Educational Sociology B.A. Notes

by - April 23, 2021

Educational Sociology



 

১.  শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্বের ধারণা : - 


শিক্ষা বিজ্ঞান হলো সমাজ পরিবেশের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে একজন শিক্ষার্থীর সুস্থ ও সঠিকভাবে মানিয়ে চলার প্রক্রিয়া। এই সামাজিক পরিবেশেরই একটি প্রধান উপাদান হলো মানুষ। সমাজের মধ্যে প্রত্যেকটি মানুষ পারস্পরিক বোঝাপড়ার মধ্যে দিয়ে উপলব্ধি করতে শেখে এবং সেই উপলব্ধির মধ্যে দিয়ে তার বোধের বিকাশ হয়।  সমাজ এবং ব্যক্তির পারস্পরিক বোঝাপড়ার মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় একটি নির্দিষ্ট বিষয়সূচি এবং বিষয়জ্ঞান ,  যাকে বলা হয় শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্ব ( Educational Sociology ) ।

শিক্ষাবিজ্ঞান এবং সমাজতত্ত্ব দুটি পৃথক বিষয়। তবে আধুনিক সমাজতাত্ত্বিকদের সকলেই যে শিক্ষার সমাজতত্ত্ব আর শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্বের পার্থক্যকে গুরুত্ব দিয়েছেন তা নয়। যারা দুটি বিষয়কে পৃথক বলে মনে করেন , তারা পার্থক্য নির্দেশ করেছেন শুধুমাত্র গুরুত্বের ভিত্তিতে। 

শিক্ষা ও সমাজতত্ত্ব মিলিতভাবে যে বিদ্যা চর্চার সূচনা করেছিল উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে তার তিনটি ভিন্ন অভিমুখ দেখা যায় তিনটি ভিন্ন নামে ,  - 
(i) শিক্ষার সমাজতাত্ত্বিক ভিত্তি ( Sociological Foundation of Education ), 
(ii) শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্ব ( Educational Sociology ) এবং
(iii) শিক্ষা সমাজতত্ত্ব ( Sociology of Education ) । 

শিক্ষাশ্রয়ী সমাজ তত্ত্বের সংজ্ঞা হিসাবে বিভিন্ন সমাজতাত্ত্বিকদের বক্তব্য , শিক্ষার প্রশাসন ও প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে সমাজতত্ত্বের সাধারণ নীতি ও সিদ্ধান্তসমূহের প্রয়োগ। এই অভিমুখ অনুযায়ী শিক্ষাকে একটি স্বতন্ত্র সামাজিক একক হিসাবে গণ্য করে সমাজতাত্ত্বিক নীতির প্রয়োগ করা হয়। 

অধ্যাপক টেলর ( W Taylor ) মনে করেন এই দুই অভিমুখের মধ্যে প্রথমটি তে শিক্ষা প্রক্রিয়ার বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রাধান্য দিয়ে তার সমাজতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। আর দ্বিতীয়টির ক্ষেত্রে সমাজতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া গুলি কিভাবে শিক্ষার ক্ষেত্রে কাজ করে তার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। অর্থাৎ প্রথমটির ক্ষেত্রে শিক্ষা , সমাজতত্ত্ব তার পটভূমি আর শিক্ষার   সমাজতত্ত্বে সমাজতত্বই প্রধান চর্চার বিষয় ; শিক্ষা তার গবেষণার। একই ধরনের পার্থক্যের  কথা বলেছেন R J Stalcup এবং J E Jensen  । 

অধ্যাপক Brown বলেছেন শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্ব ব্যক্তি ও সমাজের মধ্যে যে অবিচ্ছেদ্য   সম্পর্ক রয়েছে তা বুঝতে সাহায্য করে। 

Cook & Cook এর মতে , পার্থিব বিষয়বস্তু এবং মানবিক সম্পর্কের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য সমাজবৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও কৌশলের প্রয়োজনই হল শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্ব। 

সুতরাং শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্ব সম্পূর্ণ সমাজতত্ত্বের একটি বিশেষ দিক যা সামাজিক পটভূমিকায় শিক্ষা প্রক্রিয়ার গঠনগত ও গতিশীল বিষয়গুলি আলোচনা করে।  

২. শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্বের প্রকৃতি :- 


শিক্ষাবিজ্ঞানে ও সমাজতত্ত্ব পরস্পর মিলিত ভাবে তৈরি হয়েছে শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্ব। এই শিক্ষাশ্রয়ী সমাজ তত্ত্বের স্বরূপ বা প্রকৃতি নির্ণয় আমরা দেখতে পাই শিক্ষা বিজ্ঞান ও সমাজতত্ত্ব একে অপরের দ্বারা পরিপূর্ণ ও পরিপুষ্ট হয়ে গড়ে ওঠে। 
Science of the behaviour of the individual in society is framed in its institution  ।  এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামূলক সমাজতত্ত্বের প্রকৃতি নির্ণীত হয়। 

Young বলেছিলেন , মানুষের পারস্পরিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করে শিক্ষামূলক সমাজতত্ত্ব। তাই শিক্ষাবিজ্ঞান সমাজতত্ত্বের প্রয়োগগত শাখারূপে তৈরি করেছে শিক্ষামূলক সমাজতত্ত্ব। 

শিক্ষাশ্রয়ী সমাজ তত্ত্বের প্রকৃতিগত দিক হলো সামাজিক মিথস্ক্রিয়া। অর্থাৎ সমাজজীবনে সামাজিক গোষ্ঠী , সামাজিক প্রতিষ্ঠান , সামাজিক সম্পর্ক এবং সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থার সাপেক্ষে যথার্থ সামাজিকীকরণে উন্নত করে তোলা। এই জন্য সমাজতত্ত্ব দিয়েছে তত্ত্ব এবং তথ্য ও শিক্ষাবিজ্ঞান দিয়েছে নীতি ও কৌশল। এই দুয়ের মিলিত প্রবাহে তৈরি হয়েছে শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্ব। 

 তার ফলে সমাজ , শ্রেণি , মানুষ , গৃহ থেকে বিদ্যালয় বিদ্যালয় , বিদ্যালয় থেকে মহাবিদ্যালয় এবং মানুষের কর্মক্ষেত্রে সবই সুষম বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে এবং সমাজে  প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ন্যায়বিচার ও ন্যায়বোধ , বিচার ব্যবস্থা , সমান অধিকার , সকল ক্ষেত্রেই  সম সুযোগ এবং পারস্পরিক মেলবন্ধন। 

তাই শিক্ষা ও সমাজ তত্ত্বের আদর্শে তৈরি হয়েছে নানা রকম সামাজিক প্রতিষ্ঠান তথা বিদ্যালয় এবং সামাজিক সম্পর্ক , সামাজিক পরিবর্তনশীলতা , সামাজিক অগ্রগতি ,  সামাজিক প্রক্রিয়া এবং সামাজিক সংগঠনে প্রযুক্ত হয়েছে বিজ্ঞান চেতনার সুষম প্রগতি।

৩. শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্বের পরিধি : - 


শিক্ষা বিজ্ঞান ও সমাজতত্ত্ব পরস্পর যুক্ত হয়ে ব্যক্তি ও সমাজের মঙ্গল সাধনে অগ্রসর হয়েছে এবং সমাজ ও ব্যক্তির মধ্যে সুস্থ ও সঙ্গতিপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছে। শিক্ষাবিজ্ঞানে কতগুলি নির্দিষ্ট পরিধি আছে আবার সমাজতত্ত্বেরও নির্দিষ্ট পরিধি আছে। উভয় শাখা পরস্পরের সমন্বয়ে তৈরি করেছে শিক্ষাশ্রয়ী সমাজ সমাজতত্ত্বের পরিধি। যেমন :-

A. সমাজ গঠনে প্রাথমিক উপকরণ যেগুলি শিক্ষা ও সমাজকে পারস্পরিক বন্ধনে আবদ্ধ করে। যেমন - জনসমষ্টি , ভৌগোলিক অবস্থান , যোগাযোগব্যবস্থা , মানব প্রকৃতি ইত্যাদি। 

(a) জনসমষ্টি দেশের অন্যতম সম্পদ যার দ্বারা একদিকে যেমন সুস্থ সমাজ তৈরি হয় ও   অন্যদিকে তৈরি হয় যথার্থ শিক্ষাব্যবস্থা। তাই শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্বের পরিধির অন্যতম উপকরণ হলো জনসমষ্টি ও তার প্রকৃতিগত উন্নয়ন সংস্থা এবং প্রকৃতিগত উন্নয়ন হল সমস্যা এবং প্রগতিগত উন্নয়ন হল  অভিমুখী শিক্ষাভাবনা। 

(b) যোগাযোগ ব্যবস্থা একটি উন্নয়নশীল দেশের তৃতীয় প্রধান উপকরণ। শিক্ষাশ্রয়ী সমাজ তত্ত্বের আলোচনাক্ষেত্রে তাই যোগাযোগ ব্যবস্থার যথার্থতা এবং উন্নয়নের আলোচনা করে এই শাখাটি। 

