক্ষণের সঙ্গে সম্পর্কিত সকল বিষয়ে প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় সরকারকে সাহায্য করার জন্য ১৮৮১ সালে রিপনের শাসনামলে মেজর এইচ. এইচ. কোলেকে প্রাচীন স্মৃতিসৌধসমূহের কিউরেটর নিযুক্ত করা হয়। তিনি বোম্বে, মাদ্রাজ, রাজপুতনা, হায়দ্রাবাদ, পাঞ্জাব ও উত্তর-পশ্চিম প্রদেশের স্মৃতিসৌধের উপর বহু প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রদান করেন। ১৮৮৩ সালে কোলের চাকরির মেয়াদ শেষ হলে স্মৃতিসৌধ সংরক্ষণের কাজটি পুনরায় স্থানীয় সরকারকে প্রদান করা হয়।

১০. রাজনৈতিক সুপারিশ :- 
১৮৮৫ সালে কানিংহাম চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি মহা-পরিচালকের পদ বিলুপ্তি এবং উত্তর ভারতকে পুনঃসংগঠিত করে পাঞ্জাব, সিন্ধু এবং রাজপুতনা; উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ (উত্তর প্রদেশ) এবং কেন্দ্রীয় প্রদেশ; এবং বিহার, উড়িষ্যা, আসাম ও ছোট নাগপুরসহ বাংলা নামে তিনটি স্বাধীন অঞ্চল করার জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ করেন। এই তিনটি অঞ্চলের প্রতিটি দুইজন নকশাকার ও দুইজন সহকারীসহ একজন জরিপকারক দ্বারা পরিচালিত হবে। 


১১. পালি ও দ্রাবিড় ভাষার সংকেত লিপির অর্থোদ্ধার :- 
১৮৭১ সাল থেকে ১৮৮৫ সালের মধ্যে বার্জেস পশ্চিম ভারতে এবং ১৮৮২ সাল থেকে আলেকজান্ডার রি’কে সহকারী করে দক্ষিণ ভারতে ব্যাপক জরিপ কাজ পরিচালনা করেন। ১৮৮৬ সালে ড. ই. হুলটজেককে (Hultzsch) সংস্কৃত, পালি ও দ্রাবিড় ভাষার সংকেতলিপির অর্থোদ্ধার ও ব্যাখ্যার জন্য উৎকীর্ণ লিপিবিদ হিসেবে পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনটি নতুন অঞ্চলের পেশকৃত প্রতিবেদন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও দক্ষিণ ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপকার হিসেবে বার্জেসকে অতিরিক্ত দায়িত্বও প্রদান করা হয়।

১২. বার্জেস - এর ভূমিকা :- 
১৮৮৬ সালের মার্চে বার্জেস মহাপরিচালকের পদে নিয়োগ লাভ করেন। তাঁর সুপারিশের ভিত্তিতে তিনটি পৃথক অঞ্চলকে একীভূত করে একক পরিচালনার অধীনে আনা হয়, তবে এই একীভূত এলাকার কার্য থেকে অনুসন্ধান, সংরক্ষণ ও উৎকীর্ণ লিপি নামে তিনটি স্বতন্ত্রভাগে বিভক্ত করা হয়। বার্জেস পরিচালিত প্রধান প্রধান অনুসন্ধানের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ গুলো হচ্ছে ১৮৮৬ সাল থেকে ১৮৮৭ সালের মধ্যে ফুরার ও স্মিথ কর্তৃক পরিচালিত জরিপসমূহ। এই জরিপসমূহের মধ্যে রয়েছে   জৌনপুরের শারকি স্থাপত্য এবং জাফরাবাদ, শাহেথ, মাহেথ ও অযোধ্যার স্মৃতিসৌধসমূহ। এগুলো ছাড়াও স্মিথ বদাউন ললিতপুর, অর্কা, বুন্দেলখন্দে জরিপ কাজ পরিচালনা করেন। হেনরি কুসেঁ উত্তর গুজরাট এবং বিজাপুরে জরিপ কাজ পরিচালনা করেন, অন্যদিকে রি’ মহাবালিপুরম, কৃষ্ণা, নিলোর ও গোদাবরীতে জরিপ কাজ পরিচালনা করেন। 


১৩. প্রত্নবস্তুর উপর বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশের সুপারিশ :- 
লর্ড কার্জনের আগমন আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার পুনরুজ্জীবনে সহায়ক হয়। তিনি সমন্বিত প্রচেষ্টার অভাব এবং অঞ্চলসমূহের সামগ্রিক বিশৃঙ্খলা পর্যবেক্ষণ করে মহা-পরিচালকের পদ পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন। এই পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি হবেন প্রত্নতাত্ত্বিক জ্ঞানসম্পন্ন এবং প্রকৌশলীর দক্ষতাসহ একজন প্রশিক্ষিত অনুসন্ধানকারী। ‘‘তিনি দেশের সামগ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিক কাজ পরিদর্শন করবেন-তা সেটি খনন কাজেরই হোক, বা সংরক্ষণেরই হোক, বা সংস্কারই হোক বা উৎকীর্ণ লিপিরই হোক, অথবা সেটি স্মৃতিসৌধ ও প্রাচীন নিদর্শনসমূহের নিবন্ধন বা বর্ণনাই হোক না কেন। তিনি স্থানীয় জরিপ ও প্রতিবেদনের সমন্বয় ও হাল-নাগাদ করবেন। এছাড়াও তিনি তার কাজের একটি বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করবেন।’’


