Pages

Powered by Blogger.
1ST SEMESTER SUGGESTION 2 ND YEAR SUGGESTION 2ND SEMESTER 3RD SEMESTER BENGALI NOTES CU suggestion. EDUCATION NOTES ENGLISH COMPULSORY GBU Suggestion. HISTORY EUROPE & WORLD HISTORY NOTES POL SC NOTES SOCIOLOGY NOTES WBCS 2020

NANDAN DUTTA

A new approach for exam notes .

রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ও মন্ত্রিসভা পরিচালিত সরকারের মধ্যে পার্থক্য / তুলনামূলক আলোচনা। 

রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ও সংসদীয় শাসনব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য / তুলনামূলক আলোচনা। 

Distinction / Difference between Parliamentary and Presidential forms of Government . ( In Bengali ) 



রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ও মন্ত্রিসভা পরিচালিত সরকারের মধ্যে পার্থক্য। 

রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ও সংসদীয় শাসন ব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য। 


ক্ষমতা স্বাতন্ত্রীকরণ নীতির ভিত্তিতে গণতন্ত্রের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত সরকারগুলিকে দুটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায় ; যথা - রাষ্ট্রপতি পরিচালিত সরকার ও মন্ত্রিসভা পরিচালিত বা সংসদীয় সরকার। এই দুই ধরণের শাসন ব্যবস্থায় সরকার একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত হন। তবে , উভয় ধরণের সরকারের ক্ষেত্রে বহুবিধ পার্থক্য বিদ্যমান। পার্থক্যগুলি নিম্নরূপ :- 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

১. আইনসভার গঠনগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপ্রধান আইনসভা কর্তৃক নিযুক্ত হন না। তিনি সরাসরি জনগণ কর্তৃক নিযুক্ত হন। তাই রাষ্ট্রপতি পরিচালিত সরকারে রাষ্ট্রপ্রধান কোনোভাবেই আইনসভাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না বা আইনসভা রাষ্ট্রপতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। 
কিন্তু সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপ্রধান হন নিয়মতান্ত্রিক এবং তিনি আইনসভার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হন। তিনি পার্লামেন্টের অধিবেশন আহ্বান করতে বা স্থগিত রাখতে পারেন। এমনকি রষ্ট্রপতির সম্মতি ব্যতীত কোনো বিল আইনে পরিণত হতে পারেনা। 

২. রাষ্ট্রপ্রধানের প্রকৃতিগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- রাষ্ট্রপতি পরিচালিত শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যাস্ত থাকে। তিনি হলেন দেশের প্রকৃত শাসক। 
অন্যদিকে মন্ত্রিসভা পরিচালিত সরকারে রাষ্ট্রপ্রধান হলেন নিয়মতান্ত্রিক। অর্থাৎ তত্ত্বগতভাবে তিনি রাষ্ট্রের প্রধান হলেও সরকারের প্রধান নন। অর্থাৎ তিনি তাঁর অধীনস্থ মন্ত্রীবর্গ দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের প্রকৃত প্রধান হন প্রধানমন্ত্রী। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. আইনসভার নিকট দায়িত্বশীলতার ক্ষেত্রে পার্থক্য :- রাষ্ট্রপতি পরিচালিত শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি সরাসরি জনগণ কর্তৃক নিযুক্ত হন। তাই তিনি তার কাজের জন্য কোনোভাবেই আইনসভার নিকট দায়িত্বশীল নন। 
কিন্তু মন্ত্রিসভা পরিচালিত সরকারে মন্ত্রিসভা আইনসভা কর্তৃক নিযুক্ত হয়। ফলে তারা জনগণ ও আইনসভার নিকট যৌথভাবে দায়িত্বশীল থাকে। 

৪. রাষ্ট্রপতির পদচ্যুতির ক্ষেত্রে পার্থক্য :- রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারে আইনসভা রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে তাঁকে পদচ্যুত করতে পারেনা। কেবলমাত্র অক্ষমতা , দেশদ্রোহীতা - ইত্যাদি অভিযোগের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতিকে পদচ্যুত করা যায়। 
কিন্তু সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় মন্ত্রিসভাকে আইনসভাকে সর্বদা সংখ্যা গরিষ্ঠতা বজায় রাখতে হয়। মন্ত্রিপরিষদ সংখ্যা গরিষ্ঠতা হারালে কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই মন্ত্রিসভা ভেঙে দিতে পারে আইনসভা। 

৫. আইন ও শাসন বিভাগের সম্পর্কের ক্ষেত্রে পার্থক্য :- রাষ্ট্রপতি পরিচালিত শাসন ব্যবস্থায় ক্ষমতা স্বাতন্ত্রীকরণ নীতি স্বীকৃত থাকে বলে আইনসভা ও রাষ্ট্রপতির মধ্যে কোনোরূপ সম্পর্ক থাকেনা। এখানে আইনসভা কোনোভাবেই রাষ্ট্রপতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা এবং রাষ্ট্রপতি আইনসভার অধিবেশনে অংশগ্রহণ বা প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণ করতে পারেন না। 
কিন্তু সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় সরকার ও আইনসভার মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক থাকে। আইনসভা এখানে প্রত্যক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আইনসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে থেকেই মন্ত্রিসভার সদস্যরা নির্বাচিত হন। 

৬. মন্ত্রিসভার ক্ষমতাগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- রাষ্ট্রপতি পরিচালিত শাসন ব্যবস্থায় মন্ত্রীগণ নির্বাচিত হন সরাসরি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক। মন্ত্রীদের কার্যকালের স্থায়িত্ব নির্ভর করে রাষ্ট্রপতির ইচ্ছা - অনিচ্ছার উপর। এখানে মন্ত্রীবর্গ রাষ্ট্রপতির অনুগত কর্মচারীমাত্র। 
কিন্তু মন্ত্রিসভা পরিচালিত শাসন ব্যবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা বা নেত্রীরাই প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীপদে নিযুক্ত হন। এই ধরণের শাসন ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত থাকলেও অন্যান্য মন্ত্রীবর্গের স্বাধীন ক্ষমতা ও নীতি প্রণয়নের অধিকার থাকে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. মন্ত্রিসভার গঠনগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :-  রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থায় মন্ত্রীগণ সরাসরি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হন। রাষ্ট্রপতি নিজের ইচ্ছা - অনিচ্ছার ভিত্তিতে তাঁর অধীনস্থ কর্মচারী বা অন্যান্যদেরকে নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করেন। 
কিন্তু মন্ত্রিসভা পরিচালিত শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি ক্যাবিনেটের সদস্যদের নিয়োগ করলেও তিনি তা করেন প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শের ভিত্তিতে। অর্থাৎ ক্যাবিনেট গঠনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি সরাসরি কোনো ক্ষমতাভোগ করেন না। 

৮. স্থায়িত্বের ক্ষেত্রে পার্থক্য :- রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার মন্ত্রিপরিষদ পরিচালিত শাসন ব্যবস্থার চেয়ে অধিক স্থায়ী হয়। রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারে নির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া রাষ্ট্রপতি বা অন্যান্য মন্ত্রীদের পদচ্যুত করা যায়না। 
কিন্তু মন্ত্রিসভা পরিচালিত শাসন ব্যবস্থায় কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো যেতে পারে। 

৯. ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণের ক্ষেত্রে পার্থক্য :- রাষ্ট্রপতি পরিচালিত শাসন ব্যবস্থায় ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি অনুসৃত হয়। এখানে শাসন , আইন ও বিচার বিভাগ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির ভিত্তিতে পরস্পর পরস্পরের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে কার্যপরিচালনা করে। 
কিন্তু মন্ত্রিপরিষদ পরিচালিত শাসন ব্যবস্থায় ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি অনুসৃত হয়না। ফলে এখানে আইন ও শাসন বিভাগের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকে এবং কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে পরস্পরকে প্রভাবিত করে। 

১০. বিচার বিভাগের প্রাধান্যের ক্ষেত্রে :- রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থায় বিচার বিভাগ সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণমুক্ত এবং রাষ্ট্রে বিচার বিভাগের প্রাধান্য অগ্রাধিকার লাভ করে থাকে। 
কিন্তু মন্ত্রিসভা পরিচালিত শাসন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বিচার ব্যবস্থার পরিবর্তে আইনসভাকে প্রাধান্য দেওয়া হয় এবং আইন ও শাসন বিভাগ বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। 

১১. জরুরি অবস্থার ক্ষেত্রে পার্থক্য :- রাষ্ট্রপতি পরিচালিত শাসন ব্যবস্থা জরুরি অবস্থার ক্ষেত্রে সংসদীয় ব্যবস্থার তুলনায় অধিক কার্যকরী। এখানে রাষ্ট্রপতি নিজেই জরুরি অবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন। 
কিন্তু মন্ত্রিসভা পরিচালিত শাসন ব্যবস্থায় বিভিন্ন ধরণের আলাপ - আলোচনা ইত্যাদির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়। তাই জরুরি অবস্থার ক্ষেত্রে মন্ত্রিসভা পরিচালিত শাসন ব্যবস্থা অধিক কার্যকরী নয়। 

১২. আইনসভায় সংখ্যা গরিষ্ঠতার ক্ষেত্রে পার্থক্য :- রাষ্ট্রপতি পরিচালিত শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি সরাসরি জনগণ কর্তৃক নিযুক্ত হন। এখানে রাষ্ট্রপতির নির্বাচনের সাথে আইন সভায় সংখ্যা গরিষ্ঠতার কোনো সম্পর্ক নেই। 
কিন্তু মন্ত্রিসভা পরিচালিত শাসন ব্যবস্থায় সরকার গঠিত হয় আইন সভাতে সংখ্যা গরিষ্ঠতার ভিত্তিতে। একমাত্র সংখ্যা গরিষ্ঠতা ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে সংসদীয় ব্যবস্থায় সরকার গঠন করা যায়না।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো                      


Share
Tweet
Pin
Share
No comments

প্রাচীন প্রস্তর যুগের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো। 

Discuss the different features of Palaeolithic Age . ( In Bengali ) 

প্রাচীন প্রস্তর যুগের বৈশিষ্ট্য :-



প্রাচীন প্রস্তর যুগের বৈশিষ্ট্য :-


সুদূর অতীত থেকে শুরু করে ইতিহাসের লিখিত উপাদানের প্রাপ্তি কালের পূর্ব পর্যন্ত সময়কালকে প্রাগৈতিহাসিক যুগ বলা হয়। মানুষ প্রথম থেকে বিভিন্ন ধরণের পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করে খাদ্যের সংস্থান করত। তাই এই যুগকে প্রস্তর যুগ বলা হয়। বিভিন্ন প্রত্নতত্ত্ববিদগণ পাথরে নির্মিত হাতিয়ারের ক্রমোন্নতি লক্ষ্য করে প্রস্তর যুগ কে তিনটি ভাগে ভাগ করেছেন যথা - (১) প্রাচীন প্রস্তর যুগ (২) মধ্য প্রস্তর যুগ ও (৩) নব্য প্রস্তর যুগ। নব্য প্রস্তর যুগের শেষে মানুষ ধাতুর ব্যবহার শুরু করে। তারা সর্বপ্রথম তামা এবং এর কিছুকাল পর ব্রোঞ্জ ধাতুর ব্যবহার শেখে। তাই নব্য প্রস্তর যুগের পরবর্তী সময় কাল হলো তাম্র প্রস্তর যুগ। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


সময়কাল :- প্রাচীন প্রস্তর যুগের শুরু হয় অন্তত ৫০  হাজার বছর আগে এবং শেষ হয় ১৫০০০  খ্রিস্টপূর্বাব্দে। পিকিং মানব , জাভা মানব , আটলানথ্রোপাস মানব (আলজেরিয়া ) , ওলডুভাই মানব  ( তাঞ্জানিয়া ) ,  নিয়ানডারথাল মানব সহ বিভিন্ন শাখার হোমো ইরেক্টাস অর্থাৎ প্রায় মানুষেরা প্রাচীন প্রস্তর যুগের অন্তর্ভুক্ত ছিল। 

হাতিয়ার :- 
এ যুগের মানুষ বিভিন্ন ধরনের পাথর ও হাড়ের তৈরি হাতিয়ার ব্যবহার করত এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে বসবাস করত। দক্ষিণ আফ্রিকার অস্ট্রালোপিথেকাস নামক মানব গোষ্ঠী সর্বপ্রথম পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করতে শুরু করে। এই যুগের মানুষ প্রকৃতি থেকে যে আকারের পাথর পেত , কোন আকার গত পরিবর্তন না করে সেটিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতো। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে পাথর ভেঙে ধারালো ও তীক্ষ্ণ করার চেষ্টা করত বলেও মনে করা হয়। তারা একই হাতিয়ার দিয়ে মাংস কাটা , কাঠ কাটা , শিকার করা প্রভৃতি বিভিন্ন কাজ করতো। প্রথম দিকে এই সাধারণ হাতিয়ার '' হাত কুঠার '' নামে পরিচিত। ক্রমে তারা পাথরের বল্লম , ছুরি , ছুঁচ , হারপুন প্রভৃতি হাতিয়ার তৈরি করতে শুরু করে।  এ যুগের হাতিয়ার হত অমসৃণ এবং বৃহদাকার। এ যুগের শেষ দিকে মানুষ তির-ধনুক আবিষ্কার করে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

