Features of U.S. Federal System মার্কিন শাসন ব্যবস্থার বৈশিষ্ট।

by - December 13, 2021

Nature of U.S. Federal System 

Features of U.S. Federal System 

মার্কিন শাসন ব্যবস্থার বৈশিষ্ট। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার বৈশিষ্ট। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার প্রকৃতি। 


মার্কিন শাসন ব্যবস্থার বৈশিষ্ট সম্পর্কে আলোচনা করতে হলে প্রথমেই বলতে হয় তার যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর কথা। মার্কিন সংবিধানের প্রণেতাগণ এক শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকার গড়ে তোলার পক্ষপাতী ছিলেন। তবে ১৩ টি প্রাক্তন উপনিবেশ জাতীয় ঐক্য ও স্বার্থ এবং নিরাপত্তার কারণে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে গ্রহণ করা হয়েছে। মার্কিন সংবিধানে জাতীয় ও আঞ্চলিক স্তরে জাতীয় ও আঞ্চলিক সরকার গঠন করা হয়েছে। 


১. দ্বৈত সরকারের অস্তিত্ব :- 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় ও রাজ্যস্তরে দুই ধরণের সরকারের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়। উভয় সরকারই সংবিধান স্বীকৃত ক্ষমতার মধ্যে নিজ নিজ এলাকায় স্বাধীন ও স্বতন্ত্র। মার্কিন সংবিধানে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে অনুসরণ করে উভয় সরকারের মধ্যে ক্ষমতা বন্টিত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অঙ্গরাজ্যগুলির সংগঠন ভৌগোলিক নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। 

২. লিখিত সংবিধান :- 
যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে অনুসরণ করে মার্কিন সংবিধান লিখিত। পুরোপুরি লিখিত সংবিধান হওয়ার ফলে এখানে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে বিরোধের সম্ভাবনা নেই। তবে , বিভিন্ন শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি ও প্রথা মার্কিন রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে। 

৩. দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান :- 
মার্কিন সংবিধান বিশেষভাবে দুষ্পরিবর্তনীয় এবং এর সংশোধন পদ্ধতি অত্যন্ত জটিল। সংবিধান সংশোধনের জন্য কংগ্রেসের উভয় কক্ষের দুই - তৃতীয়াংশের সম্মতি ছাড়াও অঙ্গরাজ্যগুলির আইনসভার ন্যুনতম তিন - চতুর্থাংশের সম্মতি প্রয়োজন হয়। মার্কিন সংবিধান প্রকৃত অর্থেই জটিল। এই কারণে মার্কিন সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের অনন্য উদাহরণ হিসাবে গণ্য করা হয়। 


৪. যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সংবিধানের প্রাধান্য :- 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সকল ক্ষমতার একমাত্র উৎস হল সংবিধান। উভয় সরকারকেই সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শাসনকার্য পরিচালনা করতে হয়। মার্কিন সংবিধানের ৬(২) নং ধারায় সংবিধানের প্রাধান্যের ব্যাপারে সুস্পষ্ট উল্লেখ আছে। যে কোনো ব্যক্তি , প্রতিষ্ঠান এবং কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারসমূহ এবং তাদের সকল সংস্থাকে সংবিধান কর্তৃক নির্দিষ্ট এক্তিয়ারের মধ্যে থেকে কাজ করতে হয়। 

৫. সুপ্রীম কোর্টের প্রাধান্য :- 
মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের রক্ষাকর্তা ও ব্যাখ্যাকর্তা হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যেকোনো আইনসভা কর্তৃক প্রণীত আইন সংবিধান বিরোধী হলে সুপ্রিম কোর্ট তা বাতিল করে দিতে পারে। তা ছাড়া সুপ্রিম কোর্ট ন্যায় নীতির বিরোধী যেকোনো আইনকে বাতিল করে দিতে পারে। সুপ্রিম কোর্ট যেকোনো আইনের বৈধতা বিচার করতে পারে। আবার প্রশাসনিক নির্দেশের ক্ষেত্রেও সিদ্ধান্ত জারি করার চূড়ান্ত অধিকার আছে। 

