শাসক ও বিজেতা হিসেবে প্রথম রাজেন্দ্র চোল - এর কৃতিত্ব আলোচনা করো। rajendra chola

by - July 27, 2021

চোল বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্রাট কে ছিলেন ? শাসক ও বিজেতা হিসেবে তাঁর কৃতিত্ব আলোচনা করো। 


অথবা , 

শাসক ও বিজেতা হিসেবে প্রথম রাজেন্দ্র চোল - এর কৃতিত্ব আলোচনা করো। 




প্রথম রাজেন্দ্র চোল :- 


চোল - রাজ রাজরাজের যোগ্যপুত্র ও উত্তরাধিকারী প্রথম রাজেন্দ্র চোল ছিলেন চোল বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ নরপতি। তাঁর শাসনকাল ব্যাপ্ত ছিল ১০১৪ থেকে ১০৪৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। তিনি ' গঙ্গইকোন্ড চোল ' বা 'উত্তম চোল ' নামেও পরিচিত ছিলেন। স্বাধীনভাবে রাজত্বকাল শুরু করার পূর্বেই যুবরাজ হিসেবে তিনি শাসনকার্যে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। 


সিংহাসনারোহনের কিছুদিনের মধ্যেই তিনি সমগ্র সিংহল চোল - সাম্রাজ্যভুক্ত করেন। ১০১৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি চের বা কেরল ও পান্ড্যদের ওপর নিজের আধিপত্য স্থাপন করেন এবং নিজ পুত্র রাজাধিরাজ চোলকে এই রাজ্যগুলির শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন। পশ্চিমী চালুক্যদের সঙ্গেও তিনি যুদ্ধে লিপ্ত হন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চালুক্যরাজ দ্বিতীয় জয়সিংহ চোল আক্রমণ প্রতিহত করতে সমর্থ হন। 

রাজেন্দ্র চোলের রাজ্যবিস্তার শুধুমাত্র দক্ষিণ ভারতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। রাষ্ট্রকূটদের মতো তিনি দক্ষিণ ভারত বিজয় সম্পন্ন করে উত্তর - ভারত অভিযানে অগ্রসর হন। তিনি পূর্ববঙ্গের গোবিন্দচন্দ্র , পশ্চিমবঙ্গের মহীপাল ও দক্ষিণবঙ্গের রণসুরকে পরাজিত করেন। পূর্ব - ভারতে সামরিক জয়লাভের স্মৃতিরক্ষার্থে তিনি ' গঙ্গইকোন্ড ' উপাধি ধারণ করেন। তিনি তাঁর শক্তিশালী নৌবহরের সাহায্যে নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ও মালব জয় করে অবিস্মরণীয় কীর্তি অর্জন করেন। বাংলাদেশ থেকে ফেরার পর তিনি 'গঙ্গইকোন্ড চোলপুরম ' নামে এক নতুন রাজধানী স্থাপন করেন। 

এছাড়াও রাজেন্দ্র চোল চিন সাম্রাজ্যের সাথে মিত্রতা স্থাপন করেন এবং একাধিকবার চিন - সম্রাটের নিকট দূত প্রেরণ করেন। 

রাজেন্দ্র চোলের সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব ছিল সুমাত্রার শৈলেন্দ্র বংশের বিরুদ্ধে নৌ - অভিযান। অষ্টম শতাব্দীতে সুমাত্রার শৈলেন্দ্র - সাম্রাজ্য অত্যন্ত প্রবল হয়ে ওঠে। পূর্ব - এশিয়ার হিন্দু রাজবংশগুলির মধ্যে শৈলেন্দ্র বংশ ছিল সকলের অন্যতম। আরব লেখকদের মতে , সেই যুগে শৈলেন্দ্র রাজাদের মতো শক্তিশালী ও সমৃদ্ধশালী রাজা কেউ ছিলেন না।


একাদশ শতাব্দীতে চোলরাজ রাজেন্দ্র চোলের সাথে শৈলেন্দ্র বংশের সংঘর্ষ ঘটে। যদিও প্রথম দিকে এই দুই রাজাদের মধ্যে সম্পর্ক ভালোই ছিল। চিনের সঙ্গে বাণিজ্য সংক্রান্ত ব্যাপারে দুই রাজাদের মধ্যে সংঘর্ষের সূচনা হয়। ১০২৫ খ্রিস্টাব্দে রাজেন্দ্র চোল একটি শক্তিশালী নৌ - বাহিনী শৈলেন্দ্র রাজ্যের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। শৈলেন্দ্ররাজ বিজয়োতুঙ্গবর্মন পরাজিত হয়ে বন্দী হন। এর ফলে শৈলেন্দ্র সাম্রাজ্যের কিছু অংশ চোলদের হস্তগত হয়। কোনো ভারতীয় নৃপতি ইতিপূর্বে পূর্ব - ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জে এইরূপ সামরিক সাফল্য অর্জন করতে পারেন নি।      


You May Also Like

0 comments