Pages

Powered by Blogger.
1ST SEMESTER SUGGESTION 2 ND YEAR SUGGESTION 2ND SEMESTER 3RD SEMESTER BENGALI NOTES CU suggestion. EDUCATION NOTES ENGLISH COMPULSORY GBU Suggestion. HISTORY EUROPE & WORLD HISTORY NOTES POL SC NOTES SOCIOLOGY NOTES WBCS 2020

NANDAN DUTTA

A new approach for exam notes .

দলগত নির্দেশনার সুবিধা ও অসুবিধা। 

Advantages and disadvantages of Group Guidance . ( In Bengali ) . 




দলগত নির্দেশনার সুবিধা :- 


১. শ্রম , অর্থ ও সময়ের সাশ্রয় :- দলগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় যেহেতু একসঙ্গে বহু মানুষকে নির্দেশনা প্রদান করা যায় , সেহেতু দলগত নির্দেশনার ক্ষেত্রে শ্রম , অর্থ ও সময় - সবকিছুর সাশ্রয় হয়। 

২. সদস্যদের পারস্পরিক ক্রিয়া - প্রতিক্রিয়ার সুযোগ :- দলগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী সকল সদস্যগণ পরস্পরের সঙ্গে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া করতে পারে। এর ফলে সদস্যদের মধ্যে অভিজ্ঞতার পারস্পরিক সঞ্চালন ঘটে। 

৩. প্রতিরোধমূলক নির্দেশনা প্রদান সম্ভব :- যারা নির্দিষ্ট সমস্যায় আক্রান্ত কেবলমাত্র তাদেরকেই ব্যক্তিগত নির্দেশনা প্রদান করা হয়। কিন্তু দলগত নির্দেশনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে অবগত করা সম্ভব এবং এর ফলে শিক্ষার্থীরা সমস্যা সম্পর্কে প্রাক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারে। 

৪. সমস্যা সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির ফলে অভিজ্ঞতালাভ সম্ভব :- দলগত নির্দেশনার মাধ্যমে সমস্যা সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির উদ্ভব ঘটে। এর ফলে ব্যক্তি সমস্যা সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে পরিচিত হতে পারে এবং তার অন্তর্দৃষ্টির বিকাশ ঘটে। 

৫. শিক্ষার্থী সংক্রান্ত তথ্য :- দলগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় যিনি নির্দেশনা পরিচালনা করেন , তিনি একইসঙ্গে বহু শিক্ষার্থীর সংস্পর্শে আসার সুযোগ পান এবং তাদের বহুবিধ সমস্যা সম্পর্কে অবগত হওয়ার সুযোগ পান। এই তথ্য বিভিন্ন শিক্ষামূলক ও বৃত্তিমূলক ও ব্যক্তিত্ব সংক্রান্ত ক্ষেত্রে গবেষণার কাজে লাগে। 

৬. দলগত সংহতি বৃদ্ধি :- দলগত নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তি উপলব্ধি করে একসাথে বহু ব্যক্তি তার মত সমস্যায় আক্রান্ত। নির্দেশনা ও দলগত আলোচনার মাধ্যমে বহুবিধ সমাধানসূত্র উঠে আসে। ব্যক্তি সেই সকল সমাধানসূত্র প্রয়োগ করে তার সমস্যা সমাধান করতে পারে। এর দলগত নির্দেশনার প্রতি ব্যক্তির আস্থা গড়ে ওঠে এবং দলগত সংহতি বৃদ্ধি পায়। 

৭. সমস্যা সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন :- দলগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তি অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। এর ফলে সমস্ত ব্যক্তিবর্গ নিজেদের মধ্যে তাদের ভিন্ন ভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করতে পারেন। সমস্যা সম্পর্কে তাদের উপলব্ধি গভীর ও সামগ্রিক হয়। ফলে সমস্যার সমাধান সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন ঘটে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

দলগত নির্দেশনার অসুবিধা :- 


১. দলগত নির্দেশনায় একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু তাদের সকলের সমস্যা এক প্রকারের হয়না। তাই দলগত নির্দেশনায় সকলে উপকৃত হওয়ার সুযোগ পান না। 

২. বহু ক্ষেত্রে দেখা যায় , সমস্যা এক হলেও তার কারণ ভিন্ন ভিন্ন। ফলে এক ধরণের সমাধানসূত্র সকলের কাজে আসেনা। 

৩. দলগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় ব্যক্তির সমস্যাকে গভীরভাবে উপলব্ধি না করে সাধারণ প্রতিষ্ঠিত সূত্রের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়। ফলে একক ব্যক্তির ক্ষেত্রে তা কার্যকরী না'ও হতে পারে। 

৪. দলগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহনকারী ব্যক্তি যদি অন্তর্মুখীন হন তাহলে তার সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে আলোচনা করার সুযোগ তৈরী হয়না। 

৫. কোনো ব্যক্তির গোপন কোনো সমস্যা থাকলে তা কখনই দলগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় আলোচনা করা সম্ভব না। এই ধরণের সমস্যার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত নির্দেশনা উপযুক্ত। 

৬. দলগত নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় ভিন্ন ভিন্ন মত উপস্থিত হলে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। 

৭. দলগত নির্দেশনায় যেহেতু একসঙ্গে অনেকে অংশগ্রহণ করেন সেহেতু অনেক সময় তাঁদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়না। 

৮. অনেকে তাদের ব্যক্তিগত সমস্যা দলগতভাবে প্রকাশ করতে চান না। তাদের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত নির্দেশনা অধিক উপযুক্ত।    

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো           

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

দলগত নির্দেশনার বিভিন্ন কৌশল / উপায় / পদ্ধতিগুলি আলোচনা কর। 

Group Guidance . Different techniques / methods of group guidance . ( In Bengali ) .




দলগত নির্দেশনার বিভিন্ন কৌশল বা উপায়। 

১. দলগত আলোচনা :-  নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো অভিজ্ঞ ও যোগ্য ব্যক্তি কর্তৃক সঞ্চালিত বিশেষ ধরণের আলোচনা যা একই সাথে একাধিক ব্যক্তিকে বৃত্তি ,জীবনের নানান সমস্যা - ইত্যাদি সম্পর্কে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এই ধরণের আলোচনা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত না হলেও নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যকেন্দ্রিক হয়ে থাকে। 

২. দলগত প্রতিবেদন :- এই ধরণের পদ্ধতিতে ব্যক্তিদেরকে বিভিন্ন ছোট ছোট দলে বিভক্ত করে দিয়ে সমস্যা ও তার সমাধান সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্নভাবে প্রতিবেদন পেশ করতে বলা হয়। তারপর সবগুলি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সাধারণ সূত্র নির্ধারণ করা হয়। এর ফলে উপস্থিত সকল ব্যক্তি সমস্যা সমাধানের বিভিন্ন দিকগুলি সম্পর্কে অবগত হতে পারেন।   

৩. বক্তব্য উপস্থাপন :- মূলতঃ শিক্ষা , বৃত্তি , ব্যক্তিত্ব গঠন - ইত্যাদি ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ও দক্ষ ব্যক্তি দ্বারা বক্তব্য উপস্থাপনের মাধ্যমে দলগত নির্দেশনা প্রদান করা যায়। এই ধরণের পদ্ধতির সাহায্যে একসঙ্গে বহুসংখ্যক মানুষকে নির্দেশনা প্রদান করা যায়। এই ধরণের পদ্ধতিতে তথ্য প্রদান ও নির্দিষ্ট বিষয়ে পথনির্দেশ দেওয়া হয়। 

