দলগত নির্দেশনার সুবিধা ও অসুবিধা।

by - July 16, 2022

দলগত নির্দেশনার সুবিধা ও অসুবিধা। 

Advantages and disadvantages of Group Guidance . ( In Bengali ) . 




দলগত নির্দেশনার সুবিধা :- 


১. শ্রম , অর্থ ও সময়ের সাশ্রয় :- দলগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় যেহেতু একসঙ্গে বহু মানুষকে নির্দেশনা প্রদান করা যায় , সেহেতু দলগত নির্দেশনার ক্ষেত্রে শ্রম , অর্থ ও সময় - সবকিছুর সাশ্রয় হয়। 

২. সদস্যদের পারস্পরিক ক্রিয়া - প্রতিক্রিয়ার সুযোগ :- দলগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী সকল সদস্যগণ পরস্পরের সঙ্গে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া করতে পারে। এর ফলে সদস্যদের মধ্যে অভিজ্ঞতার পারস্পরিক সঞ্চালন ঘটে। 

৩. প্রতিরোধমূলক নির্দেশনা প্রদান সম্ভব :- যারা নির্দিষ্ট সমস্যায় আক্রান্ত কেবলমাত্র তাদেরকেই ব্যক্তিগত নির্দেশনা প্রদান করা হয়। কিন্তু দলগত নির্দেশনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে অবগত করা সম্ভব এবং এর ফলে শিক্ষার্থীরা সমস্যা সম্পর্কে প্রাক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারে। 

৪. সমস্যা সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির ফলে অভিজ্ঞতালাভ সম্ভব :- দলগত নির্দেশনার মাধ্যমে সমস্যা সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির উদ্ভব ঘটে। এর ফলে ব্যক্তি সমস্যা সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে পরিচিত হতে পারে এবং তার অন্তর্দৃষ্টির বিকাশ ঘটে। 

৫. শিক্ষার্থী সংক্রান্ত তথ্য :- দলগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় যিনি নির্দেশনা পরিচালনা করেন , তিনি একইসঙ্গে বহু শিক্ষার্থীর সংস্পর্শে আসার সুযোগ পান এবং তাদের বহুবিধ সমস্যা সম্পর্কে অবগত হওয়ার সুযোগ পান। এই তথ্য বিভিন্ন শিক্ষামূলক ও বৃত্তিমূলক ও ব্যক্তিত্ব সংক্রান্ত ক্ষেত্রে গবেষণার কাজে লাগে। 

৬. দলগত সংহতি বৃদ্ধি :- দলগত নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তি উপলব্ধি করে একসাথে বহু ব্যক্তি তার মত সমস্যায় আক্রান্ত। নির্দেশনা ও দলগত আলোচনার মাধ্যমে বহুবিধ সমাধানসূত্র উঠে আসে। ব্যক্তি সেই সকল সমাধানসূত্র প্রয়োগ করে তার সমস্যা সমাধান করতে পারে। এর দলগত নির্দেশনার প্রতি ব্যক্তির আস্থা গড়ে ওঠে এবং দলগত সংহতি বৃদ্ধি পায়। 

৭. সমস্যা সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন :- দলগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তি অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। এর ফলে সমস্ত ব্যক্তিবর্গ নিজেদের মধ্যে তাদের ভিন্ন ভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করতে পারেন। সমস্যা সম্পর্কে তাদের উপলব্ধি গভীর ও সামগ্রিক হয়। ফলে সমস্যার সমাধান সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন ঘটে। 


দলগত নির্দেশনার অসুবিধা :- 


১. দলগত নির্দেশনায় একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু তাদের সকলের সমস্যা এক প্রকারের হয়না। তাই দলগত নির্দেশনায় সকলে উপকৃত হওয়ার সুযোগ পান না। 

২. বহু ক্ষেত্রে দেখা যায় , সমস্যা এক হলেও তার কারণ ভিন্ন ভিন্ন। ফলে এক ধরণের সমাধানসূত্র সকলের কাজে আসেনা। 

৩. দলগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় ব্যক্তির সমস্যাকে গভীরভাবে উপলব্ধি না করে সাধারণ প্রতিষ্ঠিত সূত্রের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়। ফলে একক ব্যক্তির ক্ষেত্রে তা কার্যকরী না'ও হতে পারে। 

৪. দলগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহনকারী ব্যক্তি যদি অন্তর্মুখীন হন তাহলে তার সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে আলোচনা করার সুযোগ তৈরী হয়না। 

৫. কোনো ব্যক্তির গোপন কোনো সমস্যা থাকলে তা কখনই দলগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় আলোচনা করা সম্ভব না। এই ধরণের সমস্যার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত নির্দেশনা উপযুক্ত। 

৬. দলগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় ভিন্ন ভিন্ন মত উপস্থিত হলে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। 

৭. দলগত নির্দেশনায় যেহেতু একসঙ্গে অনেকে অংশগ্রহণ করেন সেহেতু অনেক সময় তাঁদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়না। 

৮. অনেকে তাদের ব্যক্তিগত সমস্যা দলগতভাবে প্রকাশ করতে চান না। তাদের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত নির্দেশনা অধিক উপযুক্ত।    


You May Also Like

0 comments