Pages

Powered by Blogger.
1ST SEMESTER SUGGESTION 2 ND YEAR SUGGESTION 2ND SEMESTER 3RD SEMESTER BENGALI NOTES CU suggestion. EDUCATION NOTES ENGLISH COMPULSORY GBU Suggestion. HISTORY EUROPE & WORLD HISTORY NOTES POL SC NOTES SOCIOLOGY NOTES WBCS 2020

NANDAN DUTTA

A new approach for exam notes .

সমুদ্রগুপ্তের সাম্রাজ্যবাদী নীতি সম্পর্কে আলোচনা কর। 

সমুদ্রগুপ্তের উত্তরভারত ও দক্ষিণভারত অভিযানের বর্ণনা দাও।   

সমুদ্রগুপ্তের উত্তর ভারত অভিযান কীভাবে দক্ষিণ ভারত অভিযান থেকে পৃথক ছিল ? 




সমুদ্রগুপ্তের সাম্রাজ্যবাদী নীতি :- 


সমুদ্রগুপ্ত সম্পর্কিত ঐতিহাসিক উপাদান :- 
যেসকল উপাদান থেকে সমুদ্রগুপ্ত এবং তাঁর সাম্ৰাজ্যবাদী নীতি সম্পর্কে জানা যায় , সেগুলি হল - 
(i) হরিষেন কর্তৃক রচিত এলাহাবাদ প্রশস্তি। 
(ii) মধ্যপ্রদেশে প্রাপ্ত এরাণ লিপি। 
(iii) সমুদ্রগুপ্ত কর্তৃক প্রচারিত বিভিন্ন ধরণের পাঁচ প্রকার মুদ্রা। 
(iv) চৈনিক বিবরণ। 
(v) অন্যান্য মুদ্রা , বাগেলখন্ড শিলালিপি - ইত্যাদি। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

সমুদ্রগুপ্তের রাজ্যজয়ের উদ্দেশ্য :- 
মৌর্য পরবর্তী যুগে ভারতের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অনৈক্য ও বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। সমুদ্রগুপ্ত ভারতের এক বিরাট অংশ জয় করে ভারতে রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। তবে সমুদ্রগুপ্তের রাজ্যজয়ের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ঐতিহাসিক মহলে মতভেদ রয়েছে। যেমন - ডক্টর রোমিলা থাপারের মতে, ব্রাহ্মণ্য ধর্মের প্রসারের জন্যই সমুদ্রগুপ্ত সাম্ৰাজ্যবিস্তারে আত্মনিয়োগ করেন। আবার ডক্টর গয়াল বলেছেন - সমুদ্রগুপ্তের দক্ষিণ ভারত অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল দক্ষিণ ভারতের বিপুল সম্পদ লুন্ঠন করা। 
তবে , সমুদ্রগুপ্তের রাজ্যজয়ের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ঐতিহাসিক মহলে মতভেদ থাকলেও তাঁর সাম্রাজ্যবাদী নীতির ফলে যে সমগ্র ভারতে রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল - সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। 
সমুদ্রগুপ্তের সাম্রাজ্যবাদী নীতিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা যেতে পারে। যেমন - 
(A) উত্তরভারত বা আর্যাবর্ত বিজয়। 
(B) দক্ষিণ ভারত বা দাক্ষিণাত্য জয়। 
(C) আটবিক রাজ্য জয়। 
(D) সীমান্তবর্তী রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযান। 
(E) অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি। 

(A) উত্তরভারত বা আর্যাবর্ত বিজয় :- 
সমুদ্রগুপ্ত উত্তর ভারতের নয়জন রাজাকে পরাজিত করে তাদের সাম্রাজ্য নিজ রাজ্যভুক্ত করেন। এই নয়জন রাজা হলেন - 
১. অহিচ্ছত্র অধিপতি অচ্যুত। 
২. মধ্য ভারতের নাগসেন। 
৩. মথুরার নাগ বংশীয় রাজা গণপতিনাগ। 
৪. বকাটক বংশীয় রুদ্রদেব। 
৫. বুন্দেলশহরের মতিল। 
৬. বিদিশার শাসক নাগদত্ত। 
৭. গোকর্ণের শাসক চন্দ্রবর্মন। 
৮. কামরূপের রাজা বলবর্মন। 
৯. নাগবংশীয় রাজা নন্দীন। 

উত্তর ভারতের এই নয়জন রাজাকে পরাজিত করে সমুদ্রগুপ্ত তাদের রাজ্য নিজ সাম্রাজ্যভুক্ত করেন। এইভাবে সমগ্র আর্যাবর্ত তথা উত্তর উত্তর ভারতে রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

(B) দক্ষিণ ভারত বা দাক্ষিণাত্য জয় :- 
দক্ষিণ ভারতে তিনি মোট বারোটি রাজ্য জয় করেন। এই বারোটি রাজ্য হল - ১. কোশলের মহেন্দ্র , ২. মহাকান্তারের ব্যাঘ্ররাজ , ৩. কৌরলের মন্তরাজ , ৪. পিষ্ঠপুরমের মহেন্দ্রগিরি , ৫. কুস্থলপুরের ধনঞ্জয় , ৬. দেবরাষ্ট্রের কুবের , ৭. কোট্টুরের স্বামীদত্ত , ৮. পলাক্কের উগ্রসেন , ৯. এরণ্ডপল্লের দমন , ১০. অবমুক্তার নীলরাজ , ১১. কাঞ্চির বিষ্ণুগোপ , ১২. বেঙ্গির হস্তিবর্মন। 

দক্ষিণ ভারতের এই বারোজন রাজাকে পরাজিত করলেও সমুদ্রগুপ্ত তাদের রাজ্যগুলিকে নিজ সাম্রাজ্যভুক্ত করেননি। শুধুমাত্র কর গ্রহণ ও আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করেই সমুদ্রগুপ্ত তাঁর দাক্ষিণাত্য নীতিকে সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন। এই রাজনৈতিক নীতির মাধ্যমে সমুদ্রগুপ্ত তাঁর অগাধ কূটনৈতিক দূরদৃষ্টিতার পরিচয় প্রদান করেন। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে , সুদূর মগধ থেকে সমগ্র দাক্ষিণাত্যের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব নয়। এই নীতি '' গ্রহণ - মোক্ষ - পরিগ্রহ '' নামে পরিচিত।    

(C) আটবিক রাজ্য জয় :-    
সমুদ্রগুপ্তের দিগ্বিজয়ের তৃতীয় স্তর ছিল আটবিক রাজ্যসমূহের বিরুদ্ধে অভিযান। দক্ষিণ ভারতে সেনা অভিযান করতে এই আটবিক রাজ্যসমূহকে জয় করার প্রয়োজনীয়তা তিনি উপলব্ধি করেন। আটবিক রাজ্যসমূহের অরণ্যময় অঞ্চলগুলিকে জয় করতে না পারলে দক্ষিণ ভারত অভিযানে প্রতিবন্ধকতা তৈরী হত। তাই সমুদ্রগুপ্ত আটবিক রাজ্যসমূহের বিরুদ্ধে অভিযান করেন এবং আটবিক রাজ্যসমূহকে প্রায় সম্পূর্ণ গুপ্ত সাম্রাজ্যের অধীনস্ত করে আটবিক নৃপতিদের দাসত্বে পরিণত করেন। 

(D) সীমান্তবর্তী রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযান ও তাঁদের আনুগত্যলাভ :- 
সমুদ্রগুপ্তের দিগ্বিজয়ে আতঙ্কিত হয়ে পূর্ব ও পশ্চিম সীমান্তবর্তী অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি রাজ্য এবং তাদের রাজারা বিনাশর্তে সমুদ্রগুপ্তের আনুগত্য স্বীকার করেন। সমতট , কামরূপ , নেপাল , দাভক ও কর্তৃপুর - এই পাঁচটি সীমান্তবর্তী রাজ্য সমুদ্রগুপ্তের বশ্যতা স্বীকার করেন। এছাড়াও সমগ্র ভারতের প্রায় নয়টি উপজাতি শাসিত রাজ্যগুলিও সমুদ্রগুপ্তের বশ্যতা স্বীকার করেন। এই উপজাতি শাসিত রাজ্যগুলি হল - মালব , অর্জুনায়ন , মদ্রক , প্ৰাৰ্জুন , কাক - ইত্যাদি।       

(E) অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি :- উপরোক্ত রাজ্যগুলি ছাড়াও বেশ কিছু রাজ্য সমুদ্রগুপ্তের সঙ্গে অধীনতামূলক মিত্রতা নীতিতে আবদ্ধ হন। এই সকল রাজ্যগুলি হল - সিংহলরাজ মেঘবর্ণ , মালবরাজ , কাথিয়াওয়ারের শক শাসক , সুমাত্রা , মালয় ও যবদ্বীপের শাসক। এছাড়াও পশ্চিম পাঞ্জাব ও আফগানিস্তানের কুষাণ শাসক পারসিক আক্রমণে ভীত হয়ে সমুদ্রগুপ্তের সাহায্য প্রার্থনা করেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

সমুদ্রগুপ্তের সাম্রাজ্যের বিস্তার :- 
উপরোক্ত পাঁচটি দিগ্বিজয় নীতি অনুসরণ করে সমুদ্রগুপ্ত এক বিরাট সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর দ্বারা ভারত একটি অখন্ড সাম্রাজ্যে পরিণত হয় ও রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়। সমুদ্রগুপ্তের সাম্রাজ্যসীমা উত্তরে কাশ্মীর ; পশ্চিমে পশ্চিম পাঞ্জাব , রাজপুতানা , সিন্ধু ও গুজরাট ; পূর্বে ব্রহ্মপুত্র নদ , দক্ষিণে নর্মদা নদী পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছিল। এছাড়াও ছিল বহুসংখ্যক করদ রাজ্য , অনুগত রাজ্য মিত্র রাজ্য। সমুদ্রগুপ্তের সফল দিগ্বিজয় নীতির কারণে ঐতিহাসিক স্মিথ সমুদ্রগুপ্তকে ' ভারতের নেপোলিয়ন ' বলে অভিহিত করেছেন।  