জীবিকা :- 
পশু শিকার করে পশুর মাংস সংগ্রহ করাই ছিল প্রাচীন প্রস্তর যুগের মানুষের প্রধান জীবিকা। প্রথমদিকে ছোট আকারের প্রাণী শিকার করলেও অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তারা দলবদ্ধ হয়ে ম্যামথ , বাইসন , বলগা হরিণ  প্রভৃতি বড় পশুশিকারে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিল। এছাড়া এ যুগের মানুষ বন জঙ্গলে ঘুরে গাছের ফল সংগ্রহ করত , পাখির ডিম সংগ্রহ করত , মাছ ধরত - ইত্যাদি। আগুনের ব্যবহার জানতো না বলে তারা কাঁচা মাংস খেত। 

বাসস্থান:- 
আদিম মানুষ প্রাচীন প্রস্তর যুগের প্রথম দিকে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করত। পরবর্তীকালে তারা গুহার ভেতরে বা পাহাড়ের ঝুলন্ত পাথর এর নিচে বসবাস করত। আরো পরবর্তীকালে তারা গাছের ডালপালা , লতাপাতা , পশুর চামড়া প্রভৃতি দিয়ে তাদের আস্তানা তৈরি করত। তারা গাছের ছাল,  চামড়া ধীরে ধীরে পরিধান করতে শেখে। 
বরফ যুগের আগে মানুষ যেহেতু শুধুমাত্র খাদ্যসংগ্রাহক ছিল তাই তাদের কোনো স্থায়ী আশ্রয়স্থল ছিল না। খাদ্যসংগ্রহ ও পশুশিকারের জন্য তারা এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে ঘুরে বেড়াত। এসময়ে আদিম মানব তৃণ অঞ্চল এবং জলাভূমির পাশে সাময়িকভাবে আশ্রয়স্থল গড়ে তুলেছিল। 
কিন্তু বরফ যুগে অত্যন্ত শীতল প্রাকৃতিক পরিবেশে মানুষ উষ্ণ আশ্রয়স্থলের অনুসন্ধান শুরু করে। এসময় মানুষ পাহাড়ের গুহায় , পাহাড়ের ঝুলন্ত পাথরের ছায়ায় আশ্রয় নেয়। তারপর ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক আশ্রয়স্থলের পাশাপাশি পশুর চামড়া দিয়ে তৈরী তাঁবুতে বা লতাপাতা দিয়ে আচ্ছাদন তৈরী করে বসবাস শুরু করে।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

সমাজজীবন ও সামাজিক কাঠামো :-
প্রাচীন প্রস্তর যুগ থেকেই মানুষ দলবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে শুরু করে। দলবদ্ধভাবে বসবাস ও জীবিকা নির্বাহের ফলে আদিম মানুষের মধ্যে সামাজিক ধারণা গড়ে উঠেছিল। কেউ কেউ মনে করেন যে , এই যুগে আদিম মানুষের সমাজে পরিবারও গড়ে উঠেছিল। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে আদিম মানুষের দলবদ্ধতার প্রধানত দুটি কারণ ছিল -

(এক) ম্যামথ , বাইসন , বলগা হরিণ - প্রভৃতি বড় আকারের প্রাণী শিকার করতে গেলে দলগত শক্তির প্রয়োজন ছিল। 

(দুই) বসতি অঞ্চল হিংস্র পশুর আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার প্রয়োজনে অস্ত্রশস্ত্রসহ দলবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে হতো। 

মাতৃতান্ত্রিক সমাজ -- এই যুগের সমাজ ছিল মাতৃতান্ত্রিক। পরিবার ও সমাজ জীবনে পুরুষদের তুলনায় নারীদের প্রাধান্য বেশি ছিল। নারীদের এই প্রাধান্য অন্তত নব্য প্রস্তর যুগ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। 

প্রাচীন প্রস্তর যুগের মানুষের সমাজ কাঠামো পর্যালোচনা করে মোটামুটি যে ধারণা পাওয়া যায় তা হল - 
(১) ক্ল্যান -- আদিম মানুষ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে বিভক্ত ছিল। এই দলগুলির নাম ছিল ক্ল্যান। অনেকের ধারণায় একই পূর্বপুরুষ থেকে উদ্ভূত বংশধরদের দলের নাম ছিল ক্ল্যান। ক্ল্যানগুলি একই রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ ছিল। প্রতিটি ক্ল্যানে একজন করে দলনেতা থাকত। ক্ল্যানের  সদস্যরা এই দলনেতার নির্দেশ মেনে চলত। 

(২) ট্রাইব -- বিভিন্ন ক্ল্যানের সমন্বয়ে পরবর্তী সময়ে গড়ে ওঠে অপেক্ষাকৃত বড় সামাজিক সংগঠন ট্রাইব। ট্রাইবের  সদস্যদের আলাদা ভাষা ও বাসভূমি ছিল। তারা আধুনিক রাষ্ট্রের নাগরিকদের মতো ট্রাইবের গৌরবে গর্ববোধ করত। 

সামাজিক বিধি নিয়ম :- 
আদিম সমাজে কিছু সামাজিক বিধি নিয়ম ছিল যেমন - 
(১) টোটেম -- ক্ল্যানের সদস্যগণ তাদের কল্পিত পূর্বপুরুষদের পুজো করতো। সাধারণত ক্ল্যানগুলির  এই ধর্মবিশ্বাস পরিচিত ছিল টোটেম নামে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ,  যে ক্ল্যানের সদস্যরা ক্যাঙারুকে তাদের পূর্বপুরুষ বলে মনে করত তাদের টোটেম ছিল ক্যাঙারু। 

(২) টাবু -- ক্ল্যানের সদস্যদের কিছু কঠোর নিয়ম বিধি মেনে চলতে হতো। এ সমস্ত নিয়মবিধির মধ্যে নিষিদ্ধ বিধি বা নিয়ম ছিল টাবু। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় , যে ক্ল্যানের সদস্যদের টোটেম ছিল হরিণ ; তাদের হরিণের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

অস্তিত্বের নিদর্শন :-
আফ্রিকার গ্রে রিফট উপত্যকায় , ইউরোপের কিছু অঞ্চলে , ভারতের পাঞ্জাবের সোয়ান নদী উপত্যকা ও মাদ্রাজে প্রাচীন প্রস্তর যুগের মানুষের অস্তিত্ব ছিল বলে জানা যায়। আশ্চর্যের বিষয় যে , এই যুগে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের মানুষগুলি আলাদা হলেও তাদের তৈরি হাতিয়ার গুলিতে আশ্চর্য মিল পাওয়া যায়। 

গুহাচিত্র :-
আদিম মানুষ পশুর হাড় ও শিঙ দিয়ে গুহার দেওয়ালে ছবি আঁকতে শিখেছিল। তাদের এই গুহা চিত্রের প্রধান বিষয় ছিল শিকার। ফ্রান্স , স্পেন ,  ইতালি প্রভৃতি দেশে এ ধরনের গুহাচিত্রের নিদর্শন মিলেছে। গুহাচিত্রগুলির মধ্যে শিকারের দৃশ্য ছাড়াও ম্যামথের শুঁড় , হরিণের আঁকাবাঁকা শিঙ প্রভৃতি বিষয়ে অধিক প্রাধান্য পেত। গুহার অনেকটা ভিতরের দেয়ালের গায়ে গুহাচিত্র গুলি আঁকা হত। গুহার ভিতরে ছবি আঁকার কারণ হিসাবে ঐতিহাসিকেরা তাদের অলৌকিকতায় বিশ্বাসকে দায়ী করেছেন। পন্ডিতদের মতে, অদৃশ্য শক্তিকে তুষ্ট করে শিকারে সফল হওয়ার জন্যই  তারা এভাবে ছবি আঁকতো। 

ভাষার উদ্ভব :-
ঐতিহাসিকদের অনুমান পুরাতন প্রস্তর যুগেই ভাষার উদ্ভব ঘটেছিল। ক্ল্যানগুলির নিজস্ব ভাষা ছিল। একাধিক ক্ল্যানের আলাদা আলাদা ভাষার দরুন ভাষায় বৈচিত্র্য এসেছিল। দলবদ্ধভাবে শিকার যাত্রার সময় বা মনের বিভিন্ন ভাব প্রকাশের সময় বিভিন্ন সাংকেতিক শব্দের ব্যবহার থেকেই আদিম ভাষার উদ্ভব ঘটে বলা চলে। 

আগুনের ব্যবহার :-
পুরাতন পাথরের যুগে মানুষ নিজেরা কৃত্রিমভাবে আগুন জ্বালাতে শেখেনি। কিন্তু প্রাকৃতিক ভাবে বা দুর্বিপাকের কারণে জ্বলে ওঠা আগুনকে অনেকদিন ধরে জ্বালিয়ে রাখতে শিখিয়েছিল। এই আগুনকে গুহামুখে জ্বালিয়ে রেখে তারা হিংস্র জন্তু জানোয়ারদের তাড়ানোর ব্যবস্থা করতো। এছাড়া আগুন জ্বালিয়ে তারা তুষার যুগের শীতের তীব্রতা থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পেরেছিল। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

মৌর্য শাসন ব্যবস্থা আলোচনা কর। সম্রাট অশোকের আমলে মৌর্য শাসন ব্যবস্থায় কী কী পরিবর্তন দেখা যায় ?  

Examine the Mauryan administration under Chandragupta Maurya . Did Asoka bring about any major changes ? ( In Bengali ) 

Mauryan administration ( In Bengali ) 



মৌর্য শাসন ব্যবস্থা 


তথ্য সূত্র : মেগাস্থিনিসের বিবরণ , কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র , অশোকের শিলালিপি - ইত্যাদি থেকে আমরা মৌর্য শাসন ব্যবস্থা সংক্রান্ত তথ্যাদি পেয়ে থাকি। 

রাজা : সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী :-
মৌর্য রাজারা ভগবানপ্রদত্ত ক্ষমতায় বিশ্বাসী ছিলেন না। রাজা ছিলেন একাধারে সর্বোচ্চ কার্যনির্বাহক , প্রধান বিচারপতি , প্রধান সেনাপতি ও আইন প্রণেতা। আইন প্রণয়ন করার ক্ষমতা একমাত্র রাজার ছিল। তাঁর ইচ্ছানুসারে মন্ত্রী , অমাত্য , সেনাপতি - ইত্যাদি উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারীরা নিযুক্ত ও পদচ্যুত হতেন। সর্বোচ্চ সামরিক ক্ষমতার অধিকারী রাজা যুদ্ধ সংক্রান্ত ব্যাপারে তার চরম প্রভাব প্রতিফলিত করতেন। অনেক সময় রাজা স্বয়ং যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত থাকতেন। অর্থশাস্ত্র অনুসারে মৌর্য রাজারা সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন।

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

মন্ত্রী ও মন্ত্রী পরিষদ :-
মন্ত্রীদের অশোকের আমলের '' মহাপাত্র '' দের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। মন্ত্রীরা রাষ্ট্রের সকল ব্যাপারে রাজাকে পরামর্শ দিতেন। অর্থশাস্ত্র অনুসারে মন্ত্রীদের বাৎসরিক বেতন ছিল ৪৮০০০ টাকা। Dr. R. C. Majumdar  মন্ত্রী ও মন্ত্রীপরিষদকে যথাক্রমে Executive Council ও Legislative Council  বলে অভিহিত করেছেন। গুরুতর সমস্যার আলোচনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ আহ্বান করা হতো। প্রদেশপাল , উপরাজ্যপাল , প্রধান বিচারপতি , নৌ - সেনাপতি - প্রভৃতি উচ্চ পদস্থ রাজকর্মচারী নিয়োগের ব্যাপারে মন্ত্রী পরিষদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতো। 
এছাড়াও ছিল প্রধান সচিব বা অমাত্য - রা। এরা শাসন ও বিচার বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকতেন। এছাড়াও '' অধ্যক্ষ '' বা ম্যাজিস্ট্রেটরা শাসন বিভাগের সাথে যুক্ত ছিলেন। অর্থশাস্ত্রে এইরূপ ৩২ জন অধ্যক্ষের উল্লেখ পাওয়া যায়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

সামরিক সংগঠন :-
অর্থশাস্ত্র অনুসারে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের সামরিক বিভাগ ৩০ জন সদস্য বেষ্টিত একটি পরিষদের উপর ন্যাস্ত ছিল যা ৫ জন করে ৬ টি শাখাতে বিভক্ত ছিল। এই ৬ টি শাখা মোট ৬ টি বিভাগের দায়িত্ব পালন করতো। এই ৬ টি বিভাগ হলো - ১. পদাতিক , ২. অশ্বারোহী , ৩. যুদ্ধরথ , ৪. হস্তীবাহিনী , ৫. রসদ ও যানবাহন এবং ৬. নৌ - বাহিনী। নৌ - বাহিনীর সেনাপতিদের '' নাবাধ্যক্ষ '' বলা হতো। এর মতে , মৌর্য সম্রাটদের নৌ - বাহিনী  মিশর , সিরিয়া , এপিরাস - ইত্যাদি বিদেশি রাষ্ট্রগুলির সাথে সম্পর্ক স্থাপনে সহায়ক হয়েছিল। 
অর্থশাস্ত্র অনুসারে , তীর - ধনুক , বর্শা , কুঠার , তরবারি ছাড়াও '' স্থিতযন্ত্র '' ও '' চলযন্ত্র '' নামক দুটি স্বতন্ত্র অস্ত্রের অস্তিত্ব বর্তমান ছিল। 

পৌর শাসন - ব্যবস্থা :-
মেগাস্থিনিসের বিবরণী থেকে জানা যায় যে , রাজধানীর পৌর শাসনভার ৩০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত একটি পরিষদের ওপর ন্যাস্ত থাকতো। পরিষদটি ৫ জন করে ৬ টি বিভাগে বিভক্ত ছিল। যেমন - ১. প্রথম বিভাগ শিল্পকার্যের তত্ত্বাবধান করতো , ২. দ্বিতীয় বিভাগ বিদেশিদের তত্ত্বাবধান করতো , ৩. তৃতীয় বিভাগ জন্ম - মৃত্যুর হিসাব রাখতো , ৪. চতুর্থ বিভাগ ব্যবসা - বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতো , ৫. পঞ্চম বিভাগ শিল্পজাত পণ্যের বিক্রয়ের তত্ত্বাবধান করতো , ৬. ষষ্ঠ বিভাগ বিক্রিত দ্রব্যের ১/১০ অংশ কর আদায় করতো। নগরের পৌর শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে Basham মন্তব্য করেছেন - 
‘’ Conditions in the larger Mauryan cities approximated to those of a modern police state .’’

