Pages

Powered by Blogger.
1ST SEMESTER SUGGESTION 2 ND YEAR SUGGESTION 2ND SEMESTER 3RD SEMESTER BENGALI NOTES CU suggestion. EDUCATION NOTES ENGLISH COMPULSORY GBU Suggestion. HISTORY EUROPE & WORLD HISTORY NOTES POL SC NOTES SOCIOLOGY NOTES WBCS 2020

NANDAN DUTTA

A new approach for exam notes .

Discuss marriage as a social institution .

সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবাহকে আলোচনা করো। 




বিবাহ হল একটি প্রতিষ্ঠান। নর - নারীকে স্বামী - স্ত্রী তে পরিণত করে বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠান। বিবাহের মাধ্যমেই নর - নারীর সম্পর্ক সামাজিক বৈধতা ও স্বীকৃতি লাভ করে ও অনুমোদন লাভ করে পরিবারে পরিণত হয়। অন্যভাবে বলা যায় , স্বামী - স্ত্রীর বিশেষ সম্পর্কের বৈধতা প্রকাশ করে তাদের মধ্যে সংঘঠিত বিবাহ। 

মলিনোস্কি বলেছেন , বিবাহকে শুধুমাত্র যৌন সম্ভোগের ছাড়পত্র হিসেবে সঙ্গায়িত করা যায় না , এটি প্রকৃতপক্ষে পিতৃত্বের স্বীকৃতি। 

দার্শনিক উইল ডুরান্টের মতে , বিবাহ শুধুমাত্র যৌন সম্পর্কের ছাড়পত্র নয় , এটি পিতা - মাতা ও সন্তানের সম্পর্ক যার সামাজিক তাৎপর্য হল জাতিকে রক্ষা ও শক্তিশালী করা।

অ্যান্ডারসন ও পার্কারের মতে , বিবাহ হল এক বা একাধিক পুরুষ এবং এক বা একাধিক নারীর সমাজ স্বীকৃত স্থায়ী বন্ধন যা পিতৃত্বের উদ্দেশ্যেই যৌন সম্পর্ককে অনুমোদন করে থাকে। 

কিংসলে ডেভিস সন্তানের এই বৈধতা বা স্বীকৃতিকে Principles of legitimacy বলেছেন। 

ওয়েস্টার মার্ক বলেছেন , বিবাহ হল একটি নিয়ন্ত্রিত যৌন আচরণ অপেক্ষা অধিক কিছু। 

সুতরাং , বিবাহ হল একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান - যা সর্বজনীন , যা নরনারীর যৌন আচরণ অপেক্ষা পরিবার গঠন ও প্রতিপালন এবং সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্যসমূহের প্রতিপালন - ইত্যাদির উপর অধিক গুরুত্ব প্রদান করে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবাহ  :- 


বিবাহকে পরিবার গঠনের মূল একক হিসেবে ধরা হয়। সুতরাং বিবাহ হল , একটি মৌলিক সামাজিক প্রতিষ্ঠান। সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবাহের বহুবিধ ভূমিকা সমাজে বর্তমান। যেমন - 

১. বিবাহ ব্যবস্থা ব্যক্তিবর্গের যৌন চাহিদাকে সুস্থ ও সুনির্দিষ্ট উপায় পরিতৃপ্তি সাধনের পথ দেখায়। যৌন চাহিদার পরিতৃপ্তি ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক বিকাশকে স্বাভাবিক রাখে। 

২. বিবাহ ব্যবস্থা সমাজজীবনে যৌন ব্যাভিচার ও বিশৃঙ্খলার আশঙ্কাকে দূর করে। 

৩. বিবাহের মাধ্যমেই বৈধ , স্বীকৃত পরিবারের সৃষ্টি হয় ; এই পরিবার হল সমাজের একক স্বরূপ। 

৪. বিবাহের মুখ্য উদ্দেশ্য পরিবার সৃষ্টির মাধ্যমে সন্তান প্রজনন করা। এর দ্বারা জাতক তার সামাজিক বৈধতা লাভ করে। এর দ্বারাই বংশগতির ধারা অব্যাহত থাকে। 

৫. শুধুমাত্র সন্তান জন্ম দেওয়াই নয় , তার উপযুক্ত লালন-পালন , শিক্ষাদীক্ষা , সামাজিকীকরণ - প্রভৃতির জন্য দরকার শিশুর ও মা-বাবার স্থায়ী সংগঠন - যা বিবাহ দ্বারা স্থিরীকৃত হয়। 

৬. বিবাহ স্বামী-স্ত্রীর মানসিক বন্ধন বিশেষ। এই বন্ধন থেকেই জন্ম নেয় স্বামী স্ত্রী এবং তাদের সন্তানদের মধ্যে প্রেম - প্রীতি - ভালোবাসা - স্নেহ - সহানুভূতি - সহযোগিতা প্রভৃতি আবেগ-অনুভূতি। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

৭. বিবাহ ব্যক্তিকে দৈহিক ও মানসিক পরিতৃপ্তি প্রদানের পাশাপাশি উভয়েরই সামাজিক ও মানসিক নিরাপত্তা প্রদান করে। 

৮. বৃহত্তর সমাজজীবনে নর-নারীর সম্পর্ককে একটি নির্দিষ্ট রূপ প্রদান করে বিবাহ ব্যবস্থা। 

৯. বিবাহিত জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতার বাতাবরণ তৈরি হয়। এছাড়া বিবাহ লিঙ্গভেদের উপর ভিত্তি করেই পারিবারিক শ্রম বিভাজনের পথ সুগম করে। 

১০. পিতৃতান্ত্রিক সমাজে কোনো মহিলার পরিচয় নির্ধারিত হয় তার পিতা বা স্বামীর পরিচয়ে। বিবাহিত জীবনে মহিলার সামাজিক পরিচয় ও সামাজিক মর্যাদা বহুলাংশে নির্ভরশীল হয় সে কাকে বিয়ে করেছে তার উপর ভিত্তি করে। অর্থাৎ বিবাহের নির্দিষ্ট বয়সে মহিলাদের সামাজিক পরিচয় নির্ধারণে বিবাহের ভূমিকা অন্যতম। 
 
১১. বিবাহ শুধুমাত্র নর-নারীর মিলনই নয় , এটি ন্যূনতম দুটি পরিবারের মিলন। এর উপর ভিত্তি করেই  গড়ে ওঠে নানাবিধ আত্মীয়তার সম্পর্ক। এভাবে সামাজিক সংহতির ভিত্তি দৃঢ়তা লাভ করে। 

১২. হিন্দু ধর্মে বিবাহের অন্যতম গুরুত্ব হল - এটি একটি ধর্মীয় পবিত্র অনুষ্ঠান বিশেষ। তাছাড়া স্বামী-স্ত্রীর একত্রে ধর্ম পালনের ক্ষেত্রেও বিবাহের সামাজিক গুরুত্ব বর্তমান। গান্ধীজীর মতে - Marriage is the fence that protects religion .

প্রত্যেক ব্যক্তিরই তার নিজের মত জীব সৃষ্টির জৈবিক তাড়না থাকে। এর সাথে যুক্ত হয় বংশরক্ষার বিষয়টি। সুতরাং , নর নারীর মধ্যে বিবাহ তাদের সেই সামাজিক প্রয়োজন পূরণ করতে পারে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক মেলবন্ধন , সন্তান প্রজনন ও প্রতিপালন , সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্যপালন ইত্যাদির মাধ্যমে বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানটি সমাজের মৌলিক কাঠামো বজায় রেখে সমাজের স্থায়িত্ব ও প্রগতি রক্ষা করে চলেছে। এই সকল কারণেই সমাজতত্ববিদগণ বিবাহকে মৌলিক সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে অভিহিত করে থাকেন।    

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

Define social stratification . Discuss the various forms of social stratification .