৪. Question Box :- এটি একটি প্রচলিত পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে দলে উপস্থিত ব্যক্তি তাদের সমস্যা বা প্রশ্নগুলিকে একটি কাগজে লিখে নির্দিষ্ট বাক্সে জমা করেন। কোনো শিক্ষক বা অভিজ্ঞ ব্যক্তি বা নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষভাবে দক্ষ ব্যক্তি সেইসকল প্রশ্নগুলির মধ্যে থেকে যুক্তিপূর্ণ সমস্যা ও প্রশ্নগুলিকে খুঁজে নিয়ে তার উত্তর প্রদান করেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৫. নাটক - উপস্থাপন :- নির্দিষ্ট বিষয়ক কেন্দ্র করে নাটক উপস্থাপনের মাধ্যমে আকর্ষণীয়ভাবে সমস্যা ও তার সমাধানকে একাধিক মানুষের সামনে উপস্থিত করা হয়। মূলতঃ মক ইন্টারভিউ , সামাজিক বিভিন্ন প্রথা ও কুসংস্কার ,স্বাস্থ্য সচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি পালন - ইত্যাদি বিষয়ে নাটক উপস্থাপন কার্যকর ভূমিকা পালন করে। 

৬. কর্ম সম্মেলন :- কোনো একটি নির্দিষ্ট বৃত্তি বা কর্মে সফল ব্যক্তি কর্ম প্রত্যাশীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর ,জিজ্ঞাসা - ইত্যাদির আলোচনা করে থাকেন। এই ধরণের প্রক্রিয়ায় কর্মের বৈশিষ্ট , কর্ম প্রাপ্তির সুযোগ , নির্দিষ্ট কর্মের বর্তমান চাহিদা - ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এই জাতীয় কর্ম সম্মেলনের মাধ্যমে কর্ম প্রত্যাশী ব্যক্তিরা ইতিবাচকভাবে উপকৃত হয়ে থাকেন। এছাড়াও এই ধরণের কর্ম সম্মেলনে নির্দিষ্ট কর্ম সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করা হয়ে থাকে। 

৭. Audio visual ও Multimedia - র মাধ্যমে নির্দেশনা প্রদান :- চলচ্চিত্র , রেডিও , টেপ রেকর্ডার , পোস্টার - ইত্যাদির মাধমেও দলগত নির্দেশনা প্রদান করা হয়। বিভিন্ন চলচ্চিত্র , তথ্যচিত্র  ইত্যাদির মাধ্যমে বাস্তব সমস্যাগুলি তুলে ধরে উপযুক্ত পথনির্দেশ প্রদান করা হয়। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প ,সুযোগ সুবিধা - ইত্যাদিকে জগণের মধ্যে প্রচারের ক্ষেত্রে এটি একটি কার্যকরী মাধ্যম। এর দ্বারা মানুষ বিভিন্ন বৃত্তি সম্পর্কে , সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে , বিভিন্ন বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ সম্পর্কে -জানতে পারেন। 

৮. নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যকেন্দ্রিক ভ্রমণ :- নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যের পরিপ্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান , ঐতিহাসিক শিক্ষামূলক স্থান বা কোনো সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান , নির্দিষ্ট কর্মকেন্দ্র - অফিস - কারখানা - উৎপাদন কেন্দ্র - ইত্যাদি স্থানে ভ্রমণের মাধ্যমে দলগত নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এই ধরণের ভ্রমণমূলক নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তি নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে সরাসরি ও হাতে কলমে অভিজ্ঞতালাভ করতে পারেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো          

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

দলগত নির্দেশনা কাকে বলে ? 

Definition of Group Guidance . ( In Bengali ) . 




দলগত নির্দেশনা কাকে বলে ? 

দলগত নির্দেশনার সংজ্ঞা :- 


কিছু সমস্যা এমন থাকে যা দলগতভাবে মানুষকে আক্রমণ করে। একসঙ্গে বহুসংখ্যক মানুষ এর দ্বারা আক্রান্ত হন। এই ধরণের সমস্যামূলক পরিস্থিতির ক্ষেত্রে দলগতভাবে যে ধরণের নির্দেশনা প্রদান করা হয় - তাকেই বলে দলগত নির্দেশনা। 

সামাজিক বিভিন্ন সমস্যা , পেশাগত চাহিদা - এই ধরণের সমস্যাগুলি সর্বজনীন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ধরণের সমস্যাগুলির একক বা ব্যক্তিগত সমাধান সম্ভব নয় - এজন্য দলগত প্রয়াস প্রয়োজন হয়। এই ধরণের সমস্যার ক্ষেত্রে দলগত নির্দেশনার প্রয়োজন হয়। 

Jones এর মতে ,যে ধরণের নির্দেশনা একাধিক ব্যক্তিকে একসঙ্গে দেওয়া হয় - তাকেই বলে দলগত নির্দেশনা। এক্ষেত্রে উল্লেখ করা প্রয়োজন দলগত নির্দেশনা বলতে কোনো একটি নির্দিষ্ট দলকে নির্দেশনা প্রদান করা বোঝায় না ; দলগত নির্দেশনা হল দলের মধ্যে প্রতি একক ব্যক্তির সাধারণ নির্দেশনা। 

শিক্ষা পরিকল্পনা , বৃত্তি পরিকল্পনা , বৃত্তি চয়নের পদ্ধতি , ব্যক্তিত্ব সংক্রান্ত সমস্যা - এই ধরণের বিষয়গুলির ক্ষেত্রে দলগত নির্দেশনা খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো
    

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

নির্দেশনার প্রকারভেদ। বিভিন্ন প্রকার নির্দেশনা। 

Different types of Guidance . ( In Bengali ) 




নির্দেশনার প্রকারভেদ। বিভিন্ন প্রকার নির্দেশনা। 

ব্যক্তিকে জীবন সার্থক করে তুলতে বিভিন্ন প্রকার ভূমিকা গ্রহণ করতে হয়। এই বিভিন্ন প্রকার ভূমিকার জন্য ব্যক্তিজীবনে প্রয়োজন হয় বিভিন্ন প্রকার নির্দেশনার। নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তি সমস্যামূলক পরিস্থিতিকে উপলব্ধি করে তার সমাধানের জন্য সম্ভাব্য পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তাই ব্যক্তিজীবনে নির্দেশনা বিভিন্ন প্রকারের। বিভিন্ন প্রকার নির্দেশনাগুলি হল - 

১. শিক্ষামূলক নির্দেশনা : - 
শিক্ষা মানুষকে জীবনে অভিযোজন ঘটাতে সাহায্য করে। ব্যক্তি ও সমাজজীবনে উদ্ভুত বিভিন্ন সমস্যাগুলি শিক্ষার মাধ্যমে যথার্থভাবে উপলব্ধি করতে পারে ও তার প্রতিকারের জন্য সম্ভাব্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। বর্তমান সময়ে শিক্ষার পাঠক্রম ও শিক্ষা প্রযুক্তির উন্নতির ফলে তত্ত্ব ও তথ্যের ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষা নির্দেশনা বিশেষ প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। শিক্ষা নির্দেশনা ব্যক্তিকে পাঠক্রম চয়ন , পাঠক্রমের সঙ্গে সঙ্গতি স্থাপন , অসফলতার কারণ ও তার প্রতিকার , অমনোযোগিতা , শিক্ষা ও বৃত্তির সম্পর্ক - ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা করে। 