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

রাজস্ব ব্যবস্থা :-
সরকারের প্রধান আয় ছিল ভূমি রাজস্ব। জমির ফসলের ১/৬ অংশ ও উৎপন্ন দ্রব্যের ১/৮ অংশ থেকে ১/৪ অংশ পর্যন্ত '' বলি '' কর নেওয়া হতো। এছাড়াও '' ভাগ '' , ''হিরণ্য '' - ইত্যাদি কর প্রচলিত ছিল। বিক্রিত দ্রব্যের ১/১০ অংশ কর , জন্ম - মৃত্যু কর , জলকর - ইত্যাদি রাজস্ব আদায় করা হতো। 
রাষ্ট্রের সমস্ত জমির মালিক রাজা হলেও ব্যাক্তিগত মালিকানাও স্বীকৃত ছিল। ব্যাক্তিগত চাষ এবং মজুর নিয়োগ করে চাষ - উভয় প্রথাই প্রচলিত ছিল। কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি ক্রমশ প্রসারলাভ করতে শুরু করলে নিয়মিতভাবে জমি জরিপের গুরুত্ব অনুভূত হয় এবং দক্ষতার সাথে রাজস্ব আদায় করা রাষ্ট্রের অন্যতম কর্তব্য বলে বিবেচিত হয়। সেই সময় রাজা ও কৃষকের মধ্যে '' মধ্যস্বত্তভোগী '' বলে কিছু ছিল না।  মৌর্য রাজস্ব ব্যবস্থার গুরুত্ব প্রসঙ্গে R.S. Sharma বলেছেন , 
‘’ The Maurya period constitutes a landmark in the system of taxation in ancient India .’’

বিচার - ব্যবস্থা :-
রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বিচারপতি রাজা শাস্ত্রজ্ঞ ও অভিজ্ঞ মন্ত্রী ও অমাত্যদের সাহায্যে বিচারকার্য সম্পাদন করতেন। অর্থশাস্ত্রে বিবিধ বিচারালয়ের উল্লেখ আছে। যেমন - ১. ধর্মস্থীয় , ২. কণ্টকশোধন , ৩. স্থানীয় , ৪. দ্রোনমুখ , ৫. সংগ্রহন - ইত্যাদি। অর্থশাস্ত্র অনুসারে , ধর্ম , চরিত্র , আচার , রাজানুশাসন - ইত্যাদি আইন বলে বিবেচিত হতো। দন্ডবিধি অত্যন্ত কঠোর ছিল। অর্থশাস্ত্রে '' সমস্থা '' ও '' সঞ্চরা '' নামে দুই শ্রেণীর ও স্ট্রাবোর রচনা থেকে ''পরিদর্শক '' নামক এক শ্রেণীর গুপ্তচরের উল্লেখ পাওয়া যায়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

প্রাদেশিক শাসন - ব্যবস্থা :-
মৌর্য সাম্রাজ্যের ৫ টি প্রদেশ ছিল। যথা - ১. প্রাচ্য , ২. উত্তরাপথ , ৩. অবন্তী , ৪.  দক্ষিণাপথ ও ৫. কলিঙ্গ। এদের রাজধানীগুলি ছিল যথাক্রমে - পাটলিপুত্র , তক্ষশীলা , উজ্জয়িনী , সুবর্ণগিরি  ও তোসালি। সম্রাট নিজে রাজধানী থেকে প্রাচ্য শাসন করতেন। অন্যান্য প্রদেশগুলির ভার '' কুমার '' ও '' মহামাত্র '' উপাধিধারীদের হাতে ন্যাস্ত ছিল। প্রদেশগুলি কতকগুলি জনপদে বিভক্ত ছিল। এই জনপদগুলির শাসনভার '' সমাহরাত্রি '' নামক কর্মচারীদের হাতে ন্যাস্ত ছিল। জনপদের ১/৪ অংশের শাসনভার ছিল স্থানিকদের উপর। গ্রামের শাসনভার '' গোপ '' ও '' গ্রামিক '' দের উপর ন্যাস্ত ছিল। '' গ্রামিক '' রা রাষ্ট্র কর্তৃক নিযুক্ত হতেন না , এরা গ্রামবাসী কর্তৃক নিযুক্ত হতেন। 
এছাড়াও প্রদেশ সমূহে '' অন্তপাল '' ও '' দুর্গপাল '' নামক রাজকর্মচারীর উল্লেখ পাওয়া যায়। এরা সীমান্ত রক্ষা ও দুর্গ রক্ষার কাজে নিযুক্ত থাকতেন। 

অশোকের শাসন - ব্যবস্থা : শাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তন :- 


চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য কর্তৃক প্রবর্তিত শাসন ব্যবস্থার মূল কাঠামো অপরিবর্তিত রেখে তার উন্নতিকল্পে অশোক কিছু পরিবর্তন সাধন করেন। কলিঙ্গ যুদ্ধের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে অশোক নিম্নলিখিত পরিবর্তনগুলি সাধন করেন। তাঁর শাসন ব্যবস্থার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল জনকল্যান। তাই তিনি ঘোষণা করেছিলেন , 
‘’ All men are children , and just as I desire for my children that they may obtain every kind of welfare and happiness both in this and the next world , so I desire for all men .’’
-- Rock Edict VI .

সম্রাট অশোক কর্তৃক ঘটিত পরিবর্তন গুলি হলো - 

১. নতুন শ্রেণীর রাজকর্মচারী - অশোকের অনুশাসনলিপিতে নতুন চার শ্রেণীর রাজকর্মচারীর উল্লেখ পাওয়া যায়। যথা - রাজুক , যুত , মহামাত্র ও পুরুষ। 

২. ধর্মমহামাত্র - ধর্মমহামাত্রেরা ধর্ম ও নৈতিকতার কথা প্রচার করতেন। এরা বিচার সংশ্লিষ্ট ব্যাপারেও নিযুক্ত থাকতেন। 

৩. নগর শাসন - অর্থশাস্ত্র অনুসারে অশোকের আমলে তোসালি - ইত্যাদি বৃহৎ নগরীর ক্ষেত্রে পৌর শাসন ভার '' নগর ব্যবহারিক '' রাজকর্মচারীদের হাতে ন্যাস্ত হয়েছিল। 

৪. দণ্ডবিধির কঠোরতা হ্রাস - অশোক '' দন্ডসমতা '' ও '' ব্যবহার সমতা '' নীতির প্রবর্তন করে প্রচলিত দন্ডবিধির কঠোরতা অনেকাংশে হ্রাস করেছিলেন। 

৫. প্রতিবেদক - প্রজাবর্গের অবস্থা ও রাজকর্মচারীদের দায়িত্বপালন সম্পর্কে অবহিত থাকার জন্য অশোক '' প্রতিবেদক '' নামক এক নতুন শ্রেণীর রাজকর্মচারী নিযুক্ত করেছিলেন। 

পরিশেষে বলা যায় যে , চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য কর্তৃক প্রবর্তিত শাসন ব্যবস্থার মূল কাঠামো অপরিবর্তিত রেখে অশোক আপন আদর্শ অনুযায়ী শাসন ব্যবস্থার সংস্কার সাধন করেছিলেন। শাসনতান্ত্রিক প্রতিবিধানের সাথে সাথে তিনি যুক্ত করেছিলেন জনকল্যাণকারী নীতি। তাই Dr. R.C. Majumdar মন্তব্য করেছেন - '' বিশ্বের শাসকদের মধ্যে অশোকের স্থান সর্বোচ্চে। ''

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

অশোকের '' ধম্ম '' সম্পর্কে আলোচনা কর। তাঁর '' ধম্ম '' কি বৌদ্ধ ধর্ম ছিল ? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও। ধর্ম প্রচারের জন্য অশোক কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন ?

Discuss Ashoka's Dhamma . ( In Bengali ) 




অশোকের '' ধম্ম '' :-

কলহন রচিত '' রাজতরঙ্গিনী '' গ্রন্থ থেকে জানা যায় যে , প্রথম জীবনে অশোক ছিলেন শিবের উপাসক। কিন্তু কলিঙ্গ যুদ্ধের ভয়ঙ্কর পরিণাম তাঁর হৃদয়ে গভীর অনুশোচনার সৃষ্টি করে এবং তিনি উপগুপ্ত নামে এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর কাছ থেকে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন। কিন্তু রোমিলা থাপারের মতে , মৌর্যযুগে নগরকেন্দ্রিক সভ্যতার উদ্ভব হলে একদিকে প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি হয় ও অন্যদিকে বণিক সম্প্রদায় সামাজিক স্বীকৃতি লাভের জন্য তৎপর হয়ে ওঠে এবং আরেক দিকে বৌদ্ধ ধর্ম জনিত সমাজ সচেতনতা রাষ্ট্রের সম্মুখে এক নতুন পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এই অবস্থায় রাষ্ট্রের কেন্দ্রাভিমুখী কাঠামোর সংরক্ষণ এবং বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য অশোক বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন বলে রোমিলা থাপার মনে করেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

Minor Rock Edict 1 এ উল্লেখ আছে যে , বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর অশোক কপিলাবস্তু , লুম্বিনী , কুশীনগর , বুদ্ধ গয়া - ইত্যাদি তীর্থস্থানগুলি পরিভ্রমন করেন। দেশ - দেশান্তরে বুদ্ধের বাণী প্রচারের জন্য তিনি ধর্ম প্রচারকদের সিরিয়া , মিশর , এপিরাস , সিংহল - ইত্যাদি দেশে পাঠাবার ব্যাবস্থা করেন। বৌদ্ধ সংঘের সাথেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখতে অশোক যত্নবান ছিলেন। তিনি পাটলিপুত্র নগরে তৃতীয় বৌদ্ধ সঙ্গীতি আহ্বান করেন। এর ফলে বৌদ্ধ সম্প্রদায়গুলির মধ্যে ঐক্য পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। 

ধর্মনীতির মূলকথা :-

বস্তুতপক্ষে অশোক বৌদ্ধ হলেও তাঁর প্রচারিত ধর্ম বৌদ্ধ ধর্ম ছিল না। অশোকের প্রচারিত ধর্ম বৌদ্ধ ধর্ম অপেক্ষা অধিক উদার ও মানবধর্মী ছিল। তাঁর ধর্মের লক্ষ্য ছিল - মানুষের মনে সামাজিক দায়িত্ববোধ জাগরিত করা। রোমিলা থাপারের ভাষায় , ‘’ It was a plea for the recognition of the dignity of man and for a humanistic spirit in the activities of society ‘’.
( A History of India - vol 1, Page 86 )  

দ্বিতীয় স্তম্ভলিপিতে তাঁর ধর্মনীতির ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে অশোক বলেছেন যে , ধর্ম হচ্ছে - পাপের স্বল্পতা , কল্যাণধর্মের প্রাচুর্য , দয়া , সত্য ও শৌচ। পরধর্মসহিষ্ণুতা অশোকের ধর্মনীতিকে মহিমান্বিত করেছিল। বস্তুতপক্ষে অশোকের ধর্ম ছিল উদার , কল্যাণকারী ও মানবহিতৈষী ধর্ম। তিনি ঘোষণা করেছিলেন - 
“ All men are children and just as I desire for my children that they may obtain every kind of welfare and happiness both in this and the next world ; so do I desire for all     men .’’
( Rock Edict VI ) 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

অশোকের ধর্ম বৌদ্ধ ধর্ম ছিল কি'না সে বিষয়ক ঐতিহাসিক বক্তব্য :-

Minor Rock Edict 1  থেকে জানতে পারা যায় যে অশোক বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করে গৃহী উপাসকের মত জীবন যাপন করতেন। '' ভাবরু লিপি '' তে বৌদ্ধ ধর্মে অশোকের গভীর শ্রদ্ধার কথা জানতে পারা যায়। স্তুপ , স্তম্ভ , পর্বতগাত্রে বুদ্ধের বাণী উৎকীর্ণ করা ; বৌদ্ধ সংঘের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা ; তৃতীয় বৌদ্ধ সঙ্গীতি আহ্বান - ইত্যাদি ক্ষেত্রে অশোকের নীতিতে বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব সুস্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়। 