সামাজিক স্তরবিন্যাসের সংজ্ঞা দাও। সামাজিক স্তরবিন্যাসের বিভিন্ন ধরণগুলি আলোচনা কর। 





সামাজিক স্তরবিন্যাস :-     


সামাজিক স্তরবিন্যাস হল সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গকে উচ্চ - নীচ স্তরে বিভক্ত করা। অর্থাৎ , সমাজের ব্যক্তিবর্গকে তাদের সামাজিক অবস্থান , অর্থাৎ মর্যাদা এবং ভূমিকা অনুযায়ী ক্রমোচ্চভাবে বিন্যস্ত করাকে বলে সামাজিক স্তরবিন্যাস। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

এল ক্রিসবার্গ : সামাজিক স্তরবিন্যাস হল অসমতার একটি অটল বা স্থির ব্যবস্থা , যেটি নিয়ম ও কাঠামোর ভিত্তিতে গড়ে ওঠে। 

অগবার্ন ও নিমকফ : যে প্রক্রিয়ায় ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে মর্যাদার ক্রমানুসারে কম - বেশি স্থায়ীভাবে বিন্যস্ত করা হয় , তাকে বলে সামাজিক স্তরবিন্যাস। 

জিসবার্ট : সামাজিক স্তরবিন্যাস হল শ্রেষ্ঠত্ব ও বশ্যতার দ্বারা পরস্পর সম্পর্কযুক্ত স্থায়ী গোষ্ঠী বা শ্রেণীতে সমাজের বিভাজন। 

মেলভিন টিউমিন : সামাজিক স্তরবিন্যাস বলতে বোঝায় , ক্ষমতা , সম্পত্তি , সামাজিক মূল্যায়ন , মানসিক পরিতৃপ্তির বৈষম্যের ওপর ভিত্তি করে কোনো গোষ্ঠী বা সমাজের ক্রমোচ্চ বিভাজনকে। 

সরোকিন : সামাজিক স্তরবিন্যাস হল জনসংখ্যার পর্যায়ক্রমে বিভক্তিকরণ , যে বিন্যাসের এক প্রান্তে উচ্চ শ্রেণী ও অপরপ্রান্তে নিম্নশ্রেনী অবস্থিত। 

চিনয় : চিনয় তাঁর Society : An Introduction to Sociology গ্রন্থে বলেছেন , প্রত্যেক সমাজেই কিছু ব্যক্তি হন উচ্চ , আবার কিছু হন নীচ , কিছু ব্যক্তি শাসন করেন আবার কিছু ব্যক্তি শাসিত ও শোষিত হন। উচ্চ - নীচ , ধনী - দরিদ্র , শক্তিশালী - শক্তিহীন - এইসকল বৈপরীত্যই সামাজিক স্তরবিন্যাসের সারবত্তা।    

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

সামাজিক স্তরবিন্যাসের বিভিন্ন ধরণ :-        


সামাজিক স্তরবিন্যাস চিরন্তন হলেও সমাজ বিকাশের বিভিন্ন স্তরে  স্তরবিন্যাসের ক্ষেত্রে প্রকারভেদ পরিলক্ষিত হয়। সামাজিক স্তরবিন্যাসের তিনটি ভিত্তি আছে - (ক ) অর্থনীতি ভিত্তিক , (খ ) মর্যাদা ভিত্তিক ও (গ ) ক্ষমতা ভিত্তিক। সমাজতাত্ত্বিকগণ স্তরবিন্যাসের এই রূপগুলিকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করেন। যথা - ১. দাসপ্রথা , ২. সামন্ত প্রথা বা ভূমিদাস প্রথা ৩. শ্রেণি ব্যবস্থা , ৪. জাতি ব্যবস্থা ও ৫. ক্ষমতা। 

১. দাসপ্রথা :- 
সামাজিক স্তরবিন্যাসের এক চরম নিদর্শন হল দাসপ্রথা। প্রাচীন যুগে ইউরোপে এই প্রথা অনুযায়ী সমাজে দুই শ্রেনীর মানুষ ছিল - ক্রীতদাস ও দাস - মালিক। সামাজিক প্রথা অনুযায়ী ক্রীতদাসের কোনরূপ ভূসম্পত্তি অথবা মানবিক অধিকার ছিলনা। ক্রীতদাসগণ প্রভুর সম্পত্তি রূপে গণ্য হত। পৃথিবীর সমস্ত প্রাচীন সভ্যতা দাসপ্রথার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত ছিল। 

দাসপ্রথার তিনটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা যায় - 
প্রথমত : দাস ছিল প্রভুর সম্পত্তি। দাসের ওপর প্রভুর অগাধ কর্তৃত্ব স্বীকৃত ছিল। 
দ্বিতীয়ত :- সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ক্রীতদাসের কোনো অধিকার ছিল না। সমাজে ক্রীতদাস ছিল ঘৃণার পাত্র। 
তৃতীয়তঃ - দাসকে বাধ্যতামূলকভাবে শ্রম দান করতে হত। 
প্রাচীন যুগের পরবর্তীকালে দাসপ্রথার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে ওঠে এবং ধীরে ধীরে এই ব্যবস্থার অবলুপ্তি ঘটে। 

২.  সামন্তপ্রথা :- 
মধ্যযুগের ইউরোপে সামন্ত বা ভূমিস্বত্ব বা তালুক প্রথাকে কেন্দ্র করে সামাজিক স্তরবিন্যাস লক্ষ্য করা যায়। শব্দটি ভূমি ,  জমি বা তালুক অধিগ্রহণ ও স্বত্বাধিকার হতে উদ্ভব হয়েছে।  অসম ভূমি বন্টনের জন্য একটি তালুকের মালিক নির্দিষ্ট মর্যাদা বহন করত। মধ্যযুগীয় সামন্তপ্রথা অনুযায়ী তিনটি বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। 

প্রথমতঃ  সমাজের লোকেরা তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত ছিল। প্রথম শ্রেণীতে ছিলেন যাজক সম্প্রদায় , তাদের বলা হত ফার্স্ট স্টেট ; দ্বিতীয় শ্রেণীতে ছিলেন অভিজাত সম্প্রদায় এবং তৃতীয় শ্রেণীতে ছিলেন সর্বসাধারণ। এই তৃতীয় শ্রেণীর মানুষদের একত্রে থার্ড স্টেট বলা হত। এই তিন শ্রেণীর কাজকর্ম এবং জীবনযাপনের রীতিতে পার্থক্য বজায় ছিল। 

দ্বিতীয়তঃ - প্রত্যেকটি শ্রেণীর পদমর্যাদা আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং সুনির্দিষ্ট করা ছিল। আইনের চোখে সকলেই সমান ছিল না। একই অপরাধের জন্য অভিজাত সম্প্রদায় এবং সাধারণ মানুষ ভিন্ন ভিন্ন শাস্তি পেত।  অন্যান্য আইন সম্মত অধিকারের ক্ষেত্রেও পার্থক্য ছিল। 

তৃতীয়তঃ  সামন্তপ্রথায়  শুধুমাত্র প্রথম শ্রেণীর ব্যক্তিগণ রাজনৈতিক অধিকার ভোগ করতেন। সাধারণ মানুষের কোনোরূপ রাজনৈতিক অধিকার ছিলনা। মধ্যযুগের ইউরোপ ছাড়া প্রাচীন ভারতবর্ষেও সামন্ত প্রথার প্রচলন বজায় ছিল। তবে ভারতবর্ষে সামন্ত প্রথা ছিল পৃথক ধরনের। অবশ্য ধনতন্ত্রের আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে সামন্ততন্ত্রের অবসান ঘটে। সামন্তপ্রথার পরিবর্তে শ্রেণি ব্যবস্থা সামাজিক স্তরবিন্যাসের অন্যতম ভিত্তিতে পরিণত হয়।

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

৩. শ্রেণী ব্যবস্থা :- 
শিল্প সভ্যতার ক্রমবিকাশের ফলে অর্থনৈতিক ভিত্তিতে সমাজের জনগোষ্ঠীকে বিভক্ত করা হয়। শ্রেণি বা Class শব্দটি সমাজতত্ত্বে বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ম্যাক্স ওয়েবারের মতে , শ্রেণি হল এমন এক জনসমষ্টি যাদের উপযোগিতা গ্রহণের সুযোগ ও জীবনযাত্রার মান সমপর্যায়ভুক্ত।  ব্যক্তির আর্থিক অবস্থা ও সম্পত্তির অধিকার থেকে শ্রেণী নির্ধারিত হয়ে থাকে। বায়ারস্টেড পদমর্যাদার ভিত্তিতে সামাজিক শ্রেণীকে বিভক্ত করেছেন। 

আধুনিক শিল্পোন্নত সমাজে মর্যাদা অনুসারী শ্রেণি প্রাধান্য পেয়েছে। মর্যাদা অনুযায়ী শ্রেণি ভোগ এবং জীবনযাপনের রীতিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। এক্ষেত্রে জীবনযাপনের রীতি , চাল - চলন , কথাবার্তা , চিন্তা , অনুভূতি , পোশাক-পরিচ্ছেদ সামাজিক শ্রেণীর বা মর্যাদা অনুসারী শ্রেণীর নির্ধারক হিসেবে কাজ করে।  বিশুদ্ধ অনুভূতি , শিক্ষা , আসবাবপত্র , আদান প্রদান - ইত্যাদি সবই গুরুত্বপূর্ণ। 

লেনিনের মতে , শ্রেণী হল এমন এক জনসমষ্টি যে জনসমষ্টি উৎপাদনের সঙ্গে এক বিশেষ সম্পর্ক স্থাপন করে এবং উদ্বৃত্ত মূল্য আত্মসাৎ করে। 

