­
মূল্যায়ন ও পরিমাপের পার্থক্য। Difference between Evaluation and Measurement. - NANDAN DUTTA

মূল্যায়ন ও পরিমাপের পার্থক্য। Difference between Evaluation and Measurement.

by - July 24, 2022

মূল্যায়ন ও পরিমাপের পার্থক্য। 

পরিমাপ ও মূল্যায়নের পার্থক্য। 

মূল্যায়ন ও পরিমাপের তুলনামূলক আলোচনা। 

মূল্যায়ন ও পরিমাপের বৈসাদৃশ্য। 

Difference between Evaluation and Measurement. (In Bengali).




মূল্যায়ন ও পরিমাপের পার্থক্য। 

মূল্যায়ন ও পরিমাপের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বৈসাদৃশ্য বর্তমান। মূল্যায়ন ও পরিমাপের পার্থক্যগুলি হল - 

১. পরিধিগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়নের পরিধি ব্যাপক। মূল্যায়নের মাধ্যমে ব্যক্তির সামগ্রিক দক্ষতা , বৈশিষ্ট , আগ্রহ , মনোযোগ , প্রতিভা - ইত্যাদি বিভিন্ন দিকের পরিমাপ করা যায়। কিন্তু পরিমাপের পরিধি মূল্যায়নের তুলনায় অনেকটা সংকীর্ণ। পরিমাপের মাধ্যমে ব্যক্তির কোনো বিশেষ বৈশিষ্ট , ক্ষমতা বা দক্ষতার পরিমাপ করা হয়। ভিন্ন ভিন্ন ক্ষমতা যাঁচাইয়ের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পরিমাপের প্রয়োগ করা হয়। 

২. বৈশিষ্টগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়নের বৈশিষ্টগুলি বহুবিধ। মূল্যায়নের দ্বারা ব্যক্তির শারীরিক , মানসিক , সামাজিক , নৈতিক , আচরণগত , প্রক্ষোভিক সকল প্রকার বৈশিষ্টের পরিমাপ করা যায়। কিন্তু পরিমাপের দ্বারা ব্যক্তির কোনো একটি বিষয়ে অর্জিত জ্ঞান বা একটি বৈশিষ্টের পরিমাপ করা যায়। তাই পরিমাপের সাহায্যে বৈশিষ্টগত পরিমাপের সুযোগ তুলনামূলকভাবে কম। 


৩. প্রকৃতিগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তির ব্যক্তিসত্তার সামগ্রিক পরিমাপ করা যায়। ব্যক্তিসত্তার পরিবর্তন ও ব্যক্তিত্বের পরিমাপের ক্ষেত্রে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া অপরিহার্য। কিন্তু পরিমাপের প্রকৃতি হল আংশিক। পরিমাপের সাহায্যে ব্যক্তির ব্যক্তিসত্তার বৈশিষ্টগুলিকে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে যাঁচাই করা যায়। 

৪. প্রক্রিয়াগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যয়ন হল একটি অবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। শিক্ষার্থীর ধারাবাহিক ও নিরবচ্ছিন্ন বিকাশের পরিমাপ করতে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া যথেষ্ট কার্যকর। কিন্তু পরিমাপ একটি বিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। পরিমাপের দ্বারা শিক্ষার্থীর অধীত জ্ঞানের বা মানসিক ক্ষমতা পরিমাপের জন্য বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বিশেষ বিশেষ অভীক্ষা প্রস্তুত করা হয়। 

৫. সময়গত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়নের পরিধি ও প্রক্রিয়া যেহেতু ব্যাপক , তাই মূল্যায়ন প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য অধিক সময়ের প্রয়োজন। ব্যক্তির সকল বৈশিষ্টের মূল্যায়নের জন্য যথেষ্ট সময় প্রয়োজন হয়। কিন্তু পরিমাপের ক্ষেত্রে সময় তুলনামূলকভাবে কম লাগে। যেহেতু পরিমাপ প্রক্রিয়া ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ও বিচ্ছিন্নভাবে সম্পাদিত হয় - তাই এক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত কম সময়ের প্রয়োজন হয়। 

৬. পরিমাপগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়নের মাধ্যমে ব্যক্তির বৌদ্ধিক , দৈহিক , প্রাক্ষোভিক , নান্দনিক , মানসিক - ইত্যাদি সকল দিকের পরিমাপ করা যায়। কিন্তু পরিমাপের সাহায্যে কেবলমাত্র ব্যক্তির বৌদ্ধিক ও দৈহিক বিকাশের পরিমাপ করা যায়। 


৭. কার্যগত পার্থক্য :- মূল্যায়ন প্রক্রিয়া হল পরিমাণগত ও গুণগত। কিন্তু পরিমাপ প্রক্রিয়া হল শুধুমাত্র পরিমাণগত। 

৮. লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগত পার্থক্য :- মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সর্বদা শিক্ষার উদ্দেশ্যভিত্তিক হয়ে থাকে। মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার মূল লক্ষ্যগুলি চরিতার্থ করা যায়। অন্যদিকে পরিমাপের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সীমিত ক্ষেত্রভিত্তিক। মূল্যায়নের লক্ষ্য হল বহুমুখী ; কিন্তু পরিমাপের লক্ষ্য হল একমুখী। 

৯. কাল - ব্যাপ্তিগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সতত পরিবর্তনশীল বৃদ্ধি ও বিকাশকে অনুশীলন ও পরিমাপ করতে সাহায্য করে। কিন্তু পরিমাপ হল একটি সাময়িক প্রক্রিয়া। একটি বিশেষ সময়ে শিক্ষার্থীর কোনো একটি বিষয়ে জ্ঞানের দিক থেকে কতটা অগ্রগতি হয়েছে - তা পরিমাপের মাধ্যমে জানা যায়। 

১০. সিদ্ধান্তগ্রহণ ও চূড়ান্ত অবস্থা নির্ধারণের ক্ষেত্রে পার্থক্য :- কোনো বিষয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তগ্রহণ বা চূড়ান্ত অবস্থা নির্ধারণকারী কর্মসম্পাদনা হল মূল্যায়ন। অন্যদিকে পরিমাপের সাহায্যে কোনো নির্দিষ্ট অংশের জ্ঞান বা বর্তমান মানসিক ক্ষমতা ও দক্ষতা - ইত্যাদির নির্ণায়ক।       

 

You May Also Like

0 comments