১৪. স্থপতি নিয়োগ :- 
স্মৃতিসৌধ সংরক্ষণ সংক্রান্ত সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে এ্যানসিয়েন্ট মনুমেন্টস প্রিজারভেশন এ্যাক্ট-১৯০৪-এর প্রবর্তন। উপরন্ত ১৮৯৯ সালে সৃষ্টি ৫টি অঞ্চলের কিছু পরিবর্তন সহ ১৯০২ সালে উত্তর ভারতে মুসলিম অট্টণালিকাসমূহের পরিদর্শনের জন্য একজন স্থপতি নিয়োগ করা হয়। 

১৫. সিন্ধু সভ্যতা ও জন মার্শাল :- 
১৯২১-২২ সালে সিন্ধুসভ্যতা আবিষ্কৃত হলে একজন ডেপুটি ডাইরেক্টর জেনারেল এবং তিনজন সহকারী সুপারিন্টিডেন্ট সহকারে একটি স্বতন্ত্র অনুসন্ধান শাখা সৃষ্টি করা হয়। এ শাখায় অনুসন্ধান ও খনন কাজের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রাদেশিক সরকারগুলোকে শুধু স্মৃতিসৌধ সংরক্ষণ ঘোষণা করার বিধিবদ্ধ ক্ষমতা দেওয়া হয়। ১৯২৮ সালে স্যার জন মার্শাল ডাইরেক্টর জেনারেলের পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং ১৯৩১ সালের ১৯ মার্চ অবসর গ্রহণ করেন।


১৬. অহিচ্ছত্র এলাকায় উৎখনন :- 
১৯৩৭ সালে রায় বাহাদুর কে. এন. দীক্ষিত দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং পুনরায় সিন্ধুতে খনন কাজ শুরু হয়। তিনি কিছু কিছু এলাকায় বৃহৎ পরিসরে খনন কাজ করারও সুপারিশ করেন; এগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বেরেলি জেলার অহিচছাত্রা (Ahichchhatra) ও একজন দক্ষ প্রত্নতত্ত্ববিদের তত্ত্বাবধানে উত্তর প্রদেশ। এরপর ১৯৪০ থেকে ১৯৪৪ সালের মধ্যে কে. এন. দীক্ষিতের নির্দেশনায় অহিচছাত্রায় খনন কাজ করা হয়।

১৭. মর্টিমার হুইলার ও উৎখননের নতুন ইতিহাস :- 
মর্টিমার হুইলার পন্ডিচেরির আরিকামেদু, কর্ণাটকের ব্রহ্মগিরি এবং তক্ষশীলা (বর্তমানে পাকিস্তানে অবস্থিত), এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে খনন কাজ পরিচালনা করেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় ইতিহাসের প্রাগৈতিহাসিক সময় সুস্পষ্টভাবে নিরূপণ ও নিশ্চিতকরণ করা, যা দীর্ঘদিন প্রত্নতত্ত্ববিদগণ এড়িয়ে গেছেন। খনন কৌশল, সংরক্ষণ এবং অন্যান্য বিষয়ে ভারতীয় ছাত্রদের প্রশিক্ষণের জন্যও এই খনন কাজ কাজে লাগানো হয়। হুইলার খনন স্তরবিন্যাস কৌশলের প্রবর্তন করেন। এছাড়া তিনি প্রতিবেদন তৈরি পদ্ধতি এবং প্রকাশনা পদ্ধতিরও উন্নতি সাধন করেন। তিনি এ্যানসিয়েন্ট ইন্ডিয়া (Ancient India ) নামে একটি নতুন ধারাবাহিক জার্নালও প্রকাশ করেন। এই জার্নালে গবেষণামূলক প্রবন্ধ ও মাঠ-জরিপের প্রতিবেদন ছাড়াও বহু স্থানের খনন কাজের বিস্তৃত প্রতিবেদন প্রকাশিত হত।

১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র সৃষ্টি হওয়ার পর উভয় দেশই তাদের প্রত্নতাত্ত্বিক কাজের জন্য নিজস্ব প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে। সেই সময় থেকে উভয় দেশই অনেক গুরুত্বপূর্ণ খনন কাজ পরিচালনা করে আসছে।  

You May Also Like

0 comments