৪. জাতি ব্যবস্থা :- 
শ্রেণী ব্যবস্থার সাথে সাথে জাতি ব্যবস্থা হল ভারতীয় সমাজের এক সুপ্রাচীন বৈশিষ্ট। অধ্যাপক মজুমদার ও মদনের মতে , জাতি বলতে এক বদ্ধ গোষ্ঠীকে বোঝায়। বস্তুতঃপক্ষে জাতি হল একটি অন্তঃবৈবাহিক গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠী সদস্যদের সামাজিক ক্ষেত্রে কতকগুলি বিধিনিষেধ বা আচার - আচরণ মেনে চলতে হয়। 

জাতি ব্যবস্থায় বৃত্তি অনুযায়ী ভারতীয় সমাজের জনগোষ্ঠীকে প্রধানত চারভাগে বিভক্ত করা হয়। যথা - ব্রাহ্মণ , ক্ষত্রিয় , বৈশ্য ও শুদ্র। 

এক্ষেত্রে জাতি ব্যবস্থার কয়েকটি বৈশিষ্ট উল্লেখযোগ্য - 
(ক ) সদস্যপদ জন্মসূত্রে নির্ধারিত। 
(খ ) সামাজিক নিশ্চলতা। 
(গ ) বংশানুক্রমিক পেশা বা বৃত্তি। 
(ঘ ) আন্তঃবিবাহ বা বিবাহের কঠোরতা। 
(ঙ ) মর্যাদার পার্থক্য। 
(চ ) সুনির্দিষ্ট রীতিনীতি ই বিধি নিষেধ। 

৫. ক্ষমতা :- 
রাষ্ট্র ও রাজনীতি হল ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু। দৈহিক শক্তির প্রয়োগ অথবা দেখিয়ে কোনো ব্যক্তিকে পরিচালিত করার সামর্থ্য হল ক্ষমতা। বর্তমানে ক্ষমতা হল সামাজিক স্তরবিন্যাসের প্রধান গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। প্যারেটো প্রমুখ ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গকে বিভক্ত করেন - শাসক , শাসিত , সাধারণ মানুষ - ইত্যাদি। 

প্যারেটো এলিট বা প্রবর তত্ত্বের সাহায্যে সমাজে শাসক ও শাসিতের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করেন। কার্ল মার্কস ও ম্যাক্স ওয়েবার ক্ষমতাকে সামাজিক মর্যাদার সূচক হিসেবে গণ্য করেন। প্যারেটো , মস্কা এবং মিচেলস তাঁদের এলিট তত্ত্ব অনুযায়ী ব্যাখ্যা করেন যে , সকল সমাজে এক সংখ্যালঘিষ্ঠ ব্যক্তিবর্গ সংখ্যাগরিষ্ঠের ওপর কর্তৃত্ত্ব স্থাপন করে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

Share
Tweet
Pin
Share
1 comments

Define family . Discuss the changes in family structure .

পরিবারের সংজ্ঞা দাও। পরিবারের কার্যগত ও কাঠামোগত পরিবর্তন আলোচনা করো। 




পরিবারের সংজ্ঞা দাও। পরিবারের কার্যগত ও কাঠামোগত পরিবর্তন আলোচনা করো। 
পরিবার কথাটির ইংরেজি প্রতিশব্দ হল Family ; এই শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে ল্যাটিন শব্দ Famulas থেকে যার অর্থ Servant বা ভৃত্য। রোমান আইনে Famulas শব্দটি ব্যবহার করা হত ভৃত্যদের সমষ্টি বোঝাতে।  এই ভৃত্যের সমষ্টি হল যারা একই সংসারের অন্তর্ভুক্ত। কালক্রমে ভৃত্যদের সমষ্টি না বুঝিয়ে সংসারের সমস্ত ব্যক্তিদের সমষ্টিকেই বোঝানো হয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

এলিয়ট ও মেরিলের মতে , পরিবার হল স্বামী স্ত্রী সন্তানাদি নিয়ে গঠিত একটি জৈব সামাজিক একক। 

অগবার্ন ও নিমকফ - এর মতে , যখন আমরা পরিবারের কথা ভাবি তখন কম - বেশি স্থায়ী , সন্তানসহ বা সন্তানহীন স্বামী-স্ত্রী অথবা সন্তানসহ স্বামী বা স্ত্রী একাকী , এরূপ একটি সংগঠনের ছবি পাই। যৌন সম্পর্ক ও পিতা-মাতার দায়দায়িত্ব সম্পাদন হল পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। 

বার্জেস ও লকের মতে , পরিবার হল বিবাহ , রক্তের সম্পর্ক বা দত্তক সূত্রে আবদ্ধ গোষ্ঠী যারা অভিন্ন বাসগৃহে বসবাস করে ; যারা স্বামী-স্ত্রী , পিতা-মাতা , পুত্র-কন্যা , ভাই-বোনের যথাযোগ্য সামাজিক ভূমিকা অনুযায়ী পরস্পরের সাথে আন্তঃক্রিয়া ও সংযোগ সম্পর্কে সামিল হয়ে এক অভিন্ন সংস্কৃতি গড়ে তোলে। 

উপরোক্ত সংজ্ঞাগুলি বিশ্লেষণ করে কিছু বিষয়ের অবতারণা করা যায় , যার দ্বারা পরিবারের ধারণাটি সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। 
(ক ) পরিবার হল স্বামী - স্ত্রী ও তাঁদের সন্তানবর্গের একটি গোষ্ঠী। 
(খ ) পরিবার বিবাহ , রক্তের সম্পর্কে বা দত্তকসূত্রে গড়ে ওঠে। 
(গ ) পরিবারের সদস্যরা একত্রে একটি নির্দিষ্ট আবাসে বসবাস করে। 
(ঘ ) পরিবারের মধ্যে দিয়েই বংশানুক্রম রক্ষিত হয়। 
(ঙ ) পরিবারের প্রত্যেক সদস্যরই নির্দিষ্ট সামাজিক ভূমিকা থাকে ও অন্যান্য দায়িত্ব কর্তব্য থাকে। 
(চ ) পরিবারের কোনো না কোনো আর্থিক সংস্থান থাকে যার দ্বারা সদস্যদের ভরণপোষণ সম্ভব হয়। 
(ছ ) পরিবার মোটামুটি স্থায়ী হয়। 
(জ ) পরিবারের একটি নাম থাকে। 
(ঝ)  পরিবার তার সদস্যদের দৈহিক ও মানসিক নিরাপত্তা প্রদান করে। 
(ঞ ) পরিবার তার সদস্যদের মধ্যে এক অভিন্ন সংস্কৃতি গড়ে তোলে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

বর্তমানে পরিবারের গঠনগত ও কার্যগত পরিবর্তন :- 


বিগত বেশ কয়েক দশকে পরিবার ব্যবস্থায় বেশ কিছু গঠনগত ও কার্যগত পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।  পূর্বতন সমাজব্যবস্থায় পরিবারগুলি মূলত যৌথ পরিবার ছিল। এর সদস্যসংখ্যা ছিল বেশি , স্বভাবতই  আয়তনেও বৃহৎ ছিল। আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় যৌথ পরিবার ব্যবস্থা ভেঙে গিয়ে একক পরিবার তৈরি হচ্ছে। এর কারণ শুধুমাত্র ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদের প্রাধান্য - তা নয় ; মানুষের রুজি - রোজগার শিল্প কেন্দ্রিক হওয়াটাও অন্যতম কারন। 

১. যৌন আকাঙ্ক্ষার নিয়ন্ত্রণ :- 
পরিবারের এই ভূমিকাটির এখনও পর্যন্ত খুব একটা পরিবর্তন সাধিত হয়নি। বিবাহ ব্যবস্থার মাধ্যমে সমাজস্বীকৃত পরিবার সৃষ্টি ও তার দ্বারা যৌন আকাঙ্ক্ষার নিয়ন্ত্রণ এখনও ঘটে চলেছে। যদিও বিবাহ ব্যবস্থায় যথেষ্ট পরিবর্তন ঘটেছে। তবে একথা সত্যি যে , পাশ্চাত্য দেশগুলিতে বিবাহের পূর্বে একাধিক মানুষের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারটির বৃদ্ধি ঘটেছে। ওই সকল দেশগুলিতে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বৈধ উপায়ে পরিবার সৃষ্টির পাশাপাশি , চুক্তিভিত্তিক একত্রে বসবাস বা Live together এর প্রবণতা বেড়ে চলেছে। এই সকল পরিবর্তিত ব্যবস্থার ঢেউ লেগেছে আমাদের সমাজ ব্যবস্থাতেও। 