আবার অন্যদিকে ফ্লিট মনে করেন , অশোকের ধর্ম ছিল রাজধর্মের প্রতিবিম্ব। রাজনৈতিক ও নৈতিক অনুশাসনের মধ্যে প্রজাপালন তাঁর অভীষ্ট লক্ষ্য ছিল। রিজ ডেভিডস এর মতে , অশোকের ধর্মকে কোনও একটি নির্দিষ্ট ধর্ম না বলে কর্তব্য - কর্মের নীতি বলাই সমীচীন। পাণিকরের মতে , অশোকের ধর্ম ও হিন্দু ধর্ম অভিন্ন। 

এই সমস্ত যুক্তিগুলি থাকা স্বত্বেও বলা যেতে পারে যে , অশোক যে ধর্মপ্রচার করেছিলেন তা হুবহু বৌদ্ধধর্ম ছিল না। এতে নির্দিষ্ট ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের কোনও স্থান ছিল না এবং বৌদ্ধ সংঘের সাথে জড়িত থাকার কোনো নির্দেশও তিনি দেন নি। প্রকৃতপক্ষে , অশোকের ধর্ম ছিল মানবধর্মী। এর লক্ষ্য ছিল মানুষের মধ্যে সামাজিক দায়িত্ববোধ জাগরিত করা। রোমিলা থাপারের  
ভাষায়  -     It was a plea for the recognition of the dignity of man and for a humanistic spirit in the activities of society ‘’.
( A History of India - vol 1, Page 86 )  

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

ধর্মপ্রচারের জন্য অশোকের পদক্ষেপ :-

রাজা হিসেবে অশোক রাজকর্তব্য সম্পর্কে এক নতুন আদর্শ অনুসরণ করেছিলেন। রাজ্ কর্তব্য সম্পর্কে তাঁর এই আদর্শ বিশ্বের ইতিহাসে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। তিনি ঘোষণা করেছিলেন - 
“ All men are children and just as I desire for my children that they may obtain every kind of welfare and happiness both in this and the next world ; so do I desire for all     men .’’
( Rock Edict VI ) 

অশোক বিহার যাত্রার পরিবর্তে ধর্মযাত্রা প্রচলন করেন। বৌদ্ধ তীর্থস্থান পরিভ্রমণ , ধর্মসভার আহ্বান , বুদ্ধের বাণী প্রচার করে তিনি জনসাধারণকে ধর্মভাবাপন্ন করে তুলতে প্রয়াসী হয়েছিলেন। জনসাধারণের মনে ধর্মাভাব উন্মেষের জন্য তিনি পর্বতগাত্রে , রাস্তার পাশে প্রস্তরখন্ডে ধর্মের মূল তত্ত্বগুলি উৎকীর্ণ করার ব্যবস্থা করেছিলেন। ধর্মের প্রতি মানুষের আকর্ষণ জাগিয়ে তোলার জন্য তিনি '' রাজুক '' , '' যুত '' , '' মহামাত্র '' উপাধিধারী রাজকর্মচারী নিযুক্ত করে সর্বত্র ত্রিবার্ষিক ও পঞ্চবার্ষিক পরিক্রমার ব্যবস্থা করেছিলেন। জনসাধারণ যাতে নীতিপথে চলে এবং রাজকর্মচারীগণ কর্তৃক নির্যাতিত না হয় সেজন্য তিনি '' ধর্মমহামাত্র '' নামে অপর এক শ্রেণীর রাজকর্মচারী নিযুক্ত করেন। 

 বৌদ্ধধর্মের বিশুদ্ধতা ও বৌদ্ধ সংঘের ঐক্য বজায় রাখার জন্য তিনি পাটলিপুত্র নগরে তৃতীয় বৌদ্ধ সঙ্গীতি আহ্বান করেন। এই সভায় সভাপতিত্ব করেন মোগগালিপুত্ত। এই সভার সিদ্ধান্ত সারনাথ স্তম্ভলিপিতে উৎকীর্ণ করা হয়। তৃতীয় বৌদ্ধ সংগীতির সিদ্ধান্ত অনুসারে তিনি ধর্মপ্রচারকদের কাশ্মীর ও গান্ধার , নেপাল , মহারাষ্ট্র , মহীশূর , বারাণসী , দাক্ষিণাত্যের পান্ড্য , সত্যপুত্র , কেরলপুত্র - প্রভৃতি অঞ্চলে পাঠিয়েছিলেন। 

বহিঃ রাষ্ট্রে ধর্মপ্রচার :-

'' মহাবংশ '' নামক বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থে উল্লেখ আছে যে , অশোক তাঁর দূতগণকে তামিলরাজ্যের বিভিন্ন অংশে প্রেরণ করেছিলেন। সিংহলে দূত হিসেবে অশোক তাঁর পুত্র মহেন্দ্র ও কন্যা সংঘমিত্রাকে প্রেরণ করেছিলেন। '' মহারক্ষিত '' উপাধিধারী প্রচারকদের সিরিয়া , মিশর , ম্যাসিডনিয়া , এপিরাস - ইত্যাদি গ্রীক দেশ সমূহে প্রেরণ করেছিলেন। বৌদ্ধ সাহিত্য থেকে জানা যায় যে , অশোক গ্রিক দেশগুলিতে মানুষ ও পশুদের জন্যও চিকিৎসালয় স্থাপন করেছিলেন। সুতরাং অশোকের এই জনহিতকর ও মানবিক কার্যাবলী গ্রীকদের স্পর্শকাতর মনের ওপর যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেছিল। '' সিলভাঁ লেভি '' - র রচনা থেকে জানা যায় যে , অশোকের তিরোধানের অল্পকালের মধ্যে বহু গ্রীক বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করে। অশোক তাঁর ত্রয়োদশ প্রস্তর লিপিতে দাবী করেছেন যে , তাঁর প্রেরিত দূতরা গ্রীক শাসিত মিশর , সিরিয়া , সাইরিন এবং এপিরাসের রাজসভায় সমাদৃত হয়েছিলেন। সুতরাং এ যে অশোকের ধর্মপ্রচারের ফলশ্রুতি তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। তবে অশোকের ধর্মপ্রচারকেরাই যে আফ্রিকা ও গ্রীক দেশগুলিতে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারে সফল হয়েছিলেন এমন কথাও নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। 

ঐতিহাসিক স্যান্ডার্স এর মতে , অশোকের ধর্মপ্রচারকেরা এশিয়া , ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশের কুসংস্কারাচ্ছন্ন অধিবাসীদের মধ্যে কৃষ্টিমূলক প্রভাব বিস্তার করতে সমর্থ হয়েছিলেন। বৈদেশিক কয়েকটি রাষ্ট্রে অশোক জনহিতকর প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছিলেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

প্রাণায়ামের প্রকারভেদ সম্পর্কে আলোচনা করো।  

Discuss the different types of Pranayama . ( In Bengali ) 



প্রাণায়ামের প্রকারভেদ :- 

১. ভস্ত্রিকা প্রাণায়াম :-  ( Bhastrika Pranayama ) 

কোনো ধ্যানাত্মক আসনে সুবিধা অনুযায়ী বসে দুই নাক দিয়ে শ্বাসকে পুরো ভিতরে ডায়াফ্রাম পর্যন্ত ভরা এবং বাইরেও পুরো শক্তির সঙ্গে শ্বাস ছাড়াকে ভস্ত্রিকা প্রাণায়াম বলে। এই প্রাণায়াম নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী তিন প্রকারের করা যেতে পারে। যথা - মৃদু গতিতে , মধ্যম গতিতে এবং তীব্র গতিতে। যেসকল ব্যক্তির ফুসফুস এবং হৃদপিন্ড দুর্বল , তাদের মৃদু গতিতে রেচক এবং পূরক করে এই প্রাণায়াম করা উচিত। সুস্থ ব্যক্তি এবং পুরোনো অভ্যাসকারীদের ধীরে ধীরে শ্বাস - প্রশ্বাসের গতি বাড়িয়ে মধ্যম এবং তারপর তীব্র গতিতে ভস্ত্রিকা প্রাণায়াম করা উচিত। এই প্রাণায়াম ৩-৫ মিনিট পর্যন্ত করা উচিত। 

এই প্রাণায়ামের ফলে - 
(ক ) সর্দি - কাশি ,  অ্যালার্জি , শ্বাস রোগ , হাঁপানি , সাইনাস - ইত্যাদি সমস্ত প্রকারের কফ ঘটিত রোগ দূর হয়। 
(খ ) ফুসফুস শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং শুদ্ধ বায়ু দ্বারা বায়ু প্রাপ্তির ফলে হৃদপিন্ড ও মস্তিষ্কের আরোগ্যলাভ হয়। 
(গ ) থাইরয়েড , টনসিল - ইত্যাদি গলার রোগ দূর হয়। 
(ঘ ) রক্ত পরিশুদ্ধ হয় এবং শরীরের বিষাক্ত , বিজাতীয় দ্রব্য শরীর থেকে বাইরে বেরিয়ে যায়। 
(ঙ ) প্রাণ ও মন স্থির হয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

২. কপালভাতি প্রাণায়াম :- ( Kapalvati Pranayama ) 

কপালভাতি প্রাণায়াম করার সময় মনে এমন বিচার আনা উচিত যে , আমরা যেই মুহূর্তে শ্বাস বাইরে ছাড়ছি , সেই মুহূর্তে নিঃশ্বাসের সঙ্গে আমাদের শরীরের সমস্ত রোগ বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে বা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। রোগ , বিকার , কাম , ক্রোধ , লোভ , মোহ , ঈর্ষা , রাগ , দ্বেষ - ইত্যাদি বের করে দেওয়ার ভাবনা ভাবতে ভাবতে রেচক করা উচিত। সাধারণতঃ ৩-৫ মিনিট কপালভাতি প্রাণায়ামের অভ্যাস করা উচিত। শুরুতে ক্লান্তি , পেট ও কোমরে যন্ত্রণা অনুভূত হলেও , কিছুদিন পর এই যন্ত্রণা নিজে থেকেই দূর হয়ে যায়। 

কপালভাতি প্রাণায়ামের ফলে - 
(ক ) মস্তিস্ক ও মুখমন্ডলে তেজ , আভা ও সৌন্দর্য বেড়ে ওঠে। 
(খ )  সর্দি - কাশি ,  অ্যালার্জি , শ্বাস রোগ , হাঁপানি , সাইনাস - ইত্যাদি সমস্ত প্রকারের কফ ঘটিত রোগ দূর হয়।   
(গ ) ফুসফুস , হৃদপিন্ড ও মস্তিষ্কের সমস্ত রোগ দূর হয়। 
(ঘ ) মেদাধিক্য , কোষ্ঠকাঠিন্য , ডায়াবেটিস , অম্লপিত্ত , কিডনি ও প্রস্টেটের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্ত রোগ নিশ্চিতভাবে দূর হয়। 
(ঙ ) হৃদপিন্ডের শিরাগুলির অবরোধ বা ব্লকেজ খুলে যায়। 
(চ ) ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।  
(ছ ) আমাশয় , অগ্ন্যাশয় , যকৃৎ , প্লীহা , অন্ত্র - ইত্যাদির দুর্বলতা ও রোগ দূর করতে এই প্রাণায়াম বিশেষভাবে কার্যকরী। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. বাহ্য প্রাণায়াম :-  ( Bahya Pranayama ) 

সিদ্ধাসন বা পদ্মাসনে বসে শ্বাসকে জোরপূর্বক বাইরে বের করে দিতে হবে। শ্বাস বাইরে ছেড়ে মুখবন্ধ ( পায়ুপ্রদেশ এবং মুত্রেন্দ্রিয়কে উপরের দিকে আকর্ষিত করতে হবে। এই বন্ধে নাভির নিচের অংশে টান পড়বে ) , উড্ডীয়ান বন্ধ ( পেটকে ভেতরের দিকে ঢোকানোর চেষ্টা করা ) এবং জালন্ধর বন্ধ ( হাত দুটিকে হাঁটুর উপরে রেখে থুতনিকে কিছুটা ঝুঁকিয়ে কণ্ঠকূপের সঙ্গে লাগানো ) - এই তিনের মাধ্যমে শ্বাসকে যথাসম্ভব বাইরে আটকে রাখতে হবে। যখন শ্বাস নেওয়ার ইচ্ছা হবে তখন বন্ধগুলিকে সরিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে হবে। 

এই প্রাণায়ামের ফলে - 
(ক ) মনের চঞ্চলতা দূর হয়। 
(খ ) এই প্রাণায়াম পেটের রোগে বিশেষ লাভপ্রদ হয়। 
(গ ) বুদ্ধি সূক্ষ্ম ও তীব্র হয়ে ওঠে। 
(ঘ ) বীর্যকে উর্দ্ধগামী করে স্বপ্নদোষ , শীঘ্রপতন - ইত্যাদি বিকারের নিবৃত্তি করে। 
(ঙ ) পেটকে বিশ্রাম এবং আরোগ্য প্রদানের জন্য ত্রিবন্ধপূর্বক এই প্রাণায়াম করা উচিত। 

৪. অনুলোম - বিলোম প্রাণায়াম :-  ( Anuloma - Viloma Pranayama ) 