২. বৃত্তিগত নির্দেশনা :- 
যে ধরণের নির্দেশনা ব্যক্তিকে তার বৃত্তির সঙ্গে অভিযোজন ঘটায় এবং অভিযোজনে অংশগ্রহণ করতে সাহায্য করে তাকে বৃত্তিগত নির্দেশনা বলে। বৃত্তিগত নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তি তার চাহিদা , আগ্রহ ও সামর্থ্য অনুযায়ী বৃত্তি নির্বাচনে সফলভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে। এছাড়াও বৃত্তিগত নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তিকে তার যোগ্যতা ও সামর্থ্য সম্পর্কে অবগত করা যায় এবং বৃত্তিগত ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সঙ্গে পরিচয় ঘটিয়ে সম্ভাব্য সমাধানের পথনির্দেশ দেওয়া যায়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. সামাজিক নির্দেশনা :- 
সামাজিক নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তিকে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ায় সফলভাবে অংশগ্রহণ করানো সম্ভব। সামাজিক সম্পর্ক ও কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করা , প্রতিবেশী ও আত্মীয় - বন্ধুদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা , সামাজিক পরিবর্তন ও বিবর্তনে অংশগ্রহণ করা - ইত্যাদি বিভিন্ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে সামাজিক নির্দেশনা ব্যক্তিকে সমাজের উপযুক্ত সদস্য হিসাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে। 

৪. নৈতিক নির্দেশনা :- 
মানব জীবনে নৈতিক মূল্যবোধ স্থাপন , ঠিক - ভুলের জ্ঞান , অবাঞ্চিত আচরণ প্রতিহত করা - ইত্যাদি হল নৈতিক নির্দেশনার লক্ষ্য। নৈতিক নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তিকে  - অপরাধমূলক কাজ , সমাজবিরোধী কাজ , নেশাগ্রস্থতা - ইত্যাদি থেকে দূরে রাখা সম্ভব। এছাড়াও নৈতিক নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তি নিজের সুচরিত্র গঠনে সহায়তা লাভ করে। 

৫. ধর্মীয় নির্দেশনা :- 
ধর্ম মানুষের সামাজিক , আধ্যাত্মিক জীবনের একটি প্রধান উপাদান। ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব ও চরিত্র গঠনে ধর্ম অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করে। ধর্মীয় নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তি ধর্মের বিভিন্ন তত্ত্ব , বাস্তব জীবনে তার প্রয়োগ , ধর্মের বিভিন্ন উপাদান - ইত্যাদি সম্পর্কে অবগত হতে পারে। ধর্মীয় নির্দেশনার প্রধান উদ্দেশ্য হল ব্যক্তির মধ্যে থাকা কুসংস্কারগুলিকে দূর করে নৈতিক অনুশাসনের মাধ্যমে ব্যক্তিকে সমাজজীবনের জন্য উপযুক্ত করে তোলা। 

৬. পারিবারিক নির্দেশনা :- 
প্রতিটি সমাজে বসবাসকারী প্রতিটি ব্যক্তির কিছু সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকে। সামাজিক দায়িত্বের সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তিকে পারিবারিক দায়িত্বও পালন করতে হয়। পারিবারিক নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তিকে তার পরিবারের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যগুলো সম্পর্কে অবগত করে তোলা সম্ভব হয়। পারিবারিক নির্দেশনার মাধ্যমে পরিবার পরিকল্পনা , সন্তান প্রতিপালন , যৌন জীবন - ইত্যাদি সম্পর্কে সচেতন করে তোলা যায় এবং তার কাছ থেকে বাঞ্ছিত আচরণ প্রত্যাশা করা যায়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. অবকাশ যাপনের নির্দেশনা :- 
প্রতিটি মানুষের জীবনে অবকাশ যাপন গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই অবকাশ যাপনকে যদি গঠনমূলক কাজের মাধ্যমে পরিচালিত করা যায় তাহলে তা ব্যক্তি ও সমাজের পক্ষে কল্যাণকর হয়। অবকাশ যাপনের নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তিকে সৃজনশীল কাজ , সেবামূলক কাজ - ইত্যাদি ক্ষেত্রে অনুপ্রাণিত করে তোলা সম্ভব। 

৮. স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নির্দেশনা :- 
সুস্থ দেহ ছাড়া কোনো ব্যক্তির পক্ষেই যথার্থভাবে ব্যক্তিগত , পারিবারিক ও সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করা সম্ভব নয়। সমাজের সঙ্গে সার্থক অভিযোজন ও জীবনের লক্ষ্যগুলি পূরণের জন্য সুস্থ দেহ একান্তভাবে কাম্য। স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তিকে সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় জীবনযাত্রা সম্পর্কে অবগত করা যায় ; বিভিন্ন রোগ ও তার প্রতিকার এবং প্রতিরোধ সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা যায় , বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিধি ও টীকাকরণ - ইত্যাদি সম্পর্কে অবগত করে তাকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করে তোলা যায়। 

৯. ব্যক্তিগত নির্দেশনা :- 
যে ধরণের নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তিজীবনের ব্যক্তিগত সমস্যা , প্রক্ষোভিক সমস্যা - ইত্যাদি বিষয়ে অবগত করা যায় ও সহায়তা করা যায় - তাকে ব্যক্তিগত নির্দেশনা বলা হয়। প্রায় প্রতিটি মানুষের মধ্যে হতাশা , হীনমন্যতা , দুশ্চিন্তা , ভয় - ইত্যাদি লক্ষ্য করা যায়। সমাজ জীবনের বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্যা বেড়েই চলেছে। ব্যক্তিগত নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তির মধ্যে থাকা প্রক্ষোভিক সমস্যাগুলিকে দূর করা যায়। ব্যক্তিগত নির্দেশনা ব্যক্তিকে জীবন সম্পর্কে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে সাহায্য করে। 

১০. বার্ধক্য নির্দেশনা :- 
মানুষ বার্ধক্যে উপনীত হলে তার সামাজিক , পারিবারিক , শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। দৈহিক শক্তি হ্রাস পায় , উপার্জন হ্রাস পায় বা বন্ধ হয়ে যায় এবং বার্ধক্যে উপনীত হওয়া ব্যক্তি পরনির্ভরশীল হয়ে পড়েন। এই সময় পরিবারের সদস্য , বন্ধু ও আত্মীয়বর্গের সমর্থন ও নৈকট্যলাভের আশায় তাঁরা উদগ্রীব হয়ে পড়েন। বার্ধক্য নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তিকে বার্ধক্যদের সমস্যাগুলি সম্পর্কে অবগত করে বৃদ্ধদের প্রতি তাদের যথার্থ দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে উৎসাহিত করে তোলা হয়। 

১১. নাগরিকতার নির্দেশনা :- 
একজন নাগরিক হিসাবে প্রতিটি ব্যক্তির নির্দিষ্ট দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকে। নাগরিকতার নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তিকে নাগরিকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে অবহিত করে তাকে একজন সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তোলা যায়। 

১২. সাংস্কৃতিক নির্দেশনা :- 
প্রতিটি সমাজের নিজস্ব সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট বর্তমান। সংস্কৃতি ব্যক্তির সামাজিক ও বৃত্তিগত জীবনে এবং ব্যক্তিত্ব গঠনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তারকারী উপাদান। সাংস্কৃতিক নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তিকে সমাজে প্রচলিত সংস্কৃতি সম্পর্কে অবগত করা যায়। ব্যক্তিকে প্রচলিত সংস্কৃতি সম্পর্কে অবগত করে সংস্কৃতির সঞ্চালন ঘটানো সম্ভব হয় এবং সংস্কৃতির সঙ্গে ব্যক্তির অভিযোজন ঘটানো সম্ভব হয়।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

হোসেনসাহি বংশ : বাংলার ইতিহাসে হোসেনসাহি বংশের অবদান। 

বাংলার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসে হোসেনসাহি বংশের অবদান। 



 

বাংলার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসে হোসেনসাহি বংশের অবদান। 

