Secondary Group : Concept , Features & Importance :-

by - June 03, 2021

1. Concept of Secondary Group .

2. Features of Secondary Group .

3. Importance of Secondary Group. 




গৌণ গোষ্ঠীর ধারণা / সংজ্ঞা :- 


আধুনিক সমাজের অন্যতম উপাদান হল গৌণ গোষ্ঠীসমূহ। প্রকৃতিগত বিচারে প্রাথমিক গোষ্ঠীর বিপরীত বৈশিষ্ট্যগুলি বহন করে গৌণ গোষ্ঠি। এজাতীয় গোষ্ঠীগুলি মূলত বিশেষ বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য তৈরি হয়ে থাকে। মূলত আধুনিক জীবনে নানাবিধ ও বিচিত্র স্বার্থ পূরণের জন্য তৈরি হয়। অনেক সময় এগুলিকে বিশেষ স্বার্থগোষ্ঠী বা , Special Interest Group বলা হয়। এই গোষ্ঠীর সদস্যদের পারস্পরিক সম্পর্ক সাধারণত আন্তরিকতা বর্জিত বা ঘনিষ্ঠতা মুক্ত হয়। সদস্যদের মধ্যে মুখোমুখি সম্পর্ক থাকে না বললেই চলে। শুধুমাত্র বিশেষ স্বার্থ পূরণের উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে ব্যক্তিবর্গের মধ্যে পরোক্ষ সম্পর্ক তৈরি হয় , কিন্তু তা প্রাথমিক গোষ্ঠীর মতো গভীর হয় না। তাছাড়া এই গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে মাত্র কয়েক জনের সাথে ব্যক্তিগত চেনা পরিচয় থাকে - যা প্রাথমিক গোষ্ঠীর মতো ব্যাপক নয়। 

জনসংখ্যাগত কাঠামোর মানদন্ডে এই সকল গৌণ গোষ্ঠীর সদস্যবৃন্দ একই ধরনের মানসিক বন্ধনে আবদ্ধ নয় এবং এদের মধ্যে মূল থেকে বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি ক্রিয়াশীল। এই গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে যে সহযোগিতা দেখা যায় তা পরোক্ষ প্রকৃতির।  শিল্প সংস্থার গোষ্ঠী , ব্যাংক , রাজনৈতিক দল প্রভৃতি অসংখ্য গৌণ গোষ্ঠি সমাজে বর্তমান। 

আমরা গৌণ গোষ্ঠী সম্পর্কে বলতে পারি , বিশেষ উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে তৈরি , সদস্যদের মধ্যে হৃদ্যতাবিহীন যে গোষ্ঠী , তাই হল গৌণ গোষ্ঠী।  একে আধুনিক সমাজের ফসল বলা হয়। বৈশিষ্ট্যগুলির  দিক থেকে দেখলে দেখা যায় , প্রাথমিক গোষ্ঠীগুলির বিপরীত বৈশিষ্ট্যগুলি বহন করে গৌণগোষ্ঠীগুলি। 


গৌণগোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য সমূহ :- 


১. কৃত্রিমতা :-  গৌণ গোষ্ঠী একটি কৃত্রিম সংগঠন। এটি স্বতঃস্ফূর্তভাবে বা স্বেচ্ছাপ্রণোদিতভাবে তৈরি হয় না। মানুষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একে তৈরি করে। 

২. বৃহদাকৃতি :-  গৌণগোষ্ঠীগুলি সাধারণত বৃহদাকৃতির হয়। এর সদস্য সংখ্যা সীমিত নয়। একটি জাতি , রোটারি ক্লাব , বিশ্ব হিন্দু পরিষদ প্রভৃতি গৌণ গোষ্ঠীর বৃহদাকৃতির উদাহরণ। 