সমুদ্রগুপ্তের উত্তরভারত ও দক্ষিণভারতে সাম্রাজ্যবাদী নীতির পার্থক্য :- 
সমুদ্রগুপ্ত উত্তর ভারতের নয়জন রাজাকে পরাজিত করে তাদের রাজ্য নিজ সাম্রাজ্যভুক্ত করেন ; কিন্তু দক্ষিণভারতের বারোজন রাজাকে পরাজিত করলেও তাদের রাজ্য তিনি নিজ সাম্রাজ্যভুক্ত করেন নি। শুধুমাত্র কর গ্রহণ ও আনুগত্যের শপথ নিয়েই তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন। এই ঘটনা ঐতিহাসিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা - 
১. অসামান্য কূটনৈতিক ক্ষমতার অধিকারী সমুদ্রগুপ্ত উপলব্ধি করেছিলেন সুদূর মগধ থেকে দাক্ষিণাত্যে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা সম্ভব নয়।  
২. দাক্ষিণাত্য সরাসরি দখল করলে গুপ্ত সাম্রাজ্যের আয়তন বিশাল হয়ে পড়তো। ফলে সাম্রাজ্যের দুর্বলতা অবশ্যম্ভাবী ছিল। 
৩. আর্যাবর্ত ও দাক্ষিণাত্যের জীবন - যাত্রা ও সংস্কৃতি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাই দাক্ষিণাত্য সাম্রাজ্যভুক্ত করলেও তাদের সঙ্গে সাংস্কৃতিক সামঞ্জস্যবিধান করা সম্ভব হত না। 
৪. দাক্ষিণাত্যের প্রাদেশিক শাসক ও নৃপতিরা বিদ্রোহ ঘোষণা করলে তা অযথা গুপ্ত সাম্রাজ্যের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠতো। 
৫. দাক্ষিণাত্যের নৃপতিদের নিজ রাজ্য ফিরিয়ে দিয়ে সমুদ্রগুপ্ত তাদেরকে নিজের মিত্রে পরিণত করেন। এই ঘটনা গুপ্ত সাম্রাজ্যকে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। 

এই সকল কারণে সমুদ্রগুপ্ত দক্ষিণ ভারতে '' গ্রহণ -মোক্ষ - পরিগ্রহ '' নীতি গ্রহণ করেন। এর অর্থ ছিল - শত্রু বিজয় বা গ্রহণ , শত্রুকে মুক্তি প্রদান বা মোক্ষ এবং আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করে শত্রুকে নিজ রাজ্য ফিরিয়ে দেওয়া বা পরিগ্রহ। সমুদ্রগুপ্তের দাক্ষিণাত্য নীতি তাঁর অসামান্য কূনৈতিক জ্ঞানের পরিচায়ক।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো        
 
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

সামাজিক পরিবর্তনে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক উপাদানগুলি আলোচনা কর। 

সামাজিক পরিবর্তনে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক উপাদানগুলির প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা কর। 

সামাজিক পরিবর্তনে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক উপাদান। 




সামাজিক পরিবর্তনে প্রযুক্তিগত উপাদান :- 

সামাজিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত উপাদানের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। সমাজতাত্ত্বিক অধ্যাপক কিংসলে ডেভিস ( K. Devis ) বলেছেন , বিজ্ঞান বলতে মানুষের সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের অংশবিশেষকে বোঝায়। এর দ্বারা প্রকৃতি সম্পর্কে সুসংবদ্ধ জ্ঞানের বিকাশ ঘটে এবং প্রযুক্তি হল এই বিকশিত জ্ঞানের প্রায়োগিক দিক। সমাজতত্ত্বে প্রযুক্তিবিদ্যার ধারণাকে ব্যাপক অর্থে গৃহীত হয়েছে। এখানে সমাজ জীবনে প্রযুক্তিবিদ্যার প্রত্যাশিত সাফল্যের সাথে সহায়ক ও পরিবর্তিত মানসিক গঠন বিন্যাস ও সামাজিক কাঠামোর উপর আলোকপাত করা হয়েছে। সমাজতাত্ত্বিক ফস্টার বলেন , প্রযুক্তিবিদ্যার উন্নতি বলতে  কেবলমাত্র পার্থিব ও প্রযুক্তিমূলক উন্নয়নকে বোঝায় না - এ হলো এক বিশেষ ধরনের সামাজিক , সাংস্কৃতিক ও মনস্তাত্ত্বিক পদ্ধতি। অগবার্ন বলেছেন - প্রযুক্তিবিদ্যা সমাজের পরিবেশগত পরিবর্তনের মাধ্যমে সামাজিক পরিবর্তনে সক্ষম হচ্ছে এবং আমরা এই পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে শিখছি।  

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

প্রযুক্তিবিদ্যার ফলে সামাজিক পরিবর্তন কিভাবে ঘটে সে সম্পর্কে বিধিবদ্ধ পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে - 
(ক ) প্রযুক্তিবিদ্যার প্রভাবে উৎপাদন ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তন ঘটে। উৎপাদনের গুণগত এবং পরিমাণগত মানেরও  শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। 
(খ ) শিল্পক্ষেত্রের পাশাপাশি কৃষিজ উৎপাদনও প্রযুক্তিবিদ্যার প্রভাবে প্রভাবিত হয়। যে দেশে কৃষি এবং শিল্পের সমান্তরাল অগ্রগতি ঘটে সে দেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রেও যে পরিবর্তন ঘটবে - সে কথা নিশ্চিত। 
(গ ) প্রযুক্তিবিদ্যার প্রভাবে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী সহজলভ্য হয়। প্রাত্যহিক জীবনে নানাবিধ প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানুষের কায়িক শ্রম হ্রাস পায় , সুখ- স্বাচ্ছন্দ বৃদ্ধি পায়। 
(ঘ ) বহুমুখী উৎপাদন ব্যবস্থার বৃদ্ধি ঘটলে মানুষ তাতে জড়িয়ে পড়ে এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে লাভবান হয়। 
(ঙ ) প্রযুক্তি বিদ্যার প্রসার নারী পুরুষের পারস্পরিক সম্পর্কের মধ্যেও পরিবর্তন আনে।  সাম্প্রতিক কালে নারী শিক্ষার প্রসার , নারীদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও ক্ষমতা প্রদান ইত্যাদির পাশাপাশি বৈবাহিক সম্পর্কেও নানাবিধ শিক্ষার প্রসার ও পরিবর্তন ঘটেছে। 
(চ ) প্রযুক্তিবিদ্যার প্রসার মানুষের মানসিকতার মৌলিক পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম। এর দ্বারা মানুষ বিজ্ঞানমনস্ক হয়ে উঠেছে এবং পেশাভিত্তিক মানসিকতা গড়ে তুলেছে। 
(ছ ) প্রযুক্তিবিদ্যা সামাজিক কাঠামোরও পরিবর্তন ঘটায় এবং এর ফলে সমাজজীবন প্রায় কুসংস্কারমুক্ত হয়ে উঠেছে।  শ্রেণি কাঠামোতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে।
( জ )  প্রযুক্তিবিদ্যার প্রভাব রাষ্ট্রের কার্যাবলীকেও  প্রভাবিত করছে। এর দ্বারা রাষ্ট্রের কার্যাবলী শুধু পরিবর্তন হয়েছে তা নয় বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
(ঝ ) প্রযুক্তিবিদ্যার প্রভাব পারিবারিক জীবনকেও প্রভাবিত করেছে। যৌথ পরিবারগুলির অবসান ঘটে একক পরিবারে পরিণত হচ্ছে। পারিবারিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানগুলিতেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। 
(ঞ ) প্রযুক্তিবিদ্যার ফলে সমাজে নারীদের ভূমিকার ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। নারীদের মধ্যে স্বাধীনচেতা মনোভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। নারীরা অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে। 
(ট ) প্রযুক্তির প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে একদিকে যেমন বিজ্ঞান ও বিজ্ঞান সম্মত মানসিকতার বিকাশ ঘটছে অন্যদিকে তেমন ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কুসংস্কারগুলি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাচ্ছে।  

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো  

সামাজিক পরিবর্তনে সাংস্কৃতিক উপাদান :- 

মানব সমাজের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসাবে সংস্কৃতি মানুষেরই তাত্ত্বিক সৃষ্টি। মানব সমাজের সামগ্রিক পরিচিতির ধারক হল সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতিকে সামাজিক পরিবর্তনের অপর একটি অন্যতম অন্তর্নিহিত উপাদান বলে মনে করা হয়। প্রকৃতঅর্থে সংস্কৃতি স্থিতিশীল বিষয় নয় ,  তবে এটির পরিবর্তন ধীরগতিসম্পন্ন। মানুষের চিন্তা , চেতনা , ন্যায়-নীতি বোধ , আদর্শ  মূল্যবোধের মধ্যে দিয়ে সংস্কৃতি বাস্তবায়িত হয়। এগুলির পরিবর্তন ঘটলে সংস্কৃতিতেও পরিবর্তন ঘটে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যার প্রভাবে সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের ধারা দ্রুততর হয়।  আবার সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের প্রভাবে প্রযুক্তিবিদ্যার পরিবর্তনেও প্রভাব পড়ে। 
(ক ) সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের ফলে সমাজে সার্বজনীন , বহুমুখী ও বিচিত্রধর্মী পরিবর্তন সাধিত হয়। 
(খ ) সামাজিক পরিকাঠামোগত ক্ষেত্রে সংস্কৃতি ব্যাপক পরিবর্তন সাধন করে। যেমন যৌথ পরিবার ভেঙে একক পরিবারে পরিণত হওয়ার প্রবণতা দেখা দিলে তা একই সঙ্গে সমাজের বিভিন্ন অংশের পরিবর্তন ঘটায় এবং সমাজের মৌলিক কাঠামোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নিয়ে আসে।  
(গ ) সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের ফলে মানুষের চিন্তাজগৎ , নীতি , মূল্যবোধ , আদর্শ - ইত্যাদি সবক্ষেত্রে পরিবর্তন ঘটে। এই ধরণের মানসিক পরিবর্তনের ফলে সামগ্রিকভাবে সমাজের পরিবর্তনের সূচনা ঘটে।
(ঘ ) সাংস্কৃতিক পরিবর্তন মানুষের জীবনধারা , রুচি ও অভ্যাসের পরিবর্তন ঘটায়। এর ফলে মানুষের জীবন গতিশীলতার দিকে ধাবিত হয় এবং সামাজিক বিবর্তন সাধিত হয়। 
(ঙ ) সাংস্কৃতিক পরিবর্তন সর্বদা পরিবর্তনশীল। তবে সমাজের অন্যান্য উপাদানের পরিবর্তনের তুলনায় সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ধীরগতিসম্পন্ন হয়। 
(চ ) প্রযুক্তিবিদ্যা সাংস্কৃতিক পরিবর্তনে গভীর প্রভাব বিস্তার করে। প্রযুক্তিবিদ্যার প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিকাশ দ্রুততর হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নতুন নতুন প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন সমাজে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসে। এক্ষেত্রে ইন্টারনেটের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। 
(ছ ) সাংস্কৃতিক পরিবর্তন মানুষের ধর্মীয় জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসে। সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ধর্মীয় আচার - অনুষ্ঠান , রীতিনীতি - ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় স্বাধীনতার পরবর্তী সময়কালে ভারতে ব্যাপক সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের ফলে ধর্মীয় গোঁড়ামি , রীতিনীতি , প্রথা , জাতপাত - ইত্যাদির ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। 
(জ ) সাংস্কৃতিক পরিবর্তন মানুষের সাংস্কৃতিক জীবনেও পরিবর্তন নিয়ে আসে। নাচ - গান , চিত্রকলা , সাহিত্য ও বিজ্ঞানচর্চা , নাটক , চলচ্চিত্র - ইত্যাদি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উপাদানের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। 
(ঝ ) সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ব্যক্তিজীবনেও পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। আধুনিক সংস্কৃতির দাবী মেনে মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে দ্রুতগতি সম্পন্ন। ক্রমশঃ তারা পাশ্চাত্যের অনুগামী হয়ে উঠছে। 

পরিশেষে বলা যায় , প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক উপাদান পরস্পর নিরপেক্ষ নয়। প্রযুক্তি যেমন সাংস্কৃতিক পরিবর্তনে সহায়তা করে ও তাকে দ্রুতগামী করে তোলে ; ঠিক তেমনভাবেই সংস্কৃতিও প্রযুক্তির উপর গভীর প্রভাব বিস্তার করে। সাংস্কৃতিক জগতে পরিবর্তনের তাগিদেই প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন প্রেষণা লাভ করে।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো         
 
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারগুলি আলোচনা কর। 

ভারতীয় সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা বিষয়টি আলোচনা কর। 

ভারতীয় সংবিধান স্বীকৃত ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারগুলি কী কী ? 

ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারগুলির উপর কী কী বাধা নিষেধ আরোপিত হয়েছে ? 

Right to Religion in Indian Constitution. ( In Bengali ). 




ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার :- 

সংবিধান প্রণয়নের সময় মূল সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটি যুক্ত ছিলনা। এরপর ১৯৭৬ সালে ৪২ তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটিকে প্রস্তাবনা অংশে যুক্ত করা হয়। ভারতীয় সংবিধানের ২৫ থেকে ২৮ নং ধারায় ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারগুলি সংযুক্ত করা হয়েছে। 

ভারতীয় ধর্মনিরপেক্ষতার প্রকৃতি :- 
ভারতীয় ধর্মনিরপেক্ষতার মূলকথা হল রাষ্ট্রের কোনো নিজস্ব ধর্ম নেই। অর্থাৎ কোনো প্রকার ধর্মীয় রীতিনীতি বা প্রথা রাষ্ট্রপরিচালনার নীতিকে প্রভাবিত করতে পারেনা। ভারতীয় ধর্মনিরপেক্ষতা অনুসারে সকল ব্যক্তি নিজ ইচ্ছার অনুকূলে ধর্মাচরণ করতে পারবে , প্রতিটি ধর্মই সম মর্যাদার অধিকারী এবং রাষ্ট্র কোনো বিশেষ ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা করবে না। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার (২৫ এর ১ নং ধারা ) :- ভারতীয় সংবিধানের ২৫(১) নং ধারা অনুসারে সকল ব্যক্তিই সমানভাবে বিবেকের স্বাধীনতা অনুসারে ধর্মমত গ্রহণ , ধর্মপালন ও ধর্মপ্রচারের স্বাধীনতালাভ করবে। ব্যক্তির ধর্মাচরণ সংক্রান্ত কার্যকলাপের ক্ষেত্রে রাষ্ট্র কোনোরূপ হস্তক্ষেপ করবে না এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রদানে রাষ্ট্র অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকবে। 

ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার নিয়ন্ত্রণ ( ২৫-২-ক নং ধারা ) :- তবে ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারগুলি অবাধ নয়। রাষ্ট্র যেকোনো রাজনৈতিক , অর্থনৈতিক , সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমিকতা ও অখন্ডতা রক্ষার্থে যেকোনো ধরণের ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করতে পারে এবং ধর্মীয় কার্যকলাপকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। 

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রবেশাধিকার ( ২৫-২-খ নং ধারা ) :- সামাজিক কল্যাণ , সামাজিক সংস্কারসাধন বা জনপ্রতিনিধিত্বমূলক হিন্দু ধর্ম প্রতিষ্ঠানগুলিতে সকল শ্রেণীর হিন্দুদের প্রবেশাধিকারের জন্য রাষ্ট্র আইন প্রণয়ন করতে পারে। এখানে হিন্দু বলতে হিন্দু ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে শিখ , বৌদ্ধ , জৈন - সকলকেই বোঝাবে। 

ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ও প্রতিষ্ঠানের অধিকার ( ২৬ নং ধারা ) :-  ভারতীয় সংবিধানের ২৬ নং ধারা অনুসারে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সম্প্রদায়গুলি বিভিন্ন অধিকার ভোগ করে। এই অদিকারগুলি হল - ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সম্প্রদায়গুলি - 
(i) ধর্ম বা দানের উদ্দেশ্যে সংস্থা স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারবে। 
(ii) নিজ ধর্মীয় কার্যাবলী নিজেরাই পরিচালনা করতে পারবে। 
(iii) স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির মালিক হতে পারবে। 
(iv) নির্দিষ্ট বিধিবদ্ধ আইন অনুসারে তারা সেই সম্পত্তি পরিচালনা করতে পারবে। 
(v) কোনো অজুহাতেই কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায় বা প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যক্তি বা সভ্যকে বহিস্কার বা একঘরে করতে পারবে না। 
(vi) তবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির এই অধিকার অবাধ নয়। জন নিরাপত্তা , জনস্বার্থ , সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা , রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমিকতা ও অখন্ডতা রক্ষা - ইত্যাদি ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ধর্মীয় সম্প্রদায় ও প্রতিষ্ঠানগুলির অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো    

ধর্মীয় কর আরোপ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা ( ২৭ নং ধারা ) :- ভারতীয় সংবিধানের ২৭ নং ধারায় বলা হয়েছে , কোনো ধর্ম বা ধর্মীয় সম্প্রদায় বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নিজ ধর্মের উন্নতি , প্রচার , রক্ষণাবেক্ষণ - ইত্যাদি কারণের জন্য নাগরিকদের কর প্রদানে বাধ্য করতে পারবে না বা কর ধার্য করতে পারবে না। ধর্মকর বিষয়ক অত্যাচার থেকে ভারতীয় নাগরিকদের নিষ্কৃতি দিতেই এই জাতীয় বাধা - নিষেধ আরোপিত হয়েছে। 

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্ম - শিক্ষা বিষয়ক বিধি - ব্যবস্থা ( ২৮ নং ধারা ) :-  ভারতীয় সংবিধানের ২৮ নং ধারায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মশিক্ষা বিষয়ে কিছু বাধা - নিষেধ আরোপিত হয়েছে। যেমন - 
(i) সম্পূর্ণরূপে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনোরূপ ধর্মশিক্ষা প্রদান করা যাবে না। 
(ii) সরকার স্বীকৃত বা সরকারি অনুদানে আংশিকভাবে পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্ম শিক্ষা প্রদান করা গেলেও - শিক্ষার্থীকে ধর্ম শিক্ষা গ্রহণে বাধ্য করা যাবেনা। ধর্মশিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হবে বা তাদের অভিভাবকের সম্মতিক্রমে ধর্মশিক্ষা দেওয়া যাবে। 
(iii) সম্পূর্ণরূপে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্ম শিক্ষা নিষিদ্ধ হয়নি। 
(iv) কোনো দাতা বা অছি কর্তৃক ধর্মশিক্ষার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্র কর্তৃক পরিচালিত হলেও তাতে ধর্মশিক্ষা প্রদান করা যাবে। 

উপসংহার : - 
পরিশেষে বলা যায় ভারত বহুধর্মাবলম্বী মানুষের আবাসস্থল। প্রতিটি ধর্মের আচার - আচরণ , রীতিনীতি , প্রথা , ধর্মবিশ্বাস - ভিন্ন ভিন্ন। ভারতের এই বৈসাদৃশ্যমূলক রূপটি ভারতীয় সংবিধানের প্রণেতাগণ উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। তাই ভারতকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশে পরিণত করতে তাঁরা সাংবিধানিক বিধিব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। ২৫ থেকে ২৮ নং ধারার ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারগুলি নাগরিক ও বিদেশি সকলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। 
কিন্তু বর্তমানে বেশ কিছু ঘটনা ও পরিস্থিতি ভারতীয় সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রটিকে কলুষিত করছে। মুম্বাই দাঙ্গা , গোধরা কান্ড , গুজরাট হত্যাকান্ড , বাবরি মসজিদ ধ্বংস - ইত্যাদি বিভিন্ন ঘটনা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। অতি সাম্প্রতিককালে কিছু ক্ষেত্রে উগ্র মৌলবাদী চিন্তা ভাবনার উন্মেষ ঘটেছে। 
তবে একথা ঠিক যে কিছু ঘটনা , রাজনৈতিক আদর্শ ইত্যাদির ফলে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র প্রশ্নের মুখে পড়লেও সামগ্রিকভাবে বিচার করলে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র আজও অটুট আছে। ডক্টর জাকির হোসেন , ফকরুদ্দিন আলি আহমেদ , ডক্টর এ পি জে আবদুল কালাম , জ্ঞানী জৈল সিং এঁরা সংখ্যালঘু হয়েও ভারতের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। রাজনৈতিক সংকীর্ণতার বাইরে সাধারণ জীবন যাত্রার ক্ষেত্রে ধর্মীয় বিভেদ এখনো প্রকট হয়নি। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো       

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

মূল্যায়নের বিভিন্ন স্তর বা পর্যায়। 

Different steps of Evaluation. (In Bengali).



