Pages

Powered by Blogger.
1ST SEMESTER SUGGESTION 2 ND YEAR SUGGESTION 2ND SEMESTER 3RD SEMESTER BENGALI NOTES CU suggestion. EDUCATION NOTES ENGLISH COMPULSORY GBU Suggestion. HISTORY EUROPE & WORLD HISTORY NOTES POL SC NOTES SOCIOLOGY NOTES WBCS 2020

NANDAN DUTTA

A new approach for exam notes .

কার্বনারি আন্দোলন কাকে বলে ? কার্বোনারি আন্দোলনের উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব আলোচনা কর। 




কার্বনারি আন্দোলন ও তার উদ্দেশ্য :- 


ইতালির ঐক্য আন্দোলনের প্রাথমিক পর্যায়ে কার্বোনারি আন্দোলন একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। কার্বোনারি কথাটি এসেছে কার্বন অর্থাৎ অঙ্গার থেকে। কার্বোনারি সমিতির সদস্যরা জ্বলন্ত অঙ্গার বহন করে ইতালির মুক্তির আদর্শ প্রচার করত। ইতালির মুক্তিই ছিল কার্বনারিদের একমাত্র ব্রত। 

বস্তুতঃপক্ষে কার্বোনারি ছিল একটি গুপ্ত সমিতি। ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দের ভিয়েনা সম্মেলনের আঘাতে ইতালির জাতীয়তাবাদী আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু কার্বোনারিদের হাত ধরেই ইতালির জাতীয়তাবাদ পুনরায় ফিনিক্স পাখির মত ভস্মস্তূপ থেকে নতুন করে উন্মাদনা সৃষ্টি করেছিল। 

কার্বোনারি সমিতির প্রধান কেন্দ্র ছিল নেপলস। কার্বোনারিদের উদ্দেশ্যগুলি ছিল - 
(ক ) ইতালিতে বিদেশি শাসনের অবসান করে ইতালির স্বাধীনতা অর্জন। 
(খ ) গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করা। 
(গ ) ব্যক্তিস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করা। 
(ঘ ) নতুন সংবিধান প্রবর্তন করা। 
(ঙ ) নৈতিকতা ও সমাজতন্ত্রের উপর গুরুত্ব আরোপ করা। 

ঐতিহাসিক ম্যারিয়ট (Marriott) বলেছেন , কার্বোনারিরা প্রচলিত শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনমত প্রতিষ্ঠা করে। এমনকি খ্রিস্টান ধর্মের গণতান্ত্রিক আদর্শ ও পাশ্চাত্য যুক্তিবাদের আদর্শ জনগণের সামনে তুলে ধরে সমগ্র ইতালি জুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। 

কার্বোনারি আন্দোলনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য :- 


১. আত্মসমীক্ষার সুযোগ :- 
কার্বোনারি আন্দোলন ইতালির জাতীয়তাবাদী নেতৃত্বের সামনে আত্মসমীক্ষার সুযোগ প্রস্তুত করে। এতদিন পর্যন্ত কার্বোনারিরা মূলতঃ ষড়যন্ত্র , সশস্ত্র অভ্যুত্থান - ইত্যাদি কর্মপন্থা অনুসরণ করে চলত। এছাড়া আন্দোলনের সঙ্গে ধর্মীয় ভাবাবেগ জড়িত ছিল। কিন্তু কার্বোনারি আন্দোলনের ব্যর্থতার ফলে ইতালির জাতীয়তাবাদী নেতৃবৃন্দ নতুন ধরণের ও ত্রুটিমুক্ত কর্মসূচি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন। 

২. ইতালির ঐক্য প্রতিষ্ঠার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন :- 
আপাতদৃষ্টিতে কার্বোনারি আন্দোলন ব্যর্থ হলেও এর রাজনৈতিক গুরুত্ব ছিল সুদূরপ্রসারী। ইতালি থেকে বিদেশি শাসনের অবসান - যা ছিল কার্বোনারিদের মূল দাবী - তা তৎকালীন সময়ে প্রতিটি জাতীয়তাবাদী ব্যক্তিকে প্রবলভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। ফলে কার্বোনারি আন্দোলন ব্যর্থ হলেও কার্বোনারিদের সেই দাবী শীঘ্রই উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. ইতালির পরবর্তী জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের অনুপ্রেরণা :- 
কার্বোনারি আন্দোলন ইটালিতে সংগঠিত পরবর্তী বৈপ্লবিক আন্দোলনগুলিকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। বিশেষ করে ম্যাৎসিনির ইয়ং ইতালি আন্দোলন কার্বোনারি আন্দোলন দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত ছিল। 

৪. রিসর্জিমেন্টো :- 
রিসর্জিমেন্টো কথাটির অর্থ পুনর্জাগরণ ভিয়েনা সম্মেলন ইতালির জাতীয়তাবাদে প্রবল আঘাত হানলেও ফরাসি বিপ্লবের আদর্শগত দিকগুলি সমগ্র ইউরোপ জুড়ে ব্যাপক আলোড়ন তৈরী করে। তাই ইতালিতে কার্বনারী আন্দোলন ব্যর্থ হলেও ইতালিবাসীর পুনর্জাগরণের ক্ষেত্রে কার্বোনারি আন্দোলনের প্রত্যক্ষ প্রভাব ছিল। 

৫. উদারনৈতিক আদর্শের প্রসার :- 
ফরাসি বিপ্লব প্রসূত প্রগতিশীল ও উদারনৈতিক আদর্শগুলি কার্বোনারিদের মাধ্যমে সমগ্র ইতালি জুড়ে প্রসারিত হয়। ফলে কার্বোনারি আন্দোলন ব্যর্থ হলেও সেই আদর্শগুলির প্রভাব মুছে ফেলা যায়নি। 

৬. রক্ষণশীলতার বিরোধিতা :- 
১৮১৫ সালের ভিয়েনা সম্মেলন ইতালি সহ সমগ্র ইউরোপকে রক্ষনশীলতার চাদরে মুড়ে ফেলেছিল। বলা বাহুল্য যে , ভিয়েনা সম্মেলন ছিল ইউরোপীয় প্রগতিশীলতার পক্ষে প্রধান অন্তরায়। কিন্তু কার্বোনারিরা ভিয়েনা সম্মেলনের রক্ষণশীল নীতির তীব্র বিরোধিতা করে এবং প্রগতিশীল সংস্কার ও উদারনৈতিক আদর্শগুলি প্রতিষ্ঠার দাবী জানায়। ফলে ইউরোপীয় জনগণের মধ্যে আশার আলো যুগিয়েছিল। 

৭. অস্ট্রিয়ার স্বরূপ উন্মোচন :- 
কার্বোনারি আন্দোলনের ফলেই ইউরোপে অস্ট্রিয়ার প্রকৃত স্বরূপ উন্মোচিত হয়। সীমাহীন বর্বরতা , অত্যাচার ও নিষ্ঠুর দমন নীতি প্রয়োগ করে কার্বোনারি আন্দোলনসহ অন্যান্য জাতীয়তাবাদী আন্দোলনগুলিকে অস্ট্রিয়া দমন করে। তাই কার্বোনারি আন্দোলনের ফলেই ইতালির জাতীয়তাবাদী আন্দোলন অস্ট্রিয়া বিরোধী হয়ে ওঠে। 

৮. বৈপ্লবিক সাহিত্যের প্রসার :- 
কার্বোনারি আন্দোলনের হাত ধরে ইতালিতে বৈপ্লবিক সাহিত্যের প্রসার তীব্রতর হয়। এই সকল সাহিত্যের মাধ্যমে প্রচলিত রাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার দুর্বলতা , ব্যক্তি স্বাধীনতা , নাগরিক অধিকার - ইত্যাদি প্রগতিশীল আদর্শের প্রচার করা হয় এবং সর্বপরি ইতালি থেকে বৈদেশিক শাসনের অবসান ঘটাতে না পারলে ইতালির উন্নয়ন কোনোভাবেই সম্ভব নয় - তা জনসাধারণের নিকট উপস্থাপন করা হয়। এইসকল সাহিত্যগুলির মধ্যে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য ছিল ক্যাভুর সম্পাদিত  রিসর্জিমেন্টো পত্রিকা। 

৯. ইতালিবাসীর মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনার বিস্তার :- 
কার্বোনারি সমিতির সদস্যগণ ইতালিবাসীর মধ্যে যে জাতীয়তাবাদী চেতনার বিস্তার ঘটিয়েছিল - তা ছিল কার্বোনারি আন্দোলনের সবচেয়ে প্রভাববিস্তারকারী সাফল্য। কার্বোনারি আন্দোলন ব্যর্থ হলেও সেই চেতনা মানুষের মন থেকে মুছে যায়নি। মানুষ উপলব্ধি করেছিল ইতালির স্বাধীনতা অর্জন ব্যতীত অন্য কোনো পথেই ইতালির ঐক্য প্রতিষ্ঠা এবং নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ সম্ভব নয়। 

কার্বোনারি আন্দোলন কতটা সফল হয়েছিল - সে বিষয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও ইতালির ঐক্য প্রতিষ্ঠার প্রথম পর্যায়ে কার্বোনারি আন্দোলন এক সুদূরপ্রসারী ভূমিকা গ্রহণ করেছিল - সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।  

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

ক্রিমিয়ার যুদ্ধের ফলাফল , প্রভাব , গুরুত্ব।  




ক্রিমিয়ার যুদ্ধের ফলাফল , প্রভাব , গুরুত্ব।  

ইউরোপের ইতিহাসে ক্রিমিয়ার যুদ্ধের তাৎপর্য বিবেচনা করে ঐতিহাসিক লর্ড ক্রোমার ক্রিমিয়ার যুদ্ধকে ''ইউরোপের ইতিহাসের জলবিভাজিকা '' রূপে উল্লেখ করেছেন। আবার অন্যদিকে রবার্ট মরিয়ার মন্তব্য করেছেন - তৎকালীন সংগঠিত যুদ্ধগুলির মধ্যে ক্রিমিয়ার যুদ্ধ ছিল একান্তই সার্থকতাবিহীন যুদ্ধ। লর্ড সলসবেরি অনুরূপ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তাঁর ভাষায় - '' England put her money on the wrong horse.''  । 
তবে ঐতিহাসিকদের মধ্যে ক্রিমিয়ার যুদ্ধের গুরুত্ব বিষয়ে মতভেদ থাকলেও ক্রিমিয়ার যুদ্ধের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ফলাফল উভয়ই প্রাসঙ্গিক। 

