Pages

Powered by Blogger.
1ST SEMESTER SUGGESTION 2 ND YEAR SUGGESTION 2ND SEMESTER 3RD SEMESTER BENGALI NOTES CU suggestion. EDUCATION NOTES ENGLISH COMPULSORY GBU Suggestion. HISTORY EUROPE & WORLD HISTORY NOTES POL SC NOTES SOCIOLOGY NOTES WBCS 2020

NANDAN DUTTA

A new approach for exam notes .

প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলি আলোচনা কর।  




প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য :- 


জীবনবিকাশের বিভিন্ন পর্যায়গুলির মধ্যে বাল্যকাল একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। বাল্যকালের জন্য নির্ধারিত শিক্ষাস্তর হল প্রাথমিক শিক্ষাস্তর। প্রাথমিক শিক্ষাস্তর শিশুর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। প্রাথমিক শিক্ষাস্তরকে দুটি পর্যায়ে ভাগ করা হয় - নিম্নপ্রাথমিক ও উচ্চপ্রাথমিক। সাধারণতঃ প্রথম শ্রেণী থেকে চতুর্থ বা পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত নিম্নপ্রাথমিক শিক্ষাস্তর এবং পঞ্চম বা ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষাস্তর। প্রাথমিক শিক্ষার বিভিন্ন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলি হল - 

১. শিক্ষার্থীর মধ্যে সুঅভ্যাস গঠন :- 
প্রাথমিক শিক্ষার একটি প্রধান উদ্দেশ্য হল - শিশুদের মধ্যে গঠন করে তোলা। এই সুঅভ্যাসগুলির মধ্যে অন্যতম হল - নিয়মিত নখ ও দাঁত পরিষ্কার , হাত ধোয়া , বইপত্র গুছিয়ে রাখা , পারিপার্শ্বিক পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা - ইত্যাদি। এইসকল সুঅভ্যাসগুলি শিশুর পরবর্তী জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। 

২. সামাজিকতার বিকাশ :- 
প্রাথমিক বিদ্যালয় হল শিশুর জীবনের প্রথম দিকের বিদ্যালয়। যেহেতু বিদ্যালয় সমাজের একটি ক্ষুদ্র সংস্করণ - তাই বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া এবং পঠন পাঠনে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে শিশু বৃহত্তর সমাজ জীবনের সঙ্গে পরিচিত হয়। সমাজের আদব - কায়দা , রীতিনীতি , সমাজ স্বীকৃত আচার - আচরণ - ইত্যাদি বিষয়গুলির সঙ্গে পরিচিত হয়। তাই শিশুর মধ্যে সামাজিকতার বিকাশ ঘটানো প্রাথমিক শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. নৈতিকতার বিকাশ :- 
প্রাথমিক শিক্ষার অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হল শিশুর মধ্যে নৈতিকতার বিকাশ ঘটানো। প্রাথমিক শিক্ষায় শিশুর মধ্যে ন্যায় - নীতির বোধ , ঠিক - ভুলের বিচার - ইত্যাদি সম্পর্কে পরিচিত করানো হয়। এইভাবে শিশুর মধ্যে নৈতিকতার বিকাশ ঘটে। 

৪. সাংস্কৃতিক বিকাশ :- 
সংস্কৃতি শিক্ষাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। শিক্ষা ও সংস্কৃতি পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত। তাই শিশুকে তার সংস্কৃতি সম্পর্কে পরিচিত করানো প্রাথমিক শিক্ষার একটি অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। নিজ সংস্কৃতি সম্পর্কে অবগত না হলে কোনো শিক্ষাই সম্পূর্ণ হতে পারেনা। 

৫. পরিবেশ সচেতনতা :- 
প্রাথমিক শিক্ষা শিশুকে তার পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। বর্তমান পরিবেশের গতি - প্রকৃতি , পরিবেশের অবনমন , পরিবেশের অবনমন প্রতিরোধে শিশুর ভূমিকা - ইত্যাদি সম্পর্কে প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশু সচেতন হয়ে ওঠে। পৃথিবীর বর্তমান সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম প্রধান হল পরিবেশের বিপর্যয়। তাই শিশুকে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করে তোলা - প্রাথমিক শিক্ষার একটি অন্যতম উদ্দেশ্য। 

৬. ভাষার বিকাশ :- 
শিশুর মধ্যে ভাষার ভাষার বিকাশ ঘটানো হল - প্রাথমিক শিক্ষার একটি অন্যতম উদ্দেশ্য। ভাষা হল ভাবপ্রকাশের অন্যতম মাধ্যম। তাই ভাষার প্রতি দক্ষতা তৈরী না হলে শিশুর পরবর্তী শিক্ষালাভের ক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটবে। প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে মূলতঃ মাতৃভাষাকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়। 

৭. বৌদ্ধিক বিকাশ :- 
শিশুর মধ্যে বৌদ্ধিক বিকাশ ঘটানো হল প্রাথমিক শিক্ষার অপর একটি প্রধান উদ্দেশ্য। বৌদ্ধিক বিকাশের মধ্যে অন্যতম হল - ভাষার বিকাশ , শব্দ স্বাচ্ছন্দ , কার্য - কারণ সম্পর্ক নির্ধারণ , গাণিতিক জ্ঞান - ইত্যাদি। শিশুকে উক্ত বিষয়গুলি সম্পর্কে জ্ঞান প্রদান করা - প্রাথমিক শিক্ষার একটি অন্যতম উদ্দেশ্য। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৮. শিশুর সর্বাঙ্গীন বিকাশ :- 
প্রাথমিক শিক্ষার প্রধান লক্ষ্য হল শিশুর সর্বাঙ্গীন বিকাশ। শিশুর মধ্যে - শারীরিক , মানসিক , সামাজিক , নৈতিক , জ্ঞানমূলক - ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণের বিকাশ ঘটিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা তার উদ্দেশ্য পূরণ করে। বর্তমান বিশ্বের প্রায় সকল সচেতন রাষ্ট্র শিশুর সার্বিক বিকাশকেই প্রাথমিক শিক্ষার প্রধান লক্ষ্য হিসাবে বিবেচনা করেছেন। 

৯. সুনাগরিকতার শিক্ষা :- 
প্রতিটি শিশু ভবিষ্যতের নাগরিক। তাই প্রতিটি শিশুকে সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তোলা প্রাথমিক শিক্ষার একটি প্রধান উদ্দেশ্য। একজন সুনাগরিক হিসাবে শিশুকে কোন কোন দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হবে - সে সম্পর্কে প্রাথমিক শিক্ষা শিশুকে সচেতন করে তোলে। এইভাবে প্রতিটি প্রাথমিক স্তরের শিশুর মধ্যে ভবিষ্যতে সুনাগরিক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।  

১০. মানব সম্পদ উন্নয়ন :- 
জ্ঞান মানুষকে সমৃদ্ধ করে এবং মানুষ সেই জ্ঞান দ্বারা নিরপেক্ষ বস্তুকে সম্পদে পরিণত করে। মানুষ তখনই সম্পদে পরিণত হবে যখন তার মধ্যে উৎপাদনশীলতা তৈরী হবে। তাই প্রাথমিক শিক্ষার অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল শিশুর মধ্যে প্রয়োজনীয় জ্ঞান সঞ্চালন করে তোলা এবং তার মধ্যে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা। 

১১. সৃজনশীলতার বিকাশ :- 
শিশুকে সৃজনশীল করে তোলা এবং শিশুর মধ্যে লুকিয়ে থাকা কৃষ্টিমূলক সম্ভাবনাগুলোকে প্রকাশিত করা প্রাথমিক শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য। প্রতিটি শিশুর মধ্যে সুপ্ত অবস্থায় থাকা সৃজনশীলতা শিশুর ব্যক্তিত্বকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। তাই প্রাথমিক শিক্ষা শিশুর সৃজনশীল গুণাবলীকে আত্মপ্রকাশ করার সুযোগ প্রদান করে। 

১২. দৈহিক বিকাশ :- 
শিশুর যথাযথ দৈহিক বিকাশ প্রাথমিক শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য। প্রাথমিক শিক্ষা একদিকে যেমন শিশুকে বিভিন্ন অঙ্গসঞ্চালনামূলক কর্মে প্রবৃত্ত করে এবং অন্যদিকে বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলি সম্পর্কে শিশুকে সচেতন করে। 

প্রাথমিক শিক্ষার অন্যান্য উদ্দেশ্যগুলি হল - 

১৩. শ্রমের প্রতি শিশুদের মর্যাদাবোধ গড়ে তোলা। 
১৪. জানার প্রতি কৌতূহল বৃদ্ধি করা। 
১৫. শিশুর মধ্যে সৌন্দর্যবোধের বিকাশ। 
১৬. বোধগম্যতার বিকাশ। 
১৭. ভবিষ্যৎ শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করে তোলা। 
১৮. সকল শিশুর জন্য শিক্ষা ও সামাজিক ক্ষেত্রে সমসুযোগ তৈরী করা। 
১৯. মৌলিক অধিকার সম্পর্কে শিশুদের সচেতন করা। 
২০. জ্ঞানার্জন ও বিদ্যালয়ের প্রতি আগ্রহ তৈরী করা - ইত্যাদি।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