বাংলায় হোসেনশাহি শাসনের সূচনা ছিল দুই ভাবে উল্লেখযোগ্য - অরাজকতার অবসান ও গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা। বাংলায় ইলিয়াসশাহি শাসনের পর হাবসি শাসন শুরু হয়। কিন্তু হাবসি শাসনে বাংলায় রাজনৈতিক , সামাজিক , সাংস্কৃতিক - সর্বক্ষেত্রে অরাজকতা দেখা যায়। প্রায় অর্ধ - শতাব্দীর শাসনকালে ( ১৪৯৩ - ১৫৩৮ খ্রিস্টাব্দ ) হোসেনসাহি সুলতানগন অরাজকতা দমন করে বাংলার সর্বত্র এক শান্তি ও সমৃদ্ধির পরিবেশ রচনা করেছিলেন। হোসেনসাহি শাসকদের মধ্যে আলাউদ্দিন হোসেন শাহের রাজত্বকাল ছিল সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

১. অরাজকতা দমন ও স্থিতিশীল শাসনের প্রতিষ্ঠা :- 
হাবসি শাসনকালে বাংলায় যে অরাজকতা দেখা দিয়েছিল হোসেনসাহি শাসকেরা সেই অরাজকতা দমন করে এক স্থিতিশীল শাসনের প্রতিষ্ঠা করেন। এক্ষেত্রে সুলতান হোসেন শাহের অবদান সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য। আলাউদ্দিন হোসেন শাহ ও নসরৎ শাহের রাজত্বকালকে বি এন রায় মধ্য যুগের বাংলার সর্বাপেক্ষা গৌরবজনক অধ্যায় বলে অভিহিত করেছেন। এই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ফলে বাংলার সর্বত্র অর্থনৈতিক , সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে উন্নয়ন বিকশিত হয়।

২. বাংলার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা :- 
হোসেনসাহি শাসকগণ দিল্লির সুলতান ও পার্শ্ববর্তী শক্তিশালী রাজ্যগুলির হাত থেকে বাংলার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সমর্থ হয়েছিলেন। এমনকি সিকান্দার আক্রমণকে সাফল্যের সঙ্গে প্রতিহত করেন হোসেনসাহি শাসকেরা। বাংলাকে দিল্লির সুলতানি শাসনের নিরপেক্ষ শক্তি হিসাবে গড়ে তুলতে হোসেনসাহি শাসকদের অবদান অনস্বীকার্য। 

৩. হিন্দু -মুসলিম সমন্বয়ের নীতি :- 
সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণ ও নিরাপত্তাবিধানের জন্য হোসেনসাহি শাসকেরা এক ধর্মনিরপেক্ষ শাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। প্রশাসন ও জনগণের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনের জন্য হিন্দুদের প্রশাসনিক বিভিন্ন পদে নিয়োগ করা হয়েছিল। সমকালীন বাংলার ইতিহাসে এই নিরপেক্ষতার নীতি ছিল অপরিহার্য। ঐতিহাসিক তরফদার বলেছেন - Such a secular policy was inherent in the logic of Bengal History. । এই প্রসঙ্গে সেনাপতি গৌড় মল্লিক , চিকিৎসক মুকুন্দ , সচিব রূপ গোস্বামী ও সনাতন গোস্বামী - প্রমুখের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। 

৪. সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণ :- 
হুসেনসাহি আমলে বাংলার রাষ্ট্রীয় সীমানা পশ্চিমে ত্রিহুত , দক্ষিণ - পশ্চিমে উড়িষ্যার কিছু অংশ , উত্তর - পূর্বে কুচবিহার ও দক্ষিণে চট্টগ্ৰাম পর্যন্ত সম্প্রসারিত ছিল। হোসেন শাহ ও নসরৎ শাহ আফগান শক্তিকে নিয়ে একটি শক্তিসংঘ গঠন করেন যা সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণ ও নিরাপত্তাবিধান - উভয় ক্ষেত্রেই কার্যকরী হয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৫. জাতীয় চেতনার বিকাশ :- 
হুসেনসাহি আমলে ধর্মনিরপেক্ষ প্রশাসন ও প্রশাসনিক স্থিতাবস্থা জাতীয় চেতনার বিকাশে সহায়ক হয়।হুসেনশাহি শাসকেরা বাংলার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেছিলেন। এর ফল হিসাবে , বাংলার রাজনৈতিক ক্ষেত্রে হিন্দু - মুসলিম সমন্বয়সাধন তৈরী হয় ; যা বাংলার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে জাতীয় চেতনার বিকাশে সহায়ক হয়ে ওঠে। হিন্দু - মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ যৌথভাবে বাংলার বিকাশে আত্মনিয়োগ করেন। 

৬. সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে নবজাগরণ :- 
হোসেনসাহি আমলে বাংলার সাহিত্য ও সংস্কৃতি উত্তর ভারতের প্রভাবমুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে পথ চলা শুরু করে। কেবলমাত্র স্থানীয় মনীষার উপর ভিত্তি করে সাহিত্য ও সংস্কৃতি সমৃদ্ধ হয়। হোসেনসাহি শাসকেরা এই নতুন সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতা করেন। এই সময় বাংলা ভাষা ও ব্রাহ্মণ্য ধর্মের পুনরুত্থান ঘটে। এছাড়াও এই সময়কালের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল চৈতন্যদেবের আবির্ভাব। 

৭. সাহিত্যে উৎকর্ষতা :- 
এই সময়কালে সৈয়দ আলাওল ও দৌলত কাজীর রচনায় ভাববাদের প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়। সংস্কৃত ভাষাও উৎকর্ষতা লাভ করে। মালাধর বসু , যশোরাজ খাঁ ,কবীন্দ্র পরমেশ্বর , শ্রীধর , বিজয় গুপ্ত - প্রমুখের নাম সাহিত্য ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। হোসেন শাহের পৃষ্ঠপোষকতায় মালাধর বসু ভগবৎ গীতার বাংলা অনুবাদ করেন। এই কাজের জন্য হোসেন শাহ তাঁকে ' গুণরাজ খাঁ ' উপাধি প্রদান করেন। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকীর্তিগুলি হল - কৃষ্ণদাস কবিরাজের ' চৈতন্যচরিতামৃত ' , বিপ্রদাসের ' মনসামঙ্গল ' ও জয়ানন্দের ' চৈতন্যমঙ্গল ' - ইত্যাদি। সংস্কৃত সাহিত্য , দর্শন , স্মৃতিশাস্ত্র , ব্যাকরণ , ন্যায়শাস্ত্র - ইত্যাদি ক্ষেত্রে নবদ্বীপ সেই সময়ে পীঠস্থান হয়ে উঠেছিল। 

৮. স্থাপত্যশিল্পের বিকাশ :- 
হুসেনশাহী আমলে বাংলার স্থাপত্য শিল্প বিশেষ উৎকর্ষতা লাভ করে। গৌড়ের গুণমন্ত মসজিদ ,বড়সোনা মসজিদ , হোসেন শাহের সমাধির উপর এক লক্ষ টাকা ব্যয় করে নির্মিত একলাখি মসজিদ - ছিল এই যুগের স্থাপত্য শিল্পের সর্বশ্রেষ্ঠ নিদর্শন। ঐতিহাসিক ফার্গুসন বড়সোনা মসজিদকে গৌড়ের সর্বোৎকৃষ্ট সৌধ বলে উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও এই সময়ে অগণিত মসজিদ , মক্তব , মাদ্রাসা , খানকা , প্রাসাদ , দরগা - ইত্যাদি গড়ে ওঠে। 