ডান হাতকে তুলে , ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল দ্বারা ডানদিকের নাসাছিদ্র এবং অনামিকা বা মধ্যমা আঙুল দ্বারা বাম দিকের নাসারন্ধ্র বন্ধ করা উচিত। প্রক্রিয়াটি অবশ্য বাম দিকের নাসিকা দ্বারা শুরু করা উচিত। বৃদ্ধাঙ্গুল দ্বারা ডান নাক বন্ধ করে বাম দিকের নাসাছিদ্র দিয়ে শ্বাস নিতে হবে। পুরো শ্বাস নেওয়ার পর অনামিকা বা মধ্যমা দ্বারা বাম নাক বন্ধ করে ডান নাসাছিদ্র দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছেড়ে দিতে হবে। তারপর একই প্রক্রিয়া অপর নাসাছিদ্রগুলি দিয়ে অর্থাৎ , ডান দিক দিয়ে শ্বাস নিয়ে বাম দিকের নাসাছিদ্র দিয়ে শ্বাস ছেড়ে দিতে হবে। ক্লান্তি আসলে একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার করা যেতে পারে। ৩-১০ মিনিট পর্যন্ত এই প্রাণায়াম করা যেতে পারে। 

অনুলোম - বিলোম প্রাণায়ামের ফলে - 
(ক ) এই প্রাণায়াম দ্বারা বাহাত্তর কোটি বাহাত্তর লক্ষ দশ হাজার দুশো দশ নাড়ি পরিশুদ্ধ হয়। 
(খ ) সন্ধিবাত , আমবাত , গেঁটে বাত , স্নায়ু দুর্বলতা , মূত্ররোগ , ধাতুরোগ , অম্লপিত্ত , সর্দি জ্বর , হাঁপানি , কাশি , টনসিল , সাইনাস - ইত্যাদি বহুরোগ দূর হয়। 
(গ ) হৃদপিন্ডের শিরাগুলির অবরোধ বা ব্লকেজ খুলে যায়।    
(ঘ ) কোলেস্টোরল , ট্রাইগ্লিসারাইডস , HDL  বা  LDL - ইত্যাদি রোগের নিরাময় সম্ভব হয়। 

৫. ভ্রামরী প্রাণায়াম :-  ( Bhramari Pranayama ) 

শ্বাসকে পুরো ভিতরে পুরে দুই হাতের মধ্যমা আঙ্গুল দিয়ে নাকের মুলদেশে চোখের দুই পাশে একটু চেপে রাখতে হবে এবং অন্যান্য আঙুলগুলি নাকের দুইপাশে ত্বককে স্পর্শ করে থাকবে। দুই হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে দুই কানকে পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। এবার ভ্রমরের মতো গুঞ্জন করতে করতে ওঁম শব্দের উচ্চারণ করে শ্বাসকে নাকের মধ্যে দিয়ে নবাইরে ছাড়তে হবে। এই সময় মুখ বন্ধ থাকবে। 

ভ্রামরী প্রাণায়ামের ফলে - 
(ক ) মনের চঞ্চলতা দূর করা সম্ভব হয়। 
(খ ) মানসিক টেনশন , উত্তেজনা , উচ্চ রক্তচাপ , হৃদরোগ - ইত্যাদিতে এই প্রাণায়াম অত্যন্ত লাভকারী হয়। 
(গ ) এই ধ্যানের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী প্রাণায়াম। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


৬. নাড়ি শোধন প্রাণায়াম :-  ( Nadi Shoidhan Pranayama ) 

শুরুতে নাড়ি শোধন প্রাণায়ামের জন্য অনুলোম - বিলোমের মতো ডান নাককে বন্ধ করে বাম নাক দিয়ে পুরো শ্বাস নিতে হবে। পুরো শ্বাস নেওয়ার পর মুখবন্ধ এবং জালন্ধর বন্ধ করা উচিত। তারপর জালন্ধর বন্ধ সরিয়ে শ্বাসকে অত্যন্ত ধীর গতিতে ডান নাক দিয়ে বাইরে ছাড়তে হবে। পুরো শ্বাস ছেড়ে দেওয়ার পর ডান দিকের নাক দিয়ে শ্বাস নিয়ে অন্তঃকুম্ভক করে শ্বাসকে আটকে রেখে বাম দিকের নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাসকে বাইরে ছাড়তে হবে। শ্বাস নেওয়া বা ছাড়ার সময় প্রাণের কোনো শব্দ হওয়া উচিত নয়। এই প্রাণায়াম কমপক্ষে তিনবার করা উচিত। 

এই প্রাণায়ামের উপকারিতা অনুলোম - বিলোমের অনুরূপ। 

৭. চন্দ্রভেদী বা চন্দ্রাঙ্গ প্রাণায়াম :-  ( Chandra Bhedi Pranayama ) 

এই প্রাণায়ামে বাম নাক দিয়ে পূরক করে , তারপর অন্তঃকুম্ভক করতে হবে। এই প্রাণায়াম জালন্ধর এবং মূলবন্ধের সঙ্গে অভ্যাস করা উত্তম। তারপর ডান নাক দিয়ে রেচক করতে হবে। এই প্রাণায়ামে সর্বদা চন্দ্রস্বর বা বাম নাক দিয়ে পূরক এবং সূর্যস্বর বা ডান নাক দিয়ে রেচক করা হয়। 

এই প্রাণায়ামের ফলে - 
(ক ) শরীরে শীতলতা এসে ক্লান্তি ও উষ্ণতা দূর হয়। 
(খ ) মানসিক উত্তেজনা শান্ত হয়। 
(গ ) পিত্তের কারণে উৎপন্ন জ্বলুনিতে এই প্রাণায়াম লাভদায়ক হয়। 

৮. উজ্জায়ী প্রাণায়াম :- ( Ujjayi Pranayama ) 

এই প্রাণায়ামে পূরক করতে করতে গলাকে সংকুচিত করতে হয় এবং যখন গলাকে সংকুচিত করে শ্বাস ভিতরে নেওয়া হয় , তখন গলা দিয়ে নাক ডাকার মতো আওয়াজ বেরোতে থাকে। তবে , বাতাসের ঘর্ষণ নাকে হওয়াটা উচিত নয় , গলায় ঘর্ষণ হলে একটি ধ্বনি উৎপন্ন হবে। শুরুতে কুম্ভকের প্রয়োগ না করে শুধুমাত্র পূরক - রেচকেই অভ্যাস করা উচিত। 

এই প্রাণায়ামের ফলে - 
(ক ) সর্দি কাশি , টনসিল , থাইরয়েড , মানসিক টেনশন , রক্তচাপ , টি বি , আমবাত - ইত্যাদি রোগে এই প্রাণায়াম খুবই উপকারী। 
(খ ) গলাকে নীরোগ এবং মধুর করার জন্য এই প্রাণায়াম খুবই কার্যকরী। 
(গ ) তোতলামি দূর হয়। 

৯. শীতলী প্রাণায়াম :-  ( Sheetali Pranayama ) 

ধ্যানাত্মক আসনে বসে দুই হাতকে হাঁটুর উপরে রাখতে হবে। জিভকে নালির মতো সরু করে মুড়ে মুখ খোলা রেখে মুখ দিয়ে পূরক করতে হবে। জিভের মধ্যে দিয়ে শ্বাস নিয়ে ফুসফুস পূরণ করতে হবে। কয়েক মুহূর্ত থেমে মুখ বন্ধ করে দুই নাক দিয়ে রেচক করতে হবে। এইভাবে ৪-১০ বার অভ্যাস করতে হবে। 

এই প্রাণায়ামের ফলে - 
(ক ) জিভ , মুখ ও গলার রোগে এই প্রাণায়াম কার্যকরী। 
(খ ) ক্ষুধা - তৃষ্ণার উপর নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করা যায়। 
(গ ) উচ্চ রক্তচাপ , পিত্ত রোগ ও রক্ত শোধনের ক্ষেত্রে এই প্রাণায়াম কার্যকরী। 

১০. শীৎকারী প্রাণায়াম :-  ( Sitkari Pranayama ) 

ধ্যানাত্মক আসনে বসে জিভকে উপরের দিকে তালুর সঙ্গে লাগিয়ে উপর আর নিচের পাটির দাঁতের সঙ্গে একদম সাঁটিয়ে ধরে ঠোঁটকে খুলে রাখতে হবে। এবার 'সী' 'সী' আওয়াজ করতে করতে মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হবে। জালন্ধর বন্ধ করে যতটা সম্ভব এভাবে থেকে মুখ বন্ধ করে নাক দিয়ে ধীরে ধীরে রেচক করতে হবে। 

এই প্রাণায়ামের ফলে - 
(ক ) দন্তরোগ , গলা - মুখ - নাক - জিভ - ইত্যাদি রোগ নিরাময় সম্ভব হয়। 
(খ ) শরীর ঠান্ডা হয়। 
(গ ) ঘুম নিয়ন্ত্রিত হয়। 
(ঘ ) উচ্চ রক্তচাপ থাকলে এই প্রাণায়ামে উপকার পাওয়া যায়।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

সংসদীয় বা মন্ত্রিপরিষদ পরিচালিত শাসন ব্যবস্থার সুবিধা - অসুবিধা। 

সংসদীয় বা মন্ত্রিপরিষদ পরিচালিত সরকারের সুবিধা - অসুবিধা। 




সংসদীয় বা মন্ত্রিপরিষদ পরিচালিত সরকারের সুবিধা :- 


১. আইন ও শাসন বিভাগের যৌথ সহযোগিতা ও প্রত্যক্ষ সম্পর্ক :- সংসদীয় সরকারের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট হল শাসন বিভাগ ও আইন বিভাগের মধ্যে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক। এইভাবে আইন ও শাসন বিভাগের মধ্যে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক থাকার ফলে উভয় বিভাগের মধ্যে বিরোধের সম্ভাবনা হ্রাস পায় এবং শাসনতান্ত্রিক অচলাবস্থার সম্ভাবনার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়। নীতি প্রণয়ন ও তা রূপায়ণের ক্ষেত্রে শাসন ও আইন বিভাগের মধ্যে যৌথ সহযোগিতার পরিবেশ তৈরী হয়। 

২. নমনীয় ও স্থিতিস্থাপক :- সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় সরকারি ব্যবস্থা নমনীয় ও স্থিতিস্থাপক। যেকোনো ধরণের জটিল অথবা জরুরি পরিস্তিতির ভিত্তিতে সরকারি নীতির যথাযথ পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির ভিত্তিতে প্রশাসন বা সরকারের প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব। তাই সংসদীয় সরকার নমনীয় ও স্থিতিস্থাপক। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. আইনসভার নিকট দায়িত্বশীল মন্ত্রিসভা :- সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় মন্ত্রিসভা আইন সভার নিকট দায়িত্বশীল থাকে। অযোগ্য বা দুর্নীতিগ্রস্থ মন্ত্রিসভাকে আইনসভা তার সাংবিধানিক ক্ষমতার সাহায্যে অপসারিত করতে পারেন। এমনকি প্রয়োজনে আইনসভা ভেঙে দিয়ে পুনরায় ভোট গ্রহণ করা যেতে পারে। ফলে , জনগণের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আইন ও শাসন বিভাগ পরিচালিত হতে পারে। 

৪. শাসন বিভাগের স্বৈরতান্ত্রিক প্রবণতা রোধ :- সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় শাসন বিভাগ সরাসরি আইনসভার কাছে দায়িত্বশীল থাকে। এমনকি শাসন বিভাগের কার্যকালের অস্তিত্ব নির্ভর করে আইনসভার উপর। আইনসভা প্রয়োজনে শাসন বিভাগকে অপসারিত করতে পারে। তাই সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় শাসন বিভাগের স্বৈরতান্ত্রিক প্রবণতা হ্রাস পায়। 

৫. রাজনৈতিক সচেতনতার প্রসার :- সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় আইনসভা ও সরকারের কার্যাবলী , বিভিন্ন নীতি ও পরিকল্পনা , আইনসভা পরিচালনা , আইনসভায় বিভিন্ন প্রস্তাব আলোচনা - ইত্যাদি বিষয়গুলি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় ফলে জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতার বিস্তার ঘটে। 

৬. সরকার ও বিরোধী দলের পারস্পরিক সম্পর্ক :- সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক জনকল্যাণকর নীতি প্রণয়নে সহায়তা করে। সরকার যেমন নীতি নির্ধারণ ও তা প্রণয়ন করে ; ঠিক তেমনি বিরোধী দল সরকারি কাজকর্মের বিরোধিতার মাধ্যমে সরকারকে জনকল্যাণকারী নীতি প্রণয়ন করতে বাধ্য করে। 
এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. বিরোধী দলের মর্যাদা স্বীকার :- সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় শাসক ও বিরোধী দল উভয়েরই সাংবিধানিক মর্যাদা স্বীকৃত থাকে। বিরোধী দলনেতা একটি সাংবিধানিক পদ। এছাড়াও বিরোধী দল সরকারি নীতি ও কার্যাবলীর সমালোচনা করার অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করে থাকে। বিরোধী দলের এইরূপ সাংবিধানিক মর্যাদার ফলে শাসনতান্ত্রিক ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির অনুকূল হয়। 

৮. দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থার পক্ষে সহায়ক :- সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন পরিচালনায় সহায়ক। সরকারের যেকোনো জনবিরোধী নীতি , কার্যকলাপ - ইত্যাদি বিরোধী দলের কাছে একটি সুযোগ এবং এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী দল ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে সরকার বিরোধী পরিবেশ গড়ে তোলে এমনকি সরকার  আহ্বান করে। ফলে সরকারকে সর্বদা স্বচ্ছ ভাবমূর্তি বজায় রাখতে হয়। 