মূল্যায়নের বিভিন্ন স্তর বা পর্যায়। 


বর্তমানে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও বিভিন্ন বিজ্ঞানসম্মত কৌশল দ্বারা পরিচালিত হয়। তাই একটি আদর্শায়িত মূল্যায়ন পরিচালনা করতে হলে কিছু বিশেষ স্তর বা পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। একজন শিক্ষক মূল্যায়নের বিভিন্ন পর্যায়গুলিকে সুসংবদ্ধভাবে পরিচালনার মাধ্যমে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সংগঠিত করেন। মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন স্তর বা ধাপ বা পর্যায়গুলি হল - 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

১. শিক্ষার উদ্দেশ্য নির্দিষ্টকরণ :- মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার সর্বপ্রথম স্তর হল শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্দিষ্টকরণ। ঠিক যে লক্ষ্য নিয়ে শিক্ষন - শিখন পরিচালিত হয় , সেইপ্রকার লক্ষ্য নিয়ে মূল্যায়ন পরিচালনার মাধ্যমে শিক্ষার্থী সম্পর্কে গুনগত ও পরিমাণগত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। মূল্যায়নের ভিত্তিতে শিক্ষার লক্ষ্য নির্ধারিত হলে - তা শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশের পক্ষে সহায়ক হয়ে ওঠে। 

২. আচরণগত উদ্দেশ্যের শ্রেণিবদ্ধকরণ :- মূল্যায়নের দ্বিতীয় স্তর হল আচরণগত উদ্দেশ্যের পরিপ্রেক্ষিতে মূল্যায়নের শ্রেণিবদ্ধকরণ। এই প্রক্রিয়া হল - জ্ঞানমূলক , অনুভূতিমূলক ও মনোসঞ্চালনামূলক। শিক্ষনের নির্দিষ্ট লক্ষ্যের পরিপ্রেক্ষিতে যে প্রকার আচরণ শিক্ষার্থীর নিকট প্রত্যাশা করা হয় সেই অনুসারে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। 

৩. শিক্ষার্থীর কার্যাবলী নির্দিষ্টকরণ :- শিক্ষন - শিখন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীর যে ধরণের আচরণ উপযুক্ত - মূল্যায়ন শিক্ষার্থীদের জন্য সেই ধরণের আচরণ নির্দিষ্ট করে। এই সুনিয়ন্ত্রিত আচরণের মধ্যে দিয়ে শিক্ষা তার অভীষ্ট লক্ষ্যে উপনীত হয়। 

৪. তথ্য সংগ্রহের বিভিন্ন কৌশল নির্বাচন :- শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীন বিকাশকে পরিমাপ করতে বিভিন্ন প্রকার কৌশল ও অভীক্ষা ব্যবহৃত হয়। নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ধরণের আচরণের পরিমাপ ও শিক্ষার্থীর বিকাশের ধারা পরিমাপ করতে কোন ধরণের কৌশল ব্যবহৃত হবে তা নির্ধারণ করে মূল্যায়ন। 

৫. শিক্ষণ পরিকল্পনা গ্রহণ :- এরপর শিক্ষার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে উপনীত হতে কোন ধরণের শিক্ষন পরিকল্পনা গ্রহণ করা যুক্তিযুক্ত তা নির্দিষ্ট করেন শিক্ষক। উপযুক্ত শিক্ষণ পরিকল্পনার মাধ্যমে মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার আদর্শায়ন ঘটানো সম্ভব। 

৬. পরিমাপের কৌশল প্রয়োগ ও তথ্য সংগ্রহ :- উপযুক্ত শিক্ষণ পরিকল্পনা গ্রহণের পর পরিমাপের কৌশলগুলিকে শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় প্রয়োগ করা হয়। পরিমাপ নির্ধারণের এই কৌশলগুলি প্রয়োগের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীর আচরণ ও বিকাশ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয় এবং এই তথ্য থেকে শিক্ষার্থীর অগ্রগতির মূল্যায়ন করা হয়। 

৭. তথ্য সংরক্ষণ :- তথ্য সংগ্রহের পর সেগুলিকে যথাযথ বিশ্লেষণের জন্য এবং ভবিষ্যতের প্রয়োজনের জন্য উপযুক্তভাবে সংরক্ষণ করা হয়। 

৮. তথ্যের বিশ্লেষণ ও তাৎপর্য নির্ণয় :- মূল্যায়নের এই স্তরটি বিশেষভাবে গুরুত্বপর্ণ। এই স্তরে একজন শিক্ষক সংগৃহীত তথ্য গুলিকে বিশ্লেষণ করেন। এই স্তরেরও নির্দিষ্ট কয়েকটি পদ্ধতি আছে এবং শিক্ষককে সতর্কতার সঙ্গে এই পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করতে হয়। এই স্তরে শিক্ষার্থীর আচরণের পরিবর্তন শিক্ষার উদ্দেশ্যের পরিপ্রেক্ষিতে কতটা কার্যকর হয়েছে - তা বিশ্লেষণ করে দেখা হয়। 

৯. উদ্দেশ্যের সংশোধন :- সমগ্র মূল্যায়ন প্রক্রিয়াটি পরিচালনার পর যদি দেখা যায় , শিক্ষণ - শিখন প্রক্রিয়া মূল্যায়নের আদর্শ স্তরে পৌঁছতে ব্যর্থ হয়েছে - তাহলে উদ্দেশ্যের সংশোধন করা হয়।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো          

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

মূল্যায়নের প্রকৃতি ও পরিধি। 

মূল্যায়নের প্রকৃতি ও পরিধি আলোচনা কর। 

Nature and Scope of Evaluation. (In Bengali)   



মূল্যায়নের প্রকৃতি ও পরিধি। 

মূল্যায়ন শব্দটির সাধারণ অর্থ হল মূল্য আরোপ করা। মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর গুণগত ও পরিমাণগত বিভিন্ন বৈশিষ্টের পরিমাপ করা যায়। শিক্ষা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর জীবনের বিভিন্ন দিকের পরিবর্তনের ফলে তার জীবনে যে নানাবিধ পরিবর্তন সাধিত হয় - তার সামগ্রিক পরিমাপের প্রক্রিয়া হল মূল্যায়ন। যেহেতু মূল্যায়ন শিক্ষার্থীর সামগ্রিক বৈশিষ্টের পরিমাপ করে তাই মূল্যায়নের পরিধি অত্যন্ত ব্যাপক। মূল্যায়ন সম্পর্কে বলা যেতে পারে - Evaluation is mental assessment with respect to some standard. বর্তমানে মূল্যায়নের পরিধি অত্যন্ত ব্যাপক এবং মূল্যায়ন শুধুমাত্র শিক্ষার্থীর বিকাশ বিচার না করে সমগ্র শিক্ষা পদ্ধতির প্রতিটি উপাদানের পরিমাপ ও বিশ্লেষণ করে থাকে। তাই মনোবিদ ওয়েসলি বলেছেন - Evaluation is the total and final estimate.   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

মূল্যায়নের প্রকৃতি :- 

(i) মূল্যায়ন শুধুমাত্র পরিমাণগত পরিমাপ করে না ; তার সঙ্গে সঙ্গে গুণগত বিষয়গুলিরও পরিমাপ করে। 
(ii) মূল্যায়ন একটি ধারাবাহিক ও নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। শিক্ষার্থীর জীবনের বিভিন্ন পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মূল্যায়ন প্রক্রিয়াও আবর্তিত হয়। 
(iii) মূল্যায়ন হল বিজ্ঞানসম্মত ও বিধিবদ্ধ পদ্ধতি। নির্দিষ্ট ও সুসংবদ্ধ পদ্ধতির মাধ্যমে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হয়। 
(iv) মূল্যায়ন একটি জটিল প্রক্রিয়া। যেহেতু শিক্ষার্থীর জীবনের সর্বাঙ্গীন বিকাশের পরিমাপের জন্য মূল্যায়ন প্রক্রিয়া ব্যবহৃত হয় , তাই এটি জটিল। 
(v) মূল্যায়ন হল পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়া। শিক্ষার্থীর জীবনের ভিন্ন ভিন্ন পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া পরিবর্তিত হয়। 
(vi) মূল্যায়নের উদ্দেশ্য ব্যাপক। কেননা মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষা প্রক্রিয়ার সামগ্রিক দিকের পরিমাপ ও বিশ্লেষণ করা হয়। 
(vii) মূল্যায়ন একটি ত্রিমুখী প্রক্রিয়া। এই তিনটি প্রধান দিক হল - শিক্ষার উদ্দেশ্য , শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা ও পরিমাপ কৌশল। 
(viii) প্রতিটি শিক্ষার্থীর চাহিদা ভিন্ন ভিন্ন। এই ভিন্ন ভিন্ন চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। 
(ix) মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শিক্ষার্থীর শুধুমাত্র বিষয়কেন্দ্রিক বিকাশের দিকে গুরুত্ব না দিয়ে তার সামগ্রিক বিকাশ পরিমাপের উপর গুরুত্ব আরোপ করে। 
(x) বিভিন্ন স্তর , বিভিন্ন ধরণের পরীক্ষা ও অভীক্ষা - ইত্যাদি বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

মূল্যায়নের পরিধি :- 


১. শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যপূরণ :- মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার মূল লক্ষ্যগুলি বাস্তবায়নের দিকে নজর দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীর সামগ্রিক বিকাশের পরিমাপ করে শিক্ষা প্রক্রিয়ার বিকাশকে ত্বরান্বিত করে। 

২. শিক্ষন শিখনে ব্যবহৃত পদ্ধতি , কৌশল ও উপকরণের যথার্থতা সম্পর্কে ধারণা প্রদান :- মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শিক্ষন - শিখনে ব্যবহৃত পদ্ধতি , কৌশল ও উপকরণের যথার্থতা - ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে। এর ফলে শিক্ষন শিখনের ভ্রান্তিগুলি দূর করে আদর্শ কৌশল গ্রহণ করা সম্ভব হয়। 

৩. পাঠক্রম সংক্রান্ত বিষয় :- শিক্ষার সামগ্রিক লক্ষ্য পূরণ করতে পাঠক্রম সম্পর্কে ধারণা অর্জন করা আবশ্যিক। মূল্যায়ন প্রক্রিয়া পাঠক্রমের যথার্থতা , উপযোগিতা ও আদর্শ পাঠক্রম সম্পর্কে আলোচনা করে। 

৪. শিক্ষার পরিবেশ সংক্রান্ত আলোচনা :- মূল্যায়ন আদর্শ শিক্ষার পরিবেশ সম্পর্কেও আলোচনা করে। আদর্শ শিক্ষার পরিবেশ গঠনের মাধ্যমে শিক্ষা প্রক্রিয়া যথার্থভাবে পরিচালনা করা সম্ভব। 

৫. শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীন বিকাশ :- মূল্যায়ন শুধুমাত্র শিক্ষার্থীর বিষয়কেন্দ্রিক বিকাশের কথা আলোচনা করে না ; এর পরিবর্তে মূল্যায়ন শিক্ষার্থীর জীবনের সর্বাঙ্গীন বিকাশ ও তার বৈশিষ্টগুলির পরিমাপ করে। 

৬. নির্দেশনা সংক্রান্ত আলোচনা :- মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা , ক্ষমতা ও আগ্রহের পরিমাপ করা যায়। ফলে শিক্ষকের পক্ষে নির্দেশনা পরিচালনা সহজ হয়ে পড়ে। 

৭. শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ জীবন সংক্রান্ত আলোচনা :- মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শিক্ষার্থীর আগ্রহ ও দক্ষতার পরিমাপ করে তার ভবিষ্যৎ পথনির্দেশ করে। ফলে শিক্ষার্থী উপযুক্ত নির্দেশনার মাধ্যমে জীবনের লক্ষ্যে উপনীত হতে পারে। 