বৃদ্ধি ও বিকাশের পার্থক্যগুলি আলোচনা কর। 

বৃদ্ধি ও বিকাশের তুলনামূলক আলোচনা কর। 




বৃদ্ধি ও বিকাশের পার্থক্য :- 


১. ধারণাগত ক্ষেত্রে পার্থক্য :- 
বৃদ্ধি সম্পূর্ণরূপে জৈবিক প্রক্রিয়া। দৈহিকভাবে আকার আয়তনে বেড়ে যাওয়াকেই বৃদ্ধি বলে। অন্যদিকে বিকাশ একইসঙ্গে জৈবিক ও বৌদ্ধিক প্রক্রিয়া। ব্যক্তি তার দৈহিকভাবে বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে তার দ্বারা ব্যক্তির বিকাশ ঘটে। বিকাশের ফলে ব্যক্তির কর্মসম্পাদনে দক্ষতা বৃদ্ধি পায় ও কর্মে উৎকর্ষতা তৈরী হয়। 

২. সময়কালের পার্থক্য :- 
ব্যক্তির বৃদ্ধি ঘটে একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত। বয়ঃসন্ধির কিছুকাল পর থেকেই বৃদ্ধি প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে কমে যায় এবং একসময় বৃদ্ধি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে , বিকাশ হল একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বিকাশ প্রক্রিয়া সংগঠিত হয়। 

৩. অনুশীলনের প্রভাব :- 
বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনুশীলনের কোনো প্রভাব আছে কি'না সে বিষয়ে শিক্ষামনোবিদগণ একমত নন। তবে বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাধারণতঃ অনুশীলনের কোনো তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব থাকেনা। তবে , অনুশীলনের প্রত্যক্ষ প্রভাব বিকাশের ক্ষেত্রে দেখা যায়। কোনো বৌদ্ধিক বিষয়কে ক্রমাগতঃ অনুশীলনের মাধ্যমে ব্যক্তির বিকাশ সাধিত হয়। 

৪. পরিমাপযোগ্যতা :- 
বৃদ্ধি হল উচ্চতা , ওজন ও আকার আয়তনের পরিবর্তন। তাই বৃদ্ধির সকল বিষয়গুলিকেই সহজেই পরিমাপ করা যায়। অন্যদিকে বিকাশ যেহেতু বৌদ্ধিক বিকাশ ; তাই বিকাশ হল পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষ। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৫. স্বাভাবিকতা :- 
বৃদ্ধি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বাহ্যিক ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ব্যাপক কোনো তারতম্য ঘটাতে পারেনা। কিন্তু  বিকাশ হল ব্যক্তি ও পরিবেশের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার ফলশ্রুতি। 

৬. নিয়ন্ত্রণের পার্থক্য :- 
ব্যক্তির বৃদ্ধিকে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়না। যেমন কোনো ব্যক্তির উচ্চতা , গায়ের রং কেমন হবে - এইসকল বিষয়গুলিকে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়না। কিন্তু বিকাশ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন। ব্যক্তিকে যেরকম পরিবেশে প্রতিপালন করা হবে - ব্যক্তির বিকাশ সেইভাবেই ঘটবে। 

৭. প্রকৃতিগত পার্থক্য :- 
বৃদ্ধি কোনোভাবেই বিকাশের উপর নির্ভরশীল নয়। কিন্তু বিকাশ প্রক্রিয়া অনেকাংশে বৃদ্ধির উপর নির্ভরশীল। নির্দিষ্ট বয়সে ব্যক্তির যথযথ বৃদ্ধি না ঘটলে তার বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হয়। 

৮. পরিমাণগত ও গুনগত :- 
বৃদ্ধি যেহেতু পরিমাপযোগ্য - তাই বৃদ্ধি হল একটি পরিমাণগত বিষয়। কিন্তু , বিকাশ প্রক্রিয়াকে পরিমাপ করা যায়না , পর্যবেক্ষণ করা যায় ; তাই বিকাশ হল গুনগত বিষয়। 

৯. শিক্ষাক্ষেত্রে প্রভাবগত পার্থক্য :- 
শিক্ষাক্ষেত্রে বৃদ্ধির কতটা প্রভাব আছে - সে সম্পর্কে শিক্ষামনোবিদগণের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তবে , শিক্ষাক্ষেত্রে বিকাশের প্রভাব প্রশ্নাতীত। ব্যক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষাক্ষেত্রে তার গ্রহণ ক্ষমতা ও দক্ষতা তৈরী হয়। আবার অন্যভাবে বলা যায় , শিক্ষার মাধ্যমেই ব্যক্তির বিকাশ ত্বরান্বিত হয়। 

১০. বৃদ্ধি ও বিকাশের হার :- 
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধির হারের পরিবর্তন ঘটে। যেমন , শিশুর জন্ম থেকে আড়াই - তিন বছর পর্যন্ত এবং বয়ঃসন্ধিকালে শিশুর বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি থাকে। কিন্তু তারপর বৃদ্ধির হার কমে যায়। কিন্তু , বিকাশ প্রক্রিয়া ক্রমাগতঃ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সংগঠিত হয়।    

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো              
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

বৃদ্ধি কাকে বলে ? বৃদ্ধির বৈশিষ্টগুলি আলোচনা কর।   

বৃদ্ধির সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট।  




বৃদ্ধির ধারণা / সংজ্ঞা :- 


বৃদ্ধি একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। পার্থিব পরিবেশের মধ্যে প্রতিটি শিশু অভিযোজনের সাহায্যে বেড়ে ওঠে। তার দেহের প্রতিটি অঙ্গ - প্রত্যঙ্গের বৃদ্ধি ঘটে। শারীরবৃত্তীয় কার্যকলাপ করবার ক্ষমতা তৈরী হয়। তাই বৃদ্ধি বলতে সাধারণতঃ ব্যক্তির দৈহিক আকার , গঠন , উচ্চতা , ওজন - ইত্যাদির পরিবর্তনকেই বৃদ্ধি বলে। 

মনোবিজ্ঞানী ফ্রাঙ্ক বলেছেন - বৃদ্ধি হল মানব কোষের গুণিতক বৃদ্ধি [ Multiplication of cells ] ।
 
মনোবিজ্ঞানী ক্রো অ্যান্ড ক্রো বৃদ্ধি বলতে কাঠামোগত ও দেহগত পরিবর্তনগুলিকেই বুঝিয়েছেন। 

ফিলিপ কুম্স বলেছেন - বৃদ্ধি হল শুধুমাত্র শারীরবৃত্তীয় অভিযোজন।   

মনোবিদ হারলক বলেছেন , বৃদ্ধি হল শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন যা পূর্ববর্তী অবস্থা থেকে একটি নতুন দৈহিক বৈশিষ্টের দিকে অভিযোজিত হয়।   

উপরোক্ত সংজ্ঞাগুলি আলোচনা করলে বোঝা যায় যে , বৃদ্ধি হল একটি শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন যা পরিমাপযোগ্য এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই পরিবর্তন সাধিত হয়। বৃদ্ধির ফলে ব্যক্তির আকার , উচ্চতা , ওজন - ইত্যাদি দৈহিক সবকিছুরই পরিবর্তন ঘটে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

বৃদ্ধির বৈশিষ্ট :- 


১. শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া :- 
বৃদ্ধি সম্পূর্ণরূপে একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। বৃদ্ধির ফলে দৈহিক ওজন , উচ্চতা , আকার - ইত্যাদি দৈহিক বিষয়গুলির পরিবর্তন ঘটে। এইসকল দৈহিক পরিবর্তন ব্যক্তির কর্ম সঞ্চালনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। এছাড়াও , ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব গঠনের ক্ষেত্রেও দৈহিক পরিবর্তনগুলি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে কাজ করে। 

২. পরিমাপযোগ্য :- 
বৃদ্ধির প্রতিটি ক্ষেত্র পরিমাপযোগ্য। বৃদ্ধির ফলে মানুষের যে পরিবর্তন হয় সেগুলি দৈহিক এবং এই দৈহিক পরিবর্তনগুলিকে খুব সহজেই পরিমাপ করা যায়। বৃদ্ধি যেহেতু পরিমাপযোগ্য তাই এর আরেকটি সুফল হল - নির্দিষ্ট বয়সে কোনো ব্যক্তির নির্দিষ্ট পরিমাণ বৃদ্ধি ঘটেছে কি'না - তা খুব সহজেই পর্যবেক্ষণ করা যায়। 

৩. পরিবেশ ও বংশগতির মিলিত ফল :- 
পরিবেশ ও বংশগতি মিলিতভাবে বৃদ্ধির উপর প্রভাব বিস্তার করে। কোনো ব্যক্তির উচ্চতা , গায়ের রং , শারীরিক ক্ষমতা - কতটা হবে তা সরাসরি বংশগতির উপর নির্ভরশীল। আবার প্রাকৃতিক পরিবেশও বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে। যেমন , পার্বত্য দুর্গম এলাকার মানুষেরা সাধারণতঃ খর্বাকৃতি হন , নিরক্ষীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের গায়ের রং সাধারণতঃ কালো হয় - ইত্যাদি। 

৪. বিকাশের ভিত্তি :- 
বৃদ্ধি হল বিকাশ প্রক্রিয়ার ভিত্তি বা বিকাশের কারণ ; বা অন্যভাবে বলা যায় , বৃদ্ধি হল কারণ এবং বিকাশ হল তার ফল। নির্দিষ্ট বয়সে নির্দিষ্ট পরিমান বৃদ্ধি না ঘটলে বিকাশ প্রক্রিয়ায় তার তীব্র প্রভাব পড়ে। যথাযথ দৈহিক বৃদ্ধির অভাব বিকাশ প্রক্রিয়াকেও ক্ষতিগ্রস্থ করে। 