৩. গৌণ সম্পর্কের প্রাধান্য :- গৌণ সম্পর্ক বলতে সদস্যদের পরোক্ষ , বাহ্যিক , চুক্তিনির্ভর , ব্যাপ্তিহীন সম্পর্ক কে বোঝায়। এজাতীয় সম্পর্কে ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতা বা একাত্মতা থাকেনা। শুধুমাত্র প্রয়োজনকে  সামনে রেখে এজাতীয় সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই জাতীয় গৌণ সম্পর্কের উদাহরণ হল - কর্মচারী - ক্রেতা , বক্তা - শ্রোতা প্রভৃতির মধ্যে যে সম্পর্ক। 

ম্যাকাইভার ও পেজ  গৌণগোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে সম্পর্কের প্রকৃতি সম্পর্কে বলেন যে , গৌণ গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে যে বিভাজন দেখা যায় - তা হল শ্রেণীগত বিভাজন। 

৪. বিশেষ উদ্দেশ্য :- গৌণ গোষ্ঠী সাধারণত বিশেষ কিছু উদ্দেশ্য কে কেন্দ্র করে গঠিত হয়ে থাকে। এখানে মূখ্য বিষয় হলো উদ্দেশ্য ; ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয়টি গৌণ। উদ্দেশ্যের বিশিষ্টতা বা প্রাধান্যের পরিপ্রেক্ষিতে গৌণ গোষ্ঠীর সদস্যদের ভূমিকা হল সীমিত। স্বার্থ বা উদ্দেশ্য ছাড়া এজাতীয় গোষ্ঠী গড়ে ওঠে না বললেই চলে। তাই একে বিশেষ স্বার্থগোষ্ঠী বা , Special Interest Group বলা হয়ে থাকে। 


৫. সদস্যপদ :- বেশিরভাগ প্রাথমিক গোষ্ঠীর সদস্যপদের বিষয়টি যেমন ব্যক্তির ইচ্ছাধীন নয় , গৌণ গোষ্ঠীর বেলায় এরূপ হয়না। গৌণ গোষ্ঠীর সদস্যপদ গ্রহণ বা বর্জন বিষয়টি মোটামুটি ভাবে ব্যক্তির ইচ্ছা নির্ভর। সে তার প্রয়োজনমতো ও ইচ্ছামতো যেকোনো গৌণগোষ্ঠীতে যোগ দিতে পারে ; আবার প্রয়োজন মিটে গেলে বা ভালো না লাগলে তার সদস্যপদ ত্যাগ করতে পারে। অবশ্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই সদস্যপদ বর্জনের বিষয়টি ব্যক্তির ইচ্ছা নির্ভর নাও হতে পারে। যাইহোক , গৌণ গোষ্ঠীর সদস্যপদের বিষয়টি বাধ্যতামূলক নয় , অনেকখানি ব্যক্তির নিজস্ব ইচ্ছা-অনিচ্ছা নির্ভর। ব্যতিক্রম হিসেবে বলা যায় , রাষ্ট্র। এই গৌণ গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে এই কথাটি ঠিক খাটেনা। 

৬. সাংগঠনিক কাঠামো :- প্রত্যেক গৌণ গোষ্ঠীরই একটি করে বিধিবদ্ধ সাংগঠনিক কাঠামো থাকে , যার দ্বারা এর কাজকর্ম নিয়ন্ত্রিত হয়। এর সদস্য সংখ্যা বেশি ও আকার বৃহৎ হওয়ার কারণে এর একটি সাংগঠনিক দিক অপরিহার্য এবং তা বিধিবদ্ধ হওয়া বাঞ্ছনীয়। 

৭. স্থায়িত্ব :- গৌণ গোষ্ঠীগুলি অপেক্ষাকৃত অস্থায়ী প্রকৃতির। সাধারণত এর উদ্দেশ্যগুলি পূরণ হয়ে গেলেই  এটি বিলুপ্ত হয়। উদ্দেশ্যের প্রকৃতির ওপর এর স্থায়িত্ব নির্ভর করে। যদি দেখা যায় কোনো গৌণ গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য নানাবিধ এবং তা পূরণ বেশ সময়সাপেক্ষ , সেক্ষেত্রে এগুলি একটু বেশি সময় স্থায়িত্ব লাভ করে। 