৮. শিক্ষার্থীর বৃত্তিগত ও পেশাগত নির্দেশনা :- শিক্ষার্থীর বৃত্তিগত ও পেশাগত নির্দেশনা প্রদান করা মূল্যায়নের একটি প্রধান কাজ। বিভিন্ন অভীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া খুব সহজেই ব্যক্তির পেশাগত আগ্রহের দিকটির প্রতি নির্দেশ করতে পারে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৯. শিক্ষক সংক্রান্ত আলোচনা :- মূল্যায়নের সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করে শিক্ষকের দক্ষতা ও যোগ্যতার উপর। তাই মূল্যায়ন প্রক্রিয়া আদর্শ শিক্ষকের শিক্ষাগত ও ব্যক্তিগত দক্ষতা ও যোগ্যতা সম্পর্কে আলোচনা করে। 

১০. শিক্ষা ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত আলোচনা :- মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শিক্ষা ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করে। শিক্ষা ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন উপাদান , শিক্ষন - শিখনে তাদের ভূমিকা , যথার্থ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি - ইত্যাদি সকল বিষয়েই মূল্যায়ন আলোচনা করে। 

১১. পরিমাপ কৌশল সংক্রান্ত আলোচনা :- শিক্ষার্থীর যথার্থ মূল্যায়ন করতে বিভিন্ন ধরণের পরিমাপ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এই সকল পরিমাপ পদ্ধতি , তাদের আদর্শ কৌশলগত বিষয় , উপযুক্ত পরিমাপ পদ্ধতি - ইত্যাদি বিষয়ে মূল্যায়ন আলোচনা করে। 

১২. গৃহীত তথ্যের তাৎপর্য বিশ্লেষণ :- বিভিন্ন পদ্ধতিতে মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যে সকল তথ্য সংগ্রহ করা হয় - মূল্যায়ন সেই সকল তথ্যগুলিকে বিচার বিশ্লেষণ করে উপযুক্ত পরিমাপের কাজে ব্যবহার করে। 

১৩. শিক্ষর্থীর দৈহিক , মানসিক ও সামাজিক অবস্থান নির্ণয় :- মূল্যায়ন শিক্ষার্থীর দৈহিক , মানসিক ও সামাজিক অবস্থান নির্ণয় করে তার সকল বৈশিষ্ট গুলির উপযুক্ত পরিমাপ করে এবং আদর্শ অভিযোজনে সাহায্য করে। 

১৪. শৃঙ্খলার আদর্শায়ন :- শিক্ষা ও শিক্ষন প্রক্রিয়া পরিচালনার ক্ষেত্রে শৃঙ্খলার উপযুক্ত মানদন্ড বিচার , তার প্রয়োগ পদ্ধতি - ইত্যাদি বিষয়ে মূল্যায়ন আলোচনা করে। 

১৫. মূল্যায়নের অন্তর্গত বিষয় :- মূল্যায়নের আলোচনার অন্তর্গত প্রধান বিষয়গুলি হল - শিক্ষার্থীর পারদর্শিতা , শিক্ষণের মূল্যায়ন , পাঠক্রমের মূল্যায়ন ও শিক্ষালয়ের মূল্যায়ন।

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো                   

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

মূল্যায়ন ও পরিমাপের পার্থক্য। 

পরিমাপ ও মূল্যায়নের পার্থক্য। 

মূল্যায়ন ও পরিমাপের তুলনামূলক আলোচনা। 

মূল্যায়ন ও পরিমাপের বৈসাদৃশ্য। 

Difference between Evaluation and Measurement. (In Bengali).




মূল্যায়ন ও পরিমাপের পার্থক্য। 

মূল্যায়ন ও পরিমাপের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বৈসাদৃশ্য বর্তমান। মূল্যায়ন ও পরিমাপের পার্থক্যগুলি হল - 

১. পরিধিগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়নের পরিধি ব্যাপক। মূল্যায়নের মাধ্যমে ব্যক্তির সামগ্রিক দক্ষতা , বৈশিষ্ট , আগ্রহ , মনোযোগ , প্রতিভা - ইত্যাদি বিভিন্ন দিকের পরিমাপ করা যায়। কিন্তু পরিমাপের পরিধি মূল্যায়নের তুলনায় অনেকটা সংকীর্ণ। পরিমাপের মাধ্যমে ব্যক্তির কোনো বিশেষ বৈশিষ্ট , ক্ষমতা বা দক্ষতার পরিমাপ করা হয়। ভিন্ন ভিন্ন ক্ষমতা যাঁচাইয়ের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পরিমাপের প্রয়োগ করা হয়। 

২. বৈশিষ্টগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়নের বৈশিষ্টগুলি বহুবিধ। মূল্যায়নের দ্বারা ব্যক্তির শারীরিক , মানসিক , সামাজিক , নৈতিক , আচরণগত , প্রক্ষোভিক সকল প্রকার বৈশিষ্টের পরিমাপ করা যায়। কিন্তু পরিমাপের দ্বারা ব্যক্তির কোনো একটি বিষয়ে অর্জিত জ্ঞান বা একটি বৈশিষ্টের পরিমাপ করা যায়। তাই পরিমাপের সাহায্যে বৈশিষ্টগত পরিমাপের সুযোগ তুলনামূলকভাবে কম। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. প্রকৃতিগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তির ব্যক্তিসত্তার সামগ্রিক পরিমাপ করা যায়। ব্যক্তিসত্তার পরিবর্তন ও ব্যক্তিত্বের পরিমাপের ক্ষেত্রে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া অপরিহার্য। কিন্তু পরিমাপের প্রকৃতি হল আংশিক। পরিমাপের সাহায্যে ব্যক্তির ব্যক্তিসত্তার বৈশিষ্টগুলিকে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে যাঁচাই করা যায়। 

৪. প্রক্রিয়াগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যয়ন হল একটি অবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। শিক্ষার্থীর ধারাবাহিক ও নিরবচ্ছিন্ন বিকাশের পরিমাপ করতে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া যথেষ্ট কার্যকর। কিন্তু পরিমাপ একটি বিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। পরিমাপের দ্বারা শিক্ষার্থীর অধীত জ্ঞানের বা মানসিক ক্ষমতা পরিমাপের জন্য বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বিশেষ বিশেষ অভীক্ষা প্রস্তুত করা হয়। 

৫. সময়গত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়নের পরিধি ও প্রক্রিয়া যেহেতু ব্যাপক , তাই মূল্যায়ন প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য অধিক সময়ের প্রয়োজন। ব্যক্তির সকল বৈশিষ্টের মূল্যায়নের জন্য যথেষ্ট সময় প্রয়োজন হয়। কিন্তু পরিমাপের ক্ষেত্রে সময় তুলনামূলকভাবে কম লাগে। যেহেতু পরিমাপ প্রক্রিয়া ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ও বিচ্ছিন্নভাবে সম্পাদিত হয় - তাই এক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত কম সময়ের প্রয়োজন হয়। 

৬. পরিমাপগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়নের মাধ্যমে ব্যক্তির বৌদ্ধিক , দৈহিক , প্রাক্ষোভিক , নান্দনিক , মানসিক - ইত্যাদি সকল দিকের পরিমাপ করা যায়। কিন্তু পরিমাপের সাহায্যে কেবলমাত্র ব্যক্তির বৌদ্ধিক ও দৈহিক বিকাশের পরিমাপ করা যায়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. কার্যগত পার্থক্য :- মূল্যায়ন প্রক্রিয়া হল পরিমাণগত ও গুণগত। কিন্তু পরিমাপ প্রক্রিয়া হল শুধুমাত্র পরিমাণগত। 

৮. লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগত পার্থক্য :- মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সর্বদা শিক্ষার উদ্দেশ্যভিত্তিক হয়ে থাকে। মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার মূল লক্ষ্যগুলি চরিতার্থ করা যায়। অন্যদিকে পরিমাপের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সীমিত ক্ষেত্রভিত্তিক। মূল্যায়নের লক্ষ্য হল বহুমুখী ; কিন্তু পরিমাপের লক্ষ্য হল একমুখী। 

৯. কাল - ব্যাপ্তিগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সতত পরিবর্তনশীল বৃদ্ধি ও বিকাশকে অনুশীলন ও পরিমাপ করতে সাহায্য করে। কিন্তু পরিমাপ হল একটি সাময়িক প্রক্রিয়া। একটি বিশেষ সময়ে শিক্ষার্থীর কোনো একটি বিষয়ে জ্ঞানের দিক থেকে কতটা অগ্রগতি হয়েছে - তা পরিমাপের মাধ্যমে জানা যায়। 

১০. সিদ্ধান্তগ্রহণ ও চূড়ান্ত অবস্থা নির্ধারণের ক্ষেত্রে পার্থক্য :- কোনো বিষয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তগ্রহণ বা চূড়ান্ত অবস্থা নির্ধারণকারী কর্মসম্পাদনা হল মূল্যায়ন। অন্যদিকে পরিমাপের সাহায্যে কোনো নির্দিষ্ট অংশের জ্ঞান বা বর্তমান মানসিক ক্ষমতা ও দক্ষতা - ইত্যাদির নির্ণায়ক।       

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো        
 
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

মূল্যায়ন ও পরীক্ষার পার্থক্য। 

পরীক্ষা ও মূল্যায়নের পার্থক্য। 

Difference between evaluation and examination. (In Bengali).




মূল্যায়ন ও পরীক্ষার পার্থক্য :- 

পরীক্ষা ও মূল্যায়নকে বর্তমানে একই প্রত্যয়যুক্ত বলে মনে করা হলেও উভয়ের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। মূল্যায়ন ও পরীক্ষার পার্থক্যগুলি হল -   

১. উদ্দেশ্যগত পার্থক্য :- মূল্যায়নের উদ্দেশ্য ব্যাপক ও বহুমুখী। কিন্তু পরীক্ষার উদ্দেশ্য সংকীর্ণ ও একমুখী। কেননা , মূল্যায়নের মাধ্যমে ব্যক্তির বিভিন্ন অংশের পরিমাপ করা হয় ; কিন্তু পরীক্ষার মাধ্যমে পরিমাপ শুধুমাত্র নির্দিষ্ট বিষয়কেন্দ্রিক। 

২. প্রক্রিয়াগত পার্থক্য :- মূল্যায়ন একটি সামগ্রিক প্রক্রিয়া। মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সামগ্রিকতার নীতি অনুসরণ করা হয়। কিন্তু পরীক্ষা হল মূল্যায়নের একটি অংশমাত্র। তাই পরীক্ষা একটি আংশিক প্রক্রিয়া।   

৩. পরিমাপের পরিধি সংক্রান্ত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়নের পরিধি ব্যাপক। মূল্যায়নের মাধ্যমে ব্যক্তির সর্বাঙ্গীন বিকাশ পরিমাপ করা হয়। কিন্তু পরীক্ষার পরিধি তুলনামূলকভাবে সংক্ষিপ্ত। পরীক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তির শুধুমাত্র আংশিকভাবে বিষয়জ্ঞান পরিমাপ করা হয়। 