(c) ভৌগলিক অবস্থান হল একটি দেশের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যার সাপেক্ষে আলোচনা ,  ভাবনা ও  অনুকূল পরিবেশের সন্ধান দেয় শিক্ষাশ্রয়ী সমাজবিজ্ঞান। 

(d) সকল ব্যবস্থাপনার মূলে যে সম্পদ সেটি হল মানবসম্পদ। সুতরাং মানবসম্পদের প্রকৃতিগত দিক বিশ্লেষণ এই শাখার চতুর্থ গুরুত্বপূর্ণ পরিধিযুক্ত বিষয়। 

B.  শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্বের অপর একটি পরিধিভুক্ত বিষয় হলো সামাজিক মিথস্ক্রিয়া। যার দ্বারা মানুষ দল গঠন করে এবং পারস্পরিক সংগতি বিধান করে। তাই মিথস্ক্রিয়ার প্রকৃতি প্রক্রিয়ার প্রকার সম্পর্কে আলোচনা করে এই বিষয়। 

C. শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্বের পরিধি হল সামাজিক গঠন। সমাজ গঠনের প্রকৃতি , নিয়ম ,  রীতিনীতি , গোষ্ঠীচেতনা প্রভৃতি সম্পর্কে আলোচনা করে এই বিষয়টি। 

D. সামাজিক দল ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সর্বোপরি গোষ্ঠীজীবনের বৈশিষ্ট্য , প্রকৃতি এবং তাৎপর্য আলোচনা করে শিক্ষাবিজ্ঞানের সাপেক্ষে। 

E. সমাজ জীবনে গণতান্ত্রিক ভাবধারার বিন্যাস এবং প্রবাহকে পরিচালিত করার মূলনীতি আলোচনা করে শিক্ষাবিজ্ঞানের এই শাখাটি। 

৪. শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্বের কার্যাবলী : - 


(i) শিক্ষার্থীকে আদর্শ নাগরিক জীবনের শিক্ষা দেওয়া , যাতে তারা তাদের সামাজিক জীবন যাপনের উপযুক্ত হয়ে উঠতে পারে। 
(ii) জাতি , ধর্ম , বর্ণ , লিঙ্গ ও বয়স নির্বিশেষে সকল মানুষকে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাতে বা নিয়মবহির্ভুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত করা। 
(iii) শিক্ষা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সামাজিক মূলমন্ত্রগুলি শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রতিষ্ঠা করা। যেমন - সমাজতন্ত্র , গণতন্ত্র , যৌথ জীবনবোধ , মানব শৃঙ্খল - ইত্যাদি। 
(iv) সামাজিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করা। যেমন - সহযোগিতা ও সহানুভূতিমূলক মানসিকতা , সহমর্মিতাবোধ , সৌভাতৃত্ববোধ , জাতীয়তাবোধ - ইত্যাদি। 
(v) শিক্ষার্থীদের মধ্যে কুসংস্কার দূর করে সুস্থ বিজ্ঞানসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা।  
(vi) প্রতিটি শিক্ষার্থীর মধ্যে আত্মমর্যাদাবোধ ও আত্মসচেতনতাবোধ গড়ে তোলা। 
(vii) উপার্জনশীল দক্ষ নাগরিক তৈরী করা , যাতে শিক্ষার্থী কর্ম ও কর্মকুশলতা লাভ করতে পারে। 
(viii) সাক্ষর ও নিরক্ষর উভয় শ্রেণীর মানুষের আত্মসচেতনতা বোধ বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধারাবাহিক শিক্ষামূলক কর্মসূচির আয়োজন করা। যেমন - সেমিনার , বক্তব্য উপস্থাপন , আলোচনা সভা , বিতর্ক সভা - ইত্যাদি। 
(ix) সমাজের সকল সদস্যদের দায়দায়িত্ব , কর্তব্যবোধ ও অধিকারবোধের ক্ষমতা জাগ্রত করা। 
(x) সমাজতত্ত্ব শিক্ষার্থীদের ঐতিহাসিক তথ্য দ্বারা যেমন সমৃদ্ধ করে , তেমনি ভৌগোলিক তথ্য দ্বারা সময়ের উপযোগী করে তোলে। 
(xi) পরিবেশ শিক্ষার সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সুঅভ্যাস শিক্ষার্থীদের মধ্যে গড়ে তোলা। 
(xii) শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাংস্কৃতিক চেতনাবোধ গঠন করা। 
(xiii) শিক্ষামূলক বিনোদনের ব্যবস্থা করা। 
(xiv) ব্যক্তি - গোষ্ঠী , সমাজ ও দেশের স্বার্থে জনহিতকর কাজে শিক্ষার্থীকে নিয়োজিত করা। 
(xv) সামাজিক মূল্যবোধের শিক্ষা দেওয়া। যেমন , সৌজন্যবোধ , ভদ্রতা , নীতিবোধ - ইত্যাদি। 
(xvi) শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাতীয়তাবোধ জাগ্রত করা। 
(xvii) শিক্ষার্থীদের বিশ্বমানবতার শিক্ষা দেওয়া। 
(xviii) শিক্ষার্থীদের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করে তোলা। 
(xix) স্থান - কাল - পাত্র সম্পর্ক দ্বারা দেশ ও বিশ্বের রহস্য সন্ধান করতে আগ্রহী করে তোলা। (xx) অন্ধকার শিক্ষাহীন জীবন থেকে শিক্ষার আলোর পথের সন্ধান দেওয়া। 
(xxi) মানুষের মধ্যে শ্রেণীভেদ রোধ করে জাতি , ধর্ম , বর্ণ , লিঙ্গ ও ধনতন্ত্রের বেড়াজাল মুক্ত মানুষ তৈরী করা।    