৯. অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি :- 
হোসেনসাহি আমলে স্থানীয় ও বহির্বাণিজ্য বৃদ্ধি পায়। সমুদ্রপথে শ্রীলংকা , ইন্দোচীন , ইন্দোনেশিয়া , ব্রহ্মদেশ , সুমাত্রা - ইত্যাদি দেশের সঙ্গে সমুদ্রপথে বাণিজ্য চলতো। উপকূলবর্তী শহরগুলো পণ্য কেনাবেচার গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। গৌড় , সপ্তগ্রাম , চট্টগ্রাম - ইত্যাদি শহরগুলি স্থানীয় বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। এছাড়াও এই সময়কালে কৃষির উন্নয়ন সাধিত হয়। এইভাবে ব্যবসা - বাণিজ্য ও কৃষির উন্নতি - উভয়ের সমৃদ্ধির ফলে অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। 

১০. ভক্তিবাদের সূচনা ও ভাবজগতে বিপ্লব :- 
বাংলার ভাবজগৎ ও আধাত্মিকতার ক্ষেত্রে হোসেনসাহি যুগ তাৎপর্যপূর্ণ। এই যুগেই চৈতন্যদেবের আবির্ভাব ঘটে। শ্রীচৈতন্যদেব প্রেমধর্মের প্রচার করে বাংলার সাংস্কৃতিক জগতে এক নবজাগরণ সৃষ্টি করেন। সুলতান হোসেন শাহ ছিলেন শ্রীচৈতন্যদেবের মানবধর্ম ও প্রেমধর্ম প্রচারের পরম পৃষ্ঠপোষক। বস্তুতঃ হোসেনসাহি শাসকদের উদার ধর্মীয় নীতির ফলেই বাংলায় ভক্তিবাদের বিশেষ বিস্তার ঘটে। কবীন্দ্র পরমেশ্বর হোসেন শাহকে ' কৃষ্ণের অবতার ' বলে অভিহিত করেছেন। এছাড়াও ধর্মীয় উদারনীতি গ্রহণের কারণে হোসেন শাহকে ' বাংলার আকবর ' রূপেও অভিহিত করা হয়। 

পরিশেষে বলা যায় , হোসেনসাহি রাজত্বকাল প্রায় অর্ধশতাব্দীকাল যাবৎ যে রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা ও বাংলার স্বাধীনতা রক্ষা করতে সমর্থ হয়েছিল তার ফলে বাংলার রাজনৈতিক , সামাজিক , সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক জগতে নবজাগরণের সূত্রপাত হয়। হোসেনসাহি শাসকেরা ধর্মীয় উদারনীতি গ্রহণ করে বাংলার নিজস্ব সংস্কৃতি বিকাশে সহায়ক হয়েছিলেন - এটিই ছিল হোসেনসাহি বংশের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান।    

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো                        

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

ইলিয়াসশাহি বংশ : বাংলার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসে ইলিয়াসশাহি বংশের অবদান। 

ইলিয়াসশাহি বংশের রাজনৈতিক গুরুত্ব আলোচনা কর। 

বাংলার ইতিহাসে ইলিয়াসশাহি বংশের গুরুত্ব আলোচনা কর।    




বাংলায় ইলিয়াসশাহি বংশের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ। তিনি দিল্লির নিয়ন্ত্রণমুক্ত এক স্বাধীন শাসনের প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলায় ইলিয়াসশাহি রাজবংশ দুটি ধারায় রাজত্ব করে - প্রথমটি ছিল ১৩৪২ থেকে ১৪১৫ খ্রিস্টাব্দ এবং দ্বিতীয়টি ছিল ১৪৪২ থেকে ১৪৮৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। ইলিয়াসশাহি রাজবংশের এই দেড়শো বছরের শাসনে বাংলার রাজনৈতিক , সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ পরিবর্তন ও উন্নতি সাধিত হয়। বাংলার রাজনৈতিক , সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ইলিয়াসশাহি শাসনের গুরুত্ব আলোচনা করা হল। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


বাংলার রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ইলিয়াসশাহি শাসনের অবদান ও গুরুত্ব :- 


১. স্বাধীন শাসনের প্রতিষ্ঠা :- 
ইলিয়াসশাহি আমলে বাংলায় এক স্বাধীন শাসনের প্রতিষ্ঠা হয় , যা প্রায় শতাধিক বছর স্থায়ী হয়েছিল। এই শাসন দিল্লির তুর্কি শাসনের প্রভাব থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত ছিল। এই স্বাধীন সত্তা বজায় ছিল আকবর কর্তৃক বঙ্গদেশ জয় পর্যন্ত। এইভাবে তুর্কি প্রভাবমুক্ত থাকার ফলে বাংলার নিজস্ব সংস্কৃতি স্বাধীনভাবে বিকশিত হওয়ার সুযোগ লাভ করে। 

২. রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধতা :- 
ইলিয়াসশাহি শাসকেরা বারংবার দিল্লির তুর্কি শাসকদের আক্রমণ প্রতিহত করে বাংলার স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখেন। কিন্তু দিল্লির সুলতানের পক্ষে বাংলার এই স্বাধীনতা মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না। তাই তাঁরা বারবার বাংলা আক্রমণ করলেও বাংলা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের স্বাধীন সত্তা বজায় রাখে। সমগ্র উত্তর ভারত যখন দিল্লি সুলতানির পদানত হয়েছিল , তখন বাংলার স্বাধীন অস্তিত্ব নিঃসন্দেহে ছিল এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। 

৩. সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণ :- 
ইলিয়াসশাহি শাসকেরা বাংলার বাইরেও সাম্রাজ্য সম্প্রসারণ করেন। বিহার , আসাম , উড়িষ্যা , বারাণসী , গোরক্ষপুর - ইত্যাদি প্রদেশেও ইলিয়াসশাহি বংশের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। এমনকি , ইলিয়াস শাহের নেতৃত্বে নেপাল জয় করাও সম্ভব হয়েছিল। যদুনাথ সরকার ইলিয়াসশাহি বংশের রাজনৈতিক গুরুত্ব প্রসঙ্গে নেপাল জয় কে তাৎপর্যপূর্ণ বলে অভিহিত করেছেন। 

৪. সুষ্ঠ শাসন ব্যবস্থা : - 
ইলিয়াসশাহি আমলে বাংলায় এক সুষ্ঠ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। মুসলিমদের সঙ্গে সঙ্গে যোগ্যতা ও দক্ষতা সম্পন্ন অ - মুসলিম প্রজাদেরকেও শাসনকার্যে সুযোগ দেওয়া হত। হিন্দু নায়ক ও সামন্তরা মর্যাদার আসন লাভ করেন এবং তাঁদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বহু হিন্দুকে প্রশাসনের উচ্চপদ প্রদান করা হয়। এপ্রসঙ্গে ইলিয়াস শাহের হিন্দু সেনাপতি সহদেবের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। 

৫. পররাষ্ট্রনীতি :- 
বৈদেশিক রাষ্ট্রগুলির সঙ্গেও ইলিয়াসশাহি বংশের রাজনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। চিন ও পারস্যতে ইলিয়াসশাহি শাসকেরা দূত পাঠিয়েছিলেন এবং চিনের একাধিক দূত বাংলায় আসেন। চৈনিক দূত মা - হুয়ানের রচনা থেকে ইলিয়াসশাহি বংশের বহু ইতিহাস জানা যায়।

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো
 

বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ইলিয়াসশাহি শাসনের অবদান ও গুরুত্ব :- 


১. হিন্দু - মুসলিম ধর্মীয় সমন্বয় :- 
ইলিয়াসশাহি শাসকেরা বাংলায় হিন্দু মুসলিম সমন্বয় ঘটাতে সমর্থ হয়েছিলেন। হিন্দু ও মুসলিম যৌথভাবে প্রশাসনিক ও রাজরাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। এর ফলে ধর্মীয় ক্ষেত্রে এক অভূতপূর্ব সম্প্রীতির পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং হিন্দুরা ইলিয়াসশাহি শাসকদের সহায়ক শক্তি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। যেমন , ইলিয়াস শাহের আমলে ফিরোজ শাহ তুঘলক বাংলা আক্রমণ করলে হিন্দু জমিদার ও পাইকরা ইলিয়াসশাহের সমর্থনে এগিয়ে আসেন। 