৪. শিক্ষার্থীর প্রাথমিক অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব প্রদান সংক্রান্ত পার্থক্য :- মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর প্রাথমিক অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব প্রদান করা হয়। যেহেতু মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সামগ্রিক , তাই এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর সামগ্রিক অভিজ্ঞতাগুলিকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু পরীক্ষা যেহেতু নির্দিষ্ট বিষয়কেন্দ্রিক , তাই পরীক্ষার ক্ষেত্রে ব্যক্তির প্রাথমিক অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়না। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৫. পরিমাণগত ও গুণগত বিচারের ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীর পরিমাণগত ও গুণগত উভয় দিকেরই বিচার করা হয়। কিন্তু পরীক্ষা প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র শিক্ষার্থীর পরিমাণগত জ্ঞানকে বিচার করা হয়। 

৬. ব্যক্তিত্বের পরিমাপের ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় ব্যক্তির পুঁথিগত জ্ঞান ছাড়াও ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন অংশের পরিমাপ করা হয়। কিন্তু পরীক্ষার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র পুঁথিগত জ্ঞান পরিমাপ করা হয়। পরীক্ষা প্রক্রিয়ায় ব্যক্তিত্ব পরিমাপের বিষয়টি ততটা গুরুত্ব পায়না। 

৭. কৌশলগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়ন একটি বা কয়েকটি কৌশলের সমষ্টি নয় , বিবিধ কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হয়। অন্যদিকে পরীক্ষা হল মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় সাহায্যকারী একটি কৌশলমাত্র। 

৮. কাঠিন্যের ক্ষেত্রে পার্থক্য :- যেহেতু মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় বিবিধ কৌশল অবলম্বন করা হয় এবং ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের সামগ্রিক বিচার করা হয় , তাই মূল্যায়ন একটি জটিল প্রক্রিয়া। কিন্তু , পরীক্ষা যেহেতু নির্দিষ্ট বিষয়কেন্দ্রিক ও একমুখী , তাই পরীক্ষা একটি সরল প্রক্রিয়া। 

৯. অভীক্ষার প্রয়োগ সংক্রান্ত পার্থক্য :- মূল্যায়ন একটি জটিল প্রক্রিয়া এবং এতে বিভিন্ন ধরণের অভীক্ষার প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু পরীক্ষার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র একক পারদর্শিতার অভীক্ষা ব্যবহার করা হয়। 

১০. তথ্যগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়নে শিক্ষার্থীর পৃথক বিচ্ছিন্ন তথ্যের কোনো গুরুত্ব নেই। এখানে ব্যক্তির সামগ্রিক তথ্যের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু পরীক্ষার ক্ষেত্রে পাঠ্যবিষয়কেন্দ্রিক একক তথ্য প্রাধান্যলাভ করে। 

১১. ধারাবাহিকতার ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়ন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এতে শিক্ষার্থীর ধারাবাহিকভাবে পরিমাপ করা হয়। কিন্তু পরীক্ষা একটি তাৎক্ষণিক প্রক্রিয়া এবং এর মাধ্যমে শুধুমাত্র শিক্ষার্থীর তাৎক্ষণিক বিষয়কেন্দ্রিক জ্ঞান পরিমাপ করা হয়। 

১২. সময়ের ক্ষেত্রে পার্থক্য :- যেহেতু মূল্যায়ন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া এবং এতে শিক্ষার্থীর সামগ্রিক পরিমাপ করা হয় - তাই মূল্যায়ন প্রক্রিয়াটি সময় সাপেক্ষ। কিন্তু , পরীক্ষা যেহেতু তাৎক্ষণিক , তাই এতে খুব কম সময় লাগে। 

১৩. জ্ঞানের পরিমাপগত পার্থক্য :- মূল্যায়ন প্রক্রিয়াটির দ্বারা শিক্ষার্থীর বিভিন্ন জ্ঞান ও সামর্থ্যের পরিমাপ করা সম্ভব। কিন্তু পরীক্ষার মাধ্যমে শুধুমাত্র একমুখী , বিষয়কেন্দ্রিক ও তাৎক্ষণিক জ্ঞানের পরিমাপ করা যায়। 

১৪. অন্যান্য বিষয়ে পরিমাপের ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্ব ও দক্ষতা ছাড়াও শিক্ষক , শিক্ষা প্রতিষ্ঠান , পাঠক্রম , শিক্ষন পদ্ধতি - ইত্যাদি সকল কিছুর পরিমাপ করা যায়। কিন্তু পরীক্ষার মাধ্যমে শুধুমাত্র শিক্ষার্থীর মূল্য বিচার করা হয়।  

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো            

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

নির্দেশনা ও পাঠদানের পার্থক্য। 

নির্দেশনা ও শিক্ষনের পার্থক্য।   

Difference between Guidance and Teaching. (In Bengali). 




নির্দেশনা ও পাঠদানের পার্থক্য / নির্দেশনা ও শিক্ষনের পার্থক্য :- 


১. প্রাচীনত্বের ক্ষেত্রে পার্থক্য :- পাঠদান বা শিক্ষন বিষয়টি সুপ্রাচীন প্রাচীন প্রায় সমস্ত সভ্যতায় পাঠদান প্রক্রিয়া প্রচলিত ছিল। কিন্তু নির্দেশনা বিষয়টি যথেষ্ট নবীন। বিংশ শতকের একেবারে শুরুর দিক থেকে বিজ্ঞানসম্মত ও পরিকল্পিতভাবে নির্দেশনা প্রক্রিয়া চালু হয়। 

২. পরিসরের ক্ষেত্রে পার্থক্য :- নির্দেশনার পরিধি পাঠদান বা শিক্ষনের তুলনায় অনেক বেশি ব্যাপক। যেকোনো বিষয়ে নির্দেশনা প্রক্রিয়া পরিচালিত হতে পারে। কিন্তু পাঠদান বা শিক্ষন প্রক্রিয়া নির্দিষ্ট সমস্যা বা বিষয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। 

৩. ফলাফলের ক্ষেত্রে পার্থক্য :- নির্দেশনা প্রক্রিয়া কতটা কার্যকর হল সে বিষয়ে জানার জন্য নির্দিষ্ট কোনো পদ্ধতি বা একক নেই। শুধুমাত্র Follow up পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে তা অনুমান করা যেতে পারে মাত্র। কিন্তু পাঠদান বা শিক্ষন প্রক্রিয়ার ফলাফল বিচারের জন্য বিভিন্ন মূল্যায়ন , পরীক্ষা - ইত্যাদি পদ্ধতি রয়েছে - যার দ্বারা স্পষ্টরূপে পাঠদান বা শিক্ষন প্রক্রিয়ার ফলাফল সম্পর্কে জানা যায়। 

৪. বাধ্যবাধকতার ক্ষেত্রে পার্থক্য :- নির্দেশনা প্রক্রিয়া পরিচালনার সময় কখনই ব্যক্তির উপর নির্দেশনা চাপিয়ে দেওয়া হয়না। নির্দেশনা গ্রহণ করা বা না করা ব্যক্তির ইচ্ছাধীন। কিন্তু পাঠদান বা শিক্ষন প্রক্রিয়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাধ্যতামূলক এবং এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর ইচ্ছার কোনো স্বাধীনতা থাকে না। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৫. কঠোরতার ক্ষেত্রে পার্থক্য :- নির্দেশনা প্রক্রিয়া পরিচালনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নমনীয়তা অবলম্বন করা হয়। ব্যক্তিকে নিজের বক্তব্য উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে এবং নির্দেশনা প্রদানের সময় ব্যক্তির স্বাধীনতা , আগ্রহ , দক্ষতা - ইত্যাদি বিষয়গুলির উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু পাঠদান প্রক্রিয়ায় তুলনামূলকভাবে কঠোরতা অবলম্বন করা হয়। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে অনুশাসনের মধ্যে দিয়ে চলতে হয়। 

৬. ব্যক্তির সংখ্যার ক্ষেত্রে পার্থক্য :- নির্দেশনা প্রক্রিয়া একক বা দলগত উভয় সংখ্যক সদস্য নিয়েই পরিচালিত হতে পারে। কিন্তু প্রথাগত পাঠদান বা শিক্ষন প্রক্রিয়া সাধারণতঃ দলগতভাবে পরিচালনা করা হয়। 

৭. পরিচালনার ক্ষেত্রে পার্থক্য :- নির্দেশনা প্রক্রিয়া পরিচালনা করতে পারেন যেকোনো অভিজ্ঞ ও দক্ষ ব্যক্তি। কিন্তু পাঠদান বা শিক্ষন প্রক্রিয়া সাধারণতঃ শিক্ষক কর্তৃক সম্পন্ন হয়। 

৮. বিকাশগত পার্থক্য :- নির্দেশনা প্রক্রিয়া ব্যক্তির সামগ্রিক চিন্তা ভাবনা , দক্ষতা ও ব্যক্তিত্ব - ইত্যাদির উপর প্রভাব বিস্তার করে। এক্ষেত্রে ব্যক্তির অভিযোজনমূলক বিকাশ ঘটে। কিন্তু পাঠদান বা শিক্ষনের ক্ষেত্রে ব্যক্তি প্রথাগত জ্ঞান লাভ করে তথ্য সমৃদ্ধ হয় ; তাই এক্ষেত্রে ব্যক্তির বৌদ্ধিক বিকাশ সাধিত হয়। 

৯. প্রক্রিয়াগত পার্থক্য :- নির্দেশনা ও পাঠদান বা শিক্ষন - উভয় প্রক্রিয়াই নির্দিষ্ট স্তর ও কর্মসূচির দ্বারা পরিচালিত হয়। তবে উভয় প্রক্রিয়ার পরিচালনার স্তর ও কর্মসূচি ভিন্ন ভিন্ন। নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় সমস্যা অনুধাবন , ব্যক্তির ক্ষমতা ও দক্ষতা বিচার , নির্দেশনা প্রদান , Follow up - ইত্যাদি পর্যায়গুলিকে অনুসরণ করা হয়। অপরপক্ষে পাঠদান বা শিক্ষন প্রক্রিয়ায় বিষয়বস্তু উপস্থাপন , অনুশীলন , মূল্যায়ন - ইত্যাদি পর্যায়গুলিকে অনুসরণ করা হয়। 

১০. তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে পার্থক্য :- নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় একাধিক বিষয়ের উপর তথ্য সরবরাহ করা হয়। যেমন - শিক্ষামূলক তথ্য , বৃত্তিমূলক তথ্য , স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য , বার্ধক্য সংক্রান্ত তথ্য , সামাজিকীকরণের তথ্য , কু - অভ্যাস এবং অসামাজিক কার্যকলাপ দূরীকরণের তথ্য - ইত্যাদি। কিন্তু পাঠদান বা শিক্ষন প্রক্রিয়ায় কেবলমাত্র পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যবিষয়ের ওপর তথ্য সরবরাহ করা হয়। 

১১. সময়সীমার ক্ষেত্রে পার্থক্য :- নির্দেশনা প্রক্রিয়ার কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে না। ব্যক্তিজীবনের বিভিন্ন স্তরে নির্দেশনার প্রয়োজন হয়। তাই নির্দেশনা প্রক্রিয়া ব্যক্তির জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পরিচালিত হয়। কিন্তু পাঠদান বা শিক্ষন প্রক্রিয়ার একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে। একটি নির্দিষ্ট সময়ে পাঠদান শুরু করে একটি নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করা হয়।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো            

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

নির্দেশনার প্রধান প্রধান নীতিগুলি সম্পর্কে আলোচনা কর।

নির্দেশনার মৌলিক নীতিসমূহ।  

নির্দেশনায় অনুসৃত নীতিগুলি কী কী ? 