৫. শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্বের গুরুত্ব :- 


ব্যক্তিমানুষের শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল সমাজ শিক্ষা। দর্শন ও মনোবিজ্ঞান ব্যক্তিমানুষের অন্তর্নিহিত সম্পদের যে পরিপূর্ণতা দেয় , তাকে যথার্থভাবে পূর্ণতা দেয় সমাজবিজ্ঞান। কারণ , মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। অন্তর্নিহিত সম্পদের যোগ্যতামান নির্ধারণ করে সমাজ এবং তার গুরুত্ব উপলব্ধি করে সমাজবদ্ধ মানুষ। তাই গণশিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে সামাজিকীকরণের শিক্ষা দিতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল শিক্ষাশ্রয়ী সমাজবিজ্ঞান। শিক্ষার্থীর জীবনে এই শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্বের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি হল - 

(i) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গোষ্ঠীর নিবিড় ও আত্মিক সম্পর্ক গড়ে তোলা। 

(ii) এই বিষয়টি ব্যক্তি শিক্ষার্থীকে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পারস্পরিক বোঝাপড়া , সহানুভূতি ও সহমর্মিতাবোধ এবং মমত্ববোধ গঠনে সহায়তা করে। 

(iii) সমাজতত্ত্বের অভ্যন্তরে নিহিত সামাজিক মূল্যবোধগুলির গুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিহিত করে শিক্ষাবিজ্ঞান। এখানে তাই উভয় বিষয়ের সমন্বয়সাধন দ্বারা আমরা বলতে পারি শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্ব শিক্ষার্থীর মানবিক গুণের সঙ্গে সামাজিক গুণের বিকাশ ঘটায়। 

(iv) শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্ব শিক্ষার্থীদের মধ্যে যুক্তিনির্ভর বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলে , যার দ্বারা শিক্ষার্থীরা সমাজের প্রচলিত সংস্কার ও কুসংস্কারের মধ্যে পার্থক্য করতে পারবে। সামাজিক পদ্ধতিতে প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে দিতে পারবে এবং সমাজকে ক্রমোন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। 

(v) শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্ব প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর মধ্যে - 
a. সামাজিক কর্তব্য গঠনে সহায়তা করে। 
b. সামাজিক অধিকারগুলি অর্জন করতে সহায়তা করে। 
c. সামাজিক চেতনাবোধ গঠনে সাহায্য করে। 
d. শিক্ষার্থীর মধ্যে স্বাধীন , মননশীল দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে সহায়তা করে। 
e. সমাজ কল্যাণকামী মানসিকতা তৈরী করে। 
f. সমাজ অগ্রগতিতে সাহায্য করে। 

(vi) শিক্ষাশ্রয়ী সমাজতত্ত্বের গুরুত্বপূর্ণ অবদান হল , শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্ব বিকাশে নৈতিক , রাজনৈতিক , অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিকের সচেতন সমন্বয় করা , যাতে শিক্ষার্থী আদর্শ সমাজ সচেতন ও দায়িত্বপূর্ণ সুনাগরিক হতে পারে।      


 

You May Also Like

2 comments