Distinction between Laws and the Conventions of the Constitution . আইন ও শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতির মধ্যে পার্থক্য।

by - December 17, 2021

Distinction between Laws and the Conventions of the Constitution .  

আইন ও শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতির মধ্যে পার্থক্য।  


আইন ও শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতির মধ্যে তত্ত্বগত ক্ষেত্রে পার্থক্য আছে। সাধারণ অর্থে আইন হল সুনির্দিষ্টভাবে রচিত এবং বিধিবদ্ধ নিয়ম - বিধি। এগুলি আদালত কর্তৃক স্বীকৃত ও বলবৎযোগ্য। কিন্তু শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলি আদালত কর্তৃক বলবৎযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য নয়। এগুলি আইনকে বাস্তবে কার্যকরী করতে সহায়তা করে। আইন ও শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলির মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ :-


১. উদ্ভবগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- আইনগুলি আলোচনার ভিত্তিতে আইনসভা কর্তৃক প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলি এভাবে তৈরী হয়না - এগুলি সমাজের বিবর্তনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে। শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলির মূল উৎস হল সমাজ , প্রচলিত প্রথা ও বিধি নিয়ম। কিন্তু আইনের একমাত্র উৎস হল আইনসভা। 

২. প্রকৃতিগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- আইন লিখিত , তাই এগুলি সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট। কিন্তু শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলি অস্পষ্ট ও অনির্দিষ্ট। শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলির ব্যাখ্যা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে এবং এর অর্থও ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু আইনগুলি একমাত্র আদালত কর্তৃক ব্যাখ্যা করা হয়। তাছাড়া আইনের অর্থ ও প্রকৃতি নিয়ে কোনোরূপ সংশয় বা সন্দেহ থাকে না। 


৩. পরিবর্তনগত ক্ষেত্রে উভয়ের পার্থক্য :- সমাজ পরিবর্তনশীল। সমাজের পরিবর্তনশীলতার সাথে সাথে শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলিরও পরিবর্তন ঘটে। এগুলি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো নীতি বা পন্থা অবলম্বন করা হয়না। কিন্তু আইনগুলি পরিবর্তিত হতে পারে একমাত্র আইনসভাতে। সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থনের ভিত্তিতে আইনগুলি পরিবর্তিত হয়। অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ পরিস্থিতির সাপেক্ষে অত্যন্ত্য দ্রুত আইন পরিবর্তন ও প্রণয়ন করা হয়। 

৪. আদালতের গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে পার্থক্য :- আইনগুলি সর্বদা আদালত কর্তৃক গ্রহণযোগ্য। আদালত আইন গ্রহণ করে তা প্রয়োগ করে। যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আইন লঙ্ঘন করলে তার বিরুদ্ধে আদালত শাস্তির বিধান করতে পারে। কিন্তু শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলি আদালত কর্তৃক গ্রণযোগ্য , বলবৎযোগ্য এবং স্বীকৃত নয়। তাই কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলি অমান্য করলে তাকে অভিযুক্ত করা যায়না। আইন ও শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতির মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে আদালতে আইনই সর্বদা গ্রহণযোগ্য। 

৫. মর্যাদার প্রশ্নে পার্থক্য :- আইন ও শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলির মধ্যে মর্যাদাগত ক্ষেত্রে পার্থক্য বর্তমান। যেহেতু আইন আদালত কর্তৃক গ্রহণযোগ্য ও বলবৎযোগ্য সেহেতু আইনের মর্যাদা শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতির তুলনায় অনেক বেশি মর্যাদাপূর্ণ। আইন অমান্য করলে আদালত আইনভঙ্গকারীর শাস্তির বিধান করতে পারে ; কিন্তু শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি অমান্য করার ক্ষেত্রে অমান্যকারীকে কোনোরূপ শাস্তি প্রদান করা যায়না। তাই শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিগুলির মর্যাদা আইনের তুলনায় অনেক কম। 

৬. জেনিংসের মত :- আইন প্রয়োজনমত প্রবর্তন , পরিবর্তন করা যায় ও জরুরি সময়ের ভিত্তিতে জরুরি আইন অত্যন্ত দ্রুত প্রবর্তন করা যায়। সুপরিকল্পিতভাবে প্রয়োজনের ভিত্তিতে আইন তৈরী করা যায়। কিন্তু শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতির ক্ষেত্রে তা ইচ্ছামত সৃষ্টি করা যায়না। এগুলি সুদীর্ঘকাল ধরে ক্রমবিবর্তনের ধারায় গড়ে ওঠে। আইনগুলিকে সংক্ষিপ্ত আকারে বিন্যস্ত করা যায় ; কিন্তু শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিকে এভাবে বিন্যস্ত করা যায়না। 

পরিশেষে বলা যায় , বর্তমানে আইন ও শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতির মধ্যে তেমন গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য আছে বলে মনে করা হয়না। আইন বিশেষজ্ঞদের কাছে এই বিষয়দুটির পার্থক্য থাকলেও সাধারণ মানুষ ও সাধারণ প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে এর সেরকম কোনো পার্থক্য নেই। 


You May Also Like

0 comments