ক্রিমিয়ার যুদ্ধের প্রত্যক্ষ ফল :- 


১. প্যারিসের সন্ধি :- 
১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্যারিসের সন্ধি দ্বারা ক্রিমিয়ার যুদ্ধের অবসান ঘটে। এই সন্ধির শর্তগুলি ছিল - 
(ক ) মোলডেভিয়া ও ওয়ালাকিয়া - র প্রদেশদুটি রাশিয়া তুরস্ককে প্রত্যার্পণ করে। 
(খ ) তুরস্কের খ্রিস্টান প্রজাবর্গের রক্ষণাবেক্ষণের দাবী রাশিয়া পরিত্যাগ করে। 
(গ ) কৃষ্ণসাগরের উপর থেকে কোনো একক শক্তির আধিপত্য অস্বীকার করে তাকে নিরপেক্ষ রাখা হল।(ঘ ) দানিউব নদীকে আন্তর্জাতিক নদী বলে ঘোষণা করা হল ; ফলে দানিউব নদীর উপর সকল রাষ্ট্রের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। 
(ঙ ) তুরস্ক সার্বিয়ার স্বায়ত্তশাসন স্বীকার করে। 
(চ ) রাশিয়া তুরস্ককে বেসারবিয়া ফিরিয়ে দেয়। 

২. রাশিয়ার কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক পরাজয় :- 
প্যারিসের সন্ধিতে স্পষ্টরূপে রাশিয়ার অগ্রগতি প্রতিরোধ  করা হয়। ইতিপূর্বে রাশিয়া তুরস্কের মোলডেভিয়া ও ওয়ালাকিয়া প্রদেশদুটি দখল করলেও ক্রিমিয়ার যুদ্ধে পরাজয়ের ফলে উভয় প্রদেশই রাশিয়ার হাতছাড়া হয়। কৃষ্ণসাগর অঞ্চলের সকল দুর্গ ও সেনাশিবির রাশিয়া সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়। তুরস্ককে কেন্দ্র করে নিকট - প্রাচ্যে রাশিয়া শক্তিবৃদ্ধির স্বপ্ন দেখেছিল - তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. তুরস্কের রাজনৈতিক স্বার্থ সংরক্ষণ :- 
প্যারিসের সন্ধি দ্বারা তুরস্ক রাশিয়ার আগ্রাসনের হাত থেকে সাময়িকভাবে মুক্তিলাভ করে। তুরস্ককে ইউরোপীয় রাষ্ট্রমন্ডলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ইউরোপীয় বৃহৎ শক্তিবর্গের তুরস্ককে কেন্দ্র করে নিজ নিজ স্বার্থ জড়িত ছিল। তারা তুরস্ককে রাজনৈতিক নিরাপত্তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি প্রদান করে। রাজনৈতিক উৎকণ্ঠা থেকে মুক্তি পেয়ে তুরস্ক অভ্যন্তরীণ সংস্কারে মনোনিবেশ করার সুযোগ পায়। 

ক্রিমিয়ার যুদ্ধের পরোক্ষ ফল :- 


৪. রাশিয়ায় সংস্কার কর্মসূচির সূচনা :- 
ক্রিমিয়ার যুদ্ধের ফলে রাশিয়ার রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনে কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটে। ক্রিমিয়ার যুদ্ধে পরাজয়ের অন্যতম কারণ হিসাবে রাশিয়া তার পুরাতনতন্ত্র ও সংস্কার বিমুখতাকে দায়ী করে। এর ফলে রাশিয়ায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রগতিশীল সংস্কার সাধন করা হয়। জার আলেকজান্ডার ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়ায় ভূমিদাস প্রথা উচ্ছেদ করেন। 

৫. ইউরোপ সম্পর্কে রাশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন :- 
ক্রিমিয়ার যুদ্ধে পরাজয়ের ফলে ইউরোপ সম্পর্কে রাশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতির পরিবর্তন ঘটে। রাশিয়ার জার ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান সমর্থক হলেও ইউরোপীয় শক্তিবর্গ প্যারিস সম্মেলনের মাধ্যমে রাশিয়ার বিজিত অচলগুলি কেড়ে নেয়। কৃষ্ণ সাগর এলাকাতেও রাশিয়ার অগ্রগতি প্রতিরোধ করা হয়। ফলে রাশিয়া ইউরোপ থেকে মুখ ফিরিয়ে এশিয়াতে সাম্রাজ্য বিস্তারের নীতি গ্রহণ করে। 

৬. রাশিয়ার এশিয়া নীতি :- 
ইউরোপ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার পর রাশিয়া এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল দখল করে। মোঙ্গলিয়ার কিছু অংশ , ককেশাস অঞ্চল , সমরখন্দ , বোখারা - ইত্যাদি অঞ্চল রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হয়। এছাড়াও রাশিয়ার সেনাবাহিনী আফগানিস্তান পর্যন্ত অগ্রসর হয় এবং ভারতেও রুশ আক্রমণের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। 

৭. তৃতীয় নেপোলিয়নের রাজনৈতিক মর্যাদা বৃদ্ধি :- 
ক্রিমিয়ার যুদ্ধে মিত্রশক্তির জয়লাভের ফলে ফ্রান্স তথা ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নের রাজনৈতিক মর্যাদা ও গুরত্ব প্রবলভাবে বৃদ্ধি পায়। ফ্রান্স সমগ্র ইউরোপে শ্রেষ্ঠ সামরিক শক্তি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। ইউরোপের সকল ক্ষেত্রে তৃতীয় নেপোলিয়ন নিয়ন্ত্রকের মর্যাদায় উন্নীত হন। প্রকৃতপক্ষে তৃতীয় নেপোলিয়ন চেয়েছিলেন ফ্রান্সের শক্তিবৃদ্ধি করে ভিয়েনা চুক্তি ভেঙে ফেলতে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৮. ইংল্যান্ডের বিপুল ক্ষতি :- 
ক্রিমিয়ার যুদ্ধে ইংল্যান্ড বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হয়। যুদ্ধে ইংল্যান্ডের প্রচুর অর্থ ব্যয় হয় এবং ইংল্যান্ড ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে। সমগ্র ইউরোপ জুড়ে ইংল্যান্ড একটি দুর্বল অর্থনীতিতে পরিণত হয়। মিত্রপক্ষ জয়লাভ করলেও যেহেতু ইংল্যান্ডের প্রত্যক্ষ কোনো লাভ হয়নি , সেহেতু ক্রিমিয়ার যুদ্ধের পর ইউরোপে ইংল্যান্ডের মর্যাদাহানি ঘটে। 

৯. ইতালির ঐক্য প্রতিষ্ঠা :- 
ক্রিমিয়ার যুদ্ধের পরোক্ষ ফল হিসাবে ইটালির ঐক্য প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়। যেহেতু ইতালি ক্রিমিয়ার যুদ্ধে মিত্রপক্ষের হয়ে যোগদান করে , তাই যুদ্ধের পর ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন ক্যাভুরের নেতৃত্বে ইতালির ঐক্য আন্দোলনে পিডমন্টের পক্ষ অবলম্বন করেন। ক্যাভুর প্যারিস সম্মেলনে ইতালির সমস্যাকে সমগ্র ইউরোপের সমস্যারূপে উপস্থাপিত করতে সফল হন এবং ইউরোপীয় শক্তিবর্গের সাহায্য নিয়ে ক্যাভুর অস্ট্রিয়ার হাত থেকে ইতালির মুক্তি ছিনিয়ে নেন। 

১০. জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠা :- 
যেহেতু প্রাশিয়া ক্রিমিয়ার যুদ্ধে নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করেছিল , তাই রাশিয়ার জার প্রাশিয়ার প্রতি সন্তুষ্ট ছিলেন। অন্যদিকে অস্ট্রিয়া রাশিয়ার বিরুদ্ধাচারণ করায় জার অস্ট্রিয়ার প্রতি ক্ষিপ্ত ছিলেন। তাই বিসমার্ক যখন ঐক্যবদ্ধ জার্মান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অস্ট্রিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন তখন রাশিয়া বিসমার্ককে সহায়তা স্বরূপ অস্ট্রো - প্রাশিয়া যুদ্ধে নিরপেক্ষ থাকেন। ফলে বিসমার্ক সহজেই ক্ষয়প্রাপ্ত অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করে জার্মানির ঐক্য সম্পূর্ণ করেন। 

১১. বলকান জাতীয়তাবাদের প্রসার :- 
ক্রিমিয়ার যুদ্ধের ফলাফল বলকান জাতীয়তাবাদীদের উৎসাহিত করে। বলকান জাতীয়তাবাদীরা নতুন উদ্যমে সংগঠিত হয় ও তাদের স্বাধীনতার দাবী জোরালো হয়। এ প্রসঙ্গে ক্রোমার বলেছেন - A fresh movement was set on foot towards Balkan reconstruction.  ।  বস্তুতঃপক্ষে ক্রোমার বলকান জাতীয়তাবাদের উদ্ভবের পেছনে ক্রিমিয়ার যুদ্ধকেই একমাত্র কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন।   

১২. আন্তর্জাতিক যুদ্ধনীতি :- 
ক্রিমিয়ার যুদ্ধের পর যুদ্ধ নিয়ন্ত্রণের জন্য ইউরোপীয় শক্তিবর্গ এক অভিনব ও কার্যকরী পন্থা অবলম্বন করে। ঠিক হয় , ইউরোপীয় শক্তিগুলি পারস্পরিক যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার পূর্বে আন্তর্জাতিক সভা আহ্বান করা হবে এবং সেখানেই আলাপ - আলোচনার মাধ্যমে সকল প্রকার বিরোধের মীমাংসা করার চেষ্টা করা হবে। 