৫. স্বাভাবিক প্রক্রিয়া :- 
বৃদ্ধি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বৃদ্ধি সংগঠনের ক্ষেত্রে বাহ্যিক বিষয়গুলির প্রভাব গৌণ। বংশগতি এবং নির্দিষ্ট প্রাকৃতিক পরিবেশে ব্যক্তির বৃদ্ধি তার দৈহিক সংগঠনের মধ্যেই রচিত থাকে ; বাহ্যিক পরিবেশ একে খুব বেশি প্রভাবিত করতে পারেনা। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৬. নির্দিষ্ট বয়স :- 
বৃদ্ধি একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্তই ঘটে ; অর্থাৎ , বৃদ্ধি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া নয়। যেমন কোনো ব্যক্তির উচ্চতা একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্তই বৃদ্ধি পায়। সাধারণতঃ বয়োঃসন্ধিকাল এবং তার পরের কয়েক বছর বৃদ্ধি প্রক্রিয়া সংগঠিত হয়। 

৭. অনশীলনের সঙ্গে সম্পর্ক :- 
বৃদ্ধির সঙ্গে সাধারণতঃ অনুশীলনের সম্পর্ক থাকেনা। তবে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামনোবিদদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। তবে যেসকল ক্ষেত্রে অনুশীলনের সঙ্গে বৃদ্ধির সম্পর্ক আছে সেগুলি যথেষ্ট সীমাবদ্ধ পরিসরে সংগঠিত হয়। যেমন , হাতের পেশির ব্যায়াম করলে হাতের পেশিরই বৃদ্ধি ঘটবে - দেহের অন্যান্য অংশের পেশির সঙ্গে এর কোনোরূপ সম্পর্ক থাকেনা। 
৮. বৃদ্ধির হার :- 
ভিন্ন ভিন্ন বয়সে বৃদ্ধির হার ভিন্ন ভিন্ন হয়। যেমন জন্ম থেকে দুই বা আড়াই বছর পর্যন্ত শিশুর বৃদ্ধির হার খুব বেশি। তারপর থেকে বয়ঃসন্ধির দুই / তিন বছর আগে পর্যন্ত বৃদ্ধির হার হ্রাস পায়। আবার বয়ঃসন্ধিকালে শিশুর বৃদ্ধি খুব দ্রুত হারে ঘটে ; কিন্তু বয়ঃসন্ধির কয়েক বছর পর ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধির হার হ্রাস পায়। 

৯. ধারাবাহিক ও নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া :- 
বৃদ্ধি একটি নিরবচ্ছিন্ন ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। হঠাৎ করে যেকোনো বয়স থেকে বৃদ্ধি ঘটতে শুরু করেনা। নির্দিষ্ট বয়সের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি প্রক্রিয়া সংগঠিত হয় এবং এই প্রক্রিয়া নিরবচ্ছিন্নভাবে একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত সংগঠিত হয়। 

১০. শিক্ষা ক্ষেত্রে বৃদ্ধির গুরুত্ব :- 
যেহেতু বৃদ্ধি বিকাশ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে তাই শিক্ষা ক্ষেত্রেও বৃদ্ধির গুরুত্বকে অস্বীকার করা যায়না। বৃদ্ধির ধারাবাহিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিক্ষা পরিকল্পনা গ্রহণ করলে তা সার্থক হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। তবে , যেহেতু সকলের বৃদ্ধি একই সঙ্গে সমানভাবে ঘটনা - তাই শিক্ষাক্ষেত্রে স্তরভেদের নেতিবাচক দিকটিও বর্তমান।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো   
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

কর্মকেন্দ্রিক বা সক্রিয়তাভিত্তিক পাঠক্রম কাকে বলে ? কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমের গুরুত্ব বা উপযোগিতা আলোচনা কর। কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমের সীমাবদ্ধতাগুলি কী কী ? 


কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি আলোচনা কর। 




কর্মকেন্দ্রিক বা সক্রিয়তাভিত্তিক পাঠক্রমের ধারণা :- 


কর্মকেন্দ্রিক বা সক্রিয়তাভিত্তিক পাঠক্রমের মূলকথা হল শিক্ষার্থীর সক্রিয়তা। কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমে শিক্ষার্থীর সামনে বিভিন্ন সমস্যামূলক পরিস্থিতি তৈরী করা হয়। শিক্ষার্থী নিজ আগ্রহ অনুযায়ী সেই সকল সমস্যামূলক পরিস্থিতির সাপেক্ষে সক্রিয় হয়ে অংশগ্রহণ করে। এর ফলে 
(ক ) শিক্ষার্থীর মধ্যে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা তৈরী হয় এবং এই অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থী নিজের বাস্তব জীবনে কাজে লাগাতে পারে। 
(খ ) শিক্ষার্থীর মধ্যে লুকিয়ে থাকা সুপ্ত সম্ভাবনাগুলির বিকাশ ঘটে। 
(গ ) শিক্ষার্থী সমস্যামূলক পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে শেখে। 
(ঘ ) কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমে শিক্ষার্থী মূলতঃ কাজের মাধ্যমে শেখে। এর ফলে শিক্ষার্থীর আগ্রহ ও দক্ষতার দিকগুলি প্রকাশিত হয় এবং অন্যদিকে , শিক্ষার্থীর দুর্বলতার দিকগুলির প্রতিও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়। 

কর্মকেন্দ্রিক বা সক্রিয়তাভিত্তিক পাঠক্রমের উপযোগিতা / সুবিধা :-


১. শিক্ষার্থীর সক্রিয়তা বৃদ্ধি :- 
কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রম যেহেতু শিক্ষার্থীর সক্রিয়তার উপর নির্ভরশীল তাই কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সক্রিয়তা অনিবার্যভাবে বৃদ্ধি পায়। শিক্ষার্থীর মধ্যে বিভিন্ন শিক্ষামূলক কর্মকান্ডে আত্মসক্রিয়তার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। 

২. সমস্যা সমাধানে দক্ষতা বৃদ্ধি :- 
কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমে শিক্ষার্থীর সামনে বিভিন্ন সমস্যমূলক পরিস্থিতি উপস্থাপন করা হয়। এই সমস্যাগুলির প্রতি শিক্ষার্থীকে সক্রিয় হতে হয় এবং সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হয়। এইভাবে শিক্ষার্থীর মধ্যে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. বৌদ্ধিক বিকাশ :- 
কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমে শিক্ষার্থী নিজেই সক্রিয় হয়ে অংশগ্রহণ করে। এই শিক্ষা থেকে শিক্ষার্থী যে অভিজ্ঞতা লাভ করে তা শিক্ষার্থীর বৌদ্ধিক বিকাশে সহায়তা করে। 

৪. অন্তর্দৃষ্টিমূলক শিখনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি :- 
কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মধ্যে অন্তর্দৃষ্টিমূলক শিখনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন সমস্যামূলক পরিস্থিতির সমাধানসূত্র খুঁজতে গিয়ে শিক্ষার্থী সমস্যাকে সার্বিকভাবে উপলব্ধি করতে শেখে। এরফলে শিক্ষার্থীর মধ্যে অন্তর্দৃষ্টিমূলক বৌদ্ধিক দক্ষতার বিকাশ ঘটে। 

৫. প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখনের দক্ষতা বৃদ্ধি :- 
সমস্যামূলক পরিস্থিতির সমাধানে অন্তর্দৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে প্রচেষ্টা ও ভুলের মাধ্যমে শিখনও একটি কার্যকরি উপায়। কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থী সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখনের নীতি প্রয়োগ করে এবং ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রচেষ্টা ও ভুলের নীতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী দক্ষ হয়ে ওঠে। 

৬. সৃজনশীলতার বিকাশ :- 
কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রম শিক্ষার্থীর সামনে যেসকল সমস্যামূলক পরিস্থিতি উপস্থাপন করে তা সমাধান করতে শিক্ষার্থীকে ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে হয় , ভিন্ন ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করতে হয়। এইভাবে  শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে। 

৭. শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশ :- 
কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীর নৈতিক , প্রাক্ষোভিক , সামাজিক , কৃষ্টিমূলক , সাংস্কৃতিক , বৃত্তিমূলক , দৈহিক , বৌদ্ধিক - ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিকাশ ঘটে। এইভাবে কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রম শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশে সহায়তা করে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৮. শিক্ষকের ভূমিকা :- 
একটি আদর্শ কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রম শিক্ষার্থীর সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষকদেরও সক্রিয় করে তোলে। শিক্ষক এক্ষেত্রে পথ প্রদর্শকের ভূমিকা পালন করেন। 

৯. শিক্ষার্থীর আগ্রহ বৃদ্ধি :- 
কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমে শিক্ষার্থী বহুল স্বাধীনতা উপভোগ করে। নিজের মত করে শেখার সুযোগ পায় ও নিজের আগ্রহের বিষয়গুলিকে শিখতে পারে। ফলে কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমে শিক্ষার্থীর আগ্রহ স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পায়। 

কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমের সীমাবদ্ধতা / ত্রুটি / অসুবিধা :- 


(ক ) কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমে শিক্ষার্থী অতিমাত্রায় আগ্রহী হয়ে পড়লে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পঠন - পাঠন ব্যাহত হয়।     

(খ ) কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমে শিক্ষার্থী যেহেতু স্বাধীনতা লাভ করে , তাই বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পঠন - পাঠনের প্রতি সে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে। 