৮. দৈহিক নৈকট্যের প্রয়োজনহীনতা :- গৌণ গোষ্ঠীর সদস্যদের ক্ষেত্রে দৈহিক নৈকট্যের প্রয়োজন নেই।  এটি বাদ দিয়েও গোষ্ঠীর অস্তিত্ব টিকে থাকা সম্ভব। অর্থাৎ এক্ষেত্রে সামাজিক সম্পর্কের বিষয়ে সংস্পর্শে ভূমিকা অতি নগন্য। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় , আন্তর্জাতিক রেডক্রস সোসাইটি নামক গৌণ গোষ্ঠীর কথা। এর সদস্যরা সারা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকে। 

৯. নিয়ন্ত্রণের প্রকৃতি :- গৌণগোষ্ঠী প্রধানত সদস্যদের আচার আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে বিধিবদ্ধ কিছু পদ্ধতির মাধ্যমে। সাধারণত সুনির্দিষ্ট সুবিন্যাস্ত উল্লিখিত শর্ত ও চুক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় গৌণ গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত পারস্পরিক সম্পর্ক। এই গৌণ গোষ্ঠীসমূহের ক্রিয়া-কলাপ যান্ত্রিক বা কৃত্রিম প্রকৃতির। এখানে আইন , পুলিশ , কোর্ট - প্রভৃতির মাধ্যমে সে তার নিয়ন্ত্রণ বহাল রাখে।  নৈতিক নিয়ন্ত্রণ অবিধিবদ্ধ  মাধ্যমগুলি এক্ষেত্রে গৌণ , কারণ এগুলি সদস্যদের আচার-আচরণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে খুব বেশি কার্যকর হয় না। 

১০. পরোক্ষ যোগাযোগ :- গৌণ গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ প্রায় থাকে না বা এর খুব বেশি প্রয়োজনীয়তাও নেই। যেহেতু এই জাতীয় গোষ্ঠীর উৎপত্তি মুখোমুখি প্রত্যক্ষ পরিচয় অর্থাৎ প্রাথমিক সম্পর্কের ভিত্তিতে হয় না , তাই এই সদস্যদের পারস্পরিক যোগাযোগও আন্তরিক বা অন্তরঙ্গ হয়না। প্রয়োজন ছাড়া ব্যক্তিগত পরিচয়ের জন্য বা সান্নিধ্যলাভের জন্য সদস্যরা গৌণ গোষ্ঠিতে সমবেত হন না। তাদের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে থাকে - ডাক , টেলিফোন , টিভি , সংবাদপত্র প্রভৃতির মত গণমাধ্যমগুলির। 

১১. ব্যক্তিত্বের উপর খুব বেশি ক্রিয়াশীল নয় :- প্রাথমিক গোষ্ঠীকে ব্যক্তিত্বের মুখ্য রূপকার বলা হয় , গৌণ গোষ্ঠীকে তা বলা যায়না। বলা হয়ে থাকে , ব্যক্তিত্বের ওপর গৌণ গোষ্ঠীর বিশেষ কোনো প্রভাব নেই। 

১২. পরোক্ষ সহযোগিতা :-  এই জাতীয় গোষ্ঠীতে সদস্যগণের সহযোগিতার প্রকৃতি পরোক্ষ। এই সকল গোষ্ঠীতে মানুষ স্বাধীন ও স্বতন্ত্রভাবে ভিন্ন ভিন্ন কাজ কর্ম সম্পাদনে আত্মনিয়োগ করে। পারস্পরিক পরোক্ষ নির্ভরশীলতার মাধ্যমে কাজকর্ম সম্পাদিত হয়। এই পরোক্ষ সহযোগিতা শ্রমবিভাজন রূপটি প্রকট করে তোলে। 