সংসদীয় বা মন্ত্রিপরিষদ পরিচালিত শাসন ব্যবস্থার অসুবিধা :- 


১. স্থায়িত্বহীনতা :- সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় সরকার বা শাসন বিভাগ কোনো কারণে আইনসভার আস্থা হারালে বা সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য সমর্থন প্রত্যাহার করলে সরকারের পতন ঘটে। সরকারকে সর্বদা স্থায়িত্তের জন্য আইনসভার মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয়। ফলে সরকার তার যেকোনো নীতি ও পরিকল্পনা রূপায়ণের ক্ষেত্রে আইনসভার সম্মতির উপর নির্ভরশীল থাকতে হয়। 

২. জোট সরকারের ক্ষেত্রে অনুপযুক্ততা :- সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় অনেক সময় জোট সরকার গঠিত হয়। কিন্তু একাধিক রাজনৈতিক দলের মধ্যে এই জোট গঠিত হয় পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে। কিন্তু জোট দলগুলির মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব তৈরী হলে এবং একটি দল সমর্থন প্রত্যাহার করে নিলে অতি সহজেই সরকারের পতন ঘটে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. সরকার দুর্নীতির উর্ধে নয় :- মন্ত্রিসভা পরিচালিত সরকার সর্বদা যে দুর্নীতিমুক্ত শাসন ব্যবস্থা পরিচালিত করতে পারে - এমনটা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই জাতীয় স্বার্থের তুলনায় ব্যক্তিস্বার্থ ও দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। কোনো দল বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করলে আইনসভাতেও তাদের একাধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ফলে সরকার বিরোধী যেকোনো ধরণের অভিযোগ শুরুতেই বিনাশ করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। 

৪. ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির অনুপস্থিতি :- সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় ক্ষমতা স্বাতন্ত্রীকরণ নীতি অনুপস্থিত থাকে। কোনো দল বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করলে আইনসভার উপর সহজেই শাসন বিভাগের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ফলে , ব্যক্তি স্বাধীনতা ক্ষুন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। 

৫. জনমতের বিভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা :- অনেকসময় মন্ত্রীরা আইনসভাতে যথার্থ তথ্য সমৃদ্ধ আলোচনা উপস্থাপন করেন না। তারা দলীয় স্বার্থ , ব্যক্তিগত স্বার্থ - ইত্যাদিকে প্রাধান্য দিয়ে যে বক্তব্য পেশ করেন তা জনমতকে বিভ্রান্ত করে। এমনকি সরকার নিজের স্বার্থের জন্য গণমাধ্যমগুলির উপরেও আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে। 

৬. আইনসভার উপর আধিপত্য :- সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় একটি দল যখন বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে তখন সেই দলের প্রতিটি সদস্য দলীয় আনুগত্যের কাছে নতি স্বীকার করে শাসন বিভাগের সমস্ত নীতি ও পরিকল্পনাতে নীরবে সমর্থন করতে বাধ্য হয়। এইভাবে শাসক দল আইনসভাতেও তাদের আধিপত্য বিস্তার করে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. সাংবিধানিক শাসক প্রধান প্রকৃত শাসক নন :- সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রধান প্রকৃত প্রধান নন। এই জাতীয় শাসন ব্যবস্থায় প্রকৃত শাসক হলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু যদি নিয়মতান্ত্রিক ও প্রকৃত শাসকের মধ্যে ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে তা শাসন ব্যবস্থা পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিকূল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। 

৮. আমলাতান্ত্রিক প্রভাব :- অনেক সময় সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করতে যে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা প্রয়োজন - তা মন্ত্রীদের থাকেনা না। ফলে শাসন বিভাগকে আমলানির্ভর হতে হয়। এই আমলাতান্ত্রিকতা সংসদীয় শাসন ব্যবস্থার পক্ষে ক্ষতিকারক ফল প্রদান করে। 

৯. জরুরি অবস্থার ক্ষেত্রে উপযুক্ত নয় :- সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা জরুরি ও সংকটকালীন পরিস্থিতির পক্ষে উপযুক্ত নয়। কেননা এই ধরণের শাসন ব্যবস্থায় আলোচনা , তর্ক - বিতর্ক ইত্যাদি বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়। এর ফলে যেকোনো ধরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও রূপায়ণে বিলম্ব ঘটে। 

১০. অযোগ্যদের শাসন :- সংসদীয় শাসনতন্ত্রে যেকোনো অযোগ্য ব্যক্তি দলীয় আনুগত্যের সুযোগ নিয়ে আইনসভার সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পান। আইন সভাতে অযোগ্য ব্যক্তিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে সেই সরকার অযোগ্যদের সরকারে পরিণত হয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো
                  

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের সুবিধা ও অসুবিধা। 

রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের দোষ - গুন। 

Merit and Demerits of Presidential government. ( In Bengali ) 




 

রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের সুবিধা বা গুণাগুণ :- 


১. রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য সুবিধা হল রাষ্ট্রপতির কার্যকালের স্থায়িত্ব।  রাষ্ট্রপতির কার্যকাল আইনসভার ইচ্ছা-অনিচ্ছা বা সম্মতির ওপর নির্ভর করে না। তাই রাষ্ট্রপতি নিজ  অধিকার , বিবেচনা ও কর্মসূচী অনুযায়ী সরকার পরিচালনা করতে পারেন। আইনসভা এখানে প্রত্যক্ষভাবে রাষ্ট্রপতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি একটি নির্দিষ্ট সময় কালের জন্য নির্বাচিত হন। যদিও তাকে অপসারণ করা যায়। তবে সেই অপসারণ পদ্ধতি অত্যন্ত জটিল হওয়ায় বিশেষ কিছু অভিযোগ ব্যতীত রাষ্ট্রপতির কার্যকালের আগে তাকে কোনভাবেই পদচ্যুত করা যায় না। 

২. রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থায় দল বা আইনসভার দাসে পরিণত হওয়ার পরিবর্তে নিজের স্বাধীন কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করতে পারেন। রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারগুলিতে শাসন বিভাগের উপর আইনসভা ও দলীয় প্রাধান্য স্বীকৃত নয়। রাষ্ট্রপতিই দলকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বিশেষ বিশেষ সুবিধা বন্টন , নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন , উচ্চ পদে নিয়োগ ও পদচ্যুতি - ইত্যাদির মাধ্যমে তিনি দলের সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের প্রকৃত প্রধানের ভূমিকা পালন করে থাকেন। ফলে যে কোন জরুরীভিত্তিক পরিস্থিতিতে বা সংকটকালীন পরিস্থিতিতে তাকে মন্ত্রিসভা আইনসভার উপর নির্ভরশীল হতে হয় না। তিনি নিজেই নিজের স্বাধীন বিবেচনা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন।  রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে বিভিন্ন নীতি প্রণয়ন , সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তা কার্যকর করতে পারেন। এই সমস্ত কাজে তাকে মন্ত্রিসভা , ক্যাবিনেট বা আইনসভার ওপর নির্ভরশীল হতে হয় না। 

৪. যেহেতু রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারগুলিতে মন্ত্রিসভা কেবলমাত্র রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির অনুগত কর্মচারী - তাই রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারগুলিতে মন্ত্রিসভা রাষ্ট্রপতির কাজে কোনভাবেই বাধা বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে না। মন্ত্রীগণ তাঁদের দক্ষতা ও রাষ্ট্রপতির সন্তুষ্টির ভিত্তিতে নিজ নিজ পদে বহাল থাকেন। 

৫. রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের রাষ্ট্রপতিকে প্রত্যক্ষভাবে জনগণের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয়। তাই জন বিরোধী কোন নীতি প্রণয়ন থেকে রাষ্ট্রপতি বিরত থাকেন। অন্যদিকে মন্ত্রীরাও রাষ্ট্রপতির কাজের যৌথভাবে আইনসভার নিকট এবং পরোক্ষভাবে জনগণের নিকট দায়িত্বশীল থাকেন। এইভাবে একদিকে রাষ্ট্রপতির স্বেচ্ছাচার বন্ধ হয় এবং অন্যদিকে জনমতের চাপে শাসন বিভাগের সর্তকতা ও  উৎকর্ষতা বৃদ্ধি পায়। 

৬. রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থায় দলীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা , দলের সমর্থন - ইত্যাদির কোনো ভিত্তি নেই। ফলে রাষ্ট্রপতিকে কখনোই দলীয় সমর্থন লাভের জন্য উদগ্রীব বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হতে হয় না। ফলে রাষ্ট্রপতি এখানে স্বাধীনভাবে ও দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ না করেই শাসনকার্য পরিচালনা করতে পারেন। দল কোনভাবেই এখানে শাসনতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না বা রাষ্ট্রপতি কোন রকম দলীয় দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ প্রয়োজন বলে মনে করেন না। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. বহুদলীয় রাষ্ট্রের পক্ষে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার বিশেষভাবে কার্যকরী। কেননা বহুদলীয় রাষ্ট্রগুলিতে অনেকগুলি রাজনৈতিক দলের উপস্থিতি থাকার জন্য আইন সভায় অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় কোন একটি দলের পক্ষে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আইনসভা ত্রিশঙ্কু হতে দেখা যায়। তখন জোটের পরিস্থিতি তৈরী হয় এবং সেই জোট তৈরি হয় পারস্পরিক স্বার্থ ,  লেনদেন এবং কর্মসূচির ভিত্তিতে। এর পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি শাসন এই সমস্ত জোটের ঊর্ধ্বে উঠে সহজেই  প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারে রাষ্ট্রপতি পদ কোনভাবেই দলীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ইত্যাদির ওপর নির্ভরশীল নয়। তাই বহুদলীয় রাষ্ট্রগুলিতে রাষ্ট্রপতি শাসন একান্ত ভাবে কাম্য। 

৮. রাষ্ট্রপতি শাসিত রাষ্ট্রগুলিতে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি থাকায় সরকারের তিনটি বিভাগ - শাসন , আইন ও বিচার বিভাগ - কেউ কারো কাজে পরস্পর হস্তক্ষেপ করতে পারেন না। ফলে তিনটি বিভাগ স্বাধীনভাবে এবং নিরপেক্ষ ভাবে তাদের কার্য সম্পাদন করতে পারেন এবং আইনসভা স্বাধীনভাবে শাসন বিভাগের ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলি তুলে ধরে শাসন বিভাগকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পরোক্ষভাবে সহায়তা করে। 

৯. রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থাগুলিতে মন্ত্রীগণ সরাসরি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হন। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি সেই সকল ব্যক্তিদেরকেই মন্ত্রীপদ প্রদান করে থাকেন যাদেরকে তিনি যথেষ্ট যোগ্য বলে মনে করেন।  অপরদিকে সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় শুধুমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠতা , প্রাপ্ত ভোট এবং দলীয় প্রভাবের দ্বারাই কোনো একজন ব্যক্তি মন্ত্রী হন। সেই মন্ত্রীপদে তার যোগ্যতা কতটা - তা কেউ যাচাই করে দেখেনা। তাই রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার যে সকল মন্ত্রীরা নিযুক্ত হন তারা অনেক বেশি উৎকর্ষতা ও দক্ষতার সঙ্গে কর্ম সম্পাদন করে থাকেন। 

১০. অতি দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ , বিভিন্ন বিষয়ে পদক্ষেপ বা ব্যবস্থা গ্রহণ - ইত্যাদি বিষয়ে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারগুলি অধিক দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। অন্যদিকে সংসদীয় রাষ্ট্রগুলিতে আলাপ-আলোচনা এবং সিদ্ধান্তে উপনীত হতে বহু সময় ব্যতীত হয়ে যায়। কিন্তু রাষ্ট্রপতিশাসিত রাষ্ট্রগুলিতে রাষ্ট্রপতির হাতে যেহেতু শাসন বিভাগের সর্বময় কর্তৃত্ব থাকে সেহেতু রাষ্ট্রপতি এককভাবে শাসন বিভাগীয় যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন। 

রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের ত্রুটি বা অসুবিধা :- 


১. রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি প্রভূত ক্ষমতার অধিকারী হন। সেহেতু তার পক্ষে খুব সহজেই স্বৈরাচারী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখা যায়। যেহেতু রাষ্ট্রপতির উপর আইনসভার নিয়ন্ত্রণ থাকেনা , তাই তিনি স্বাধীনভাবে তার কর্ম পরিচালনা করতে পারেন এবং তার অপসারণ পদ্ধতি যেহেতু জটিল তাই তাকে পদচ্যুত করা খুব জটিল প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে পরিচালিত হয়। অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি পক্ষে স্বৈরাচারী হয়ে ওঠার সবরকম সম্ভাবনা রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারগুলিতে বর্তমান। 

২. রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারে রাষ্ট্রপতি আইনসভার কাছে প্রত্যক্ষভাবে দায়িত্বশীল নন। আইনসভাতে  কোনো বিষয়ে জবাবদিহি করতে তিনি বাধ্য নন। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি একমাত্র নির্বাচকমণ্ডলী বা জনগণের কাছে সরাসরি দায়িত্বশীল থাকেন। তাই রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারকে অনেকে দায়িত্বহীন সরকার বলেও উল্লেখ করে থাকেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারগুলিতে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি স্বীকৃত থাকে। ফলে আইন , শাসন ও বিচার বিভাগ কেউ কারো কাজে হস্তক্ষেপ করেন না ঠিকই কিন্তু এই তিনটি বিভাগের কার্যাবলী সম্পাদনের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে তা অত্যন্ত জটিল আকার ধারণ করে , জাতীয় স্বার্থ বিপন্ন হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং উভয় বিভাগের মধ্যে যদি সমন্বয় সাধন না থাকে তাহলে শাসন কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে ও তিনটি বিভাগ পরিচালনার ক্ষেত্রে নানা রকম জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। 