(গ ) কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমে বিমূর্ত চিন্তনের সেরকম কোনো সুযোগ না থাকায় শিক্ষার্থী বিমূর্ত চিন্তনের অনুশীলন থেকে বঞ্চিত হয়। 

(ঘ ) যেহেতু বিমূর্ত চিন্তনের খুব বেশি অবকাশ কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমের মধ্যে নেই , তাই এই ধরণের শিক্ষা উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে উপযুক্ত নয়। 

(ঙ ) কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমের একটি বড় সমস্যা হল আর্থিক বিষয়। কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রম পরিচালনা করতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়। অনেক সময়ই প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে প্রচুর অর্থের যোগান সম্ভব হয়না। 

(চ ) কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমে শিক্ষার্থীর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। শিক্ষার্থী কেবলমাত্র সেইসকল বিষয়ের প্রতিই জ্ঞান অর্জন করে যাতে সে স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণ করে। ফলে পঠন পাঠনের অন্যান্য বিষয়গুলিতে শিক্ষার্থীর জ্ঞান সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। 

(ছ ) কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্য ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের অভাব - কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমের অপর একটি প্রধান সমস্যা। 

(জ ) কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রম পরিচালনার জন্য বিশেষ ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন। সাধারণ বিদ্যালয়গুলিতে এই ধরণের শিক্ষার ব্যবস্থা করা যথোচিত নয়। 

(ঝ ) কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমে সংস্কৃতি , ঐতিহ্য , মূল্যবোধ - এইসকল বিষয়গুলি অবহেলিত হয়। 

(ঞ ) কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রম সকল প্রকার শিক্ষার্থীর জন্য উপযুক্ত না'ও হতে পারে। 

(ট ) কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রম যদি  বাস্তব জীবনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না হয় - তাহলে শিক্ষার্থী সহজেই পাঠক্রমের উপর আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। 

(ঠ ) কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমগুলিকে যদি সফলভাবে পরিচালনা না করা হয় তাহলে সময় , অর্থ , শ্রম - ইত্যাদির অযথা অপব্যয় হয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

মুক্ত শিক্ষার উদ্দেশ্যগুলি আলোচনা কর।  


  


মুক্ত শিক্ষার উদ্দেশ্য :- 


১. ব্যাক্তিত্বের বিকাশ :- 
শিক্ষা বেক্তিত্ব গঠনের একটি অন্যতম প্রধান উপাদান। যেসকল শিক্ষার্থীরা প্রথাগত বা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা থেকে কোনো কারণে বঞ্চিত , সেই সকল শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত শিক্ষা প্রদান করে ব্যক্তিসত্তার বিকাশ ঘটান হল মুক্ত শিক্ষার একটি প্রধান উদ্দেশ্য।  

২. প্রথাগত শিক্ষার বিকল্প :- 
শিক্ষা ক্ষেত্রে মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা প্রথাগত শিক্ষার বিকল্প হিসাবে কাজ করে। শিক্ষার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে সকল শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হল মুক্ত শিক্ষার একটি প্রধান উদ্দেশ্য। 

৩. সকলের জন্য শিক্ষা :- 
মুক্ত শিক্ষার দরজা সকলের জন্য উন্মুক্ত। যেকোনো বয়সের শিক্ষার্থীরা , যেকোনো সময়ে , নিজেদের পছন্দমত পাঠক্রম অনুসারে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। ফলে সকল বয়সের , সকল মেধার শিক্ষার্থী মুক্ত শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। 

৪. উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি :- 
শিক্ষা মানুষকে বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ করে তোলে। এই দক্ষতা একদিকে যেমন ব্যক্তিস্বার্থের পরিতৃপ্তি ঘটায় এবং অপরদিকে সমাজকল্যাণের কাজে লাগে। এইভাবে শিক্ষার্থীর মধ্যে উৎপাদনশীলতা তৈরী হয় যা শিক্ষার্থী ও সমাজ উভয়ের ক্ষেত্রেই কল্যাণকর। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


৫. মানব সম্পদ উন্নয়ন :- 
মুক্ত শিক্ষার অপর একটি প্রধান লক্ষ্য হল মানব সম্পদ উন্নয়ন। মানুষ তখনই সম্পদে পরিণত হতে পারে যখন তার মধ্যে উৎপাদনশীলতা তৈরী হয়। শিক্ষা মানুষকে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং মানব সম্পদ উন্নয়ন ঘটে। 

৬. উচ্চশিক্ষার সুযোগ :- 
প্রথাগত বা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা সকলের জন্য উন্মুক্ত নয়। ফলে বহু শিক্ষার্থী ইচ্ছা থাকা স্বত্তেও উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। মুক্ত শিক্ষা সেই সকল ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চ শিক্ষার দরজা খুলে দেয়। 

৭. কর্মক্ষেত্রে যুক্ত ব্যক্তিদের শিক্ষার সুযোগ :- 
মুক্ত শিক্ষার অপর একটি বৈশিষ্ট হল কর্মরত ব্যক্তিদের ব্যক্তিদের শিক্ষার সুযোগ প্রদান করা। চাকরিরত বা অন্যান্য ক্ষেত্রে কর্মরত ব্যক্তিরা প্রথাগত শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। তাই কর্মরত ব্যক্তিদের শিক্ষার সুযোগ প্রদান করা মুক্ত শিক্ষার একটি প্রধান বৈশিষ্ট। 

৮. শিক্ষায় সমসুযোগ সৃষ্টি :- 
মুক্ত শিক্ষা বিদ্যালয় ছুট , বয়স্ক , কর্মরত - ইত্যাদি সকল ধরণের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুযোগ প্ৰদান করে শিক্ষায় সমসুযোগ তৈরী করে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো


৯. বৃত্তিমূলক শিক্ষা :- 
সকল শিক্ষার্থীদের নিজেদের চাহিদা ও সামর্থ্য অনুযায়ী বৃত্তিশিক্ষার ব্যবস্থা করা মুক্ত শিক্ষার একটি প্রধান উদ্দেশ্য। নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা ব্যবস্থায় বৃত্তি শিক্ষার সুযোগ থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। কিন্তু মুক্ত শিক্ষায় বহুবিধ ও বৈচিত্রময় পাঠক্রম থেকে শিক্ষার্থীরা নিজেদের পছন্দমত বৃত্তিমূলক পাঠক্রম নির্বাচন করতে পারে। 

১০. জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ :- 
মুক্ত শিক্ষার অপর একটি প্রধান উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীকে জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ প্রদান করা। মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থী জীবনের যেকোনো সময়ে শিক্ষা প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে। 

১১. দূরশিক্ষার সহায়ক :- 
দূর শিক্ষা ব্যবস্থাকে সহায়তা করা মুক্ত শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য। প্রকৃত অর্থে দূরশিক্ষা ও মুক্তশিক্ষা উভয়ই প্রথাবহিৰ্ভূত শিক্ষার দুটি রূপ। তাই উভয়ের মধ্যে সমন্বয়সাধন নিতান্ত প্রয়োজন। 

১২. শিক্ষার্থীকে সুনাগরিক ও আত্মনির্ভর করে তোলা :- 
শিক্ষার্থীকে সুনাগরিক ও আত্মনির্ভর করে তোলা - মুক্ত শিক্ষার একটি প্রধান বৈশিষ্ট। মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীকে পঠন - পাঠন প্রস্তুত করা , পঠন কর্মভার নির্মাণ করা , মূল্যায়ণের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া - ইত্যাদি শিক্ষামূলক কাজ নিজেকেই করতে হয়। ফলে শিক্ষার্থীর মধ্যে আত্মনির্ভরতার মানসিকতা তৈরী হয়।       

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

মুক্ত শিক্ষার সুবিধা ও অসুবিধাগুলি আলোচনা কর। 




মুক্ত শিক্ষার সুবিধা :- 


১.মানব সম্পদ উন্নয়ন :- 
যেসকল শিক্ষার্থীর পক্ষে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়না তারা ,মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে। এইভাবে তাদের মধ্যে উৎপাদনশীলতা তৈরী হয় ও মানবসম্পদ উন্নয়ন ঘটে।  

২. শিক্ষায় সমসুযোগ সৃষ্টি :- 
অনেক ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ছুট শিক্ষার্থীরা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়না ; বা , বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষেরাও উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রথাগত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারেনা। কিন্তু মুক্ত শিক্ষায় এই সকল শ্রেণীর মানুষেরা শিক্ষার সুযোগ পায় এবং শিক্ষায় সমসুযোগের সৃষ্টি হয়।  

৩. আংশিক সময়য়ের শিক্ষা :- 
মুক্ত শিক্ষা হল আংশিক সময়ের শিক্ষা। শিক্ষার্থী নিজের পছন্দমত সময়ে পঠন - পাঠন করতে পারে , শ্রেণীকক্ষে উপস্থিত থাকাও ন্যূনতম। ফলে শিক্ষার্থী তার অন্যান্য কাজ  বজায় রেখে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।   

৪. আর্থিক ব্যয় কম :- 
মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ , শিক্ষকের পারিশ্রমিক , পাঠ্যপুস্তক - ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিপুল খরচ হয়না। মুক্ত শিক্ষার খরচ নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় স্বল্প। 