২. হিন্দুদের মর্যাদা বৃদ্ধি :- 
ইলিয়াসশাহি আমলে প্রশাসনের উচ্চপদে বহু হিন্দুকে নিয়োগ করা হয়। যেমন মুকুন্দ দাস ছিলেন রাজপন্ডিত , অনন্ত সেন ছিলেন রাজচিকিৎসক। ইলিয়াসশাহ নিজ প্রতিভাবলে বহু হিন্দুকে নিজপক্ষে আনতে সমর্থ হন। এর ফলে বাংলায় হিন্দুদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সমাজে পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় সমাজে প্রাধান্য বৃদ্ধি পায়। 

৩. গ্রামাঞ্চলে হিন্দু শাসনের একাধিপত্য :- 
ইলিয়াসশাহি আমলে মুসলিম শাসন মূলত শহরাঞ্চলেই প্রচলিত ছিল। গ্রামাঞ্চলে হিন্দু জমিদার ও স্থানীয় শাসক বর্গের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত ছিল। কর আদায় ও শাসন পরিচালনা উভয়ই ছিল হিন্দুদের হস্তগত। 

৪. নতুন সম্প্রদায়ের উদ্ভব :- 
একদিকে শহরাঞ্চলে হিন্দু আমলাতন্ত্র এবং অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলে হিন্দুদের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন - এই দুইয়ের ফলে বাংলার সমাজে এক নতুন ধরণের হিন্দু মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটে। এই হিন্দু মধ্যবিত্ত সম্প্রদায় সামাজিক , আর্থিক ও সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে সমৃদ্ধশালী ছিলেন। 

৫. ইসলামের প্রসার :- 
ইলিয়াসশাহি শাসনে বাংলার ধর্মীয় ক্ষেত্রে এক উদার ও সমন্বয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। গ্রামবাংলায় ইসলামের বাণী প্রচারিত হওয়ার ফলে বহু সাধারণ মানুষ ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এই ক্ষেত্রে নিম্নবর্গের হিন্দুদের প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়। ধীরে ধীরে গ্রামাঞ্চলে মক্তব ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ইসলাম ধর্মের প্রসার ঘটতে থাকে।  

৬. বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ক্ষেত্রে উৎকর্ষতা :- 
ইলিয়াসশাহি আমলে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে বিশেষ উৎকর্ষতা লক্ষ্য করা যায়। এই যুগের ভাষা ও সাহিত্য ক্ষেত্রে সর্বপ্রধান নিদর্শন হল শ্রীকৃষ্ণকীর্তন। শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের হাত ধরেই চর্যাপদ থেকে বাংলা ভাষা রূপান্তরিত হয়। শামসুদ্দিন ইলিয়াসশাহ , সিকান্দার শাহ ও গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদর্শন করেন। 

৭. অনুবাদ সাহিত্যের উৎকর্ষতা : - 
অনুবাদ সাহিত্যও ইলিয়াসশাহি শাসনে বিশেষ উৎকর্ষতা লাভ করে। এই আমলের সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য অনুবাদ সাহিত্যগুলি হল - কৃত্তিবাসের রামায়ণ ও মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়। এই সাহিত্যকীর্তিগুলি আজও বাংলা সাহিত্যে সমান গুরুত্বপূর্ণ। 

৮. অন্যান্য সাহিত্য ও সাহিত্যিক :- 
ইলিয়াসশাহি শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় গৌড় , পাণ্ডুয়া , লক্ষণাবতী - ইত্যাদি শহরগুলি শিল্প ও সংস্কৃতির বিশেষ উৎকর্ষ কেন্দ্রে পরিণত হয়। অমরকোষ গ্রন্থের টীকা রচনা করেন বৃহস্পতি মিশ্র। এই টীকা গ্রন্থটির নাম পদচন্দ্রিকা। মালাধর বসু ' গুণরাজ খাঁ ' ও তাঁর পুত্রকে ' সত্যরাজ খাঁ ' উপাধি দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায় , ইলিয়াসশাহি আমলে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা বজায় থাকার ফলে সাহিত্যক্ষেত্রে তা বিশেষ সহায়ক হয়। 

৯. স্থাপত্য ক্ষেত্রে উৎকর্ষতা :- 
ইলিয়াসশাহি শাসনকালে বাংলায় স্থাপত্য শিল্পে বিশেষ উৎকর্ষতা লক্ষ্য করা যায়। এই সময় বিভিন্ন স্থাপত্যকীর্তি নির্মিত হয়। যেমন - আদিনা মসজিদ , কোতওয়ালি দরওয়াজা , জামি মসজিদ , লোটন মসজিদ , চামকাটি মসজিদ , তাঁতিপাড়া মসজিদ - ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই সকল স্থাপত্যকীর্তিগুলি গঠনরীতি ও শিল্প স্বাতন্ত্রতায় আজও বিশিষ্ট হয়ে আছে। এগুলির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল আদিনা মসজিদ। উত্তর - দক্ষিণ ও পূর্ব - পশ্চিমে এর পরিধি ছিল যথাক্রমে ৫০৭ ফুট ও ২৮৫ ফুট। এছাড়াও ইলিয়াস শাহ হাজিপুর শহর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।  

পরিশেষে বলা যায় , একটি স্বাধীন ও স্থায়ী শাসন ব্যবস্থার অস্তিত্বের ফলে ইলিয়াসশাহি আমলে শিক্ষা , সংস্কৃতি , সমাজ , রাজনীতিও অর্থনীতি - ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রেই পরিবর্তন ও উৎকর্ষতা পরিলক্ষিত হয়। বিশেষ করে ধর্মীয় উদারতা ও ধর্ম সমন্বয় বিশেষভাবে উল্লেখের দাবী রাখে। এছাড়াও দিল্লি তুর্কি শাসকদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইলিয়াসশাহি শাসকেরা যে স্বাধীন অস্তিত্ব রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছিলেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এই স্বাধীন অস্তিত্ব রক্ষার ফলেই বাংলার নিজস্ব সংস্কৃতির বিস্তার সম্ভব হয়েছিল।  

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো
     
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

ইকতা ব্যবস্থার পরিচয় , বৈশিষ্ট , বিবর্তন ও রাজনৈতিক গুরুত্ব । 

ইকতা ব্যবস্থা সম্পর্কে লেখ।  




ইকতা ব্যবস্থার পরিচয় : - 

ইকতা শব্দের অর্থ হল একটি অংশ বা একটি এলাকা। ডক্টর ইরফান হাবিবের মতে , কৃষকদের উৎপন্ন ফসলের উদ্বৃত্তের এক অংশ কর হিসাবে গ্রহণ করা হয় এবং তা প্রাদেশিক শাসকদের মধ্যে বন্টন করা হয়। এইভাবে কৃষকদের কাছ থেকে রাজস্ব সংগ্রহ করে তা প্রাদেশিক শাসকদের মধ্যে বন্টন করার যে পদ্ধতি তা ইকতা - নামে পরিচিত ছিল। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতে তৎকালীন প্রচলিত সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস করা এবং শক্তিশালী কেন্দ্রীভূত শাসন ব্যবস্থা প্রচলন করা। 

সুলতানি আমলে দুই ধরণের জমির অস্তিত্ব ছিল। সুলতানের খাস জমি বা খালিসা - এই ধরণের জমির রাজস্ব আদায় করতেন সরকারি কর্মচারীরা। জমির দ্বিতীয় ধরণ ছিল - ইকতা। এই ব্যবস্থায় সুলতান নির্দিষ্ট শর্তে উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারী ও অভিজাতদের মধ্যে বন্টন করতেন। যারা জমি পেতেন তাদের বলা হত ইকতাদার। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