৪. রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারে জনমতের যথার্থ প্রতিফলন ঘটে না। মন্ত্রিসভা পরিচালিত শাসন ব্যবস্থায় মন্ত্রীগণকে জনগণের ইচ্ছা অনিচ্ছা , আশা-আকাঙ্ক্ষা - ইত্যাদির সাথে সরাসরি সম্পর্ক রেখে চলতে হয়। কিন্তু রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারে এমনটা হয় না। রাষ্ট্রপতি বিভিন্নভাবে তার বক্তব্য প্রচারের মধ্যে দিয়ে নিজ অবস্থান তুলে ধরতে পারেন ; কিন্তু জনসাধারণের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যোগাযোগ তার পক্ষে সম্ভব নয়। 

৫. অনেক সময় রাষ্ট্রপতি মন্ত্রীদের নিয়োগ , উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের নিয়োগ - ইত্যাদির ক্ষেত্রে স্বজনপোষণ , দুর্নীতি , পরিচিতদের নিয়োগ ইত্যাদির আশ্রয় গ্রহণ করে থাকেন। ফলে যথার্থ যোগ্য ব্যক্তি সেখানে স্থান পায় না। এরূপ অবস্থায় শাসনব্যবস্থার উৎকর্ষতার পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি যদি তার প্রতি আনুগত্য এবং নিজের রাজনৈতিক স্বার্থকে অধিক গুরুত্ব প্রদান করেন - তাহলে সেই শাসন ব্যবস্থা উৎকৃষ্টমান লাভ করতে পারে না। 

৬. রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারগুলিতে বিচার বিভাগ অত্যধিক প্রাধান্য লাভ করে থাকে। ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির স্বীকৃতি সত্বেও বিভিন্ন বিভাগের কাজ কর্মের বৈধতা বিচার করার ক্ষমতা বিচার বিভাগের থাকে। সংবিধান অনুসারে বিচার বিভাগ সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করে আইন ও শাসন বিভাগের উপর বিচার বিভাগ তার প্রাধান্য বিস্তার বা প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। 

৭. রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার গুলিতে সরকারের সাফল্য নির্ভর করে রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত যোগ্যতা-দক্ষতা ,  নির্ভরশীলতা - ইত্যাদির উপর। কিন্তু কোনো কারণে রাষ্ট্রপতি যদি যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে শাসনকার্য পরিচালনা করতে না পারেন তাহলে রাষ্ট্র ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়। ফলে রাষ্ট্রীয় স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়। আবার নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ব্যতীত রাষ্ট্রপতিকে পদচ্যুতও করা যায়না। ফলে শাসন বিভাগ ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থা কাকে বলে ? রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থার বৈশিষ্টগুলি আলোচনা কর।

রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থার সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট :-  

Definition and features of the presidential government . ( In Bengali )  






রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থা :-  


রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থা বলতে এমন এক ধরণের শাসন ব্যবস্থাকে বোঝায় যেখানে শাসন বিভাগ আইন বিভাগের প্রভাবমুক্ত থেকে স্বাধীনভাবে সংবিধান কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতার মাধ্যমে শাসন পরিচালনা করে থাকেন। এই ধরণের ব্যবস্থায় শাসন বিভাগ আইন সভার প্রতি দায়বদ্ধ থাকে না বা আইন সভা শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা এবং শাসন বিভাগের অস্তিত্ব আইন বিভাগের উপর নির্ভরশীল থাকেনা। রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থায় ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি স্বীকৃত থাকে এবং সেই অনুযায়ী আইন ও শাসন বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নিজ দায়িত্ব পালন করে। 

রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থা হল মূলত এক ব্যক্তি শাসিত সরকার। রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এছারাও ব্রাজিল , আর্জেন্টিনা , মেক্সিকো - ইত্যাদি রাষ্ট্রেও রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা প্রচলিত আছে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থার বৈশিষ্ট :- 


১. ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির উপস্থিতি :- সাধারণত রাষ্ট্রপতিশাসিত রাষ্ট্রগুলিতে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি স্বীকৃত থাকে। ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি স্বীকৃত থাকার ফলে আইন , শাসন ও বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ পৃথক , নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে কার্য পরিচালনা করতে পারে। এই জাতীয় ব্যবস্থায় আইনসভা শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। ঠিক তেমনভাবেই রাষ্ট্রপতি বা শাসন বিভাগ আইন সভার নিকট দায়িত্বশীল থাকেন না। 

২. প্রকৃত শাসক : রাষ্ট্রপতি :- রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি প্রকৃত শাসক প্রধান বলে বিবেচিত হন। এই জাতীয় শাসন ব্যবস্থার মূল স্তম্ভ হলেন রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি যেমন সমগ্র রাষ্ট্রের প্রধান , তেমনি তিনি শাসন বিভাগের প্রধান ব্যক্তি। এই জাতীয় শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি প্রভূত ক্ষমতার অধিকারী হয়ে থাকেন। মন্ত্রিসভা পরিচালিত শাসন ব্যবস্থার ন্যায় তিনি পরোক্ষভাবে শাসনকার্য পরিচালনা করেন না ; তিনি প্রত্যক্ষভাবে শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করেন এবং তিনি হলেন শাসন বিভাগের সর্বময় কর্তা।

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. মন্ত্রিসভার দায়িত্ব ও ক্ষমতা :- যেহেতু প্রতিটি আধুনিক রাষ্ট্রে শাসন বিভাগের দায়িত্ব এবং কর্মভার বৃদ্ধি পাচ্ছে তাই রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারগুলিতেও যাবতীয় কর্তব্য সম্পাদনের জন্য মন্ত্রিসভার প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থার মন্ত্রীসভা কেবলমাত্র রাষ্ট্রপতির অনুগত কর্মচারী শ্রেণি মাত্র। তাদের নিজস্ব কোনো স্বাধীনতা বা ক্ষমতা থাকেনা। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্ধারিত কার্যাবলি সম্পাদন করা হল মন্ত্রিসভার একমাত্র দায়িত্ব বা ক্ষমতা এবং মন্ত্রিসভার কার্যকাল নির্ভর করে রাষ্ট্রপতির সমর্থন ও সন্তুষ্টির উপর। রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থায় মন্ত্রিসভার সদস্যগণ জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত হন না।  তাদের সকলকে রাষ্ট্রপতি স্বয়ং মনোনয়ন করে থাকেন। রাষ্ট্রপতি তার ইচ্ছা অনুযায়ী মন্ত্রীদের নিয়োগ ও পদচ্যুত করতে পারেন। মন্ত্রীগণ কেবলমাত্র রাষ্ট্রপতির নিকট দায়বদ্ধ থাকেন। রাষ্ট্রপতি শাসন ব্যবস্থায় মন্ত্রীরা রাষ্ট্রপতির সহকর্মী নন ; তারা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত অনুগত এবং অধঃস্তন কর্মচারী মাত্র। 

৪. রাষ্ট্রপতির নির্বাচন ও পদচ্যুতি :- রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি আইনসভা কর্তৃক পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন না ; তিনি জনসাধারণ কর্তৃক সরাসরি নিযুক্ত হন। তাই রাষ্ট্রপতি নিজস্ব নীতি ও কার্যাবলীর  জন্য জনসাধারণের নিকট প্রত্যক্ষভাবে দায়িত্বশীল থাকেন। রাষ্ট্রপতিকে শুধুমাত্র কয়েকটি বিশেষ  অভিযোগের ভিত্তিতে পদচ্যুত করা যায়। যেমন দেশদ্রোহিতা , সংবিধানের প্রতি অমর্যাদা , রাষ্ট্র পরিচালনায় অদক্ষতা - ইত্যাদির ভিত্তিতে বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করে রাষ্ট্রপতিকে পদচ্যুত করা যায়।  

৫. আইনসভা নিরপেক্ষ রাষ্ট্রপতি :- রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থায় আইনসভা রাষ্ট্রপতি নিরপেক্ষ থাকে।  আইনসভার নির্বাচনে অংশ নেওয়া বা আইনসভাকে ভেঙে দিয়ে নতুন করে নির্বাচন ঘোষণা করা , আইন প্রণয়ন - ইত্যাদির ব্যাপারে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বা ভূমিকা থাকে না। রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থায় আইনসভার সম্পূর্ণভাবে আইন প্রণয়ন , পরিবর্তন ও বাতিলের অধিকার ভোগ করে। এখানে রাষ্টপতির কোনভাবেই হস্তক্ষেপ করার অধিকার থাকেনা। 

৬. রাষ্ট্রপতির নির্বাচনে দলীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে সম্পর্কহীনতা :- রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির নির্বাচনে দলীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্থহীন। এজাতীয় ব্যবস্থায় জনগণ সরাসরি রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচিত করেন। আইনসভায় নির্দিষ্ট দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। মার্কিন কংগ্রেসে এমনও দেখা গেছে যে , মার্কিন কংগ্রেসে যেদল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছেন রাষ্ট্রপতি সেই দলের নন। 

৭. আইন সংক্রান্ত ব্যাপারে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাহীনতা :- রাষ্ট্রপতি শাসিত রাষ্ট্রে আইন প্রণয়ন , পরিবর্তন ও আইন বাতিলের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির কোনো ভূমিকা থাকেনা। রাষ্ট্রপতি যেহেতু আইনসভা কর্তৃক নির্বাচিত হননা ; সেহেতু আইন সভার প্রতি রাষ্ট্রপতির কোনো দায়বদ্ধতা বা ক্ষমতা থাকেনা। রাষ্ট্রপতি শাসিত রাষ্ট্রগুলিতে আইন সংক্রান্ত ব্যাপারে আইনসভা একচ্ছত্র অধিকার ভোগ করে। 

৮. রাষ্ট্রপতি জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ :- রাষ্ট্রপতি শাসিত রাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি যেহেতু জনগণ কর্তৃক সরাসরি নির্বাচিত হন। তাই তিনি জনগণের নিকট প্রত্যক্ষভাবে দায়িত্বশীল থাকেন। এ জাতীয় ব্যবস্থায় আইন সভা রাষ্ট্রপতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না এবং রাষ্ট্রপতিও আইনসভার নিকট দায়বদ্ধ থাকেন না। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

Share
Tweet
Pin
Share
No comments

যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা কাকে বলে ? যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থার বৈশিষ্টগুলি আলোচনা কর। 

যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার কাকে বলে ? যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বৈশিষ্টগুলি আলোচনা কর। 

What is the federal system ? Discuss the features of the federal system . ( In Bengali ) 




যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থার ধারণা ও সংজ্ঞা :- 


যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থার ধারণা প্রসঙ্গে K.C. Wheare বলেছেন , যুক্তরাষ্ট্র হল কেন্দ্রীয় সরকার ও অঙ্গরাজ্যের সরকারের মধ্যে ক্ষমতা বন্টনের পদ্ধতিকে বোঝায়। ক্ষমতা বন্টনের পদ্ধতি অনুযায়ী প্রতিটি সরকার নিজ নিজ ক্ষেত্রে স্বাধীন এবং স্বাতন্ত্র্যসম্পন্ন। 

A.V. Dicey বলেছেন , যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা হল এমন এক ধরণের রাজনৈতিক ব্যবস্থা যেখানে জাতীয় ঐক্য ও ক্ষমতার সঙ্গে অঙ্গরাজ্যগুলির ক্ষমতা ও অধিকারের সমন্বয়সাধন করা হয়। 

Finer বলেছেন , যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের বন্টন করা হয় কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক সরকারগুলির মধ্যে। 

তবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ প্রদত্ত সংজ্ঞাগুলির মধ্যে Birch কর্তৃক প্রদত্ত সজ্ঞাটিকে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের সর্বোৎকৃষ্ট সংজ্ঞা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেছেন , যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা হল এমন এক ধরণের শাসন ব্যবস্থা যেখানে একটি সাধারণ সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকার এবং কতকগুলি আঞ্চলিক সরকারের মধ্যে এমনভাবে ক্ষমতা বন্টিত হয় যে তারা পরস্পরের পরিপূরক রূপে কাজ করে এবং তাদের প্রত্যেকেই নিজেদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণকে শাসন করে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থার বৈশিষ্ট :- 

যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বৈশিষ্ট :- 


১. কেন্দ্রীয় সরকার ও অঙ্গরাজ্যের সরকারের উপস্থিতি :-  যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের প্রধান বৈশিষ্ট্য হিসেবে এখানে যৌথ সরকারের অস্তিত্বকে উল্লেখ করা যেতে পারে। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় দুই ধরনের সরকারের উপস্থিতি থাকে তাই এই ধরনের সরকারকে '' দ্বৈত সরকারি ব্যবস্থা '' বলে। একদিকে কেন্দ্রে একটি সাধারণ বা কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত থাকে এবং অন্যদিকে প্রত্যেকটি অঙ্গরাজ্যের জন্য ভিন্ন ভিন্ন রাজ্য সরকার গঠিত থাকে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাজ জাতীয় সংহতি ও ঐক্য প্রতিষ্ঠা এবং জাতীয় স্বার্থ পূরণের লক্ষ্যে ভূমিকা পালন করা এবং অন্যদিকে অঙ্গরাজ্যের সরকারগুলি আঞ্চলিক স্বার্থ , দাবি ইত্যাদির প্রতি যত্নশীল থাকে। 