৫. বৃত্তিশিক্ষার সুবিধা :- 
বিভিন্ন বৃত্তিমূলক শিক্ষার জন্য মুক্ত শিক্ষা বিশেষভাবে কার্যকরী। শিক্ষার্থী নিজ পছন্দের বৃত্তি অনুসারে যেকোনো বৃত্তিমূলক পাঠক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৬. শিক্ষার্থীর আত্মনির্ভর মানসিকতা তৈরী :- 
মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক। পাঠক্রম নির্বাচন , পঠন - পাঠন , মূল্যায়ন - ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থী সম্পূর্ণরূপে স্বাধীনতা ভোগ করে। তাই মুক্ত শিক্ষায় শিক্ষার্থী আত্মনির্ভর হওয়ার সুযোগলাভ করে। 

৭. নমনীয় ভর্তি প্রক্রিয়া :- 
মুক্ত শিক্ষায় ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় অনেক বেশি নমনীয়। নিয়ন্ত্রিত শিক্ষাক্ষেত্রে ভর্তির সময় শিক্ষার্থীরা যে কঠিন প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয় - মুক্ত শিক্ষায় সে সমস্যা নেই। 

৮. প্রযুক্তির ব্যবহার :- 
আধুনিক সময়কালে মুক্ত শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রযুক্তির বহুল প্রচলন ঘটেছে। ফলে সব ধরণের শিক্ষার্থী এবং বিশেষ করে প্রান্তিক অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের সম্প্রচার , দূরদর্শন , ইন্টারনেট - ইত্যাদি মুক্ত শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে প্রচলিত হয়েছে। 

৯. শিক্ষার্থীর বয়সগত বাধানিষেধ নেই :- 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত মুক্ত শিক্ষা ক্ষেত্রে বয়সের কোনো বাধানিষেধ নেই। শিক্ষার্থী যেকোনো বয়সে যে পাঠক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারে। তবে অবশ্যই ন্যূনতম বয়স ও শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন। 

১০. শিক্ষার্থীর সংখ্যাগত বাধানিষেধ নেই :- 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা সীমিত থাকে। কিন্তু মুক্ত শিক্ষায় সে সমস্যা নেই। যেকোনো সংখ্যক শিক্ষার্থীরা মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে। 

১১. বৈচিত্রময় পাঠক্রম :- 
মুক্ত শিক্ষার ক্ষেত্রেও নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত নির্দিষ্ট পাঠক্রম থাকে। তবে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার পাঠক্রমের সঙ্গে মুক্ত শিক্ষার পাঠক্রমের কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। মুক্ত শিক্ষার পাঠক্রম অনেক বেশি বৈচিত্রময় এবং শিক্ষার্থী নিজ চাহিদা অনুযায়ী যেকোনো ধরণের পাঠক্রম নির্বাচন করতে পারে। 

১২. নমনীয় মূল্যায়ণ প্রক্রিয়া :- 
মুক্ত শিক্ষায় মূল্যায়ণ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় অনেক বেশি নমনীয়। শিক্ষার্থী নিজ সুবিধামত একটি পাঠক্রমের বিভিন্ন অংশের মূল্যায়নে অংশগ্রহণ করতে পারে। 


মুক্ত শিক্ষার অসুবিধা :- 


১. সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির অনুপস্থিতি :- 
মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় কোনোরূপ সহপাঠক্রমিক কার্যাবলীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়না। ফলে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায় সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিগুলির মাধ্যমে শিশুর যে বিভিন্ন ধরণের বিকাশ ঘটে ; মুক্ত শিক্ষায় তা সম্ভব নয়। 

২. নির্দেশনা :-
মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষক ন্যূনতম নির্দেশনা প্রদান করেন। শিক্ষার্থীদেরকে এই নির্দেশনা অনুসারে নিজেকেই পঠন পাঠন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে হয়। ফলে শিক্ষার্থী শিক্ষকের সান্নিধ্যলাভ থেকে বঞ্চিত হয়।   

৩. ফিডব্যাকের অভাব :- 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত মুক্ত শিক্ষায় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফিডব্যাক পাওয়া থেকে বঞ্চিত থাকেন। শিক্ষার্থীরা যেহেতু নিজেই পঠন - পাঠন করে - সেহেতু মুক্ত শিক্ষায় সকল প্রকার ফিডব্যাক অনুপস্থিত। 

৪. মিথস্ক্রিয়ার অভাব :- 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে যে মিথস্ক্রিয়া ঘটে - তা মুক্ত শিক্ষায় সম্ভব নয়। মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের সাহায্য ছাড়াই জ্ঞানার্জন করে। 

৫. শংসাপত্রের গ্রহণযোগ্যতা কম :- 
মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত পাঠক্রমের শেষে শংসাপত্র প্রদান করা হয় এবং এর মান কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় কম নয়। কিন্তু , বিভিন্ন বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে মুক্ত শিক্ষার শংসাপত্রের গ্রহণযোগ্যতা কম। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৬. সমাজে গ্রহণযোগ্যতা কম :- 
রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে সরকারি কাজকর্মের জন্য বা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক কাজকর্মের জন্য মুক্ত শিক্ষার শংসাপত্র নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার সমতুল্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য হলেও সামাজিক ক্ষেত্রে ও মানুষ ব্যক্তিগতভাবে মুক্ত শিক্ষাকে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় নিম্নমানের বলে মনে করেন। 

৭. শিক্ষকের ভূমিকা ন্যূনতম :- 
মুক্ত শিক্ষায় শিক্ষকের ভূমিকা ন্যূনতম। মুক্ত শিক্ষায় নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত শিক্ষক শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করেন না। মুক্ত শিক্ষায় শিক্ষকের কাজ হল পাঠক্রমের সঙ্গে সম্পর্কিত স্টাডি মেটেরিয়াল বা মডিউল প্রস্তুত করা। ফলে মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার শিক্ষক তাঁর জ্ঞান ও নির্দেশনা দ্বারা শিক্ষার্থীদের সমৃদ্ধ করতে পারেন না।  

৮. প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে উপযুক্ত নয় :- 
মুক্ত শিক্ষার গঠন ও পরিকাঠামো কেবলমাত্র উচ্চশিক্ষাকে কেন্দ্র করেই রচিত হয়েছে। ফলে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য মুক্ত শিক্ষায় কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। 

৯. পরিকাঠামোগত সমস্যা :- 
মুক্ত শিক্ষার নিজস্ব কোনো বিদ্যালয় ভবন থাকেনা। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে শিক্ষা প্রক্রিয়া পরিচালনা করতে হয়। ফলে উভয়ের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ঘটলে মুক্ত শিক্ষার পরিচালনায় সমস্যা দেখা যায়। 

১০. ব্যবহারিক শিক্ষার অভাব :- 
মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় স্টাডি মেটেরিয়ালের সাহায্যে শিক্ষার্থীকে নিজেকেই শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়। ব্যবহারিক শিক্ষার বিষয়গুলি প্রতিঠানিক তত্ত্বাবধান ছাড়াই পরিচালিত হয়। ফলে ব্যবহারিক শিক্ষার বিষয়গুলি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের যথাযথ ধারণা জন্মায় না। 

১১. গণমাধ্যমের কুফল :- 
মুক্ত শিক্ষায় অনেকসময় শিক্ষার্থীদেরকে গণমাধ্যমের সাহায্য গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে গণমাধ্যমগুলি সঠিক তথ্য পরিবেশন করেনা। ফলে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান সঞ্চালন ভুল পথে পরিচালিত হয়। 

১২. নিয়ন্ত্রণের সমস্যা :- 
মুক্ত শিক্ষা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত নয়। ফলে বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজকর্ম , পাঠক্রম নির্মাণ , মূল্যায়ণ - ইত্যাদি ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা যায়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

মুক্ত শিক্ষা কাকে বলে ? মুক্ত শিক্ষার বৈশিষ্টগুলি লেখ। 

মুক্ত শিক্ষার সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট। 




মুক্ত শিক্ষার ধারণা / সংজ্ঞা :- 


মুক্ত শিক্ষা হল প্রথা বহিৰ্ভূত শিক্ষার একটি রূপ। মুক্ত শিক্ষা হল এমন এক ধরণের শিক্ষা ব্যবস্থা যেখানে শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে , নিজেদের পছন্দমত সময়ে , নিজেদের চাহিদা ও সামর্থ্যের উপর ভিত্তি করে - শিক্ষা প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে। মুক্ত শিক্ষা ব্যাপকভাবে সকলের কাছে শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করে। 
মুক্ত শিক্ষা যেহেতু প্রথা বহিৰ্ভূত শিক্ষার একটি রূপ - তাই এটি নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত নয় আবার অনিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণহীন নয়। 

মুক্ত শিক্ষার বৈশিষ্ট :- 


১. শিক্ষকের ভূমিকা :- 
মুক্ত শিক্ষায় শিক্ষকের ভূমিকা ন্যূনতম। মুক্ত শিক্ষায় নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত শিক্ষক শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করেন না। মুক্ত শিক্ষায় শিক্ষকের কাজ হল পাঠক্রমের সঙ্গে সম্পর্কিত স্টাডি মেটেরিয়াল বা মডিউল প্রস্তুত করা। 

২. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান :- 
মুক্ত শিক্ষায় নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা শ্রেণীকক্ষ থাকেনা। সাধারণতঃ নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলিকেই সাময়িকভাবে মুক্ত শিক্ষায় ব্যবহার করা হয়। 

