রচনাধর্মী অভীক্ষা কাকে বলে ? রচনাধর্মী অভীক্ষার বৈশিষ্টগুলি আলোচনা কর।

by - August 09, 2022

রচনাধর্মী অভীক্ষা কাকে বলে ?  রচনাধর্মী অভীক্ষার বৈশিষ্টগুলি আলোচনা কর। 




রচনাধর্মী অভীক্ষার ধারণা ও বৈশিষ্ট :- 


রচনাধর্মী অভীক্ষা হল - যেধরনের অভীক্ষা পদ্ধতিতে প্রবন্ধমূলক উত্তর প্রদান করা যায় , উত্তর রচনার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর সম্পূর্ণ স্বাধীনতা থাকে এবং শিক্ষার্থীর নিজের বক্তব্য প্রকাশের সুযোগ থাকে। এই ধরণের অভীক্ষা পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী একটি নিদিষ্ট বিষয় সম্পর্কে নিজের ধ্যান - ধারণা বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করতে পারে। রচনাধর্মী অভীক্ষার বৈশিষ্টগুলি হল - 

১. স্বাধীনতা হল রচনাধর্মী অভীক্ষার প্রধান বৈশিষ্ট। এই ধরণের অভীক্ষায় শিক্ষার্থী উত্তর প্রদানের সময় বিষয় সম্পর্কে নিজের চিন্তা - ভাবনা ও অভিজ্ঞতা - ধারণা - ইত্যাদি স্বাধীনভাবে প্রকাশের সুযোগ পায়। শিক্ষার্থী তার অভিজ্ঞতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মৌলিক বক্তব্য প্রকাশের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা থাকে। 

২. যেহেতু রচনাধর্মী অভীক্ষায় উত্তর প্রদানের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর সম্পূর্ণ স্বাধীনতা থাকে সেহেতু অনেক সময়ই উত্তর প্রদানের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা অপ্রাসঙ্গিক উত্তর প্রদানে প্রবৃত্ত হয়। তাই উত্তর প্রদানের ক্ষেত্রে অপ্রাসঙ্গিকতা রচনাধর্মী অভীক্ষার একটি অন্যতম বৈশিষ্ট। 

৩. রচনাধর্মী অভীক্ষার ক্ষেত্রে উত্তর প্রদান অবশ্যই প্রবন্ধমূলক ও বিস্তারিত হয়। বিষয় সম্পর্কে শিক্ষার্থীর অভিজ্ঞতার সম্পূর্ণ প্রকাশের জন্য প্রবন্ধমূলক উত্তরপ্রদান আবশ্যিক হয়ে পড়ে। 

৪. কেবলমাত্র রচনাধর্মী অভীক্ষার মাধ্যমেই শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতার সম্পূর্ণ প্রকাশ ঘটে। উত্তর প্রদানের সময় শিক্ষার্থীর মৌলিক জ্ঞানের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। 


৫. রচনাধর্মী অভীক্ষা হল একধরণের শিক্ষক নির্মিত অভীক্ষা। অভীক্ষার জন্য প্রশ্নপত্র নির্মাণ ও উত্তরপত্রের মূল্যায়ন শিক্ষক কর্তৃক হয়ে থাকে। 

৬. উত্তরের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বা উত্তরের মান নির্ণয়ের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো আদর্শায়িত পদ্ধতি নেই। শিক্ষক তাঁর অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অনুযায়ী উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেন। ফলে এই ধরণের অভীক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষকের ব্যক্তিগত প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। 

৭. কেবলমাত্র রচনাধর্মী অভীক্ষার মাধ্যমেই শিক্ষার্থীর ভাষাজ্ঞান ও ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে দক্ষতার বিকাশ ঘটে। যেহেতু রচনাধর্মী অভীক্ষায় শিক্ষার্থীর সামগ্রিক অভিজ্ঞতা প্রকাশের সুযোগ থাকে , তাই সেই অভিজ্ঞতা বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর ভাষা - দক্ষতার বিকাশ ঘটে। 

৮. রচনাধর্মী অভীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর চিন্তাশক্তি ও যুক্তিবোধের পরিমাপ করা যায়। একটি নির্দিষ্ট বিষয় বা সমস্যাকে নিজের যুক্তিবোধ , ভাষাজ্ঞান - ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষার্থী প্রকাশ করে থাকে। ক্রমাগত অনুশীলনে শিক্ষার্থীর অন্তর্দৃষ্টি বৃদ্ধি পায়। 

৯. রচনাধর্মী অভীক্ষা হল এক ধরণের গতানুগতিক অভীক্ষা। এই ধরণের অভীক্ষাপত্র প্রস্তুতকরণে শিক্ষককে অতিমাত্রায় গবেষণা করতে হয়না এবং শিক্ষার্থীর কাছ থেকে নির্দিষ্ট সমস্যাকেন্দ্রিক জ্ঞানের যাঁচাই করা হয়। 

১০. রচনাধর্মী অভীক্ষায় সামগ্রিক পাঠক্রম কেন্দ্রিকতার নীতি অনুসৃত হয়না। সম্পূর্ণ পাঠক্রম থেকে মাত্র কয়েকটি বিষয় বা সমস্যাকে শিক্ষার্থীর সামনে উপস্থাপন করে শিক্ষার্থীর জ্ঞান ও দক্ষতার পরিমাপ করা হয়।    


You May Also Like

0 comments