২. সন্তান প্রজনন সংক্রান্ত ভূমিকার পরিবর্তন :- 
পরিবারের সন্তান প্রজননের বিষয়টির ক্ষেত্রে , পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে বর্তমানে পিতা-মাতাগণ অধিক সংখ্যায় সন্তান গ্রহণে আগ্রহী নন। পাশ্চাত্য পরিবারের কোথাও কোথাও সন্তান না থাকায় বিষয়টি পরিবারের অন্যতম উজ্জ্বল বৈশিষ্ট্য বা  '' gloring feature '' হিসেবে বিবেচিত হয়। 
সাবেকি হিন্দু পরিবারগুলিতে ইতিপূর্বে মাতা পিতা অধিক সংখ্যায় সন্তানের জন্ম দিতেন , কিন্তু বর্তমানে পরিবারে স্বামী-স্ত্রীগণ একটি বা দুটি সন্তানই যথেষ্ট মনে করে থাকেন। সন্তান প্রজননের বিষয়টি তাই এখন Not by chance , but by choice হয়ে থাকে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

৩. সন্তান প্রতিপালন ও শিক্ষামূলক ভূমিকার ক্ষেত্রে পরিবর্তন :- 
বর্তমানে একক পরিবারে স্বামী-স্ত্রীগণ পারিবারিক ও অর্থনৈতিক নানা কাজে ব্যস্ত থাকায় এবং অন্য সদস্যদের উপস্থিতি না থাকায় , স্বাভাবিকভাবেই সন্তান প্রতিপালন ও তার শিক্ষাদীক্ষা প্রভৃতির দায়িত্ব এসে বর্তেছে ক্রেস , নার্সারি স্কুল , ছাত্রাবাস , শিশুসদন প্রভৃতি অপারিবারিক সংস্থাগুলির ওপর। আগে এগুলি পরিবারের মধ্যেই , পরিবারের সদস্যদের দ্বারা সম্পাদিত হয়ে যেত।  

৪. নিরাপত্তামূলক ভূমিকার পরিবর্তন :- 
ইতিপূর্বে পরিবারের সকল সদস্যদেরই সকল রকম নিরাপত্তা পরিবার দিয়ে থাকতো। বর্তমানে একক  পরিবারে অল্প কয়েকজন সদস্য নিজেরাই বিভিন্ন সময়ে সামাজিক নিরাপত্তাহীনতায় ভোগ করেন। এই জাতীয় পরিবারে দৈহিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী , অসুস্থ , বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সদস্যদের ক্ষেত্রে তাদের দেখাশোনা ও নিরাপত্তা রক্ষার ভার সাধারণত দেওয়া হয়না। এগুলি বর্তমানে করে থাকে - হাসপাতাল , প্রতিবন্ধী আবাস , বৃদ্ধাশ্রম প্রভৃতি সংস্থাগুলো। 

৫. অর্থনৈতিক ভূমিকার ক্ষেত্রে পরিবর্তন :- 
পূর্বতন পরিবারগুলিকে বলা হত Production Unit বা উৎপাদনশীল একক। অর্থাৎ পরিবার নগদ অর্থ রোজগারের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ভোগ্যদ্রব্যাদি অধিকাংশই উৎপাদন করত। বর্তমানের পরিবারগুলি হল Consumption Unit বা ভোগকারী একক। অর্থাৎ এজাতীয় পরিবারে নগদ অর্থটুকুই রোজগার হয়ে থাকে। ভোগ্যপণ্য - ইত্যাদির জন্য একমাত্র বাজারের উপর অনেকাংশে নির্ভর করতে হয়। 

৬. সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে ভূমিকার পরিবর্তন :- 
পূর্বতন সমাজে সামাজিকীকরণ পরিবারের মধ্যেই সম্পূর্ণভাবে সম্পন্ন হত। বর্তমান সমাজে সামাজিকীকরণে পরিবারের থেকেও বেশি ভূমিকা পালন করে অপারিবারিক সংস্থাগুলি। এ প্রসঙ্গে বলা যায় , ইতিপূর্বের প্রজন্মে সামাজিকীকরণের দ্বারা শিশুর All round development বা সামগ্রিক উন্নয়নের দিকটি নিয়ে অভিভাবকগণ তত বেশি সচেতন ছিলেন না। কিন্তু আধুনিক প্রজন্মের অভিভাবকগণ এ বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন। শিশুর দৈহিক - মানসিক বিকাশ , বিদ্যালয়ে তার প্রগতি ,  কেরিয়ার - ইত্যাদি নিয়ে যথেষ্ট চিন্তাভাবনা করেন বর্তমান প্রজন্মের অভিভাবকগণ। স্বভাবতই শিশুর  সামগ্রিক বিকাশের জন্য যত রকমের সংস্থা আছে - সেগুলির ওপর তাঁরা নির্ভর করে থাকেন। এক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকা ক্রমহ্রাসমান। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

৭. মর্যাদা আরোপ সংক্রান্ত কার্যাবলীর ক্ষেত্রে পরিবর্তন :- 
ইতিপূর্বে ব্যক্তির মর্যাদা স্থির হত তার পারিবারিক মর্যাদার ভিত্তিতে। এ ছিল তাদের আরোপিত মর্যাদা।  কিন্তু বর্তমানে ব্যক্তির মর্যাদা তার যোগ্যতা , পেশা , রোজগার ও সামাজিক গুণাবলীর ভিত্তিতে স্থির হয়।  অর্থাৎ , এক্ষেত্রে পরিবারের গুরুত্ব যথেষ্ট হ্রাস পেয়েছে। 

৮. প্রমোদমূলক ভুমিকার ক্ষেত্রে পরিবর্তন :- 
ইতিপূর্বে পরিবারের সদস্যদের মনোরঞ্জনের চাহিদা পরিবারের সদস্যদের দ্বারাই মিটে যেত। একত্রে খাওয়া-দাওয়া , খেলাধুলা , হাসি-ঠাট্টা - এগুলি ছিল মনোরঞ্জনের মাধ্যম। কিন্তু বর্তমানে পরিবারের সদস্যগণ তাদের সেই মনরঞ্জনমূলক চাহিদা পূরণ করে থাকেন রেডিও-টিভি , সিনেমা , ক্লাব , বার , রেস্তোরাঁ , নাচের ক্লাব , মোবাইল ফোন , ইন্টারনেট - প্রভৃতি বাণিজ্যক মাধ্যম ও সংস্থাগুলির মাধ্যমে। এ ব্যাপারে বর্তমানে পরিবারের ভূমিকা নেই বললেই চলে। 

৯. মহিলাদের ভূমিকার পরিবর্তন :- 
পিতৃতান্ত্রিক যৌথ পরিবারগুলিতে '' পুরুষের কর্তৃত্ব মহিলাদের আনুগত্য '' বা Men for field , women for hearth - এগুলো ছিল মূল ধারণা। কিন্তু বর্তমানে মহিলাদের ভূমিকা শুধুমাত্র গৃহস্থালির কাজকর্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছে। সামাজিক , অর্থনৈতিক , রাজনৈতিক সর্বক্ষেত্রেই তাঁরা পুরুষদের সঙ্গে সমানভাবে কর্তৃত্ত্ব স্থাপন করেছেন। ঠিক এমন করেই পারিবারিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে থেকে শুরু করে পরিবারে কর্তৃত্বের ক্ষেত্র পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে নারীদের ভূমিকা। বিশেষ করে ৭০ এর দশকের বিশ্বব্যাপী নারী আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে নারীরা আজ আর কোনোভাবেই অবদমিত নন। তাই পরিবার এবং পরিবারের বাইরেও তাঁদের ভূমিকার বিরাট পরিবর্তন হয়েছে। 

এছাড়া পরিবারের মধ্যে সদস্যদের মধ্যে আত্মকেন্দ্রিকতা বা ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদের জাগরণ ধর্মীয় সংস্কার ,  রীতিনীতির পরিবর্তন , প্রাচীন বিশ্বাস - ইত্যাদির প্রতি অনীহা , ঐতিহ্যকে বহন না করে চলার মানসিকতা - ইত্যাদি বিভিন্ন পরিবর্তন অবিরত ঘটে চলেছে এবং পরিবারের কার্যগত ও গঠনগত বা কাঠামোগত বৈশিষ্টগুলির আমূল রূপান্তর ঘটছে।

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো। 
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

সামাজিক সচলতা কী ? সামাজিক সচলতার বিভিন্ন রূপগুলি আলোচনা করো। 

What is social mobility ? Discuss the various types of social mobility . 



