Structure and function of the British cabinet ব্রিটিশ ক্যাবিনেটের গঠন , ক্ষমতা ও কার্যাবলী :-

by - December 17, 2021

Structure and function of the British cabinet 

ব্রিটিশ ক্যাবিনেটের গঠন , ক্ষমতা ও কার্যাবলী  :- 


ব্রিটিশ ক্যাবিনেটের গঠন :- 


ব্রিটিশ ক্যাবিনেট হল মন্ত্রিসভার এক ক্ষুদ্র আয়তন বিশিষ্ট সংস্থা। মন্ত্ৰীসভার বিশেষ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের নিয়ে ব্রিটিশ ক্যাবিনেট গঠিত হয়। ক্যাবিনেটের সদস্য সংখ্যা ২৫-৩০ জনের বেশি হয়না। কেবলমাত্র ক্যাবিনেটই রাজা বা রানীকে শাসন সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করতে পারে। ওয়েড ও ফিলিপস এর মতে , দেশের শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী রাজাকে পরামর্শ দেন। এ ব্যাপারে তাঁকে সাহায্য করার জন্য প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার যে সকল সদস্যকে আহ্বান করেন , তাঁরাই ক্যাবিনেটের সদস্য হন। 


ব্রিটিশ ক্যাবিনেটের ক্ষমতা ও কার্যাবলী :- 


বর্তমানে ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থার মধ্যমনি হল ক্যাবিনেট। অথচ এই সংস্থাটির কোন আইনগত ভিত্তি নেই।  কিন্তু তাও ইংল্যান্ডের শাসনকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে ক্যাবিনেট মূল দায়িত্ব পালন করে। ক্যাবিনেটের ক্ষমতা ও কার্যাবলীগুলি নিম্নরূপ :- 

১. নীতি নির্ধারণ সংক্রান্ত ক্ষমতা :- জেনিংস এর মতানুসারে ক্যাবিনেট হল মূলত একটি নীতি নির্ধারণকারী সংস্থা। ক্যাবিনেট জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অবস্থা পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি নির্ধারণ করে থাকে। প্রতিটি দপ্তরের মন্ত্রী থাকলেও মূল নীতি নির্ধারণ করে ক্যাবিনেট। নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিচার বিবেচনার কারণে ক্যাবিনেট মূলতঃ একটি দলীয় কমিটি হিসাবে কাজ করে। 

২. আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত ক্ষমতা :- প্রশাসনিক ক্ষেত্রে নীতি সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন। সেই বিষয়ে আইন প্রণয়ন করতে ক্যাবিনেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্যাবিনেটই আইনের প্রস্তাব প্রণয়ন করে , আইনের খসড়া উপস্থাপন করে এবং পার্লামেন্টে তা পরিচালনা করে। যেহেতু ক্যাবিনেটের সাথে সংখ্যা গরিষ্ঠের সমর্থন থাকে , সেহেতু আইন পাসের বিষয়টি সহজ হয়ে যায়। 


৩. পার্লামেন্টের কর্মসূচি নির্ধারণ সংক্রান্ত ক্ষমতা :- পার্লামেন্টের অধিবেশন আহ্বান করা , স্থগিত রাখা , পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা রাজা বা রানীর আছে। কিন্তু বাস্তবে ক্যাবিনেটই প্রকৃত ক্ষমতা প্রয়োগ করে। এমনকি পার্লামেন্টে কোন কোন বিল উপস্থাপন করা হবে , তাও নির্ধারণ করে ক্যাবিনেট। পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশনে রাজা বা রানী যে রাজকীয় ভাষণ প্রদান করেন - সে ক্ষেত্রেও রাজা বা রানী ক্যাবিনেটের সাথে আলোচনা করেন। 