পরিশেষে বলা যায় , ইউরোপের ইতিহাসে ক্রিমিয়ার যুদ্ধের প্রভাব ছিল তাৎক্ষণিক ; সুদূরপ্রসারী নয়। তবে ক্রিমিয়ার যুদ্ধের ফলে পরোক্ষভাবে ইতালির ঐক্য ও জার্মানির ঐক্য সংগঠিত হয় এবং তৃতীয় নেপোলিয়ন ভিয়েনা চুক্তি ভাঙতে চেষ্টা করেন - এই ঘটনাগুলি কোনোভাবেই উপেক্ষা করা যায়না।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো  
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

ক্রিমিয়ার যুদ্ধের কারণগুলি লেখ। 




ক্রিমিয়ার যুদ্ধের কারণগুলি লেখ। 

ক্রিমিয়ার যুদ্ধ ইউরোপীয় ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ভিয়েনা সন্ধির পর ইউরোপ বড় কোনো যুদ্ধের সাক্ষী থাকেনি। কিন্তু ক্রিমিয়ার যুদ্ধের ফলে ইউরোপের ৪০ বছরের সেই শান্তির যুগের অবসান ঘটে। ক্রিমিয়ার যুদ্ধে ইউরোপের প্রায় সকল বৃহৎ শক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করে। আপাত দৃষ্টিতে ক্রিমিয়ার যুদ্ধের কারণ ছিল অতি তুচ্ছ। জেরুজালেমে অবস্থিত পবিত্র স্থানের অধিকার কার হাতে থাকবে এই নিয়ে গ্রিক ও ল্যাটিন ধর্মযাজকদের দ্বন্দ্ব শেষ পর্যন্ত একটি বৃহৎ যুদ্ধের জন্ম দেয়। তবে , ঐতিহাসিকভাবে একথা প্রমাণিত যে , ক্রিমিয়ার যুদ্ধের মূলে ছিল বেশ কিছু রাজনৈতিক বিষয়। 

১. গ্রোটোর গির্জা সংক্রান্ত বিরোধ :-
তুর্কির সুলতান ১৭৪০ খ্রিস্টাব্দের এক চুক্তির দ্বারা যিশুখ্রিস্টের জন্মস্থান জেরুজালেমের গ্রোটোর গির্জা ও অন্যান্য পবিত্র স্থানগুলি রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব ক্যাথলিক গির্জাকে প্রদান করেন। ক্যাথলিক ফ্রান্স এই দায়িত্বের রক্ষাকর্তা নিযুক্ত হয়। কিন্তু ফরাসি বিপ্লবের পর ফ্রান্স শক্তিহীন হয়ে পড়লে সেই সুযোগে রাশিয়া গ্রোটোর গির্জার অধিকার তুর্কির সুলতানের কাছ থেকে হস্তগত করেন। কিন্তু এরপর তৃতীয় নেপোলিয়ন ফ্রান্সের সিংহাসনে বসলে গ্রোটোর গির্জা সংক্রান্ত ফ্রান্সের পূর্বতন অধিকার প্রবলভাবে দাবী করেন।     

২. তৃতীয় নেপোলিয়নের উদ্দেশ্য :- 
গ্রোটোর গির্জা সংক্রান্ত ফ্রান্সের পূর্বতন অধিকার দাবী করার পেছনে সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নের বিশেষ কিছু উদ্দেশ্য ছিল। তৃতীয় নেপোলিয়নের সিংহাসন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ছিল ক্যাথলিকদের সমর্থন। তাই তৃতীয় নেপোলিয়ন ক্যাথলিক ও অন্যান্য প্রভাবশালীদের সমর্থনলাভের উদ্দেশ্যে তুর্কি সুলতানের নিকট ফ্রান্সের সেই পূর্বতন অধিকার দাবী করেন। এছাড়া , এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে রাশিয়ার বিরোধিতা করার সুযোগটিও তৃতীয় নেপোলিয়নের কাছে আকর্ষণীয় ছিল।  

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. তৃতীয় নেপোলিয়নের দাবীর প্রতি ক্যাথলিক রাষ্ট্রবর্গের সমর্থন :- 
গ্রোটোর গির্জার অধিকার সংক্রান্ত তৃতীয় নেপোলিয়নের দাবী ক্যাথলিক রাষ্ট্রগুলিকে উৎসাহিত করেছিল। অস্ট্রিয়া , স্পেন , সার্ডিনিয়া , পর্তুগাল , বেলজিয়াম সহ অন্যান্য ক্যাথলিক রাষ্ট্রগুলি তৃতীয় নেপোলিয়নের দাবীর প্রতি সমর্থন জানায়। ফলে তৃতীয় নেপোলিয়নের দাবী আরো জোরদার হয় এবং তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের সুযোগ খুঁজতে থাকেন। 

৪. তুর্কি সুলতানের ভূমিকা :- 
ইতিপূর্বেই তুর্কির সুলতান গ্রোটোর গির্জার রক্ষণাবেক্ষণের অধিকার ফ্রান্সকে প্রদান করেছিলেন। কিন্তু ফরাসি বিপবের পর ফ্রান্সের দুর্বলতার সুযোগে রাশিয়া সেই অধিকার হস্তগত করে। কিন্তু তৃতীয় নেপোলিয়ন জোরালোভাবে ফ্রান্সের পূর্বতন অধিকার ফিরে পাওয়ার দাবী জানালে তুরস্কের সুলতান ফ্রান্সকে সেই অধিকার প্রদান করেন এবং ল্যাটিন ধর্মযাজকদের সামান্য কিছু অধিকার প্রদান করেন। 

৫. রাশিয়ার দাবী ও জার নিকোলাসের উদ্দেশ্য :-
তুরস্কের সুলতান গ্রোটোর গির্জা সংক্রান্ত ফ্রান্সের সকল দাবী মেনে নিলে রাশিয়ার জার নিকোলাস অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। তিনি ফ্রান্সের অধিকার বাতিল করার জন্য তুরস্কের সুলতানের উপর চাপ তৈরী করতে থাকেন। আসলে জার নিকোলাসের প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল তুরস্কের সুলতানের অধীনস্থ অঞ্চলে রাশিয়ার আধিপত্য স্থাপন। তাই তুরস্কের সুলতান রাশিয়ার দাবী মানতে অস্বীকার করলে জার নিকোলাস তুরস্কের মোলদাভিয়া ও ওয়ালাচিয়া অধিকার করেন। এরফলে রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যে যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরী হয়। 

৬. ইংল্যান্ডের ভূমিকা :- 
ইতিমধ্যে জার নিকোলাস তুরস্ক সম্পর্কে ইংল্যান্ডকে এক প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাবে বলা হয় ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স মিলিতভাবে তুরস্ক দখল করবে এবং তুরস্ক বিজয় সম্পন্ন হলে তা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেবে। কিন্তু ইংল্যান্ড নিকট - প্রাচ্যে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে বিশেষভাবে চিন্তিত ছিল। তাই ইংল্যান্ড জার নিকোলাসের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। কেননা , ইংল্যান্ড বিশ্বাস করত তুরস্ক বর্তমানে ইউরোপের রুগ্ন ব্যক্তি রূপে পরিচিত হলেও উপযুক্ত পরিস্থিতিতে তুরস্ক নিজের পূর্ব গৌরব ফিরে পেতে পারে। তাই তখন রাশিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে তুরস্ক বিশেষভাবে সহায়ক হয়ে উঠতে পারে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. তুরস্কের আপোষ - প্রস্তাব :- 
গ্রোটোর গির্জার অধিকারকে কেন্দ্র করে তুরস্কের উপর রাজনৈতিক চাপ বেড়েই চলেছিল। একদিকে ফ্রান্স দাবী থেকে অনড় ছিল এবং অন্যদিকে রাশিয়া কূটনৈতিকভাবে তুরস্ককে ব্যাতিব্যাস্ত করে তুলেছিল। এই পরিস্থিতিতে তুরস্কের সুলতান রাশিয়ার নিকট এক আপোষ প্রস্তাব প্রেরণ করেন। কিন্তু এই আপোষ প্রস্তাবে গ্রোটোর গির্জার অধিকার সরাসরি রাশিয়ার হাতে আসবে এমন কোনো উল্লেখ না থাকায় রাশিয়া এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং তুরস্ক সুলতানের অধীনস্থ সকল অঞ্চলের সকল খ্রিস্টান প্রজাদের উপর অধিকারের দাবী জানায়। ফলে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে ওঠে। 

৮. অস্ট্রিয়ার ভূমিকা :- 
অস্ট্রিয়া ক্রিমিয়ার যুদ্ধ এবং যুদ্ধের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত না থাকলেও তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ''শত্রুতাপূর্ণ নিরপেক্ষতা'' নীতি গ্রহণ করে। কেননা , পূর্ব ইউরোপ রাশিয়ার শক্তিবৃদ্ধির অর্থ ছিল অস্ট্রিয়ার প্রাধান্যকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া। তাই এই যুদ্ধে অস্ট্রিয়া প্রকৃতপক্ষে ফ্রান্সকেই সমর্থন করে। এর পেছনে ছিল ক্যাভুরের মারাত্মক রাজনৈতিক দূরদৃষ্টিতা। ক্যাভুর ঐক্যবদ্ধ ইতালি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের সমর্থন লাভ করতে চেয়েছিলেন। 

৯. রুশ আক্রমণ ও ভিয়েনা নোট :- 
রাশিয়ার সকল দাবী অস্বীকার করা হলে রাশিয়া তুরস্ক আক্রমণ করে ও মোলদাভিয়া ও ওয়ালাচিয়া প্রদেশ দুটি দখল করে। এই ঘটনা ইউরোপীয় রাজনীতিতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ইংল্যান্ড , ফ্রান্স , অস্ট্রিয়া , প্রাশিয়া সম্মিলিতভাবে শান্তি স্থাপনের প্রয়াস শুরু করে। তারা '' ভিয়েনা নোট '' নামক এক প্রস্তাব জার নিকোলাসের কাছে পাঠায়। কিন্তু তুরস্কের খ্রিস্টান জনগণ রাশিয়া কর্তৃক না তুরস্ক কর্তৃক রক্ষিত হবেন তা নিয়ে জার ও ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত স্ট্যান্ডফোর্ডের বাদানুবাদ সৃষ্টি হয় রাশিয়া সকল প্রকার শান্তি প্রস্তাব মানতে অস্বীকার করেন। 

১০. তুরস্ক কর্তৃক যুদ্ধ ঘোষণা :- 
রাশিয়া শান্তি প্রস্তাব অগ্রাহ্য করলে ইংল্যান্ড , ফ্রান্স , পিডমন্ট - সার্ডিনিয়া তুরস্কের পক্ষে যোগদান করে এবং তুরস্ক রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। প্রাশিয়া নিরপেক্ষ থাকলেও অস্ট্রিয়া রাশিয়ার প্রতি বিরোধিতামূলক নিরপেক্ষতা নীতি গ্রহণ করে। 
যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুকালের মধ্যেই জার নিকোলাসের মৃত্যু ঘটে। তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে শান্তি স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্যারিসের সন্ধির মাধ্যমে ক্রিমিয়ার যুদ্ধের অবসান ঘটে।  

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

জার্মানির ঐক্য আন্দোলনের পথে প্রধান বাধাগুলি কী ছিল ? 




