আদর্শায়িত ও অ-আদর্শায়িত অভীক্ষার পার্থক্য।
আদর্শায়িত ও অ-আদর্শায়িত অভীক্ষার পার্থক্য।
আদর্শায়িত ও অ - আদর্শায়িত অভীক্ষার পার্থক্যগুলো আলোচনা কর।
আদর্শায়িত ও অ - আদর্শায়িত অভীক্ষার তুলনামূলক আলোচনা কর।
Difference between Standardised test and Non - Standardised test . ( In Bengali ) .
আদর্শায়িত ও অ-আদর্শায়িত অভীক্ষার পার্থক্য।
১. নৈর্ব্যক্তিকতার ক্ষেত্রে পার্থক্য :-
আদর্শায়িত অভীক্ষাকে সম্পূর্ণরূপে নৈর্ব্যক্তিক করে গড়ে তোলা যায়। এই ধরণের অভীক্ষায় বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে অভীক্ষাকে প্রায় বা সম্পূর্ণরূপে ব্যক্তি - প্রভাব মুক্ত করা যায়।
অন্যদিকে , অ - আদর্শায়িত অভীক্ষায় কোনো অবস্থাতেই সম্পূর্ণরূপে ব্যক্তি - প্রভাব মুক্ত করা সম্ভব নয়। তাই এই ধরণের অভীক্ষায় নৈর্ব্যক্তিকতা তুলনামূলকভাবে কম থাকে।
২. নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে পার্থক্য :-
আদর্শায়িত অভীক্ষাকে এবং অভীক্ষার পদগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। অভীক্ষাপদ চয়নের সময় পদ বিশ্লেষণ পদ্ধতি প্রয়োগ করে সুনিয়ন্ত্রিতভাবে অভীক্ষাপদ প্রস্তুত করা হয়।
কিন্তু , অ - আদর্শায়িত অভীক্ষাকে সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করা যায়না ; কেননা এই ধরণের অভীক্ষায় পদ - বিশ্লেষণ পদ্ধতি প্রয়োগ করা সম্ভব নয়।
৩. নির্ভরযোগ্যতার ক্ষেত্রে পার্থক্য :-
আদর্শায়িত অভীক্ষার নির্ভরযোগ্যতা অনেক বেশি। বিভিন্ন আধুনিক কৌশল প্রয়োগ করে আদর্শায়িত অভীক্ষাকে নির্ভরযোগ্য করে তোলা হয়।
পক্ষান্তরে , অ - আদর্শায়িত অভীক্ষার নির্ভরযোগ্যতা তুলনামূলকভাবে কম। এই ধরণের অভীক্ষায় আধুনিক কৌশলের পরিবর্তে অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
৪. যথার্থতার ক্ষেত্রে পার্থক্য :-
আদর্শায়িত অভীক্ষার ক্ষেত্রে উপযুক্ত যথার্থতা হল একটি অপরিহার্য বৈশিষ্ট। উপযুক্ত যথার্থতার জন্যই আদর্শায়িত অভীক্ষার গ্রহণযোগ্যতা বেশি।
অন্যদিকে , অ - আদর্শায়িত অভীক্ষায় যথার্থতা তুলনামূলকভাবে কম থাকে। কেননা এই ধরণের অভীক্ষায় শিখন - শিক্ষনের আধুনিক গবেষণালব্ধ সূত্রগুলি প্রয়োগ করা হয়না।
৫. পরিসংখ্যান প্রয়োগের ক্ষেত্রে পার্থক্য :-
আদর্শায়িত অভীক্ষায় পরিসংখ্যান প্রয়োগ করা সম্ভব। পরিসংখ্যান প্রয়োগ করে শিক্ষা প্রক্রিয়াকে সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয়।
কিন্তু , অ - আদর্শায়িত অভীক্ষায় পরিসংখ্যান প্রয়োগের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরী হয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান প্রয়োগ করা যায়না।
৬. নর্ম - গত পার্থক্য : -
আদর্শায়িত অভীক্ষায় নির্দিষ্ট নর্ম থাকে। নির্দিষ্ট নর্মের ভিত্তিতে আদর্শায়িত অভীক্ষা পরিচালনা করা হয় এবং নর্ম - এর উপস্থিতি আদর্শায়িত অভীক্ষার একটি অন্যতম বৈশিষ্টরূপে বিবেচিত হয়।
অপরদিকে , অ - আদর্শায়িত অভীক্ষায় নির্দিষ্ট নর্মের উপস্থিতি আশা করা যায়না।
৭. প্রয়োগের ক্ষেত্রে পার্থক্য :-
যেহেতু আদর্শায়িত অভীক্ষা তুলনামূলকভাবে গ্রহণযোগ্য , নির্ভরযোগ্য ও যথার্থ - তাই আদর্শায়িত অভীক্ষার প্রয়োগ ব্যাপকভাবে হয়ে থাকে।
কিন্তু , অ - আদর্শায়িত অভীক্ষার প্রয়োগ তুলনামূলকভাবে কম।
৮. নমনীয়তার ক্ষেত্রে পার্থক্য :-
আদর্শায়িত অভীক্ষার ক্ষেত্রে অভীক্ষাপদ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় এবং প্রয়োগের ক্ষেত্রেও কঠোরতা অবলম্বন করা হয়।
অন্যদিকে , অ - আদর্শায়িত অভীক্ষায় অভীক্ষাপদ গঠন ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে নমনীয়তা অবলম্বন করা হয়।
৯. পুনঃপ্রয়োগের ক্ষেত্রে পার্থক্য :-
আদর্শায়িত অভীক্ষায় অভীক্ষাপদ পুনঃপ্রয়োগ করা যেতে পারে।
কিন্তু , অ - আদর্শায়িত অভীক্ষায় অভীক্ষাপদ সাধারণতঃ পুনঃপ্রয়োগ করা সম্ভব হয়না।
১০. প্রকৃতিগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :-
আদর্শায়িত অভীক্ষা হল সাধারণধর্মী।
অপরদিকে , অ - আদর্শায়িত অভীক্ষা হল বিশেষধর্মী। বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে এই ধরণের অভীক্ষা গঠিত হয় ও প্রয়োগ করা হয়।
পরিশেষে বলা যায় , আদর্শায়িত অভীক্ষা হল এমন এক ধরণের পরিমাপক পদ্ধতি যার প্রয়োগবিধি পূর্বনির্দিষ্ট। এই ধরণের অভীক্ষার মধ্যে দিয়ে একই পরিস্থিতিতে সকল শিক্ষার্থীর পারদর্শিতার তুলনামূলক বিচার করা যায় ; কিন্তু অ - আদর্শায়িত অভীক্ষার ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়।
0 comments