৩. পাঠক্রম :- 
মুক্ত শিক্ষার ক্ষেত্রেও নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত নির্দিষ্ট পাঠক্রম থাকে। তবে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার পাঠক্রমের সঙ্গে মুক্ত শিক্ষার পাঠক্রমের কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। মুক্ত শিক্ষার পাঠক্রম অনেক বেশি বৈচিত্রময় এবং শিক্ষার্থী নিজ চাহিদা অনুযায়ী যেকোনো ধরণের পাঠক্রম নির্বাচন করতে পারে। 

৪. মূল্যায়ণ প্রক্রিয়া :- 
মুক্ত শিক্ষায় মূল্যায়ণ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় অনেক বেশি নমনীয়। শিক্ষার্থী নিজ সুবিধামত একটি পাঠক্রমের বিভিন্ন অংশের মূল্যায়নে অংশগ্রহণ করতে পারে। 

৫. সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির অনুপস্থিতি :- 
মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় কোনোরূপ সহপাঠক্রমিক কার্যাবলীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়না। ফলে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায় সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিগুলির মাধ্যমে শিশুর যে বিভিন্ন ধরণের বিকাশ ঘটে ; মুক্ত শিক্ষায় তা সম্ভব নয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো 

৬. নির্দেশনা :-
মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষক ন্যূনতম নির্দেশনা প্রদান করেন। শিক্ষার্থীদেরকে এই নির্দেশনা অনুসারে নিজেকেই পঠন পাঠন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে হয়। 

৭. ফিডব্যাকের অভাব :- 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত মুক্ত শিক্ষায় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফিডব্যাক পাওয়া থেকে বঞ্চিত থাকেন। শিক্ষার্থীরা যেহেতু নিজেই পঠন - পাঠন করে - সেহেতু মুক্ত শিক্ষায় সকল প্রকার ফিডব্যাক অনুপস্থিত। 

৮. মিথস্ক্রিয়ার অভাব :- 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে যে মিথস্ক্রিয়া ঘটে - তা মুক্ত শিক্ষায় সম্ভব নয়। মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের সাহায্য ছাড়াই জ্ঞানার্জন করে। 

৯. শংসাপত্রের গ্রহণযোগ্যতা :- 
মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত পাঠক্রমের শেষে শংসাপত্র প্রদান করা হয় এবং এর মান কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় কম নয়। যেকোনো সরকারি চাকরি বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে মুক্ত শিক্ষার শংসাপত্র নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মতই গ্রহণযোগ্য। 

১০. সমাজে গ্রহণযোগ্যতা :- 
রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে সরকারি কাজকর্মের জন্য বা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক কাজকর্মের জন্য মুক্ত শিক্ষার শংসাপত্র নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার সমতুল্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য হলেও সামাজিক ক্ষেত্রে ও মানুষ ব্যক্তিগতভাবে মুক্ত শিক্ষাকে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় নিম্নমানের বলে মনে করেন। 

১১. প্রযুক্তির ব্যবহার :- 
আধুনিক সময়কালে মুক্ত শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রযুক্তির বহুল প্রচলন ঘটেছে। ফলে সব ধরণের শিক্ষার্থী এবং বিশেষ করে প্রান্তিক অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের সম্প্রচার , দূরদর্শন , ইন্টারনেট - ইত্যাদি মুক্ত শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে প্রচলিত হয়েছে। 

১২. শিক্ষার্থীর বয়স :- 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত মুক্ত শিক্ষা ক্ষেত্রে বয়সের কোনো বাধানিষেধ নেই। শিক্ষার্থী যেকোনো বয়সে যে পাঠক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারে। তবে অবশ্যই ন্যূনতম বয়স ও শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো 

১৩. শিক্ষার্থীর সংখ্যা :- 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা সীমিত থাকে। কিন্তু মুক্ত শিক্ষায় সে সমস্যা নেই। যেকোনো সংখ্যক শিক্ষার্থীরা মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে। 

১৪. রাষ্ট্রের ভূমিকা :- 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত বেশিরভাগ মুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি রাষ্ট্র কর্তৃক পরিচালিত হয়। মুক্ত শিক্ষার লক্ষ্য নির্ধারণ , স্টাডি মেটেরিয়াল নির্মাণ , মূল্যায়ন , শিক্ষার পাঠক্রম - ইত্যাদি সবকিছুই রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীনে পরিচালিত হয়। অবশ্য মুক্ত শিক্ষার ক্ষেত্রে বেসরকারি উদ্যোগও সমানভাবে প্রচলিত আছে। 

১৫. আর্থিক বিষয় :- 
মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ , শিক্ষকের পারিশ্রমিক , পাঠ্যপুস্তক - ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিপুল খরচ হয়না। মুক্ত শিক্ষার খরচ নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় স্বল্প। 

১৬. বৃত্তিমূলক শিক্ষা :- 
বিভিন্ন বৃত্তিমূলক শিক্ষার জন্য মুক্ত শিক্ষা বিশেষভাবে কার্যকরী। শিক্ষার্থী নিজ পছন্দের বৃত্তি অনুসারে যেকোনো বৃত্তিমূলক পাঠক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারে। 

১৭. শিক্ষার্থী কেন্দ্রিকতা :- 
মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক। পাঠক্রম নির্বাচন , পঠন - পাঠন , মূল্যায়ন - ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থী সম্পূর্ণরূপে স্বাধীনতা ভোগ করে। তাই মুক্ত শিক্ষায় শিক্ষার্থী আত্মনির্ভর হওয়ার সুযোগলাভ করে। 

১৮. নমনীয় ভর্তি প্রক্রিয়া :- 
মুক্ত শিক্ষায় ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় অনেক বেশি নমনীয়। নিয়ন্ত্রিত শিক্ষাক্ষেত্রে ভর্তির সময় শিক্ষার্থীরা যে কঠিন প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয় - মুক্ত শিক্ষায় সে সমস্যা নেই। 

১৯. আংশিক সময়য়ের শিক্ষা :- 
মুক্ত শিক্ষা হল আংশিক সময়ের শিক্ষা। শিক্ষার্থী নিজের পছন্দমত সময়ে পঠন - পাঠন করতে পারে , শ্রেণীকক্ষে উপস্থিত থাকাও ন্যূনতম। ফলে শিক্ষার্থী তার অন্যান্য কাজ  বজায় রেখে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।            

২০. শিক্ষায় সমসুযোগ সৃষ্টি :- 
অনেক ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ছুট শিক্ষার্থীরা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়না ; বা , বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষেরাও উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রথাগত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারেনা। কিন্তু মুক্ত শিক্ষায় এই সকল শ্রেণীর মানুষেরা শিক্ষার সুযোগ পায় এবং শিক্ষায় সমসুযোগের সৃষ্টি হয়।  

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো 
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

দূরশিক্ষার সুবিধা ও অসুবিধাগুলি আলোচনা কর। 




দূরশিক্ষার সুবিধা :- 


১.মানব সম্পদ উন্নয়ন :- 
যেসকল শিক্ষার্থীর পক্ষে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়না তারা দূর শিক্ষায় অংশগ্রহণ করে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে। এইভাবে তাদের মধ্যে উৎপাদনশীলতা তৈরী হয় ও মানবসম্পদ উন্নয়ন ঘটে।  

২. শিক্ষায় সমসুযোগ সৃষ্টি :- 
অনেক ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ছুট শিক্ষার্থীরা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়না ; বা , বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষেরাও উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রথাগত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারেনা। কিন্তু দূর শিক্ষায় এই সকল শ্রেণীর মানুষেরা শিক্ষার সুযোগ পায় এবং শিক্ষায় সমসুযোগের সৃষ্টি হয়।  

৩. আংশিক সময়য়ের শিক্ষা :- 
দূর শিক্ষা হল আংশিক সময়ের শিক্ষা। শিক্ষার্থী নিজের পছন্দমত সময়ে পঠন - পাঠন করতে পারে , শ্রেণীকক্ষে উপস্থিত থাকারও কোনো প্রশ্ন নেই। ফলে শিক্ষার্থী তার অন্যান্য কাজ  বজায় রেখে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।   

৪. আর্থিক ব্যয় কম :- 
দূর শিক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ , শিক্ষকের পারিশ্রমিক , পাঠ্যপুস্তক - ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিপুল খরচ হয়না। দূর শিক্ষার খরচ নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় স্বল্প। 

৫. বৃত্তিশিক্ষার সুবিধা :- 
বিভিন্ন বৃত্তিমূলক শিক্ষার জন্য দূর শিক্ষা বিশেষভাবে কার্যকরী। শিক্ষার্থী নিজ পছন্দের বৃত্তি অনুসারে যেকোনো বৃত্তিমূলক পাঠক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারে। 

৬. শিক্ষার্থীর আত্মনির্ভর মানসিকতা তৈরী :- 
দূর শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক। পাঠক্রম নির্বাচন , পঠন - পাঠন , মূল্যায়ন - ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থী সম্পূর্ণরূপে স্বাধীনতা ভোগ করে। তাই দূর শিক্ষায় শিক্ষার্থী আত্মনির্ভর হওয়ার সুযোগলাভ করে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. নমনীয় ভর্তি প্রক্রিয়া :- 
দূর শিক্ষায় ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় অনেক বেশি নমনীয়। নিয়ন্ত্রিত শিক্ষাক্ষেত্রে ভর্তির সময় শিক্ষার্থীরা যে কঠিন প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয় - দূর শিক্ষায় সে সমস্যা নেই। 