জার্মানির ঐক্য আন্দোলনের পথে প্রধান বাধা / অন্তরায় :- 


১৬৪৮ খ্রিস্টাব্দে ওয়েস্টফ্যালিয়ার সন্ধির মাধ্যমে জার্মানিকে প্রায় দুশোটি ছোট ছোট খন্ডে বিভক্ত করা হয়। এরপর নেপোলিয়নের সময়কালে তিনি বহুধাবিভক্ত জার্মানিকে ৩৯ প্রদেশে বিভক্ত করেন। কিন্তু এই সময় অস্ট্রিয়ার প্রাধান্য , মেটারনিকের রক্ষণশীল নীতি - ইত্যাদি কারণে জার্মানির ঐক্য সম্ভব ছিলনা। জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠার পথে প্রধান বাধা বা অন্তরায়গুলি ছিল নিম্নরূপ। 

১. ভিয়েনা সম্মেলন :- 
ভিয়েনা সম্মেলনে নেপোলিয়ন কর্তৃক নির্ধারিত পূর্বেকার ৩৯ টি প্রদেশেই জার্মানিকে বিভক্ত রাখা হয়। কিন্তু প্রত্যেক জার্মান রাজ্যের স্বতন্ত্রতা বজায় থাকায় জার্মানির সার্বিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা সম্ভব ছিল না। ৩৯ টি জার্মান প্রদেশের স্বতন্ত্রতা বজায় থাকলেও প্রতিটি প্রদেশে অস্ট্রিয়ার আধিপত্য বজায় থাকে। এছাড়াও , জার্মান প্রদেশগুলির ওপর বুন্ড রাষ্ট্রমন্ডলের কর্তৃত্ব বজায় ছিল। তাই বলা যেতে পারে  ভিয়েনা সম্মেলন পরোক্ষভাবে জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠার পথে ছিল প্রধান অন্তরায়। 

২. অস্ট্রিয়ার প্রাধান্য :- 
মেটারনিখ ঐক্যবদ্ধ জার্মানিকে অস্ট্রিয়া তথা সমগ্র ইউরোপের পক্ষে বিপজ্জনক বলে মনে করতেন। যেহেতু ভিয়েনা সম্মেলনের পর থেকে সমগ্র ইউরোপে অস্ট্রিয়ার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয় , তাই মেটারনিকের দমনমূলক নীতিগুলি ছিল জার্মান ঐক্য প্রতিষ্ঠার পথে অপর একটি অন্তরায়। ঐক্যবদ্ধ জার্মানির আদর্শ মেটারনিকের কাছে ছিল একটি অপবিত্র আদর্শ [ An infamous object ] । 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. রাজনৈতিক অগ্রগতির অভাব :- 
যেহেতু বহুধাবিভক্ত জার্মান রাজ্যগুলির স্বতন্ত্রতা বজায় ছিল , সেহেতু প্রতিটি জার্মান প্রদেশ মনে করত যে তারা স্বাধীন। এছাড়াও তৎকালীন সময়ে জার্মানরা রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে অর্থনীতি , কৃষি , শিল্প , বাণিজ্য - ইত্যাদি নিয়েই অধিক ব্যাস্ত ছিল। রাজনীতিবিদ ও জার্মান নেতারা জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে ভিয়েনা সম্মেলনের সমালোচনায় অধিক উৎসাহী ছিলেন। 

৪. আদর্শগত মতভেদ :- 
জার্মানির জাতীয়তাবাদী নেতাদের মধ্যে আদর্শগত দ্বন্দ্ব ছিল জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠার পথে একটি প্রধান বাধা। কেই কেউ স্টেইন হ্যাপসবার্গ রাজতন্ত্রের অধীনে জার্মান সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন ; আবার কেউ কেউ প্রাশিয়ার অধীনে জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। আবার কেউ কেউ গণতান্ত্রিক জার্মান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষপাতী ছিলেন। জার্মান নেতৃবর্গের এইরূপ আদর্শগত মতভেদ সম্পর্কে কার্ল মার্কস বলেছেন - Thus German unity was in itself a question big with disunion and discord. । 

৫. প্রাদেশিকতা ও বিচ্ছিন্নতাবাদ :- 
জার্মান রাষ্ট্রগুলির মধ্যে ভাষাগত ও জাতিগত কোনো ভেদাভেদ না থাকলেও তাদের মধ্যে আঞ্চলিকতা ও প্রাদেশিকতা প্রবলভাবে বজায় ছিল। বিশেষ করে ব্যাভেরিয়া , স্যাক্সনি - ইত্যাদি প্রদেশগুলির প্রবল আঞ্চলিকতাবাদ জার্মান ঐক্যের স্বপ্নকে প্রতিহত করে। তারা অখন্ড জার্মান রাষ্ট্রের তুলনায় নিজেদের স্বতন্ত্রতা বিষয়ে অধিক উৎসাহী ছিল। 

৬. ধর্মীয় মতভেদ :- 
সমগ্র জার্মান রাষ্ট্রগুলির উত্তরাংশে প্রোটেস্ট্যান্ট মতবাদ এবং দক্ষিণ অংশে ক্যাথলিক মতবাদ প্রচলিত ছিল। এই দুই মতাদর্শের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল প্রবল। তাই জার্মানির ঐক্য স্থাপনের পথে অন্তরায় হিসাবে ধর্মীয় মতভেদকে অস্বীকার করা যায়না। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. বৈদেশিক প্রভাব :- 
অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়া জার্মান রাষ্ট্রসংঘের অন্তৰ্ভুক্ত হলেও যেহেতু উভয় প্রদেশে জার্মান ছাড়াও আরো বহু জাতিগোষ্ঠীর অস্তিত্ব বজায় ছিল - তাই অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়া একটি জার্মান জাতিভিত্তিক রাষ্ট্রের অংশীদার হতে অসম্মত হয়। এছাড়া ফেডারেল ডায়েট - এ অ-জার্মান প্রাধান্য ছিল প্রবল। এছাড়াও জার্মান রাষ্ট্রসংঘের অন্তর্গত হলস্টেইন প্রদেশে ডেনমার্কের প্রভুত্ব বজায় ছিল। এইসকল বৈদেশিক বিষয়গুলি জার্মান ঐক্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। 

৮. ডায়েটের দুর্বলতা :- 
জার্মানির বিভিন্ন প্রদেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক ঈর্ষা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে ডায়েটের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা সম্ভব ছিল না। এই তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে কোনো সিদ্ধান্তেই ডায়েট একটি সার্বিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারত না। ফলে ডায়েটের এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে মেটারনিখ সমগ্র জার্মান রাষ্ট্র জুড়ে নিজ আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত করেন। 

৯. উদারনৈতিক আন্দোলনগুলির ব্যর্থতা :- 
জার্মানিতে কিছু উদারনৈতিক ও প্রগতিশীল আন্দোলন শুরু হলেও জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সেগুলি যথেষ্ট ছিল না। গেটে , শিলার প্রমুখ দার্শনিকগণ জার্মান জাতীয়তাবাদকে উজ্জীবিত করেন। এছাড়া ফরাসি বিপ্লবের আদর্শগত প্রভাব জার্মান জাতীয়তাবাদীদের বিশেষভাবে উৎসাহিত করে। কিন্তু জাতীয়তাবাদীদের মধ্যেও পারস্পরিক দ্বন্দ্ব বজায় ছিল। কেউ কেউ রাজতন্ত্রের অধীনেই গণতান্ত্রিক আদর্শগুলি প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন ; আবার কেউ কেউ সমগ্র জার্মানির রাষ্ট্রীয় ঐক্যের কথা বলেন। 

১০. কার্লসবাড ডিক্রি :- 
জার্মানিতে ফরাসি বিপ্লব হতে উদ্ভুত সকল প্রকার প্রগতিশীল ও উদারনৈতিক চিন্তাধারার প্রসার রোধ করতে মেটারনিখ বদ্ধপরিকর ছিলেন। কেননা , মেটারনিখ ভালোভাবেই জানতেন জার্মানিতে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হলে অস্ট্রিয়ার প্রাধান্য বিনষ্ট হবে। তাই মেটারনিখ বহু প্রতিক্রিয়াশীল নীতি প্রবর্তন করেন - যার মধ্যে কার্লসবাড ডিক্রি হল অন্যতম। এই নির্দেশিকার মাধ্যমে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উদারনৈতিক ভাবধারার কণ্ঠরোধ করা হয়। সংবাদপত্রের স্বাধীনতাও কেড়ে নেওয়া হয়।  

১১. ফ্র্যাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্টের ব্যর্থতা :- 
জার্মানির ঐক্য সাধনের উদ্দেশ্য নিয়ে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ৫৮৬ জন জার্মান প্রতিনিধিকে নিয়ে ফ্র্যাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্ট গঠিত হয়। এর পরের বছর ফ্র্যাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্টের সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রাশিয়ার রাজা চতুর্থ ফ্রেডরিখ উইলিয়ামকে জার্মানির শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু ফ্রেডরিখ উইলিয়াম তা প্রত্যাখ্যান করেন। প্রকৃতপক্ষে ফ্র্যাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্টে জনসাধারণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়নি। কেননা এতে কৃষক , শ্রমিক - ইত্যাদি শ্রেণীর কোনো প্রতিনিধি ছিল না এবং বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিদের মধ্যে মতবিরোধ ছিল।     

সুতরাং অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উভয় প্রকার  অন্তরায়গুলি অখন্ড জার্মান রাষ্ট্রের আদর্শকে দৃঢ়ভাবে প্রতিহত করেছিল। এর ফলে ব্যাহত হয় সর্ব-জার্মানবাদ। তবে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের পর পরিস্থিতির পরিবর্তন হয় এবং জার্মানির ভাগ্যাকাশে বিসমার্কের উত্থান ঘটে। বিসমার্কের নেতৃত্বে মাত্র তিনটি যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে ( ডেনমার্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ , অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ) জার্মানি ঐক্যবদ্ধ হয়।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো 
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

ইতালির ঐক্য আন্দোলনের পথে প্রধান বাধাগুলি কী ছিল ? 