৪. শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত ক্ষমতা :- আইনগত ভাবে রাজা বা রানী শাসন বিভাগের যাবতীয় ক্ষমতার অধিকারী। তবে ক্যাবিনেটের পরামর্শক্রমে ওই ক্ষমতা প্রযুক্ত হয়। বস্তুতঃপক্ষে ক্যাবিনেটই রাজা বা রানীর নামে দেশ শাসন করে। ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থার প্রাণকেন্দ্র হল ক্যাবিনেট। রামসে ম্যুর বলেছেন - '' ক্যাবিনেট হল রাষ্ট্ররূপ জাহাজের চালনীচক্র। '' এছাড়া বর্তমানে পার্লামেন্টের কাজকর্মের পরিধির বিস্তার ঘটেছে। তাই পার্লামেন্ট অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন দায়িত্ব ক্যাবিনেটের ওপর অর্পণ করে। 

৫. অর্থ ও বাজেট সংক্রান্ত ক্ষমতা :- সরকারের আয় - ব্যয় বা বাজেট সংক্রান্ত বিষয়েও ক্যাবিনেটের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। অর্থমন্ত্রী বাজেট পেসের আগে ক্যাবিনেটের সাথে আলোচনা করেন। ক্যাবিনেট অনুমোদন করলেই তা কমন্স সভায় পেস করা যায়। শাসন বিভাগের বিভিন্ন দপ্তরের ব্যয় - বরাদ্দের প্রস্তাবও ক্যাবিনেট বিবেচনা করে। 

৬. বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সংহতি স্থাপন :- শাসন বিভাগের কাজকর্ম বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়। ক্ষমতা ও অধিকার নিয়ে সরকারি দপ্তরগুলির মধ্যে বিরোধের সম্ভাবনা প্রবল। তাই ক্যাবিনেট বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে ক্ষমতার পরিধি নির্ধারণ করে এবং বিভিন্ন দপ্তরগুলির মধ্যে যোগসূত্র রক্ষা করে ও সামঞ্জস্য বিধান করে। বর্তমানে ক্যাবিনেট একদিকে রাজার সঙ্গে পার্লামেন্টের ও পার্লামেন্টের সাথে শাসন বিভাগের সংযোগসাধন করে। এছাড়াও ক্যাবিনেট জনগণের সাথে সরকারের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে। 

৭. অন্যান্য ক্ষমতা :- অন্যান্য বিষয়ে ক্যাবিনেটের ক্ষমতাগুলি হল - 
(ক ) জাতীয় বা আন্তর্জাতিক স্তরে কোনো সমস্যার সৃষ্টি হলে ক্যাবিনেট সে বিষয়ে আলোচনা করে ও ব্রিটিশ সরকারের নীতি নির্ধারণ করে। 
(খ ) আগামী দিনের পরিস্থিতি ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে পরিকল্পনা প্রণয়ন ক্যাবিনেটকে করতে হয়। 
(গ ) ক্যাবিনেট সরকারি কর্মচারীদের পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করে। 
(ঘ ) বিভিন্ন সরকারি কৃত্যক কমিশন কর্মচারীদের নিযুক্ত করে। কিন্তু তাদের বেতন , ভাতা ও চাকরির শর্তাদি নির্ধারণ করে ক্যাবিনেট। 
(ঙ ) যে সকল এলাকা এখনো ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত - সেই সকল এলাকাগুলিতে শাসন কার্য পরিচালনা করে ক্যাবিনেট। 

উপসংহার :- 

রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে , বর্তমানে ক্যাবিনেটের ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ক্রসম্যানের মতানুসারে , দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ব্রিটেনের শাসন ব্যবস্থাকে ক্যাবিনেট পরিচালিত না বলে প্রধানমন্ত্রী পরিচালিত বলা উচিত। কিন্তু ব্রিটিশ সংবিধান বিশেষজ্ঞরা সকলে এই মতের সাথে সহমত পোষণ করেন না। কেননা , প্রধানমন্ত্রী সর্বদা তাঁর সিদ্ধান্ত ক্যাবিনেটের উপর চাপিয়ে দিতে পারেন না। ক্যাবিনেটের কাজকর্মের উপর পার্লামেন্ট ও জনমতের প্রভাবকে অস্বীকার করা যায়না।   


 

You May Also Like

0 comments