সামাজিক সচলতা :- 


সামাজিক স্তরবিন্যাস ধারণাটির সাথে সামাজিক সচলতা বিষয়টির গভীর যোগাযোগ বর্তমান। সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গ তাদের সামাজিক মর্যাদা ও ভূমিকার বিচারে - সমাজের বিভিন্ন স্তরে অবস্থান করেন। তবে ওই অবস্থান সর্বকালের জন্য স্থির থাকে না। ব্যক্তির নিজস্ব ইচ্ছা এবং অর্জিত যোগ্যতার ভিত্তিতে , সে তার স্তর পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়। এই স্তর পরিবর্তনের বিষয়টি সমাজভেদে কঠিন বা সরল হয়। সাধারণত দেখা যায় , আবদ্ধ সমাজে বা জাতিগত স্তরবিন্যাসযুক্ত সমাজে এ ঘটনার সুযোগ খুব কম। অন্যদিকে শ্রেণীভিত্তিক মুক্ত সমাজে বিষয়টি অনেক বেশি মাত্রায় ঘটে থাকে। সামাজিক স্তরবিন্যাসের চিত্রটিকে যদি একটি সিঁড়ির সাথে কল্পনা করা যায় , তাহলে দেখা যায় যে , সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গ সেই সিঁড়ির বিভিন্ন ধাপে অবস্থান করেন এবং কোনো কোনো সময় তারা ওই ধাপগুলিকে পরিবর্তন করে থাকেন। সামাজিক সিঁড়ির বিভিন্ন ধাপে ওঠা - নামার ঘটনাটিই হল সামাজিক সচলতা। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

সামাজিক সচলতা বলতে বলা হয় কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্তরবিন্যাসের একটি স্তর থেকে অন্য স্তরে যাওয়া বা আসাকে। এই পরিবর্তনের ফলে ব্যক্তির মর্যাদা , ভূমিকা , জীবনযাত্রা - ইত্যাদির পরিবর্তন ঘটে থাকে। অন্যভাবে বলা যায় , সামাজিক সচলতা হল ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর এক সামাজিক মর্যাদা থেকে অন্য সামাজিক মর্যাদা লাভ করা। সামাজিক সচলতার বিষয়টি আধুনিক সমাজব্যবস্থায় খুব স্বাভাবিক ঘটনা। কেননা , কোনো ব্যক্তিই চিরদিন একই মর্যাদায় আসীন থাকতে চান না। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

সামাজিক সচলতার সংজ্ঞা প্রসঙ্গে সমাজতত্ত্ববিদগণের নিম্নোক্ত মতামত পাওয়া যায় - 

অধ্যাপক C.N. Sankar Rao বলেছেন , সমাজে মানুষের মর্যাদার ক্ষেত্রে ক্রমাগত উত্থান - পতন ঘটছে। এই গতিশীল উত্থান - পতনই হল সামাজিক সচলতা। 

ড্রেসলার বলেছেন , সামাজিক সচলতা ব্যক্তির এক স্তর থেকে অন্য স্তরে গতিশীলতার নির্দেশক। 

সরোকিন - এর মতে , ব্যক্তি বা দলের একটি সামাজিক মর্যাদা বা সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ আচার - অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট সীমা থেকে অন্যসীমায় পরিবর্তনকে সামাজিক সচলতা বলে। 

সামাজিক সচলতার মূল সূচকগুলি হল - বৃত্তিগত পরিবর্তন , আয়ের পরিবর্তন , ভূমিকার পরিবর্তন , জীবনযাত্রার পরিবর্তন , মর্যাদার পরিবর্তন - ইত্যাদি। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

সামাজিক সচলতার প্রকারভেদ :- 

সামাজিক সচলতা দুপ্রকারের হয়ে থাকে। যথা - ১. উল্লম্বী সচলতা ও ২.অনুভূমিক সচলতা। উল্লম্বী সচলতাকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায় - (ক) উর্দ্ধমুখী উল্লম্বী সচলতা ও (খ ) অধঃমুখী উল্লম্বী সচলতা। 



১. উল্লম্বী সচলতা ( Vertical Mobility ) :- 

যে সামাজিক সচলতায় কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সামাজিক সিঁড়ির একটি স্তর থেকে অন্য একটি স্তরে পরিবর্তিত হয় এবং তার সামাজিক মর্যাদার পরিবর্তন ঘটে - তাকে বলা হয় উল্লম্বী সচলতা। যেমন , কোনো দরিদ্র ব্যক্তি হঠাৎ করে ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হলেন ; অথবা কোনো শ্রমিক নিজের যোগ্যতাবলে ব্যাঙ্কের করণিক হলেন। উক্ত দুটি উদাহরণের ক্ষেত্রেই ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদার পরিবর্তন সাধিত হয়।  উল্লম্বী সচলতা দুই প্রকারের হয়। যথা :- 
(ক ) উর্দ্ধমুখী উল্লম্বী সচলতা। 
(খ ) অধোমুখি উল্লম্বী সচলতা। 

এ প্রসঙ্গে সমাজতাত্ত্বিক ম্যারিয়েল তাঁর Society and culture গ্রন্থে বলেছেন ,  উল্লম্বী সচলতা শ্রেণিবিন্যাসের উঁচু অথবা নীচ অবস্থানে গমন করাকে বোঝায়। ড্রেসলারও সামাজিক সচলতার এই প্রকারভেদে উল্লম্বী সচলতা বলতে উর্দ্ধ ও নিম্ন উভয় বিষয়কেই বুঝিয়েছেন। সামাজিক গতিশীলতা বলতে মূলত উল্লম্বী সচলতাকেই বোঝায়। এটি হচ্ছে সামাজিক বিন্যাসের উর্দ্ধমুখী বা নিম্নমুখী চলনশীলতা।    

(ক ) উর্দ্ধমুখী উল্লম্বী সচলতা :- 
উর্দ্ধমুখী উল্লম্বী সচলতার ক্ষেত্রে ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদার উন্নতি ঘটে এবং ব্যক্তি নিম্নস্তর থেকে উচ্চস্তরে পরিবর্তিত হয়। যেমন , কোনো মুচির ছেলে তার নিজের যোগ্যতায় ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হল। সেক্ষেত্রে সেই ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা উপর দিকে প্রবাহিত হয়ে তাঁর মর্যাদা বৃদ্ধি হল। 

(খ ) অধোমুখী উল্লম্বী সচলতা :-  
অন্যদিকে অধোমুখী উল্লম্বী সচলতার ক্ষেত্রে ব্যক্তি সামাজিক মর্যাদার নিম্নগতি প্রাপ্ত হয় বা উচ্চস্তর থেকে নিম্নস্তরে স্খলিত হয়। এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে বলা যায় , কোনো জমিদারের সন্তান কোনো কারণে ভূমিহীন হয়ে কেরাণির পেশা গ্রহণ করলো। এক্ষেত্রে সামাজিক সিঁড়িতে সেই ব্যক্তির অবরোহন ঘটবে। 

২. অনুভূমিক সচলতা ( Horizontal Mobility ) :- 

অনুভূমিক সচলতা বলতে বোঝায় একই সামাজিক স্তরের মধ্যে কোনো ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা ঘোরাফেরা করে। তবে এক্ষেত্রে সাধারণতঃ ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদার তারতম্য ঘটে না। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় , কোনো শিক্ষক এক স্কুল ছেড়ে অন্য একটি স্কুলে যোগদান করলেন। সেক্ষেত্রে , তাঁর আয় , সামাজিক মর্যাদা - ইত্যাদির কোনো পরিবর্তন ঘটবে ঘটেনা।       

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

মাধ্যমিক শিক্ষা বিষয়ে হান্টার কমিশনের সুপারিশগুলি আলোচনা করো। 



1882 খ্রিস্টাব্দের 3 ই ফেব্রুয়ারী তদানীন্তন ভাইসরয় লর্ড রিপন তাঁর কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য স্যার উইলিয়াম উইলসন হান্টার - কে সভাপতি নিযুক্ত করে ভারতের প্রথম শিক্ষা কমিশন গঠন করেন। হান্টার কমিশনকে প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে সেই সম্পর্কেই সুপারিশ করতে বলা হয়েছিল ; কিন্তু মাধ্যমিক শিক্ষা যেহেতু প্রাথমিক শিক্ষার উপর নির্ভরশীল , তাই কমিশন প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি মাধ্যমিক শিক্ষার পুনর্গঠন সম্পর্কেও কতকগুলি সুপারিশ করেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

১. মাধ্যমিক শিক্ষা ও বেসরকারি প্রচেষ্টা :- 
(i) মাধ্যমিক শিক্ষার দায়িত্ব ধীরে ধীরে বেসরকারি কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার ওপর ন্যাস্ত করতে হবে। 
(ii) মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলির উন্নতির জন্য অধিক পরিমাণে সরকারি অর্থ ব্যয় করতে হবে। 
(iii) সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলির মতই বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলিকেও সমান মর্যাদা প্রদান করতে হবে। 
(iv) প্রতিটি জেলায় একটি করে আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। 
(v) অনগ্রসর অঞ্চলের জন্য সরকারি উদ্যোগে মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে। 
(vi) বেসরকারি প্রচেষ্টায় যাতে আরও বেশি সংখ্যক মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয় , তার জন্য স্থানীয় পরিচালন সমিতিগুলিকে নিজেদের বিদ্যালয়গুলিতে বেতন নির্ধারণের স্বাধীনতা দিতে হবে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