ইটালির ঐক্য আন্দোলনের সমস্যাগুলি কী ছিল ? 




ইটালির ঐক্য আন্দোলনের পথে প্রধান বাধাসমূহ :- 


ইতালির ইতিহাস অত্যন্ত ঘটনাবহুল। নেপোলিয়ন ইতালি জয় করেন এবং ঐক্যবদ্ধ ইতালি ও শক্তিশালী কেন্দ্রীভূত শাসন ব্যবস্থা প্রচলন করেন। কিন্তু , ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ভিয়েনা সম্মেলনের মাধ্যমে ন্যায্য অধিকার নীতি প্রয়োগ করা হয় এবং ইতালিকে বহুখন্ডে বিভক্ত করা হয়। ফলে ফরাসি বিপ্লবের হাত ধরে ইতালিতে যে প্রগতিশীল ভাবধারা ও জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রসার ঘটেছিল তা স্তিমিত হয়ে পড়ে। এরপর ম্যাৎসিনি ইতালিতে পুনরায় জাতীয়তাবাদী চেতনার জাগরণ ঘটান এবং ক্যাভুর ইতালির ঐক্য সম্পূর্ণ করেন। ইতালির ঐক্য স্থাপনের  পথে প্রধান বাধাগুলি ছিল - 

১. অস্ট্রিয়ার আধিপত্য :- 
১৮১৫ সালে ভিয়েনা সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে সমগ্র ইউরোপ জুড়ে মেটারনিকের একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। মেটারনিখ ছিলেন প্রগতিশীল ভাবধারা , গণতন্ত্র , উদারনীতি - ইত্যাদির প্রবল বিরোধী। তিনি সমগ্র ইউরোপ জুড়ে পুরাতনতন্ত্র ও রক্ষনশীলতা বজায় রাখতে চেয়েছিলেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি সমগ্র ইউরোপ জুড়ে একাধিক দমনমূলক নীতি প্রয়োগ করেন। অস্ট্রিয়ার এই দমনমূলক নীতি ইতালির জাতীয়তাবাদী চেতনা , অখন্ড রাষ্ট্র স্থাপনের স্বপ্ন - ইত্যাদিকে প্রবলভাবে নস্যাৎ করে দেয়। 

২. উগ্র প্রাদেশিকতা :- 
ভিয়েনা সম্মেলন ও মেটার্নিকের তীব্র করাঘাতে ইতালি বহু খন্ডে বিভক্ত হয়ে পড়ে। বহুধাবিভক্ত ইতালির বিভিন্ন প্রদেশগুলির মধ্যে আঞ্চলিক বিভিন্নতা ছিল। প্রাথমিক পর্যায়ে এই প্রদেশগুলি নিজ নিজ আঞ্চলিক স্বার্থ সুরক্ষা করতেই অধিক প্রয়াসী ছিল। প্রদেশগুলির এই উগ্র প্রাদেশিকতা ইতালির ঐক্য আন্দোলনের পথে ছিল একটি প্রধান অন্তরায়। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. ধর্ম সংক্রান্ত বিষয় :- 
ভিয়েনা সম্মেলনের মাধ্যমে পোপ তাঁর হৃত ক্ষমতা ফিরে পেলেও আধুনিক ও প্রগতিশীল ভাবধারার প্রতি পোপ শ্রদ্ধাশীল ছিলেন না। যেহেতু পোপের রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ধর্মীয় অধিকারের ভিত্তিতে ; তাই এই ধর্মীয় ভিত্তি ইতালির ঐক্যের পথে একটি অন্তরায় ছিল। পোপ আধুনিক ভাবধারাগুলিকে গ্রহণ না করলেও নিজ ক্ষমতা বজায় রাখতে পুরাতনতন্ত্র বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর ছিলেন। 

৪. বৈদেশিক শাসন :- 
ভিয়েনা সম্মেলনের পরবর্তীকালে ইটালির সার্ডিনিয়া - পিডমন্ট ব্যতীত অন্যান্য সকল প্রদেশে বৈদেশিক শক্তির শাসন প্রতিষ্ঠিত ছিল। এমনকি , সার্ডিনিয়া - পিডমন্টের রাজা ভিক্টর ইম্যানুয়েল ছিলেন রাজতন্ত্র ও পুরাতনতন্ত্রের সমর্থক। অন্যদিকে মোডেনার শাসনকর্তা ফরাসি বিপ্লব প্রসূত উদারনৈতিক আদর্শগুলোকে প্রতিহত করতে সক্রিয় ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধ ইতালির আত্মপ্রকাশ কোনোভাবেই সম্ভব ছিলনা। 

৫. মেটারনিকের তীব্র দমননীতি :- 
মেটারনিখ তাঁর তীব্র দমনমূলক নীতির মাধ্যমে সমগ্র ইউরোপে ফরাসি বিপ্লব প্রসূত উদারনৈতিক ভাবধারাগুলিকে প্রতিহত করতে চেয়েছিলেন। তাই যখনই কোনো উদারনৈতিক ভাবধারা বা জাতীয়তাবাদের প্রসার ঘটত , মেটারনিখ তাঁর তীব্র দমননীতির মাধ্যমে তা প্রতিহত করতেন।   

৬. নেতৃত্বের অভাব :- 
বহু সমস্যায় জর্জরিত ইতালির ঐক্য সাধনের জন্য প্রয়োজন ছিল দক্ষ ও সুযোগ্য নেতৃত্বের। কিন্তু ম্যাৎসিনির আবির্ভাবের পূর্বকাল পর্যন্ত ইতালির ঐক্যসাধনের জন্য কোনো উল্লেখযোগ্য নেতৃত্বের আবির্ভাব ঘটেনি - যা ছিল ইতালির ঐক্য সাধনের পথে একটি প্রধান অন্তরায়।

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. আদর্শগত দ্বন্দ্ব :- 
আদর্শগত দ্বন্দ্বও ছিল ইতালির ঐক্য সাধনের পথে একটি বড় বাধা। একদিকে , ম্যাৎসিনি ছিলেন রাজতন্ত্র বিরোধী এবং প্রজাতন্ত্র ও উদারনৈতিক ভাবধারার সমর্থক। অন্যদিকে ক্যাভুর ছিলেন প্রজাতন্ত্রের ঘোর বিরোধী এবং রাজতন্ত্রের সমর্থক। আবার গ্যারিবল্ডি প্রজাতন্ত্রের সমর্থক হলেও সক্রিয় অভ্যুত্থানে বিশ্বাস করতেন। এছাড়া , বৈদেশিক সাহায্য গ্রহণের ব্যাপারেও ম্যাৎসিনি ও ক্যাভুরের মধ্যে মতাদর্শগত বিরোধ দেখা যায়। 

৮. জনসমর্থনের অভাব :- 
প্রজাতন্ত্রের আদর্শ ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারা কেবলমাত্র শিক্ষিত , মধ্যবিত্ত ও শহুরে বুর্জোয়াদের মধ্যেই প্রসারিত হয়েছিল। গ্রামীণ ইতালি , কৃষক ও অন্যান্য শ্রেণীর মানুষেরা জাতীয়তাবাদী আদর্শগুলি সম্পর্কে উদাসীন ছিলেন। তাই জনসমর্থনের অভাব ছিল ইতালির ঐক্য স্থাপনের পথে একটি অন্তরায়। 

৯. অস্ট্রিয়ার সামরিক ক্ষমতা :- 
অস্ট্রিয়া ছিল সামরিক ক্ষমতার দিক দিয়ে ইটালির তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী। তাই ইতালির পক্ষে কোনভাবেই অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে গিয়ে জাতীয়তাবাদের প্রসার ঘটানো সম্ভব হয়নি। এছাড়া মেটারনিখ তন্ত্রের সফলতার যুগে মেটারনিখ প্রায় সমগ্র ইউরোপীয় সামরিক শক্তিকেই অস্ট্রিয়ার স্বার্থে ব্যবহার করেছিলেন। 

১০. জুলাই বিপ্লবের ব্যর্থতা :- 
জুলাই বিপ্লবের সূচনা সমগ্র ইউরোপের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও উদারপন্থী ভাবধারা প্রসারের ক্ষেত্রে ব্যাপক আশার সঞ্চার করেছিল। কিন্তু জুলাই বিপ্লবের পর প্রজাতন্ত্রের অসারতা মানুষ উপলব্ধি করে। সমগ্র শাসনতন্ত্রকে  বুর্জোয়ারা নিজ স্বার্থে ব্যবহার করে ; ফলে সাধারণ মানুষের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়। তাই জুলাই বিপ্লবের ব্যর্থতা জাতীয়তাবাদীদের হতাশ করে। 

পরিশেষে বলা যায় , জুলাই বিপ্লবের ব্যর্থতা জাতীয়তাবাদীদের হতাশ করলেও ফ্রেব্রুয়ারি বিপ্লবের পরবর্তী সময়কাল ইতালির ঐক্য স্থাপনের পক্ষে সহায়ক হয় এবং ম্যাৎসিনি ও ক্যাভুরের সুযোগ্য নেতৃত্বে ইতালির ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়।     

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো  
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে বিসমার্কের ভূমিকা। 




জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে বিসমার্কের ভূমিকা। 

অটো ভন বিসমার্ক ছিলেন ঐক্যবদ্ধ জার্মানি প্রতিষ্ঠার মূল কান্ডারি। সুদীর্ঘ আট বছর প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী এবং দীর্ঘ প্রায় কুড়ি বছর জার্মানির প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়কালে তিনি জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করেন। ইতিপূর্বে উদারনৈতিক পথে জার্মানির ঐক্য সাধনের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল ; কিন্তু তা সফল হয়নি। তাই উদারনৈতিক আন্দোলনের পরিবর্তে বিসমার্ক কঠোর '' রক্ত ও লৌহ '' নীতি গ্রহণ করেন। তারপর ডেনমার্কের সঙ্গে যুদ্ধ , অস্ট্রিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ , ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধ - ইত্যাদি বিভিন্ন যুদ্ধের মাধ্যমে বিসমার্ক জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করেন। 

১. বিসমার্কের আদর্শগত অবস্থান :- 
আদর্শগত দিক দিয়ে বিসমার্ক কঠোর অবস্থানের পক্ষপাতী ছিলেন। তিনি ছিলেন রাজতন্ত্রের সমর্থক। তাই তিনি চেয়েছিলেন প্রাশিয়ার রাজশক্তির অধীনে জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করতে। এছাড়া তৎকালীন জার্মানির রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে গণতন্ত্রের পরিবর্তে স্বৈরতন্ত্রকেই তিনি শ্রেয় বলে মনে করেছিলেন। তাই জার্মানির ঐক্য দৃঢ় ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করতে তিনি রক্ত ও লৌহ নীতি গ্রহণ করেন। 

২. ডেনমার্কের সঙ্গে যুদ্ধ :- 
১৮৬৩  সালে স্লেজভিগ ও হলস্টিন প্রদেশে এক রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়। বিসমার্ক এই সমস্যাকে জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। কেননা , হলস্টিনের অধিবাসীরা ছিল অধিকাংশ জার্মান। আবার অন্যদিকে জার্মানরা মনে করতেন স্লেজভিগ ছিল হলস্টিনের অন্তর্গত। বিসমার্ক স্লেজভিগ ও হলস্টিন উভয় প্রদেশকেই জার্মানির অন্তর্ভুক্ত করার দাবী জানান। এরপর প্রাশিয়া ও অস্ট্রিয়ার যৌথবাহিনী ডেনমার্ককে পরাজিত করে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. গ্যাস্টিনের সন্ধি ১৮৬৫:- 
ডেনমার্ক যুদ্ধে পরাজিত হলেও স্লেজভিগ ও হলস্টিন প্রদেশের অধিকার নিয়ে প্রাশিয়া ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে বিরোধ তৈরী হয়। এরপর ১৮৬৫ সালে অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়ার মধ্যে গ্যাস্টিনের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়। এই সন্ধি দ্বারা স্লেজভিগ প্রাশিয়ার অধিকারে এবং হলস্টিন অস্ট্রিয়ার অন্তর্গত হয়। এছাড়া , অর্থের বিনিময়ে অস্ট্রিয়া হলস্টিনের অন্তর্গত লাউয়েনবার্গ অঞ্চল প্রাশিয়াকে ছেড়ে দেয়। কূটনৈতিক দিক দিয়ে গ্যাস্টিনের সন্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা , এই সন্ধির আবহেই বিসমার্ক অস্ট্রিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেন। 

৪. অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি :- 
গ্যাস্টিনের সন্ধিকে বিসমার্ক মনে করতেন - to paper over the cracks অর্থাৎ কাগজ দ্বারা ফাটল বন্ধ করা। গ্যাস্টিনের সন্ধির আবহে বিসমার্ক উপলব্ধি করেন জার্মানির ঐক্য সাধনে অস্ট্রিয়ার সঙ্গে ভবিষ্যতে যুদ্ধ অনিবার্য। তাই কূটনৈতিকভাবে প্রাশিয়াকে শক্তিশালী করে তোলার জন্য তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। যেমন - 
(ক ) ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নকে বেলজিয়াম বা রাইন অঞ্চল প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফ্রান্সের সমর্থন লাভ করেন। 
(খ ) ইতালিকে ভেনেসিয়া প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইতালিকে নিজ পক্ষে টেনে আনেন। 
(গ ) পোল্যান্ডের বিদ্রোহ দমন করতে রাশিয়াকে সাহায্য করে তিনি রাশিয়ার সমর্থন লাভ করেন। 

৫. স্যাডোয়ার যুদ্ধ :-
এরপর বিসমার্ক জার্মান রাষ্ট্র-সংঘ থেকে নিজেদের প্রতিনিধি প্রত্যাহার করে অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। প্রাশিয়া ফ্রান্স , ইতালি ও রাশিয়ার সমর্থনলাভ করে এবং ব্যাভেরিয়া , স্যাক্সনি ও অন্যান্য ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলি অস্ট্রিয়াকে সমর্থন জানায়। তবে প্রাশিয়ার সম্মিলিত সামরিক শক্তি ছিল অস্ট্রিয়ার তুলনায় অধিক শক্তিশালী। এরপর ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে স্যাডোয়ার যুদ্ধে মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে অস্ট্রিয়া পরাজিত হয়। স্যাডোয়ার যুদ্ধের মূল গুরুত্ব ছিল এই যে স্যাডোয়ার যুদ্ধের ফলে সমগ্র জার্মান সাম্রাজ্য প্রাশিয়ার অধীনস্থ হয়। 

৬. প্রাগের সন্ধি :- 
অবশেষে প্রাগের সন্ধি দ্বারা স্যাডোয়ার যুদ্ধের অবসান হয়। প্রাগের সন্ধির শর্তগুলি ছিল - 
(ক ) প্রাশিয়ার নেতৃত্বে উত্তর-জার্মান ইউনিয়ন গঠিত হবে। 
(খ ) মেইন নদীর দক্ষিণের রাষ্ট্রগুলি নিজেদের রাষ্ট্রসঙ্ঘ গঠন করবে। 
(গ ) জার্মান রাষ্ট্রসঙ্ঘ থেকে প্রাশিয়া নিজেকে সরিয়ে নেয়। 
(ঘ ) ইতালি ভেনেসিয়া অঞ্চল লাভ করে। 
(ঙ ) যুদ্ধের জন্য অস্ট্রিয়া প্রাশিয়াকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে। 
(চ ) উত্তর জার্মানির হ্যানোভার , ফ্রাঙ্কফুর্ট , ন্যাসো - ইত্যাদি অঞ্চলগুলি প্রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হবে। 
(ছ ) স্লেজভিগ ও হলস্টিন উভয় প্রদেশই প্রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হবে। 

৭. ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধ :- 
গ্যাস্টিনের সন্ধি ও প্রাগের সন্ধি দ্বারা উত্তর জার্মানি ঐক্যবদ্ধ হলেও দক্ষিণ জার্মানিতে ফ্রান্সের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত ছিল। অতঃপর বিসমার্ক ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধের গুরুত্ব উপলব্ধি করেন। প্রাশিয়াতে শাসন ক্ষমতা ছিল হোহেনজোলার্ন রাজবংশের হাতে। ফ্রান্স মনে করত হোহেনজোলার্ন রাজবংশের অধীনে প্রাশিয়া ও স্পেন - উভয়ের ক্ষমতা এলে তা হবে ফ্রান্সের রাজনৈতিক স্বার্থের পরিপন্থী। তাই ফ্রান্স কখনোই চায়নি যে স্পেনের সিংহাসনে হোহেনজোলার্ন রাজবংশের প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠিত হোক। এই উদ্দেশ্যে ফ্রান্স প্রাশিয়ার বিরোধিতা করতে থাকে এবং প্রাশিয়া ও ফ্রান্সের যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৮. বিসমার্কের ষড়যন্ত্র :- 
এই পরিস্থিতে বিসমার্ক প্রবল কূটনৈতিক দক্ষতার পরিচয় দেন। তিনি প্রাশিয়ার অর্থ ও নিজ প্রভাব খাটিয়ে স্পেনের রানী ইসাবেলাকে সিংহাসন ত্যাগ করতে বাধ্য করেন। স্পেনের পার্লামেন্টকে বিসমার্ক নিজ করায়ত্ত করেন এবং স্পেনের পার্লামেন্ট হোহেনজোলার্ন বংশের যুবরাজ লিওপোল্ডকে স্পেনের সিংহাসনে আরোহণের প্রস্তাব দেয়। এই ঘটনায় ফ্রান্সে প্রবল চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। 

৯. এমস টেলিগ্রাম :- 
এই পরিস্থিতিতে ফ্রান্স অস্ট্রিয়ার স্মরণাপন্ন হয় এবং অস্ট্রিয়ার সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নের আদেশে কাউন্ট বেনেদিতি নামক এক দূতকে প্রাশিয়ার সম্রাট প্রথম উইলিয়ামের নিকট প্রেরণ করেন। প্রথম উইলিয়াম এইসময় এমস শহরে বিশ্রামরত অবস্থায় ছিলেন। কাউন্ট বেনেদিতি প্রাশিয়ার সম্রাট প্রথম উইলিয়ামের নিকট মুচলেখা দাবী করেন যে স্পেনের সিংহাসনে প্রাশিয়ার উত্তরাধিকার প্রতিষ্টিত হবেনা। কিন্তু প্রথম উইলিয়াম প্রস্তাবে সম্মত হলেও মুচলেখা দিতে অস্বীকার করেন। কাউন্ট বেনেদিতি এই ঘটনা টেলিগ্রামের মাধ্যমে বিসমার্ককে জানান। 

১০. সেডানের যুদ্ধ :- 
সুচতুর বিসমার্ক সেই টেলিগ্রামের কিছু অংশ পরিবর্তন করে তা সংবাদপত্রে প্রকাশ করেন। টেলিগ্রামের অর্থ সম্পূর্ণ পাল্টে গিয়ে তার অর্থ হয় যে - প্রাশিয়ার সম্রাট প্রথম উইলিয়াম ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে অপমানিত করে তাড়িয়ে দিয়েছেন। এই ঘটনা ফ্রান্সে প্রবল প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে এবং ফ্রান্স প্রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। সামরিক শক্তির দিক দিয়ে প্রাশিয়া ও ফ্রান্সের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য ছিল। কেননা , ইতিপূর্বে বিসমার্ক কূটনীতির মাধ্যমে ইউরোপে ফ্রান্সকে মিত্রহীন করে তুলেছিলেন। এছাড়া , ব্যাভেরিয়া ও অন্যান্য দক্ষিণের রাজ্যগুলি ফ্রান্সকে ছেড়ে প্রাশিয়ার পক্ষে যোগদান করে। ফলে যুদ্ধে ফ্রান্সের পরাজয় ছিল অবশ্যম্ভাবী। 

