মূল্যায়নের বিভিন্ন স্তর বা পর্যায়। Different steps of Evaluation.

by - July 26, 2022

মূল্যায়নের বিভিন্ন স্তর বা পর্যায়। 

Different steps of Evaluation. (In Bengali).



মূল্যায়নের বিভিন্ন স্তর বা পর্যায়। 


বর্তমানে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও বিভিন্ন বিজ্ঞানসম্মত কৌশল দ্বারা পরিচালিত হয়। তাই একটি আদর্শায়িত মূল্যায়ন পরিচালনা করতে হলে কিছু বিশেষ স্তর বা পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। একজন শিক্ষক মূল্যায়নের বিভিন্ন পর্যায়গুলিকে সুসংবদ্ধভাবে পরিচালনার মাধ্যমে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সংগঠিত করেন। মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন স্তর বা ধাপ বা পর্যায়গুলি হল - 


১. শিক্ষার উদ্দেশ্য নির্দিষ্টকরণ :- মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার সর্বপ্রথম স্তর হল শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্দিষ্টকরণ। ঠিক যে লক্ষ্য নিয়ে শিক্ষন - শিখন পরিচালিত হয় , সেইপ্রকার লক্ষ্য নিয়ে মূল্যায়ন পরিচালনার মাধ্যমে শিক্ষার্থী সম্পর্কে গুনগত ও পরিমাণগত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। মূল্যায়নের ভিত্তিতে শিক্ষার লক্ষ্য নির্ধারিত হলে - তা শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশের পক্ষে সহায়ক হয়ে ওঠে। 

২. আচরণগত উদ্দেশ্যের শ্রেণিবদ্ধকরণ :- মূল্যায়নের দ্বিতীয় স্তর হল আচরণগত উদ্দেশ্যের পরিপ্রেক্ষিতে মূল্যায়নের শ্রেণিবদ্ধকরণ। এই প্রক্রিয়া হল - জ্ঞানমূলক , অনুভূতিমূলক ও মনোসঞ্চালনামূলক। শিক্ষনের নির্দিষ্ট লক্ষ্যের পরিপ্রেক্ষিতে যে প্রকার আচরণ শিক্ষার্থীর নিকট প্রত্যাশা করা হয় সেই অনুসারে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। 

৩. শিক্ষার্থীর কার্যাবলী নির্দিষ্টকরণ :- শিক্ষন - শিখন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীর যে ধরণের আচরণ উপযুক্ত - মূল্যায়ন শিক্ষার্থীদের জন্য সেই ধরণের আচরণ নির্দিষ্ট করে। এই সুনিয়ন্ত্রিত আচরণের মধ্যে দিয়ে শিক্ষা তার অভীষ্ট লক্ষ্যে উপনীত হয়। 

৪. তথ্য সংগ্রহের বিভিন্ন কৌশল নির্বাচন :- শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীন বিকাশকে পরিমাপ করতে বিভিন্ন প্রকার কৌশল ও অভীক্ষা ব্যবহৃত হয়। নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ধরণের আচরণের পরিমাপ ও শিক্ষার্থীর বিকাশের ধারা পরিমাপ করতে কোন ধরণের কৌশল ব্যবহৃত হবে তা নির্ধারণ করে মূল্যায়ন। 

৫. শিক্ষণ পরিকল্পনা গ্রহণ :- এরপর শিক্ষার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে উপনীত হতে কোন ধরণের শিক্ষন পরিকল্পনা গ্রহণ করা যুক্তিযুক্ত তা নির্দিষ্ট করেন শিক্ষক। উপযুক্ত শিক্ষণ পরিকল্পনার মাধ্যমে মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার আদর্শায়ন ঘটানো সম্ভব। 

৬. পরিমাপের কৌশল প্রয়োগ ও তথ্য সংগ্রহ :- উপযুক্ত শিক্ষণ পরিকল্পনা গ্রহণের পর পরিমাপের কৌশলগুলিকে শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় প্রয়োগ করা হয়। পরিমাপ নির্ধারণের এই কৌশলগুলি প্রয়োগের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীর আচরণ ও বিকাশ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয় এবং এই তথ্য থেকে শিক্ষার্থীর অগ্রগতির মূল্যায়ন করা হয়। 

৭. তথ্য সংরক্ষণ :- তথ্য সংগ্রহের পর সেগুলিকে যথাযথ বিশ্লেষণের জন্য এবং ভবিষ্যতের প্রয়োজনের জন্য উপযুক্তভাবে সংরক্ষণ করা হয়। 

৮. তথ্যের বিশ্লেষণ ও তাৎপর্য নির্ণয় :- মূল্যায়নের এই স্তরটি বিশেষভাবে গুরুত্বপর্ণ। এই স্তরে একজন শিক্ষক সংগৃহীত তথ্য গুলিকে বিশ্লেষণ করেন। এই স্তরেরও নির্দিষ্ট কয়েকটি পদ্ধতি আছে এবং শিক্ষককে সতর্কতার সঙ্গে এই পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করতে হয়। এই স্তরে শিক্ষার্থীর আচরণের পরিবর্তন শিক্ষার উদ্দেশ্যের পরিপ্রেক্ষিতে কতটা কার্যকর হয়েছে - তা বিশ্লেষণ করে দেখা হয়। 

৯. উদ্দেশ্যের সংশোধন :- সমগ্র মূল্যায়ন প্রক্রিয়াটি পরিচালনার পর যদি দেখা যায় , শিক্ষণ - শিখন প্রক্রিয়া মূল্যায়নের আদর্শ স্তরে পৌঁছতে ব্যর্থ হয়েছে - তাহলে উদ্দেশ্যের সংশোধন করা হয়।   


You May Also Like

0 comments