২. কেন্দ্র প্রবণতা :- যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় যৌথ সরকারি ব্যবস্থার অস্তিত্ব থাকলেও কেন্দ্রীয় প্রবণতা এর একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। যেহেতু প্রত্যেকটি অঙ্গরাজ্যে সংস্কৃতি , রাজনীতি , ভাষা ইত্যাদি বিভিন্ন বৈচিত্র থাকে সেজন্য জাতীয় স্বার্থ পূরণ ও প্রতিরক্ষার দাবি - ইত্যাদির জন্য সকলকেই কেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল হতে হয়। এইভাবে জাতীয় ও আঞ্চলিক স্বার্থের সংরক্ষণ , প্রতিরক্ষা , আন্তর্জাতিক সম্পর্ক - ইত্যাদির জন্য যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায় একটি কেন্দ্রাতিগ প্রবণতা সৃষ্টি হয়। যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্র সরকার , রাজ্য সরকার - উভয়ই স্বাধীন থাকলেও বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্য সরকারের কেন্দ্রীয় প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


৩. সংবিধানের প্রাধান্য :-  যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় সংবিধানের প্রাধান্য পরিলক্ষিত হয়। সংবিধানের প্রাধান্য বলতে বোঝায় সেই দেশে সংবিধান হল সর্বোচ্চ আইন এবং সকল ক্ষমতার উৎস। সংবিধানের মাধ্যমে সকল ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ঘটে বা বন্টিত হয়। সংবিধান লংঘন করা কেন্দ্র সরকার , আঞ্চলিক সরকার বা অন্য কোনও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব নয়। সকলকে সংবিধানের অধীনে থেকে কাজ করতে হয়। এছাড়াও সরকারগুলি নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করলে তার প্রতিরোধের ব্যবস্থাও সংবিধানে উল্লিখিত থাকে। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় সংবিধান হল ক্ষমতার প্রধান উৎস এবং সংবিধানের প্রাধান্য প্রশ্নাতীত। 

৪. ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ :- যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায় ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ঘটে। এখানে ক্ষমতা এককেন্দ্রিক সরকারের মতো একটি সরকারের হাতেই সীমাবদ্ধ না থেকে ভিন্ন ভিন্ন রাজ্য সরকার ও স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা গুলির হাতে বন্টিত হয়। ফলে এই ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে প্রশাসনিক উৎকর্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ থাকে এবং জনসাধারণের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণের অধিক সুযোগ থাকে। 

৫. আঞ্চলিক স্বাতন্ত্র্য সংরক্ষণ :- যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থার মধ্যে আঞ্চলিক স্বাতন্ত্র্য সংরক্ষিত হয়। একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার সাধারণত বৃহৎ জনসংখ্যাভুক্ত দেশগুলিতে প্রতিষ্ঠিত থাকে। বৃহৎ জনসংখ্যা এবং বৃহৎ আয়তনভুক্ত দেশগুলিতে সাধারণত ভাষা , সংস্কৃতি , অর্থনীতি , রাজনীতি - ইত্যাদি বিভিন্ন দিক দিয়ে বৈচিত্রপূর্ণ হয় এবং তাদের এই বৈচিত্র্যময় দাবি-দাওয়া ও স্বার্থ পূরণের লক্ষ্যে আঞ্চলিক সরকারগুলি যথাযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারে। অন্যদিকে জাতীয় ঐক্য ও সুরক্ষার বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকার যথাযোগ্যভাবে পরিচালিত করতে পারে। সুতরাং আঞ্চলিক ও জাতীয় দুই ক্ষেত্রেই স্বার্থ এবং স্বতন্ত্রতা রক্ষা হয় ও জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে। 

৬. লিখিত সংবিধানের উপস্থিতি :- যে সকল রাষ্ট্রে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা প্রচলিত থাকে সেই সকল রাষ্ট্রগুলিতে সংবিধান সাধারণত লিখিত হয়। কেননা যেহেতু এই ধরনের শাসন ব্যবস্থায় বিভিন্ন সরকারের উপস্থিতি থাকে যথা কেন্দ্র সরকার , রাজ্য সরকার , স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা সমূহ - ইত্যাদি ভিন্ন ভিন্ন সরকারি কর্তৃপক্ষের উপস্থিতির ফলে লিখিত সংবিধান আবশ্যক হয়ে পড়ে। ক্ষমতার নির্দিষ্ট বন্টনের মাধ্যমে যথাযথ ভূমিকা পালনের নির্দেশ ইত্যাদি লিখিত সংবিধানের মাধ্যমে প্রযুক্ত হওয়া সম্ভব। তাই যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান সাধারণত লিখিত থাকে এবং সংবিধানের মাধ্যমে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গুলির মাধ্যমে মধ্যে ক্ষমতা বন্টিত হয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


৭. দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান :- যুক্তরাষ্ট্রীয় সংবিধান সাধারণত দুষ্পরিবর্তনীয় হয়। যেহেতু এখানে কেন্দ্রীয় সরকারের একক ক্ষমতা স্বীকৃত নয় - এখানে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার যৌথভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করে।  তাই যুক্তরাষ্ট্রীয় সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয় হয়। যাতে কোনো একটি সরকার তাদের নিজেদের ইচ্ছা ও খেয়ালখুশি মত সংবিধান পরিবর্তন করতে না পারে। উভয় ধরনের সরকারের সম্মতিতে সংবিধান পরিবর্তন করতে হয়। 

৮. দ্বৈত নাগরিকত্ব :- যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় দ্বৈত নাগরিকত্ব পরিলক্ষিত হয়। দ্বৈত নাগরিকত্ব হল -   একদিকে ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এবং অন্যদিকে সেই ব্যক্তি অঙ্গরাজ্যের নাগরিক। প্রায় প্রতিটি যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় দ্বৈত নাগরিকত্ব স্বীকৃত। অর্থাৎ ব্যক্তি একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এবং অন্যদিকে তিনি যে অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা সেই অঙ্গরাজ্যের নাগরিক। তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে , ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা স্বীকৃত থাকলেও এখানে দ্বৈত নাগরিকত্ব স্বীকৃত নেই। 

৯. দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা :- যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় আইনসভা সাধারণত দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হয়। এই দুটি কক্ষ হল নিম্নকক্ষ এবং উচ্চকক্ষ। নিম্নকক্ষে জনগণ কর্তৃক সরাসরি নির্বাচিত প্রতিনিধিরা স্থান লাভ করেন এবং উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্বমূলক সদস্যরা সুযোগ লাভ করেন। আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে এই দুই কক্ষের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে এবং ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ক আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে রাজ্য আইনসভা এবং কেন্দ্রীয় আইনসভা উভয়ের ভূমিকাই এখানে গুরুত্বপূর্ণ। 

১০. যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালত :- যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালতের অস্তিত্ব চোখে পড়ে। বলা যেতে পারে যে , যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালত ব্যবস্থা ব্যতীত যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করা সম্ভব নয়। কেননা , এখানে যেহেতু বিভিন্ন ধরণের সরকারের অস্তিত্ব থাকে সেহেতু বিভিন্ন সরকারের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে বিরোধিতার সূত্রপাত হওয়া খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। এক বা একাধিক রাজ্য সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার সরকারের , একটি রাজ্য সরকারের সঙ্গে অপর একটি রাজ্য সরকারের , একটি রাজ্য সরকারের সঙ্গে একাধিক রাজ্য সরকার সরকারের বিরোধ প্রতিষ্ঠিত হলে তা সুচিন্তিতভাবে সমাধানের জন্য একটি নিরপেক্ষ কর্তৃপক্ষ হিসাবে বিচার বিভাগ তার ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও আইন বিভাগ কর্তৃক জারি করা বিভিন্ন আইন আদেশ-নির্দেশ ইত্যাদির বৈধতা বিচার করতে পারে যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালত। এছাড়া সংবিধানের ব্যাখ্যা কর্তা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। 

১১. স্বতন্ত্র্য রাজস্ব ব্যবস্থা :-  যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায় রাজস্ব ব্যবস্থা সাধারণত স্বতন্ত্র অবস্থায় থাকে।  এখানে উভয় সরকার যথেষ্ট আর্থিক সঙ্গতিসম্পন্ন হয়। কেননা কেন্দ্র বা রাজ্য প্রত্যেকটি সরকার যথেষ্ট আর্থিক সঙ্গতিসম্পন্ন না হলে তার পক্ষে সরকার পরিচালনা করা সম্ভব নয়। সেজন্যই প্রত্যেকটি সরকার স্বতন্ত্র রাজস্ব ব্যবস্থার অধিকারী। 

১২. স্বতন্ত্র্য সংবিধান :- প্রচলিত যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় স্বতন্ত্র সংবিধানের অস্তিত্বের কথা উল্লেখ করা যায়।  যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিন্ন ভিন্ন অঙ্গরাজ্যগুলিতে ভিন্ন-ভিন্ন ও স্বতন্ত্র সংবিধান প্রচলিত আছে। অবশ্য অঙ্গরাজ্যের প্রত্যেকটি সংবিধানকে জাতীয় সংবিধানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হতে হয়। তবে এ ক্ষেত্রে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে , ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা স্বীকৃত হলেও অঙ্গরাজ্যগুলির জন্য আলাদা আলাদা সংবিধানের কোনো স্বীকৃতি নেই বা অস্তিত্ব নেই। ভারতে একটি মাত্র সংবিধান এবং সারাদেশে একই সংবিধান অনুযায়ী পরিচালিত হয় এবং সকল ক্ষমতার উৎস সংবিধান। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


Share
Tweet
Pin
Share
No comments
Newer Posts
Older Posts

Followers

Pages

  • Home
  • Privacy Policy
  • Disclaimer
  • CONTACT ME
  • About Me

Contact Form

Name

Email *

Message *

About me

Hallow viewers , myself Nandan Dutta [Subhankar Dutta], reside at Maheshpur,Malda.
I made this website for the students of B.A. courses under Gour Banga University. Here you can get suggestions of different subjects like HISTORY , SOCIOLOGY , POLITICAL SCIENCE & EDUCATION.
In future I will add MCQ sections of those subjects.


Categories

  • 1ST SEMESTER SUGGESTION (1)
  • 2 ND YEAR SUGGESTION (1)
  • 2ND SEMESTER (1)
  • 3RD SEMESTER (8)
  • BENGALI NOTES (21)
  • CU suggestion. (1)
  • EDUCATION NOTES (141)
  • ENGLISH COMPULSORY (16)
  • GBU Suggestion. (7)
  • HISTORY EUROPE & WORLD (46)
  • HISTORY NOTES (68)
  • POL SC NOTES (64)
  • SOCIOLOGY NOTES (72)
  • WBCS 2020 (1)

recent posts

Blog Archive

  • May 2025 (3)
  • April 2025 (20)
  • March 2025 (12)
  • February 2025 (8)
  • November 2024 (5)
  • October 2024 (2)
  • September 2024 (2)
  • June 2024 (2)
  • March 2024 (6)
  • February 2024 (4)
  • October 2023 (5)
  • May 2023 (5)
  • April 2023 (1)
  • December 2022 (1)
  • November 2022 (13)
  • September 2022 (2)
  • August 2022 (7)
  • July 2022 (29)
  • June 2022 (10)
  • May 2022 (25)
  • April 2022 (24)
  • March 2022 (16)
  • February 2022 (19)
  • January 2022 (21)
  • December 2021 (46)
  • November 2021 (5)
  • October 2021 (6)
  • September 2021 (5)
  • August 2021 (41)
  • July 2021 (43)
  • June 2021 (31)
  • May 2021 (7)
  • April 2021 (1)
  • July 2020 (1)
  • June 2020 (3)
  • April 2020 (1)
  • November 2019 (1)
  • July 2019 (1)
  • June 2019 (1)
  • May 2019 (1)
  • April 2019 (2)
  • January 2019 (1)

Pages

  • Home
  • 2nd SEM ভাষাতত্ত্ব :
  • বাংলা উপভাষা
  • দ্বিতীয় পুলকেশীর কৃতিত্ব
  • ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত সাম্যের অধিকারগুলি আলোচনা করো।
  • হর্ষবর্ধনের কৃতিত্ব আলোচনা করো। তাকে কি উত্তর পথনাথ বলা যায় ?
  • ভারতীয় সংবিধানের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য :-
  • উদারনীতিবাদ : সংক্ষিপ্ত ধারণা :-
  • চোল শাসনব্যবস্থা :-
  • গুপ্তযুগ সুবর্ণযুগ সম্পর্কিত আলোচনা।
  • ৬. উদাহরণসহ মধ্যযুগের বাংলাভাষার কয়েকটি বৈশিষ্ট আল...
  • 1. Marxism
  • আধুনিক বাংলা ভাষা ও তার বৈশিষ্ট।
  • Discuss the career and achievements of Samudragupta .
  • ভাষাতত্ত্ব

Created with by ThemeXpose | Distributed by Blogger Templates