২. পাঠক্রমে A কোর্স ও B কোর্স - প্রবর্তন :- 
কমিশন মাধ্যমিক শিক্ষার পাঠক্রমকে A কোর্স এবং B কোর্স - এই দুভাগে ভাগ করার সুপারিশ করেন। A কোর্সের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের প্রস্তুতির জন্য তত্ত্বমূলক শিক্ষা গ্রহণ করবে। আর B কোর্সের শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিক বা বৃত্তিমূলক শিক্ষা গ্রহণ করবে। অবশ্য মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীই অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত একই শিক্ষা লাভ করবে। তারপর তারা A কোর্স বা B কোর্স গ্রহণ করার সুযোগ পাবে। 
যেসকল শিক্ষার্থী A কোর্স নেবে , তাদের কলেজীয় শিক্ষা পাবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ট্রান্স পরীক্ষা হবে। কমিশন আশা করেছিল , বেশিরভাগ শিক্ষার্থী B কোর্স তথা ব্যবহারিক শিক্ষা বেছে নেবে। বাস্তবে কিন্তু তা ঘটেনি। অধিকাংশ শিক্ষার্থী  A কোর্সের প্রতিই আকৃষ্ট হয়েছিল। 

৩. নিম্নমাধ্যমিক স্তরে মাতৃভাষাকে স্বীকৃতিদান :- 
কমিশন নিম্নমাধ্যমিক স্তরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ইচ্ছানুযায়ী ইংরেজি অথবা মাতৃভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করার জন্য সুপারিশ করেছিল। কিন্তু মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার মাধ্যম কী হবে সে বিষয়ে কমিশনের কোনো সুনির্দিষ্ট সুপারিশ না থাকায় সেখানে ইংরেজিকেই শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা হয়। ফলে নিম্ন মাধ্যমিক স্তরে মাতৃভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা কোনো বিদ্যালয়ের পক্ষেই সম্ভবপর হয়নি। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

৪. শিক্ষক - শিক্ষণ :- 
কমিশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্নাতক শিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে সরকারের কাছে এ বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করে। কমিশনের সুপারিশে বলা হয় - শিক্ষণ বিষয়ে কিছু অভিজ্ঞতা না থাকলে কোনো ব্যক্তিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা যাবে না। শিক্ষক নিয়োগ করার আগে , শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষণতত্ত্ব সম্পর্কে পরীক্ষা গ্রহণ করা প্রয়োজন। 

হান্টার কমিশনের মাধ্যমিক শিক্ষা বিষয়ে সুপারিশের মূল্যায়ণ :- 


প্রথমতঃ - কমিশন মাধ্যমিক শিক্ষার বেসরকারি উদ্যোগকে উৎসাহিত করার সুপারিশ করায় পরবর্তী বিশ বছরে দেশে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। শিক্ষার্থীর সংখ্যা যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়। 

দ্বিতীয়তঃ - কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সরকার জেলায় জেলায় আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করে। ওই বিদ্যালগুলি আজও মডেল স্কুলের ভূমিকা পালন করে চলেছে। 

তৃতীয়তঃ - মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরে A কোর্স ও B কোর্স প্রবর্তনের সুপারিশ করে কমিশন গতানুগতিক পুঁথিগত শিক্ষার পাশাপাশি ব্যবহারিক জীবনের উপযোগী কর্মভিত্তিক শিক্ষার যে সুযোগ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন , তার মধ্যে বর্তমান যুগের বহুমুখী মাধ্যমিক শিক্ষার বীজ নিহিত ছিল। সুতরাং বলা যায় যে , কমিশনের ওই সুপারিশের মধ্যে যথেষ্ট সম্ভাবনা ও দূরদৃষ্টির পরিচয় ছিল। 

চতুর্থতঃ - মাধ্যমিক শিক্ষাক্ষেত্র থেকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহার করার যে নীতি কমিশন সুপারিশ করেছিল , পরবর্তীকালে তার প্রভাবে দেশে মাধ্যমিক শিক্ষার ব্যাপারে সাধারণ মানুষের মধ্যেও উৎসাহের সৃষ্টি করেছিল।    

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

দিল্লির সুলতানি শাসনের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন ? তাঁর কৃতিত্ব আলোচনা করো। 

অথবা , দিল্লির সুলতানি সাম্রাজ্যের সুদৃঢ়করণে ইলতুৎমিসের ভূমিকার মূল্যায়ন করো। 




ইলতুৎমিশ ( ১২১১ - ১২৩৬ খ্রিস্টাব্দ ) :- 

কুতুবউদ্দিনের মৃত্যুর পর তাঁর পোষ্যপুত্র আরাম শাহ দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন। কিন্তু আরাম শাহ রাজ্যশাসনের অযোগ্য ছিলেন। এই কারণে দিল্লির তুর্কি আমীররা কুতুবউদ্দিনের জামাতা ও বদাউন প্রদেশের শাসনকর্তা ইলতুৎমিসকে দিল্লির সিংহাসন আরোহণ করতে আহ্বান জানান। ইলতুৎমিশ ১২১১ খ্রিস্টাব্দে আরাম শাহকে পরাজিত করে দিল্লির সিংহাসন অধিকার করেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

একাধিক প্রদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা :- 
কিন্তু ইলতুৎমিসের সিংহাসনারোহন মোটেই আরামদায়ক হয়নি। কুতুবউদ্দিনের মৃত্যুর পর আলিমর্দান খালজী বাংলাদশে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। মুলতানের শাসনকর্তা নাসিরউদ্দিন কুবাচা নিজেকে স্বাধীন বলে ঘোষণা করে ভাতিন্ডা দখল করেন। জালোর ও রণথম্ভোর স্বাধীনতা ঘোষণা করে। আজমীঢ় , গোয়ালিয়র ও দোয়াব অঞ্চল দিল্লির সুলতানের হস্তচ্যুত হয়। তাজউদ্দিন ভারতের ওপর সার্বভৌমত্বের দাবি করেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

আমীর ও ওমরাহদের বিদ্রোহ দমন :- 
ইলতুৎমিশ এই সংকটময় পরিস্থিতিতে অবিচলিত চিত্তে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। প্রথমে তিনি বিদ্রোহী আমীর - ওমরাহদের দমন করে দিল্লি ও সন্নিকটস্থ বদাউন , অযোধ্যা , বারাণসী - প্রভৃতি অঞ্চল নিজ আয়ত্তে আনেন। এরপর তিনি তাজউদ্দিন ও নাসিরউদ্দিনের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হন। 

তাজউদ্দিন ও নাসিরউদ্দিনের পরাজয় ও মৃত্যু :- 
১২১৬ খ্রিস্টাব্দে তরাইনের কাছে এক যুদ্ধে তাজউদ্দিনকে পরাজিত করে বন্দী করেন। পরে তিনি বদাউন কারাগারে নিহত হন। ১২১৭ খ্রিস্টাব্দে নাসিরউদ্দিন ইলতুৎমিসের হাতে পরাজিত হয়ে সিন্ধুপ্রদেশে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ১২২৮ খ্রিস্টাব্দে ইলতুৎমিশ সিন্ধু আক্রমণ করলে উপায়ান্তর না দেখে নাসিরউদ্দিন আত্মহত্যা করেন। সিন্ধু অঞ্চল ইলতুৎমিসের দখলে আসে। 
তাজউদ্দিন ও নাসিরউদ্দিনের বিরুদ্ধে জয়লাভের তাৎপর্য প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ডক্টর হাবিবুল্লাহ বলেছেন যে , এর ফলে দিল্লি মধ্য এশিয়ার রাজনীতির জাল থেকে মুক্তি পেল। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