৮. প্রযুক্তির ব্যবহার :- 
আধুনিক সময়কালে দূর শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রযুক্তির বহুল প্রচলন ঘটেছে। ফলে সব ধরণের শিক্ষার্থী এবং বিশেষ করে প্রান্তিক অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের সম্প্রচার , দূরদর্শন , ইন্টারনেট - ইত্যাদি দূর শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে প্রচলিত হয়েছে। 

৯. শিক্ষার্থীর বয়সগত বাধানিষেধ নেই :- 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত দূর শিক্ষা ক্ষেত্রে বয়সের কোনো বাধানিষেধ নেই। শিক্ষার্থী যেকোনো বয়সে যে পাঠক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারে। তবে অবশ্যই ন্যূনতম বয়স ও শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন। 

১০. শিক্ষার্থীর সংখ্যাগত বাধানিষেধ নেই :- 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা সীমিত থাকে। কিন্তু দূর শিক্ষায় সে সমস্যা নেই। যেকোনো সংখ্যক শিক্ষার্থীরা দূর শিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে। 

১১. বৈচিত্রময় পাঠক্রম :- 
দূর শিক্ষার ক্ষেত্রেও নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত নির্দিষ্ট পাঠক্রম থাকে। তবে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার পাঠক্রমের সঙ্গে দূরশিক্ষার পাঠক্রমের কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। দূর শিক্ষার পাঠক্রম অনেক বেশি বৈচিত্রময় এবং শিক্ষার্থী নিজ চাহিদা অনুযায়ী যেকোনো ধরণের পাঠক্রম নির্বাচন করতে পারে। 

১২. নমনীয় মূল্যায়ণ প্রক্রিয়া :- 
দূর শিক্ষায় মূল্যায়ণ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় অনেক বেশি নমনীয়। শিক্ষার্থী নিজ সুবিধামত একটি পাঠক্রমের বিভিন্ন অংশের মূল্যায়নে অংশগ্রহণ করতে পারে। 


দূরশিক্ষার অসুবিধা :- 


১. সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির অনুপস্থিতি :- 
দূর শিক্ষা ব্যবস্থায় কোনোরূপ সহপাঠক্রমিক কার্যাবলীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়না। ফলে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায় সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিগুলির মাধ্যমে শিশুর যে বিভিন্ন ধরণের বিকাশ ঘটে ; দূর শিক্ষায় তা সম্ভব নয়। 

২. নির্দেশনা :-
দূর শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষক ন্যূনতম নির্দেশনা প্রদান করেন। শিক্ষার্থীদেরকে এই নির্দেশনা অনুসারে নিজেকেই পঠন পাঠন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে হয়। ফলে শিক্ষার্থী শিক্ষকের সান্নিধ্যলাভ থেকে বঞ্চিত হয়।   

৩. ফিডব্যাকের অভাব :- 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত দূর শিক্ষায় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফিডব্যাক পাওয়া থেকে বঞ্চিত থাকেন। শিক্ষার্থীরা যেহেতু নিজেই পঠন - পাঠন করে - সেহেতু দূর শিক্ষায় সকল প্রকার ফিডব্যাক অনুপস্থিত। 

৪. মিথস্ক্রিয়ার অভাব :- 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে যে মিথস্ক্রিয়া ঘটে - তা দূর শিক্ষায় সম্ভব নয়। দূর শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের সাহায্য ছাড়াই জ্ঞানার্জন করে। 

৫. শংসাপত্রের গ্রহণযোগ্যতা কম :- 
দূর শিক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত পাঠক্রমের শেষে শংসাপত্র প্রদান করা হয় এবং এর মান কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় কম নয়। কিন্তু বিভিন্ন বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে মুক্ত শিক্ষার শংসাপত্রের গ্রহণযোগ্যতা কম।  

৬. সমাজে গ্রহণযোগ্যতা কম :- 
রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে সরকারি কাজকর্মের জন্য বা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক কাজকর্মের জন্য দূর শিক্ষার শংসাপত্র নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার সমতুল্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য হলেও সামাজিক ক্ষেত্রে ও মানুষ ব্যক্তিগতভাবে দূর শিক্ষাকে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় নিম্নমানের বলে মনে করেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. শিক্ষকের ভূমিকা ন্যূনতম :- 
দূর শিক্ষায় শিক্ষকের ভূমিকা ন্যূনতম। দূর শিক্ষায় নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত শিক্ষক শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করেন না। দূর শিক্ষায় শিক্ষকের কাজ হল পাঠক্রমের সঙ্গে সম্পর্কিত স্টাডি মেটেরিয়াল বা মডিউল প্রস্তুত করা। ফলে দূর শিক্ষা ব্যবস্থার শিক্ষক তাঁর জ্ঞান ও নির্দেশনা দ্বারা শিক্ষার্থীদের সমৃদ্ধ করতে পারেন না।  

৮. প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে উপযুক্ত নয় :- 
দূর শিক্ষার গঠন ও পরিকাঠামো কেবলমাত্র উচ্চশিক্ষাকে কেন্দ্র করেই রচিত হয়েছে। ফলে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য দূর শিক্ষায় কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। 

৯. পরিকাঠামোগত সমস্যা :- 
দূর শিক্ষার নিজস্ব কোনো বিদ্যালয় ভবন থাকেনা। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে শিক্ষা প্রক্রিয়া পরিচালনা করতে হয়। ফলে উভয়ের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ঘটলে দূর শিক্ষার পরিচালনায় সমস্যা দেখা যায়। 

১০. ব্যবহারিক শিক্ষার অভাব :- 
দূর শিক্ষা ব্যবস্থায় স্টাডি মেটেরিয়ালের সাহায্যে শিক্ষার্থীকে নিজেকেই শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়। ব্যবহারিক শিক্ষার বিষয়গুলি প্রতিঠানিক তত্ত্বাবধান ছাড়াই পরিচালিত হয়। ফলে ব্যবহারিক শিক্ষার বিষয়গুলি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের যথাযথ ধারণা জন্মায় না। 

১১. গণমাধ্যমের কুফল :- 
দূরশিক্ষায় অনেকসময় শিক্ষার্থীদেরকে গণমাধ্যমের সাহায্য গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে গণমাধ্যমগুলি সঠিক তথ্য পরিবেশন করেনা। ফলে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান সঞ্চালন ভুল পথে পরিচালিত হয়। 

১২. নিয়ন্ত্রণের সমস্যা :- 
দূরশিক্ষা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত নয়। ফলে বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজকর্ম , পাঠক্রম নির্মাণ , মূল্যায়ণ - ইত্যাদি ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা যায়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

দূর শিক্ষা কাকে বলে ? দূর শিক্ষার বৈশিষ্টগুলি লেখ। 




দূর শিক্ষার সংজ্ঞা / ধারণা :- 


দূর শিক্ষা হল প্রথাবহিৰ্ভূত শিক্ষার একটি রূপ। দূর শিক্ষাকে মূলতঃ নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার বিকল্প হিসাবে পরিচালিত করা হয়। নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার কঠোরতা , শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান নির্ভরতা , মূল্যায়ন কেন্দ্রিকতা - ইত্যাদির বাইরে তুলনামূলক স্বাধীন পরিবেশে শিক্ষার্থী নিজ চাহিদা , সামর্থ্য , সময় অনুসারে শিক্ষার্থী যে ধরণের শিক্ষা গ্রহণ করে - তাকেই বলে দূর শিক্ষা। 
দূর শিক্ষা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রিত নয় আবার অনিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণবিহীন নয়। দূর শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হল সকল স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য তাদের সুবিধামত সময় , চাহিদা - ইত্যাদি অনুসারের উচ্চ শিক্ষার প্রসার ঘটানো। 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার '' Quantity , quality and relevance '' - এর সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে তুলনামূলক সমস্যামুক্ত একটি বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থা হল দূর শিক্ষা। 

দূর শিক্ষার বৈশিষ্ট :- 


১. শিক্ষকের ভূমিকা :- 
দূর শিক্ষায় শিক্ষকের ভূমিকা ন্যূনতম। দূর শিক্ষায় নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত শিক্ষক শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করেন না। দূর শিক্ষায় শিক্ষকের কাজ হল পাঠক্রমের সঙ্গে সম্পর্কিত স্টাডি মেটেরিয়াল বা মডিউল প্রস্তুত করা। 

২. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান :- 
দূর শিক্ষায় নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা শ্রেণীকক্ষ থাকেনা। সাধারণতঃ নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলিকেই সাময়িকভাবে দূর শিক্ষায় ব্যবহার করা হয়। 

৩. পাঠক্রম :- 
দূর শিক্ষার ক্ষেত্রেও নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত নির্দিষ্ট পাঠক্রম থাকে। তবে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার পাঠক্রমের সঙ্গে দূরশিক্ষার পাঠক্রমের কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। দূর শিক্ষার পাঠক্রম অনেক বেশি বৈচিত্রময় এবং শিক্ষার্থী নিজ চাহিদা অনুযায়ী যেকোনো ধরণের পাঠক্রম নির্বাচন করতে পারে। 

৪. মূল্যায়ণ প্রক্রিয়া :- 
দূর শিক্ষায় মূল্যায়ণ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় অনেক বেশি নমনীয়। শিক্ষার্থী নিজ সুবিধামত একটি পাঠক্রমের বিভিন্ন অংশের মূল্যায়নে অংশগ্রহণ করতে পারে। 