১৩. ব্যক্তির মর্যাদা ভূমিকা নির্ভর :- এই সকল গোষ্ঠীর সদস্যদের মর্যাদা তাদের জন্মগত বৈশিষ্ট্য বা ব্যক্তিগত গুণাবলীর ওপর নির্ভরশীল নয়। তাদের সামাজিক মর্যাদা নির্ভর করে তারা কোথায় কীরূপ  ভূমিকা পালন করে থাকেন , তার প্রকৃতির ওপর। অর্থাৎ এই গোষ্ঠীতে ব্যক্তির মর্যাদা ভূমিকা নির্ভর। 


গৌণ গোষ্ঠীর গুরুত্ব :- 


১. গৌণ গোষ্ঠীগুলি আকারে বৃহৎ হয় ও অনেক সময় এর সদস্যগণ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকে। কোনো ব্যক্তি উক্ত গৌণ গোষ্ঠীর সদস্য হয়ে তাঁর পরিচিতি বৃত্তটি প্রসারিত করতে পারেন।  এছাড়া ব্যক্তি তার দৃষ্টিভঙ্গি , মনোভাব প্রভৃতির প্রসার ঘটিয়ে কুপমন্ডুকতা দূর করে থাকেন। তার জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি পায়। তার চিন্তা-ভাবনা , উদ্যম - উদ্দীপনা প্রভৃতি নতুন মাত্রা লাভ করতে পারে। ব্যক্তি তার ক্ষুদ্র ক্ষেত্র ছাড়িয়ে বিশাল এক মানব ক্ষেত্রে গিয়ে উপস্থিত হন। সংকীর্ণ মনোভাব গুলি এই বিশাল ক্ষেত্রে এসে পরিমার্জিত হয়। তার মনে উদারতা বৃদ্ধি পায়। বিশাল এই ক্ষেত্রে এসে তার মানসিকতা নানাজনের সংস্পর্শে বিশেষভাবে প্রভাবিত হয়। তার জড়তার জায়গাগুলি মুক্ত হয়ে যায়। অতএব বলা যায় , গৌণ গোষ্ঠী ব্যক্তি মানুষকে তার সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত করে। 

২. নির্দিষ্ট কিছু দশক বা শতক পূর্বে ব্যক্তির রুজি-রোজগার ও আয়ের ক্ষেত্রটি ছিল সীমাবদ্ধ। এইসময় প্রধান জীবিকা ছিল কৃষিকার্য।  কিন্তু শিল্প-বাণিজ্য , নগর  প্রভৃতির ব্যাপক প্রসারের সাথে সাথে গৌণ গোষ্ঠীগুলি মানুষের সামনে নানা প্রকার সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রটিকে প্রসারিত করেছে। মানুষ এইগুলির মাধ্যমে তার চিন্তা-ভাবনা ও কাজকর্মের প্রতিভাকে নানা জায়গায় ঠিকমত কাজে লাগানোর সুযোগ পায়।  সে তার পছন্দ ও যোগ্যতামত কাজ করে যেতে পারে। সমাজপ্রদত্ত বৃত্তি বিভাগের নানাবিধ সুযোগ-সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে মানুষ বহুমুখী ও কর্মপ্রবণ হয়ে উঠেছে। 


৩. গৌণ গোষ্ঠীগুলি তার সদস্যদের আচার-আচরণ মূলত বিধিবদ্ধ মাধ্যমগুলির মধ্যে দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে। বিধিবদ্ধ মাধ্যমগুলি এব্যাপারে অপেক্ষাকৃত কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে থাকে ও বহু ক্ষেত্রে সে অনুযায়ী কাজ না করলে শাস্তি পেতে হয়। তাই ব্যক্তি এগুলিকে মেনে চলে বা মেনে চলতে বাধ্য থাকে। এভাবে সামাজিক নিয়ন্ত্রণ ও ব্যক্তিকে নিয়মানুবর্তী করে তোলার ব্যাপারে গৌণ গোষ্ঠিগুলি বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। 

৪. বিভিন্ন গৌণ গোষ্ঠী বিভিন্ন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে তৈরি হয়। ব্যক্তি একই সাথে বিভিন্ন গৌণ গোষ্ঠীর সদস্য হয়। বিভিন্ন গৌণ গোষ্ঠীতে সে ভিন্ন ভিন্ন জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারে। এইভাবে ব্যক্তির সংস্কৃতির দিকটি বিশেষ ভাবে বিকশিত হয়ে থাকে। 