ভারতে ইকতা প্রথার প্রচলন :- 

ভারতে ইকতা ব্যবস্থা প্রচলন করেন ইলতুৎমিশ। যদিও এই ব্যবস্থা তুর্কি জগতে আগেই প্রচলিত হয়েছিল। কুতুবউদ্দিন আইবকের পর ইলতুৎমিশের আমলেও ভারতে নির্দিষ্ট কোনো রাজস্ব নীতি গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে সেনাদের নগদে বেতন দেওয়ার মত প্রাচুর্য রাজকোষের ছিল না। এই পরিস্থিতিতে ইলতুৎমিশ তুর্কি শাসকদের বহু পরীক্ষিত ইকতা ব্যবস্থাকেই গ্রহণ করেন। 

ইকতা বন্দোবস্তের প্রকৃতি :- 

ইকতা প্রথা শুধুমাত্র খালিসা জমি বহির্ভুত জমিগুলির মধ্যেই প্রচলিত ছিল। খালিসা জমিগুলি থেকে রাষ্ট্র সরাসরি রাজস্ব আদায় করত। যারা ইকতা বন্দোবস্ত লাভ করতেন তাদের বলা হত ইকতাদার বা মাকতি। ইকতাদার নির্দিষ্ট শর্তে ইকতা লাভ করতেন। যেমন - 
(i) প্রয়োজনের সময় ইকতাদার সুলতানকে সৈন্য সরবরাহ করতেন। 
(ii) নিজের এলাকায় ইকতাদার আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতেন। 
(iii) নিজের ইকতা এলাকায় প্রশাসন পরিচালনার দায়িত্ব ইকতাদার বহন করতেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

ইকতা বন্দোবস্তের বৈশিষ্ট :- 

ইকতা বন্দোবস্তের বিভিন্ন বৈশিষ্টগুলি ছিল - 
(i) শুধুমাত্র কৃষকদের উদ্বৃত্ত থেকেই রাজস্ব আদায় করা হত। 
(ii) ইকতাদার কৃষকদের কাছ থেকে রাজস্ব সংগ্রহ করতে পারলেও কৃষকের উপর বা তার জমির উপর ইকতাদারদের কোনো অধিকার ছিল না। জমির অধিকার ছিল একমাত্র সুলতানের। 
(iii) রাজস্বের পরিমাণ ইকতাদার নির্ধারণ করতে পারতেন না। রাজস্ব নির্ধারণ করত রাষ্ট্র। 
(iv) কৃষক ইচ্ছা করলে ইকতাদারের বিরুদ্ধে সুলতানের কাছে অভিযোগ জানাতে পারতেন এবং এ বিষয়ে কৃষককে বাধা দেওয়ার অধিকার ইকতাদারের ছিল না। 
(v) ইকতার বিনিময়ে প্রতিটি ইকতাদার নিজস্ব ইকতা এলাকায় প্রশাসন পরিচালনা ও শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করত। 
(vi) প্রতিটি ইকতাদার নিজস্ব এলাকায় সৈন্যবাহিনী পোষণ করতেন। প্রয়োজনের সময় ইকতাদার সুলতানকে সৈন্য সরবরাহ করতে বাধ্য ছিলেন। 
(vii) জমির উপর ইকতাদারের কোনো অধিকার ছিলনা। জমির মালিক সম্পূর্ণরূপে ছিলেন সুলতান। 
(viii) ইকতাদারদের স্থায়িত্ব ও অস্তিত্ব নির্ভর করত সুলতানের ইচ্ছার উপর। সুলতানের বিরাগভাজন হলে ইকতাদার পদচ্যুত হতেন। 
(ix) ইকতাদারদের মধ্যে বদলি প্রথাও প্রচলিত ছিল। 
(x) ইকতাদার তার সমস্ত প্রয়োজন মিটিয়ে উদ্বৃত্ত অর্থ কেন্দ্রীয় কোষাগারে জমা করতেন। 

বিভিন্ন সময়ে ইকতা বন্দোবস্তের পরিবর্তন :- 

সুলতান ইলতুৎমিশের সময়কাল থেকেই ইকতা প্রথা প্রচলিত হয় এবং তাঁর আমল থেকেই ইকতা প্রথার বিভিন্ন পরিবর্তন সাধিত হয়। 

ইলতুৎমিশের আমলে ইকতা প্রথার প্রচলন ও পরিবর্তন :- মূলতঃ সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্যই ইলতুৎমিশ ভারতে ইকতা প্রথা প্রচলন করেন। তিনি ইকতাদারদের মধ্যে বদলির নীতি প্রচলন করেন। প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় স্তরে দৃঢ় কেন্দ্রীভবনের নীতি গ্রহণ করলে ইকতাদাররা সুলতানের সহায়ক হয়ে উঠতে বাধ্য হয়। 

বলবনের আমলে ইকতা ব্যবস্থায় পরিবর্তন :- বলবনের আমলে কেন্দ্রীয়করণের নীতি আরো সুদৃঢ় হয়। তিনি কঠোরভাবে হিসাব পরীক্ষা করার নীতি গ্রহণ করেন এবং এই কাজের জন্য খোয়াজা নামের এক শ্রেণির রাজকর্মচারী নিযুক্ত করেন। তাঁর আমলে ইকতাদারদের নির্দিষ্ট সংখ্যক সৈন্য রাখা বাধ্যতামূলক হয়ে পড়ে। বলবনের আমলে ইকতা প্রথা বংশানুক্রমিক ছিলনা। 

আলাউদ্দিন খলজির আমলে ইকতা ব্যবস্থায় পরিবর্তন :- আলাউদ্দিন খলজির আমলে সাম্রাজ্যের আয়তন বহুগুনে বৃদ্ধি পায় ফলে জমির পরিমাণও বৃদ্ধি পায়। এর ফলে ইকতা প্রথায় বিভিন্ন পরিবর্তন সাধন করেন আলাউদ্দিন। তিনি কেবলমাত্র দিল্লি থেকে দূরবর্তী এলাকাগুলিতে ইকতা প্রদানের নীতি গ্রহণ করেন। দিল্লি ও তার নিকটবর্তী এলাকাগুলিকে খালিসা জমিতে পরিণত করে সরাসরি রাজস্ব আদায়ের নীতি গৃহীত হয়। তিনি প্রতিটি জমির রাজস্বের হার নির্দিষ্ট করে দেন। ইকতাদারদের হিসাব পরীক্ষার ক্ষেত্রে আরো কড়াকড়ি শুরু হয়। শুধুমাত্র সেনাপতিকে ইকতা প্রদান করে সৈন্যদের সরাসরি বেতন দেওয়ার নীতি গৃহীত হয়। 

গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের আমলে ইকতা ব্যবস্থায় পরিবর্তন :- গিয়াসউদ্দিন তুঘলক স্থির করেন যে যদি কোনো ইকতাদার তার প্রাপ্যের ১/১০ বা ১/১১ ভাগ বেশি রাজস্ব আদায় করত তাহলে তা ক্ষমার চোখে দেখা হবে। বলা বাহুল্য গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের আমলে ইকতাদারদের উপর সুলতানের নিয়ন্ত্রণ শিথিল হয়ে পড়ে। 

মহম্মদ বিন তুঘলকের আমলে ইকতা ব্যবস্থায় পরিবর্তন :- মহম্মদ বিন তুঘলক সেনাদের নগদে বেতন প্রদানের নীতি গ্রহণ করেন। তাঁর আমলে রাজস্ব আদায় ও সেনাবাহিনীর পোষণ - এই দুটি বিষয়কে পৃথক করে দেন। ইকতার প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে সেনাপতিদের সরিয়ে দেওয়া হয়। মহম্মদ বিন তুঘলক সর্বোচ্চ পরিমাণ রাজস্ব প্রদানে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে ইকতা প্রদানের নীতি গ্রহণ করেন।