৫. সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির অনুপস্থিতি :- 
দূর শিক্ষা ব্যবস্থায় কোনোরূপ সহপাঠক্রমিক কার্যাবলীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়না। ফলে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায় সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিগুলির মাধ্যমে শিশুর যে বিভিন্ন ধরণের বিকাশ ঘটে ; দূর শিক্ষায় তা সম্ভব নয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৬. নির্দেশনা :-
দূর শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষক ন্যূনতম নির্দেশনা প্রদান করেন। শিক্ষার্থীদেরকে এই নির্দেশনা অনুসারে নিজেকেই পঠন পাঠন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে হয়। 

৭. ফিডব্যাকের অভাব :- 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত দূর শিক্ষায় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফিডব্যাক পাওয়া থেকে বঞ্চিত থাকেন। শিক্ষার্থীরা যেহেতু নিজেই পঠন - পাঠন করে - সেহেতু দূর শিক্ষায় সকল প্রকার ফিডব্যাক অনুপস্থিত। 

৮. মিথস্ক্রিয়ার অভাব :- 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে যে মিথস্ক্রিয়া ঘটে - তা দূর শিক্ষায় সম্ভব নয়। দূর শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের সাহায্য ছাড়াই জ্ঞানার্জন করে। 

৯. শংসাপত্রের গ্রহণযোগ্যতা :- 
দূর শিক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত পাঠক্রমের শেষে শংসাপত্র প্রদান করা হয় এবং এর মান কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় কম নয়। যেকোনো সরকারি চাকরি বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে দূর শিক্ষার শংসাপত্র নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মতই গ্রহণযোগ্য। 

১০. সমাজে গ্রহণযোগ্যতা :- 
রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে সরকারি কাজকর্মের জন্য বা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক কাজকর্মের জন্য দূর শিক্ষার শংসাপত্র নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার সমতুল্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য হলেও সামাজিক ক্ষেত্রে ও মানুষ ব্যক্তিগতভাবে দূর শিক্ষাকে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় নিম্নমানের বলে মনে করেন। 

১১. প্রযুক্তির ব্যবহার :- 
আধুনিক সময়কালে দূর শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রযুক্তির বহুল প্রচলন ঘটেছে। ফলে সব ধরণের শিক্ষার্থী এবং বিশেষ করে প্রান্তিক অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের সম্প্রচার , দূরদর্শন , ইন্টারনেট - ইত্যাদি দূর শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে প্রচলিত হয়েছে। 

১২. শিক্ষার্থীর বয়স :- 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত দূর শিক্ষা ক্ষেত্রে বয়সের কোনো বাধানিষেধ নেই। শিক্ষার্থী যেকোনো বয়সে যে পাঠক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারে। তবে অবশ্যই ন্যূনতম বয়স ও শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

১৩. শিক্ষার্থীর সংখ্যা :- 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা সীমিত থাকে। কিন্তু দূর শিক্ষায় সে সমস্যা নেই। যেকোনো সংখ্যক শিক্ষার্থীরা দূর শিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে। 

১৪. রাষ্ট্রের ভূমিকা :- 
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত বেশিরভাগ দূর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি রাষ্ট্র কর্তৃক পরিচালিত হয়। দূর শিক্ষার লক্ষ্য নির্ধারণ , স্টাডি মেটেরিয়াল নির্মাণ , মূল্যায়ন , শিক্ষার পাঠক্রম - ইত্যাদি সবকিছুই রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীনে পরিচালিত হয়। অবশ্য দূর শিক্ষার ক্ষেত্রে বেসরকারি উদ্যোগও সমানভাবে প্রচলিত আছে। 

১৫. আর্থিক বিষয় :- 
দূর শিক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মত বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ , শিক্ষকের পারিশ্রমিক , পাঠ্যপুস্তক - ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিপুল খরচ হয়না। দূর শিক্ষার খরচ নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় স্বল্প। 

১৬. বৃত্তিমূলক শিক্ষা :- 
বিভিন্ন বৃত্তিমূলক শিক্ষার জন্য দূর শিক্ষা বিশেষভাবে কার্যকরী। শিক্ষার্থী নিজ পছন্দের বৃত্তি অনুসারে যেকোনো বৃত্তিমূলক পাঠক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারে। 

১৭. শিক্ষার্থী কেন্দ্রিকতা :- 
দূর শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক। পাঠক্রম নির্বাচন , পঠন - পাঠন , মূল্যায়ন - ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থী সম্পূর্ণরূপে স্বাধীনতা ভোগ করে। তাই দূর শিক্ষায় শিক্ষার্থী আত্মনির্ভর হওয়ার সুযোগলাভ করে। 

১৮. নমনীয় ভর্তি প্রক্রিয়া :- 
দূর শিক্ষায় ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার তুলনায় অনেক বেশি নমনীয়। নিয়ন্ত্রিত শিক্ষাক্ষেত্রে ভর্তির সময় শিক্ষার্থীরা যে কঠিন প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয় - দূর শিক্ষায় সে সমস্যা নেই। 

১৯. আংশিক সময়য়ের শিক্ষা :- 
দূর শিক্ষা হল আংশিক সময়ের শিক্ষা। শিক্ষার্থী নিজের পছন্দমত সময়ে পঠন - পাঠন করতে পারে , শ্রেণীকক্ষে উপস্থিত থাকারও কোনো প্রশ্ন নেই। ফলে শিক্ষার্থী তার অন্যান্য কাজ  বজায় রেখে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।            

২০. শিক্ষায় সমসুযোগ সৃষ্টি :- 
অনেক ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ছুট শিক্ষার্থীরা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়না ; বা , বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষেরাও উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রথাগত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারেনা। কিন্তু দূর শিক্ষায় এই সকল শ্রেণীর মানুষেরা শিক্ষার সুযোগ পায় এবং শিক্ষায় সমসুযোগের সৃষ্টি হয়।  

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো      
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
Newer Posts
Older Posts

Followers

Pages

  • Home
  • Privacy Policy
  • Disclaimer
  • CONTACT ME
  • About Me

Contact Form

Name

Email *

Message *

About me

Hallow viewers , myself Nandan Dutta [Subhankar Dutta], reside at Maheshpur,Malda.
I made this website for the students of B.A. courses under Gour Banga University. Here you can get suggestions of different subjects like HISTORY , SOCIOLOGY , POLITICAL SCIENCE & EDUCATION.
In future I will add MCQ sections of those subjects.


Categories

  • 1ST SEMESTER SUGGESTION (1)
  • 2 ND YEAR SUGGESTION (1)
  • 2ND SEMESTER (1)
  • 3RD SEMESTER (8)
  • BENGALI NOTES (21)
  • CU suggestion. (1)
  • EDUCATION NOTES (141)
  • ENGLISH COMPULSORY (16)
  • GBU Suggestion. (7)
  • HISTORY EUROPE & WORLD (46)
  • HISTORY NOTES (68)
  • POL SC NOTES (64)
  • SOCIOLOGY NOTES (72)
  • WBCS 2020 (1)

recent posts

Blog Archive

  • May 2025 (3)
  • April 2025 (20)
  • March 2025 (12)
  • February 2025 (8)
  • November 2024 (5)
  • October 2024 (2)
  • September 2024 (2)
  • June 2024 (2)
  • March 2024 (6)
  • February 2024 (4)
  • October 2023 (5)
  • May 2023 (5)
  • April 2023 (1)
  • December 2022 (1)
  • November 2022 (13)
  • September 2022 (2)
  • August 2022 (7)
  • July 2022 (29)
  • June 2022 (10)
  • May 2022 (25)
  • April 2022 (24)
  • March 2022 (16)
  • February 2022 (19)
  • January 2022 (21)
  • December 2021 (46)
  • November 2021 (5)
  • October 2021 (6)
  • September 2021 (5)
  • August 2021 (41)
  • July 2021 (43)
  • June 2021 (31)
  • May 2021 (7)
  • April 2021 (1)
  • July 2020 (1)
  • June 2020 (3)
  • April 2020 (1)
  • November 2019 (1)
  • July 2019 (1)
  • June 2019 (1)
  • May 2019 (1)
  • April 2019 (2)
  • January 2019 (1)

Pages

  • Home
  • 2nd SEM ভাষাতত্ত্ব :
  • বাংলা উপভাষা
  • দ্বিতীয় পুলকেশীর কৃতিত্ব
  • ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত সাম্যের অধিকারগুলি আলোচনা করো।
  • হর্ষবর্ধনের কৃতিত্ব আলোচনা করো। তাকে কি উত্তর পথনাথ বলা যায় ?
  • ভারতীয় সংবিধানের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য :-
  • উদারনীতিবাদ : সংক্ষিপ্ত ধারণা :-
  • চোল শাসনব্যবস্থা :-
  • গুপ্তযুগ সুবর্ণযুগ সম্পর্কিত আলোচনা।
  • ৬. উদাহরণসহ মধ্যযুগের বাংলাভাষার কয়েকটি বৈশিষ্ট আল...
  • 1. Marxism
  • আধুনিক বাংলা ভাষা ও তার বৈশিষ্ট।
  • Discuss the career and achievements of Samudragupta .
  • ভাষাতত্ত্ব

Created with by ThemeXpose | Distributed by Blogger Templates