Principles of Guidance. (In Bengali).  



নির্দেশনার প্রধান প্রধান নীতিসমূহ :- 


ব্যক্তিজীবনে প্রতিটি বয়স স্তরে নির্দেশনার প্রয়োজন। নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তি সমস্যার স্বরূপ উপলব্ধি করতে ও সমস্যার সমাধান করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। বিভিন্ন ধরণের নির্দেশনা কয়েকটি মৌলিক নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। নির্দেশনার প্রধান ও মৌলিক নীতিগুলি হল - 

১. নিরপেক্ষতার নীতি :- সমস্যার প্রতিবিধান ও প্রতিরোধ করতে নির্দেশনা প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। এক্ষেত্রে নির্দেশনা প্রদানে নিযুক্ত ব্যক্তি তাঁর ব্যক্তিগত চিন্তা - ভাবনা , আদর্শ - ইত্যাদির পরিবর্তে ব্যক্তির সমস্যা ও তার সমাধানের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ নির্দেশনা প্রদান করবেন - এমনটা হওয়াই কাম্য। 

২. সামগ্রিকতার নীতি :- নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় ব্যক্তির আংশিক সত্তা ও সমস্যার পরিবর্তে সামগ্রিক সত্তা ও সমস্যার উপর জোর দেওয়া হয়। সামগ্রিকভাবে ব্যক্তিকে এবং তার সমস্যাকে উপলব্ধি করে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। 

৩. ব্যক্তির চাহিদা পরিতৃপ্তির নীতি :- নির্দেশনা প্রক্রিয়া সামগ্রিকভাবে পরিচালিত হয় ব্যক্তির চাহিদাকে কেন্দ্র করে। নির্দেশনা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তির সমস্যা সমাধান বা তার ভিন্ন ভিন্ন চাহিদার পরিতৃপ্তিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। 

৪. পার্থক্যের নীতি :- মানুষের বয়সসীমার বিভিন্ন স্তরে সমস্যা ও চাহিদার ক্ষেত্রে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। ব্যক্তির শৈশব , কৈশোর , যৌবন ও বার্ধক্য - প্রতিটি স্তরে সমস্যা ও চাহিদার পার্থক্য রয়েছে। নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় ব্যক্তির এই বিভিন্ন স্তরের চাহিদার পার্থক্যগুলিকে গুরুত্ব সহকারে বিচার করা হয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৫. স্বাধীনতার নীতি :- ব্যক্তি যদি তার সমস্যাকে যথার্থভাবে উপস্থাপন না করতে পারে - তাহলে নির্দেশনা প্রক্রিয়ার মৌলিক উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে। তাই ব্যক্তিকে তার সমস্যা নির্দ্বিধায় উপস্থাপন করার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ রচনা করা হয় এবং ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ আলোচনার ক্ষেত্রে স্বাধীনতার নীতি গৃহীত হয়। 

৬. অপসংগতি দূরীকরের নীতি :- সামাজিক , অর্থনৈতিক , রাজনৈতিক - ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে ব্যক্তি বিভিন্নরকম অপসঙ্গতিমূলক আচরণে অভ্যস্থ হয়ে পড়েন। নির্দেশনার প্রধান নীতি হল ব্যক্তির মধ্যে থাকা সেই অপসঙ্গতিমূলক আচরণগুলিকে দূর করা। 

৭. ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের নীতি :- প্রতিটি ব্যক্তির সমস্যা ও চাহিদা ভিন্ন ভিন্ন। নির্দেশনা প্রক্রিয়া পরিচালনার সময় ব্যক্তির চাহিদা , ক্ষমতা , প্রবণতা , আগ্রহ - ইত্যাদি বিষয়গুলির উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। 

৮. নিরবচ্ছিন্নতার নীতি :- নির্দেশনা একটি নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। ব্যক্তি জীবনের প্রতিটি স্তরে নির্দেশনা প্রক্রিয়া প্রয়োজন হয়। তাই ব্যক্তির জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নির্দেশনা প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হয়। 

৯. পারস্পরিক ক্রিয়া - প্রতিক্রিয়ার নীতি :- নির্দেশনা প্রক্রিয়া কখনই একমুখী নয়। নির্দেশনা পরিচালনার সময় ব্যক্তির ইচ্ছা - অনিচ্ছা , আগ্রহ , সামর্থ - ইত্যাদি বিষয়গুলির উপর পরিচালক গুরুত্ব আরোপ করেন। তারপর পারস্পরিক আলোচনা ও পরামর্শের মাধ্যমেই নির্দেশনা প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। 

১০. সর্বজনীনতার নীতি :- শুধুমাত্র সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তির প্রতি নির্দেশনা পরিচালিত হয়না ; নির্দেশনার প্রধান নীতি হল প্রতিকার ও প্রতিরোধ , তাই সকল ব্যক্তির উপর নির্দেশনা পরিচালনার নীতি গৃহীত হয় যা সকলের জীবনে এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

১১. বিদ্যালয় ও পরিবার কেন্দ্রিক নীতি :- নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় শিক্ষক ও অভিভাবকগণের বিশেষ ভূমিকা থাকে। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ও সমস্যার সমাধান ও ব্যক্তিত্ব গঠনের ক্ষেত্রে উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। কোনো বিশেষ সমস্যার সমাধানে যদি শিক্ষক ও অভিভাবক ব্যর্থ হন - তখন সেই সমস্যাটিকে উপযুক্ত দক্ষ ব্যক্তির দৃষ্টিগোচর করা হয়। 

১২. নমনীয়তার নীতি :- ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের প্রতি নির্দেশনা প্রক্রিয়া পরিচালনার সময় প্রয়োজন অনুসারে নমনীয়তার নীতি গৃহীত হয়। 

১৩. মর্যাদার নীতি :- নির্দেশনা পরিচালনার সময় পরিচালক ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বা তার সমস্যাকে যথেষ্ট মর্যাদার সঙ্গে গ্রহণ করেন। এর ফলে ব্যক্তি নির্দেশনাগুলির প্রতিও শ্রদ্ধাশীল হয়ে ওঠে। 

১৪. সহযোগিতার নীতি :- নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় নির্দেশক নির্দেশনা গ্রহণকারীর সহায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ব্যক্তির সমস্যাকে উপলব্ধি করে তার জন্য উপযুক্ত সমাধানসূত্রের নির্দেশ প্রদান করতে পারেন। এইভাবে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে নির্দেশনা পরিচালিত হয়।       

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো        


Share
Tweet
Pin
Share
No comments

নির্দেশনার বৈশিষ্টগুলি আলোচনা কর। 

নির্দেশনার প্রধান প্রধান বৈশিষ্টগুলি উল্লেখ কর। 

Different features of Guidance . ( In Bengali ) . 

Characteristics of guidance . ( In Bengali ) .  




নির্দেশনার বৈশিষ্ট :- 


নির্দেশনার প্রধান প্রধান বৈশিষ্টগুলি হল - 
 
১. নির্দেশনা সকল বয়সে সম্ভব :- নির্দেশনার কোনো নির্দিষ্ট বয়স নেই। যেকোনো বয়সে নির্দেশনা সম্ভব। একটি শিশুর জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বয়সের সমস্ত ধরণের স্তরে নির্দেশনা সম্ভব। তাই নির্দেশনা হল একটি নিরবচ্ছিন্ন এবং ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। 

২. বয়সসীমার ভিন্ন ভিন্ন স্তরে নির্দেশনার ভিন্নতা :- মানুষের জীবনের ভিন্ন ভিন্ন স্তরে নির্দেশনার ভিন্নতা দেখা যায়। সকল বয়সের নির্দেশনা এক ধরণের হয়না। যেমন একটি শিশুর ক্ষেত্রে যে ধরণের নির্দেশনা প্রয়োজন ; একটি কিশোরের ক্ষেত্রে সেরূপ নির্দেশনা কাম্য নয়। আবার একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের জীবনে জীবিকা ,বৃত্তি - ইত্যাদি বিশেষ বিষয়ে নির্দেশনা প্রয়োজন ; কিন্তু একটি শিশুর ক্ষেত্রে সেধরণের নির্দেশনার কোনো প্রয়োজন নেই। 

৩. সকলের জন্য নির্দেশনা প্রয়োজন :- সকল বয়সের সকল মানুষের জন্য নির্দেশনা প্রয়োজন। শুধুমাত্র সমস্যায় থাকা মানুষের জন্য নির্দশনা প্রয়োজন - এমনটা ভাবা ঠিক নয়। সমস্যার প্রতিবিধানের ও প্রতিরোধ উভয়ের জন্যই নির্দেশনা প্রয়োজন। 

৪. নির্দেশনা ব্যক্তির ইচ্ছাধীন :- নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় নির্দেশনা কারো উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়না। সমস্যার প্রতিরোধ ও প্রতিবিধানের ক্ষেত্রে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। কিন্তু সেই নির্দেশনা গ্রহণ করা বা না করা ব্যক্তির ইচ্ছাধীন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


৫. নির্দেশনা একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া :- যেহেতু নির্দেশনা পালন করতে কাউকে বাধ্য করা হয় না - তাই নির্দেশনা একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। ব্যক্তি নিজের ইচ্ছা ও বিচারবোধ অনুযায়ী নির্দেশনা গ্রহণ করেন। 

৬. সমস্যা সনাক্তকরণ ও সমাধান :- নির্দেশনা প্রক্রিয়ার মূল উদ্দেশ্য হল সমস্যা সনাক্তকরণ এবং তার সমাধান। এছাড়াও ভবিষ্যৎ সমস্যার প্রতিরোধকল্পে নির্দেশনা প্রদান করা হয়ে থাকে। নির্দেশনা সমস্যার সমাধানকল্পে ব্যক্তিকে সঠিক পথের সন্ধান দিয়ে থাকে। 

৭. নির্দেশনা নির্দিষ্ট লক্ষ্যকেন্দ্রিক :- নির্দেশনা প্রক্রিয়া নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয়ে থাকে। ভিন্ন ভিন্ন সমস্যার ক্ষেত্রে নির্দেশনার লক্ষ্য ভিন্ন ভিন্ন হয়। 

