Why are Conventions Obeyed ? শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলিকে মান্য করা হয় কেন ?

by - December 17, 2021

Why are Conventions Obeyed ? 

শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলিকে মান্য করা হয় কেন ? 


শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলি আইন নয় এবং তা আদালত কর্তৃক গ্রণযোগ্য বা বলবৎযোগ্য নয়। শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলি ভঙ্গ করার দায়ে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অভিযুক্তও করা যায়না। কিন্তু তা স্বত্তেও শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলিকে কঠোরভাবে মেনে চলা হয়। ইতিপূর্বে ডাইসি অভিমত প্রদান করেছিলেন যে শাসনতান্ত্রিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে সংঘর্ষ এড়িয়ে যেতে এগুলি মান্য করা হয়। কিন্তু ডাইসির এই অভিমতকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ তীব্রভাবে সমালোচনা করেছেন। ব্রিটেনে শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলি মান্য করার কারণগুলি হল -    


১. জনমতের চাপ : -  বৃটেনের শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনে চলার মূল কারণ হলো জনমতের চাপ। ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থায় এই সমস্ত রীতিনীতি দীর্ঘদিন ধরে গড়ে উঠেছে এবং এগুলির পিছনে বৃটেনের জনগণের সমর্থন সবসময় বর্তমান। কোনো প্রতিষ্ঠিত শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করলে তা জনগণ অনুমোদন করবেন না। মন্ত্রিসভা , ক্ষমতাসীন দল - সকলেই বৃটেনের শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনে চলতে বাধ্য থাকেন। 

২. ক্যাবিনেট ব্যবস্থার অস্তিত্বের জন্য শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলি মান্য করে চলা দরকার :- অধিকাংশ শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতির উদ্দেশ্য হল কমন্স সভার সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করা এবং কমন্স সভার প্রতিফলিত অধিকাংশ নাগরিকের স্বার্থ ও ইচ্ছার অনুকূলে শাসনকার্য যাতে পরিচালিত হয় - তা নিয়ন্ত্রণ করা। এই আদর্শের ভিত্তিতে বৃটেনের শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত। শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলি অমান্য করলে সমগ্র ব্রিটিশ ক্যাবিনেট শাসনব্যবস্থা বিপন্ন হয়ে পড়বে। 


৩. লাওয়েল এর অভিমত :- ব্রিটেনের শাসক শ্রেণী এই ধারণার দ্বারা পরিচালিত হন যে , তারা দেশ ও জাতির অছি হিসাবে কতকগুলি অলিখিত বোঝাপড়ার ভিত্তিতে সরকারি ক্ষমতা লাভ করেছেন। তাই তারা এই সমস্ত রীতিনীতি মেনে চলার ব্যাপারে বিশেষভাবে যত্নবান হন। 

৪. শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলির আইনে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা :- শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি অমান্য করলে তা আইনে পরিণত হবে এই আশঙ্কায় তা মান্য করা বাধ্যতামূলক হয়ে পড়ে। যেমন লর্ড সভা ১৯০৯ সালে শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি উপেক্ষা করে কমন্স সভা কর্তৃক অনুমোদিত রাজস্ব বিল প্রত্যাখ্যান করে। তার ফলে লর্ডসভার ক্ষমতা হ্রাস করে ১৯১১ সালে পার্লামেন্টে আইন প্রণীত হয়। এ আইনের মাধ্যমে অর্থ বিলের ব্যাপারে লর্ড সভার ক্ষমতা প্রায় কেড়ে নেওয়া হয়। 

৫. রাজনৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক ক্ষেত্র এর গুরুত্ব :- জেনিংস এর মতে , রাজনৈতিক কারণে শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলিকে মান্য করা হয়। রীতিনীতি অমান্য করলে আদালতের মাধ্যমে তা বলবৎ করা যায় না বটে ; কিন্তু রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকে।  

৬. ব্রিটিশদের রক্ষণশীলতা :- ব্রিটিশরা রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত। তারা ঐতিহ্যের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। বৃটেনের শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলিকে শাসনতান্ত্রিক ঐতিহ্যের বাহক হিসাবে গণ্য করা হয়। 

৭. সংবিধানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে :- গ্রেট বৃটেনের সংবিধানের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে , শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলি শাসনকার্যের অতীতের সঙ্গে বর্তমান এবং বর্তমানের সঙ্গে ভবিষ্যতের সংযোগ সাধন করে এবং এইভাবে শাসন ব্যবস্থার ধারাবাহিকতা বজায় রাখে। ফলে সংবিধানের ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। 

৮. সরকারি কাজের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে :-  গ্রেট ব্রিটেনের সাংবিধানিক ব্যবস্থায়  শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলি শাসন ব্যবস্থায় ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এই রীতিনীতিগুলিকে অগ্রাহ্য করলে ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থা ভারসাম্যহীনতায় ভুগবে এবং  তার ফলে বৃটেনের সরকারি কাঠামো গতিহীন হয়ে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেবে। 

৯. শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি সংবিধানকে নমনীয় ও গতিশীল করে তোলে :- গ্রেট বৃটেনের শাসন ব্যবস্থায় শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলি আইনের ত্রুটি ও সীমাবদ্ধতা দূর করে সরকারি যন্ত্রকে গতিশীল রাখে। 

১০. জনসমর্থন :- গ্রেট বৃটেনের শাসন ব্যবস্থায় বিভিন্ন শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি দীর্ঘকাল ধরে প্রচলিত আছে। দেশবাসীর রাজনৈতিক জীবনের সঙ্গে এগুলি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। আইন ও রীতিনীতির মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক পার্থক্যের ব্যাপারে সাধারণ মানুষ আগ্রহ দেখায় না। শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলি সহজবোধ্য হওয়ায় তা অধিক জনপ্রিয়। 

১১. ফ্রীম্যান - এর অভিমত :- শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতির গুরুত্বকে অস্বীকার করা যায়না , তাই এগুলিকে মান্য করা হয়ে থাকে। ব্রিটেনের জনজীবনে শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলির উপযোগিতা অনস্বীকার্য। এই বাস্তব উপযোগিতার উপলব্ধি রীতিনীতিগুলিকে মান্য করতে অনুপ্রাণিত করে।   

You May Also Like

0 comments