১১. ফ্র্যাঙ্কফুর্টের সন্ধি ১৮৭১ :- 
অবশেষে ফ্র্যাঙ্কফুর্টের সন্ধি দ্বারা সেডানের যুদ্ধের অবসান ঘটে। ফ্র্যাঙ্কফুর্টের সন্ধিতে স্থির হয় - 
(ক ) ফ্রান্স জার্মানিকে মেটজ (Metz), আলসেস ও নোরেন ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। 
(খ ) যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ হিসাবে ৫০০ কোটি ফ্রাঁ প্রাশিয়াকে দিতে বাধ্য হয়। 
(গ ) ক্ষতিপূরণের অর্থ শোধ না হওয়া পর্যন্ত জার্মান সেনাবাহিনী ফ্রান্সের বিভিন্ন অংশে মোতায়েন থাকবে বলে স্থির হয়। 

১২. সম্পূর্ণ ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র হিসাবে জার্মানির আত্মপ্রকাশ :- 
বিসমার্কের অসাধারণ বিচক্ষণতা ও কূটনৈতিক দক্ষতায় মাত্র তিনটি যুদ্ধের মাধ্যমে সমগ্র জার্মানির ঐক্য সাধন করেন। ডেনমার্কের সঙ্গে যুদ্ধের পর গ্যাস্টিনের সন্ধি দ্বারা স্লেজভিগ অঞ্চল প্রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হয় ; অস্ট্রিয়ার সঙ্গে স্যাডোয়ার যুদ্ধের পর প্রাগের সন্ধি দ্বারা উত্তর জার্মানি ঐক্যবদ্ধ হয় ; ফ্রান্সের সঙ্গে সেডানের যুদ্ধের পর ফ্র্যাঙ্কফুর্টের সন্ধি দ্বারা সমগ্র দক্ষিণ জার্মানি ঐক্যবদ্ধ হয় এবং প্রাশিয়ার সম্রাট প্রথম উইলিয়ামকে জার্মানির চ্যান্সেলর হিসাবে ঘোষণা করা হয়।   

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো   
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

ইতালির ঐক্য আন্দোলনে কাউন্ট ক্যাভুরের ভূমিকা। 



ইতালির ঐক্য আন্দোলনে কাউন্ট ক্যাভুরের ভূমিকা। 


কাউন্ট ক্যাভুর ছিলেন ইতালির ঐক্য আন্দোলনের একজন বাস্তববাদী নেতৃত্ব। ইতিপূর্বে ম্যাৎসিনি যে প্রজাতন্ত্রিক আদর্শের বীজ বপন করেছিলেন , ক্যাভুর সম্পূর্ণ ভিন্নপথে গিয়ে নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের সমর্থক ছিলেন। ক্যাভুর বিশ্বাস করতেন বৈদেশিক সাহায্য ছাড়া ইতালি অস্ট্রিয়ার পরাধীনতা থেকে মুক্তি পাওয়া কোনোভাবেই ইতালির পক্ষে সম্ভব নয়। ম্যাৎসিনি ইতালিবাসীকে জাতীয়তাবাদে দীক্ষিত করেছিলেন ঠিকই ; কিন্তু ইতালির ঐক্য বাস্তবে সম্পন্ন করেছিলেন ক্যাভুর। তাই ঐতিহাসিক ফিলিপস বলেছেন - Cavour was the maker of modern Italy.   । 

১. ক্যাভুরের মতাদর্শ ও নীতি :- 
ক্যাভুর ম্যাৎসিনির প্রজাতান্ত্রিক আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন না। তিনি ছিলেন নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের সমর্থক। ক্যাভুর মনে করতেন ইতালিতে প্রজাতান্ত্রিক ভাবাদর্শের বিকাশ ঘটলে ইতালির রাজতান্ত্রিক ঐক্য ব্যাহত হবে এবং ইতালির ঐক্যের স্বপ্ন চরিতার্থ হবেনা। তাই ক্যাভুর পিডমন্ট রাজবংশের অধীনে ইতালিকে ঐক্যবদ্ধ করার কর্মসূচি গ্রহণ করেন। 
এছাড়া , অস্ট্রিয়ার পরাধীনতা থেকে মুক্তি পেতে তিনি বৈদেশিক শক্তির সাহায্য গ্রহণের পক্ষপাতী ছিলেন। কেননা , তৎকালীন সময়ের বাস্তবতা ছিল এই যে - ইতালি সামরিক শক্তির দিক দিয়ে কোনোভাবেই অস্ট্রিয়ার সমকক্ষ ছিল না। ক্যাভুরের এই মতাদর্শ স্পষ্টরূপে প্রমাণ করে যে তিনি ছিলেন Real Politik বা বাস্তববাদী রাজনীতিতে বিশ্বাসী।     

২. কর্মপন্থা :- 
ইতালির ঐক্য আন্দোলনের ক্ষেত্রে ক্যাভুরের ভূমিকার ইতিহাস আলোচনা করলে কর্মপন্থার দিক দিয়ে মূলতঃ পাঁচটি নীতির সমাবেশ চোখে পড়ে। এই পাঁচটি কর্মপন্থা হল - 
(i) পিডমন্টের রাজশক্তির অধীনে ইতালির ঐক্য সাধন করা। 
(ii) শাসনতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার। 
(iii) ইতালির সমস্যাকে আন্তর্জাতিক দরবারে উপস্থাপন করে আন্তর্জাতিক সহায়তা লাভ করা। 
(iv) অস্ট্রিয়ার পরাধীনতা থেকে মুক্তিলাভ করে নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা। 
(v) আইনের সাম্য প্রতিষ্ঠা করে একটি আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৩. ক্রিমিয়ার যুদ্ধ ও ফ্রান্স এবং ইংল্যান্ডের সমর্থন লাভ :- 
ক্রিমিয়ার যুদ্ধ চলাকালীন তিনি পিডমন্টের সেনাবাহিনীকে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের পক্ষে নিয়োজিত করেন। এর পেছনে ক্যাভুরের মূল উদ্দেশ্য ছিল ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের মত উদারনৈতিক রাষ্ট্রগুলির সহায়তালাভ।    ক্রিমিয়ার যুদ্ধের পর ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে প্যারিসের শান্তি সম্মেলনে ইতালির সমস্যাকে যথার্থভাবে তুলে ধরতে ক্যাভুর সক্ষম হন। ইতালির সমস্যার যথাযথ সমাধান না হলে তা ইউরোপীয় ঐক্যের পক্ষেও বিপজ্জনক হয়ে উঠবে - একথা তিনি ইউরোপীয় উদারনৈতিক শক্তিগুলিকে মেনে নিতে বাধ্য করেন। 

৪. প্লোমবিয়ার - এর চুক্তি ১৮৫৮ :- 
ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন প্রজাতন্ত্রের  প্রতি বিদ্বেষভাবাপন্ন ছিলেন কেননা তিনি নিজে ফ্রান্সে প্রজাতন্ত্র ধ্বংস করেছিলেন ; তাই তিনি ক্যাভুরের রাজতান্ত্রিক আদর্শের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন। এছাড়াও তৃতীয় বৈদেশিক নীতির প্রধান লক্ষ্য ছিল ইউরোপে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনগুলিকে সহায়তা করে ভিয়েনা চুক্তি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে ফেলা। অন্যদিকে ক্যাভুর ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নোপোলিয়নের সাহায্যলাভের প্রত্যাশী ছিলেন। ফলে ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে তৃতীয় নেপোলিয়ন ও ক্যাভুরের মধ্যে প্লোমবিয়ার - এর চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে স্থির হয় - 
(i) পিডমন্ট অস্ট্রিয়া কর্তৃক আক্রান্ত হলে তৃতীয় নেপোলিয়ন সামরিক সাহায্য প্রদান করবেন। 
(ii) লোম্বার্ডি , ভেনেসিয়া ও পোপের রাজ্যের কিছু অংশ পিডমন্টের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। 
(iii) স্যাভয় ও নিস নেপোলিয়নকে প্রদান করা হবে। 
(iv) নেপলস ও সিসিলিতে বুরবোঁ রাজতন্ত্র বহাল থাকবে। 
(v) টাস্কানি ও পোপের রাজ্যের বড় অংশ নিয়ে মধ্য ইতালি গঠন করা হবে। 

৫. অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ :- 
ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নের সঙ্গে প্লোমবিয়ার - এর চুক্তির পর ক্যাভুর অস্ট্রিয়া অধিকৃত লোম্বার্ডি ও ভেনেসিয়া অঞ্চলে অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। অস্ট্রিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে ক্যাভুরকে চরমপত্র পাঠালে ক্যাভুর তা অগ্রাহ্য করেন। এরপর অস্ট্রিয়া পিডমন্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে প্লোমবিয়ার - এর চুক্তি অনুসারে তৃতীয় নেপোলিয়ন ফরাসি বাহিনীকে পিডমন্টের পক্ষে নিয়োজিত করেন। ম্যাজেন্টা ও সলফেরিনোর যুদ্ধে অস্ট্রিয়া পরাজিত হয় এবং ফরাসি বাহিনী লোম্বার্ডি দখল করে। ফলে সমগ্র ইতালি জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। 

৬. ভিল্লাফ্রাঙ্কার সন্ধি :- 
ম্যাজেন্টা ও সলফেরিনোর যুদ্ধে অস্ট্রিয়া পরাজিত হলেও ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন হঠাৎ অস্ট্রিয়ার সঙ্গে ভিল্লাফ্রাঙ্কার সন্ধি সাক্ষর করেন। এই সন্ধির দ্বারা ফ্রান্স অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধের কথা ঘোষণা করে। ইতালিকে অস্ট্রিয়ার হাত থেকে মুক্ত করার আশা স্তিমিত হয়ে পড়ে। ভিল্লাফ্রাঙ্কার সন্ধির শর্তগুলি ছিল - 
(i) ফ্রান্স অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করবে না। 
(ii) লোম্বার্ডি পিডমন্টের সঙ্গে যুক্ত হবে। 
(iii) ভেনেসিয়া অস্ট্রিয়ার অধীনেই থাকবে। 
(iv) ইতালিতে স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে। 
ভিল্লাফ্রাঙ্কার সন্ধি ছিল ইতালীয় জাতীয়তাবাদের প্রতি তৃতীয় নেপোলিয়নের বিশ্বাস ঘাতকতা। কিন্তু পিডমন্টের সম্রাট বাস্তবতা বিচার করে ভিল্লাফ্রাঙ্কার সন্ধির শর্তগুলি মেনে নেন। 