ফিরোজ শাহ তুঘলকের আমলে ইকতা ব্যবস্থার পরিবর্তন :- ফিরোজ শাহ তুঘলকের আমলে ইকতাদারদের উপর সুলতানের নিয়ন্ত্রণ বহুলাংশে হ্রাস পায়। তিনি অভিজাতদের বেতন বৃদ্ধি ঘটান এবং হিসাব পরীক্ষার বিষয়টি অনেক শিথিল হয়ে পড়ে। তাঁর আমলে রাষ্ট্রের মোট আয়ের বা জমার হিসাব তৈরী করা হয়। এই নির্দিষ্ট জমা - র বেশি রাজস্ব ইকতাদারদের প্রদান করতে হত না। তিনি ইকতা প্রথাকে বংশানুক্রমিক করেন এবং প্রচুর ইকতা বিতরণের ফলে খালিসা জমির পরিমাণ কমে গিয়ে রাষ্ট্রের আয় হ্রাস পায়। 

সৈয়দ ও লোদী আমলে ইকতা ব্যবস্থায় পরিবর্তন :- সৈয়দ ও লোদী আমলে ইকতা কথাটির পরিবর্তে সরকার ও পরগণা শব্দদুটি ব্যবহৃত হয়। কয়েকটি পরগণা নিয়ে একটি সরকার গঠিত হয়। এই সময়কালে ইকতা ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়লেও মূল কাঠামো বজায় থাকে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

ইকতা ব্যবস্থার বিভিন্ন ত্রুটি :- 

ইকতা বন্দোবস্তের সবচেয়ে বড় ত্রুটি ছিল এর দুর্নীতি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভুল হিসাব , উদ্বৃত্ত অর্থ আত্মসাৎ করা - এগুলি সাধারণ অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। সামন্তপ্রথার ত্রুটিগুলি দূর করার উদ্দেশ্যে ইকতা প্রথার প্রচলন করা হলেও সামন্ত প্রথার সমস্ত রকম ক্ষতিকর দিকগুলি ইকতা বন্দোবস্তের মধ্যে সঞ্চারিত হয়। খালিসা জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে ইকতা থেকে রাষ্ট্রের আয় কমে যায়। ফিরোজ শাহ তুঘলক ইকতা ব্যবস্থায় বংশানুক্রমিক নীতির প্রচলন করলে ইকতাদারদের উপর সুলতানের নিয়ন্ত্রণ ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। 

ইকতা ব্যবস্থার গুরুত্ব :- 

(ক) তুর্কি শাসনের সূচনালগ্নে প্রশাসনিক ব্যবস্থা সুদৃঢ় করতে ইকতা ব্যবস্থা কার্যকরী হয়েছিল। 
(খ ) ইকতা ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রাদেশিক রাজস্ব আদায় ও প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ সুদৃঢ় করা সম্ভব হয়েছিল। 
(গ) ইকতা প্রদানের মাধ্যমে আমির - ওমরাহদের নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়। 
(ঘ) প্রাথমিক পর্বে সুলতানগণ ইকতা ব্যবস্থার মাধ্যমে সামন্ত প্রথার অবসান ঘটাতে সক্ষম হন। 
(ঙ ) বদলি নীতির ফলে ইকতাদাররা নিজ এলাকায় স্বেচ্ছাচার করতে পারতেন না। 
(চ ) যেহেতু জমির মালিক ছিলেন সুলতান - সেহেতু জমির উপর কখনোই ইকতাদারদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। 
(ছ ) কৃষক স্বাধীনভাবে ইকতাদার বা মাকতির বিরুদ্ধে সুলতানের নিকট অভিযোগ জানাতে পারতেন। ফলে এই ব্যবস্থায় কৃষকদের স্বার্থ তুলনামূলকভাবে সুরক্ষিত ছিল। 
(জ) দূরবর্তী এলাকাগুলি থেকেও রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হয়। 
(ঝ ) প্রশাসনিক ক্ষেত্রে উৎকর্ষতা বৃদ্ধি পায়। 
(ঞ ) সামগ্রিকভাবে আর্থিক সমৃদ্ধি ঘটে।  

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো                                              

Share
Tweet
Pin
Share
1 comments
Newer Posts
Older Posts

Followers

Pages

  • Home
  • Privacy Policy
  • Disclaimer
  • CONTACT ME
  • About Me

Contact Form

Name

Email *

Message *

About me

Hallow viewers , myself Nandan Dutta [Subhankar Dutta], reside at Maheshpur,Malda.
I made this website for the students of B.A. courses under Gour Banga University. Here you can get suggestions of different subjects like HISTORY , SOCIOLOGY , POLITICAL SCIENCE & EDUCATION.
In future I will add MCQ sections of those subjects.


Categories

  • 1ST SEMESTER SUGGESTION (1)
  • 2 ND YEAR SUGGESTION (1)
  • 2ND SEMESTER (1)
  • 3RD SEMESTER (8)
  • BENGALI NOTES (21)
  • CU suggestion. (1)
  • EDUCATION NOTES (141)
  • ENGLISH COMPULSORY (16)
  • GBU Suggestion. (7)
  • HISTORY EUROPE & WORLD (46)
  • HISTORY NOTES (68)
  • POL SC NOTES (68)
  • SOCIOLOGY NOTES (72)
  • WBCS 2020 (1)

recent posts

Blog Archive

  • August 2025 (4)
  • May 2025 (3)
  • April 2025 (20)
  • March 2025 (12)
  • February 2025 (8)
  • November 2024 (5)
  • October 2024 (2)
  • September 2024 (2)
  • June 2024 (2)
  • March 2024 (6)
  • February 2024 (4)
  • October 2023 (5)
  • May 2023 (5)
  • April 2023 (1)
  • December 2022 (1)
  • November 2022 (13)
  • September 2022 (2)
  • August 2022 (7)
  • July 2022 (29)
  • June 2022 (10)
  • May 2022 (25)
  • April 2022 (24)
  • March 2022 (16)
  • February 2022 (19)
  • January 2022 (21)
  • December 2021 (46)
  • November 2021 (5)
  • October 2021 (6)
  • September 2021 (5)
  • August 2021 (41)
  • July 2021 (43)
  • June 2021 (31)
  • May 2021 (7)
  • April 2021 (1)
  • July 2020 (1)
  • June 2020 (3)
  • April 2020 (1)
  • November 2019 (1)
  • July 2019 (1)
  • June 2019 (1)
  • May 2019 (1)
  • April 2019 (2)
  • January 2019 (1)

Pages

  • Home
  • 2nd SEM ভাষাতত্ত্ব :
  • বাংলা উপভাষা
  • দ্বিতীয় পুলকেশীর কৃতিত্ব
  • ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত সাম্যের অধিকারগুলি আলোচনা করো।
  • হর্ষবর্ধনের কৃতিত্ব আলোচনা করো। তাকে কি উত্তর পথনাথ বলা যায় ?
  • ভারতীয় সংবিধানের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য :-
  • উদারনীতিবাদ : সংক্ষিপ্ত ধারণা :-
  • চোল শাসনব্যবস্থা :-
  • গুপ্তযুগ সুবর্ণযুগ সম্পর্কিত আলোচনা।
  • ৬. উদাহরণসহ মধ্যযুগের বাংলাভাষার কয়েকটি বৈশিষ্ট আল...
  • 1. Marxism
  • আধুনিক বাংলা ভাষা ও তার বৈশিষ্ট।
  • Discuss the career and achievements of Samudragupta .
  • ভাষাতত্ত্ব

Created with by ThemeXpose | Distributed by Blogger Templates