৮. নির্দেশনা ব্যক্তির অন্তর্দৃষ্টিমূলক শিখনের প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে :- নির্দেশনা ব্যক্তির সমস্যার গভীরতা উপলব্ধি করে নির্দিষ্ট সমাধানকল্পে যথার্থ পথনির্দেশ করে। ব্যক্তি তার অন্তর্নিহিত দক্ষতাগুলিকে কাজে লাগিয়ে সেই সমস্যা সমাধানের জন্য সচেষ্ট হয়। এর ফলে ব্যক্তি তার অন্তর্নিহিত সম্পদগুলিকে চিহ্নিত করতে পারে। 

৯. পরিধির ব্যাপকতা :- যেহেতু মানব জীবনের সর্বস্তরের জন্য নির্দেশনা প্রয়োজন - তাই নির্দেশনার পরিধিও ব্যাপক। মানুষের জীবনের সমস্যাগুলি সকলের একপ্রকার নয়। শিক্ষা , বৃত্তি , নৈতিকতা , ধর্মীয় , অবসরযাপন - ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে নির্দেশনা প্রয়োজন হয়। তাই নির্দেশনার পরিধি ব্যাপক। 

১০. ব্যক্তিত্বের বিকাশে সহায়তা :- ব্যক্তি জীবনের বিভিন্ন স্তরে এবং বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এই সকল নির্দেশনাকে কাজে লাগিয়ে ব্যক্তি সমস্যার সমাধান করে , ভিন্ন ভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা লাভ করে এবং ব্যক্তিত্বের বিকাশসাধন করে।

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো
       
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

ব্যক্তিগত নির্দেশনার সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা কর। 

ব্যক্তিগত নির্দেশনার সুবিধা ও সমস্যাগুলি আলোচনা কর। 




ব্যক্তিগত নির্দেশনার সুবিধা :- 


১. মানুষের প্রক্ষোভমূলক সমস্যা ; যেমন - ভয় - ভীতি , হতাশা , আক্রমণধর্মিতা , হীনমন্যতাবোধ - ইত্যাদি সমস্যার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত নির্দেশনা অধিক কার্যকরী। অভিজ্ঞ ব্যক্তি নির্দেশনা পরিচালনার মাধ্যমে মানুষের প্রক্ষোভিক সমস্যাগুলির সমাধান সহজেই করতে পারেন। 

২. যেহেতু ব্যক্তিগত নির্দেশনা এককভাবে সম্পন্ন হয় সেহেতু নির্দেশনা প্রদানকারী একক ব্যক্তির সমস্যা সম্পর্কে গভীরভাবে অবগত হতে পারেন এবং তার সমস্যা সমাধান করতে পারেন। 

৩. বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি , বিভিন্ন নেশাগ্রস্থ ব্যক্তি ; যেমন - ড্রাগের নেশা , মদ্যপান - ইত্যাদি সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত নির্দেশনা যথেষ্ট কার্যকরী। উপযুক্ত নির্দেশনা ও কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে মানুষের বিভিন্ন কুঅভ্যাসগুলি দূর করা সম্ভব। 

৪. বয়ঃসন্ধিকালে প্রতিটি মানুষের বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তনের ফলে অনেক সময় মানুষ সমস্যার সম্মুখীন হন। কিন্তু অনেকে এই সমস্যাগুলি সম্পর্কে সর্বসমক্ষে আলোচনা করতে চান না। কাজেই এই ধরণের সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত নির্দেশনা কার্যকরী। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৫. ব্যক্তিগত নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তিকে উপযুক্ত সামাজিকীকরণের পথে পরিচালিত করা সম্ভব। বনসৃজন , শিক্ষামূলক ভ্রমণ , আনন্দমূলক ভ্রমণ ও অনুষ্ঠান - ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ইতিবাচক সামাজিকীকরণ ঘটানো সম্ভব। ব্যক্তিগত নির্দেশনার মাধ্যমে এইসকল কার্যক্রমের সঙ্গে ব্যক্তিকে যুক্ত করার উৎসাহ প্রদান করা সম্ভব। 

৬. ব্যক্তিগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় নির্দেশনা প্রদানকারী ও নির্দেশনা গ্রহীতার মাধ্যমে একটি আস্থার ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরী হয়। এই ফলে ব্যক্তি নির্দেশনা প্রদানকারীকে নিজের সমস্যা সম্পর্কে সবিস্তারে অবগত করতে পারেন। যে সব সমস্যা সকলের নিকট প্রকাশ্য নয় , সেই সকল সমজাগুলিও ব্যক্তিগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় উন্মুক্ত হয়ে ওঠে। 

৭. ব্যক্তিগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় অনুসরণ প্রক্রিয়া অধিক পরিমাণে কার্যকর হয়। যেহেতু নির্দেশনা প্রদানকারী সমস্যায় থাকা ব্যক্তির উপর গভীর প্রভাব বিস্তার করেন , সেহেতু ব্যক্তি নির্দেশকের অনুসরণের ক্ষেত্রে সহজেই ও নিজ উদ্যোগে অনুসরণ করে থাকেন। 

৮. বিভিন্ন যৌন সমস্যাগুলির ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত নির্দেশনা যথার্থভাবে কার্যকরী। যৌন সমস্যাগুলি সকলের নিকট সহজেই প্রকাশ্য নয় ; আবার , সকলের কাছ থেকে যথার্থ সমাধানসূত্র ও নির্দেশনা প্রাপ্ত করা সম্ভব নয়। অনভিজ্ঞ ব্যক্তির নিকট থেকে যৌনতা সংক্রান্ত সমস্যার ক্ষেত্রে ভ্রান্তি ও বিকৃত জ্ঞান লাভের যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকে। ফলে উপযুক্ত ব্যক্তিগত নির্দেশনার মাধ্যমেই উক্ত সমস্যাগুলির সমাধান সম্ভব। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

ব্যক্তিগত নির্দেশনার অসুবিধা :- 


১. ব্যক্তিগত নির্দেশনায় যেহেতু একজন ব্যক্তি একজন নির্দেশকের পরামর্শ গ্রহণ করেন সেহেতু এক্ষেত্রে একজন নির্দেশনা পরিচালনাকারী একটি সময়ে কেবলমাত্র একজনকে নির্দেশনা প্রদান করতে পারেন। 

২. একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তিকে ব্যক্তিগত নির্দেশনার মাধ্যমে নির্দেশনা প্রদান করা সম্ভব নয়। 
৩. ব্যক্তিগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় সময় , অর্থ ও শ্রম সবকিছুই তুলনামূলকভাবে অধিক খরচ হয়। 

৪. সার্বিকভাবে সামাজিক সমস্যাগুলির সমাধান ব্যক্তিগত নির্দেশনার মাধ্যমে সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সমস্যাগুলির সমাধান সম্ভব। 

৫. ব্যক্তি যদি অন্তর্মুখী ও লাজুক প্রকৃতির হন - তাহলে তার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত নির্দেশনাও কার্যকরী হয়না। 

৬. ব্যক্তিগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় দলগতভাবে অংশগ্রহণ করে সকলের সাথে সমস্যার আলোচনা করা সম্ভব নয়। এরফলে ব্যক্তি পারস্পরিক অভিজ্ঞতালাভ থেকে বঞ্চিত থাকেন।

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো                 

Share
Tweet
Pin
Share
No comments
Newer Posts
Older Posts

Followers

Pages

  • Home
  • Privacy Policy
  • Disclaimer
  • CONTACT ME
  • About Me

Contact Form

Name

Email *

Message *

About me

Hallow viewers , myself Nandan Dutta [Subhankar Dutta], reside at Maheshpur,Malda.
I made this website for the students of B.A. courses under Gour Banga University. Here you can get suggestions of different subjects like HISTORY , SOCIOLOGY , POLITICAL SCIENCE & EDUCATION.
In future I will add MCQ sections of those subjects.


Categories

  • 1ST SEMESTER SUGGESTION (1)
  • 2 ND YEAR SUGGESTION (1)
  • 2ND SEMESTER (1)
  • 3RD SEMESTER (8)
  • BENGALI NOTES (21)
  • CU suggestion. (1)
  • EDUCATION NOTES (141)
  • ENGLISH COMPULSORY (16)
  • GBU Suggestion. (7)
  • HISTORY EUROPE & WORLD (46)
  • HISTORY NOTES (68)
  • POL SC NOTES (64)
  • SOCIOLOGY NOTES (72)
  • WBCS 2020 (1)

recent posts

Blog Archive

  • May 2025 (3)
  • April 2025 (20)
  • March 2025 (12)
  • February 2025 (8)
  • November 2024 (5)
  • October 2024 (2)
  • September 2024 (2)
  • June 2024 (2)
  • March 2024 (6)
  • February 2024 (4)
  • October 2023 (5)
  • May 2023 (5)
  • April 2023 (1)
  • December 2022 (1)
  • November 2022 (13)
  • September 2022 (2)
  • August 2022 (7)
  • July 2022 (29)
  • June 2022 (10)
  • May 2022 (25)
  • April 2022 (24)
  • March 2022 (16)
  • February 2022 (19)
  • January 2022 (21)
  • December 2021 (46)
  • November 2021 (5)
  • October 2021 (6)
  • September 2021 (5)
  • August 2021 (41)
  • July 2021 (43)
  • June 2021 (31)
  • May 2021 (7)
  • April 2021 (1)
  • July 2020 (1)
  • June 2020 (3)
  • April 2020 (1)
  • November 2019 (1)
  • July 2019 (1)
  • June 2019 (1)
  • May 2019 (1)
  • April 2019 (2)
  • January 2019 (1)

Pages

  • Home
  • 2nd SEM ভাষাতত্ত্ব :
  • বাংলা উপভাষা
  • দ্বিতীয় পুলকেশীর কৃতিত্ব
  • ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত সাম্যের অধিকারগুলি আলোচনা করো।
  • হর্ষবর্ধনের কৃতিত্ব আলোচনা করো। তাকে কি উত্তর পথনাথ বলা যায় ?
  • ভারতীয় সংবিধানের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য :-
  • উদারনীতিবাদ : সংক্ষিপ্ত ধারণা :-
  • চোল শাসনব্যবস্থা :-
  • গুপ্তযুগ সুবর্ণযুগ সম্পর্কিত আলোচনা।
  • ৬. উদাহরণসহ মধ্যযুগের বাংলাভাষার কয়েকটি বৈশিষ্ট আল...
  • 1. Marxism
  • আধুনিক বাংলা ভাষা ও তার বৈশিষ্ট।
  • Discuss the career and achievements of Samudragupta .
  • ভাষাতত্ত্ব

Created with by ThemeXpose | Distributed by Blogger Templates