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো

৭. মধ্য ইতালির সংযুক্তি :- 
ইতিমধ্যে মধ্য ইতালির অন্তর্গত টাস্কানি , মেডোনা - ইত্যাদি অঞ্চলগুলিতে অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে গণ আন্দোলন শুরু হয়। তবে এই আন্দোলন ছিল ম্যাৎসিনির প্রজাতান্ত্রিক ভাবাদর্শের দ্বারা প্রভাবিত। এই সকল অঞ্চলের মানুষ পিডমন্টের সঙ্গে সংযুক্তির দাবী জানায়। ক্যাভুরের নিয়মতান্ত্রিক আদর্শের পরিপন্থী হলেও ক্যাভুর এই সুযোগকে কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন। তিনি স্যাভয় ও নিস ফ্রান্সকে ছেড়ে দিয়ে মধ্য ইতালির অবশিষ্ট রাজ্যগুলিকে পিডমন্টের সঙ্গে যুক্তকরণের ক্ষেত্রে তৃতীয় নোপোলিয়নের সমর্থন আদায় করেন। এরপর গণভোট দ্বারা মধ্য ইতালির রাজ্যগুলি পিডমন্টের সঙ্গে যুক্ত হয়। 

৮. গ্যারিবল্ডি ও প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা :- 
দক্ষিণ ইতালিতে বুরবোঁ অপশাসনের বিরুদ্ধে কৃষক আন্দোলন শুরু হলে ইটালির জাতীয়তাবাদী নেতা গ্যারিবল্ডি ১০৯০ জনের এক গেরিলা বাহিনীর সাহায্যে সিসিলি থেকে বুরবোঁ সেনাদের বিতাড়িত করেন। কৃষকেরা তাঁকে মুক্তিদাতা বলে মনে করে। এরপর নেপলসে একই ঘটনার পুনরাবর্তন ঘটে এবং নেপলস থেকেও বুরবোঁ সেনাদল বিতাড়িত হয়। এরপর ইতালিতে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গ্যারিবল্ডি রোম অভিযানের পরিকল্পনা করেন। 
গ্যারিবল্ডির এই ঘোষণার ফলে ক্যাভুর সমস্যায় পড়েন। কেননা , গ্যারিবল্ডি ছিলেন ম্যাৎসিনির প্রজাতান্ত্রিক আদর্শে বিশ্বাসী। গ্যারিবল্ডির  অভিযানের ফলে রোমে যদি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হত - তাহলে তা ঐক্যবদ্ধ ইতালি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ইতিবাচক হত না। 

৯. দক্ষিণ ইটালির সংযুক্তি :- 
উক্ত পরিস্থিতিতে প্রবল বিচক্ষণ ক্যাভুর তৃতীয় নেপোলিয়নকে বোঝাতে সমর্থ হন যে ইউরোপীয় স্থিতাবস্থা ও ঐক্য বজায় রাখতে রোম , নেপলস ও সিসিলিকে অবিলম্বে পিডমন্টের সঙ্গে যুক্ত করা উচিত। তৃতীয় নেপোলিয়নের সমর্থন পেয়ে পিডমন্টের রাজা ভিক্টর ইম্যানুয়েল রোম বাদ দিয়ে পোপের অধিকৃত রাজ্য দখল করে নেপলসে উপস্থিত হন। 
এই পরিস্থিতিতে গ্যারিবল্ডি যুদ্ধের পক্ষপাতী ছিলেন না এবং সিসিলি ও নেপলস - এর অধিকার তিনি ছেড়ে দেন। ফলে সিসিলি ও নেপলস পিডমন্টের সঙ্গে সংযুক্ত হয়। 

১০. অবশিষ্ট ইতালির সংযুক্তি :- 
ইতালির পূর্ণাঙ্গ ঐক্যবদ্ধরূপ ক্যাভুর নিজের জীবদ্দশায় প্রত্যক্ষ করে যেতে পারেনি। ১৮৬১ সালে পিডমন্টের সম্রাট ভিক্টর ইম্যানুয়েল ইটালির রাজা হিসাবে ভূষিত হন। ১৮৬৩ সালে ভেনেসিয়া ইতালির সঙ্গে যুক্ত হয়। ১৮৭০ সালে ফরাসি সেনাদলকে রোম থেকে বিতাড়িত করা হয়। এই পরিস্থিতিতে ভিক্টর ইম্যানুয়েল রোম অধিকার করেন এবং রোমকে ইতালির রাজধানী হিসাবে ঘোষণা করেন। এইভাবে ইতালির ঐক্য সম্পূর্ণ হয়। 

পরিশেষে বলা যায় , ম্যাৎসিনি ইতালিবাসীর ভাবজগতে জাতীয়তাবাদের যে বীজ বপন করেছিলেন তাকে পূর্ণাঙ্গ বৃক্ষরূপে গড়ে তোলেন কাউন্ট ক্যাভুর। তাই ক্যাভুরকে প্রকৃত অর্থে আধুনিক ইতালির জনক বলা হয়। ইতালির ঐক্যবদ্ধকরণে ক্যাভুরের ভূমিকা সম্পর্কে ঐতিহাসিক লিপসন বলেছেন - He lived long enough to create the Italy and to earn the undying gratitude of the Italian people. 
তবে গর্ডন ক্রেইগ - প্রমুখ ঐতিহাসিকগণ ক্যাভুরের কর্মপন্থাকে প্রবলভাবে সমালোচনা করেছেন। কেননা , ক্যাভুর ম্যাৎসিনির গণতান্ত্রিক আদর্শগুলি বিসর্জন দিয়েছিলেন। এছাড়া , ডেভিড  থমসন , গ্রেনভিল - প্রমুখ ঐতিহাসিকগণ ক্যাভুরকে নব্য ইতালির প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে কৃতিত্ব দিতে চাননি। তাঁরা ক্যাভুরকে কেবলমাত্র বাস্তববাদী রাজনীতিবিদ হিসাবে কৃতিত্ব দেওয়ার পক্ষপাতী। 
তবে , কিছু সমালোচনা স্বত্তেও একথা অনস্বীকার্য যে আধুনিক ইতালির গঠনে ক্যাভুরের ভূমিকা তাৎপর্যপূর্ণ।  

এই ওয়েবসাইটের সমস্ত প্রশ্নোত্তরের তালিকা / সূচীপত্রের জন্য এখানে CLICK করো  
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
Older Posts

Followers

Pages

  • Home
  • Privacy Policy
  • Disclaimer
  • CONTACT ME
  • About Me

Contact Form

Name

Email *

Message *

About me

Hallow viewers , myself Nandan Dutta [Subhankar Dutta], reside at Maheshpur,Malda.
I made this website for the students of B.A. courses under Gour Banga University. Here you can get suggestions of different subjects like HISTORY , SOCIOLOGY , POLITICAL SCIENCE & EDUCATION.
In future I will add MCQ sections of those subjects.


Categories

  • 1ST SEMESTER SUGGESTION (1)
  • 2 ND YEAR SUGGESTION (1)
  • 2ND SEMESTER (1)
  • 3RD SEMESTER (8)
  • BENGALI NOTES (21)
  • CU suggestion. (1)
  • EDUCATION NOTES (141)
  • ENGLISH COMPULSORY (16)
  • GBU Suggestion. (7)
  • HISTORY EUROPE & WORLD (46)
  • HISTORY NOTES (68)
  • POL SC NOTES (64)
  • SOCIOLOGY NOTES (72)
  • WBCS 2020 (1)

recent posts

Blog Archive

  • May 2025 (3)
  • April 2025 (20)
  • March 2025 (12)
  • February 2025 (8)
  • November 2024 (5)
  • October 2024 (2)
  • September 2024 (2)
  • June 2024 (2)
  • March 2024 (6)
  • February 2024 (4)
  • October 2023 (5)
  • May 2023 (5)
  • April 2023 (1)
  • December 2022 (1)
  • November 2022 (13)
  • September 2022 (2)
  • August 2022 (7)
  • July 2022 (29)
  • June 2022 (10)
  • May 2022 (25)
  • April 2022 (24)
  • March 2022 (16)
  • February 2022 (19)
  • January 2022 (21)
  • December 2021 (46)
  • November 2021 (5)
  • October 2021 (6)
  • September 2021 (5)
  • August 2021 (41)
  • July 2021 (43)
  • June 2021 (31)
  • May 2021 (7)
  • April 2021 (1)
  • July 2020 (1)
  • June 2020 (3)
  • April 2020 (1)
  • November 2019 (1)
  • July 2019 (1)
  • June 2019 (1)
  • May 2019 (1)
  • April 2019 (2)
  • January 2019 (1)

Pages

  • Home
  • 2nd SEM ভাষাতত্ত্ব :
  • বাংলা উপভাষা
  • দ্বিতীয় পুলকেশীর কৃতিত্ব
  • ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত সাম্যের অধিকারগুলি আলোচনা করো।
  • হর্ষবর্ধনের কৃতিত্ব আলোচনা করো। তাকে কি উত্তর পথনাথ বলা যায় ?
  • ভারতীয় সংবিধানের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য :-
  • উদারনীতিবাদ : সংক্ষিপ্ত ধারণা :-
  • চোল শাসনব্যবস্থা :-
  • গুপ্তযুগ সুবর্ণযুগ সম্পর্কিত আলোচনা।
  • ৬. উদাহরণসহ মধ্যযুগের বাংলাভাষার কয়েকটি বৈশিষ্ট আল...
  • 1. Marxism
  • আধুনিক বাংলা ভাষা ও তার বৈশিষ্ট।
  • Discuss the career and achievements of Samudragupta .
  • ভাষাতত্ত্ব

Created with by ThemeXpose | Distributed by Blogger Templates