মোঙ্গল নেতা চিঙ্গিজ খাঁর ভারত আক্রমণ :- 
ইলতুৎমিশ যখন অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমনে ব্যাস্ত ঠিক সেই সময় ১২২১ খ্রিস্টাব্দে মোঙ্গলনেতা চিঙ্গিজ খাঁ এক বিরাট মোঙ্গল বাহিনী নিয়ে ভারতে উপস্থিত হন। চিঙ্গিজ খাঁ খারাজিম রাজ্য আক্রমণ করলে যুবরাজ জালালউদ্দীন মাঙ্গবার্ণী পাঞ্জাবে আশ্রয় গ্রহণ করেন। চিঙ্গিজ খাঁ তার পশ্চাদ্ধাবন করে সিন্ধু পর্যন্ত অগ্রসর হন। এই অবস্থায় জালালউদ্দীন মাঙ্গবার্ণী ইলতুৎমিসের আশ্রয় প্রার্থনা করেন। কিন্তু ইলতুৎমিশ চিঙ্গিজ খাঁ - এর বিরুদ্ধে জালালউদ্দিনকে আশ্রয় দিয়ে দিল্লি সুলতানির বিপদ ডেকে আনার পক্ষপাতী ছিলেন না। তাই তিনি বিনয়ের সঙ্গে জালালউদ্দিনের প্রার্থনা প্রত্যাখ্যান করলেন। ইলতুৎমিসের নিরপেক্ষতায় সন্তুষ্ট হয়ে চিঙ্গিজ খাঁ ভারত ত্যাগ করে চলে যান। এইভাবে ইলতুৎমিশ এক প্রবল সংকট থেকে দিল্লি সুলতানিকে রক্ষা করেন।    

বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্রের ভিত্তি সুদৃঢ়করণ :- 
সাংগঠনিক প্রতিভাবলে প্রাথমিক সমস্যাগুলির সমাধান করে দীর্ঘ ছাব্বিশ বছররের অক্লান্ত পরিশ্রমে তিনি সুলতানি সাম্রাজ্যের ভিত্তি সুদৃঢ় করেন ও বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্রের ভিত্তি সুদৃঢ় করতে সমর্থ হন। বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্রের আদর্শ পরবর্তী ত্রিশ বছর ধরে দিল্লির সিংহাসনকে প্রভাবিত করেছিল এবং ইলতুৎমিসের বংশধরেরাই সিংহাসনের একমাত্র উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

দিল্লি শহরের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা : -  
মধ্যযুগের দিল্লি শহরের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হলেন ইলতুৎমিস। একাধিক মসজিদ , মাদ্রাসা , মিনার - ইত্যাদি তাঁরই পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠে। মুসলিম সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবে দিল্লি , ইলতুৎমিসের আমলেই ভারতের বাইরেও খ্যাতিলাভ করে। ঐতিহাসিক মিনহাজ - উস - সিরাজের বর্ণনাতে ইলতুৎমিসের সাংস্কৃতিক পৃষ্ঠপোষকতার পরিচয় পাওয়া যায়। 

শক্তিশালী কেন্দ্রীয় প্রশাসন গঠন :- 
দিল্লির সুলতানির কেন্দ্রীয় প্রশাসনের প্রকৃত ভিত্তি রচনা করেন ইলতুৎমিশ। ইলতুৎমিসের আমলে রাজতন্ত্র ছিল তুর্কিদাস কর্মচারী ও অ - তুর্কি বিদেশিদের সমর্থনের ওপর একান্তভাবে নির্ভরশীল। স্থানীয় শান্তি - শৃঙ্খলার জন্য তিনি স্থানীয় নায়কদের সমর্থন লাভে সর্বদাই সচেষ্ট ছিলেন। বিভিন্ন নায়ক গোষ্ঠীর মধ্যে সমন্বয়সাধন করার ক্ষেত্রে ইলতুৎমিসের দক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায়। 

খলিফা কর্তৃক স্বীকৃতি প্রদান :- 
ইলতুৎমিস সিন্ধু অধিকার করেন। এরপর রণথম্বোর পুনরাধিকার করে তিনি বাংলার খলজি মালিকদের দমন করেন । গোয়ালিয়রও তার অধিকারে আসে । তিনি মালয় অভিযান করে ভিলসা দুর্গ অধিকার করেন ও উজ্জয়িনী দখল করে তা ধ্বংস করেন । এইভাবে তিনি যখন নিজ ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, তখন ১২২৮ খ্রিস্টাব্দে বাগদাদের খলিফা তাঁকে রাজমর্যাদায় ভূষিত করেন । এর ফলে তাঁর মর্যাদা বৃদ্ধি পায় ও ভারতের উপর তাঁর আধিপত্য বৈধ বলে স্বীকৃতি লাভ করে । 

সামরিক বাহিনী :- 
ইলতুৎমিশ একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সৈন্যবাহিনী গঠন করতে সমর্থ হন। কেন্দ্রীয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে সেনা সংগ্রহ ও কেন্দ্রীয় কোষাগার থেকে এদের ভরণ - পোষণের ব্যবস্থা করা হয়। এইভাবে কেন্দ্রীয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এক কেন্দ্রীয় সেনাবাহিনী সংগঠনের সূত্রপাত হয়। 

মুদ্রা :- 
দিল্লির সুলতানদের মধ্যে ইলতুৎমিসই সর্বপ্রথম রৌপ্য তংকা ও তাম্র জিতাল নামে দুপ্রকার মুদ্রার প্রচলন করেন। Nelson Wright  এর মতে , দিল্লির মুদ্রা প্রস্তুতকরণের ইতিহাসে ইলতুৎমিসের রাজত্বকাল স্মরণীয়। তাঁর প্রবর্তিত তংকা পরবর্তীকালের সুলতানদের অনুকরণীয় হয় এবং এই তংকারই রূপান্তর হল আধুনিক কালের রৌপ্য টাকা।    

সাম্রাজ্যবাদী প্রশাসনের সংগঠনে ইলতুৎমিসের মৌলিক প্রতিভার পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি প্রশাসনের যে আদর্শ স্থাপন করেন , তা সমগ্র সুলতানি আমল পর্যন্ত মোটামুটি অব্যাহত থাকে। সিংহাসনে আরোহণ করার সময় সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে অবিচলিত থেকে যে মানসিক দৃঢ়তা ও কূটনীতিজ্ঞানের পরিচয় দেন , দিল্লির অপরাপর সুলতানদের মধ্যে সেরকম দৃষ্টান্ত বিরল। তিনি সুলতানি সাম্রাজ্যের আয়তন বৃদ্ধি করে ও দিল্লির সুলতানদের মধ্যে সর্বপ্রথম খলিফার অনুমোদন লাভ করে সাম্রাজ্যের গৌরব বৃদ্ধি করেছিলেন।

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।                    
 
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানগুলি সম্পর্কে আলোচনা করো।






ভারতীয় সভ্যতা অতি প্রাচীন এবং ইতিহাস সমৃদ্ধ। প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের উপাদান দুভাবে বিভক্ত। প্রত্নতাত্ত্বিক ও সাহিত্যিক উপাদান। প্রাচীন ভারতে লিখিত ঐতিহাসিক গ্রন্থের অপ্রতুলতার কারণে প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানগুলি পথনির্দেশকের কাজ করে। এককথায় বলা যেতে পারে প্রাচীন ভারতের ইতিহাস লিখিত ও প্রত্নতাত্ত্বিক উভয় প্রকার উপাদানের সমন্বয়ে রচিত।
প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানগুলি হলো - (ক ) লিপি বা লেখমালা , (খ ) মুদ্রা , (গ ) স্থাপত্য ও ভাস্কর্য , (ঘ ) প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ।
লিখিত সাহিত্যিক উপাদানগুলি হলো - (ক ) দেশীয় সাহিত্য , (খ ) বৈদেশিক বিবরণ।

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

লিপি বা লেখমালা :-
প্রাচীন লিপির ঐতিহাসিক মূল্য প্রসঙ্গে স্মিথ বলেছেন - '' ঐতিহাসিক জ্ঞানের উপাদান হিসাবে প্রাচীন লিপিগুলি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও নির্ভরযোগ্য। ''
ঐতিহাসিক ফ্লিট -এর মতে , মুদ্রা , ভাস্কর্য , স্থাপত্য , ঐতিহ্য ও সাহিত্য থেকে আমরা যে সকল বিবরণ পাই তার সত্যতা নির্ণয় করতে লিপিমালা যথেষ্ট সাহায্য করে।
লিপিগুলি থেকে প্রাচীন যুগের আর্থ -সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার বহুল বিবরণ পাওয়া যায়। যেমন -
(i)হাতিগুমফা শিলালিপি থেকে কলিঙ্গরাজ খারবেল সম্পর্কে জানা যায়।
(ii)এলাহাবাদ স্তম্ভলিপি থেকে সমুদ্রগুপ্তের রাজত্বকাল ও গুপ্ত সাম্রাজ্যের ইতিহাস জানা যায়।
(iii)সম্রাট অশোকের একাধিক শিলালিপি ও স্তম্ভলিপি থেকে অশোকের ধম্ম ও মৌর্য সাম্রাজ্যের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়।
(iv)এশিয়া মাইনর-এ প্রাপ্ত ''বোঘাজ - কোয়'' শিলালিপি থেকে ভারত আগমনের পূর্বে আর্যদের বিস্তৃতি সম্পর্কে জানা যায়।
(v)নকশি রুস্তম - এ প্রাপ্ত লিপি থেকে ভারতের সাথে ইরানের রাজনৈতিক সম্পর্কের ইতিহাস জানা যায়।
(vi)নাসিক প্রশস্তি থেকে গৌতমীপুত্র সাতকর্ণী সম্পর্কে জানা যায়।
(vii)রবিকীর্তির আইহোল প্রশস্তি দ্বিতীয় পুলকেশী সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে।
এছাড়াও আরো বহু লিপির অস্তিত্ব বর্তমান - যা প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় সহায়তা করে।

