আদর্শায়িত অভীক্ষা বা সু - অভীক্ষার গুরুত্ব আলোচনা কর।

by - May 21, 2022

আদর্শায়িত অভীক্ষা বা সু - অভীক্ষার গুরুত্ব আলোচনা কর। 

আদর্শায়িত অভীক্ষা বা সু - অভীক্ষার শিক্ষামূলক তাৎপর্য আলোচনা কর। 

Importance of Standardised Test . ( In Bengali ) . 



আদর্শায়িত অভীক্ষা বা সু - অভীক্ষার গুরুত্ব আলোচনা কর। 

শিখন - শিক্ষন প্রক্রিয়ায় আদর্শায়িত অভীক্ষা বা সু - অভীক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিমাপক কৌশল। মনোবৈজ্ঞানিক ও শিক্ষামূলক অভীক্ষাগুলি হল এমন এক ধরণের পরিমাপক কৌশল , যার সাহায্যে ব্যক্তির আচরণগত বৈশিষ্টের পরিমাপ করা যায়। সাধারণতঃ যেসকল শিক্ষামূলক ও মনোবৈজ্ঞানিক অভীক্ষায় মনোবিজ্ঞান সম্মত গুন ও বৈশিষ্টের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় - তাকেই আদর্শায়িত অভীক্ষা বা সু - অভীক্ষা বলে। নীচে আদর্শায়িত অভীক্ষা বা সু - অভীক্ষার গুরুত্ব আলোচনা করা হল। 


১. শিক্ষা পরিকল্পনা :- 
আদর্শায়িত অভীক্ষা বা সু - অভীক্ষার দ্বারা শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম যোগ্যতা সম্পর্কে ধারণা অর্জন করা সম্ভব। এই ধারণার মধ্যে দিয়ে পরবর্তী পর্যায়ের শিক্ষা পরিকল্পনা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়। এই শিক্ষা পরিকল্পনা চলাকালীন আদর্শায়িত অভীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানা যায়। 

২. শিক্ষার্থী নির্বাচন :- 
বিভিন্ন বিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরণের পাঠক্রমের জন্য কোন ধরণের শিক্ষার্থীরা উপযুক্ত তা জানতে আদর্শায়িত অভীক্ষা বা সু - অভীক্ষা বিশেষভাবে কার্যকরী। একটি আদর্শায়িত অভীক্ষার মাধ্যমে পাঠক্রমের জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীকে সহজেই বেছে নেওয়া যায়। 


৩. শ্রেণিবিভাজন :- 
কোনো বিদ্যালয়ের কোনো শ্রেণিতে প্রয়োজনের তুলনায় অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে গেলে পঠন - পাঠন ও শিক্ষা পরিচালনায় বিশেষ অসুবিধে তৈরী হয়। এই অবস্থায় ঐ শ্রেণির মধ্যে বিভাজন করা আবশ্যক হয়ে পড়ে। এই বিভাজনের সময় আদর্শায়িত অভীক্ষা বিশেষভাবে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। 

৪. শিক্ষা - নির্দেশনা :- 
শিক্ষা নির্দেশনাকে যথার্থভাবে পরিচালনা করতে শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে বিবিধ তথ্যের প্রয়োজন। শিক্ষার্থী সম্পর্কিত এই বিভিন্ন তথ্যগুলি আসলে আদর্শায়িত অভীক্ষার মাধ্যমেই সংগ্রহ করা যায়। তাই আদর্শায়িত অভীক্ষা যথার্থ শিক্ষা নির্দেশনায় সাহায্য করে। 

৫. শিক্ষার্থীর দুর্বলতা চিহ্নিতকরণ :- 
আদর্শায়িত অভীক্ষা বা সু - অভীক্ষার দ্বারা শিক্ষার্থীদের দুর্বলতাগুলিকে সহজেই চিহ্নিত করা যায়। শিক্ষার্থীর দুর্বলতাগুলিকে চিহ্নিত করে সেগুলির সমাধানকল্পে কার্যকরী শিক্ষা পরিকল্পনা গ্রহণ করা সম্ভব হয়। 

৬. যথার্থতা :- 
আদর্শায়িত অভীক্ষা অন্যান্য শিক্ষামূলক অভীক্ষাগুলির তুলনায় অনেক বেশি যথার্থ। আদর্শায়িত অভীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সামগ্রিক মূল্যায়ণ সম্ভব হয়। যেমন - একজন শিক্ষার্থীর ভূগোল পরীক্ষার মাধ্যমে তার বিষয়জ্ঞানের সঙ্গে সঙ্গে হাতের লেখা , ভাষার ক্ষমতা , শব্দ চয়নের ক্ষমতা , বানান - ইত্যাদি সকল বিষয়গুলি পরিমাপ করা সম্ভব হয়। 


৭. নির্ভরযোগ্যতা :- 
আদর্শায়িত অভীক্ষা বা সু - অভীক্ষা আধুনিক বিজ্ঞান সম্মত কৌশলগুলি প্রয়োগ করে। ফলে অভীক্ষার ফলাফল অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য হয়ে ওঠে। এই ধরণের অভীক্ষায় অভিজ্ঞতার পরিবর্তে মনোবৈজ্ঞানিক সূত্র , রাশিবিজ্ঞান - ইত্যাদির ব্যবহারের মাধ্যমে অভীক্ষাকে অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য করে তোলে। 

৮. ব্যক্তি প্রভাব মুক্ত :- 
আদর্শায়িত অভীক্ষায় অভীক্ষা পদ ও মূল্যায়নকে ব্যক্তি প্রভাব মুক্ত করতে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব। অভীক্ষা পদ তৈরী , নম্বর প্রদান - ইত্যাদি বিষয়ে আদর্শমান ধরে রাখার চেষ্টা করা হয়। আদর্শায়িত অভীক্ষায় বার বার অভীক্ষা পরিচালনা করলেও ফলাফল মোটামুটি একই ধরণের থাকে। 

৯. শ্রম , সময় ও অর্থের সাশ্রয় :- 
আদর্শায়িত অভীক্ষার মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে , অল্প অর্থের বিনিময়ে প্রচুর সংখ্যক শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন সম্ভব হয়।  ফলে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল সমাজে আদর্শায়িত অভীক্ষা বা সু - অভীক্ষা বিষেশভাবে গ্রহণযোগ্য। 

১০.  তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে নির্ভুলতা :- 
আদর্শায়িত অভীক্ষা বা সু - অভীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে যেসকল তথ্য সংগ্রহ করা হয় - তা অনেক বেশি নির্ভুল হয়ে থাকে। শিক্ষার্থী সংক্রান্ত এই নির্ভুল তথ্য শিক্ষা পরিকল্পনা গ্রহণে সহায়তা করে। 

পরিশেষে বলা যায় , অন্যান্য শিক্ষামূলক ও মনোবৈজ্ঞানিক অভীক্ষাগুলির মধ্যে আদর্শায়িত অভীক্ষা বা সু - অভীক্ষা অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। অভীক্ষা পদ গঠন , নম্বর প্রদান , মূল্যায়ন ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রে আদর্শায়িত অভীক্ষা বিশেষভাবে উপযোগী। তাই আধুনিক সময়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আদর্শায়িত অভীক্ষা পরিচালনা করা হয়।  


You May Also Like

0 comments