৫. আধুনিক সমাজে গৌণ গোষ্ঠীগুলি তাদের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য নানাবিধ ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।  অনেক ক্ষেত্রে তারা আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার জ্ঞানকে কাজে লাগায়। শ্রমবিভাজনের মত বিশেষীকৃত  উপাদান ব্যবস্থাও  এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যাইহোক , গৌণগোষ্ঠীগুলি এগুলির দ্বারা ব্যক্তিমানুষের কর্মপদ্ধতি , নিপুণতা ও মানসিক উৎকর্ষতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। 

৬. আধুনিক সমাজের অস্থির জীবনযাত্রায় ব্যক্তি অনেক সময় তার দৈহিক ও মানসিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে থাকে। এক্ষেত্রে ব্যক্তি একই সাথে বিভিন্ন গোষ্ঠীর সদস্য হওয়ার কারণে একদিকে যেমন তার নানাবিধ প্রয়োজন মিটিয়ে ফেলতে পারে , তেমনই বিভিন্ন গৌণ গোষ্ঠীর সাথে যুক্ত হয়ে সে অধিকতর নিরাপত্তা ভোগ করে থাকে। 

৭. গৌণ গোষ্ঠিগুলিতে একটি সাংগঠনিক দিক থাকে। এই সাংগঠনিক দিকটি গোষ্ঠীর কার্যপদ্ধতি , নিয়ম-কানুন ঠিকমত চলছে কি'না তা লক্ষ্য রাখে। এই সাংগঠনিক দিকটির কার্যকারিতার জন্যই  গোষ্ঠীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে না।  গৌণগোষ্ঠীগুলি এভাবে তার সদস্যদের মধ্যে সংহতির বিষয়টি রক্ষা করে। 

৮. গৌণ গোষ্ঠী একদিকে যেমন ব্যক্তির নানাপ্রকার উদ্দেশ্য পূরণ করে থাকে , তেমনি গোষ্ঠীর সদস্য হিসাবে ব্যক্তির সামনে নানারূপ দায়িত্ব ও কর্তব্য স্থির করে দেয়। ব্যক্তি এই সকল দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করে থাকে। এইভাবে গৌণ গোষ্ঠিতে প্রবেশ করে একজন ব্যক্তি দায়িত্বশীল ও কর্তব্য পরায়ন হয়ে ওঠে। 

৯. সামাজিকীকরণ ও ব্যক্তিত্বের গঠনে প্রাথমিক গোষ্ঠীর মত অনেকখানি কার্যকরী ভূমিকা গৌণ গোষ্ঠীর না থাকলেও , অনেকটাই আছে। এমন কিছু কিছু অভিজ্ঞতা ব্যক্তি গৌণগোষ্ঠী থেকে লাভ করে , যা তার ব্যক্তিত্বের অনেকখানি নির্ণায়ক হয়ে ওঠে। আবার সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে , কোনো ব্যক্তি খুব ছোটবেলায় প্রাথমিক গোষ্ঠীগুলির খুব বেশি সামাজিক না হলেও পরবর্তীকালে গৌণ গোষ্ঠীর প্রভাবে অনেকটাই সামাজিক হয়ে ওঠে। 

পরিশেষে বলা যায় , আজকের আধুনিক যুগে মানব সমাজের সভ্যতা-সংস্কৃতির বাস্তবায়নে গৌণ গোষ্ঠীর ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এই জাতীয় গোষ্ঠী ব্যক্তির সমাজকেন্দ্রিক নানাবিধ চাহিদা চরিতার্থের ক্ষেত্রে উচ্চ চাহিদাসম্পন্ন সমাজের সঙ্গে অত্যন্ত মানানসই। তাই এর গ্রহণযোগ্যতা ক্রমবর্ধমান। 

You May Also Like

0 comments