মুদ্রা :-
সাহিত্য ও লিপি থেকে যে সকল তথ্যাদি পাওয়া যায় তার সত্যতা জানতে সাহায্য করে মুদ্রা। সন তারিখ সম্বলিত মুদ্রাগুলি কাল নিরুপন করতে সাহায্য করে। মুদ্রা থেকে রাজাদের শাসন , আর্থ - সামাজিক অবস্থা , তাঁদের ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কে বহু তথ্য পাওয়া যায়। শক , ব্যাকট্রিয় ও কুষাণদের ইতিহাস জানতে মুদ্রাই  একমাত্র নির্ভরযোগ্য উপাদান। গুপ্ত রাজাদের মুদ্রা থেকে গুপ্ত সাম্রাজ্যের সমৃদ্ধির কথা জানা যায়।ব্যাকট্রিয় গ্রিক ও শকদের মুদ্রা থেকে ভারত ও রোমের সম্পর্কের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
মুদ্রায় অঙ্কিত ছবি থেকে সমকালীন যুগের ধর্মীয় ও সামাজিক ইতিহাস জানা যায়। মুদ্রার গঠনরীতি থেকে শিল্পকলা ও সৌন্দর্যের পরিচয় পাওয়া যায়। মুদ্রায় ব্যবহৃত ধাতু থেকে তৎকালীন সময়ের অর্থনৈতিক অবস্থা ও ধাতুবিদ্যার কথা জানা যায়।

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

স্থাপত্য ও ভাস্কর্য :-
রাজনৈতিক ইতিহাস জানার ক্ষেত্রে স্থাপত্য ও ভাস্কর্যের গুরুত্ব অধিক না হলেও প্রাচী ভারতের ইতিহাস রচনায় এদের গুরুত্ব কম নয়। তক্ষশীলা ও সারনাথে প্রাপ্ত বহু স্তম্ভগুলি থেকে বৌদ্ধ ধর্ম , কুষাণ যুগ , গান্ধার শিল্প - ইত্যাদি সম্পর্কে বহু তথ্য পাওয়া যায়।  পশ্চিম বাংলার অজয় নদের তীরে পান্ডু রাজার ঢিপি ও চব্বিশ পরগনার বারাসাত - বসিরহাট অঞ্চলে চন্দ্র্রকেতুর গড় ইত্যাদি স্থাপত্য নিদর্শন প্রাচীন বাংলার ইতিহাস জানার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তুর্কিস্থান ও বেলুচিস্তানের খননের দ্বারা ভারতের সাথে উক্ত অঞ্চল দুটির ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের পরিচয় পাওয়া যায়। কম্বোজের আঙ্কোরভাট ও জাভার বরোবুদুরের মন্দির দুটি থেকে ভারতের ঔপনিবেশিক ও সাংস্কৃতিক বিস্তারের পরিচয় পাওয়া যায়।

প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ :-
প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ যেকোনো দেশের সভ্যতা - সংস্কৃতির ইতিহাস জানতে অপরিহার্য উপাদান। খনন কার্যের ফলে প্রাপ্ত প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ গুলি হলো একমাত্র বাস্তব ভিত্তিক উপাদান ; কেননা এই উপাদানগুলির মধ্যে কোনো কৃত্তিমতা থাকে না। ১৯২৪ সালে হরপ্পা সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হওয়ার ফলে ভারতীয় সভ্যতার প্রাচীনত্ব সম্পর্কে বিশ্ববাসীর সামনে এক নতুন দিগন্ত খুলে যায়। এছাড়া মৌর্য আমলে নির্মিত কাষ্ঠ নির্মিত প্রাসাদ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক উপাদান। বর্তমান বিহারের নিকট নালন্দা ও তক্ষশীলার ধ্বংসাবশেষ প্রাচীন ভারতের শিক্ষার ইতিহাস জানার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সাম্প্রতিক কালে মেহেরগড় সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হওয়ার ফলে ভারতীয় উপমহাদেশের সভ্যতার প্রাচীনত্ব সম্পর্কে নতুন করে গবেষণা শুরু হয়েছে।

পরিশেষে বলা যায় , ঐতিহাসিক উপাদানগুলির মধ্যে প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানগুলিকে সবচেয়ে বেশি প্রামাণিক তথ্য হিসেবে ঐতিহিসিকগণ গ্রহণ করে থাকেন। ডক্টর রমেশচন্দ্র মজুমদার , ভিনসেন্ট স্মিথ , অধ্যাপক র‍্যাপসন - প্রমুখ ঐতিহাসিকেরা সকলেই প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানগুলিকে ইতিহাস রচনার জীবন্ত দলিল বলে উল্লেখ করেছেন।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো।

Share
Tweet
Pin
Share
No comments
Newer Posts
Older Posts

Followers

Pages

  • Home
  • Privacy Policy
  • Disclaimer
  • CONTACT ME
  • About Me

Contact Form

Name

Email *

Message *

About me

Hallow viewers , myself Nandan Dutta [Subhankar Dutta], reside at Maheshpur,Malda.
I made this website for the students of B.A. courses under Gour Banga University. Here you can get suggestions of different subjects like HISTORY , SOCIOLOGY , POLITICAL SCIENCE & EDUCATION.
In future I will add MCQ sections of those subjects.


Categories

  • 1ST SEMESTER SUGGESTION (1)
  • 2 ND YEAR SUGGESTION (1)
  • 2ND SEMESTER (1)
  • 3RD SEMESTER (8)
  • BENGALI NOTES (21)
  • CU suggestion. (1)
  • EDUCATION NOTES (141)
  • ENGLISH COMPULSORY (16)
  • GBU Suggestion. (7)
  • HISTORY EUROPE & WORLD (46)
  • HISTORY NOTES (68)
  • POL SC NOTES (68)
  • SOCIOLOGY NOTES (72)
  • WBCS 2020 (1)

recent posts

Blog Archive

  • August 2025 (4)
  • May 2025 (3)
  • April 2025 (20)
  • March 2025 (12)
  • February 2025 (8)
  • November 2024 (5)
  • October 2024 (2)
  • September 2024 (2)
  • June 2024 (2)
  • March 2024 (6)
  • February 2024 (4)
  • October 2023 (5)
  • May 2023 (5)
  • April 2023 (1)
  • December 2022 (1)
  • November 2022 (13)
  • September 2022 (2)
  • August 2022 (7)
  • July 2022 (29)
  • June 2022 (10)
  • May 2022 (25)
  • April 2022 (24)
  • March 2022 (16)
  • February 2022 (19)
  • January 2022 (21)
  • December 2021 (46)
  • November 2021 (5)
  • October 2021 (6)
  • September 2021 (5)
  • August 2021 (41)
  • July 2021 (43)
  • June 2021 (31)
  • May 2021 (7)
  • April 2021 (1)
  • July 2020 (1)
  • June 2020 (3)
  • April 2020 (1)
  • November 2019 (1)
  • July 2019 (1)
  • June 2019 (1)
  • May 2019 (1)
  • April 2019 (2)
  • January 2019 (1)

Pages

  • Home
  • 2nd SEM ভাষাতত্ত্ব :
  • বাংলা উপভাষা
  • দ্বিতীয় পুলকেশীর কৃতিত্ব
  • ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত সাম্যের অধিকারগুলি আলোচনা করো।
  • হর্ষবর্ধনের কৃতিত্ব আলোচনা করো। তাকে কি উত্তর পথনাথ বলা যায় ?
  • ভারতীয় সংবিধানের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য :-
  • উদারনীতিবাদ : সংক্ষিপ্ত ধারণা :-
  • চোল শাসনব্যবস্থা :-
  • গুপ্তযুগ সুবর্ণযুগ সম্পর্কিত আলোচনা।
  • ৬. উদাহরণসহ মধ্যযুগের বাংলাভাষার কয়েকটি বৈশিষ্ট আল...
  • 1. Marxism
  • আধুনিক বাংলা ভাষা ও তার বৈশিষ্ট।
  • Discuss the career and achievements of Samudragupta .
  • ভাষাতত্ত্ব

Created with by ThemeXpose | Distributed by Blogger Templates