৬. কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতার বন্টন :- 
যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার বৈশিষ্ট অনুসারে মার্কিন শাসন ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে ক্ষমতা বন্টিত হয়েছে। সংবিধানের কতকগুলি নির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন , শাসন ও বিচার বিষয়ক ক্ষমতা কেন্দ্রকে দিয়ে বাকি সকল ক্ষমতা যৌথভাবে রাজ্য সরকারগুলির হাতেও বন্টিত করা হয়েছে। জাতীয়তাবাদী চেতনা ও পুঁজিবাদী স্বার্থের বিকাশের দাবিকে মেনে নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। 


৭. দ্বৈত নাগরিকত্বের স্বীকৃতি :- 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায় দ্বৈত নাগরিকত্ব স্বীকৃত। প্রত্যেক ব্যক্তি একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এবং অন্যদিক দিয়ে ব্যক্তি যে রাজ্যে বসবাস করেন সেই অঙ্গরাজ্যেরও নাগরিক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় একদিকে জাতীয় ঐক্য ও নিরাপত্তার প্রয়োজন এবং অপরদিকে অঙ্গরাজ্যগুলির স্বাধিকার ও স্বাতন্ত্রের দাবিতে দ্বৈত আনুগত্যের ধারণা সৃষ্টি হয়েছে। 

৮. অঙ্গরাজ্যের জন্য স্বতন্ত্র সংবিধান :- 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলির জন্যও স্বতন্ত্র সংবিধানের অস্তিত্ব রয়েছে। তবে , মার্কিন সংবিধান বিরোধী কোনো বিধি - ব্যবস্থা অঙ্গরাজ্যের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা যায়না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যোগদানকারী প্রাক্তন উপনিবেশগুলি নিজেদের অধিকার কেন্দ্রের হাতে ছেড়ে দিতে রাজি হয়নি। তাদের এই প্রবণতা স্বতন্ত্র সংবিধানের মাধ্যমে প্রতিপন্ন হয়েছে। 

৯. অঙ্গরাজ্যের ভৌগোলিক অখন্ডতা :- 
যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় অঙ্গরাজ্যগুলির নাম ও সীমানা পরিবর্তনের ক্ষমতা এককভাবে জাতীয় সরকারের হাতে থাকে না। এর উদ্দেশ্য হল অঙ্গরাজ্যগুলির ভৌগোলিক অখন্ডতা রক্ষা করা। মার্কিন সংবিধান অনুসারে অঙ্গরাজ্যের মতামত ছাড়া এর এলাকা বা সীমানা পরিবর্তন করা যায়না। 

১০. দ্বি - পরিষদীয় আইনসভা :- 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট হল দ্বি - পরিষদীয় আইনসভার অস্তিত্ব। মার্কিন আইনসভা বা পার্লামেন্ট দ্বি - কক্ষ বিশিষ্ট। উচ্চ কক্ষের নাম সিনেট এবং নিম্ন কক্ষের নাম জন প্রতিনিধিসভা। প্রথমটি অঙ্গরাজ্যের এবং দ্বিতীয়টি জনপ্রতিনিধিমূলক কক্ষ। 

১১. জন প্রতিনিধি সভায় সমপ্রতিনিধিত্বের নীতি :- 
যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় আইন সভার উচ্চকক্ষ অঙ্গরাজ্যগুলির সমপ্রতিনিধিত্বের নীতির ভিত্তিতে গঠিত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ টি অঙ্গরাজ্যের প্রত্যেকটি থেকে ২ জন করে প্রতিনিধি নিয়ে সিনেট হল ১০০ জনের একটি কক্ষ। 

 

You May Also Like

0 comments